expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫

ইনসাফ ও সমান অধিকারের পার্থক্য

 "ইনসাফের মাঝে ন্যায় বিদ্যমান, শুধু ন্যায় দিয়ে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা সম্ভব না"

ইনসাফ ও সমান অধিকার




আমি ফেসবুকে একটা পোস্ট করেছিলাম যে, আমি ন্যায় ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থায় বিশ্বাসী নই, আমি ইনসাফ ভিত্তিক ইসলামি সমাজ ব্যবস্থায় বিশ্বাসী। এই পোস্টে আমার সন্মানিত পাঠকরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন। সকল পাঠক গনকে ধন্যবাদ ও সালাম জানাচ্ছি। আজকে এই বিষয়টি আপনাদের সামনে স্পষ্ট করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।


এই ন্যায় ও ইনসাফ একই রকম মনে হলেও বিষয় দুটি কখনোই এক বিষয় নয়। এখানে স্পষ্ট পার্থক্য আছে।ন্যায় হয় শুধু মাত্র অধিকারের ভিত্তিতে আর ইনসাফ হয় ন্যায্যতা আর মানবতার সমষ্টিতে। আসুন দুটি সহজ উদাহরন দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছি।

ধরেন একজন মুদি ব্যবসায়ী সপ্তাহে ১০ মন পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারে। তার পেঁয়াজের ক্রয় মূল্য ৩৫ টাকা কেজি দরে এবং বিক্রয় মূল্য ৪০ টাকা কেজি দরে। এক দিন ৪০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কেনার পর সকাল বেলা ঐ মুদি দোকানদার দেখলো যে হঠাৎ  পেঁয়াজের দাম বেড়ে গিয়ে দোকানীর প্রতি কেজি ক্রয় মূল্য ৬৫ টাকা দরে হয়ে গেছে। বাকী সকল দোকানী আজ হতে ৬৫ টাকা কেজি দরে কিনে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। এখন যদি এই মূদি তার আগের ৩৫ টাকা কেজি দরে কিনা পেঁয়াজ সেও ৭০টাকা কেজি দরে বিক্রি করে তাহলে সমস্যা নাই। এটা তার ন্যায্য অধিকার, ক্রেতারা যেহেতু অন্য কোথাও ৭০ টাকার নীচে পেঁয়াজের কেজি কিনতে পারবে না সেহেতু সেও ৭০ টাকা করে কেজি বিক্রি করলে প্রচলিত পুঁজিবাদী ব্যস্থায় ন্যায্যতার ভিত্তিতে তা অন্যায় হবে না।

কিন্তু দোকানী যদি ভাবে যে আমার পেঁয়াজগুলো আগের কিনা, আগের দরে বিক্রি করলে আমার লোকসান হবে না, লাভের পরিমান সমান থাকবে।তখন ক্রেতাদের কষ্টের কথা চিন্তা করে যদি লোভ না করে দোকানী আগের কিনা পেঁয়াজ গুলো পূর্বের দর ৪০টাকা কেজিতে বিক্রি করে শেষ না হওয়া পর্যন্ত তখন এটা হবে ইনসাফ


আরেকটা উদাহরন দেই। 

ইংরেজিতে Qualitative distribution বা Equitable distribution  এবং Quantitative distribution বা Equal distribution বলে দু'টি কথা আছে।
Qualititative distribution বলতে সুষম বন্টন, ন্যায্য ভাবে বন্টন বা হিস্যা অনুযায়ী বন্টন বুঝায়। এটা গুন ও সক্ষমতার ভিত্তিতে বন্টন বুঝায়, সংখ্যার ভিত্তিতে নয়, এটা হয় ইনসাফের ভিত্তিতে। 

আর Quantitative Distribution বা Equal distribution বলতে সমান ভাবে বন্টন বা সংখ্যার ভিত্তিতে বন্টন বুঝায়। 

উদাহরন সরূপ মনে করেন আপনার বাসায় ২০ জন মেহমান আসল।  মেহমানদের মধ্যে ৫জন শিশু মানে দশ বছরের কম বয়সী, আর দশ জন পূর্ন যৌবন বয়ষ্ক মানুষ এবং পাঁচ জন অতি বৃদ্ধ। এখন  আপনকে ৮ কেজি রান্না মাংশ দিয়ে যদি ভাগ করে দিতে বলা হয় তখন আপনি দুই ভাগে ভাগ করে দিতে পারবেন।

১। প্রথম পদ্ধতি হলো ৮ কেজি রান্না মাংশকে সমান বিশ ভাগ করে মানে প্রাপ্ত বয়ষ্ক এবং শিশু সবাইকে ৪০০গ্রাম হারে মাংশ খেতে দিতে পারেন। এটা হলো Quantitative distribution বা সমান ভাগে সংখ্যার ভিত্তিতে বন্টন বা সম বন্টন বা ন্যায় বিচারের বন্টন। একেই বলে ন্যায্যতা বা ন্যায়ের বন্টন।

এই সংখ্যার ভিত্তিতে সমান হারে বন্টন করলে একটা সমস্যা হবে আর এটা হলো শিশু বা অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক অনেকেই পুরো ৪০০গ্রাম মাংশ খেতে পারবে না, যারা পারবেনা ফলে তাদের অনেকেই উচ্ছিষ্ট মাংশ ফেলে দিবে বা নষ্ট করবে। আর দু একজন কষ্ট করে পুরাটা সামলাতে পারলেও একটু পর হয়ত বমি করবে।

 আর প্রাপ্ত বয়ষ্ক যুবকরা সাধারনত শিশু তথা অপ্রাপ্ত বয়ষ্কদের চেয়ে অনেক বেশী খাওয়ার চাহিদা রাখে। প্রাপ্ত বয়ষ্করাও সকলে সমান খাওয়ার যোগ্যতা রাখে না। তখন দেখবেন প্রাপ্ত বয়ষ্ক অনেকেই আপনার বন্টন করা ৪০০গ্রাম মাংশ খাওয়ার পরও আরো খাওয়ার চাহিদা রাখা সত্ত্বেও আর খেতে পাচ্ছে না সংখ্যার ভিত্তিতে তথা সমান বা ন্যায্য অধিকারের ভিত্তিতে বন্টনের কারণে, যদিও শিশুরা অনেকে মাংশ খেতে না পেরে অপচয় করেছে। একেই বলে সমান অধিকারের ভিত্তিতে বন্টন।

২।আপনি আরেকটি পদ্ধতিতে বন্টন করতে পারেন। সেটা হলো রান্না করা ৮কেজি মাংশের সবচেয়ে কম বয়ষ্ক শিশুকে তার চাহিদার সর্বোচ্চ টুকু দিয়ে আস্তে আস্তে বা পর্যায় ক্রমে বয়সে বড়দের মাঝে তাদের চাহিদা ও সক্ষমতা অনুযায়ী  মাংশের পরিমান ভাগ করে দিতে পারেন। এতে দেখা যাবে কেউ মাংশ খেয়ে অতৃপ্তও থাকবে না আবার কেউ নষ্ট বা অপচয়ও করবে না, এতে করে কোন মাংশের অংশ উদৃত্বও থাকবে না। এটাকেই বলে Qualitative distribution বা Equatable distribution. বা সুষম বন্টন বা ইনসাফ ভিত্তিক বন্টন।

এই ইনসাফ ভিত্তিক বন্টন বা বিচার ব্যবস্থা ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থার কথাই বলে ইসলাম, এই ইনসাফের মধ্যে ন্যায় বিচারিক বন্টনও বিদ্যমান কিন্তু শুধু ন্যায় বিচার দিয়ে ইনসাফ নিশ্চিত হয় না। আশা করি সন্মানিত পাঠকরা আমার কথার মর্মার্থ বুঝতে পেরেছেন।

ডা.বশির আহাম্মদ

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...