"অন্য ধর্মের দেবদেবীকে গালি দেওয়া ইসলাম অনুমতি দেয় না, বাউল-ফউলের দায় ইসলাম নিবে না
অন্যধর্মের শ্রষ্ঠাকে গালি দেওয়া নিষেধ
লেখা শেষ পর্যন্ত না পড়ে আবার আমাকে ধর্ম নিরপেক্ষ ভেবে বসবেন না কেউ, আমি ধর্মনিরপেক্ষতা পছন্দ করি না,সমর্থন করি না,বরং আমি চরম ধর্মনিরপেক্ষতা বিরোধী
এবার আসুন মূল আলোচনায়, একটি ভিডিওতে দেখলাম মুসলিম এক নারী বাউল নামের ফাওল শিল্পী হিন্দুদের দেবতা শ্রীকৃষ্ণকে অকথ্য ভাষায় গালাগালি দিচ্ছে যা মারাত্মক দৃষ্টি কটু। এই আলোচনা শ্রীকৃষ্ণের পক্ষ নেওয়া বা ঐ নারী বাউল শিল্পীকে প্রমোট করা উদ্দেশ্য নয়, বরং ইসলামের নাম দিয়ে বা মুসলমান দাবী করে অন্য ধর্মের দেবদেবীকে গালিগালাজ করে ইসলামকে অবমাননার বিষয়ে। এটা আলোচনা নয়, এটা আমার প্রতিবাদ। ইসলাম কোন ধর্মের দেবদেবীকে গালিগালাজ করা জায়েজ করে নি বরং নিষেধ করেছে।
পৃথিবীর যে কোন ধর্মকে গালি দিতে ইসলামে নিষেধ রয়েছে।এই নারী বাউল নামের ফাওল যে গালিগালাজ করেছে তা ইসলামের দৃষ্টিতে মারাত্মক ভুল করেছে। আমি তার প্রতিবাদ জানাই।
কেননা কোরআন বলছে,
وَ لَا تَسُبُّوا الَّذِیْنَ یَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ فَیَسُبُّوا اللّٰهَ عَدْوً ۢ ا بِغَیْرِ عِلْمٍ ؕ كَذٰلِكَ زَیَّنَّا لِكُلِّ اُمَّةٍ عَمَلَهُمْ ۪ ثُمَّ اِلٰى رَبِّهِمْ مَّرْجِعُهُمْ فَیُنَبِّئُهُمْ بِمَا كَانُوْا یَعْمَلُوْنَ
আর (হে ঈমানদারগণ!) এরা আল্লাহকে বাদ দিয়ে যাদেরকে ডাকে তোমরা তাদেরকে গালি দিয়ো না। কেননা, এরা শিরক থেকে আরো খানিকটা অগ্রসর হয়ে অজ্ঞতাবশত যেন আল্লাহকে গালি দিয়ে না বসে।আমি তো এভাবে প্রত্যেক জনগোষ্ঠীর জন্য তাদের কার্যক্রমকে শোভন করে দিয়েছি।তারপর তাদের ফিরে আসতে হবে তাদের রবের দিকে। তখন তিনি তাদের কৃতকর্ম সম্বন্ধে তাদেরকে জানিয়ে দেবেন।
(সূরা আন-আ'ম:১০৮)
অর্থাদ নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অনুসারীদেরকে এ উপদেশ দেয়া হয়েছে। তাদেরকে বলা হয়েছিল, নিজেদের ইসলাম প্রচারের আবেগে তারা যেন এমনই লাগামহীন ও বেসামাল হয়ে না পড়ে যার ফলে তর্ক-বিতর্ক ও বিরোধের ব্যাপারে এগিয়ে যেতে যেতে তারা অমুসলিমদের আকীদা-বিশ্বাসের কঠোর সমালোচনা করতে গিয়ে তাদের নেতৃবৃন্দ ও উপাস্যদেরকে গালিগালাজ করে না বসে। কারণ, এগুলো তাদেরকে সত্যের নিকটবর্তী করার পরিবর্তে তা থেকে আরো দূরে সরিয়ে নিয়ে যাবে।
আবার এর মানে এই নয় যে ধর্ম যার যার উৎসব সবার এই নাম করে সবাই অন্যধর্মের পূজায় লেগে পড়বে। মূর্তিপূজা যে ইসলামে হারাম এ নিয়ে কোন সন্দেহ নেই। এ মূর্তিদের সমালোচনা করে কোরআন বলছে,
یٰۤاَیُّهَا النَّاسُ ضُرِبَ مَثَلٌ فَاسْتَمِعُوْا لَهٗ ؕ اِنَّ الَّذِیْنَ تَدْعُوْنَ مِنْ دُوْنِ اللّٰهِ لَنْ یَّخْلُقُوْا ذُبَابًا وَّ لَوِ اجْتَمَعُوْا لَهٗ ؕ وَ اِنْ یَّسْلُبْهُمُ الذُّبَابُ شَیْئًا لَّا یَسْتَنْقِذُوْهُ مِنْهُ ؕ ضَعُفَ الطَّالِبُ وَ الْمَطْلُوْبُ
হে লোকেরা! একটি উপমা দেয়া হচ্ছে, মনোযোগ দিয়ে শোনো। আল্লাহকে বাদ দিয়ে যেসব উপাস্যকে তোমরা ডাকো তারা সবাই মিলে একটি মাছি সৃষ্টি করতে চাইলেও করতে পারবে না। বরং যদি মাছি তাদের কাছ থেকে কোন জিনিস ছিনিয়ে নিয়ে যায় তাহলে তারা তা ছাড়িয়েও নিতে পারবে না। সাহায্য প্রার্থীও দুর্বল এবং যার কাছে সাহায্য চাওয়া হচ্ছে সেও দুর্বল।
(সূরা হাজ্জ:৭৩)
অর্থাৎ সাহায্যপ্রার্থী তো দুর্বল হবার কারণেই তার চাইতে উচ্চতর কোন শক্তির কাছে সাহায্য চাচ্ছে। কিন্তু এ উদ্দেশ্যে সে যাদের কাছে সাহায্য চাচ্ছে তাদের দুর্বলতার অবস্থা হচ্ছে এই যে, তারা একটি মাছির কাছেও হার মানে। এখন তাদের দুর্বলতার অবস্থা চিন্তা করো যারা নিজেরাও দুর্বল এবং যাদের ওপর নির্ভর করে তাদের আশা-আকাংখা-বাসনাগুলো দাঁড়িয়ে আছে তারাও দুর্বল।
মুসলমানরা মূর্তি পূজা করবে না এটাই সত্য তাই বলে অন্য ধর্মের দেবদেবীকে গালাগালি দেওয়ার অনুমতি আল্লাহ মুসলমানদের দেয় নি, কেননা ওরা আবার উল্টা আমার আল্লাহকে গালি দিলে ওই গালিটাতো আমার আল্লাহর প্রতি অবমাননাই হবে।
অতএব ঐ নারী বাউল নামের বেপর্দা ফাউল শীল্পী যা করেছে তার দায় ইসলাম নেয় না, এ সকল কাজের অনুমোদনও ইসলাম দেয় না। উনি পরে লাইভে এসে ক্ষমা চেয়েছেন সনাতন ধর্মের লোকদের নিকট কিন্তু উনি যে বেপর্দা হয়ে ইসলামের নামে অপপ্রচার চালিয়েছে তার জন্য ক্ষমা চায় নি। আমি বলি শুধু ক্ষমা নয়, তাওবা করা উচিত।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ