expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

মঙ্গলবার, ২৮ জানুয়ারী, ২০২৫

আদিবাসী বাগদি নৃগোষ্ঠীর অজানা কথা

 বাংলাদেশের বাগদি নৃগোষ্ঠী 

বাগদি আদিবাসী

বাগদিরা হল আদিবাসী , যারা দ্রাবিড় লিঙ্কের লোকদের থেকে এসেছে , যারা ভারতের পশ্চিমবঙ্গ এবং বাংলাদেশে পাওয়া যায় যারা চাষাবাদ এবং মাছ ধরার মতো পেশার সাথে যুক্ত ছিল। তারা দুলে বর্ণের সাথে সম্পর্কিত।  বাগদিরা পশ্চিমবঙ্গের পশ্চিম প্রান্তের বাঁকুড়া , বীরভূম এবং অন্যান্য জেলায় জনবহুল। দুলে সহ বাগদিরা পশ্চিমবঙ্গের সর্বাধিক অসংখ্য তফসিলি জাতির প্রতিনিধিত্ব করে। বাগদিরা নিজেদের ' বর্গা ক্ষত্রিয় ' বলে দাবি করে।

বাগদিদের ইতিহাস:
এদের সুস্পষ্ট ইতিহাস এখনো জানা যায় নি, তবে যতটুকু জানা যায় ভারতের জেএন ভট্টাচার্য বাগদিদের একটি আদিবাসী উপজাতি হিসেবে বর্ণনা করেছেন, যারা জেলে, কাঠমিস্ত্রি এবং লিটার বাহক ছিলেন। বাগদিরা ব্রিটিশদের ফৌজদারি উপজাতি আইনের অধীনে বাংলার অপরাধী উপজাতি হিসেবেও পরিচিত ছিল।

বাগদি জনসংখ্যা ও স্বাক্ষরতা:
২০০১ সালের ভারতীয় আদমশুমারিতে পশ্চিমবঙ্গে বাগদিদের সংখ্যা ছিল 2,740,385 এবং তারা পশ্চিমবঙ্গের তফসিলি জাতি জনসংখ্যার 14.9 শতাংশ। বাগদিদের মধ্যে 47.7 শতাংশ শিক্ষিত - 60.4 শতাংশ পুরুষ এবং 34.8 শতাংশ মহিলা শিক্ষিত।

বাংলাদশ বাগদি উপজাতি:
বাংলাদেশের দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের জেলাগুলোতেই সাধারণত এ সম্প্রদায়ের মানুষদের দেখা যায়। সমাজে অচ্ছুত বলে পরিচিত এ সম্প্রদায়ের মানুষ মাছ-কাঁকড়া-কুইচ্যা-কচ্ছপ-খরগোশ শিকার করে, ইঁদুরের গর্ত থেকে ধান কুড়িয়ে চলে তাদের জীবন। বর্তমানে বিভিন্ন কারণে চরম অস্তিত্ব সংকটে রেয়েছে সম্প্রদায়টি।

অস্তিত্ব সংকট নিয়েও  ঝিনাইদহ, মাগুরা, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, চুয়াডাঙ্গা, যশোর, সিরাজগঞ্জ, পাবনা, নাটোর, খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট এলাকাতেই এখনো কিছু বাগদী জনপদ টিকে আছে।

সরেজমিনে জানা যায়, ঐতিহাসিক ভাবেই বাগদী জাতি জলাভূমি প্রতিবেশী এলাকায় বসতি গড়ে তুলেছিলো। বিল, বাওড়, নদীর কিনার, নালা ও খালের ধারেই জলাভূমি থেকে কুড়িয়ে পাওয়া সহায় সম্পদে গড়ে ওঠা সেই দুঃসাহসী স্বনির্ভর বাগদী আখ্যান এখন আর নেই। জীবন ধারণের জন্য নদি, বিল-হাওড়ে বা কৃষি খামারে নামতে গেলেই ঘটে বিপত্তি। বিল-বাওড় নদীর ইজারাদার কিম্বা খামারের মালিকের হাতে অনেক সময় হতে হয় শারীরিকভাবে নির্যাতিত।

এককালে বাগদীরাও নিজস্ব সর্বপ্রাণবাদী ধর্ম পালন করতেন কিন্তু বাঙালি হিন্দু সমাজের সাথে বসবাসের ফলে তারাও নিজস্ব ধর্ম থেকে বাধ্য হয়েছেন সনাতন হিন্দুধর্মে আত্তীকরণের। বাঙালি হিন্দু সমাজের কঠোর বর্ণপ্রথা বাগদীদের অচ্ছুত ও নিচুজাত বানিয়ে রেখেছে এখনো। এখনো বাগদীদের সাথে কথিত বর্ণহিন্দুর জলচল নেই।

আমন ধান কাটার পরই বাগদী সমাজও আপন জাতিগত আচাররীতিতে টানটান হয়ে ওঠে। বাঙালি কৃষকরা অগ্রহায়ণ থেকে পৌষের প্রথম দিকে বিল এলাকার আমন ধান কেটে ঘরে তুলেন। আমন মওসুমে বিল এলাকার দেশি আমন ধানের শীষ কেটে কেটে ইঁদুরেরা গর্তে নিয়ে যায়। আর তখন বাগদিরা ইন্দুরগাতি উৎসব পালন করে থাকে। কারণ এই ইঁদুরের গর্ত থেকে তারা ধান সংগ্রহ করে। কিন্তু বর্তমান সময়ে বাগদি সম্প্রদায়ের মধ্যে এই উৎসবে অনেকখানি ভাটা পড়েছে।

সমাজের মূল ধারার বাইরে থাকায় এ জনগোষ্ঠীর জীবনযাত্রায় তেমন কোনো উন্নয়ন ঘটেনি। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, চিকিৎসার মতো মৌলিক অধিকার ভোগ করতেই এদের রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়। অভিযোগ আছে, কয়েক বছর আগেও এ বাগদিরা কোন ধরনের সরকারি সাহায্য ভোগ করতে পারতো না। এমনকি তাদের ছেলেমেয়েদের বিদ্যালয়েও ভর্তির সুযোগ তেমনভাবে পেতো না।

এদিকে রয়েছে চিকিৎসা সংকট। এখনো এ সম্প্রদায়টি ঝাড়ফুঁকের ওপরই নির্রভশীল। এছাড়াও রয়েছে সুষ্ঠু পরিবেশের ঘাটতি। বাল্য বিবাহ যেন হরহামেশাই হচ্ছে। অপুষ্ট শিশুগুলোর দুরন্ত দৌড়ঝাঁপ আসলে বুঝতে দেয় না তাদের জীবন করুণ দিকটিকে। আর বয়স্কদের টিকে থাকার বিষয়টি আরো বেদনাদায়ক। এতোকিছুর পরও তাদেরকে ঘিরে নেই কোন সুষ্ঠু পরিকল্পনা।


কালের বিবর্তনে অনেকেই ভারতসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় চলে গেছে বাগদি সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠী। এখন এই গ্রামে ১৫/১৬ টি বাগদি সম্প্রদায় পরিবারের বসবাস।  আমরা সেই ছোটবেলা থেকে দেখে আসছি তারা হিন্দু ধর্মের অনুসারী হলেও হিন্দুরাদের কাছে তাদের মূল্যায়ন সেইভাবে আসেনি। বাগদি সম্প্রদায়ের লোকেরা পূজাপার্বন সবই হিন্দুদের নিয়ম নীতিতেই করতে দেখে আসছি। আগে তারা সরকারি কোনো সুযোগ সুবিধা না পেলেও এখন কিছু কিছু সুযোগ সুবিধা পাচ্ছে যেমন, প্রতিবন্ধি ভাতা, বসষ্কভাতা, গর্ভবতি ভাতা ইত্যাদি। তবে পিছিয়ে পড়া এই জনগোষ্টির দিকে সরকারি আরো সুযোগ সুবিধা পেলে তারা অস্তিত্ব সংকট থেকে মুক্তি পাবে।



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...