expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

বুধবার, ১ জানুয়ারী, ২০২৫

দেহবাদিদের পথ ভ্রষ্টতার প্রমান ও মিথ্যার জবাব

 "দেহবাদিদের পথ ভ্রষ্টতার প্রমান ও মিথ্যার জবাব"





আমি আজ আপনাদের নিকট ইসলামের নতুন ফেতনা নযদি-ওহাবি, মাদখলিদের পথ ভ্রষ্টতা ও দেহবাদের মিথ্যা দাবী গুলো দলিল সহ প্রমান দেওয়ার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ৷ 

হযরত আদম আ: হতে হযরত মুহাম্মদ সা: পর্যন্ত ১লক্ষ ২৪ হাজার কিংবা কোন কোন বর্ননা মতে ২লক্ষ ২৪ হাজার নবী ও রাসুল মানুষের হেদায়েতের জন্য আল্লাহ প্রেরন করেছেন।  আল কোরআনের ভাষ্য মতে দুনিয়ার এমন কোন জাতি বা কওম নাই যেখানে আল্লাহ তার প্রতিনিধি প্রেরন করেন নি।

এখন যদি কোন আলেম কে বা সাধারন মুসলমানকে প্রশ্ন করি হযরত আ: এর ধর্ম কি ছিলো? বলবে ইসলাম।

যদি বলি হযরত আ: এর পর হযরত মুহাম্মদ সা: পর্যন্ত যত নবী এসেছেন তাদের ধর্ম কি ছিলো? বলবে ইসলাম।

যদি বলি আদম আ: এর ধর্ম যদি ইসলাম হয় তাইলে পরে আর এত নবী পাঠালো কেনো আল্লাহ তা'লা। সবাই এক বাক্যে বলবে ওই নবীগনের উম্মতরা নিজ নিজ ধর্ম ভুলে পথ ভ্রষ্ট হয়ে গিয়েছিল তাই  পরে আরো নবী পাঠিয়ে পথে এনেছে মামুষকে আল্লাহ।

অতএব দেখা গেলো সকল নবীর উম্মতরাই এক সময় চুড়ান্তভাবে তাদের নবীদের শিক্ষা ভুলে, নাজিল কৃত কিতাব বিকৃত করতে করতে কিতাব হারিয়ে পথ ভ্রষ্ট হয়েছে। তাই সর্বশেষ আমাদের নবী হযরত মুহাম্মদ সা: কে আল্লাহ আমাদের হেদায়েতের পথ প্রদার্শক হিসাবে পাঠিয়ে নবুয়তের দরজা বন্ধ করেছেন।

আমাদের একটি অপরিবর্তনীয় কিতাব আল কোরআন আছে পথের দিশারী হিসাবে, আছে হাদিস।  তাইলে এই আধুনিক যুগে তো আমরা কেরআন হাদিস হারানোর সুযোগ নাই। কোরআনের রক্ষক সয়ং আল্লাহ আর হাদিস গুলো আমরা লিপিবদ্ধ করে রেখেছি। এই হাদিস ও কোরআন থাকতে আমরা কিভাবে পথ ভ্রষ্ট হব? আমরা এই নবীর উম্মত কি পথ ভ্রষ্ট হবা না কখনোই?

কিন্তুনকিয়ামতের পূর্বে তো সবাই এক সময় সম্পূর্ণ রুপে পথ হারা হবেই আর তখন সূর্য পশ্চিম দিক হতে উদয় হবে। তখনও কোরআন অপরিবর্তিত থাকবে। 

আমার প্রশ্ন হল কোরআন থাকার পরও মানুষ কিভাবে পথ ভ্রষ্ট হবে? কে পথ ভ্রষ্ট করবে?

আসুন জেনে নেই অদ্যকার ইসলাম ধর্মের মানুষ কিভাবে পথ ভ্রষ্ট হবে। বর্তমান মুসলমানদের পরবর্তী জাতি যখন ভবিষ্যতে পথ ভ্রষ্ট হবে তখনও তাদের নিকট অবিকৃত এই কোরআন হাতেই থাকবে। তার পরও পথ ভ্রষ্ট হবে। কিভাবে পথ হারবে?

তখন মানুষ অতিরিক্ত কোরআন হাদিস বুঝতে গিয়ে কোরআনের আয়াত গুলোর ভুল অর্থ  করে নিজে যা বুঝে তাকে সঠিক মনে করে আগের উস্তাদ ও আলেমদের ভুল মনে করে গালাগালি করবে আর পথ ভ্রষ্ট হবে।

আপনি ভাবছেন আমাদের পরবর্তী জেনারেশন আরো ট্যালেন্ট হবে, তারা ভুল বুঝতে যাবে কেনো, বরং আমরা যা বুঝতে পারি নি হয়ত তা বুঝে আরো সঠিক পথ অবলম্বন করবে।

আসলে না ভাই, এমন টা হবে না। আমি যা বলছি তাই সঠিক এবং এর পক্ষে যুক্তি না, প্রমান দেব আজ।

আল্লাহর নবী হযরত মুহাম্মদ সা:, তাঁর সহাবা গন, তাবেঈগন, তাবে তাবেঈ ও পরবর্তী যুগেও দেবাদ ইসলামে ছিলো না। হঠাৎ করে গত ১০০ বছর যাবত দেহবাদের অস্তিত্ব তৈরী করেছে তৎকালীন জাজিরাতুল আরবের নযদের, হাদিসে বর্নিত শয়তানের শিং খ্যাত আব্দুল ওহাব নযদি ও তার সারগেদ মাদখলিরা। 

ওরা আল্লাহ তা'লার হাত পা সহ বিবিন্ন অঙ্গ প্রত্যঙ্গের আক্ষরিক অনুবাদ শুরু করে মানুষকে ভুল বুঝিয়ে নিজেরাও পথ ভ্রষ্ট হয়েছে এবং অন্যান্য মুসলমানদেরও পথ ভ্রষ্ট করছে।

তারা মানুষের মনে আল্লাহর একটা কাল্পনিক ছবির ধারনা করিয়ে দিচ্ছে যা মূর্তি পূজার দিকে মানুষ ধাবিত করে। 

হিন্দু ধর্মের লোকেরা মূর্তির পূজা করে। তাদেরকে যদি প্রশ্ন করেন যে আপনারা কেন মাটির মূর্তি তৈরী করে নিজেরাই পূজা করেন? তখন আপনাকে তারা বলবে আমরা এই মাটির দলার পূজা করি না, আমরা মাটির দলার মূর্তির মাধ্যমে সৃষ্টি কর্তার আকৃতি কল্পনা করে ইশ্বরকেই পূজা করি। অর্থাদ দেহবাদের চুড়ান্ত গন্তব্য মূর্তি পূজা।

এবার আসেন এই দেহবাদি, মাদখলি,নির্লজ্জ ওহাবী সম্প্রদায় কিভাবে মানুষকে দেহবাদের দিকে নিয়ে যায়। এই দেহবাদিরা কোন আজগুবী জাদু দিয়ে কোনো মুসলমানকে পথ ভ্রষ্ট করে না, বরং কোরআনের আয়াতের ভুল ব্যাখ্যা বুঝিয়েই মানুষের মনে দেহবাদ প্রোথিত করে। আসুন জানা যাক কি কি আয়াত দিয়ে মানুষকে দেহবাদিরা পথ ভ্রষ্ট করে।

 আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

قَالَ يَاإِبْلِيسُ مَا مَنَعَكَ أَنْ تَسْجُدَ لِمَا خَلَقْتُ بِيَدَيَّ أَاسْتَكْبَرْتَ أَمْ كُنتَ مِنْ الْعَالِينَ

‘‘আল্লাহ বললেন, হে ইবলীস! যাকে আমি নিজের দুই হাত দ্বারা সৃষ্টি করেছি তার সম্মুখে সেজদা করতে তোমাকে কিসে বাধা দিল? তুমি কি অহংকার করলে? না তুমি তার চেয়ে উচ্চ মর্যাদা সম্পন্ন?’’ (সূরা ছফ: ৭৫)। 


এই আয়াত দিয়ে তারা আল্লহর দেহে হাতের অস্তিত্ব দাবি করে তার প্রমান দেয়।



আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

وَمَا قَدَرُوا اللَّهَ حَقَّ قَدْرِهِ وَالْأَرْضُ جَمِيعًا قَبْضَتُهُ يَوْمَ الْقِيَامَةِ وَالسَّماوَاتُ مَطْوِيَّاتٌ بِيَمِينِهِ سُبْحَانَهُ وَتَعَالَى عَمَّا يُشْرِكُونَ

‘‘তারা আল্লাহর মর্যাদা ও ক্ষমতা মোতাবেক কদর করেনি। কিয়ামতের দিন গোটা পৃথিবী থাকবে তার হাতের মুঠোয় এবং আসমানসমূহ ভাঁজ করা অবস্থায় থাকবে তার ডান হাতে। তিনি পবিত্র। আর এরা যাকে শরীক করে, তা থেকে তিনি অনেক উর্ধ্বে’’। (সূরা আয যুমার: ৬৭) 


আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

كُلُّ شَيْءٍ هَالِكٌ إِلَّاوَجْهَهُ

‘‘তার চেহারা ব্যতীত সবকিছুই ধ্বংস হবে’’। (সূরা কাসাস: ৮৮)


এই আয়াত দ্বারা মাদখালিরা আল্লাহর দেহের অস্তিত্ব দাবি করে ও প্রমান দেয়।


আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

كُلُّ مَنْ عَلَيْهَا فَانٍ وَيَبْقَى وَجْهُ رَبِّكَ ذُو الْجَلَالِ وَالْإِكْرَامِ

‘‘ভূপৃষ্ঠের সবকিছুই ধ্বংস হবে। একমাত্র তোমার সেই রবের চেহারাই অবশিষ্ট থাকবে, যিনি মহিয়ান ও দয়াবান। (সূরা আর্ রাহমান: ২৬-২৭) 


আল্লাহ তা‘আলা সূরা মায়িদার ১১৬ নং আয়াতে আরো বলেন,

تَعْلَمُ مَا فِي نَفْسِي وَلَا أَعْلَمُ مَا فِي نَفْسِكَ إِنَّكَ أَنتَ عَلَّامُ الْغُيُوبِ

‘‘আমার অন্তরে যা আছে তা তুমি জানো। কিন্তু তোমার অন্তরে যা আছে আমি তা জানি না, তুমি তো গায়েবের সমস্ত জ্ঞান রাখো’’। 

এই আয়াত দিয়ে আল্লাহর অন্তরের অস্তিত্ব দাবি করে।


আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন,

كَتَبَ رَبُّكُمْ عَلَىٰ نَفْسِهِ الرَّحْمَةَ أَنَّهُ مَنْ عَمِلَ مِنكُمْ سُوءًا بِجَهَالَةٍ ثُمَّ تَابَ مِن بَعْدِهِ وَأَصْلَحَ فَأَنَّهُ غَفُورٌ رَّحِيمٌ

আল্লাহ তা‘আলা আরো বলেন, وَيُحَذِّرُكُمُ اللَّهُ نَفْسَهُ ‘‘আল্লাহ তোমাদেরকে তার নফসের ভয় দেখাচ্ছেন’’। (সূরা আলে-ইমরান: ২৮)

শাফা‘আতের হাদীছে এসেছে, নাবী করীম ছাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন,

«لَمَّا يَأْتِي النَّاسُ آدَمَ فَيَقُولُونَ لَهُ: خَلَقَكَ اللَّهُ بِيَدِهِ وَأَسْجَدَ لَكَ مَلَائِكَتَهُ وَعَلَّمَكَ أَسْمَاءَ كُلِّ شَيْءٍ»

‘‘কিয়ামতের দিন যখন মানুষ আদম আলাইহিস সালামের নিকট এসে বলবে, আল্লাহ তা‘আলা আপনাকে স্বীয় হাত দ্বারা সৃষ্টি করেছেন, তার ফেরেশতাকে দিয়ে আপনাকে সিজদা করিয়েছেন এবং আপনাকে সব জিনিসের নাম শিখিয়েছেন’’।


 আল্লাহ তা‘আলা বলেন,

أَوَلَمْ يَرَوْا أَنَّا خَلَقْنَا لَهُم مِّمَّا عَمِلَتْ أَيْدِينَا أَنْعَامًا فَهُمْ لَهَا مَالِكُونَ

‘‘এরা কি দেখে না, আমি নিজের হাতে তৈরী জিনিসের মধ্য থেকে এদের জন্য সৃষ্টি করেছি গবাদি পশু এবং এখন এরা তার মালিক’’। (সূরা ইয়াসীন: ৭১)


এখন এই মূর্খদের জবাব দেওয়ার পালা। এই নযদি- ওহাবী, মাদখালিরা এতই মূর্খ যে, তারা আরবি তো জানেই না, জানলেও ইচ্ছা করে ভুল ব্যাখ্যা করে। আর বাংলা ও আধুনিক সাহিত্যও জানে না, এমন জাত মূর্খ।


আসুন আপনাদের সাহিত্য ও ব্যাকরন দিয়ে তাদের মূর্খতার প্রমান দেই। 

১। তারা যে আল্লাহর হাতের অস্তিত্ব দাবি করে এটা তাদের আরবি সাহিত্য ও ভাষাগত মূর্খতার বহিঃপ্রকাশ। 

দেখুন হাত একটি বাংলা শব্দ, যদি বলি আমার দুই হাত, তাইলে বুঝবেন বাস্তবে আমার দুটি হাত বুঝিয়েছি। আবার যদি বলি আমার কথায় একজন বাম হাত ঢুকিয়েছে তাতে বুঝতে হবে কেউ একজন বিনা অনুমতিতে আমার কথার মাঝে লোকমা ধরেছে। আদতে কথার মাধ্যে হাত ঢুকানোর কোন সুযোগ নাই, কেননা কথা একটা ক্রিয়া, যার বাস্তবতা আলাদা, এখানে হাত ঢুকানো বলতেও হাত বুঝায় নি, অধিকার বুঝায়। অর্থাদ স্থান ভেদে একই জিনিসের বিভিন্ন গুন বাচক অর্থে ব্যবহৃত হয়েছে।


২।চেহারার কথা যে দেহবাদিরা দাবী করে এটাও তাদের মূর্খতা। কেননা আমি যখন বলি আমি আয়নার সামনে চেহারা দেখি, এতে বুঝায় আমি নিজের অস্তিত্বের অবয়বের প্রতিচ্ছবি দেখছি, এটা সরাসরি চেহারা দেখা না। কিন্তু যদি বলি আমি আপনার চেহারা দেখে দেখে হুব হু এঁকে দিব। এতে বুঝা যায় আমি উদ্দিষ্ট ব্যক্তিকে সরাসরি দেখে এঁকে দেব। এখানেও একই শব্দের অবস্তা ও সাহিত্যিক বর্ননার ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা কিছু বুঝায়।


৩। অন্তর: অন্তর শব্দটির ও বিভিন্ন অর্থে বিভিন্ন ভাবে ব্যবহৃত হতে পারে সহিত্যে।


আর আপনারা জানেন আলকরআন শুধু ঐশী বানীই নয়, বরং একটা সর্ব কালের শ্রেষ্ঠ,  ভাষায় অংকৃত ও সাহিত্য সম্মলিত আল্লাহ তা'লার নাজিল কৃত কিতাব। আর এই মূর্খরা এই সাহিত্যগত অলংকরনের অর্থ না বুঝতে পেরে নিজের মত অর্থ বানিয়ে আল্লাহর দেহের অস্তিস্ত প্রমান করতে গিয়ে নিজেরা পথ ভ্রষ্ট হচ্ছে এবং একদল দূর্বল ঈমানের মানুষকে নিয়ে যাচ্ছে মূর্তি পূজার দিকে।


এখানে দেহবাদিরা যে মিথ্যা দাবি গুলো কোরআনের আয়াত দিয়ে ব্যাখ্যা করছে সে গুলো আলকোরআনের অর্থের বিকৃতি ছাড়া আর কিছুই না। এরা নির্লজ্জ বেহায়া পথ ভ্রষ্ট সম্প্রদায়। এদের ধোঁকা হতে আল্লাহ মুসলমানদের রক্ষা করুক।(আমিন)


লেখক: চিকিৎসক, জার্নালিস্ট ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী। 




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...