expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

বুধবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৫

সূরা ফাতিহা কোরআনেরই অংশ

 " সূরা ফাতিহা কোরআনেরই অংশ,মুজাফর বিন মহসীন ভুলের মধ্যে আছে, আর না হয় জঘন্য মিথ্যুক"



মাদখালি সমর্থিত শায়েখ মুজাফর বিন মহসীন নি:সন্দেহে একজন চৌকশ বক্তা। তাঁর দুটি ভিডিও আমার চোখে পড়ে, এর মাঝে এক জায়গায় বলছেন সুরা ফতিহা কোরআনের অংশ নয়, আরেগ জায়গায় বলছে সূরা "বুরুজ" জাল সূরা এবং তা শিয়ারা সংযোজন করেছে। আজকে আমার আলোচনার বিষয় হলো সূরা ফাতিহা আল কোরআনের অংশ কিনা? পরে অন্য দিন সূরা বুরুজ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করব এবং এই কমনওয়েলথ গোয়েন্দা ড.হামফেরীর তৈরী নযদি, ওহাবী ও মাদখালীদের মুখোশ উম্মুচন করব। পরের পর্বে বাকীটা পাবেন,আজকে শুধু অভিযোগ খন্ডন পালা।


তিনি সূরা ফাতিহাকে কুরআন থেকে বের দেবার কুফরী মানসিকতাকে প্রমাণ করার জন্য অদ্ভুত এক যুক্তির অবতারণা করেন, যদিও উনি লেভেলের মূর্খ তাঁর মাথায় এরকম বুদ্ধি আসার কথা না, এটা তাদের ইহুদী রাবাই ভাইদের বতলে দেওয়া কৌশল, আর সেটি হল,

وَلَقَدْ آتَيْنَاكَ سَبْعًا مِّنَ الْمَثَانِي وَالْقُرْآنَ الْعَظِيمَ [١٥:٨٧

আমি আপনাকে সাতটি বারবার পঠিতব্য আয়াত এবং মহান কুরআন দিয়েছি।

 {সূরা হিজর- ৮৭}

সূরা হিজরের উপরোক্ত আয়াতে প্রথমে সূরা ফাতিহার কথা বলা হয়েছে, তারপর এবং বলে কুরআনের কথা বলা হয়েছে।

মুযাফফর বিন মুহসিন তার বিতর্কিত বই ‘জাল হাদীছের কবলে রাসূলুল্লাহ ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াছাল্লামের ছালাত’ নামক বইয়ের মাঝেও লিখেছেন যে, যদি সূরা ফাতিহা কুরআনই হতো, তাহলে সূরা ফাতিহা আলাদাভাবে কেন উল্লেখ করা হল? আলাদা উল্লেখ করাই প্রমাণ করে যে, সূরা ফাতিহা কুরআন থেকে আলাদা, ইন্না লিল্লাহ।



আমি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম, আবু বকর, উমর ও উসমান রা.-এর পিছনে নামায আদায় করেছি। তাঁরা প্রত্যেকেই ‘আল-হামদু লিল্লাহি রাবিবল আলামীন’-এর মাধ্যমে কিরাত শুরু করতেন।’ -ইমাম বুখারী, জুযউল কিরাআত খালফাল ইমাম, হাদীস ১৩০

তো এতগুলো সহীহ হাদীসে সূরা ফাতিহা পড়াকে কিরাত বলা হল। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম ও খোলাফায়ে রাশেদীন থেকে প্রমাণিত হল যে, সূরা ফাতিহা পড়াও কিরাত।  এরপরও কি ভাবে মুজাফ্ফর বিন মহসীন বলবেন- সূরা ফাতিহা পড়া কিরাত নয়?

এই যদি এসব শায়েখদের জ্ঞানের অবস্থা হয় তাহলে ওদের হাতে দ্বীন কতোটা নিরাপদ তা সহজেই অনুমেয়।

‘এবং’ বলে আলাদা উল্লেখ করার কারণে যদি সূরা ফাতিহা কুরআন থেকে আলাদা হয়ে যায় তাহলে একই যুক্তিতে কুরআনের বাকি কিছু আয়াতও যাচাই করা দরকার। 

যেমন-

تَعْرُجُ الْمَلَائِكَةُ وَالرُّوحُ إِلَيْهِ فِي يَوْمٍ كَانَ مِقْدَارُهُ خَمْسِينَ أَلْفَ سَنَةٍ4

ফেরেশতাগণ এবং রূহ আল্লাহ তা’আলার দিকে উর্ধ্বগামী হয় এমন একদিনে, যার পরিমাণ পঞ্চাশ হাজার বছর। {সূরা মাআরিজ-৪}

এ আয়াতে প্রথমে বলা হয়েছে ফেরেস্তার কথা তারপর ‘এবং’ বলে আলাদাভাবে উল্লেখ করা হয়েছে রূহ তথা জিবরাঈল আঃ এর কথা।

ফেরেশতার কথা বলার পর আবার আলাদা করে ‘এবং’ বলে জিবরাঈলের কথা কেন বলা হল? এর মানে কি জিবরাঈল ফেরেশতা নয়?

একজন সাধারণ ইলমওয়ালাও বুঝবে যে, আলাদাভাবে উল্লেখ করার কারণ হল জিবরাঈলে শ্রেষ্ঠত্ব বুঝানো। ফেরেস্তা থেকে বাদ দেয়া উদ্দেশ্য নয়।

আরেকটি  আয়াত দেখা যেতে পারে-

فِيهِمَا فَاكِهَةٌ وَنَخْلٌ وَرُمَّانٌ (

তথায় [জান্নাতে] আছে ফল-মূল, খর্জুর ও আনার। {সূরা আররাহমান-৬৮}

সূরা আররহামানের উক্ত আয়াতে প্রথমে উল্লেখ করা হয়েছে ফলমুল তারপর ‘এবং’ বলে আলাদাভাবে পরপর খেজুর ও আনারের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এখানে খর্জু ও আনারকে বিশেষ ভাবে আলাদা বুঝানো হয়েছে,  কিন্তু এগুলোও ফল।

সূরা ফাতিহা বিষয়ক লা মাদখালিদের এই অদ্ভুত যুক্তি অনুপাতে এখানেওতো বলা দরকার ছিলো যে, ফলমূল বলার যেহেতু ‘এবং’ বলে আলাদাভাবে খেজুর ও আনারের কথা বলা হয়েছে, সুতরাং খেজুর ও আনার কোন ফল নয়?

এমন আহমকী মানসিকতা যারা রাখেন, তাদের আর যা’ই কিছু বলা হোক সুস্থ্য মস্তিস্কের মানুষ বলার সুযোগ নেই।

আশা করি পরিস্কার হয়ে গেছে যে, সূরা ফাতিহাকে সূরা হিজরে মূলত আলাদাভাবে উল্লেখের কারণ হল, কুরআনের সূরার মাঝে সূরা ফাতিহার শ্রেষ্ঠত্ব তোলে ধরা। কুরআন থেকে এ সূরাটিকে বাদ দেয়া নয়। যেমন সুরা মাআরিজ ও সূরা রহমানের আয়াত দ্বারাও বিষয়টি পরিস্কার হয়ে গেল।

সূরা ফাতিহা শুধু কুরআনই নয় বরং, কুরআনের প্রধানতম সূরা। যা বিশুদ্ধ হাদীসের আলোকে প্রমাণিত। যেমন-

একটি দীর্ঘ হাদীসে হযরত আবু সাঈদ ইবনুল মু’আল্লা রা. বলেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাকে বলেছেন-

ألا أعلمك أعظم سورة في القرآن قبل أن أخرج من المسجد، فذهب النبي صلى الله عليه وسلم يخرج من المسجد، فذكرته فقال : الحمد لله رب العالمين هي السبع المثاني والقرآن العظيم الذي أوتيته.

অর্থ : মসজিদ থেকে বের হওয়ার আগেই কি কুরআনের সবচে মর্যাদাপূর্ণ সূরা আমি তোমাকে শিখিয়ে দেব না? অতপর যখন তিনি মসজিদ থেকে বের হতে উদ্যত হলেন, আমি তাঁকে স্মরণ করিয়ে দিলাম। তিনি বললেন, তা হল, ‘আলহামদু লিল্লাহি রাবিবল আলামীন…।’ এটাই হল ‘সাবআ মাছানী’ তথা বারবার পঠিত সাত আয়াত এবং মর্যাদাপূর্ণ কুরআন যা আমাকে দান করা হয়েছে।’ (সহীহ বুখারী, হাদীস ৪৭০৩, ৪৪৭৪)

এই হাদীসে আল্লাহর রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম সূরা ফাতিহাকে শুধু কুরআনের অংশ বলেই ক্ষান্ত হননি; বরং কুরআনের সবচেয়ে মর্যদাপূর্ণ সূরা হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। আর এ-ও বলে দিয়েছেন যে, আয়াতে ‘আল কুরআনুল আযীম’ দ্বারা সূরা ফাতিহা উদ্দেশ্য। কুরআনের অতি গুরুত্বপূর্ণ সূরা হওয়ার কারণে একে القرآن العظيم বলা হয়েছে।

উপরোক্ত দীর্ঘ আলোচনার আলোকে আশা করি পরিস্কার হয়ে গেছে যে, লা মাযহাবী বন্ধুদের সূরা ফাতিহাকে কুরআন থেকে বের করে দেয়া এবং কিরাত হবার বিষয়টি অস্বীকার করা কুরআন ও হাদীস অস্বিকার করার নামান্তর।

আল্লাহ তা'আলা মুসলমানদেরকে লা-মাযহাবী, তেলআবিবী, নযদি-ওহাবী, কথিত আহলে হাদিস, জাল সালাফি, ইহদীর দালালদের ফিতনা থেকে উম্মতকে হিফাযত করুন। আমীন।

ডা:বশির আহাম্মদ,চিকিৎসক, জার্নালিস্ট ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী। 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...