expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

সোমবার, ১৩ জানুয়ারী, ২০২৫

স্বাধীনতা পরবর্তীতে বাংলাদেশের উপর ভারতের আগ্রাসন

 "স্বাধীনতা পরবর্তীতে বাংলাদেশের উপর ভারতের আগ্রাসন"

ভারতীয় আগ্রাসন



চানক্যের নীতিতে পরিচালিত ভারত চিরকালই ছিলো আগ্রাসী, ওরা এতটা আগ্রাসী স্বভাবের যে নিজেদের রাজ্যগুলোও একে অন্যের উপর আগ্রাসন চালায়,এমন কি নিজ দেশের বিভিন্ন জাতির মধ্যেই এখন ঝামেলা অহরহ লেগেই আছে।

ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক দীর্ঘকাল ধরে নানামুখী, জটিল, এবং কূটনৈতিকভাবে সংবেদনশীল। ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ছিল। সেই সময় ভারত বাংলাদেশকে সমর্থন করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জড়িয়েছিল। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে দুই দেশের মধ্যে নানা ইস্যুতে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে, যা কখনো কখনো আগ্রাসনের রূপ নিয়েছে বলে অনেকেই মনে করেন। বাংলাদেশের সীমান্ত সমস্যা, পানি ভাগাভাগি এবং অর্থনৈতিক অসমতা নিয়ে ভারতের ভূমিকা নিয়ে একাধিকবার সমালোচনা হয়েছে।


স্বাধীনতার সময় ভারতের ভুমিকা নিয়ে বাংলাদেশের জনগনের মাঝে বেশ আলোচনা চলছে, কেননা স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারত কূটবুদ্ধির চাল দিয়েছিলো। বাংলাদেশকে স্বাধীনতা এনে দেওয়ার নামে চির শত্রু পাকিস্তানকে দ্বি-খন্ড করার উদ্দেশ্যে এই সহযোগীতা করে ছিলো।কেননা ১৬ ডিসেম্বর ১৯৭১ সালে ভারতীয় বাহিনী পাক বাহিনীর পরাজয় অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মুক্তি যুদ্ধের কোনো সৈনিক উপস্থিত হতে দেয় নি, চুক্তি পত্রে ভারতীয় বাহিনী পাক বাহিনীকে ভারতীয় বাহিনীর নিকট পরাজিত বলে আখ্যায়িত করে, এই বিজয়কে ভারতের বিজয় হিসাবে লিপিবদ্ধ করে, অথচ সম্পূর্ণ যোদ্ধ করেছিলো বাংলাদেশের মুক্তি বাহিনী।

তাছাড়াও স্বাধীনতা পরবর্তীতে ভারতীয় বাহিনীর বাংলাদেশে গুপ্ত হত্যা, গুম, লুন্ঠন,বুদ্ধিজিবী হত্যা তাদের অবদানকে আরো বিতর্কিত করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পরও ভারতীয় সেনারা বাংলাদেশ হতে তৎকালীন ২.২ বিলিয়ন ডলার সমমানের সম্পদ লুট করে নিয়ে যায়।

১৯৭১-এর স্বাধীনতা যুদ্ধে ভারতের ভূমিকা:

বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রামের সময় ভারত পাকিস্তানের বিরুদ্ধে সরাসরি সামরিক হস্তক্ষেপ করেছিল। ভারতীয় সেনাবাহিনীর সক্রিয় সহযোগিতায় ১৯৭১ সালের ডিসেম্বরে বাংলাদেশ স্বাধীনতা লাভ করে। তখন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের ভিত্তি ছিল পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতা। তবে স্বাধীনতার পর দুই দেশের মধ্যে যে সম্পর্ক শুরু হয়েছিল, তা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নানা ইস্যুতে জটিলতা সৃষ্টি করেছে।

সীমান্তে উত্তেজনা ও হত্যা:

সর্বাধিক আলোচিত ইস্যু হলো সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যা। ভারত-বাংলাদেশের ৪,০৯৬ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্ত বরাবর বছরে অসংখ্য সংঘর্ষ ও প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) এর বিরুদ্ধে প্রায়শই বাংলাদেশি নাগরিকদের গুলি করে হত্যা করার অভিযোগ ওঠে। বিশেষত গরু চোরাচালান ও অবৈধ অনুপ্রবেশ ঠেকানোর জন্য বিএসএফ কঠোর পদক্ষেপ নেয়, যা দুই দেশের মধ্যে মানবাধিকার লঙ্ঘনের অভিযোগ তৈরি করেছে।

সীমান্ত হত্যাকাণ্ড:

১. মানবাধিকার লঙ্ঘন: বাংলাদেশি নাগরিকদের সীমান্তে গুলি করে হত্যা মানবাধিকার লঙ্ঘন হিসেবে বিবেচিত হয়েছে। আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলো ভারতীয় বাহিনীর বিরুদ্ধে একাধিকবার অভিযোগ তুলেছে।

২. কূটনৈতিক উত্তেজনা: সীমান্ত হত্যাকাণ্ড নিয়ে বাংলাদেশ সরকার এবং ভারতের মধ্যে একাধিকবার কূটনৈতিক আলোচনার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। যদিও দুই দেশই সমঝোতার কথা বলেছে, তবুও উত্তেজনা থামানো সম্ভব হয়নি।

পানি ভাগাভাগি ইস্যু:

বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের আরেকটি বড় সমস্যা হলো অভিন্ন নদীর পানি ভাগাভাগি। বাংলাদেশ ও ভারত প্রায় ৫৪টি অভিন্ন নদীর পানি ব্যবহার করে। এর মধ্যে তিস্তা নদীর পানি ভাগাভাগি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এবং স্পর্শকাতর বিষয়। ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের সঙ্গে এই পানি নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে অমীমাংসিত একটি সমস্যা রয়ে গেছে।


তিস্তা চুক্তি: বহু বছর ধরে বাংলাদেশ তিস্তা নদীর পানি নিয়ে ভারতের সাথে একটি ন্যায্য চুক্তি চায়। তবে ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণে এই চুক্তি এখনও বাস্তবায়িত হয়নি। পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই চুক্তির বিরোধিতা করেছেন, যা ভারতীয় কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষে একটি বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে।

২. বাংলাদেশের ক্ষোভ: পানির অসম বণ্টনের ফলে বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চল, বিশেষত রংপুর অঞ্চলে কৃষি সংকট দেখা দেয়। তিস্তার পানি প্রবাহের অভাবে ফসল উৎপাদন ব্যাহত হয় এবং মানুষকে কঠিন অবস্থার মধ্যে পড়তে হয়।

অর্থনৈতিক আধিপত্য ও অসম বাণিজ্য:

ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক শক্তিশালী হলেও এর ভারসাম্য ভারতের দিকে বেশি ঝুঁকে রয়েছে। ভারত বাংলাদেশের অন্যতম বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার, তবে এই বাণিজ্যিক সম্পর্কের মধ্যে অসমতা রয়েছে বলে সমালোচকরা মনে করেন।

১. ভারতীয় পণ্যের আধিপত্য: বাংলাদেশে ভারতীয় পণ্য আমদানির হার অত্যন্ত বেশি। এর ফলে বাংলাদেশের স্থানীয় উৎপাদক এবং ব্যবসায়ীরা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে।

২. বাণিজ্য ঘাটতি: দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বাংলাদেশের বড় ঘাটতি রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে ভারতের রপ্তানির তুলনায় ভারত থেকে বাংলাদেশে পণ্য আমদানি অনেক বেশি। এতে বাংলাদেশের অর্থনীতি ক্ষতিগ্রস্ত হয় এবং স্থানীয় বাজারে প্রতিযোগিতা কমে যায়।

কূটনৈতিক সমঝোতা ও ভবিষ্যৎ:

ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক একদিকে যেমন বন্ধুত্বপূর্ণ, তেমনই কিছু ক্ষেত্রে আগ্রাসনের ইঙ্গিত বহন করে। যদিও দুই দেশই আনুষ্ঠানিকভাবে পারস্পরিক সম্মান ও সহযোগিতার ওপর জোর দেয়, তবুও বিভিন্ন ইস্যুতে ভারতকে আগ্রাসী ভূমিকায় দেখা গেছে বলে মনে করেন অনেকে। বিশেষত সীমান্তে সহিংসতা, পানি বণ্টন সমস্যা, এবং অর্থনৈতিক অসমতা নিয়ে বাংলাদেশের ক্ষোভ বাড়ছে।

সমাধানের সম্ভাবনা:

১. কূটনৈতিক আলোচনা: দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক আলোচনা ও সমঝোতার মাধ্যমে সমস্যা সমাধান সম্ভব। বিশেষ করে তিস্তা চুক্তির মতো দীর্ঘমেয়াদী সমস্যাগুলির দ্রুত সমাধান প্রয়োজন।

২. বাণিজ্য ভারসাম্য: দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ভারসাম্য আনতে বাংলাদেশ ও ভারতকে একটি ন্যায্য বাণিজ্যিক সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে।

৩. মানবাধিকার রক্ষা: সীমান্তে হত্যাকাণ্ড বন্ধ করে মানবাধিকার রক্ষার জন্য উভয় দেশকে আরও সক্রিয়ভাবে কাজ করতে হবে।


সম্পর্কের বর্তমান অবস্থা:

রক্তাক্ত জুলাই বিপ্লব ২০২৪ এর পরবর্তীতে স্বৈরাচার হাসিনাকে ছাত্র জনতা বিতারিত করলে ভারত সেই আত্মস্বীকৃত খুনী হাসিনাকে স্থান দেওয়ার পর হতে ভারতের সহিত বাংলাদেশের সম্পর্ক স্মরন কালের শ্রেষ্ঠ তলানীতে পৌঁছেছে।

উপসংহার

বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ভারতের আগ্রাসন নিয়ে আলোচনা একটি সংবেদনশীল এবং বহুমাত্রিক ইস্যু। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক ঐতিহাসিকভাবে মজবুত হলেও, বিভিন্ন সমস্যার কারণে তা মাঝেমধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি করে। ভবিষ্যতে এই সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করতে হলে দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সমঝোতা ও সমস্যাগুলির ন্যায্য সমাধান প্রয়োজন।


তথ্য সূত্র:

১। বিবিসি বাংলা,

২।উইকিপিডিয়া, 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...