কওমী সমাজের অন্ধকার অধ্যায়
কাদিয়ানী সমস্যার মূলে কারাঃ
বর্তমানে মুসলমানদের ছুরতে দ্বীন ইসলাম এর মধ্যে যে ফিতনাগুলো (শিয়া, ওহাবী, খারিজী ইত্যাদি) বিরাজমান তার মধ্যে চরম ভয়ঙ্কর ফিতনা হচ্ছে কাদিয়ানী ফিতনা। মূলত, পাঞ্জাবের ‘কাদিয়ান’ নামক গ্রামে ১৮৩৫ সালে জন্মগ্রহণকারী ব্রিটিশের দালাল মির্জা গোলাম আহামদকে যদিও কাদিয়ানী মতবাদের প্রতিষ্ঠাতা বলা হয়, কিন্তু তাকে এই মতবাদ প্রতিষ্ঠায় প্ররোচিত করে ভারতের দেওবন্দ মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা কাছশেম নানুতবী। এই কাশেম নানুতবী দেওবন্দ মাদরাসার প্রতিষ্ঠার ৭ বছর পর ১৮৭৪ সালে ‘তাহ্যীরুন্নাছ’ নামক একটি গ্রন্থ রচনা করে; যার ২৫ পৃষ্ঠায় সে পবিত্র কুরআন শরীফ এর সূরা আহযাব শরীফ এর ৪০ নম্বর আয়াত শরীফ এর মধ্যে বর্ণিত ‘খাতামুন নাবিইয়ীন’ শব্দ মুবারকের ব্যাখ্যায় উল্লেখ করে যে, “খাতামুন্ নাবিইয়ীন অর্থ হলো- ‘মূল নবী’। অন্যান্য নবীগণ ছিলেন সাময়িক নবী। যারা ‘খাতামুন নাবিইয়ীন’ শব্দের অর্থ ‘শেষ নবী’ বলে তারা জাহিল ও মূর্খ। নবী পাক সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আগে বা সর্বশেষে আসার মধ্যে কোনো ফযীলত নেই। ফযীলত হলো ‘মূল নবী’ হওয়ার মধ্যে। তার পরে যদি ১০০০ নবীরও আগমন মেনে নেয়া হয়, তাতেও হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার খতমে নুবুওয়াত-এর কোনো রুপ তারতম্য হবে না।” নাঊযুবিল্লাহ মিন যালিক!
কাছিম নানুতবীর বাতলে দেয়া এই পথ ধরে ১৯০৫ সালে মির্জা গোলাম কাদিয়ানী নবী দাবি করে বসে। পরবর্তীতে গোলাম কাদিয়ানীকে এই বিষয়ে জিজ্ঞাসা করা হলে সে বলে যে, “মাওলানা কাছিম নানুতবী ছাহেব তো তার ‘তাহ্যীরুন্নাছ’ গ্রন্থে হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উনার পরে ১০০০ নবীর আগমনের সম্ভাবনা স্বীকার করে নিয়েছে। সুতরাং আমি (কাদিয়ানী) একজন নবী দাবি করাতে দোষ কোথায়? আরো তো ৯৯৯ জন দাবি করতে পারে।” নাঊযুবিল্লাহ মিন যালিক!
সুতরাং দেখা যাচ্ছে, কাদিয়ানী সম্প্রদায়ের মূল প্রতিষ্ঠাতা হচ্ছে দেওবন্দের কাছিম নানুতবী, আর মির্জা গোলাম কাদিয়ানী তার রূপদানকারী। এখন মির্জা গোলাম কাদিয়ানী যদি আহলে সুন্নত ওয়াল জামায়াত উনাদের হযরত ইমাম-মুজতাহিদ রহমতুল্লাহি আলাইহিম উনাদের ফতওয়া মুতাবিক কাফির হয়, তাহলে কাছিম নানুতবীর ব্যাপারে ফায়ছালা কি হবে?
শুধু তাই নয়, কাছিম নানুতবীর এই দেওবন্দ মাদরাসা হতে যে সমস্ত মাওলানা পয়দা হয়েছে তাদের অনেকেরই লিখিত গ্রন্থে কুফরী-শিরকীর অস্তিত্ব লক্ষ্য করা যায়, যা কোনো মুসলমানের পক্ষে ধারণা করাও অসম্ভব। পরিশেষে ২০০৯ সালের নভেম্বর মাসে দেওবন্দ মাদরাসার বার্ষিক অনুষ্ঠানে হিন্দু যোগী রামদেওয়ের কাছে দীক্ষা নেয়ার মধ্যে দিয়ে তাদের মুখোশ পরিপূর্ণরূপে উন্মোচিত হয়েছে এবং প্রকাশ পেল যে, দেওবন্দীরা মুশরিক।
দেওবন্দীরা চরম শ্রেণীর গুমরাহ ও বিভ্রান্ত তাদের কিছু ভয়ঙ্কর কুফরী আক্বীদা নিম্নে দেয়া হলো-
১। আল্লাহ (পাক তিনি) মিথ্যা বলতে পারেন। নাঊযুবিল্লাহ!
(রশিদ আহমদ গাঙ্গুহী, ফতওয়া রশিদিয়া, ১ম খ-, পৃষ্ঠা ১৯, তালিফাত রশীদিয়া, কিতাবুল আক্বাঈদ অধ্যায় পৃষ্ঠা ৯৮, খলীল আহমদ আম্বেটী- তাজকিরাতুল খলীল, পৃষ্ঠা ১৩৫, মেহমুদ হাসান, আল জিহাদুল মুগিল- পৃষ্ঠা ৪১)
২। আল্লাহ (পাক তিনি) বান্দা ভবিষ্যতে কি করবে তা আগে থেকে বলতে পারেন না। বান্দা কর্ম সম্পাদনের পর আল্লাহ (পাক তিনি) তা জানতে পারেন। নাঊযুবিল্লাহ! (হুসাইন আলী, তাফসীরে বুঘাতুল হাইরান, পৃষ্ঠা ১৫৭-১৫৮)
৩। হুযূর পাক ছল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম (উনার) জ্ঞানের চেয়ে শয়তান ও হযরত আযরাঈল আলাইহিস সালাম (উনার) জ্ঞান বেশি। নাঊযুবিল্লাহ! (খলীল আহমদ আম্বেটী, বারাহীন-ই কাতেয়া, পৃষ্ঠা ৫১) (চলবে……….)
[১।তথ্য সূত্র: আনজুমান-ই রহমানিয়া আহমাদিয়া সুন্নিয়া ট্রাষ্ট,
২।মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন। (বিএ ইন আরবি সাহিত্য ও ইসলাম শিক্ষা),
৩।(আবুল হাসান নাদভী, সীরাতে সাইয়েদ আহমাদ শহীদ এবং ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, আহলেহাদীছ আন্দোলন : উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষিতসহ,পিএইচ.ডি. থিথিস)। ]
৪. “আল্লাহর নবীর নিকট নিজের পরিণতি এবং দেয়ালের পেছনের জ্ঞানও নেই।”
[বারাহীন-ই ক্বাতি‘আহ্,পৃষ্ঠা ৫১,কৃত: খলীল আহমদ আম্বেটভী দেওবন্দী]
৫. “হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহ্ তা‘আলা তেমনি জ্ঞান দান করেছেন,যেমন জ্ঞান জানোয়ার,পাগল এবং শিশুদের নিকটও রয়েছে।”
[হিফযুল ঈমান,পৃষ্ঠা ৭,কৃত: মৌং আশ্রাফ আলী থানভী দেওবন্দী]।
৬. “নামাযে হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি শুধু খেয়াল যাওয়া গরু-গাধার খেয়ালে ডুবে যাওয়া অপেক্ষাও মন্দতর।”
[সেরাতে মুস্তাক্বীম,পৃষ্ঠা ৮৬,কৃত: মৌং ইসমাঈল দেহলভী ওহাবী]।
৭. “‘রাহমাতুল্লিল ‘আলামীন’ (সমস্ত বিশ্বের জন্য রহমত) রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এঁর খাস উপাধি নয়।হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছাড়া অন্যান্য বুযুর্গকেও ‘রাহমাতুল্লিল ‘আলামীন’ বলা যেতে পারে।”
[ফাতাওয়া-ই রশীদিয়া,২য় খণ্ড,পৃষ্ঠা-১২, কৃত মৌং রশীদ আহমদ গাঙ্গূহী দেওবন্দী]।
৮. “‘খাতামুন্নবিয়্যীন’ অর্থ ‘আখেরী বা শেষনবী’ বুঝে নেওয়া সাধারণ লোকদের খেয়াল মাত্র।জ্ঞানী লোকদের মতে এ অর্থ বিশুদ্ধ নয়।হুযূর আক্রামের যুগের পরও যদি কোন নবী পয়দা হয়, তবে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ নবী হওয়ায় কোন ক্ষতি হবে না।”
[তাহযীরুন্নাস,পৃষ্ঠা ৩ ও ২৫, কৃত দারুল উলূম দেওবন্দ মাদরাসার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মৌং কাসেম নানুতভী]।
৯. “হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেওবন্দের আলেমদের সাথে সম্পর্কের সুবাদে উর্দূ শিখতে পেরেছেন।”
[বারাহীন-ই ক্বাতি‘আহ্, পৃষ্ঠা ২৬,কৃত: মৌং খলীল আহমদ আম্বেটভী দেওবন্দী]।
১০. “নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এঁর সম্মান শুধু বড় ভাইয়ের মতই করা চাই।”
[তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান,পৃষ্ঠা ৫৮,কৃত: মৌং ইসমাঈল দেহলভী ওহাবী] ১১. “আল্লাহ্ তা‘আলা ইচ্ছা করলে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সমকক্ষ কোটি কোটি পয়দা করতে পারেন।”
১১. আল্লাহ তায়ালা ইচ্ছা করলে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সমকক্ষ কোটি কোটি পয়দা করতে পারেন।
[তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান,পৃষ্ঠা ১৬,কৃত: মৌং ইসমাঈল দেহলভী ওহাবী]।
১২. নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মরে মাটিতে মিশে গেছেন। [তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান, পৃষ্ঠা ৫৯, কৃত মৌং ইসমাঈল দেহলভী]।
১৩. “নবী-রসূল সবাই অকেজো।”
[তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান,পৃষ্ঠা ২৯,কৃত: মৌং ইসমাঈল দেহলভী ওহাবী]
১৪। নবী প্রতিটি মিথ্যা থেকে পবিত্র ও মাসুম হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।
[তাক্বভিয়াতুল আকাঈদ পৃষ্ঠা ২৫ কৃত মৌং কাসেম নানুতবী]।
১৫. “নবীর প্রশংসা শুধু মানুষের মতই কর; বরং তা অপেক্ষাও সংক্ষিপ্ত কর।”
[তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান,পৃষ্ঠা ৬১,কৃত: মৌং ইসমাঈল দেহলভী]
[১।তথ্য সূত্র: আনজুমান-ই রহমানিয়া আহমাদিয়া সুন্নিয়া ট্রাষ্ট,
২।মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন। (বিএ ইন আরবি সাহিত্য ও ইসলাম শিক্ষা),
৩।(আবুল হাসান নাদভী, সীরাতে সাইয়েদ আহমাদ শহীদ এবং ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, আহলেহাদীছ আন্দোলন : উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষিতসহ,পিএইচ.ডি. থিথিস)। ]
৪।[omarfaruk.home.blog]
১৬. “বড় অর্থাৎ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আর ছোট অর্থাৎ অন্যসব বান্দা বেখবর ও অজ্ঞ।”
[তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান,পৃষ্ঠা ৩,কৃত: মৌং ইসমাঈল দেহলভী ওহাবী]
১৭. “বড় মাখলূক অর্থাৎ নবী, আর ছোট মাখলূক অর্থাৎ অন্যসব বান্দা আল্লাহর শান বা মর্যাদার সামনে চামার অপেক্ষাও নিকৃষ্ট।”
[তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান,পৃষ্ঠা ১৪,কৃত: মৌং ইসমাঈল দেহলভী ওহাবী]
১৮. “নবীকে ‘তাগূত’ (শয়তান) বলা জায়েয।”
[তাফসীর-ই বুলগাতুল হায়রান, পৃষ্ঠা ৪৩, কৃত. মৌং হুসাইন আলী ওয়াঁভচরান ওয়ালা]
১৯. “নবীর মর্যাদা উম্মতের মধ্যে গ্রামের চৌধুরী ও জমিদারের মত।”
[তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান,পৃষ্ঠা ৬১,কৃত: মৌং ইসমাঈল দেহলভী ওহাবী]
২০. “যার নাম মুহাম্মদ কিংবা আলী তিনি কোন কিছুর ইখতিয়ার রাখেন না। নবী ও ওলী কিছুই করতে পারেন না।”
[তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান,পৃষ্ঠা ৪১,কৃত মৌং ইসমাঈল দেহলভী ওহাবী]
২১. “উম্মত বাহ্যিকভাবে আমলের মধ্যে নবী থেকেও বেড়ে যায়।”
[তাহযীরুন্নাস,পৃষ্ঠা ৫,কৃত: মৌং কাসেম নানুতভী]
২২. “দেওবন্দী মোল্লা হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পুলসেরাত হতে পতিত হওয়া থেকে রক্ষা করেছেন।”
[তাফসীর-ই বুলগাতুল হায়রান,পৃষ্ঠা ৮, মৌং হুসাইন আলী]
২৩. “‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ আশরাফ আলী রসূলুল্লাহ্’ আর ‘আল্লাহুম্মা সল্লি ‘আলা সায়্যিদিনা ওয়া নবীয়্যিনা আশরাফ আলী’ বলার মধ্যে সান্ত্বনা রয়েছে, কোন ক্ষতি নেই।”
[রিসালা-ই ইমদাদ,পৃষ্ঠা ৩৫,সফর – ১৩৩৬ হিজরি সংখ্যা]
[১।তথ্য সূত্র: আনজুমান-ই রহমানিয়া আহমাদিয়া সুন্নিয়া ট্রাষ্ট,
২।মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন। (বিএ ইন আরবি সাহিত্য ও ইসলাম শিক্ষা),
৩।(আবুল হাসান নাদভী, সীরাতে সাইয়েদ আহমাদ শহীদ এবং ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, আহলেহাদীছ আন্দোলন : উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষিতসহ,পিএইচ.ডি. থিথিস)।
৪।[omarfaruk.home.blog]
আজ বাংলাদেশের সবচেয়ে হাক্বানী দাবী করা কওমী অঙ্গনের মুশরিক পীর যার মূরীদরা সব সময় অন্যদের আকীদা নিয়ে সমালোচনা করে তাদের পথ ভ্রষ্টতা নিয়ে আলোচনা করব।
আমরা শিক্ষিত ও সচেতন সমাজ চরমোনাই এবং গংদের বানানো
বাঘের কিচ্ছা,
সাপের কিচ্ছা,
জ্বীনের কিচ্ছা,
ব্যাঙের কিচ্ছা,
কুকুরের কিচ্ছা,
বেগুনের কিচ্ছা,
পিয়াজের কিচ্ছা,
বাইম মাছের কিচ্ছা,
জাহাজের কিচ্ছা,
বাবা হুজুরের কিচ্ছা,
দাদা হুজুরের কিচ্ছা,
কবরে শুয়োরের কিচ্ছা,
হাত পাখার কিচ্ছা ইত্যাদি শোনতে শোনতে ক্লান্ত।
না জানি আরো কত বানানো কিচ্ছা শোনতে হয়।
এসব আজগুবী কিচ্ছা বলে বলে ওয়াজ করে,আবার নিজেদেরকে হক্বের, ডিলার, মুফতি, পীর দাবি করে।
কিচ্ছা-কাহিনীর দিন শেষ। আর কত বনোয়াট কিচ্ছা কাহিনী আমাদেরকে শোনতে হবে?
তাছাড়াও রয়েছে তাদের বাহারি জিকিরের মজমা।
এখন তো গীবত ছাড়া আবার চরমোনাই হুজুরের মাহফিল জমে না। কিচ্ছা বাবার নতুন কোন পুজি নাই , একমাত্র পুজি গীবত।
ফেসবুকেও এই পোষ্টের নীচে তাদের বক্তব্য দেখলেই তাদের চরিত্র ভাল ভাবে বুঝা যাবে।
এখন চরমোনাইর রচিত বই এর ভ্রান্ত আকিদা ও তাদের প্রচলিত কিছু ভুল নিয়ে আজ আলোচনা করব।
(১) মারেফতের পীর ও ওলীদের মর্যাদা নবীদের চেয়েও বেশী ! (আশেক
মাশুক ৮৮-৯০ পৃষ্ঠা ),
(২) আখেরাতে পীরগণ মুরিদের জন্য সুপারিশ করবে । ( ভেদে মারেফত ৬০ পৃষ্ঠা ),
(৩) পীরের হুকুমে মৃত ব্যক্তিকে জীবিত করে ।( ভেদে মারেফত ১৫ পৃষ্ঠা )
(৪) পীরের কাছে মুরীদ হওয়া ফরজ ।( মাওয়ায়েজে এহছাকিয়া ৫৫ পৃষ্ঠা )
(৫) আল্লাহর কাছে আন্দাজ নাই । ( ভেদে মারেফত ১৫ পৃষ্ঠা )
(৬) শরীয়ত বহির্ভুত হলেও পীরের হুকুম মানা মুরীদের জন্য বাধ্যতামূলক ।
( আশেক মাশুক বা এস্কে এলাহী ৩৫ পৃষ্ঠা ),
(৭) পীর কাফন চোরকে পুলসিরাত পার করিয়া দিবেন । ( ভেদে মারেফত ২৭-২৮
পৃষ্ঠা )
(৮) পরকালে পীর ও ওলীদের ক্ষমতার সীমা থাকিবে না । ( আশেক মাশুক ৮১ পৃষ্ঠা)
(৯) পীর কেয়ামতের দিন সকল মুরীদের গুনাহমাফ করিয়ে দিবেন ।(ভেদে মারেফত ৩৪পৃষ্ঠা )
(১০) আমি আল্লাহ পাকের দরবার থেকে জোরপূর্বক করে রুহ নিয়ে আসিয়াছি ।( ভেদে মারেফত ১৫ পৃষ্ঠা ),
(১১) পীরগণ কেয়ামতের দিবসে মুরীদগণকে সাহায্য করবে ।
( ভেদে মারেফত ২৫-২৬ পৃষ্ঠা, আশেক মাশুক ৬৬-৮১ পৃষ্ঠা )
(১২) মৃত্যুর সময় পীর স্বীয় মুরীদকে শয়তান থেকে বাঁচাতে পারেন ।(ভেদে মারেফত ৩১ পৃষ্ঠা)
চরমোনাই পীর সাহেব ১২৬ তরীকা কোথায়
পাইলেন ?
হাক্বানী ও মিয়ারে হক্বের দাবীদার, শিশু বলাদকার কারী সম্প্রদায় দেওবন্ধী-কওমী মাদরাসা গুলোর ভেতরকার কিছু দূর্নীতি ও অনিয়ম আজ তোলে ধরব আপনাদের সামনে।
১।গরীব ও এতিমের নামে ব্যবসা:
গরীব এতিম ছাত্রদেরকে ফ্রী খাওয়ানো ও পড়ানোর নাম দিয়ে, ধনী ও সাধারণ মানুষের কাছ থেকে, সাধারণ দান ও যাকাত ফিতরা বাবদ লক্ষ লক্ষ কোটি কোটি টাকা উঠানো হয়। গোরাবা ফান্ডের নামে তাদের একাউন্ট অনেক ভারী।
কিন্তু যেই এতিম গরিব ছাত্রদের নামে এত টাকা উঠানো হয়, সাধারণ মানুষও গরিব এতিম ছাত্রদের জন্য মহব্বতে দান খয়রাত করে, সেই গরিব এতিম ছাত্রদেরকে কিছুই দেওয়া হয় না।
খবর নিয়ে দেখুন, কোন গরিব এতিম ছাত্রদেরকে ফ্রী ভর্তি ও করা হয় না এবং ফ্রি খাওয়ানো ও হয় না।
২। বেতনের বৈষম্যের মাধ্যমে কারসাজি:
ধরুন একটা ছাত্রের জন্য বেতন ২০০০/= খোরাকি ৩০০০/= মোট প্রতি মাসে নির্ধারণ করা হলো ৫০০০/= পাঁচ হাজার টাকা।
এখন ধনী ছাত্র প্রতি মাসে ৫০০০/= এই টাকা দিয়ে দেয়। কারন তার তো যাকাত খাওয়া জায়েজ নাই।
কিন্তু গরীব ছাত্রকে ভর্তির সময়ই বলে দেয়, আমাদের মাসিক মোট ৫০০০/= টাকা।
বেতন ২০০০ টাকাতে কোন ছাড় নাই। কিন্তু খোরাকী ৩০০০ টাকাতে আমরা ৫০০ থেকে সর্বোচ্চ ১০০০ টাকা যাকাত ফান্ড থেকে দিতে পারবো।
অথচ এভাবে না বলে, বলতে পারতো আপনি ৫০০ বা ১০০০ টাকা কম দিয়েন। মনে মনে যাকাতের নিয়ত করলেই তো হয়ে যায়।
৩।যাকাত খাওয়ানোর ভয় দেখিয়ে টাকা মারা:
অনেক গরীব ছাত্রের গার্ডিয়ান, যাকাত নাম শুনেই আত্মসম্মানবোধে বলে দেয়, না না লাগবেনা। যেহেতু প্রায় সবটাকাই আমাকে দিতে হবে তাই ৫০০ বা ১০০০ টাকা যাকাত ফান্ড থেকে ছাড় নেওয়ার দরকার নাই। এইটা ও আমি কষ্ট হলে ও দিয়ে দিবো।
তার মানে দাড়ালো, ধনী ছাত্র যেমন ৫০০০ টাকা দিবে, গরীব এতিম ছাত্রকে ও, ৪০০০ থেকে ৪৫০০ টাকা দিতে হবে।
অথচ প্রচার করে আমরা গরীব এতিমকে ফ্রী খাওয়াই ও পড়াই। ডাহা মিথ্যা কথা।
৪।রান্নার আয়োজনে বাটপারী:
প্রতিটি মাদরাসায় গিয়ে দেখুন, গরীব এতিম ও ধনী সকল ছাত্রের জন্যই একই পাতিলে ভাত তরকারী রান্না করা হয়।
এখন বলুন কে খাইলো কারটা?
যেহেতু গরীব এতিমকে, যাকাত থেকে ৫০০ বা ১০০০ টাকা দেওয়া হয়, আবার সবার জন্য একত্রেই রান্না করা হয়, সেহেতু ধনী ছাত্রকে ও যাকাত খেতে হচ্ছে।
অথচ ধনী ছাত্রদের জন্য কি আলাদা রান্না করার প্রয়োজন ছিলোনা?
৫। আলেমদের চিটিংবাজি:
কিভাবে চিটিংবাজী করে যাকাতের টাকা জায়েজ করতে হয়, এটা তাদের খুবই ভালো জানা আছে।
যাকাত ফিতরা ও সাধারণ দান যদি আদায় হয় লক্ষ লক্ষ টাকা, শুধুমাত্র জায়েজ করবার জন্য খরচ করে মাত্র কয়েক হাজার টাকা।
৬।অমানবিক নিয়ম:
ধনী ছাত্রদের জন্য আলাদা খাবারের ব্যবস্থা না থাকলে ও উস্তাদদের জন্য বাহারী রকমের খাবারের আয়োজন হয়।
৭। কিতাবের নামে টাকা মারা:
কিতাবের নামে ও বিশাল কালেকশন হয়, কিন্তু জায়েজ করার জন্য, বড়জোর দু একজনকে দুই চারটি কিতাব কিনে দেওয়া হয়।
৮। পদলেহী শিক্ষক নিয়োগ:
শিক্ষক নিয়োগে মসজিদের ইমামদেরকে বেশী পছন্দ করা হয়। কারন প্রত্যেক ইমামদের ভক্তবৃন্দ থাকে। তারা ভালো কালেকশন করতে পারবে। ইমাম যদি জনপ্রিয় হয়, তাহলেতো আর কথাই নাই। শিক্ষকতার যোগ্যতা না থাকলে ও তার চাকরি কনফার্ম। দেখবেন অধিকাংশ মসজিদের ইমামই হয় মাদরাসার শিক্ষক।
৯। কালেকশনের ব্যবসাঃ
শিক্ষকদের হাতে থাকে রশিদ বই। তারা তাদের ভক্তদের কাছ থেকে মাদরাসার নামে কালেকশন করে। সেই কালেকশন থেকে ২৫ থেকে ৩০% বা আরো বেশী কালেক্টর শিক্ষকের পকেটে যায়। এটাই সিস্টেম।
১০।সাদকার খবার চলে যায় শিক্ষক ও মেহমানদের পেটেঃ
মাদরাসায় সাদাকাহর খাসি আসে, কিন্তু সেই খাসি গরিব ছাত্রের পেটে যায়না। এটা মুহতামিম, শিক্ষক ও মেহমানদারীর জন্য বরাদ্দ হয়ে যায়। আপনি কাকে খাওয়ানোর জন্য দিলেন, আরা কারা খেলো!
১১। ফ্ল্যাট ব্যবসাঃ
আবার প্রায় জায়গাতেই দেখবেন,
ছাত্র থাকুক বা না থাকুক, ১ টা ফ্লাট নিয়ে দাওরায়ে হাদীস পর্যন্ত মাদরাসা খুলে বসে আছে।
প্রথম লাভ হলো, মুহতামীম তার ফ্যামিলি নিয়ে থাকতে পারলো। দ্বিতীয় লাভ, মাদরাসার নামে কালেকশন ব্যবসা চলবে।
তাই কোথায় দান করছেন, বুঝে শুনে করবেন।
১২। মাদরাসার কাজে অফিস আদালতে গেলে প্রচুর টাকা বিল করা এমন কি কোন মেহমান তাদের খবারের ব্যবথা করলেও তারা আবার মাদরাসায় এসে বহুগুন বাড়ি বিল করে নিজের নামে বিল উঠিয়ে টাকা মেরে খায়।
১৩। স্থাপনা ও ভবন নির্মানে দূর্নীতি:
এই কওমী আলেমরা মাদরাসার বিভিন্ন ভবন নির্মানে রচুর পরিমান দূর্নীতি করে। বেফা'কের পরিচালকের বক্তব্য মতে ৭লক্ষ্য টাকার টিনশেড ঘরের জন্য ৬০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বিল করেছে।
১৪। বেফা'কের কেনা কাটায় দূর্নীতিঃ
বেফাকের পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ও উত্তর পত্রের কাগজে ১০০গ্রামের বিল করে ৬৫ গ্রামের কাগজ ধরিয়ে দেয় এই কওমী আলেমরা।
১৫। নকল বই ব্যবসা:
এই কওমী বেফা'কের মৌলুভিরাই তাদের নিজেদের অরিজিনাল বই গুলো কৃত্রিম সংকট লাগিয়ে নকল বই বাজারে বিক্রি করে কোটি কোটি টাকা অবৈধ ব্যবসা করে এই কওমী সম্প্রদায়।
আল্লাহ এই শিশু বলদকার কারী দূর্নীতিবাজ চরিত্রহীন কওমী সম্প্রদায়ের জুলুম থেকে এজাতিকে রক্ষা করুন(আমীন)
পৃথিবীর যে প্রান্তেই কেন দেওবন্ধী ও কওমী থেকে থাকেন পারলে আমার প্রশ্ন গুলোর জবাব দিবেন, আর যদি না পারেন চুপ থাকবেন, আপনাদের স্বভাব সূলব গালাগালি করবেন না দয়া করে।
১। আপনাদের দেওবন্দের প্রতিষ্ঠাতা কাশেম নানিতুবী এবং আপনারা দাবী করেন নানুতুবী নাকি হযরত আবু বক্বর(রাঃ) বংশধর, আপনারা কেউ এর প্রমান দিতে পারবেন?
২। আপনারা দাবী করেন কাশেম নানুতুনীকে নাকি হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) স্বপ্নে দেওবন্দ মাদরাসার নকশা এঁকে দিছিল তাই সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে ঐ নকশা ডালিম গাছের নীচে মাটিতে আঁকা দেখতে পেয়ে ঐ নকশা মত তিনি মাদরাসা তৈরী করেন, এত বড় গাঁজা খোরী কথাও মানুষ বিশ্বাস করতে হবে?তো ঐ আঁকা নকশা কি অন্য কেউ দেখেছিলো? না নানুতুবী শুধু নিজেই দেখেছিলো?
৩। আপনারা দাবী করেন হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) নাকি কাশেম নানুতুবীর নিকট উর্দূ শিখেছে।
আমার প্রশ্ন যিনি আল্লাহর ওহীর জ্ঞানে জ্ঞানী, তিনি কেন কাশেম নানুতুবীর মত আলেম যে কিনা হিন্দু-মুসলিম এক জাতি নামক কুফুরী আকিদার প্রবক্তার নিকট উর্দূ শিখতে আসবেন? নবীজীর জ্ঞানত আল্লাহ হতে সরাসরি জিব্রাইল(আঃ) এর মাধ্যমে প্রাপ্ত। নানুতুবী কি নিজেকে নবীর চেয়েও জ্ঞানী ছিল( নাউজু বিল্লাহ)।
৪। আল্লাহর নবী নানুতুবী হুজুরকে এত কিছু স্বপ্নে বাতলে দিল অথচ অখন্ড ভারত মাতার দাবীর কারনে আজকের ভারতের মুসলমানদের যে দূরাবস্থা হবে তা বলে দেননি কেনো?
৫। আপনারা জামায়াতকে গালি গালাজ করেন এই বলে যে ওরা নারী নেতৃত্বে ঐক্য করেছে,
ভাল কথা, কিন্তু নানুতুবী যে অখন্ড ভারতের দাবীতে হিন্দু গান্ধি জ্বির কংগ্রেসে যোগ দিয়ে ছিল এবং আজও কংগ্রেসের অঙ্গ সংগঠন হিসাবে কাজ করে তাদের পা চাটছে এটা কোন দলিকের বলে জায়েজ?
৬। ১৯৪৮ সালে যখন সম্রাজ্যবাদী ভারত মুসলমানদের স্বাধীন দেশ হায়দ্রাবাদকে জোর করে দখল করে নিল তখন দেওবন্দিরা কোন প্রতিবাদ না করে চুপ ছিল কেন? নাকি ঐ দিনের চার লক্ষ মুসলিমের রক্ত দেখে তাদের মায়া লাগে নি?
৭।ভারত কংগ্রেসের নেতৃত্বে স্বাধীন মুসলিম দেশ জুনাগড় এবং আলীগড়কেও ভারত দখল করে নিল ১৯৪৯ সালে, এই হিন্দু-মুসলিম এক জাতি নামক কুফুরী তত্ত্বের প্রবক্তা নানুতুবীরা তখনো কংগ্রেসের সাথে ছিল, কিন্তু প্রতিবাদ করেনি কেন?
৮।তাইলে অস্বীকার করতে পারবেন যে স্বাধীন হাদারাবাদ, স্বাধীন জুনাগড় ও স্বাধীন আলীগড়ের মুসলমানদের রক্ত ঝারানোতে ওই কাশেমন নানুতুবীর কোন সম্মতি ছিল না?
৯। কাশ্মির ইস্যুতে দেওবন্দের কি ভুমিকা কেউ বলতে পারবেন দেওবন্দীরা? এখনকার ইসরায়েল-ফিলিস্তিন ইস্যুতে দেওবন্ধীদের ভুমিকা কি বলতে পারেন?
১০। ভারতে এন আর সি তথা নাগরিকত্ব বিল নিয়ে এত মুসলমানকে হিন্দুরা হত্যা করল, দেওবন্দী দের ভুমিকা কি? কোন বক্তব্য দেখাতে পারবেন এই ব্যাপারে?
" ফেরকায়ে বাতেলা কওমীরাই"
আজ হাক্বানী দাবীদার ও হক্বের ডিলার ব*ল*দ*কা*র বাহিনীর হাক্বানী সাইনবোর্ডের আড়ালে পথ ভ্রষ্টতা ও ফেরককায়ে বাতেলার যে চর্চাকারী তা প্রমান করব।
এ পর্যায়ে এই শিশু ব*ল*দ*কা*র কারী নির্লজ্জ ও দুশ্চরিত্র কওৃীদের সবচেয়ে জনপ্রিয় পীরের কিছু কুফুরী আকিদার প্রমান দেব এবং পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে অন্যান্য পীরদেরও বর্ননা দেব। লেখাটি একটু দীর্ঘ হলেও প্রত্যাকটা লাইনে নতুন নতুন তথ্য পাবেন।
আজ সহীহ আকিদা এবং চরমোনাই ও তাদের নিজেদের ঘোষনা মতে কুফুরী পীর দেওয়ানবাগীর কুফুরীর সাথে এই দুশ্চরিত্র কওমী সম্প্রদায়ের হাক্বানী পীরের মিল দেখাব।
এ পর্বটি বুঝার জন্য একটি শব্দ চয়ন করব তা হল, অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন। অপেক্ষাকৃত সহীহ এ কারণে বলছি যে আমার মতে বর্তমানে দুনিয়ায় কোথাও ১০০% ইসলাম যেখানে প্রতিষ্ঠিত নাই সেখানে শত ভাগ সহীহ ইসলামী দল নাও পেতে পারি, এটা একান্ত আমার ব্যক্তিগত মতামত।
দেওয়ানবাগীর পীর মৃত্যুবরণ করার সাথে সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে নিয়ে তোলপার শুরু হয়েছিল। ইতিমধ্যে চরমোনাই পীর আকিদার দোহাই দিয়ে অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন গুলোকে ভ্রান্ত আখ্যা দিয়ে বলেছে পৃথিবীর সবাই ঐ দল গুলোর সাথে ঐক্য করলেও চরমোনাই ঐক্য করবে না।
এর প্রধান কারণ হল- অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন গুলো কখনোই চরমোনাইর আকিদা লালন করে না। আমরাও জানি বাতিলশক্তি সঠিক ইকামতে দ্বীন গুলোকে ঠেকাতে অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীনের বিপক্ষে যত দলকে মাঠে নামিয়েছে তার প্রধান দল চরমোনাই। তাই অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীনের সাথে চরমোনাই ঐক্য অসম্ভব বলা যেতেই পারে।
যাইহোক, চরমোনাই যেহেতু আকিদার প্রশ্ন তুলেছে এবং আমাদের অনেক লোক ধারণা করে যে, এদেশে সবচেয়ে বড় ভণ্ডপীর দেওয়ানবাগী আর বড় হাক্কানী পীর চরমোনাই; সেহেতু এ দুই পীরের কতিপয় আকিদা ও কারামতির সাথে অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন আকিদা তুলে ধরা জরুরী মনে করছি।
১। দেওয়ানবাগী:
দেওয়ানবাগী পীর তার আকিদা পেশ করে বলেন, আপনারা যে মুর্শিদ ধরেছেন, আরশ মোকামে গিয়ে দেখবেন সেই (দেওয়ানবাগী) মুর্শিদই বসা। অর্থাৎ দেওয়ানবাগী পীরই আল্লাহ বা আল্লাহর সমকক্ষতা অর্জন করেছে। (নাউযূবিল্লাহ)
চরমোনাই:
চরমোনাই এই সমকক্ষতা অর্থাৎ "আনাল হক" আমি খোদা- হওয়ার ক্ষমতা বহু দিন আগেই অর্জন করেছেন। (আশেক মাশুক বা এস্কে এলাহী, পৃঃ ৪১-৪৩)
এছাড়াও চরমোনাই আল্লাহর নিকট থেকে জোরপূর্বক রূহ ছিনতাই করার ক্ষমতা অর্জন করেছেন। (ভেদের মারেফাত বা ইয়াদে খোদা পৃঃ ১৫) অর্থাৎ চরমোনাই আকিদা হল- শক্তির দিক দিয়ে চর্মনাই আল্লাহরও এক ধাপ উপরে। আল্লাহকে চর্মনাই পীরগং পরাজিত করতে সক্ষম (নাউযূবিল্লাহ)।
অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীনের আকিদা হল-
ﻭَﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟِﻴُﻌْﺠِﺰَﻩُ ﻣِﻦْ ﺷَﻲْﺀٍ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﻭَﺍﺕِ ﻭَﻟَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ۚ ﺇِﻧَّﻪُ ﻛَﺎﻥَ ﻋَﻠِﻴﻤًﺎ ﻗَﺪِﻳﺮًﺍ.
আল্লাহ তো এমন নন যে, আসমান ও জমিনের কোন কিছু তাকে অক্ষম বা পরাজিত করে দেবে। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান। (সূরা ফাতিরঃ৩৫/৪৪)।
অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীনের আকিদাও তাই।
২। দেওয়ানবাগী:
দেওয়ানবাগী পীর সরাসরিভাবে আল্লাহর সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করে কথাবার্তা বলার দাবী করে থাকে।
চরমোনাই:
চরমোনাই পীরেরা আল্লাহর সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করেই ক্ষান্ত হয় না বরং তারা আল্লাহর সাথে নাকি মিলন দেয় সেভাবে উত্তেজিত হয়ে, যেভাবে তারা স্ত্রী মিলনের সময় উত্তেজিত হয়। (নাউযূবিল্লাহ) (ভেদে মারেফাত বা ইয়াদে খোদা পৃঃ ৬৯)
অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীনের আকিদা হল-
مَا لَهُمْ بِهِ مِنْ عِلْمٍ وَلَا لِآبَائِهِمْ ۚ كَبُرَتْ كَلِمَةً تَخْرُجُ مِنْ أَفْوَاهِهِمْ ۚ إِنْ يَقُولُونَ إِلَّا كَذِبًا.
এ ব্যাপারে তাদের কোন জ্ঞান নেই এবং তাদের পিতৃ পুরুষদেরও না। বড় মারাত্মক কথা, যা তাদের মুখ থেকে বের হয়। মিথ্যা ছাড়া তারা কিছুই বলে না! (সূরা কাহ্ফঃ১৮/৫)।
অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন আরো বিশ্বাস করে,
سُبْحَانَ رَبِّكَ رَبِّ الْعِزَّةِ عَمَّا يَصِفُونَ.
তারা যা ব্যক্ত করে তোমার রব তা থেকে পবিত্র মহান, সম্মানের মালিক। (সূরা সাফফাতঃ৩৭/১৮০)।
অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীনের আকিদাও তাই।
৩।দেওয়ানবাগী:
দেওয়ানবাগী পীরের আকিদা তিনি তার মুরীদের জন্য সুপারিশকারী।
চরমোনাই:
চোরমনাই আকিদা হল- চরমোনাই পীর গং যাকে খুশী তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। এমন কি কাফন চোরকেও চরমোনাই পীরেরা জান্নাতে নিয়ে যেতে পারে। (ভেদে মারেফাত বা ইয়াদে খোদা পৃঃ ২৭-২৮)
অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন আকিদা হল:
এ অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন আকিদা বিশ্বাস সেটাই যেটি আল্লাহ তা'আলা বলেছেন,
وَاتَّقُوا يَوْمًا لَا تَجْزِي نَفْسٌ عَنْ نَفْسٍ شَيْئًا وَلَا يُقْبَلُ مِنْهَا شَفَاعَةٌ وَلَا يُؤْخَذُ مِنْهَا عَدْلٌ وَلَا هُمْ يُنْصَرُونَ.
আর তোমরা সে দিনকে ভয় কর, যেদিন কেউ কারো কোন কাজে আসবে না। আর কারো পক্ষ থেকে কোন সুপারিশ গ্রহণ করা হবে না এবং কারও কাছ থেকে কোন বিনিময় নেয়া হবে না। আর তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না। (সূরা বাকারাঃ ২/৪৮)
তবে আল্লাহ তা'য়ালা যাকে অনুমতি দিবেন, তিনি সুপারিশ করতে পারবেন। (বাকারাঃ ২/২৫৫)
৪।দেওয়ানবাগী:
দেওয়ানবাগী তার মুরীদদের জান্নাতে নেওয়ার লোভ দেখালেও কিয়ামতের ময়দানে বড় বড় জাহাজে করে তার মুরীদদের জান্নাতে নেওয়ার আকিদা তার দরবারে প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।
চরমোনাই:
চোরমোনাই আকিদা হল- কিয়ামতের ময়দানে কঠিন মসিবতের সময় যখন নবী রাসূলগণ পর্যন্ত নাফসি নাফসি বলতে থাকবে তখন চরমোনাইর পীরেরা বড় বড় জাহাজে করে মুরীদদের জান্নাতে নিয়ে যাবে।
অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন আকিদা হল:
এ বিষয়ে অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীনের পরিষ্কার আকিদা বিশ্বাস সেটাই যা কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,
أَمْ حَسِبْتُمْ أَنْ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللَّهُ الَّذِينَ جَاهَدُوا مِنْكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّابِرِينَ وَلَمَّا يَأْتِكُمْ مَثَلُ الَّذِينَ خَلَوْا مِنْ قَبْلِكُمْ ۖ مَسَّتْهُمُ الْبَأْسَاءُ وَالضَّرَّاءُ وَزُلْزِلُوا حَتَّىٰ يَقُولَ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ مَتَىٰ نَصْرُ اللَّهِ ۗ أَلَا إِنَّ نَصْرَ اللَّهِ قَرِيبٌ.
তোমরা কি মনে করেছ যে, তোমরা এমনি এমনি (যেমন- পীর ধরে জাহাজে চড়ে) জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ এখনো তোমাদের নিকট তাদের মত কিছু আসেনি, যারা তোমাদের পূর্বে বিগত হয়েছে। তাদেরকে স্পর্শ করেছিল কষ্ট-নির্যাতন ও দুঃখ-দুর্দশা এবং তারা (জালিমের নির্যাতনে) কম্পিত হয়েছিল। এমনকি রাসূল ও তার সাথি মুমিনগণ বলছিল, ‘কখন আল্লাহর সাহায্য আসবে’? জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী। (সূরা বাকারাঃ২/২১৪)
সংক্ষিপ্ত আলোচনায়, এ কথা পরিষ্কার হয়েছে দেওয়ানবাগী চোরমনাই পীরদের সাথে অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীনের আকিদার অনেক তফাৎ রয়েছে।
অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন এসব ভণ্ডপীরের শিরকি ও কুফুরী আকিদা বিশ্বাস করা তো দূরের কথা বরং তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে এবং কুরআন সুন্নাহর আলোকে প্রতিষ্ঠিত আকিদা লালন করে।
আজব ব্যাপার হল- যাদের আকিদা শিরক কুফুরীতে ভরা তারা অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন গুলোর আকিদার বিরুদ্ধে কথা বলে। বস্তুত তারা অর্থের লোভে বাতিলশক্তির এজেন্ট হয়ে আল্লাহর দ্বীন বিজয়ের পথে বাধা দান করে।
আল্লাহ তা'আলা তাদের ব্যাপারে মুমিনদের সতর্ক করে বলেন,
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِنَّ كَثِیْرًا مِّنَ الْاَحْبَارِ وَ الرُّهْبَانِ لَیَاْكُلُوْنَ اَمْوَالَ النَّاسِ بِالْبَاطِلِ وَ یَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِیْلِ اللّٰهِ١ؕ وَ الَّذِیْنَ یَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَ الْفِضَّةَ وَ لَا یُنْفِقُوْنَهَا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ١ۙ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ اَلِیْمٍۙ
হে ঈমানদারগণ! এ আহলে কিতাবদের অধিকাংশ আলেম ও দরবেশের অবস্থা হচ্ছে এই যে, তারা মানুষের ধন-সম্পদ অন্যায় পদ্ধতিতে খায় এবং তাদেরকে আল্লাহর পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে। যারা সোনা রূপা জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না তাদেরকে যন্ত্রণাময় আযাবের সুখবর দাও।
(সূরাঃতাওবা, আয়াতঃ৩৪)।
অর্থাৎ এ জালেমরা শুধু ফতোয়া বিক্রি করে, ঘুষ খেয়ে এবং নজরানা লুটে নিয়েই ক্ষান্ত হয় না। এ সঙ্গে তারা এমন সব ধর্মীয় নিয়ম-কানুন ও রসম-রেওয়াজ উদ্ভাবন ও প্রবর্তন করে যেগুলোর সাহায্যে লোকেরা তাদের কাছ থেকে নিজেদের পরকালীন মুক্তি কিনে নেয়। তাদের উদর পূর্তি না করলে লোকের জীবন-মরণ বিয়ে-শাদী এবং আনন্দও বিষাদ কোন অবস্থাই অতিবাহিত হতে পারে না। তারা এদেরকে নিজেদের ভাগ্য ভঙ্গা-গড়ার একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী মনে করে। উপরন্তু নিজেরদের এমনসব স্বার্থ উদ্ধারের মতলব তারা আল্লাহর বান্দাদেরকে গোমরাহীতে লিপ্ত করে রাখে। যখনই কোন সত্যের দাওয়াত সমাজের সংশোধনের উদ্দেশ্যে এগিয়ে আসে তখনই সবার আগে এরাই নিজেদের জ্ঞানীসুলভ প্রতারণা ও ধান্দাবাজীর অস্ত্র ব্যবহার করে তার পথ রোধ করে দাঁড়ায়।
আজ এই কওমে লূতের অভিশপ্ত স*ম*কা*মী ও শিশু ব*ল*দ*কা*র কারী ও দুশ্চরিত্র দেওবন্ধী ও কওমীদের চরিত্র যেন আজ সূরাহ তাওবার ৩৪ নং আয়াতের সাথে মিলে যাচ্ছে।
"১০ টাকায় ব্যক্তিত্ব বিক্রয়কারী ভন্ড শিশুন নির্যাতনকারী মূর্খ আলেমরাই আল্লামা মওদূদী রহঃ এর বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করে"
দেওবন্ধী ও কওমীরা মওদূদীর যে ভুল গুলো ধরেছেন সে ভুল গুলো মওদূদী সাহেব দেবন্ধের তৎকালীন প্রকাশিত পত্রিকার সম্পাদক থাকা কালীন লিখেছিলেন এবং মেনেও নিয়েছিল দেওবন্ধীরা। কিন্তু যখনই মওদূদী সাহেব মুসলিমদের জন্য আলাদা মুসলিম রাষ্ট্রের দাবী তুললেন তখনই দেওবন্ধের আলেমগন দেখলেন যে মুসলিমদের আলাদা রাস্ট্র হলে তাদের নেতাগিরী বা মোড়লিপনা কমে যেতে পার, তখনই দেওবন্ধীরা নেতাজী, মহাত্মা গান্ধী ও বল্লভ ভাই পাতেলের সুরে সুর মিলিয়ে রাষ্ট্রীয় কিছু সুবিধার লোভে অখন্ড ভারত মাতার দাবী তোলে ভারতকে যারা ভাগ করে আলাদা মুসলিম রাষ্ট্রের দাবী করেছিল তাদের বিরোধীতা শুরু করে এবং এরই অংশ হিসেবে একসময়ের দেওবন্ধীদের নয়ন মনি মওদূদীরও বিরোধীতা শুরু করে। এখনও এই অন্ধ বিরোধীতা করে যাচ্ছে, তার প্রমান দেখা যায় কওমী মাদরাসার সিলেবাসে, যেখানে মওদূদীর ভ্রান্ত আকিদা নামে একটি বিষয়ও পড়ানো হয়। অথচ মওদূদীর বইগুলোকে খোলেও দেখেনি বর্তমানের এই কওমী আলেম সমাজ। আর যারাই মওদূদী সাহেবের বই একবার পড়ে দেখেছে ভুল ধরার জন্য বরং তাদের নিজের ভুলই ভেঙ্গে যাচ্ছে। এখন কাওমী আলেমরা নতুন ফতুয়া দিচ্ছে যে, যেকোন লিখকের বই পড়া যাবেনা। ঈমান চলে যাবে। তাদের হুজুরদের বই শুধু পড়তে হবে। ডা.জাকির নায়েকের মত দায়ী'র বিরোধীতা করেছে ভারতের এই দেওবন্ধী আলেম সমাজ এবং বাংলাদেশের কওমী আলেমরা, এমনকি কওমী আলেম গন বর্তমানে বক্তাদের জনপ্রিয়তায় নিয়েও ইর্ষান্বিত হয়ে হাফিজুর রহমান সাহেব মামুনুল কহককে হুমকীধমকী দিচ্ছে এমন ভিডিও সামাজিক মাধ্যমে ভাইরাল হচ্ছে। এতে প্রমানিত হয় যে কওমীর বড় বড় আলেমরা নিজেদের মধ্যেই কতটা ইর্ষাপরায়ন ও সংকীর্ন মনা।অথচ বিগত ৩০০ বছরে দেওবন্ধীরা ডা.জাকির নায়েকের মত একজন দা'য়ী তৈরী করতে পারেনি। শুধু স্বার্থের জন্যই মুসলিম হয়ে মুসলমানদের বিরোধীতা করে তারা। নিজের স্বার্থের জন্য একজন মুসলমানের ছোটখাট ভুল নিয়ে ফালাও ভাবে মানুষকে ভুল বুঝানো কতটুকু ইসলামিক এই প্রশ্নটা দেওবন্ধী ভাইদের প্রতি রইলো।
হিংসাই যদি না ছাড়তে পারেন তবে কিসের মুসলমান আপনারা, আলেম হওয়া তো দূরের কথা। মনে রাখবেন আবু জাহেলও যথেষ্ট জ্ঞানী ছিল কিন্তু শুধু ঈমান ছিল না। এত হিংসা মনে রেখে অন্তত আলেম হওয়া যায় না।
ডাঃ জাকির নায়েকের কারনে বহু অমুসলিম ইসলামে ধাবিত হয়েছে। বিশ্ব মানের একজন ইসলামী স্কলার।
নাস্তিকরা কোরআনের অনেক গুলো ব্যাকরনগত ভুল যখন ধরেছিল আর এই ভুলগুলো নিয়ে কথা বলা তো দূরের কথা টু শব্দটি করার মত আলেম সারা দুনিয়ার একজনও ছিল না। ঐ দিন দেওবন্ধি ও কওমীরা মুখে কুলুপ এঁটেছিল।ঐ কঠিন প্রশ্নের জবাব এক মাত্র ডা.জাকির নায়েকই দিয়ে ছিল। অথচ আজ ভারতে যখন তার টিভি চ্যানেল পিস টিভি বন্ধ করে দেওয়া হল তার প্রতিবাদ তো দূরের কথা বরং আনন্দিতই হয়েছিল। এমন কি বাংলাদেশে যেদিন পিস টিভি বন্ধ করা হয়ে ছিল সে দিন আমি স্বচক্ষে দেখেছি কওমীরা কত আনন্দিত হয়েছিল। অনেক কওমী মাদরাসায় মিষ্টি বিতরন পর্যন্ত করেছিল। শুধু তাই না, বিভিন্ন ওয়াজ মাহফিলে এই কওমী হুজুররা ডা.জাকির নায়েকে কে ইহুদিদের দালাল বলে গালি দিত এমন কি কাফেরও বলত। অথচ এত এত ইসলাম বিরোধী টিভি চ্যানেল দুনিয়ায় আছে কিন্তু ঐগুলোর বিরোদ্ধে কোন কথা নাই। যখনই স্বার্থে আঘাত লাগে তখনই ওরা অন্ধ বিরোধীতা করে।
এখন ঐক্যের দরকার, বিবাদের সময় না।বিবাদ করে সবাই ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে,এটাও বুঝর ক্ষমতা রাখে না।
তার পরও বিষয়টি খোলাসা করার জন্য কিছু প্রমান পেশ করলাম।
দেওবন্দ বা কওমী মাদ্রাসা থেকে ফারেগ হওয়া সকলকে বিনীত ভাবে বলতে চাই যে, দেওবন্দের কিছু কংগ্রেস পন্থী ওলামারা যদি রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত হিংসার বশে মওদূদীর বিরুদ্ধে ফতোয়া দেওয়ার প্রয়োজন মনে করে,
তাহলে আপনি কিসের প্রয়োজনে সে ফতোয়াকে যাচাই বাছাই ছাড়াই প্রচার করছেন?দেওবন্দ বা কওমী মাদ্রাসা থেকে দ্বীন শিখার পরিবর্তে যদি মুরব্বি পূজাই শিখে এলেন, তবে সেটা কি কল্যাণকর
হতে পারে? যদি মাওলানা মওদুদী আলেমই না হবেন তাহলে তাকে দেওবন্দের মুখপাত্র, মাসিক ইসলামী পত্রিকার সম্পাদক বানানো হলো কেন? মাওলানা মওদুদী ছিলেন সহজ সরল একজন আলেম ও সাংবাদিক। তার লেখার ধরন এবং যুক্তি প্রমান ও জ্ঞানের গভীরতা সকল আলেম সমাজের লোকের কাছে পৌঁছে গিয়েছিল। এ কারনে দেওবন্দ মাদ্রাসা থেকে প্রকাশিত, দেওবন্দ ওলামাদের সংগঠন জমিয়তে আল ইসলামের মাসিক মুখপাত্র ‘ আল-জমিয়াত’ প্রত্রিকার সম্পাদক হিসেবে মাওলানাকে নিয়োগ দেয়া হলো। যারা বর্তমানে মওদূদীকে আলেম মানতে নারাজ তাদের কাছে আমার প্রশ্ন হলো, বর্তমান হাটহাজারী থেকে প্রকাশিত মাসিক মুইনুল ইসলামের সম্পাদক কি একজন জাহেল বা আধুনীক শিক্ষিত কে বানানেরা কল্পনাও কেউ করতে পারেন? অথবা বর্তমান আল কাওসার পত্রিকার সম্পাদক কি একজন জাহেল হতে পারেন? তখনকার দেওবন্দ থেকে প্রকাশিত কোন দ্বীনি প্রত্রিকার সম্পাদক কোন আলেম ছিলেন না এমন দাবি যারা করেন তারা মুলত তাদের আকাবারদের কে মুর্খ এবং জাহেল হিসেবে ঘোষনা করছেন। কেননা তারা তো এত মুর্খ ছিলেন যে, শত শত ওলামাদের মুখপাত্র এবং তাদের পক্ষ থেকে প্রকাশিত প্রত্রিকার সম্পাদক এমন একজন কে বানানো হয়েছিল যিনি আলেম ছিলেন না, সাধারন শিক্ষিত ছিলেন।
দেওবন্দ ওলামাদের একমাাত্র সংগঠন জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের মুখপাত্র আল জমিয়ত পত্রিকার সম্পাদনার ভার পড়ল মাওলান মওদূদীর ওপর। আল জমিয়ত পত্রিকাটি মুলত দেওবন্দ আলেমদের সংগঠন জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের কর্মসূচি প্রচার প্রশার করার জন্য ছাপানো হতো। তৎকালীন দেওবন্দের বেশির ভাগ নেতৃত্বস্থানীয় আলেমরা কংগ্রেসের কট্টর সমর্থক ছিলেন এবং জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দ ছিল কংগ্রেসের সহযোগী সংগঠন। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে কংগ্রেসের লেজুর বৃত্তি করাই ছিল এই ওলামা সংগঠনটির একমাত্র কাজ। আজকের বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের যেই রাজনৈতিক এবং নৈতিক পজিশান, তৎকালিন জমিয়াতে ওলামায়ে হিন্দেরও সেই একই ভূমিকা ছিল। কংগ্রেসের লেজুর বৃত্তি করাটা যেন জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের দায়িত্ব হয়ে গিয়েছিল।
এখনো এই দলটির ইশারায় বাংলাদেশের কিছু ইসলামী দল আলেম ওলামাদের মধ্যে বিভেদ তৈরিতে ভুমিকা রাখছেন।
উল্লেখ্য না করলে ভূল হবে যে, তৎকালে কংগ্রেসের নেতৃত্বে ছিলেন মুসলমানদের চরম দুশমন হিসেবে চিহ্নিত মহাত্মা গান্ধী। গান্ধীর অহিংস আন্দোলন ছিল মুসলমানদের জিহাদের বিপরিতে প্রপাগান্ডা মুলক এক চরম বিদ্ধেষ ভাবাপন্ন সাম্প্রদায়িক আন্দোলন, যদিও তা অহিংস শব্দের আড়ালে ঢেকে রাখা হয়েছিল। এই আন্দোলন চলাকালে এক মুসলমান কতৃক তাদের এক নেতাকে -যার নাম ছিল শ্রদ্ধানন্দ -হত্যার অপরাধে সারা ভারত জুরে যে দাঙ্গা হয়েছিল তার ভিতর ঘি ঢেলেছিল গান্ধির,সেই নিকৃষ্ট উক্তি-” মুসলমানদের ইতিহাস থেকে তলোয়ার আর রক্তের গন্ধ ভেসে আসে।”
অবাক করা বিষয় হচ্ছে তখন কিন্তু জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের দায়িত্বে ছিলেন এমন সব ওলামারা যাদের তাকওয়া আর বুজুর্গীর ডংকা সারা ভারতীয় উপমহাদেশ জুড়ে বাজত। তাদের মধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য ছিলেন, মাওলানা আশরাফ আলি থানবি, মুফতি মোহাম্মদ শাফী, মাওলানা আহমেদ হুসাইন মাদানী, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা মুফতি ফয়জুল্লাহ রহঃ সহ দেওবন্দের বিশিষ্ট আলেম গন। জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের তৎকালীন সভাপতি ছিলেন মাওলানা হুসাইন আহমেদ মাদানী এবং সেক্রেটারি হিসেবে ছিলেন মাওলানা আবুল কালাম
আজাদ। কিন্তু আশ্চর্য্যরে বিষয় হচ্ছে মহাত্মা গান্ধীর এই নিকৃষ্ট উক্তির পরে যখন ব্যাপক হারে মুসলমান হত্যা করা শুরু হলো এবং ইসলামী জিহাদের অপব্যাখ্যা করে জিহাদকে সন্ত্রাস আখ্যা দেওয়া হতে লাগল, তখন এই বুজুর্গদের কারো অন্তরে আল্লাহর দ্বীনের জন্য কোন মায়া লাগেনি এবং তারা কংগ্রেস ত্যাগ করার দরকারও মনে করেননি। কংগ্রেসের সাথে সংযুক্ত থাকা যাদের কাছে বৈধ ছিল, আজকের যুগে তাদের খলিফাদের কাছে নারী নেতৃত্ব্য আরো খারাপ হয়ে গেছে।
আবার শাপলা চত্বরে তাদের কর্মীদের হত্যার পর লাশ গুম করেও নারী নেত্রীরা এখন কওমী জননী উপাধি পায় শুধু মাত্র সরকারের হালুয়া রুটি আর কয়েক শতক জমির বিনিময়ে। যদিও হিন্দু নেতার নেতৃত্বে আন্দোলন করতে কোন সমস্যা হয়নি।এদের অতীত ও বর্তমান ইতিহাসে কোন ফারাক নাই। স্বার্থের জন্য ওরা সবই পারে।
মহাত্মা গান্ধীর কংগ্রেসের পরিচালিত অহিংস আন্দোলন ছিল মুসলমানদের বিরুদ্ধে একটি প্রকাশ্য যুদ্ধ কিন্তু দেওবন্দ কংগ্রেস পন্থী আলেমদের কাছে তা ছিল একেবারে সহনীয় কারন তাদের কাছে দেওবন্দ মাদ্রাসার হেফাজত এবং নিরাপত্তাই মুখ্য ছিল। মুসলমানদের অধিকার বা ইজ্জত তখন প্রধান্য পায়নি। আমাদের বর্তমান মুরব্বিদের কাছে প্রশ্ন হচ্ছে একজন হিন্দুর নেতৃত্বে দল করা বা তার দলের অংগ সহযোগী হয়ে আন্দোলন করার সময় কি এসব ফতোয়া মনে ছিল যা তারা আজকে বলছেন নারী নেতৃত্বের সাথে জোট বদ্ধ হয়ে স্বৈরাচার হটানোর আন্দোলন নাজায়েজ?
জিহাদের বিরুদ্ধে যখন সারা ভারত জুড়ে এক ধরনে প্রপাগান্ডা চলতে লাগল ঠিক তখনি দিল্লী জামে মসজিদের খতিব তার জুমার খোতবায় আক্ষেপের সুরে বলছিলেন যে, মুসলমানদের মধ্যে এমন কোন নওজোয়ান আল্লাহর সৈনিক কি নেই যে মুশরিকদে এই প্রপাগান্ডার দাঁত ভাংগা জবাব দিতে পারে। মাওলানা মওদূদী বলেন, আমি সেই মসজিদে তখন অবস্থান করছিলাম এবং আমি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম যে, কেউ করুক আর না করুক আমি এই দায়িত্ব পালন করবো। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাওলানা লিখে ফেললেন তার প্রথম বই- জিহাদ ফিল ইসলাম। মহাত্মাগান্ধীর প্রচারিত অহিংস আন্দোলন যে ইসলামের শিক্ষার বিপরীত তার দাঁত ভাঙ্গা জবাব ছিল জিহাদ ফিল ইলসলাম। গ্রন্থটি প্রকাশ হওয়াতে দুটো কাজ হলো। প্রথম হচ্ছে মুশরিকদের প্রচারনার প্রকৃত জবাব দেয়া হলো এবং জিহাদ সম্পর্কে সঠিক মাসয়ালা বের হয়ে এলো। পুরো গ্রন্থটি পত্রিকার মাধ্যমে ধারাবাহিক ভাবে প্রচার করা হয়েছিল। অন্যদিকে এই বই রচনা করতে গিয়ে যে মাওলানা মওদূদীকে শত শত কিতাব পড়তে হয়েছিল। এনহিসেবে তার কাছে গোটা ইসলামের চিত্র ফুটে উঠলো। ইসলামকে তিনি নতুন ভাবে জানার সুযোগ পেলেন।
তার জ্ঞান রাজ্যের সীমানায় নতুন এক রাজত্ব্য ঠাঁই করে নিল। তিনি মুগ্ধ হয়ে গেলেন। তিনি তার কলমের ব্যবহার সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন। নিজের বড় ভাইর সাথে পরামর্শ করে বললেন যে, মুসলমানদের সামনে যে মস্তবড় বিপদ আসছে সেই বিপদ থেকে তাদের সাবধান করা জরুরী। যে মহা প্লাবনের সংকেত আমি পাচ্ছি তা থেকে একজন মুসলমানকে যদি হেফাজত করতে পারি তাহলেও আমার প্রচেষ্টা র্স্বাথক হবে।
উল্লেখ্য যে, পাকিস্তান আন্দোলন এবং তার পরবর্তী দিনের মুসলমানদের ভবিষ্যৎ নিয়ে তিনি যে আগাম ঘোষনা করেছিলেন তা অক্ষরে অক্ষরে সত্যে পরিণত হয়েছে। আন্দোলনের মুখে পাকিস্তান কায়েম হয়েছে ঠিকই কিন্তু যে ইসলামের নাম নিয়ে তাকে প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল, সেই ইসলামী রাষ্ট্র আর ইসলামী বিধান কে খোদ মুসলমানরাই অস্বীকার করে এবং পাশ্চাত্যের অনুকরনে একটি সংবিধান কায়েম করা হয়।
পাকিস্তানের মধ্যে যে অস্থিরতা আজ বিরাজমান, তা সেদিনের সেই পাপের ফল। এ কারনে মাওলানা মওদূদী সেদিন ঘোষনা করে দেন যে,আজকে থেকে আমার কলম যদি কোন একটি অক্ষরও লেখে তাও আল্লাহর কালাম এবং তার দ্বীনের প্রতিনিধিত্ব করবে আর তা কেবল আল্লাহর জন্যই হবে।
কংগ্রেসের সমস্ত সমর্থকদের কাছে এমন কি কংগ্রেস পন্থী আলেমদের কাছেও মাওলানা মওদূদী অত্যান্ত বিপদ জনক ছিলেন। কারণ তারা দেখেছেন যে, মওদূদীর লেখার ধরন প্রমান করছে যে, তিনি তার কলমের কাচি থেকে ইসলামের নামে প্রচলিত জাহেলীয়াতের একটি অংশকেও ছাড় দেবেন না।
বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, ইসলামী জিহাদের ওপর এমন প্রমান্য কিতাব মুসলিম জাহানে দ্বিতীয়টি লেখা হয়নি। সেই থেকে শুরু মাওলানার লেখার কাজ।
মাওলানা নিজে স্বীকার করেছেন যে, উক্ত কিতাবটি লেখার পরে আমি ভিতর থেকে অনুভব করতে লাগলাম যে আল্লাহ হয়তো আমার ভিতর কিছু প্রতিভা দিয়েছেন এবং আমাকে এ কাজ অবশ্যই চালিয়ে যেতে হবে। উক্ত কিতাবটি লেখার পরে মুসলমানদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের দেয়া অপবাদ সাময়িক সময়ের জন্য বন্ধ হয়ে গেল ঠিক কিন্তু তারা অপেক্ষা করছিল মোক্ষম সুযোগের যাতে এর বদল তারা নিতে পারে।
এরই মাঝে শুরু হয়ে গেল পাকিস্তান কায়েমের আন্দোলন।হিন্দুদের অত্যাচার নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে মুসলমানরা নিজেদের আলাদা আবাস ভুমির দাবি করে বসল এবং পাকিস্তান কায়েমের আন্দোলন একটা অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হলো
মুসলমানরা এক যোগে এই আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করতে লাগল। মাওলানা মওদূদী যদিও জানতেন যে, যারা ইসলামের নামে পাকিস্তান কায়েমের আন্দোলন করছে তারা কখনোই পাকিস্তানে ইসলাম কায়েম করবে না তবুও তিনি নৈতিক ভাবে এই আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন।
আন্দোলনে যোগ দেয়ার আরো একটি কারন হিসেবে মাওলানা নিজেই বলছেন যে, কোন এক জায়গা থেকে ট্রেনে আসার পথে তিনি দেখলেন যে, হিন্দু জমিদার দের কে মুসলমানরা মাথা নিচু করে প্রনাম করে যা একেবারে সিজদার মতো। তিনি তখনই সিদ্ধান্ত নিলেন যে, যে করেই হোক মুসলমানদের জন্য আলাদা আবাস ভুমি অবশ্যই থাকতে হবে এবং জিন্নাহর মুসলীম লীগের কার্যক্রমে তিনি সরাসারি যুক্ত না হলেও কথা আর লেখার মাধ্যমে তার সমর্থন করে যেতে লাগলেন। পাকিস্তান কায়েমের আন্দোলনে মুসলমানদের কে বিভ্রান্ত করতে হিন্দু কংগ্রেস নেতারা ব্যবহার
করলেন মুসলমানদের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ দেওবন্দ মাদ্রাসা মোহতামিম কে। একদিন দিল্লীর জামে মসজিদে নামাজ পড়াতে গিয়ে দেওবন্দের মোহতামিম, জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা আহমেদ হুসাইন মাদানী জুমার খুতবায় অত্যান্ত স্পষ্ট করে বললেন যে, মুসলমানদের আলাদা আবাস ভূমির
দাবি করা একটি মারাত্মক ভুল এবং তিনি এও বললেন যে, হিন্দু মুসলমান এক জাতী হয়ে এই উপমহাদেশে বাস করতে পারে। এ বিষয়ে তিনি একটি বড় ভাষন প্রদান করেন। মাওলানার সেই ভাষন প্রথমে লিফলেট পড়ে বই আকাড়ে প্রকাশ করা হয়। মাদানীর এই বক্তব্য লিফলেট আকারে হিন্দুরাও প্রচার করতে লাগল। মহাত্মা গান্ধীর কংগ্রেসের এই চালে জিন্নাহর মুসলীম লীগ কোনাঠাসা হয়ে পড়ল।
যেহেতু আহমেদ হুসাইন মাদানী মাওলানা শফীর মত উপমহাদেশের একজন বিখ্যাত আলেম তাই তার কথায় মুসলমানরা পেরেশান হয়ে পরল কিন্তু কেউ এর প্রতিবাদ করার সাহস করলনা। কারন দেওবন্দের মোহতামিমের বিরুদ্ধে কথা বলার স্পষ্ট অর্থ হচ্ছে নিজেকে ফতোয়ার বানে জর্জরিত করা। ইতিহাসের পাতায় এ ঘটনাকে ওয়ান নেশন এন্ড টু নেশন থিউরি নামে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে।
যারা ইতিহাসের প্রতি আগ্রহ রাখেন তারা এ বিষয়ে ভালো করেই জানেন। মাওলানা মওদূদীকে জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের পক্ষ থেকে বলা হলো, আল- জমিয়াত পত্রিকা মারফত এই হিন্দু মুসলমান এক জাতি তত্ত্বের ওপর লেখা লেখনীর মাধ্যমে প্রচারনা চালানোর জন্য। মাওলানা মুওদূদী সাফ জবাব দিয়ে দিলেন যে, আল্লাহ তাকে যদি সামান্য পরিমান মেধা শক্তি দিয়ে থাকেন তাহলে তা কেবলমাত্র মুসলমানদের উপকারের জন্য দিয়েছেন এবং জীবন বাকি থাকতে তিনি মুসলমানদের স্বার্থ্যরে বিরুদ্ধে এক কলম লিখার জন্য প্রস্তুত নন। জমিয়তের এই ঘোষনা শুনার পর তাদের পত্রিকায় আর এক মুহুর্ত্য কাজ করা সমীচিন মনে করেননি। তিনি আল জমিয়তের কাজ ছেড়ে দিয়ে তরজমানুল কোরআন পত্রিকার দায়িত্ব্য নেন এবং শর্ত দিয়ে দেন যে, ইসলাম প্রচারে তাকে কোন প্রকার বাধা দেয়া যাবেনা। পরবর্তিতে এই একটি পত্রিকা ভারত উপমহাদেশেরবইতিহাসে ইসলাম আর মুসলমানদের মুখপাত্র হিসেবে স্বিকৃতি পেয়ে যায়। মাওলানা আহমেদ হোসাইন মাদানির বক্তব্য যখন পাকিস্তান কায়েমের আন্দোলনে বিরাট বাঁধা হয়ে দাড়াল, এ পর্যায়ে মাওলানা মওদূদীও তার স্বভাব সুলভ কারনে চুপ থাকতে পারলেন না। এ বিষয়ে আল্লাহর সুন্নাত হচ্ছে যখন দায়িত্ব্যশীলরা কোন কাজ আঞ্জাম দিতে ব্যর্থ হন, তখন আল্লাহ সেই জনপদে অন্যকোন ব্যক্তি বা জাতীকে উত্থীত করেন যে, মানুষকে ভয় না পেয়ে আল্লাহর ইচ্ছা পুরন করবেন এবং নিজ দায়িত্ব্য পালন করবেন। এটাই হচ্ছে আল্লহর ফিতরাত। ভারত উপমহাদেশের ইতিহাসে আমরা সেই সত্যের মঞ্চায়ন হতে দেখেছি। যে কাজ করার কথা ছিল বড় বড় বুঝুর্গ দাবি ওয়ালাদের অথচ তারা সবাই মহাত্মা গান্ধির নৌকায় চড়ে হাওয়া খাচ্ছিলেন আর সে কাজ আঞ্জাম দেয়ার জন্য আল্লাহ পছন্দ করে নিলেন আরেক জনকে।
যাহোক, যে চিন্তা সেই কাজ, মাওলানা হুসাইন আহমেদ মাদানীর লিফলেটের জবাবে মাওলানা মওদূদী লিখে ফেললেন তার অমর এক গ্রন্থ মাসালায়ে কওমীয়াত বা জাতীয়তা বাদ সমস্যা। এই বইতে মাওলানা মওদুদী নাম ধরে হোসাইন আহমেদ মাদানীর যুক্তির সমালোচনা করে কোরআন হাদিসের অসংখ্য দলিল দিয়ে প্রমান করে দেন যে, হিন্দু মুসলমান এক জাতী নয়, বরং তারা দুটি পরস্পর বিরোধী আলাদ দুটি জাতি। তাদের সভ্যতা এবং সংস্কৃতি সম্পর্ন আলাদা। তাদরে মাঝে মুসলমানরা কেবল সংখ্যা লগু হয়ে নির্যাতন সইতে হবে নতুবা নিজেদের আমলের পরিবর্তন করতে হবে। হিন্দু জমিদার দের হাত থেকে রেহাই পেতে মুসলমানদের জন্য নিজস্ব সংস্কৃতি গড়ে তোল ছাড়া কোন উপায় নাই। তাছারা তিনিও এও প্রমান করলেন যে, হিন্দু মুসলমানকে এক জাতি বলা একটি সুস্পষ্ট কুফরি কেননা ভাষার ভিত্তিতে জাতীয়তা হয়না। আমরা মাওলানা হোসাইন আহমেদ মাদানীর কিছু বক্তব্য তার বই থেকে কোড করছি। এক জাতিতত্বের পক্ষে তিনি কিভাবে আদা জল খেয়ে নেমেছিলেন তার কিছু নমুনা পাঠকরা উপলদ্ধি করতে পারবেন। মাদানী রহ লিখেন-“ মাওলানা মাদানী লিখেন- এক জাতিতত্বের বিরুদ্ধে এবং এটাকে ন্যায় নীতির বিপরিত প্রমান করার,জন্য যা কিছু লেখা হয়েছে এবং হচ্ছে তার ভূল ত্রুটি দেখিয়ে দেওয়া জরুরী মনে করছি।
আরেকটু এগিয়ে গিয়ে তিনি বলেন- একজাতীয়তা যদি এতই অভিশপ্ত এবং নিকৃষ্ট হয়, তবুও ইউরোপীয়রা যেমন এই অস্ত্র ব্যবহার করে মুসলমানদের বাদশাহী ও ওসমানীয়া খেলাফতের মুলচ্ছেদ করেছে, তাই এই হাতিয়ারকেই বৃটিশদের মুলচ্ছেদের কাজে ব্যবহার। করা মুসলমানদের কর্তব্য। মাওলানা মওদূদী মাদানীর এই বক্তব্যের জবাবে যে,,বিপ্লবী গ্রন্থ লেখেন, তার প্রারম্ভে তিনি লেখেন- দারুল উলুম দেওবন্দের প্রিন্সিপাল জনাব মাওলানা হুসাইন আহমেদ মাদানীর “একজাতিতত্ত্ব ও,ইসলাম” নামে একটি পুস্তক,রচনা করেছেন। একজন সুপ্রসিদ্ধ আলেম এবং পাক-ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের লিখিত এই বইটি জটিল জাতি সত্ত্বার সরল বিশ্লেষন এবং প্রকৃত ইসলামী দৃষ্টি ভংগির পূর্ন অভিব্যাক্তি হবে বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু এই বইটি পাঠ করে আমাদের কে নির্মমভাবে হতাশ হতে হয়েছে এবং বইটি লেখকের পদমর্যাদার পক্ষে হানিকর বলে মনে হচ্ছে। বর্তমান যুগে অসংখ্য ইসলাম বিরোধী মতবাদ ইসলামের মুলতত্ত্বের ওপর প্রবল আক্রমন চালাতে উদ্যত, ইসলাম আজ তার নিজের ঘরেই অসহায়।
স্বয়ং মুসলমান গন দুনিয়ার ঘটনাবলী এবং সমস্যাবলী খালেস ইসলামী দৃষ্টিতে যাচাই করে না। বলাবাহুল্য নিছক অজ্ঞতার কারনে তারা এমনটি করছে। উপরন্তু জাতীয়তার বিষয়টি এতই জটিল যে, তাকে সুস্পষ্ট রুপে হৃদয়ঙ্গম করার উপরেই একটি জাতির জীবন মরন নির্ভর করে। কোন জাতি যদি নিজ জতীয়তার ভিত্তিসমূহের সাথে সম্পূর্ণ ভিন্ন মুলনীতির সংমিশ্রণ করে, তবে সে জাতি হিসাবে দুনিয়ার বুকে বাচঁতে পারবে না। এই জটিল বিষয়ে লেখনী ধারন করতে গিয়ে মাওলানা হোসাইন আহমেদ মাদানীর মতো ব্যক্তিত্ত্বের নিজের দায়িত্ব্য সম্পর্কে পূর্ণ সচেতন থাকা বাঞ্চনীয় ছিল। কারণ তার কাছে রাসূলের আমানত গচ্ছিত আছে।”
এই বইয়ে আরেক জায়গায় মাওলানা মওদূদী লিখেন- আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ওলামায়ে হিন্দের কাছে কাউন্সিল ও এসেম্বলীতে যোগ দেয়া একদিন হারাম এবং অন্যদিন হালাল বলে ঘোষনা করা একেবারে পুতুল খেলার শামিল হয়ে গেছে। গান্ধীজির একটি শব্দই তাদের ফতোয়াদানের ক্ষমতা সক্রিয় হয়ে উঠে।
কিন্তু আমি ইসলামের শাশ্বত ও অপরিবর্তনীয় নীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে বলছি- আল্লাহ ও রাসুল ফয়সালা করেছেন এমন কোন বিষয়ে নতুন করে ফয়সালা করার নিরংকুশ অধিকার মানুষকে দেয় যেসব সামগ্রিক প্রতিষ্ঠান- মুসলমানদের পক্ষে তা সমর্থন করা এক চিরন্তন অপরাধ সন্দেহ নাই।.......
মাওলানা মওদুদী জাতিয়তার ভিত্তি বর্ননা করে বলেন-“ যেসব গন্ডীবদ্ধ, জড় ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য ও কুসংস্কারপূর্ণ ভিত্তির ওপর দুনিয়ার জাতীয়তার প্রসাদ গড়ে উঠেছে আল্লাহ ও তার রাসুল (স) তা চূর্ন বিচূর্ণ
করে দেন।”
জাতীয়তা ভাষা বা দেশের ভিত্তিতে হয়না, হয় আদর্শের ভিত্তিতে। আমরা মুসলীম জাতি। ইসলাম আদর্শ। পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের একজন মুসলমান আমার ভাই। যদি আমার ঘরের আপন ভাইও ইসলামী আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়, তাহলে সেও আমার ভাই নয়। সে আমার জাতির অন্তর্ভূক্ত নয়। যারা এ বিষয়ে বিস্তারিত পড়তে চান তারা জাতীয়তা সমস্যা নামক বইটি পড়ে দেখতে পারেন। আলোচনার সুবিধার্থে আমরা কয়েক লাইন কোড করলাম যাতে পাঠকরা নিরেপক্ষ মন নিয়ে বিচার করতে পারেন শুরু থেকেই কারা হক্বের পক্ষ নিয়েছিল। মাওলানা মওদূদীর প্রতি মাওলানা মাদানীর আক্রোশের এটাই কারণ।
আক্রোশকে ভিত্তি করেই মাওলানা মাদানী পরবর্তিকালে মাওলানা মওদূদীর ওপর আমরন ফতোয়াবাজীরবমেশিন গান থেকে অমুলক, ভিত্তিহীন ও বিদ্ধেষমুলক অভিযোগ টেনে রোষানল প্রজ্জলিত ফতোয়ার গোলা বর্ষন করেছেণ। এর চেয়েও অধিক পরিতাপের বিষয় হলো মাওলানা মাদানীর অনেক শিষ্য; সাগরেদ, যারা ‘ওলামায়ে দ্বীন’ বলে পরিচিত, ওস্তাদের অনুকরনে তারাও মাওলানা মওদূদীর অন্ধ বিরোধীতায় মেতে উঠেন। এ কারনে আমরা যদি লক্ষ করি তাহলে দেখবো যে, কেবল মাত্র কংগ্রেস সমর্থক
বা মহাত্মা গান্ধীর অনুসারী মাওলানা হোসাইন আহমেদ মাদানীর শিষ্য, সাগরেদ বা তার খলীফারা ছাড়া অন্য কেউই মাওলানা মওদূদীর বিরুদ্ধে ফতোয়া দেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। যতগুলো বই মাওলানা মওদূদীর বিরুদ্ধে এ যাবত লেখা হয়েছে, তার সবগুলোই এই হোসাইন আহমেদ মাদানীর খলীফা বা কোন কোন পর্যায়ের ভক্ত অনুশারীর দ্বারা লিখিত। কওমী আলেমদের মাঝে মুরব্বিদের আনুগত্যের একটি সংজ্ঞা চালু আছে।
সংজ্ঞাটি হলো মুরব্বির ভুল ধরাও ভূল। অথচ মওদূদীর মতো একজন সাধারন আলেম এত বড় মুরব্বির সমালোচনা করলেন এবং তার কথাকে স্পষ্ট ভাষায় অনৈসলামীক এবং ভ্রান্ত বলে রায় দিলেন, এতো বড় অপরাধ কি সহজে ক্ষমা পাওয়ার মতো। এসব কারনে দেওবন্দের,একাংশের কাছে মাওলানা মওদূদীর লেখা বিষতুল্য মনে হলো।
মাদানী সাহেব বললেন-
ইয়্যে লেড়কা বেয়াদব হ্যাঁয়। শুধু কি তাই। তারা ঘোষনা করলো মওদূদীর বই পড়লে সাধারন ছাত্রও মুরব্বিদের
সাথে বেয়াদবী করা শিখবে।”
এভাবেই মাওলানা মওদূদীর লিখিত বই জাতীয়তা সমস্যা বা মাসালায়ে কওমীয়াত লেখার কারনেই মওদূদীকে হোসাইন আহমেদ মাদানীর ফতোয়ার বানে জর্জরিত হতে হয়েছে। কি সব অবাস্তব মিথ্যাচার তারা করেছেন তার নমুনা একটু পরেই আমরা দেখাতে পারবো।
এই বইটি যখন তরজমানুল কোরআনে প্রকাশ হতে লাগল, মুসলিম লীগের সমর্থক সহ সকল মুসলামনরা যেন চাঁদ হাতে পেল। তারাও হিন্দুদের প্রচারিত মাওলানা হুসাইন আহমেদ মাদানীর বক্তৃতার লিফলেটের জবাবে মাওলানা মুওদূদীল লিখিত তরজামানুলের কপি বিলি করতে লাগলেন। এদিকে আল্লামা ইকবাল শুরু থেকেই মাওলানার চরম ভক্তদের মধ্যে একজন ছিলেন। তিনিও সব পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছিলেন। মাওলানা হোসাইন আহমেদ মাদানী যখন এক জাতী তত্ত্ব ঘোষনা করে বক্তৃতা করলে, তখন সাথে সাথে আল্লামা ইকবাল তার সমালোচনা করে একটি কবিতা লিখে ফেললেন।
কবিতাটির অনুবাদ দেয়া হলো।
“ আজমিয়া আল্লাহর দ্বীনের
হাকিকত বুঝিতে পারেনি,
তাই
যদি না হতো তাহলে দেওবন্দের
মাওলানা হুসাইন আহমেদ
মাদানী মিম্বরে দাড়িয়ে এমন
ধরনের কথা কিছুতেই
বলতে পারতেন না যে, দেশের
ভিত্তিতে জাতী হয়
( কলেমার ভিত্তিতে নয়)
আফসোস,
এরা আরবি মোহাম্মদের (স)
মতাদর্শ
আদৌ বুঝতে পারেনি।”
আল্লামা ইকবাল এই ধরনের একজন প্রসিদ্ধ আলেমের এক জাতী তত্ত্বের পক্ষে ওকালতি দেখে এতই মর্মাহত হয়েছিলেন যে, তিনি তার কবিতার মাধ্যমে মনের ব্যথা প্রকাশ করেছিলেন।
ইতিপুর্বে যে মওদূদীর জ্ঞান গরিমার কারনে তারা তাকে তাদের নিজস্ব পত্রিকার সম্পাদনার ভার দিয়েছিলেন এবং যার প্রশংসায় তারা ছিলেন পঞ্চমুখ, তারাই এবার তার বিরুদ্ধে আদা জল খেয়ে মাঠে নামলেন।
মাওলানার সকল লেখাকে আঁতশী কাঁচ দিয়ে পরীক্ষা করতে লাগলেন।
যদি কোন সামান্য বানানে ভূল ধরা পরে সাথে সাথে তা পত্রিকা মারফত জানানো হতে লাগল। এভাবেই শুরু হয়ে গেল মাওলানা মওদূদীর সাথে আহমেদ হোসাইন মাদানীর প্রকাশ্য শত্রুতা। এবং এই শত্রুতার জের ধরে তিনি বলেছিলেন যে,ইয়ে লেরকা বেয়াদব হ্যায়- এই
ছেলেটি বেয়াদব।
কওমী ঘরনার কোন ব্যক্তি একথা কল্পনাওব করতে পারেন না যে, তিনি তার উস্তাদের ভুল ধরিয়ে দিবেন। বরং চোখ বন্ধ করে মেনে নেয়াটাই ভদ্রতার আর শিষ্টাাচার হিসেবে গন্য হয়।
আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানী এই যে, এই ঘটনার পর দেওবন্দের আরেক বিখ্যাত বুজুর্গ মাওলানা সাব্বির আহমেদ ওসমানী কংগ্রেস আলেমদের ভুল ত্রুটি সঠিক সময়ে উপলদ্ধি করে অসংখ্য আলেমদের সাথে নিয়ে কংগ্রেস আলেমদের সঙ্গ ত্যাগ করে তার দল বল নিয়ে মুসলিম লীগে যোগদান করেন।
পরবর্তিতে তার ভ্রাতুস্পুত্র ও জামাতা মাওলানা আমের ওসমানী দেওবন্দ হতে প্রকাশিত তাজাল্লী পত্রিকার মারফত মুওদূদীর বিরুদ্ধে আনিত মিথ্যা অভিযোগের বিরুদ্ধে জবাব দিতে থাকেন। তার নেতৃত্বে দেওবন্দ জামায়াত অত্যান্ত শক্তী শালী অবস্থানে ছিল। বর্তমানে তিনি জিবীত নাই দেওবন্দ জামায়াতের অবস্থান অনেক ভালো। ইর্ষা পরায়ন কিছু আলেম ব্যক্তিগত
স্বার্থে মাওলানা মুওদূদীর বিরুদ্ধে যে সকল ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করেছেন তার অধিকাংশের জবাব বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জন দিয়েছেন এবং এই বিষয়ে বিশাল কিতাবের ভান্ডার রয়েছে। ইচ্ছা করলে যে কেহ তা সংগ্রহ করে পরে দেখতে পারেন।
কিন্তু যারা মুরব্বি পুজায় লিপ্ত, মুরব্বিদের কথাকে কোরআনের চাইতেও বেশি মুল্যায়ন করেন, তারা মওদূদীর পক্ষে লিখিত এ সকল বই পড়ে কোন ফায়দা পাবেন না। এবং এটা বই পড়ার বিজ্ঞান সম্মত কোন পদ্ধতি নয়।
যারা খোলা মন নিয়ে শুধু মাত্র সত্যকে জানার জন্য অধ্যায়ন করেছেন তারাই কেবল মাত্র কোরআন থেকে হেদায়েত পেয়েছেন। কেননা কোন ব্যক্তির জন্য এটা হেদায়েতের কিতাব নয় যে ব্যাক্তির মনে আল্লাহর কোন ভয় নাই। অতএব যারা আল্লাহকে ভয় করে পথ চলেন তারা যেন পরিচ্ছন্ন মন নিয়ে কোরআন অধ্যায়ন করে তারাই কেবল মাত্র কোরআন থেকে হেদায়েত পেতে পারে।
সব শেষে বলব এই কওমী ও দেওবন্দীদের কিছু কিছু ভাল আলেম থাকলেও ৯৫% আলেমই লেনাস ধারী, চরম পর্যায়ের হিংসুক, স্বার্থপর, ফেতরা খোর, গীবতকারী, ফতোয়া ব্যবসায়ী ও ১০টাকায় আদর্শ বিক্রয় কারী। দেখেন নাই মাওলানা আহমেদ শফি সাহেব সরকারী জমির লোভে শাপলা চত্বরের শহীদদের রক্তের সাথে কি বেইমানীটাই করেছে?
আবার কয়েকদিন যাবত তারেক জামিল নামের এক লেবাস ধারী হিংসুটে আলেম কিভাবে মওদূদীর সমালোচনা শুরু করেছে? এদের পুঁজিই গীবত।
এরা নির্লজ্জ ও বেহায়া না হলে কিভাবে আফতাব স্মরনিকা মামলায় মুচলেকা দেওয়ার পরও বেশ্যা নারীর মত আচরন করে বার বার একই আচরন করে মওদূদীর উপর মিথযা তহোমত দিচ্ছে। এদের লজ্জা শরম নাই, ওরা ১০টাকায় বিক্রি হয়।
আমার আজকের লেখাটি শুধু মাত্র যারা ভারত বর্ষের মুসলমানদের ইতিহাস পড়েছেন, জানেন এবং এনালাইসিস করেন তাদের জন্য। যারা ভারত বর্ষের মুসলিমদের ইতিহাস ও ব্রিটিশদের সাথে মুসলিম দালালদের বিষয়ে অবগত না দায়া করে তারা ইতিহাস না জেনে কোন মন্তব্য করবেন না, এই লেখা কোন মূর্খ লোকের জন্য না।
আপনারা জানেন যে ব্রিটিশদের তাড়ানোর জি*হা*দে হাজী শরীয়তুল্লাহ সহ ভারতের তৎকালীন লক্ষ লক্ষ আলেম শহীদ হয়েছিলো শুধু মাত্র মুসলিম জাতির মুক্তির জন্য। তারা ছিলো মুজাহিদ এবং তাদের তামান্নাই ছিলো শীহিদী তামান্না। ইসলাম প্রতিষ্ঠার জন্য প্রান দিতে কুন্ঠা করত না, আর তাই হয়েছিলো। লক্ষ লক্ষ আলেম অকাতরে জীবন বিলিয়েও দিয়েছিলো। অযোধ্যা হতে দিল্লী, কলকাতা হতে শ্রীনগর এমন কোন এমন কোন গাছের ডাল ছিলো না যে গাছের ডালে আলেমদের লাশ ঝুলানো হয় নি। বালাকোটের যোদ্ধের মাধ্যমে মুজতাহীদ আলেমদের কফিনে শেষ পেরেক ঠুকেছিলো ব্রিটিশরা।
১৭৫৭ সালে যেমন সিরাজুদ্দৌলার পরিবারের লোকদের মুনাফেকীর কারনে ভারত বর্ষের স্বাধীনতার সূর্য অস্তমিত হয়েছিলো তেমনি এদেশীয় হিন্দু জমিদার ও মুনাফেক আলেমদের প্রাকাশ্যে ও গোপনে ব্রিটিশদের দালালির কারনে বালাকোটের যুদ্ধেও মুসলমানদের পরাজয় হয়েছিল।
একবার চিন্তা করে দেখুন বালাকোটের যুদ্ধে মুজাহিদ ও মুজতাহিদ আলেমদের কফিনে শেষ পেরেক মারার পরও এদেশে অনেক আলেম বেঁচে ছিলো। যারা বেঁচে ছিলো তাদের শতকরা ১-২% ভাগ্য ক্রমে ব্রিটিশদের হাত হতে বেঁচে গেলেও ৯৮ ভাগ আলেমই বেঁচে ছিলো ব্রিটিশদের দয়ায়। তখন ব্রিটিশরা নিজের স্বার্থেই অনেক পা চাটা আলেম বাঁচিয়ে রেখেছিলো।
প্রিয় চিন্তাশীল ও সন্মানিত পাঠক আপনারা ইতিহাস খেয়াল করলে দেখবেন যে শাহ জালাল, শাহ পরান, মাঈনুদ্দীন তিশতীর মত ওলি আওলিয়ার ভারত বর্ষে মুসলমানদের মধ্যে এক সময় কোন বিভেদ ছিল না। কিন্তু বালাকোটের যুদ্ধের পর হতে এদেশে বিভিন্ন ফেতনা মাথাচারা দিয়ে উঠে। বালাকোটের যুদ্ধের পরবর্তী ২০-৩০ বছরের মাঝেই কাদিয়ানী, দেওবন্ধী, আহলে হাদিস, বেরলবী, মাইজ ভান্ডারী, আলিয়া ইত্যাদি মতবাদ তৈরী হয়েছে। এই মতবাদ গুলো তৈরী করা হয়েছিলো ওই ব্রিটিশ দালালী করে বেঁচে যাওয়া আলেমদের মাধ্যমে।
এবার আসুন দেওবন্ধীদের অবদান নিয়ে আসল আলোচনায় যাওয়া যাক। দেওবন্ধী মাদরাসা শুরুতে ব্রিটিশ সরকারের দালালি হতে মুক্ত হিসাবে ঘোষনা দিয়ে প্রতিষ্ঠিত হলেও পরবর্তী কার্যক্রম মোটেও ইসলামের উপকারের প্রমান দিতে পারে নি বরং যুগে যুগে তাদের মূর্খতা ও মুনাফেকী কার্যক্রম প্রকাশ পেতে থাকে।
ইসলামী দেওবন্ধী মাদরাসা ইসলামি শিক্ষাকে প্রধান্য দিয়ে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের কথা বলে প্রতিষ্ঠিত হলেও তারা তাদের শিক্ষা সিলেবাসকে যুগোপযোগী করে ইসলামের উপযুক্ত করে প্রনয়নে ব্যর্থ হয়। তারা তাদের সিলেবাস হতে বিজ্ঞান শিক্ষা বাদ দিয়ে বসে এবং ইসলামে রাজনীতিকে হারাম ঘেষনা দিয়ে বসে। তার পরও এই মাদরাসার প্রতিষ্ঠাতা কাশেম নানুতুবী তার বিখ্যাত গ্রন্থ তাহিজুন্ন্যাস কিতাবে ৩য় পৃষ্ঠা ও ২৫ তম পৃষ্ঠায় খতমে নবুয়তের ভুল ব্যাখ্যা দিয়ে দাবী করেন যে খতমে নব্যুয়ত মানে শেষ নবী নয়, প্রধান নবী, শেষ নবী যারা মনে করে তারা জাহেল। আর নানুতুবীর এই ব্যাখ্যাকে পুঁজি করে তারই মাদরাসার ছাত্র গোলাম আহাম্মদ কাদিয়ানী নিজেকে নবী দাবী করে বসে।
এই ভুল ব্যাখ্যা এক দিকে যেমন কাদিয়ানীকে বন্ড নবী দাবী করতে সহযোগীতা করেছিলো তেমনি এই আজগুবী ব্যাখ্যার মাধ্যমে নানুতুবী সাহেব খতমে নব্যুয়তকে অস্বীকার করে কুফুরী করে বসেন। এর পর হতে এই দেওবন্ধী সম্প্রদায় আর পথ খোঁজে পায় নি বরং একটার পর একটা ভুল করেই চলে, আজও ভুলেই পড়ে আছে।
ভারত স্বাধীনের পূর্বে নিখিল ভারতের সকল মুসলমান যখন নিজেদের জন্য আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্রের দাবীতে ঐক্য বদ্ধ হয়েছিলো তখন এই দেওবন্ধী আলেমরা সকল মুসলমানদের ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাট ফরমকে ত্যাগ করে মহাত্মা গান্ধী, ভল্লব ভাই পাটেলের মত মুসলিম বিদ্বেষী হিন্দুত্ববাদিদের রাজনৈতিক দল কংগ্রেসে যোগ দিয়ে বসে এবং হিন্দু-মুসলিম একজাতি তত্ত্বের মত এক কুফুরী ফতোয়া দিয়ে মুসলমানদের মধ্যে বিবেদ তৈরী করে মুসলমানদের জন্য আলাদা স্বাধীন রাষ্ট্রের বিরোধীতা করে বসে।
ভারত ভেঙ্গে পাকিস্তান ও ভারত নামে দুটি রাষ্ট্র হলেও অনেকেই জানে না যে ভারতে আরো চার চারটি মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ স্বাধীন দেশ তৈরী হয় যে গুলো হল কাশ্মীর, হায়দারাববাদ, জুনাগর ও আলীগর। এই রাষ্ট্র গুলো তৎকালীন কংগ্রেস সরকার ব্যাপক রক্তপাত ও নারী নির্যাতনের মাধ্যমে জোর পূর্বক দখল করে নেয়, আর তখনও এই দেওবন্ধীরা হিন্দুত্ববাদি জালেম কংগ্রেসের অংশ হিসাবে চুপ করে দর্শকের ভুমিকা পালন করে।
উপরের ঘটনা গুলোর পরিপ্রেক্ষিতে এটাই প্রমান হয় এই দেওবন্ধীরা কখনোই মুসলমানদের জন্য আশীর্বাদ ছিলো না বরং খতমে নব্যুয়ত অস্বীকার কারী, কাদিয়ানীর সত্যায়নকারী, হিন্দু-মুসলিম একজাতি তত্ত্বের মত কুফুরী আকিদা পোষনকারী এবং মুসলমানদের রক্তের সাথে বেঈমানী করে হিন্দুত্ববাদি কংরেসের দালালী করা ছাড়া তাদের কোন অবদান মুসলিম জাতির জন্য রাখতে পারে নি।
১৯৯২ সালে কংগ্রেসের আমলে বাবরীর মসজিদ ধ্বংশ হতে বর্তমান সময়ে এন.আর.সি পর্যন্ত এই দেওবন্ধীরা কৌশলের নামে নিজেদের স্বার্থ হাসিল ও মুসলমানদের ক্ষতি ছাড়া আর কিছুই করে নি।তারা মুসলুম উম্মাহর জন্য অভিশাপ বলেই প্রতিয়মান হয়েছে।
![]() |
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ