expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

রবিবার, ৫ জানুয়ারী, ২০২৫

ঈমান আনায়নের পর প্রথম কাজ মুসলমানদের ভূমি রক্ষা

 ঈমান আনায়নের পর প্রথম কাজ মুসলমানদের ভূমি রক্ষা

মুসলমানদের ভূমি রক্ষা

ঈমান আনার পর একজন ঈমানদারের প্রথম কাজ কি? একথা বর্তমান যামানার বেশির ভাগ আলেমই জানে না, অথবা জানলেও তা বলে না।কারন বর্তমান যামানার আলেম নামক ঠুন্ডা মৌলভীরা তরবারির বিনিময়ে অমুসলিমদের নিকট হতে জায়নামাজ আর তসবীহ কিনে নিয়েছে। আমার এই আলোচনা বুঝার জন্য আগে একজন মুসলমানকে জানতে হবে তরবারী ও ইসলামের সম্পর্ক কি।


"ইসলাম ও তরবারির সম্পর্ক কিঃ

আজকাল ইসলাম বিরোধিতা করার জন্য ইসলাম বিদ্বেষীরা ইসলাম তরবারির জোরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে মানব সমাজে প্রোপাগান্ডা চালায়। আবার মুসলমানরা ইসলাম বিদ্বেষীদের প্রপাগান্ডাকে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মত অস্বীকার করতে গিয়ে ইসলাম ও তরবারির সম্পর্কের মর্মার্থ না বুঝে ইসলামের সাথে তরবারির সম্পর্ক নাই বলে প্রচার করে। আসুন ইসলামের সাথে তরবারির কি সম্পর্ক তা আজ জানা যাক।

ঈমান ও কালেমার অর্থটা একটু আগে মনে করিয়ে দিতে চাই, তা না হলে ভুল বুঝাবুঝির সমূহ সম্ভাবনা আছে।

আমরা জানি ঈমান আনায়নের মাধ্যমে ইসলামে দাখিল হয় মানুষ। আর ঈমান আনায়ন করে কালেমার মাধ্যমে। 

আমাদের কালেমা হলো ' লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ।  এখানে দেখুন কালেমায় লা+ইলাহা+ ইল্লাল্লাহু +মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ। 

১। লা মানে নাই। অর্থাদ দুনিয়ার সব কিছু অস্বীকার করা।

২। ইলাহ, এটা পরে আলোচনা করব।

৩। ইল্লাল্লাহু,  মানে আল্লাহ ছাড়া।  মানে হলো একমাত্র আল্লাহ ছাড়া বাকী সব ইলাহকে(পরের আলোচনায় ইলাহ বুঝানো হবে) বাতিল ঘোষনা করা।

৪। এখানে বলা হয়েছে শুধু মাত্র হযরত মুুহাম্মদ সা: এর বর্নিত, পালনকৃত, আদেশকৃত মত ও পথ অনুসারেই। বাকী পথে এই ইলাহকে মেনে নেওয়ার নামও ইমান নয়। 

আসুন "ইলাহ" মানে কি জানা যাক। ইলাহ এক অর্থে আল্লাহকে বুঝানো। এই অর্থ বিস্তৃত করলে বুঝা যায় ইলাহ মানে শুধু সৃষ্টি কর্তা আল্লাহ কে মেনে নেওয়ার নামই নয়। এখানে মহা বিশ্বের স্রষ্টা আল্লাহ তা'লার জারি কৃত সকল নিয়ম কানুন মেনে নেওয়ার কথাই বুঝানো হয়েছে।

আমার বলতে বা মানুষের তৈরী সকল কিছুই অস্বীকার করে একমাত্র আল্লাহর দেওয়া বিধিবিধানকে নি:সংকোচে মেনে নেওয়াই বুঝানো হয় আর সেই সাথে বাকী সকল বিধানকে অস্বীকারের কথাই বুঝায়। এ অর্থে আত্মসমর্পণ বুঝায়।

আবার মানুষের তৈরী বিধান অস্বীকারের মানে হলো মানুষের তৈরী আইন, মানুষের তৈরী জীবন ব্যবস্থা, মানুষের তৈরী অর্থ ব্যবস্থা, মানুষের তৈরী রাষ্ট্র ব্যবস্থা অস্বীকার এবং এসকল ব্যবস্থাকে অস্বীকার করে আল্লাহর তৈরী বিধান মেনে চলার নামই ইসলাম।

 ইসলাম এর অর্থ বলতে কেউ বলে শান্তি আবার কেউ বলে আত্মসমর্পণ। শান্তি অথবা আত্মসমর্পন এই দুটি আলাদা আলাদা অর্থ যদি ধরা হয় তাইলে এখানে তরবারির কোন সম্পর্ক থাকে না, আর তাই এই অর্থ আলাদা আলাদা ধরে অনেকে বলে ইসলামের সাথে তরবারির কোন সম্পর্ক নাই বলে প্রচার করে।

কিন্তু ইসলামের আসল অর্থ হলো লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ, এই বাক্যকে মেনে নিয়ে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পনের মাধ্যমে মানুষের তৈরী সকল বিধিবিধানকে সমূলে উৎপাটনের মাধ্যমে আল্লাহর দেওয়া বিধান মতে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও এই শান্তি বজায় রাখার প্রচেষ্টার নাম ইসলাম।

আর আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ পূর্বক ইসলামের শান্তি শুধু মুসলমানের জন্যই প্রতিষ্ঠিত করা নয়, বরং আল্লাহর সৃষ্টি সকল প্রানী, সকল মানুষ, সকল জীবের বেলায় প্রজোয্য। আর এটার নাম ইসলামের ইনসাফ। ইসলাম ও ইনসাফ একই বৃক্ষের অংশ, একটা মূল হলে অন্যটা কান্ড। এই ইনসাফ মানুষের স্বাভাবিক দৃষ্টির বাইরের জীবানু হতে বৃহৎ নীল তিমির বেলায়ও প্রয়োজনে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা।

আপনি কালেমা পড়ে সারা দুনিয়ায় ইসনসাফের মাধ্যমে শন্তি প্রতিষ্ঠা করবেন আর বাতিল শক্তি ঘুমিয়ে যাবে অথবা আপনার ভয়ে পাকাবে বিষয়টা এমন নয়। বাতিল শক্তি তিলে তিলে আপনাকে পীষে মারার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে।  বাতিলরা জল, স্থল ও আকাশ পথে আপনাকে আক্রমন করে আপনার প্রতিষ্ঠা করা শান্তিকে ব্যহত করে বাতিলকে টিকিয়ে রাখতে চাইবে।আপনার ধন,সম্পদ, জীবন ও দেশ এবং ভিটেমাটি নিয়ে টানাটানি শুরু করবে।
আর তখনই আপনি তাদের বাঁধাকে প্রতিহত করে আপনার প্রতিষ্ঠা করা ইসলামের শান্তি বজায় রাখতে তরবারির ব্যবহার করতে হবে।

এই তরবারি হবে আত্মরক্ষার তরবারি, এটা হবে প্রতিরক্ষামূলক তরবারি, এই তরবারী হবে মুসলমানদপর ভূমি রক্ষার তরবারী, এই তরবারি ইসলামকে বিজয়ী রাখার তরবারি, এই তরবারি ইনসাফ প্রতিষ্ঠার তরবারি। আর এটাই জিহাদ।

মনে রাখবেন, এই জীহাদের তরবারি নাই যেখানে, ইসলাম কখনোই প্রতিষ্ঠিত হবেনা সেখানে। ইসলামের প্রচার হবে দাওয়াতের মাধ্যমে, আর ইসলামের বাঁধা ডিঙ্গাতে হবে তারবারির মাধ্যমে।

তাই বলি ইসলাম ও তরবারি (জী*হা*দ) একে অন্যের সাথে জড়িত। তরবারি ছাড়া যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠা,ইসলামের বিজয় ও ইসলাম টিকিয়ে রাখার কথা যারা বলে তারা হয় নিত্যান্ত মূর্খ আর না হয় মুনাফেক।

আবূ বকর ইবনে আবূ মুসা আশ'আরী রাদিয়াল্লাহু আনহু হতে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি আমার পিতা রাদিয়াল্লাহু আনহু- কে এ কথা বলতে শুনেছি---যখন তিনি শত্রুর সামনে বিদ্যমান ছিলেন---আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, "নিঃসন্দেহে জান্নাতের দ্বারসমূহ তরবারির ছায়াতলে রয়েছে।" এ কথা শুনে রুক্ষ বেশধারী জনৈক ব্যক্তি দাঁড়িয়ে বলে উঠল, 'হে আবূ মুসা! আপনি কি আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-কে এ কথা বলতে শুনেছেন?' তিনি বললেন, 'হ্যাঁ। অতঃপর সে তার সঙ্গীদের কাছে ফিরে গেল এবং বলল, তোমাদেরকে বিদায়ী সালাম জানাচ্ছি।' অতঃপর সে তার তরবারির খাপটি ভেঙ্গে দিয়ে (নগ্ন) তরবারিটি নিয়ে শত্রুর দিকে অগ্রসর হল এবং শত্রুকে আঘাত করে অবশেষে সে শহীদ হয়ে গেল। (মসলিম) [1] মুসলিম ১৯০২, তিরমিযী ১৬৫৯, আহমাদ ১৯০৪৪, ১৯১৮১

হাদিসের মানঃসহিহ

• বর্ণনাকারীঃ আবু বকর ইবনে আবূ মুসা আশ'আরী (রাঃ)।

এই তরবারী কি কাজে লাগবে? এই তরবারী মানুষের জান,মাল, ইজ্জত ও মুসলিমদের ভূমি কিংবা দেশ রক্ষায় সর্বক্ষণ কাজে লাগবে।এই তরবারির কাজই হলো বহি: শত্রুর
 হাত হতে মুসলমানদের জান,মাল, ইজ্জত ও মুসলমানদের সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা। কেননা দয়াল নবী হযত মুহাম্মদ মুস্তাফা (সা:) বলেছেন 
"ঈমান আনার পর সর্বোত্তম আমল মুসলিম ভূখন্ড রক্ষা করা (বুখারী ১৫১৯)"। 

এই হাদীসে বুঝা গেলো একজন মুসলমানের প্রথম ও প্রধান কাজই হলো  মুসলমানদের ভূখন্ড রক্ষা করা। কেননা মুসলমানের ভূমি সুরক্ষিত না থাকলে ঈসলামই টিকে থাকবে না। কেননা ইসলামের মূল উদ্দেশ্য হলো মাটির বুকে শান্তি,ন্যায় ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা। এটা করতে হলে একটি নির্দিষ্ট মানব সামাজ থাকতে হবে একটি নির্দিষ্ট এলাকায় যাকে বলে মুসলিম সমাজ।এই সমাজে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে হলে রাষ্টৃরীয় ভাবে ইসলাম প্রতিষ্ঠা করতে হয়। আবার রাষ্ট্রের ৪টি রৈশিষ্ট রয়েছে, জনগন, সরকার, সার্বভৌমত্ব ও নির্দিষ্ট ভূখন্ড। এই ভুখন্ড ব্যতিত রাষ্ট্র সম্ভব নয়, আর রাষ্ট্রীয় ভাবে ছাড়া পূর্ণাঙ্গ ইসলাম প্রতিষ্ঠাও সম্ভব নয়।এই ভুখন্ড রক্ষা না করতে পারলে ইসলামও টিকে না।

তাই মনে রাখতে হবে তরবারির ছায়াতলে জান্নাত আর ঈমান আনার পর মুসলমানের প্রথম  কাজ নিজেদের ভূমি রক্ষা করা।এটা যারা অস্বীকার করে তারাই বড় জালেম।


লেখক:চিকিৎসক, জার্নালিস্ট ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...