ভারতীয় জনগনের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের সুস্পষ্ট বক্তব্য
ভারত আমাদের নিকটতম প্রতিবেশী রাষ্ট্র, ভারতের জনগনের সাথে আমাদের পূর্ব পুরুষদেরনআমল হতে রক্তের বন্ধন অস্বীকার করার উপায় নাই কেননা ভারত বিভাজনের পূর্বে বাংলাদেশের মানুষ গুলো আসেপাশের রাজ্য ত্রিপুরা,আসাম,মিজোরাম, মেঘালয়,সেভেন সিস্টার্স, বিহার,উড়িষ্যা এবং পশ্চিম বঙ্গেরমসাথে জড়িত ছিলো। আমাদের দেশের বিভাজন হলেও হৃদয়ের বিভাজন সম্ভব নয়।
প্রিয় ভারতবাসী, বাংলাদেশের স্বাধীনতায় যদিও ভারত চানক্যের নীতি অনুস্মরন করে ভারতের চির শত্রু পাকিস্তানকে বিভাজনের জন্য ১৯৭৭১ সালে কুটনৈতিক সমর্থন দিয়েছিলো এবং একদম স্বাধীনতার শেষ মুহূর্তে তৈরীকৃত ঘরে পোলিশিংয়ের মত কাজ করার নামে বাংলাদেশকে সরাসরি সহায়তা করেছিলো, তথাপিও বাংলাদেশে স্বাধীনতার পরবর্তীতে তৎকালীন ২.২বিলিয়ন মার্কিন ডলার ভারততীয় সেনা বাহিনী লুট করেছিলো তবুও বাংলাদেশের স্বাধীনতার যুদ্ধে ভারতীয় জনগনের সমর্থন ও সহযোগীতাকে আমরা বাংলাদেশীরা সব সময়ে শ্রদ্ধা ভরে স্মরন করি এবং ভারতের জনগনের দু:খ ও কষ্টে নিজেদের আমরা ঐতিহাসিক ভাবেই সম্পৃক্ত রাখার চেষ্টা করি যেমনটা আপনারাও আমাদের বিষয়ে অনুভব করেন।
কিন্তু বিগত স্বৈরশাসক, খুনী শেখ হাসিনা ও তাদের দোসরদের ১৫ বছর যাবত বাংলাদেশের জনগনের ইচ্ছা ও কাঙ্খার বিরুদ্ধে গিয়ে ভারত সরকারের নি:শর্তে সমর্থন আমাদের বাংলাদেশের এক অরাজকতার সৃষ্টি করেছে যা এদেশের সম্পদ পাচার,খুন, গুম, আয়নাঘর ইত্যাদির মত অপরাধকে উৎসাহিত করেছ এবং কোনো কোনো ক্ষেত্রে এসকল কাজে ভারতীয় গোয়েদা সংস্থার সরাসরি কিংবা পরোক্ষ ভাবে সমর্থনের প্রমান পাওয়া যাচ্ছে। ভারতের এমন আচরন আমাদের দেশের ১৮ কোটি মনব সত্তার জন্য নাভিশ্বাস অবস্থা তৈরী করেছিলো।
তা ছাড়াও বাংলাদেশের স্বাধীনতার পর ভারতীয় বাহিনীর নির্লজ্জ সম্পদ লুন্ঠন,গুপ্ত হত্যা, রক্ষী বাহিনীর মাধ্যমে গনহত্যা, সীমান্তে কাটা তারের বেড়া, সীমান্তে বিএসএফের বাংলাদেশের ভুমি অবৈধ দখল, সীমান্তে বিএসএফের বিনা উস্কানীতে বাংলাদেশী নাগরিকদের গুলি করে হত্যা,ফারাক্কা,টিপাইমূখ সহ সকল যৌথ নদী সমূহের পানি বাঁধ দিয়ে সরিয়ে নিয়ে বাংলাদেশকে মরুভূমিতে পরিনত করার প্রকল্প, বাংলাদেশে ভারতীয় টিবি চ্যানেল সমূহ বিনা বাঁধায় চলতে পারলেও বাংলাদেশী চ্যানেল সমূহ রতে প্রচারে নিষেধাজ্ঞা, বিগত হাসিনা সরকারের আমলে বিনা শুল্কে বাংলাদেশের বন্দর ব্যবহার, ট্রানজিট চুক্তি, বাংলাদেশের বুক চিরে ভারতের করিডোর তৈরী, জুলাই অভ্যুত্থানের পরবর্তীকালে জুলাই গনহত্যার খলনায়িকা হাসিনা ও তার দোসরদের আশ্রয় ও প্রশ্রয় প্রদান এবং শেখ হাসিনাকে ফেরত দিতে অস্বীকৃতি সহ ভারত সরকারের বাংলাদেশের নিরীহ জনগনের প্রতি হাজারো অপরাধ বাংলাদেশের মানুষের মনে ভারত বিরোধিতা স্বাধীনতার পরবর্তী বিগত বছর গুলোতে বাংলাদেশের মানুষদেরকে বিক্ষুব্ধ ও প্রতিবাদী করে তুলেছে যা বাংলাদেশের মানুষের ন্যায্য হিস্যা আদায়ে অনুপ্রানিত করেছে।
বাংলাদেশের মানুষের এই ক্ষোভ দিনে দিনে ভারতের প্রতি প্রতিবাদী করে তুলেছে। আমাদের এই প্রতিবাদ ভারতের জনগনের বিরোধীতা নয়, বরং আমাদের প্রতিবাদ ভারত সরকারের চানক্য নীতি, বাংলাদেশকে ভারতের দাবিয়ে রাখার নীতি, বাংলদেশের মানুষকে শোষন নীতি, বাংলাদেশের মানুষকে ভারত সরকারের হত্যার অপরাধ, বাংলাদেশকে অকার্যকর ও ভারতের করদ রাজ্যে পরিনত করার অপরাধ সহ হাজারো অপরাধের বিরোদ্ধে প্রতিবাদ।
আমরা বাংলাদেশের জনগন আশা করবো, আমরা যেমন ভারতের মানুষের অধিকার ও সন্মানের প্রতি শ্রদ্ধাশীল তেমনি ভারতের জনগনও বাংলাদেশের মানুষের ন্যায্য অধিকার ও বাংলাদেশের স্বাধীনতার প্রতি তারা ১৯৭১ সালের মত শ্রদ্ধাশীল হবেন এবং বাংলাদেশের মানুষের ন্যায্য অধিকার ও স্বাধীনতায় ভারত সরকারের উদাসীন আচরনের প্রতি লক্ষ্য রেখে আপনারা ভারতীয় জনগনও ভারত সরকারকে সচেতন করতে সচেষ্ট থাকবেন। কেননা, যত শক্তিশালী আপনারা হোননা কেনো প্রতিবেশীর সাথে খারাপ সম্পর্ক রেখে আপনারা কোনো ভাবেই ভাল থাকতে পারবেন না। তাই বাংলাদেশের জনগনের পক্ষ হতে ভারতীয় জনগনের প্রতি আমার সুস্পষ্ট বার্তা, আসুন আমরা পরস্পর পরস্পরের ভালো প্রতিবেশী হই, এক প্রতিবেশী অন্য প্রতিবেশীর সহযোগী হই, একে অন্যের বিপদে পাশে দাঁড়াই, সম্পর্ক হোক ভালবাসা, শ্রদ্ধা ও একে অন্যের অধিকারের প্রতি সহানুভূতির ভিত্তিতে।
আমি আবারো স্মরন করিয়ে দিতে চাচ্ছি যে বাংলাদেশে যে ভারত বিরোধিতা হচ্ছে তা ভারতের জনগনের বিরুদ্ধে নয়, এ প্রতিবাদ ভারতের সরকারের বাংলাদেশের জনগনের প্রতি, শেষন নীতি, দমন নীতি, বড় ভাই সরূপ আচরন সহ অন্যান্য বৈষম্যের বিরোদ্ধে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ