"নৃগোষ্ঠীরা বাংলাদেশী, এদের দাবী দাওয়া কি সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগনের সরকার শোনতে চায় না? নৃগোষ্ঠী বাদ দিয়েই কি নতুন বাংলাদেশ!!
![]() |
নির্যাতনের চিত্র:বিবিসি |
আজ অত্যন্ত ভরাক্রান্ত হৃদয়ে লিখতে বসলাম, আমার হৃদয়ে এই মুহূর্তে রক্ত ঝড়ছে। কেননা গত কয়েকদিন আগে দেখলাম জাতীয় পাঠ্যপুস্তক ও মুদ্রন সেন্টারের সামনে একদল নৃ-গোষ্ঠীর ছাত্র জনতা তাদের আদিবাসী গ্রাফিতি মুছে ফেলার দাবীতে আন্দোলন করছে আর অপর দিকে আরেকদল এসে তাদের উপর অতর্কীত ভাবে হামলা করেছে নিষ্ঠুরতার সাথে। এ যেন বাকশালী প্রেতাত্মা স্বৈরাচার হাসিনার গুন্ডা বাহিনীকেও হার মানায়।
১৫ জানুয়ারি সকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্য থেকে পূর্বঘোষিত কর্মসূচি অনুযায়ী ‘সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতার’ ব্যানারে একটি মিছিল মতিঝিলের এনসিটিবি ভবনের দিকে অগ্রসর হয়। কিন্তু মতিঝিল মেট্রো স্টেশনের নিচে পৌঁছালে ‘স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি’ ব্যানারে একটি দল তাদের ওপর হামলা করে।
মূল ঘটনা হল বাংলাদেশে পাঠ্যবইয়ের প্রচ্ছদ থেকে 'আদিবাসী' শব্দ সংবলিত গ্রাফিতি প্রত্যাহার, নৃগোষ্ঠীভুক্ত শিক্ষার্থী ও 'স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি' নামের এক সংগঠনের বিক্ষোভ চলাকালে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এটা ২০২৪ বিপ্লবের পরবর্তীতে অত্যন্ত লজ্জাজনক ও নিন্দনীয়।
![]() |
নির্যাতনের চিত্র:বিবিসি |
এরই মধ্যে গত বৃহস্পতিবার আরেক দল শিক্ষার্থী বুধবারের হামলার প্রতিবাদ করতে গেলে তাদের ওপরও লাঠিচার্জ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।এটা কেমন শাসন ব্যবস্থা? মানুষ তাদের দাবী দাওয়া পেশ করতে পারবে না, মিটিং মিছিল করতে পারবে না? এ কেমন দেশ!!!
এই আন্দোলনের সাথে জড়িত কয়েকজন জানান, বৃহস্পতিবার অন্তত তিন থেকে চার জন আহত হওয়ার খবর পেয়েছেন তারা।
এদিকে, বুধবারের হামলার ঘটনায় অভিযুক্ত একজন জাতীয় নাগরিক কমিটির সদস্য জানিয়ে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, হামলায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত দুইজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এই ঘটনায় বিচার নিশ্চিত করার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।
নবম ও দশম শ্রেণির 'বাংলা ভাষার ব্যাকরণ ও নির্মিতি' বইয়ের পেছনের প্রচ্ছদে 'আদিবাসী' শব্দ থাকা একটি গ্রাফিতি যুক্ত করা হয়েছিল।
কিন্তু 'স্টুডেন্ট ফর সভারেন্টি' নামে একটি একটি সংগঠন এর প্রতিবাদ জানিয়ে বাতিলের দাবিতে আন্দোলন শুরু করে। পরে সরকার সেটি বাতিলের সিদ্ধান্ত নেয়।
এরপর পাঠ্যবইয়ের পিডিএফ সংস্করণ থেকে সেটি সরিয়ে নতুন একটি গ্রাফিতি সংযুক্ত করা হয়। এই পদক্ষেপের প্রতিবাদ জানায় 'সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা' নামের একটি প্ল্যাটফর্ম।
বিবিসি বাংলা জানায়,পাঠ্যবই থেকে গ্রাফিতি প্রত্যাহারের প্রতিবাদে 'সংক্ষুব্ধ আদিবাসী ছাত্র-জনতা' এই ব্যানারে শিক্ষার্থীরা পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী দুপুরে এনসিটিবির সামনে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে উপস্থিত হন।
তবে তারা সেখানে পৌঁছানোর আগেই 'স্টুডেন্টস ফর সভারেন্টি' নামে আরেকটি গ্রুপ সেখানে অবস্থান করছিল বলে জানান কয়েকজন শিক্ষার্থী।
আন্দোলনে থাকা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নৃগোষ্ঠীর শিক্ষার্থী ববি বিশ্বাস বলেন, "ওইখানে আমাদের আগেই তারা অবস্থান করছিল স্ট্যাম্প, লাঠি এসব নিয়ে। স্ট্যাম্পের মাথায় বাংলাদেশের পতাকা বেঁধে নিয়ে গিয়েছিল। আমরা গিয়ে পৌঁছানোর পর তারা আক্রমণাত্মক স্লোগান দেয়া শুরু করে। আমাদের দিকে তেড়ে আসতে শুরু করে।"
ববি বিশ্বাসের দাবি, প্রথমে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারলেও কয়েক মিনিটের মাথায় তারা একজনের দিকে হাতে থাকা স্ট্যাম্প ছুড়ে মারে। এরপরও শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন চালিয়ে যেতে চান তারা।
"তখনও আমরা কোনো ধরনের উত্তেজনা দেখাইনি। কিছুক্ষণ পরে আমরা সিদ্ধান্ত নিই ওইখানে বসে পড়বো। আমরা বসার পরে পুলিশদের সরিয়ে ওরা এসে আমাদের আক্রমণ শুরু করলো, যাকে যেভাবে পেরেছে হামলা করে মেরেছে," বলেন এই শিক্ষার্থী।
কিন্তু আমার কথা হলো পাহাড়ি নৃ-গোষ্ঠীর সাথে এমনিতেই বাংলাদেশ সরকারের সাথো কিছু অমিমাংশীত বিষয় রয়েছে, তার পরও বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নৃগোষ্ঠীর লোকেরা তাদের জন্য বরাদ্দ দেওয়া কৌটা পদ্ধতিকেও বিসর্জন দিয়ে সকল বিশ্ববিদ্যালয়ের সকল নৃগোষ্ঠীর ছাত্র জনতা রক্তাক্ত জুলাই ২৪ বিপ্লবকে সমর্থন করে আন্দোলনের পক্ষ নিয়েছিলো। এখন যদি তারা আবার বৈষম্যহীন বাংলাদেশে আবারও মার খেতে হয় তাদের দাবী দাওয়া উপস্থাপনের কারনে তাইলে আর বাংলাদেশের নাগরিকের সাম্যতা বলে আর কি রইলো?
বাংলাদেশে প্রায় ৫১ টির মত নৃগোষ্ঠীর জনগন রয়েছে।পরিসংখ্যান ব্যুরোর হিসেবে বাংলাদেশে উপজাতিদের সংখ্যা ৫১। এগুলো হচ্ছে:
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ