নযদি-ওহাবী মুনাফেকরা কিভাবে জামায়াতে ইসলামীর ঘাড়ে চড়ে দলের সর্বনাশ করছে তার ইতিহাস
১। জামায়াতে ইসলামের প্রতিষ্ঠাতা আল্লামা মওদুদী(রাহিঃ) একটি প্রকৃত ইসলামি দল প্রতিষ্ঠার জন্য কোরআন ও হাদিস চষে বিশ্বকে চ্যালেঞ্জ করার মত একটি দল প্রতিষ্ঠা করলেও শুরু হতেই কা*জ্জা*ব সৌদ পরিবারের লালিত মুনাফেক ও ব্রিটিশ দালাল আহলে হাদিসরা এতে প্রবেশ করে বিভিন্ন ভাবে দলটিকে ক্ষতি করছে।
২। কওমী ও কংগ্রেসের দালাল, অখন্ড ভারত বর্ষের পক্ষের দেওবন্দিরা নানান সময়ে নানান ভাবে জামায়াতের আকিদা নিয়ে প্রতিহিংসা বশত প্রশ্ন তোললেও কখনোই তাদের এই অভিযোগ গুলো ধোপে টিকে নি বরং তাদের দাবী গুলো বার বার মিথ্যাই প্রমানিত হয়েছে।
৩। সর্বশেষ ২০২২ সালে কুমিল্লার আদালতে আফতাব স্মরনিকা মামলার রায় প্রমান করে যে কওমী ও দেওবন্দের জামায়াতের বিরুদ্ধে উত্থাপন করা অভিযোগ গুলো সম্পূর্ণ মিথ্যা।
৪।আওয়ামিলীগ সরকারের আমলে জামায়াত বিরোধী কমিটি দ্বারা ইসলামি ফাউন্ডেশন ৭-৮ বছরেও কওমী-দেওবন্দের অভিযোগ গুলোর সত্যতা পায় নি।
৫। এর পরও জামায়াতকে ভালবাসলেও জামায়াত নিয়ে অনেক আলেম অনেক প্রশ্ন করে, বলে যে জামায়াত নাকি ওহাবী মতবাদ ধারন করে, যহা একটি যুগের একটি শ্রেষ্ঠ মিথ্যাবাদ। কিন্তু জামায়াত বিরোধীরা এই সুযোগটি পায় শুধু মাত্র জামায়াতে ঘাপটি মেরে থাকা কথিত আহলে হাদিসদের জন্য।
৬। আমি আগের দুটি সিরিজে ঐতিহাসিক দলিল সহ প্রমান করেছি যে নযদী ওহাবীরা ব্রিটিশ দের সৃষ্টি,সৌদি পরিবারের বেতনভুক্ত দালাল,ভারত বর্ষে নাম পরিবর্তন করে হয়েছে নামধারী আহলে হাদিস।
৭।আপনারা অনেকেই এটা জানেন যে গোলাম আহাম্মদ কাদিয়ানী নিজেও এক সময় ওহাবী আন্দোলন করত পরে সে নবুয়ত দাবি করছে।যা হোক কাদিয়ানী বলেন আর মযদি ওহাবী বলেন উভয়ই ব্রিটিশ দালাল,মুনাফেক,মুসলমানদের চির শত্রু।
৮।সৌদ পরিবার আস্তে আস্তে ভারত বর্ষে ওহাবী আন্দোলন প্রসার করতে শুরু করে,প্রথমে ওহাবী নামেই এই আন্দোলন প্রচার করতে থাকে ব্রিটিশদের সহযোগীতায়, ব্রিটিশরা ইসলামী সরকার এই মর্মে ওহাবীরা যখন ফতোয়া জারি করে তখন ভারত বর্ষের আলেমরা তাদের আসল চরিত্র চিনতে পারে আর তখন ওহাবীরা নিজেদের নাম পরিবর্তন করে আহলে হাদিস ধারন করে।
৯। ২য় বিশ্ব যুদ্ধের প্রাক্কালে আল সৌদ পরিবার তাদের মিত্র বিটেনের যুদ্ধে জয়-পরাজয় নিয়ে স্নায়ুচাপে পড়ে।
ফলে আধিপত্য ধরে রাখতে এবং ব্রিটিশদের স্বার্থে ওহাবী আন্দোলন প্রসার করতে বিশাল অর্থ বাজেট ও কৌশল নিয়ে মাঠে নামে সৌদ পরিবার।
১০।১৯৪১ সালে শতাব্দীর বিচক্ষন আলেম, বিশ্ব মুসলিম উম্মাহর স্বার্থে জামায়াত ইসলামী নামে একটি অত্যান্ত সময় উপযোগী,কৌশলী ও সম্পূর্ণ কোরআন হাদীস ভিত্তিক দল ইসলামী দল প্রতিষ্ঠা করেন। অপর দিকে মাওলানা মওদূদি(রাহিঃ) ক্ষুরধার ও বিচক্ষণ লেখনী ও বক্তৃতার মাধ্যমে ইসলামে প্রকৃত পরিচয় প্রচার ও প্রসার শুরু করেন।এতে মুনাফিকদের মুখোশ মুসলমানদের নিকট প্রকাশ পেতে থাকে এবং নযদী-ওহাবীরা মার্কেট হারাতে শুরু করে।
১১। মাওলানা মওদুদী(রাহিঃ) জামায়াতে ইসলামী দল গঠন করে প্রচার শুরু করে সম্পূর্ণ অন্ধকার মুক্ত এক ইসলামের যা মাজার ব্যবসায়ি,ধর্ম ব্যবসায়ি, খানকা ব্যবসায়ী, পীর পূজারী ও ইসলামের নামে সকল দালালের পেটে লাত্থি পড়ে আর প্রকৃত ইসলাম পিপাসু দায়ীরা দলে ভিড়তে শুরু করে। আর এতে করে এসকল মুখোশধারী ধর্ম ব্যবসায়িরা শুরু করে মিথ্যা প্রপাগান্ডা।
১২। এতদ বিরোধিতা সত্ব্যেও দলটি এগিয়ে যেতে থাকে আর এই ফাঁকে সুবিধাবাদী নযদীর সারগেদ ওহাবী তথা আহলে হাদিসরা সরাসরি বিরোধিতা না করে চুপটি করে জামায়াতে প্রবেশ করে মাওলানার হাতে ইসলামের স্বার্থ রক্ষা করবে মর্মে শপথ নিয়ে নিজেদের ওহাবি মতবাদ বিস্তারের স্বার্থে দলে ভিড়তে থাকে।
১৩। অন্যান্য দল গুলো নিজেদের স্বার্থে, পেট পূজার স্বার্থে,কেউ কেউ মাজার পূজার স্বার্থে, আবার কেউ কংগ্রেসের দালালির স্বার্থে জামায়াতের বিরোধীতা করলেও আহলে হাদিসরা চুপটি করে নিজেদের অস্তিত্ব রক্ষা করে সৌদ পরিবারের প্রেসক্রিপশন মত চলতে থাকে। মানে দলে থেকেই গোপনে গোপনে জামায়াতকে প্রভাবিত করা শুরু করে।
১৪।জামায়াতে ঢুকে নিজেদের অবস্থান শক্ত করত এই নযদী ওহাবিরা সহিহ আকিদার নামে মাওলানা মওদূদী তথা দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গ করে মাওলানা মওদূদী (রাহিঃ)সহ বড় বড় নেতাদের বক্তব্য বিনা অনুমতিতে বিকৃত করে নযদি ওহাবী দের আকিদা মিশিয়ে প্রচার শুরু করে। এতে করে অনেকে দলেট আদর্শকে ভুল বুঝে,সন্দেহ বসত প্রতিষ্ঠা কালীন অনেক কেন্দ্রীয় নেতা নিজেদেরকে দল থেকে গুটিয়ে নিতে থাকে আর মাওলানা সাহেবকে ভুল বুঝতে শুরু করে আর ওহাবিদের প্রভাব দলে বাড়তে থাকে সাময়িক ভাবে।
১৫।অপর দিকে নযদি ওহাবীরা সৌদি রাজ পরিবারের দ্বারা মাওলানা মওদূদী কে বারং বার ওহাবি মতাদর্শে প্রভাবিত করার ব্যর্থ চেষ্টা চালায়, সৌদ পরিবার গায়ে পড়া আচরন করতে থাকে, ফলে জামায়াত বিরোধী ও সন্দেহবাদীদের মনে আরো সন্দেহ ঘনীভুত হতে থাকে।
১৬।এই সন্দেহ আর অবিশ্বাসের কারনে অনেক হাক্বানী আলেম গন অভিমান করে দূরে সরে যেতে থাকে আর মোনাফেক নযদি ওহাবীরা তাদের জায়গা আরো পাকাপোক্ত করে দলকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালিয়ে যেতে থাকে।
১৭। নযদি-ওহাবি ও কাদিয়ানীরা উভয়ই ব্রিটিশ সৃষ্টি হলেও এতদ অঞ্চলে কাদিয়ানীদের প্রভাব দিন দিন ওহাবীদের চেয়ে দ্রুত বৃদ্ধি পেতে থাকে ফলে নযদিরা অস্তিত্ব সংকটের ভয়ে ক্রমশ ভিত সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে।
১৮। ১৯৫৩ সালে নিখিল পাকিস্তান সর্বদলীয় কনভেনশনে সর্ব সম্মতিতে নেয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ি কাদিয়ানিদের বিষয়ে পরিকল্পনা করা হয় সে বিষয়দি উপস্থাপন করে মাওলানা মওদুদী (রাহিঃ) সকল দলের পক্ষ হতে বক্তব্য দেন এবং আইনি ও রাজনৈতিক ভাবে সরকারের মাধ্যমে কাদিয়ানীদের বিষয়ে ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানিয়ে দেন। কিন্তু এর পর জামায়াতে ঘাপটি মারা আহলে হাদিস নামক নযদি ওহাবীরা এ বক্তব্যকে বিকৃত করে আগ বাড়িয়ে পাকিস্তানের সকল উগ্রবাদী রাফেজি,শিয়া, মাজার পূজারীদের সাথে নিয়ে কাদিয়ানীদের উপর হামলা চালায়, নিহত হয় অনেকে, আর ফেঁসেমযায় নির্দোষ মাওলানা মওদূদী (হাফিঃ)। এই হত্যা কান্ডে জামায়াত বিরোধিরা মািলানা মওদুদীকে জাড়িয়ে ফেলে আর এ সময়ে পাকিস্তানের তৎকালীন মার্শাল 'ল কোর্ট নিষ্পাপ মাওলানাকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যু দন্ডের রায় দিয়ে বসে।
১৯।কথায় আছে পরের ক্ষতি করলে নিজের ক্ষতি হয়। মাওলানা মওদূদী জেলে আটকের পর এই নযদি ওহাবীরা যখন দেখল যে মাওলানা মারা গেলে জামায়াতে ইসলামী বিলুপ্ত হবে আর নযদীদের রক্ষা পাওয়ার সকল পথ রুদ্ধ হয়ে পড়বে তখন আবার সৌদি সরকারকে দিয়ে এই মোনাফেকরা পাকিস্তান সরকারকে চাপ প্রয়োগ করে মাওলানা মওদূদী কে মুক্তি দিতে বাধ্য করায়। মানে শর্প হয়ে দংশন করা আর হোজ্জা হয়ে ঝাড়ার মতো।
২০। মাওলানাকে মুক্ত করার পর সৌদি সরকার বহুভাবে তাঁকে প্রভাবিত করার ব্যর্থ চেষ্টা করে। আর এদিকে নযদি পন্থি, জান্নাতুল বাকী ধ্বংশকারী ও খেলাফত ধ্বংশ কারী কাজ্জাব সৌদ পরিবারের এহেন কাজকে বিকৃত ভাবে জামায়াত বিরোধী সুবিধাবাদী মোল্লারা অপপ্রচারে কাজে লাগিয়ে মানুষকে জামায়াতে ইসলামী হতে দূরে রাখতে প্রচেষ্টা শুরু করে।
২১।মসজিদে নববীর সামনে মাওলানা মওদূদীর জন্য গায়েবানে জানাযা যেমন সন্মানের ও বরকতময় ছিলো তেমনি এই ঘটনা জামায়াত বিরোধীদেরকে মাওলানার আদর্শকে কাজ্জাব ওহাবীদের মতবাদের সাথে মিথ্যা ভাবে জড়িয়ে আরো কিছু দিন গীবত করার খোরাক এনে দেয়।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ