expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

বৃহস্পতিবার, ২৯ মে, ২০২৫

৭১ চেতনা ধারী আওয়ামিলীগের ২৩ রাজাকারে তালিকা

 "৭১ চেতনা ধারী আওয়ামিলীগের ২৩ রাজাকারে তালিকা"

৭১ চেতনা ধারী আওয়ামিলীগের ২৩ রাজাকারে তালিকা



১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পাকিস্তান বাহিনীর সহযোগী হিসেবে কাজ করেছে, এমন অভিযোগে বিরোধীজোট বিএনপি ও জামায়াতরে এক ডজন নেতার বিচার করছে। আওয়ামী লীগ সরকার। তারা নিজেদের মুক্তিযুদ্ধের কথিত স্বপক্ষ শক্তি দাবি করে এ বিচার করলেও তাদের দলে থাকা রাজাকারদের ব্যাপারে একেবারে নিরব। এদলটিতেও রয়েছে, কুখ্যাত রাজাকার, আল বদর, আল শামস, গণহত্যকারী, গণধর্ষণকারী, অগ্নিসংযোগাকরীসহ অসংখ্য স্বাধীনতাবিরোধী। কিন্তু তারা রয়েছেন ধরা ছোয়ার বাইরে। তবে আওয়ামী লীগের নেতারা বিভিন্ন সময় বক্তৃতায় বলেছেন, আওয়ামী লীগে রাজাকার থাকলে দেখিয়ে দেন-আমরা তাদের বিচার করব। আমাদের অনুসন্ধানে নিচে ২৩ আওয়ামী রাজাকারের তালিকা তুলে ধরা হলো।


আওয়ামী লীগের এই ২৩ জন যুদ্ধাপরাধী বা তাদের পরিবার কোন না কোনভাবে ৭১ সালে পাকিস্তান সরকার ও যুদ্ধাপরাধের সাথে জড়িত ছিলেন। মক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগের এসব নেতা ঘৃণিত ভূমিকা পালন করেছেন। পরবর্তী সময়ে আওয়ামী লীগের রাজনীতেতে সক্রিয় থেকে মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তি বনে গিয়েছে। ১৯৭১ সালে মক্তিযোদ্বাদের হত্যাসহ নানা ধরনের মানবতবিরোধী অপরাধের সঙ্গে তারা যুক্ত ছিলেন তারা। নিচে আওয়ামী লীগের এসব যুদ্বাপরাধীর নাম ও তাদের কর্মকাণ্ডের কিছু তথ্য দেয়া হলো:


১. অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম:


ঢাকা-২ আসনের সংসদ সদস্য ও আইন প্রতিমন্ত্রী অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম রাজাকার পরিবারের সদস্য। তার বড় ভাই হাকিম হাফেজ আজিজুল ইসলাম নেজামে ইসলামি পার্টির কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক ছিলেন। পাক হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতা ও মুক্তিযোদ্ধাদের শায়েস্তা করার জন্য তার নেতৃত্বেই ঢাকায় প্রথম শান্তি কমিটি গঠন হয়। একই সঙ্গে তিনি রাজাকার, আল বদর ও আল শাসম বাহিনীকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করেছেন। অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসই স্বাধীনতা বিরোধী কর্মকাণ্ড চালানোর পাশাপাশি মু্ক্তিযোদ্ধাদের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে বড় ভাইকে সার্বিক সহযোগিতা করেন।


মুক্তিযুদ্ধের সময় তার রাজাকার ভাইয়ের মালিকাধীন প্রিন্টিং প্রেসে তিনি ম্যানেজার হিসেবে কাজ করতেন। ১৯৬৯ সালে এ দেশে পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলন জোরদার হলে নেজামের ইসলাম পার্টির পক্ষ থেকে পাকিস্তানের অখণ্ডতা রক্ষার প্রচারণা চালানোর জন্য ‘নেজামে ইসলাম’ নামে একটি সাপ্তাহিক পত্রিকা প্রকাশিত হয়। হাকিম অজিজুল ইসলাম এ পত্রিকার সম্পাদক ছিলেন। শেখ মজিবুর রহামনসহ পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলনকারীদের নিয়ে তিনি এ পত্রিকায় ‘ইবলিশের দিনলিপি’ নামে প্রতি সপ্তাহে বিশেষ সম্পাদকীয় লিখেন। অ্যাডভোকেট কামরুল ১৯৯৪ সালে আওয়ামী লীগের রাজনীতেতে সক্রিয় হন। এর মধ্যে দিয়ে রাজাকার


পরিবারের গন্ধ হতে মুক্ত হতে চান তিনি। তার ব্যাপারে ‌‌'মুক্তিযুদ্ধে ইসলামী দল' শীর্ষক বইয়ে বিস্তারিত উল্লেখ আছে।


২. লে.কর্ণেল (অব) ফারুক খান:


পর্যটন মন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ নেতা। তিনি মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের পক্ষে দিনাজপুরে কর্মরত ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে তিনি পাকিস্তানী সেনাবাহীনীর পক্ষে প্রথম অপারেশন চালান এবং কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা ও নিরীহ বাঙালিকে নির্মমভাবে হত্যা করেন। সুত্র: “দিনাজপুরের মক্তিযুদ্ধ” বই।


৩. ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন:


ফরিদপুর– ৩ আসনের সংসদ সদস্য, মন্ত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। তিনি শান্তি বাহিনী গঠন করে মুক্তিযোদ্বাদের হত্যার জন্য হানাদার বাহিনীদের প্ররোচিত করেন। “ দৃশ্যপট একাত্তর: একুশ শতকের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগ” বইয়ের ৪৫ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে, শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন শান্তি কমিটির জাদরেল নেতা ছিলেন। তার পিতা নুরুল ইসলাম নুরু মিয়া ফরিদপুরের কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন।


৪. অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন:


ময়মনসিংহ ৬ আসনের সংসদ সদস্য ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট মোসলেম উদ্দিন ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকার ও


শান্তি কমিটির সদস্য ছিলেন বলে গত বছরের ৪ এপ্রিল ট্রাইবুনাল ওয়ার ক্রাইম ফাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহবায়ক ডা, এম এ হাসানের দেয়া যুদ্ধাপরাধের তালিকায় (ক্রমিক নং-৭৩) উল্লেখ করা হয়েছে। যা গত ২২ এপ্রিল দৈনিক ডেসটিনি পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। এ দিকে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে তার বিরুদ্বে গত ৬ এপ্রিল ফুলবাড়িয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের শ্রম বিষয়ক সম্পাদক ও জোড়বাড়িয়া গ্রামের ওয়াহেদ আলী মণ্ডলের ছেলে মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন বাদী হয়ে ময়মনসিংয়ের সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিট্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেন।


৫. সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী:


আওয়মী লীগের সেকেন্ড ইন কমান্ড সংসদ উপনেতা ফরিদপুর-২ আসনের সংসদ সদস্য সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে পশ্চিম পাকিস্তানী শাসক গোষ্ঠীর কাছে একজন আস্থাভাজন নেত্রী ছিলেন। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বিজয়ী এবং সংরক্ষিত মহিলা আসনে নির্বাচিতদের মধ্যে থেকে ৮৮ জনকে পাকিস্তানের সামরিক সরকার আস্থাভাজন এন এন এ মেম্বার অব ন্যাশনাল এজেন্সী হিসেবে ঘোষণা করে। ১৯৭১ সালে ৭ আগষ্ট পাকিস্তানের তথ্য অধিদপ্তর থেকে প্রকাশিত ওই তালিকায় সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর নাম ছিল ৮৪ নম্বরে। জেনারেল রোয়াদেদ খান ওই দিন ইসলামাবাদে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এই তালিকা প্রকাশ করেন। পাকিস্তানের পক্ষে সমর্থন জানানো এবং মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে ভূমিকা পালন করার সুবাদে তিনি এ খ্যাতি অর্জন করেন বলে জানা গেছে। ১৯৭১ সালে পাকিস্তান সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রকাশিত গেজেটে এ তথ্য উল্লেখ আছে।


৬. সৈয়দ জাফরউল্লাহ:


আওয়ামী লীগের প্রেসেডিয়াম সদস্য সৈয়দ জাফরউল্লাহ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষ হয়ে কাজ করেছেন। মাসিক “সহজকথা” আয়োজিত যুদ্ধাপরাধের বিচার:বর্তমান প্রেক্ষাপট শীর্ষক সেমিনারে বক্তব্য দিতে গিয়ে কাদের সিদ্দিকী বলেন, আওয়ামী লীগের বর্তমান প্রেসিডিয়াম সদস্য সৈয়দ জাফরঊল্লাহ মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষে ছিলেন। জাফর উল্লাহ স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানীদের পূর্ণ সমর্থন দেন। “মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান ” বইয়ে বিস্তারিত উল্লেখ আছে।


৭. মুসা বিন শমসের:


গত বছরের ২১ এপ্রিল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ক্ষোভ প্রকাশ করে ফরিদপুরের নেতাদের কাছে প্রশ্ন করেন, শেখ সেলিম যে তার ছেলেকে ফরিদপুরের রাজাকার মুসা বিন শমসেরর মেয়ে বিয়ে করিয়েছেন তার কথা কেউ বলছেন না কেন? এ খবর ২২ এপ্রিল আমার দেশ পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে। উল্লেখ্য, মুসা বিন শমসের গোপালগঞ্জ-২ আসনের সংসদ সদস্য। আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিমের ছেলের বেয়াই। ওয়ার ক্রাইম ফ্যাক্টস ফাইডিং কমিটির আহবায়ক ডা: এম এ হাসান যুদ্ধাপরাধী হিসেবে ৩০৭ জনের নাম উল্লেখ করেছেন। সেখানে ফরিদপুর জেলায় গণহত্যাকারী হিসেবে মুসা বিন শমসের নাম রয়েছে। তিনি নিরীহ বাঙ্গালীদের গণহত্যায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন এবং মুক্তিযোদ্দ্ধাদের হত্যাসহ নির্মম নির্যাতন করেছেন বলে জানা গেছে।


৮. মির্জা গোলাম কাশেম:


জামালপুর–৩ আসনের সংসদ সদস্য, যুবলীগের লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সরকার দলীয় হুইপ মির্জা গোলাম আযমের বাবা। ১৯৭১ সালে মির্জা কাশেম জামালপুরের মাদারগঞ্জে শান্তি কমিটির জাদরেল নেতা ছিলেন। তিনি রাজাকার, আল-বদরদের গঠন করে মুক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দেন। তার বিরুদ্ধে নারী ধর্ষণ ও লুটপাটের একাধিক অভিযোগ আছে। যা “জামালপুরের মুক্তিযুদ্ধ ( “১৯৮১ সালের সংস্বকরণ” বইয়ে উল্লেখ আছে। মির্জা কাশেম জামায়াতের সাবেক আমির অধ্যাপক গোলাম আযমের একনিষ্ঠ ভক্ত ছিলেন। প্রিয় নেতার নামানুসারে ছেলের নাম রাখেন মির্জা গোলাম আযাম।


৯. এইচ এন আশিকুর রহমান:


রংপুর ৫ আসনের সংসদ সদস্য, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় অর্থ সম্পাদক এইচ এন আশিকুর রহমান ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ হতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত পাকিস্তার সরকারের অধীনে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদে টাঙ্গাইলে কর্মরত ছিলেন। এ সময় তিনি পাকিস্তান সরকারকে মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী কর্মকাণ্ডে সহযোগিতা করেন। এস এস এম শামছুল আরেফিন রচিত ‘মুক্তিযুদ্বের প্রেক্ষাপট ব্যক্তির অবস্থান’ বইয়ের ৩৫০ পৃষ্টায় পূর্ব


পাকিস্তানে কর্মরত বাঙালি অফিসারদের তালিকায় তার নাম প্রকাশিত হয়েছে। ৯ জানুয়ারি রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ইঙ্গিত করে বলেন, রাজাকার আশিকুর রহমান আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ বলে তার বিচার করবেন না তা হয় না। আমরা সব রাজাকারের বিচার চাই। মন্ত্রীসভায় রাজাকার রেখে রাজাকারের বিচার করা যায় না।


১০. মহিউদ্দিন খান আলমগীর:


চাদপুর-১ আসনের সরকার দলীয় সংসদ সদস্য ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ হতে ১৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত ময়মনসিংহে অতিরিক্তি জেলা প্রশারক পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি পাকিস্তান সরকারের অধীনে চাকরি করে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানকে সহযোগিতা করেছেন। তার বিরুদ্ধে গণহত্যার অভিযোগ রয়েছে। এ সময় আরেফিন রচিত “মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান বইয়ের ৩৫০ পৃষ্ঠার মুক্তিযুদ্ধের সময় পূর্ব পাকিস্তানের কর্মরত বাঙালি অফিসারদের তালিকা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। তাকে চিহ্নিত রাজাকার হিসেবে আখ্যা দিয়ে গত ৯ ফেব্রুয়ারি তার বিচার দাবি করেন বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী।


১১. মাওলানা নুরুল ইসলাম:


জামালপুরের সাবেক সংসদ সদস্য ও সাবেক ধর্ম প্রতিমন্ত্রী মাওলানা নুরুল ইসলাম ১৯৭১ সালে জামালপুর সরিষা বাড়ী এলাকার রাজাকার কমান্ডার ছিলেন। তার নেতৃত্বে রাজাকাররা ঐ এলাকায় মুক্তিযুদ্ধ বিরোধী সকল কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন। “ দৃশ্যপট এক্ত্তার: একুশ শতকের রাজনীতি ও আওয়ামী লীগ” গ্রন্থের ৪৫ পৃষ্ঠায় এর বিবরণ দেয়া আছে। এ ছাড়া গত ২৮ এগ্রিল দৈনিক আমাদের সময় প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে মাওলানা নুরুল ইসলামকে সরিষাবাড়ি এলাকার রাজাকার কমান্ডার হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।


১২. মজিবর রহামান হাওলাদার:


কুটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক মজিবর রহমান হাওলাদার সশস্ত্র রাজাকার ছিলেন। মুক্তিযুদ্ধে বিভিন্ন এলাকায়


বসতবাড়ীতে অগ্নিকাণ্ড ঘটানোসহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত ছিলেন তিনি। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বাক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় তার নাম ১ নম্বরে । এ তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালের ১ আগষ্ট। দ্বিতীয় বার গত ১ এপ্রিল যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সে তালিকায়ও যুদ্বাপরাধী হিসেব তার নাম আছে।


১৩. আবদুল বারেক হাওলাদার:


গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রাফেজা বেগমের পিতা আবদুল বারেক হাওলাদার ৭১ এ দালাল ছিলেন। গোপালগঞ্জের কোটলীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বাক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্বপরাধীর তালিকায় তার নাম ৪১ নম্বরে। এ তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালের ১ আগষ্ট । দ্বিতীয় বার গত ১ এপ্রিল যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সে তালিকাতেও তার নাম আছে। বারেক হাওলাদার মুক্তিযুদ্ধের সময় নারী নির্যাতনের সাথে জড়িত ছিলেন।


১৪. আজিজুল হক:


গোপালগঞ্জ কোটালীপাড়া উপজেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভানেত্রী রাফেজা বেগমের ভাই আজিজুল হক কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। গোপালগঞ্জের কোটলীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বাক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্বপরাধীর তালিকায় তার নাম ৪৯ নম্বরে। এ তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালের ১ আগষ্ট। দ্বিতীয় বার গত ১ এপ্রিল যে তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে সেখানেও তার নাম রয়েছে।


১৫. মালেক দাড়িয়া:


আওয়ামী লীগ নেতা ও গোপালগঞ্জ মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার আবুল কালাম দাড়িয়ার বাবা মালেক দাড়িয়া কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। তিনি ছিলেন আল বদরের একনিষ্ঠ সহযোগী। গণহত্যায় নেতৃত্ব দেন তিনি। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্বাপরাধীর তালিকায় তার নাম ১৪০ নম্বরে। তালিকা প্রকাশ করা হয় ২০০৮ সালের ১ আগষ্ট।


১৬. মোহন মিয়া:


গোপালগঞ্জ কোটারিপাড়া উপজেলা শ্রমিকলীগ সভাপতি আমির হোসেনের পিতা মোহন মিয়া মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানের দালাল ও রাজাকার


ছিলেন। স্থানীয় মু্ক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি লুটপাট করে অগ্নিসংযোগ করেছেন। গোপালগঞ্জের কোটালীপাড়া ইউনিট কমান্ডের ডেপুটি কমান্ডার মজিবুল হক স্বাক্ষরিত গোপালগঞ্জের যুদ্ধাপরাধীদের তালিকায় তার নাম ছিল ১৫৭ নম্বরে।


১৭. মুন্সি রজ্জব আলী দাড়িয়া:


উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া দাড়িয়ার বাবা মুন্সি রজ্জব আলী দাড়িয়া রাজাকার ছিলেন। যুদ্বাপরাধীর তালিকায় তার নাম আছে। তিনি পাকিস্তানীদের গুপ্তচর হিসেবে কাজ


করতেন এবং মুক্তিযোদ্ধাদের কর্মকাণ্ডের গোপন খবর পাকবাহিনীকে পৌঁছে দিতেন।


১৮. রেজাউল হাওলাদারঃ


কোটালিপাড়া পৌর মেয়র ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা এইচ এম অহেদুল ইসলামের ভগ্নিপতি রেজাউল হাওলাদের নাম ২০৩ জন রাজাকার, আল বদর, আলশামসসহ গত ১ এপ্রিল প্রকাশিত কোটালিপাড়ার যুদ্বাপরাধীর তালিকায় রয়েছে। তিনি আল বদর সদস্য হিসেব স্থানীয় মু্ক্তিযোদ্ধাদের বিরুদ্ধে নানা কর্মকাণ্ড পরিচালনা করতেন।


১৯. বাহাদুর হাজরাঃ


কোটালিপাড়া স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা ও পৌর মেয়র এইচ এম অহেদুল ইসলামের পিতা বাহাদুর হাজরার নাম গত ১ এপ্রিল প্রকাশিত কোটালিপাড়ার যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় রয়েছে। তিনি একজন সক্রিয় রাজাকার ছিলেন। মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যাসহ নানা অপকর্মে জড়িত ছিলেন।


২০. আ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদারঃ


গোপালগঞ্জের এ পি পি ও আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদারের নাম গত ১ এপ্রিল প্রকাশিত কোটালিপাড়ার যুদ্বাপরাধীর তালিকায় রয়েছে। তিনি পাকিস্তানীদের দোসর ও আল বদর বাহিনীর সহযোগী ছিলেন। আল বদর বাহিনীর সকল ধরনের কর্মকাণ্ডে অংশ গ্রহণ করতেন তিনি।


২১. হাসেম সরদার:


অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদারের পিতা হাসেম সরদারের নাম কোটালীপাড়ার যুদ্ধাপরাধীর তালিকায় রয়েছে। তিনি একজন রাজাকার ছিলেন। ৭১ সালে তার নেতৃত্বে অনেক সাধারণ বাঙালির বাড়ি-ঘরে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছিল।


২২. আবদুল কাইয়ুম মুন্সি:


জামালপুর বকশিগঞ্জ আওয়ামী লীগ সভাপতি অবুল কালাম আজাদের পিতা আবদুল কাইয়ুম মুন্সীর বিরুদ্বে মুক্তিযুদ্ধের সময় পাকিস্তানী বাহিনীকে সহয়তা ও মুক্তিযোদ্বাদের হত্যাসহ অগ্নিসংযোগের অভিযোগে গত ৬ এপ্রিল জামালপুর আমলি আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। মালিচর নয়াপাড়া গ্রামের সিদ্দিক আলী এ মামলা দায়ের করেন। আবদুল কাউয়ুম মুন্সী পাকিস্তানী বংশোদ্ভুত বলে জানা গেছে। মামলার অভিযোগে বলা হয়েছে, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আবদুল কাউয়ুম মুন্সী পাক হানাদার বাহিনীকে সহায়তা করার জন্য বকশিগঞ্জে আল বদর বাহিনী গড়ে তুলতে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। পাক বাহিনীর সাথে থেকে অনেক মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যা করেন।


২৩. নুরুল ইসলাম-নুরু মিয়া:


প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বেয়াই ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেনের পিতা নুরুল ইসলাম নূরু মিয়া ফরিদপুরের কুখ্যাত রাজাকার ছিলেন। গত ২১ এপ্রিল ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ নেতারা প্রধানমন্ত্রীর সাথে বৈঠক করেন। এ সময় তারা মন্ত্রী ও তার ভাই খন্দকার মোহতেশাম হোসেন বাবরের বিরুদ্ধে নানা অপকর্মের অভিযোগ তুলে ধরে বলেন, তার বাবা নূরু মিয়া মু্ক্তিযুদ্ধের সময় রাজাকর ছিলেন। এর উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফরিদপুরের রাজাকারের তালিকায় ১৪ নম্বরে নুরু মিয়ার নাম থাকলেও তিনি যুদ্বাপরাধী ছিলেন না। পরের দিন ২২ এপ্রিল আমার দেশ পত্রিকায় এ খবরটি প্রকাশিত হয়। নুরু মিয়ার অপকর্মের বিষয়ে ‘মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ব্যক্তির অবস্থান’ বইয়ে বিস্তারিত বলা আছে। জানা যায়, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় জন প্রতিনিধি হয়েও আওয়ামী লীগের ২৭ নেতা মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতা করে পাক হানাদার বাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে ছিলেন। তারা কেউ ছিলেন (এম এন এ) জাতীয় পরিষদ সদস্য, আবার কেউ ছিলেন (এম পি এ) প্রাদেশিক পরিষদের নির্বাচিত সদস্য। মুক্তিযুদ্ধে তারা হানাদার বাহিনীকে সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। দেশের মুক্তিযোদ্বাদের হত্যা, নারী ধর্ষণ, লুটতরাজ এবং বসতবাড়িতে অগ্নিসংযোগ সহ নানা ধনের মানবতা বিরোধী অপরাধের সাথেও তারা যুক্ত ছিলেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মুজিবনগরের সরকারের মন্ত্রী পরিষদ, যুদ্ধাপরাধের সংক্রান্ত কিছু বই থেকে এসব তথ্য পাওয়া গেছে। এ সব নিয়ে বিভিন্ন সময় গণমাধ্যমে প্রতিবেদনও প্রকাশিত হয়। এবার দেখা যাক মুক্তিযুদ্ধের সঙ্গাহীন-চেতনা বাস্তবায়নে ব্যস্ত আমাদের আওয়ামী লীগ সরকার কি ব্যবস্থা নেয়! নিশ্চয়ই নিজের ঘর আওয়ামী লীগকে রাজাকার মুক্ত করতে আওয়ামী লীগের মধ্যে থাকা রাজাকারগুলোর বিচার করবে তারা। তো আর দেরি কেন-প্রধানমন্ত্রীর বেয়াই মোশাররফকে দিয়েই শুরু হোক।

শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫

বিশ্বের ভয়ংকর খুনী ও ধর্ষক সেনাবাহিনী

 বিশ্বের ভয়ংকর খুনী ও ধর্ষক সেনাবাহিনী 




বিশ্বের ভয়ংকর খুনী ও ধর্ষক সেনাবাহিনী 


ভারতের হিন্দুর বাচ্চাদের সেনাবাহিনী পৃথিবীর ভয়ংকর খুনে ও ধর্ষক সেনাবাহিনী । ধর্ষণের অপরাধে এই বাহিনী বহু বার অভিযুক্ত হয়েছে । ধর্ষক এই সেনাবাহিনী কি করে জাতিসংঘ শান্তি মিশনে কাজ করে তাহা আমার বোধগম্য নয় । নিম্নে এই সেনাবাহিনীর কিছু পৈশাচিক কর্মের বিবরণ দেয়া হল :----


১) জুনাগড় ( প্রিন্সলী স্টেট ) :- জুনাগড় মুসলীম শাসক দ্বারা শাসিত ছিল । জুনাগড়ের শেষ শাসক ছিল তৃতীয় মোহাম্মদ । তিনি প্রথমে স্বাধীন ভাবে রাজ্য পরিচালনা করলেও পরে তিনি পাকিস্তানের সাথে একীভূত হতে চান । এটা চরমতম মুসলীম বিদ্বেষী নেহরুকে ক্ষুদ্ধ করে তোলে । জুনাগড়ে বসবাসরত বাভারী এলাকার হিন্দুর বাচ্চাদের উসকে দিয়ে বিদ্রোহ করায় । জুনাগড় সেনাবাহিনী সেই বিদ্রোহ দমন করে । মুসলীম বিদ্বেষী নেহেরু হিন্দু রক্ষার অজুহাত তুলে ব্রিটিশদের সাহায্যে ১৯৪৭ সেপ্টেম্বর মাসে জুনাগড় দখল করে নেয় । এরপরই শুরু হয় ভারতীয় সেনাবাহিনী ও স্থানীয় হিন্দুর বাচ্চাদের বর্বরতম গণহত্যা ও ধর্ষণের উৎসব । মাত্র ৮ দিনে ভারতীয় হিন্দুর বাচ্চারা ৩ লাখ মুসলীমকে নৃশংস ভাবে হত্যা করে এবং  ১ লক্ষের উপরে মুসলীম নারীদের ধর্ষ*ণ করে। প্রায় ২লাখ নারীকে অপহরণ করে নিয়ে যায় । যাদের কোনও খোঁজ খবর কেউ আর কোনও দিন পায় নাই । ইতিহাসে এটা জুনাগড় ম্যাসাকার নামে পরিচিত ।


২) কাশ্মীর :- ভারত ১৯৪৭ সালে ভারতের হিন্দুর বাচ্চারা ব্রিটিশ অস্রে সজ্জিত হয়ে অতর্কিতে কাশ্মির দখল করে নিয়েছিল । আচমকা আক্রমণে কাশ্মীরিরা হতভম্ব হয়ে পড়েছিল । কিন্তু উপজাতি পাঠানরা তাদের তলোয়ার আর গাদা বন্দুক দিয়ে ভারতীয় হিন্দুর বাচ্চাদের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে । উপজাতি পাঠানদের পাল্টা আক্রমণে ভারতীয় সেনাবাহিনী পিছু হটতে থাকে এবং কাশ্মীরের প্রায় ৪০% এলাকা ছেড়ে দিতে বাধ্য হয় । কাশ্মীরে স্থিতি হয়ে ভারতের হিন্দুর বাচ্চারা সেইখানকার স্থানীয় অনেক কাশ্মীরি নারীকে ধর্ষ*ণ ও হত্যার মাধ্যমে তাদের বিজয় উদযাপন করেছিল। 


৩) হায়দারাবাদ ( প্রিন্সলী ষ্টেট) :- ৮২৬৯৮ বর্গমাইল আয়তনের স্বাধীন দেশ ছিল হায়দারাবাদ । জাতিসংঘে তার সদস্যপদও ছিল । এটা আয়তনে বাংলাদেশের প্রায় দ্বিগুন ছিল । ভারতের হিন্দুর বাচ্চারা হিন্দুত্ববাদী ট্রাম্প কার্ড খেলে হায়দারাবাদ দখল করেছিল ১৯৪৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে । ভারতের হিন্দুর বাচ্চাদের সাহায্য করেছিল হায়দারাবাদের বেঈমান সেনাবাহিনী । এই  যুদ্ধটা বল্লভ ভাই প্যাটেল নামক এক পিশাচের তত্ত্বাবধানে হয়েছিল । ইতিহাসে এই ব্যাক্তিকে হায়দারাবাদের কসাই বলা হয়ে থাকে। হায়দারাবাদ দখল করে মাত্র ৭দিনে ভারতীয় হিন্দু সন্ত্রাসীরা ৪লাখ মানুষকে নৃশংস ভাবে হত্যা করেছিল । ধর্ষ*ণ করেছিল ২ লাখ মুসলীম নারীকে । যাদের বেশীর ভাগের লাশ কিংবা কোনও খোঁজ খবর তাদের পরিবার কখনও জানতে পারে নাই ।


৪) কুনান-পুশপারা ধর্ষণ কান্ড :-  পৃথিবীর ইতিহাসে মাত্র ১ রাতে পুরো গ্রামের নারীদের কখনও ধর্ষণ করা হয় নাই । ভারতের হিন্দুর বাচ্চাদের সেনাবাহিনী সেই বিরল কৃতিত্বের অধিকারী একটি রাষ্ট্র । 1991 সালের ২৩শে ফেব্রুয়ারী এই ঘৃণ্যতম ঘটনাটি ঘটিয়েছিল ভারতের হিন্দুর বাচ্চারা । হিন্দুর বাচ্চারা এই গ্রামের পুরুষদের আগের দিন মাইকে ঘোষণা দিয়ে সবাইকে নিকটস্থ থানাতে বাধ্যগত ভাবে হাজির হতে নির্দেশ দেয় । পরদিন গ্রামের প্রায় ৭০০ পুরুষ থানাতে হাজিরা দিতে গেলে তাদের সবােইকে বন্দী করা হয় । সেই রাতে প্রায় ১ রেজিমেন্ট হিন্দুর বাচ্চা হায়েনার মত গ্রামের নারীদের ইজ্জতের উপর ঝাঁপিয়ে পড়ে । ধর্ষণের উল্লাসে কাশ্মীরের পাহাড় কেঁপে উঠেছিল । গ্রামের সব গুলো ঘরেই এই নারকীয় ধর্ষ*ণ  উৎসব হয়েছিল। মা আর মেয়েকে একই সাথেও ধর্ষণ করা হয়েছিল । কিন্তু বাধা দেয়ার মত কোনও পুরুষ ছিল না তখন । ৮/৯ বছরের মেয়ে শিশুদেরও রেহাই দেয় নাই হিন্দুর বাচ্চারা । প্রায় ৪০০ নারী ও শিশু হিন্দুর বাচ্চাদের লালসার শিকার হয়েছিল। ইতিহাসে এই নারকীয় কান্ডকে কুনান-পুশপারা ধর্ষণ কান্ড নামে পরিচিত । রানা আইয়ুব নামক একজন মহিলা সাংবাদিক এই নারকীয় বিভৎসতাকে প্রথম বিশ্ববাসীর সামনে আনেন । কিন্তু ভারতীয় হিন্দুর বাচ্চাদের আক্রোশে তাকে দেশ ছাড়তে হয় । 


৫) ইমফল কান্ড :- ১৫ই জুলাই ২০০৪ সাল । ভারতের পূর্বাঞ্চলীয় মনিপুরের ইমফল নামক একটি শহরের খ্রিস্টান উপজাতি নারী মনোরোমার উপর নারকীয় পৈশাচিকতা নিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে ভারতীয় সেনাবাহিনী । প্রায় ১৮ জন সৈনিক ধর্ষ*ণ করে মনোরোমাকে। মনোরমাকে ধর্ষণ শেষে ওর যৌণাঙ্গে পৈশাচিক ভাবে ১৬ বার গুলি করে হত্যা করেছিল ভারতীয় হিন্দুর বাচ্চারা ।  এরপর তার লাশকে ফেলে রাখে প্রকাশ্যে রাস্তায় । মনোরোমার বিভৎস লাশ দেখে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে উপজাতীয় খ্রিস্টান নারীরা । তারা বিএসএফ ও ভারতীয় সেনাবাহিনী ছাউনী ঘেরাও করে ফেলে । উলংগ হয়ে প্রতিবাদ জানায় বিশ্ব মিডিয়ার সামনে । স্তম্ভিত হয়ে বিশ্বের সর্বস্তরের মানুষ যাহা প্রত্যক্ষ করে । (লিংক  https://youtu.be/2tc9Uc998Og?si=G9mqnaGsmLo8HpDL )


৬) মণিপুরের খ্রিস্টান কুকি নারী :- ২০২৪ সালে ভারতের হিন্দুর বাচ্চারা তাদের সেনাবাহিনীর প্রত্যক্ষ সহায়তায় প্রকাশ্যে ২ জন খ্রিস্টান কুকি নারীকে উলঙ্গ করে ইমফল শহরে বেইজ্জতি করে । পরে এই নারীদের গণ ধর্ষ*ণ করেছিল ভারতের বিজেপির হিন্দুর বাচ্চারা । ভিডিওটি অনলাইনে প্রকাশ হয়ে গেলে পুরো বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে । ( লিংক https://youtu.be/cUscqxOP_GM?si=kD_iUr_DME0DYQnh )

ইনসাফ ও সমান অধিকারের পার্থক্য

 "ইনসাফের মাঝে ন্যায় বিদ্যমান, শুধু ন্যায় দিয়ে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা সম্ভব না"

ইনসাফ ও সমান অধিকার




আমি ফেসবুকে একটা পোস্ট করেছিলাম যে, আমি ন্যায় ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থায় বিশ্বাসী নই, আমি ইনসাফ ভিত্তিক ইসলামি সমাজ ব্যবস্থায় বিশ্বাসী। এই পোস্টে আমার সন্মানিত পাঠকরা মিশ্র প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করেছেন। সকল পাঠক গনকে ধন্যবাদ ও সালাম জানাচ্ছি। আজকে এই বিষয়টি আপনাদের সামনে স্পষ্ট করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ।


এই ন্যায় ও ইনসাফ একই রকম মনে হলেও বিষয় দুটি কখনোই এক বিষয় নয়। এখানে স্পষ্ট পার্থক্য আছে।ন্যায় হয় শুধু মাত্র অধিকারের ভিত্তিতে আর ইনসাফ হয় ন্যায্যতা আর মানবতার সমষ্টিতে। আসুন দুটি সহজ উদাহরন দিয়ে বুঝিয়ে দিচ্ছি।

ধরেন একজন মুদি ব্যবসায়ী সপ্তাহে ১০ মন পেঁয়াজ বিক্রি করতে পারে। তার পেঁয়াজের ক্রয় মূল্য ৩৫ টাকা কেজি দরে এবং বিক্রয় মূল্য ৪০ টাকা কেজি দরে। এক দিন ৪০ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ কেনার পর সকাল বেলা ঐ মুদি দোকানদার দেখলো যে হঠাৎ  পেঁয়াজের দাম বেড়ে গিয়ে দোকানীর প্রতি কেজি ক্রয় মূল্য ৬৫ টাকা দরে হয়ে গেছে। বাকী সকল দোকানী আজ হতে ৬৫ টাকা কেজি দরে কিনে ৭০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করছে। এখন যদি এই মূদি তার আগের ৩৫ টাকা কেজি দরে কিনা পেঁয়াজ সেও ৭০টাকা কেজি দরে বিক্রি করে তাহলে সমস্যা নাই। এটা তার ন্যায্য অধিকার, ক্রেতারা যেহেতু অন্য কোথাও ৭০ টাকার নীচে পেঁয়াজের কেজি কিনতে পারবে না সেহেতু সেও ৭০ টাকা করে কেজি বিক্রি করলে প্রচলিত পুঁজিবাদী ব্যস্থায় ন্যায্যতার ভিত্তিতে তা অন্যায় হবে না।

কিন্তু দোকানী যদি ভাবে যে আমার পেঁয়াজগুলো আগের কিনা, আগের দরে বিক্রি করলে আমার লোকসান হবে না, লাভের পরিমান সমান থাকবে।তখন ক্রেতাদের কষ্টের কথা চিন্তা করে যদি লোভ না করে দোকানী আগের কিনা পেঁয়াজ গুলো পূর্বের দর ৪০টাকা কেজিতে বিক্রি করে শেষ না হওয়া পর্যন্ত তখন এটা হবে ইনসাফ


আরেকটা উদাহরন দেই। 

ইংরেজিতে Qualitative distribution বা Equitable distribution  এবং Quantitative distribution বা Equal distribution বলে দু'টি কথা আছে।
Qualititative distribution বলতে সুষম বন্টন, ন্যায্য ভাবে বন্টন বা হিস্যা অনুযায়ী বন্টন বুঝায়। এটা গুন ও সক্ষমতার ভিত্তিতে বন্টন বুঝায়, সংখ্যার ভিত্তিতে নয়, এটা হয় ইনসাফের ভিত্তিতে। 

আর Quantitative Distribution বা Equal distribution বলতে সমান ভাবে বন্টন বা সংখ্যার ভিত্তিতে বন্টন বুঝায়। 

উদাহরন সরূপ মনে করেন আপনার বাসায় ২০ জন মেহমান আসল।  মেহমানদের মধ্যে ৫জন শিশু মানে দশ বছরের কম বয়সী, আর দশ জন পূর্ন যৌবন বয়ষ্ক মানুষ এবং পাঁচ জন অতি বৃদ্ধ। এখন  আপনকে ৮ কেজি রান্না মাংশ দিয়ে যদি ভাগ করে দিতে বলা হয় তখন আপনি দুই ভাগে ভাগ করে দিতে পারবেন।

১। প্রথম পদ্ধতি হলো ৮ কেজি রান্না মাংশকে সমান বিশ ভাগ করে মানে প্রাপ্ত বয়ষ্ক এবং শিশু সবাইকে ৪০০গ্রাম হারে মাংশ খেতে দিতে পারেন। এটা হলো Quantitative distribution বা সমান ভাগে সংখ্যার ভিত্তিতে বন্টন বা সম বন্টন বা ন্যায় বিচারের বন্টন। একেই বলে ন্যায্যতা বা ন্যায়ের বন্টন।

এই সংখ্যার ভিত্তিতে সমান হারে বন্টন করলে একটা সমস্যা হবে আর এটা হলো শিশু বা অপ্রাপ্ত বয়ষ্ক অনেকেই পুরো ৪০০গ্রাম মাংশ খেতে পারবে না, যারা পারবেনা ফলে তাদের অনেকেই উচ্ছিষ্ট মাংশ ফেলে দিবে বা নষ্ট করবে। আর দু একজন কষ্ট করে পুরাটা সামলাতে পারলেও একটু পর হয়ত বমি করবে।

 আর প্রাপ্ত বয়ষ্ক যুবকরা সাধারনত শিশু তথা অপ্রাপ্ত বয়ষ্কদের চেয়ে অনেক বেশী খাওয়ার চাহিদা রাখে। প্রাপ্ত বয়ষ্করাও সকলে সমান খাওয়ার যোগ্যতা রাখে না। তখন দেখবেন প্রাপ্ত বয়ষ্ক অনেকেই আপনার বন্টন করা ৪০০গ্রাম মাংশ খাওয়ার পরও আরো খাওয়ার চাহিদা রাখা সত্ত্বেও আর খেতে পাচ্ছে না সংখ্যার ভিত্তিতে তথা সমান বা ন্যায্য অধিকারের ভিত্তিতে বন্টনের কারণে, যদিও শিশুরা অনেকে মাংশ খেতে না পেরে অপচয় করেছে। একেই বলে সমান অধিকারের ভিত্তিতে বন্টন।

২।আপনি আরেকটি পদ্ধতিতে বন্টন করতে পারেন। সেটা হলো রান্না করা ৮কেজি মাংশের সবচেয়ে কম বয়ষ্ক শিশুকে তার চাহিদার সর্বোচ্চ টুকু দিয়ে আস্তে আস্তে বা পর্যায় ক্রমে বয়সে বড়দের মাঝে তাদের চাহিদা ও সক্ষমতা অনুযায়ী  মাংশের পরিমান ভাগ করে দিতে পারেন। এতে দেখা যাবে কেউ মাংশ খেয়ে অতৃপ্তও থাকবে না আবার কেউ নষ্ট বা অপচয়ও করবে না, এতে করে কোন মাংশের অংশ উদৃত্বও থাকবে না। এটাকেই বলে Qualitative distribution বা Equatable distribution. বা সুষম বন্টন বা ইনসাফ ভিত্তিক বন্টন।

এই ইনসাফ ভিত্তিক বন্টন বা বিচার ব্যবস্থা ও ইনসাফ ভিত্তিক সমাজ ব্যবস্থার কথাই বলে ইসলাম, এই ইনসাফের মধ্যে ন্যায় বিচারিক বন্টনও বিদ্যমান কিন্তু শুধু ন্যায় বিচার দিয়ে ইনসাফ নিশ্চিত হয় না। আশা করি সন্মানিত পাঠকরা আমার কথার মর্মার্থ বুঝতে পেরেছেন।

ডা.বশির আহাম্মদ

শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫

নারী স্বাধীনতা মানে কি?এ স্বাধীনতা পেতে হলে যে শর্ত পূরন করতে হবে

 "নারী স্বাধীনতা মানে কি?এ স্বাধীনতা পেতে হলে যে শর্ত পূরন করতে হবে"

নোংরামী

গতকাল নারী স্বাধীনতা নিয়ে বাংলাদেশে এক বিরল নারী জাতীয় প্রানীর সমাবেশ হয়েছে।উক্ত নারী সমাবেশ নামক গর্দব সমাবেশে একদল নারী বিভিন্ন আপত্তিকর ও সমাজ বিরোধী স্লোগান লেখা প্লে কার্ড নিয়ে মিছিলও করেছে।

★ স্লোগান -১,

"আমরা সবাই বেশ্যা,আদায় করবো হিস্যা"।

আমার প্রশ্ন আপনি যদি বেশ্যা হয়েই থাকেন, এটা তো নিকৃষ্টতর কাজ, এটা আপনারা বলে বেড়ানোর কি আছে? আপনি তো নারী কে মা-বোন হতে রাস্তার পন্য ও যৌন দাসীর কাতারে নামিয়ে আনলেন, এতে কি আপনাদের অধিকার আদায় হলো নাকি নিজেকে অধিকার আদায়ের লোভে সকল সন্মান সস্তায় বিক্রি করলেন? 

আপনারা কয়েকজন নারী বেশ্যা হতেই পারেন, আপনারা বাংলাদেশের ৯কোটি নারীর তুলনায় এতটাই নগ্য যে একটি দীঘি হতে ১মি:লি পানির সমতুল্যও না। আপনাদের দাবী কেনো আমরা মেনে নেবো? বেশ্যাদের দাবীও মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ দেশে মানতে হবে? বাংলাদেশীদের এত কমজাত মনে করেন?


★ স্লোগান-২,

"নারীর যৌন স্বাধীনতা দিতে হবে"

আমার প্রশ্ন, নারীদের যৌন স্বাধীনতা মানে কি? তোমরাই যৌন স্বাধীনতার যোগ্য, পুরুষরা নয়? এদেশের কোনো পুরুষ কি অবাদ যৌন স্বাধীনতা ভোগ করে, নাকি কখনো দাবী তুলেছে এপর্যন্ত? 

নারীর যৌন স্বাধীনতা মানে কি? আপনারা কি নিজেকে পুরুষ মনে করে আরেকটা নারীকে বিয়ে করতে চানত? একজন নারী হয়ে কি আরেকজন নারীকে পুরুষের মত জৈবিক তৃপ্তি করাতে পারবেন? যেমনটা একজন পুরুষও অন্য একজন পুরুষকে নারীর মত তৃপ্তি দিতে পারে না। নারী -নারী,পুরু -পুরুষ স্বাধীন ভাবে বিয়ে করে যৌনাচার করা শুরু করলে কি সন্তান জন্ম নিবে? এটা কি মানব সভ্যতা ধ্বংশের জন্য আপনাদের কু পরিকল্পনা না?

আরো এক দল পুরুষও এই কাজে দেখলাম যোগ দিয়েছে, আদতে এরা পুরুষ নয়, এরা নিজেকে নারী মনে করে, এবং নিজেকে নারীর মত অন্য পুরুষের যৌন দাসী হয়ে খুশি হয়, এটা কেমন মানসিক রোগ?

হ্যাঁ, আপনাদের চাহিদা মত আমরা স্বাধীনতা দেবো, যদি আপনার একজন পুরুষ যেমন চাইলেই রাস্তার পাশে দাঁড়িয়ে প্রস্রাব করতে পারে তেমনী আপনারাও যদি এটা করে দেখাতে পারেন(নিজের শরীরের কাপড় না ভিজিয়ে) তবে অবশ্যই আমি আপনাদের পক্ষে কথা বলব।

আবার অপর দিকে যেসকল পুরুষ নিজেকে নারী মনে করে অপর পুরুষকে নারীর মত করে যৌন লালসা পুরনে মত্য হতে চান তাদের কেউ একজনও যদি নিজে মা হয়ে প্রমান দিতে পারে তবে আপনাদেরও স্বাধীনতা দেওয়া হবে, অন্যথায় আপনাদেরকে দেশের সকল জনগনকে নিয়ে গরম ডিম থেরাপী দেওয়া হবে।

আমরা বেশ্যা ও বেশ্যার সন্তানদের মধ্যে যারা বেশ্যাবৃত্তির পক্ষে কথা বলে তাদেরকে কখনোই সমাজে সন্মানের চোখে দেখবো না, আপনাদেরকে বেশ্যা ও বেশ্যার বাচ্চা বলে গালি দেবোই। আপনাদের দাবী এদেশে কখনোই পূরন হতে দেওয়া হবে না ইনশাআল্লাহ।

প্রকৃতির দেওয়া স্বাধীনতা অবাধে সম্পূর্ণ ভোগ করুন না হয়ে পাছার চামড়া থাকবে না।


লেখক: ডা.বশির আহাম্মদ,চিকিৎসক, জার্নালিস্ট ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী।

শুক্রবার, ৯ মে, ২০২৫

জগৎ বিখ্যাত যে সমিতি কুমিল্লায় অবস্থিত,পেয়েছে ম্যাগসাই পুরস্কারও

যে সমিতি বদলে দিয়েছে কুমিল্লার দুই গ্রামের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপট,৯ আনার সেই দিদার সমিতির এখন রয়েছে ২০ কোটি টাকার সম্পত্তি।

দিদার সমবায় সমিতি

 

দিদার  সমবায় সমিতি। কুমিল্লা শহরের নিকটবর্তী কাশিনাথপুর ও বলরামপুর গ্রামের আটজন রিকশাচালক ও একজন ক্ষুদ্র দোকানদারের উদ্যোগে ১৯৬০ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। সামান্য সদস্য পুঁজি নিয়ে যাত্রা শুরু হলেও কালক্রমে দিদার একটি বৃহৎ প্রতিষ্ঠানে পরিণত হয়। এ সংগঠনের মুখ্য উদ্দেশ্য হচ্ছে আয় বৃদ্ধির সুযোগ সৃষ্টি করা এবং এর সদস্যদের ছেলেমেয়েদের শিক্ষার খরচ যোগানো।

বর্তমানে দিদারের সদস্য সংখ্যা ১৫০০। সমিতির সদস্যদের দ্বারা নির্বাচিত ৯ সদস্যের একটি কার্যনির্বাহী কমিটি এর কর্মকান্ড পরিচালনা করে। সমিতির রয়েছে ইটভাটা, সরিষার তেলের মিল, ন্যায্য মূল্যে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি বিক্রির সমবায় স্টোর, সার ও কীটনাশকের দোকান, তিনটি গভীর নলকূপ, তিনটি ধান ও গম ভাঙার কল এবং একুশটি রিকশা। সমিতির অধীনে রয়েছে একটি হাইস্কুল ও একটি কিন্ডারগার্টেন। দিদারের সদস্যবৃন্দ অনেক সামাজিক কর্মকান্ডে সক্রিয়। এগুলির মধ্যে রয়েছে বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, মাছ চাষ প্রকল্প এবং পরিবেশ সংরক্ষণ বিষয়ে সচেতনতা সৃষ্টি প্রভৃতি।

যে দুটি গ্রামে শুরু থেকে দিদারের কর্মকান্ড চালু রয়েছে সেখানে আজ দারিদ্রে্যর চিহ্ন প্রায় নেই। কৃষি উৎপাদন বেড়েছে চারগুণ। গ্রাম দুটিতে শিক্ষার হার জাতীয় গড় হারের চেয়ে অনেক বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। জাতীয় গড় হারের তুলনায় বেকারত্বও হ্রাস পেয়েছে। সমাজিক উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৮৪ সালে দিদার স্বাধীনতা দিবস পুরস্কার লাভ করে। বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন একাডেমীও তার রজতজয়ন্তীতে এ সমিতিকে পুরস্কৃত করে। দিদারের প্রতিষ্ঠাতা মুহম্মদ ইয়াসিন ১৯৮৮ সালে এশিয়ার বিখ্যাত র‌্যামন ম্যাগাস্যাসে পুরস্কার লাভ করেন।

গ্রামের চায়ের দোকানের মালিক মোহাম্মদ ইয়াছিন তার দোকানে আগত ৮ জন রিক্সা ও ভ্যান চালক মোঃ বেনু মিয়া, মোঃ নুরু মিয়া, মোঃ আতর আলী, মোঃ নিলু মিয়া, মোঃ চরু মিয়া, মোঃ অহিদ মিয়া, মোঃ আব্দুল খালেক এবং মোঃ রফিক মিয়াকে নিয়ে প্রত্যেক সদস্য প্রতিদিন ১ আনা করে জমা রাখাবে - এই শর্তে ১৯৬০ সালে ৯ অক্টোবর তারিখে ৯ সদস্যবিশিষ্ট এই সমবায় সমিতিটির গোড় পত্তন করেন।

পুরস্কার ও সম্মাননাঃ

১৯৬২ সালে জাতীয় সমবায় দিবস" উপলক্ষে তৎকালীন প্রদেশিক গভর্ণর সমবায় ইউনিয়ন হতে পুরস্কার প্রদান করেন। ১৯৬২ সাল অবধি কুমিল্লা জেলা প্রশাসক কয়েকবার সমিতিকে পুরস্কার ও প্রশংসাপত্র প্রদান করেন। ১৯৭৬ সালে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন ও অবদান রাখার স্বীকৃতি হিসেবে বাংলাদেশ সরকার দিদার সার্বিক গ্রাম উন্নয়ন সমবায় সমিতিকে" রাষ্ট্রপতি পুরস্কার" প্রদান করেন। ১৯৭৭ সালে কুমিল্লা ফাউন্ডেশন " থেকে স্বর্ণপদক প্রদান করে। ১৯৮২ সালে যথাক্রমে বাংলাদেশ ও জেলার শ্রেষ্ঠ সমবায় সমিতি হিসাবে বাংলাদেশ সরকার" স্বর্ণপদক ও রৌপপদক" প্রদান করেন। দরিদ্র জনগোষ্ঠীর সার্বিক অবস্থার উন্নয়নের ক্ষেত্রে অসাধারণ অবদানের জন্য ১৯৮৪ সালে বাংলাদেশের “সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার” হিসাবে পরিচিত “স্বাধীনতা পুরস্কার” প্রদান করা হয় এই প্রতিষ্ঠানটিকে। ১৯৮৮ খ্রি. সনে আন্তর্জাতিক পুরস্কার র‍্যামনম্যাগ সাই (এ্যাওয়ার্ড) অর্জন ও পল্লী উন্নয়নে বিশেষ অবদান রাখার জন্য অত্র সমিতির প্রতিষ্ঠাতা আলহাজ্ব মোঃ ইয়াসিন ১৯৯০ খ্রি. সনে “স্বাধীনতা পদক” পুনরায় অর্জন করেন। ২০২০ সালের জাতীয় শ্রেষ্ঠ সমবায় সমিতি পুরস্কার স্বর্ণপদক গ্রহণ করেন দিদার সমিতির চেয়ারম্যান জনাব আবু তাহের ( মনু )।

বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমি (বার্ড)-এর প্রতিষ্ঠাকালীন পরিচালক ড. আখতার হামিদ খানের পরামর্শে ১৯৬০ সালে একজন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর নেতৃত্বে আটজন রিকশাচালকের চাঁদায় কুমিল্লার বলরামপুরে গড়ে ওঠে দিদার সমিতি। প্রত্যেকে এক আনা করে মোট ৯ আনা (৫৬ পয়সা) চাঁদা জমা দিয়েছিলেন।

৯ আনার সেই দিদার সমিতির এখন রয়েছে ২০ কোটি টাকার সম্পত্তি। এই দিদার সমিতি পাল্টে দিয়েছে দুই গ্রামের মানুষের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটও। কুমিল্লার বলরামপুর ও কাশীনাথপুর গ্রামে লেগেছে সমৃদ্ধির ছোঁয়া। শিক্ষা ও স্বনির্ভরতায় বেশ ভালো রয়েছেন এখানকার মানুষ।

সমিতি সূত্রে জানা যায়, ১৯৮৮ সালে দিদার সমিতি এশিয়ার নোবেল খ্যাত র‌্যামন ম্যাগসেসে পুরস্কার পয়। ১৯৮৪ সালে স্বাধীনতা পুরস্কার পান সমিতির মূল উদ্যোক্তা মুহাম্মদ ইয়াছিন। এছাড়া, ১৯৯০ সালে কৃষি পুরস্কার ও শ্রেষ্ঠ সমবায় পুরস্কারসহ অসংখ্য পুরস্কার পায় দিদার সমিতি। চলতি বছর সমবায় স্বর্ণপদক পেয়েছে দিদার সমিতি। গত ৬ নভেম্বর আনুষ্ঠানিকভাবে সমিতিকে পদক দেওয়া হয়েছে।

বর্তমানে সমিতির সদস্য প্রায় দেড় হাজার, যার মধ্যে ৭ থেকে ১৮ বছর বয়সী সদস্য রয়েছে ৪০০ জন। সমিতির অধীনে আছে গভীর নলকূপ, সমবায় বাজার, সমবায় দোকান, কমিউনিটি সেন্টার, গাড়ির গ্যারেজ, বাৎসরিক ১৮ শতাংশ হারে ক্ষুদ্রঋণ প্রকল্প, দিদার মডেল হাইস্কুল ও ইটের ব্যবসা।

সমিতির সদস্যরা সর্বোচ্চ ২০ হাজার টাকা জমা রেখে বছরে ২০ শতাংশ লাভ পাচ্ছেন বর্তমানে। ৭-১৮ বছর বয়সী ক্ষুদে সদস্যদের সঞ্চয়ে অভ্যস্ত করে তোলা হয়। সদস্য মেয়েদের অনেকের বিয়ের খরচ আসে সঞ্চয়ের লভ্যাংশ থেকে।

যেভাবে গড়ে ওঠে দিদার সমিতি

আধুনিক কুমিল্লার পথিকৃত হিসেবে পরিচিত ড. আখতার হামিদ খান ১৯৫৯ সালে কুমিল্লায় বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন অ্যাকাডেমি (বার্ড) প্রতিষ্ঠা করেন। তার হাত ধরে কুমিল্লার কৃষিতে আমূল পরিবর্তন শুরু হয়। তিনি কুমিল্লার কোতোয়ালি থানায় কৃষি সমবায় গড়ার উদ্যোগ নেন।

দিদার সমিতি সংশ্লিষ্টরা জানান, ১৯৫৫ থেকে ১৯৫৭ সালে বিদ্রোহের জন্য ছয় মাস জেল খাটেন পুলিশ সদস্য মোহাম্মদ ইয়াসিন। তিনি বলরামপুরের বাসিন্দা। জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার পর ইয়াসিন চাকরিচ্যুত হয়ে গ্রামে চলে আসেন। ওই বছর ১০ শতক জমি ২০০ টাকায় বন্ধক রেখে চা ও মুদিমালের ব্যবসা শুরু করেন তিনি। তখন বলরামপুর ও কাশীনাথপুর গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ ছিলেন হতদরিদ্র।

১৯৫৯ সালে ছয়টি রিকশা কেনেন ইয়াসিন। কিছুদিন পর আখতার হামিদ খানের কাছে পরামর্শের জন্য যান তিনি। তখন আখতার হামিদ তাকে বলেন, 'দান-অনুদান দিতে পারব না। তবে পরামর্শ দিয়ে তোমাদের উপকার করতে পারি।'

ওই সময় তিনি মোহাম্মদ ইয়াসিনকে সমিতি করার পরামর্শ দেন। ১৯৬০ সালের ৯ অক্টোবর বলরামপুরে একটি সভা হয়। সেখানে বলরামপুর ও কাশীনাথপুরের দুইশ মানুষ ছিলেন। সভায় নানা ধরনের উৎসাহ দিয়ে বক্তব্য রাখেন আখতার হামিদ খান। এ ধরনের সমিতির কর্মপন্থা, স্বচ্ছতা ও উদ্দেশ্যের কথাও তুলে ধরেন তিনি।

সভা শেষ হওয়ার পর অনেকে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভুগলেও মোহাম্মদ ইয়াসিন টাকা 'খোয়া গেলে' নিজের দোকান থেকে মালামাল দিয়ে তাদের ঋণ পরিশোধ করার প্রতিশ্রুতি দেন। মাত্র আটজন রিকশাচালক সমিতির প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে এক আনা করে চাঁদা দেন। ইয়াছিন নিজেও এক আনা চাঁদা দেন। মোট দাঁড়ায় নয় আনা।

এরপর প্রতি সপ্তাহে এক আনা করে চাঁদা দিতে থাকেন তারা। এভাবে জমতে থাকা টাকায় ১৯৬১ সালে দুটি রিকশা কেনা হয়। যারা নিয়মিত চাঁদা দিতেন তাদের রিকশা কিনে দেওয়া হতো। দিন দিন পুঁজি বাড়তে থাকে। বাড়ে রিকশার সংখ্যাও।

১৯৬৮ সালে রিকশার সংখ্যা হয় ১৩০টি। ১৯৬৪-৬৫ সালে ইট ব্যবসা শুরু করে দিদার সমিতি। ১৯৬৪ সালে কেটিসিসিএল থেকে তারা ৫০ হাজার টাকা ঋণ নেয়। ১৯৬৫ সালের বার্ষিক সাধারণ সভায় আখতার হামিদ খান সমিতির সদস্যদের গভীর নলকূপ স্থাপনের পরামর্শ দেন।

১৯৬৭ সালে তিনটি গভীর নলকূপ স্থাপন করা হয়। কিন্তু মাটির নিচ থেকে পানি উঠালে পাপ হবে, এ কথা বলে একপক্ষ গভীর নলকূপের বিরোধিতা করে। সার, কীটনাশক ব্যবহারও অযৌক্তিক দাবি করে সেই পক্ষ।

তারপরও প্রতি ৪০ শতক জমিতে জমির মালিককে ৮ মণ ধান ও খড় দেওয়ার চুক্তিতে এক হাজার শতক জমি আধুনিক পদ্ধতিতে পরীক্ষামূলক চাষাবাদ শুরু করে দিদার সমিতির ৭৫ জন কৃষক। সব সমালোচনা ও বাধা ডিঙিয়ে ওই চাষাবাদেই দারুণভাবে পাল্টে যায় সমিতির ভাগ্য।

সময়ের ব্যবধানে সবুজ ধান মাথা উঁচু করে। কচি ধান পাকতে থাকে। তখন সমিতির পক্ষ থেকে পুরস্কারের ঘোষণা দিয়ে বলা হয়, যারা আগের তুলনায় এসব জমিতে কম ধান হওয়ার প্রমাণ দিতে পারবে তাদেরকে ৭৫, ১০০ ও ১২৫ টাকা করে পুরস্কার দেওয়া হবে।

কিন্তু ওই পুরস্কার কেউই পায়নি। কারণ সেবার অন্যান্য সময়ের তুলনায় কয়েক গুণ বেশি ধান হয়। প্রতি ১০০ শতক জমিতে গড়ে ৭৭ মণ ধান হয়, যা তখন কেউই কল্পনা করতে পারেনি।

এই ধান থেকে চালের পাশাপাশি টাইপি-১৭৭ নামক মুড়ি করা হতো। এরই ধারাবাহিকতায় দিদার সমিতি ছাড়িয়ে সারা কুমিল্লায় ছড়িয়ে পড়ে কৃষি বিপ্লব। ১৯৬৮ সালে সমিতির অর্থায়নে দিদার জুনিয়র স্কুল প্রতিষ্ঠিত হয়। ঋণের টাকায় গড়ে ওঠে ইটভাটা-দোকানপাট। রিকশার পর ট্রাক ও ট্রাক্টর কেনা শুরু হয়, গড়ে তোলা হয় হাঁস-মুরগির খামার।১৯৯৯ সালের ৯ অক্টোবর যুক্তরাষ্ট্রে মারা যান ড. আখতার হামিদ খান। তার আটদিন পর ১৭ অক্টোবর বাংলাদেশে মারা যান দিদার সমবায় গ্রাম সমিতির উদ্যোক্তা মুহাম্মদ ইয়াসিন।

কাশীনাথপুর গ্রামের বাসিন্দা নুরুল ইসলাম ১৯৭৮ সাল থেকে দিদার সমিতির সদস্য। সৌদি আরব থেকে সম্প্রতি তিনি দেশে ফিরেছেন। নুরুল ইসলাম জানান, এই দুই গ্রামের সবাই এখন সচ্ছল। পড়াশোনায়ও এখানকার ছেলেমেয়েরা ভালো অবস্থানে আছে।তিনি বলেন, 'দিদার সমিতি শুধু কুমিল্লায় আলোড়ন সৃষ্টি করেনি, গোটা বাংলাদেশের কৃষি বিপ্লবের নেপথ্যে দারুণ ভূমিকা রয়েছে এই সমিতির।'

 

মঙ্গলবার, ৬ মে, ২০২৫

ইনসাইড প্রজেক্ট ব্লু বীম বা নীল রশ্মির কারসাজি

 "ইনসাইড প্রজেক্ট ব্লু বীম বা নীল রশ্মির কারসাজি"

ইনসাইড প্রজেক্ট ব্লু বীম বা নীল রশ্মির কারসাজি"





সার্জ মোনাস্টের প্রজেক্ট ব্লু বিম তত্ত্ব অনুসারে, নাসা এবং জাতিসংঘ একটি সর্বগ্রাসী, এক-বিশ্ব সরকার প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করছে - কিন্তু কোন প্রমাণ আছে কি?


জন এফ. কেনেডির হত্যাকাণ্ড সম্পর্কে জল্পনা থেকে শুরু করে সমতল পৃথিবী সম্পর্কে বিশ্বাস পর্যন্ত ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলির কাছে আজ এক পয়সা মানেরও মনে হয় না। তবে ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলির মধ্যে একটি রয়েছে যা তাদের মধ্যে সবচেয়ে ধ্বংসাত্মক আর তা হলো প্রজেক্ট ব্লু বিম। 


প্রজেক্ট ব্লু বিম প্রথম ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে সার্জ মোনাস্ট নামে একজন সাংবাদিক থেকে ষড়যন্ত্র তত্ত্ববিদ দ্বারা প্রকাশ হয়েছিল। অন্যান্য ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিকরা এই কাজে খবর নেওয়ার পরে, মোনাস্ট গোপন সমাজ সম্পর্কে পড়া শুরু করেন এবং একটি সম্ভাব্য নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার সম্পর্কে তত্ত্বগুলিতে বিশেষভাবে খবর পান - যা প্রকল্প ব্লু বিমের ভিত্তি হিসাবে কাজ করেছিল।


সংক্ষেপে, প্রজেক্ট ব্লু বিম হল একটি ষড়যন্ত্রের তত্ত্ব যার মানে হলো যে NASA এবং UN একটি নতুন বিশ্ব ব্যবস্থা তৈরি করার চেষ্টা করছে। খ্রীষ্টবিরোধীদের নেতৃত্বে একটি নতুন যুগের ধর্ম বাস্তবায়ন করে, উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে মানুষকে এই ধর্মে বিশ্বাস করার জন্য প্রতারণা করছে৷ যদি তারা তাদের অনুমিত মিশনে সফল হয়, তবে সমস্ত সনাতন ধর্ম বিলুপ্ত হবে এবং এক বিশ্ব ধর্ম এবং এক বিশ্ব সরকারের পক্ষে সমস্ত জাতীয় পরিচয় মুছে ফেলা হবে।আব্রাহামীয় ধর্ম এবং মধ্যপ্রাচ্যে আব্রাহামীয় ধর্মের উপাসনালয় চালু এই ষড়যন্ত্রের অংশ।


প্রজেক্ট ব্লু বিম, কল্পিত সর্বগ্রাসী একনায়কত্ব এবং এর পেছনের ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিক সম্পর্কে আমরা যা জানি তা প্রবন্ধে রয়েছে।


ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিক সার্জ মোনাস্ট অ্যান্ড দ্য অরিজিনস অফ প্রজেক্ট ব্লু বিম:


তিনি তার প্রজেক্ট ব্লু বিম তত্ত্বের জন্য পরিচিত হওয়ার আগে, সার্জ মোনাস্ট ছিলেন একজন কানাডিয়ান লেখক যিনি ১৯৭০ এবং ১৯৮০ এর দশকে একজন সাংবাদিক হিসাবে কাজ করেছিলেন। তার প্রাথমিক জীবন সম্পর্কে কিছু বিবরণ জানা যায়, তবে এটি স্পষ্ট যে 1990 এর দশকের শুরুর দিকে, মোনাস্ট ষড়যন্ত্র তত্ত্ব নিয়ে গভীরভাবে আগ্রহী হয়ে উঠেছিলেন।


তিনি নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার সম্পর্কে লিখতে শুরু করেন, একটি শব্দ যা বেশ কয়েকটি ষড়যন্ত্র তত্ত্বে ব্যবহৃত হয় যা দাবি করে যে একটি সংস্থা - যেমন জাতিসংঘ বা ইলুমিনাতি - একটি একক-বিশ্ব সরকার গঠনের জন্য এবং জনগণকে অনুপ্রাণিত করার জন্য কাজ করছে যাতে তারা এই ধরনের একটি ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে।যার অর্থ হলো সর্বগ্রাসী একনায়কত্ব।


প্রায়শই, এই তত্ত্বগুলি সেমিটিজমের সাথে ওভারল্যাপ করে, মিথ্যা বর্ণনায় খেলা করে যে ইহুদিরা বিশ্বের অর্থ এবং মিডিয়া সংস্থাগুলির সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণে রয়েছে এবং পৃথিবী দখল করার আশা করে। এই তত্ত্বগুলিও ভয়-ভীতিতে নিমজ্জিত এবং খ্রীষ্টশত্রু সম্পর্কে উদ্বেগের উপর নির্ভরশীল। কিন্তু বর্তমানে এই তত্ত্ব গুলোই সত্য হিসাবে আমাদের সামনে আসছে।


উল্লেখযোগ্যভাবে, নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার তত্ত্বগুলি আমেরিকার অন্যতম কুখ্যাত ষড়যন্ত্র তাত্ত্বিক, অ্যালেক্স জোনস দ্বারা অস্বীকার করে ঠেলে দেওয়া হয়েছে, যিনি দাবি করেছিলেন যে ভয়ঙ্কর স্যান্ডি হুক এলিমেন্টারি স্কুলের শ্যুটিং একটি "মিথ্যা পতাকা" প্রতারণা ছিল "সঙ্কট অভিনেতাদের" দ্বারা হরণ করার প্রয়াসে। আমেরিকানদের বন্দুক অধিকার. (পরে জোনসকে গণহত্যা সম্পর্কে তার মিথ্যা দাবির পরে স্যান্ডি হুকের শিকারদের পরিবারকে প্রায় 1.5 বিলিয়ন ডলার দেওয়ার আদেশ দেওয়া হয়েছিল।)


মোনাস্ট যখন প্রথম প্রজেক্ট ব্লু বিম তত্ত্ব নিয়ে এসেছিলেন তখন কোথা থেকে এসেছেন তা সনাক্ত করার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রসঙ্গ।


মোনাস্ট প্রথম ১৯৯৪ সালে প্রজেক্ট ব্লু বিম সম্পর্কে লিখেছিলেন, নাসার প্রজেক্ট ব্লু বিম প্রকাশ করেছিলেন এবং এক বছর পরে লেস প্রোটোকলস ডি টরেন্টোতে এই তত্ত্ব বিস্তৃত হয়েছিল, যেটি মূলত জিওনের প্রটোকল অফ দ্য এল্ডার্সের উপর মডেল করা হয়েছিল, একটি ইহুদি ষড়যন্ত্রের বিশদ বিবরণ দিয়ে একটি বলে পাঠ্য চালু হয়েছিলো। বিশ্ব একটি অদ্ভুত মোড়কে, কেউ কেউ অনুমান করেছেন যে মোনাস্টও স্টার ট্রেক দ্বারা অনুপ্রাণিত হতে পারে, বিশেষ করে কখনও তৈরি করা হয়নি এমন কোনো ফিল্ম, স্টার ট্রেক: দ্য গড থিং, যেটি একটি রহস্যময় শক্তির পরিচয় দেবে যেটি নিজেকে ঈশ্বর বলে দাবি করেছপ।


কিন্তু মোনাস্টের তত্ত্বটি সবচেয়ে বেশি NASA এবং UN-এ এবং বিশ্ব আধিপত্য অর্জনের জন্য তাদের কথিত চার-পদক্ষেপের পরিকল্পনার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে।


সার্জ মোনাস্টের মতে প্রজেক্ট ব্লু বিম-এর প্রথম ধাপে বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্পের নকল করে ইতিহাসকে কার্যকরভাবে পুনর্লিখন করা জড়িত। এই মানবসৃষ্ট ভূমিকম্পগুলি হাইব্রিড "শিল্পবস্তু" আবিষ্কারের দিকে পরিচালিত করে যা ঐতিহ্যগত ধর্মগুলি, বিশেষ করে খ্রিস্টান এবং ইসলামকে অপমান করবে৷


মোটকথা, মোনাস্ট বিশ্বাস করেছিলেন যে NASA এবং UN তাদের নতুন যুগের ধর্ম প্রচার করার জন্য তাদের সম্পর্কে "ঐতিহাসিক" সন্দেহের বীজ বপন করে বিশ্বজুড়ে এই প্রতিষ্ঠিত ধর্মগুলিকে ভেঙে ফেলবে।বর্তমানে আবরাহামীয় নতুন ধর্ম তাদের এই ষড়যন্ত্রের প্রমান।


দ্বিতীয় ধাপে ত্রি-মাত্রিক হলোগ্রাফিক লেজার প্রজেকশন রয়েছে যা গ্রহ জুড়ে একটি বিশাল "মহাকাশ শো" তৈরি করতে বিমির্মিত হবে, যা আকাশে বিভিন্ন ধর্মীয় ব্যক্তিত্বকে চিত্রিত করবে, যার মধ্যে যিশু, মুহাম্মদ এবংবুদ্ধ। অনুষ্ঠানের সমাপ্তি তখন এই সমস্ত বিভিন্ন হলোগ্রামকে একটি একক সত্তায় একত্রিত করে তা হবে আদতে ধর্ম বিরোধী। নাস্তিক বানানোই এদের কাজ।


কিন্তু এই মহাকাশ কীভাবে পৃথিবীর প্রতিটি মানুষকে নাসা এবং জাতিসংঘের অনুমিত পরিকল্পনার সাথে যেতে রাজি করাবে? এটি ছিল মোনাস্টের ব্যাখ্যা: "উপগ্রহের এই ধরনের রশ্মিগুলি কম্পিউটারের স্মৃতি থেকে খাওয়ানো হয় যা পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের এবং তাদের ভাষা সম্পর্কে বিশাল তথ্য সংরক্ষণ করে। রশ্মিগুলি তখন তাদের প্রাকৃতিক চিন্তাধারার সাথে মিশে যাবে যাকে আমরা বিচ্ছুরিত কৃত্রিম চিন্তা বলি।


তৃতীয় পর্যায় যাকে সার্জ মোনাস্ট বলেছেন "টেলিপ্যাথিক ইলেকট্রনিক দ্বিমুখী যোগাযোগ।" তিনি দাবি করেছিলেন যে NASA কম ফ্রিকোয়েন্সি রেডিও তরঙ্গ এবং স্যাটেলাইট রশ্মি ব্যবহার করে ব্যক্তিদের সাথে "টেলিপ্যাথিকভাবে" যোগাযোগ করবে, ধরে নিবে যে এই লোকেরা বিশ্বাস করবে যে তাদের ঈশ্বর তাদের সাথে কথা বলছেন। এই যোগাযোগের মাধ্যমে, মোনাস্ট দাবি করেছিলেন যে NASA কীভাবে লোকেরা চিন্তা করে তা প্রভাবিত করতে এবং তাদের চতুর্থ ধাপের জন্য প্রস্তুত করতে সক্ষম হবে।


প্রজেক্ট ব্লু বীমের চূড়ান্ত ধাপের নিজস্ব একাধিক ধাপ রয়েছে। প্রথম পর্যায় হল মানবতাকে বোঝানো যে একটি এলিয়েন আক্রমণ আসন্ন। দ্বিতীয় পর্যায় হল খ্রিস্টানদের বোঝানো যে কেয়ামত শুরু হতে চলেছে।


তৃতীয় ধাপে NASA-কে "অলৌকিক শক্তি"কে টিভি ক্যাবল, ফোন লাইন এবং অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে ট্রান্সফার করার জন্য উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে সমস্ত ভোক্তা ইলেকট্রনিক্স এবং যন্ত্রপাতিগুলিতে মাইক্রোচিপগুলি সক্রিয় করতে অন্তর্ভুক্ত করে৷


 পরবর্তী বিশৃঙ্খল পরিস্থিতির মধ্যে যা নিশ্চিত ছিল, মোনাস্ট বিশ্বাস করেছিলেন যে NASA এবং UN ধীরে ধীরে তাদের প্রস্তাবিত নিউ ওয়ার্ল্ড অর্ডার উন্মোচন করবে — যখন ক্রিপ্টোকারেন্সির একটি সংস্করণ দিয়ে নগদ অর্থ বের করে দেবে এবং স্বাধীনতার ধারণাটি দূর করবে — মানবতা নিশ্চিত করতে এটি গ্রহণ করতে প্রস্তুত। বেঁচে থাকা যারা সম্মত হবেন তারা নতুন সর্বগ্রাসী এক-বিশ্ব সরকার এবং একটি নতুন যুগের ধর্ম গ্রহণ করতে বাধ্য হবে যা "মানুষের ধর্ম"কে গ্রহণ করেছে। যে কেউ প্রতিরোধ করবে তাকে বাধ্যতামূলক শ্রম থেকে শুরু করে নৃশংস মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত অনেকগুলি অমানবিক শাস্তির মুখোমুখি হতে হবে।


"নাসা ব্লু বিম প্রজেক্ট হল সমগ্র পৃথিবীর জনসংখ্যার উপর নতুন বিশ্বব্যবস্থার নিরঙ্কুশ নিয়ন্ত্রণের প্রধান নির্দেশ," মোনাস্ট তার পাঠকদের কাছে জোর দিয়ে বলেছিলেন। "আমি আপনাকে পরামর্শ দেব যে আপনি এই তথ্যটিকে ধর্মান্ধ পাগলামী হিসাবে খারিজ করার আগে সাবধানতার সাথে তদন্ত করুন।"


এই ষড়যন্ত্র তত্ত্বে আধুনিক বিশ্বাস:


১৯৯৬ সালে, সার্জ মোনাস্ট ৫১ বছর বয়সে তার বাড়িতে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান, অভিযোগ করা হয়েছে দুবার গ্রেপ্তার হওয়ার পর তিনি মারা যান। কিন্তু তার তত্ত্ব তার সাথে মরেনি। প্রকৃতপক্ষে, মোনাস্টের মৃত্যু অন্যান্য ষড়যন্ত্র তত্ত্ববিদদের প্রজেক্ট ব্লু বিম সম্পর্কে আরও ধারনা করার পথ প্রশস্ত করেছিল। কেউ কেউ এমনও পরামর্শ দিয়েছিলেন যে তিনি যা উন্মোচন করেছিলেন তা ধামাচাপা দেওয়ার জন্য তাকে ক্ষমতায় থাকা ব্যক্তিদের দ্বারা হত্যা করা হয়েছিল।


২০০০ এর দশকে ইন্টারনেট আরও মূলধারায় পরিণত হওয়ার জন্য প্রজেক্ট ব্লু বিম দ্রুত দ্বিতীয় বার জীবন খুঁজে পেয়েছে। প্রজেক্ট ব্লু বীমের প্রথম দিকের প্রচারকদের মধ্যে একজন ছিল ডেভিড ওপেনহেইমারের লেখা একটি অধুনালুপ্ত GeoCities পেজ, যা মোনাস্টের মূল পাঠে প্রসারিত হয়েছিল। তত্ত্বটি educate-yourself.org ওয়েবসাইটেও গভীরভাবে কভার করা হয়েছে, যার মালিকানা এবং সম্পাদনা করেছেন কেন আদাচি নামে একজন ব্যক্তি, যিনি সংগঠিত এই ব্লুবীম বিষের বিরুদ্ধে অত্যন্ত স্পষ্টবাদী, এমনকি যখন এটি টার্মিনাল রোগের চিকিত্সার ক্ষেত্রেও আসে।


অতি সম্প্রতি, তত্ত্বটি সোশ্যাল মিডিয়ায় পুনরায় আবির্ভূত হয়েছে কারণ মার্কিন সরকার ইউএফও সম্পর্কে আরও তৎপর হয়ে উঠেছে এবং আকাশে দেখা রহস্যময় বস্তুগুলিকে গুলি প্রদর্শন করে ফেলেছে। এটি মোনাস্টের দাবির দিকে ইঙ্গিত করতে পরিচালিত করেছে যে "উড়ন্ত সসার" এবং অন্যান্য ইউএফওগুলি কেবল তাদের ভবিষ্যতের "স্পেস শো" এর জন্য নাসার পরীক্ষামূলক প্রচেষ্টা। কিন্তু যদিও প্রজেক্ট ব্লু বীম অবশ্যই আজও এটিকে সমর্থন করে এমন কোন শক্ত প্রমাণ কখনও পাওয়া যায়নি তবে ধীরে ধীরে বের হচ্ছে।


এটি বাস্তব-বিশ্বের ঘটনাগুলিকে একটি কাল্পনিক দৃশ্যে টেনে আনার চেষ্টা করে, যথেষ্ট সন্দেহের স্তর তৈরি করে এবং যথেষ্ট ভয়কে প্রচার করে যে যারা ইতিমধ্যেই ষড়যন্ত্র তত্ত্বগুলিতে বিশ্বাস করতে ঝুঁকছে মানুষ— যারা নিরাপদ বোধ করার এবং তাদের সম্প্রদায়কে উন্নত মনে করার প্রবল আকাঙ্ক্ষা রয়েছে অন্যদের কাছে।

সোমবার, ৫ মে, ২০২৫

নাস্তিকরা কেনো ইসলাম বিরোধী হয়?

 "নাস্তিকরা কেনো ইসলাম বিরোধী হয়"



এটা বুঝার আগে প্রিয় পাঠকগন নাস্তিক ও নাস্তিকতা কি এটার বাস্তব ধারনা রাখতে হবে। নাস্তিকতা হলো সৃষ্টি কর্তার অস্তিত্বের অস্বীকার করা। আর নাস্তিক হলো যারা নাস্তিকতা ধারন ও লালন করে। এখন বলার বিষয় হলো কেউ যদি নাস্তিক হয় আর নাস্তিকতা লালন করে এর মানে হলো সে কোন সৃষ্টি কর্তা বা ধর্ম মানবে না, ব্যাস এতটুকুই,  এটাই হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা দেখি কি? নাস্তিকরা শুধু নাস্তিকই না তারা ধর্মের বিরোধিতা করে। 


আদতে নাস্তিকরা জাতে মাতাল তালে ঠিক টাইপের এক ধরনের মানসিক অসুস্থ রোগী। এরা অতীতে ছিলো, এখনও আছে এবং ভবিষ্যতেও থাকবে। এদেরকে বর্তমানে লালন ও পালন করে গ্রীক দর্শনে প্রভাবিত শায়তানের পূজারী নাস্তিকরা। নাস্তিকতা শুধু সৃষ্টি কর্তাকে অস্বীকার নয়, বরং এটি সৃষ্টি কর্তার বিরুদ্ধে শয়তান পূজারীর এক ধরনের বিদ্রোহ। 


যদি নাস্তিকতা কোন ধর্ম না হতো তাইলে নাস্তিকরা নিজেরা নিজেদের বিশ্বাস নিয়ে তারা তাদের মত থাকত। কিন্তু না, তারা এসে ধর্মের বিরুদ্ধে সারাক্ষন লেগে থাকে, আদতে এটা সৃষ্টি কর্তার সাথে তাদের এক ধরনের বিদ্রোহ। আপনারা যার ডেভিলস ডায়েরি কিংবা কিতাবুস শয়তান অথবা স্যাটনিক বুক এর যে কোন একটি পড়েছেন তারা জানেন যে শয়তান তার নিজের পূজারীদের নিকট ঘোষনা করেছে যে সে সৃষ্টি কর্তার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছে এই বিশাল মহা বিশ্বে। আর এ জন্যই এই শয়তান সে তার পূজারী ও মানসিক বীকার গ্রস্থ নাস্তিকদের মাধ্যমে মানুষকে মদ,নারী, বেশ্যা বৃত্তি, স*ম*কা*,মিতা, মডেলিংয়ের নামে নগ্নতা, নীল চলচ্চিত্র ও মাদক দিয়ে মানুষকে ধর্ম থেকে সরিয়ে খোদা দ্রোহী করার চেষ্টা করে যাচ্ছে।


আর নাস্তিকরা শুধু ইসলামের বিরোধিতা করে এমন নয়, এরা সকল ধর্মেরই বিরোধিতা করে৷ বললাম না যে ওরা জাতে মাতসল তসলে ঠিক! নাস্তিকরা সাধারণত যে দেশে বসবাস করে সে দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠদের ধর্মের সমালোচনা বেশি করে থাকে। কারণ সেই দেশের সমাজ ব্যবস্হায় সংখ্যাগরিষ্ঠদের ধর্মের প্রভাব বেশি থাকে। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সেটা ইসলাম৷ভারতের ক্ষেত্রে সেটা সনাতন ধর্ম। আমেরিকার ক্ষেত্রে সেটা খ্রিষ্ট ধর্ম। তাদের কাজই হলো ধর্মের বিরোধিতার মাধ্যমে আল্লাহর সাথে বিদ্রোহ করা, কারন এটা ওদের গুরু ইবলিস এর অঙ্গীকার।


মজার ব্যাপার হলো, প্রত্যেকটি দেশে যে ধর্ম সংখ্যগরিষ্ঠ সেই ধর্মের অনুসারীরা সেই দেশের নাস্তিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে যে তাদের দেশের নাস্তিকরা শুধু তাদের ধর্ম নিয়ে ঠাট্টা-তামাশা এবং সমালোচনা করে। ভারতের হিন্দুরাও সেই দেশের নাস্তিক, বামপন্থী এবং স্ট্যান্ডআপ কমেডিয়ানদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে যে, তারা শুধু হিন্দু নিয়েই ব্যাঙ্গ করে। কিন্তু ইসলাম ধর্ম নিয়ে ব্যাঙ্গ করে না। আবার আমেরিকার খ্রিস্টানরাও সেই দেশের নাস্তিকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে যে নাস্তিকরা শুধু খ্রিস্ট ধর্ম নিয়েই ব্যাঙ্গ করে। আর কোন ধর্ম তারা খুঁজে পায় না।


আপনি কিছু ভারতীয় নাস্তিক অথবা আমেরিকার নাস্তিকদের ফেসবুক পেজ অথবা গ্রুপে গিয়ে check করুন। দেখবেন ভারতের নাস্তিকরা হিন্দু ধর্ম এবং আমেরিকার নাস্তিকরা খ্রিষ্ট ধর্মের সমালোচনা বেশি করছে।


এবার চলেন জানা যাক কোন স্বার্থে এরা ধর্মের বিরোধিতা করে?


তাহলে সেটা আবার কেমন স্বার্থ, যার কারনে ধর্মের বিরুধীতা করতে হয়?


.


★ধরুন, ইসলাম বলে সুদমুক্তির কথা। মানে ইসলামে সুদ হারাম। এখন ঐ নাস্তিক শ্রেণিটার ইসলাম ভালো লাগেনা বা সেই সকল লোক ইসলামের বিরুদ্ধে বলবে যাদের হাতে পুঞ্জিভূত পৃথিবীর ৫০% সম্পদ, যা আরো বাড়ছে সুদের দ্বারা। 


.


★ধরুন, ইসলাম বলে জবাবদিহি রাষ্ট্র পরিচালনার কথা। এখন দুর্নীতিবাজ শাসকরা জবাবদিহিতার ভয়ে ইসলামের বিরুদ্ধে আঙুল তুলবে এটাই স্বাভাবিক। 


.


★ইসলাম বলে প্রকৃত ন্যায় কিংবা স্বচ্ছ বিচার বিভাগের কথা, যেখানে কারো সাধ্য নেই ন্যায়কে পাশ কাটানোর। যেখানে বিচারক স্বাধীনভাবে রায় দিতে পারবে। সেটা রাষ্ট্রপ্রধানের বিরুদ্ধে গেলেও। এইজন্যেই অপরাধ প্রবণ প্রশাসক কিংবা নীতিনির্ধারকদের ইসলাম ভাল লাগবে, যারা অপরাধ করে পার পেতে চায় কিংবা পার পাইয়ে দিতে চায়। 


.


★ইসলাম যখন সংস্কৃতির নামে বেহায়াপনা নিষেধ করে তখন ঐ সকল বিকৃতমনাদের টনক নড়ে যারা আর্ট-মিডিয়া-সিনেমা কিংবা বিভিন্ন উৎসবের নামে শ্রেফ নারীকে ভোগ্যপন্য বানিয়ে ভোগ করে। 


.


★যখন নারীপুরুষ আলাদা আলাদা শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র আর পর্দার কথা বলে, তখন সেই সকল লোকদের ইসলাম ভাল লাগবেনা যারা মেয়ে দেখলেই "মাল" বলে সম্বোধন করে। যারা শেয়ালরূপী জানোয়ারের মত বসে থাকে মুরগী ভোগ করার জন্য।(এই ভাষা গুলোর জন্য পাঠক গনের নিকট বিশেষ করে মায়ের জাতির নিকট মার্জনা কামনা করছি)


.


★ইসলাম চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ঘুষ-হারাম করেছে বলেই, সেই সকল রাজনীতিবীদ কিবা অফিসারদের ইসলাম ভাল লাগবে না(!) যারা কিনা এইসব তাদের অধিকার মনে করে। 


★ ইসলাম কথা বলে আলাদা এক সমাজ ব্যবস্থার জন্য।


যেখানে সম্রাটের নিযুক্ত বিচারক রায় দেবে সম্রাটের বিরুদ্ধেই।


যেখানে একটা নারী শালীনতা বজায় রেখে সব করতে পারবে, কোনো পুরুষের সাহস হবেনা, চোখ তুলে তাকাবার।


যেখানে দারিদ্রসীমার অবস্থা এমন হবে যে, যাকাত নেওয়ার জন্য খুঁজে খুঁজে লোক পাওয়া যাবেনা। 


.


এইজন্যেই যারা সমাজে ন্যায়বিচার চায় না, চায় অপরাধ করে পার পেতে, লক্ষ লক্ষ মানুষকে দরিদ্র রেখে অল্পতে শ্রম কিনে টাকার পাহাড় গড়তে, নেশা করতে, ব্যাবিচার করে, দুর্নীতি করতে, চায় নারীকে অবাদে ভোগ করতে- তারাই ইসলামের বিরুদ্ধে লাগে(!) কথা বলে, আঙ্গুল তোলে। 


বর্তমান পৃথিবীতে প্রায় ৭০০ কোটি মানুষ বসবাস করছে( কমবেশি হতে পারে)। বেশিরভাগ মানুষেরই কোন না কোন ধর্ম বিশ্বাস রয়েছে। পৃথিবীতে খ্রিস্টান ধর্মের অনুসারী সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এরপরই রয়েছে ইসলাম ধর্মের অবস্থান। এরপর অন্যান্য ধর্মের অনুসারীদের অবস্থান। ধর্মীয় অনুসারির সংখ্যার দিক থেকে খ্রিস্টান ধর্ম এক নাম্বারে হলেও ধর্ম মানা ও ধর্ম চর্চার দিক থেকে ইসলাম এক নম্বরে অবস্থান করছে।


রেনেসাঁর যুগে রাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা থেকে খ্রিষ্টান ধর্ম ও পাদ্রীদের অবস্থান খর্ব হওয়ার পর খ্রিস্টান ধর্মের তৎপরতা অনেকটাই কমে গিয়েছে। পরবর্তীতে জনগণের নিকট খ্রিস্টান ধর্ম পালন করাটা একটি ঐচ্ছিক বিষয় পরিণত হয়েছে। সাধারণ তারা তাদের ধর্ম নিয়ে মাতামাতি কিংবা গভীরভাবে চর্চা করে না তাই এটা নিয়ে তাদের সাথে নাস্তিকদের তেমন কোন বাঁধাবাঁধিও নেই। এবার হিন্দু ধর্মের কথা যদি বলি, হিন্দুদের সবচাইতে গুরুত্বপূর্ণ আর পবিত্র গ্রন্থ হল বেদ। নিম্নশ্রেণির হিন্দুদের বেদ স্পর্শ করতে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। শুধুমাত্র পুরোহিতরাই স্পর্শ করতে পারে ও এটা পড়ার অনুমতি রয়েছে। নিম্ন শ্রেণীর হিন্দুরা যেহেতু এটা পড়তে পারে না তাই এর জ্ঞান সম্পর্কে অধিকাংশই জানে না। তাই অধিকাংশ সময় হিন্দুরা বিতর্ক এড়িয়ে চলে।


এবার আসি আসল কথায়, নাস্তিকরা কেন মুসলমানদের প্রতি এত বেশি বিদ্বেষী? আগেই বলেছি ধর্মচর্চার দিক থেকে এক নম্বরে রয়েছে ইসলাম। বিশ্বে প্রায় প্রতিটি মুসলিম কমবেশি কুরআন ও হাদীস চর্চা করেন। আর এসব নিয়ে ভাবনা চিন্তা করেন। হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম যেহেতু বলেছেন যে তোমরা যদি একটি আয়াতও জানো তাহলে সেটা অপরের কাছে পৌঁছে দাও। তাই সুযোগ পেলেই মুসলমানরা সেই কাজটাই করে। নাস্তিকরা যেহেতু আমাদের আশেপাশে থাকেন তাই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মুসলমানদের সাথে নাস্তিকদের তর্ক-বিতর্ক ভাব বিনিময় একটি নিত্যনৈমিত্তিক সাধারন বিষয়। অন্য ধর্মের অনুসারীরা বিতর্ক এড়িয়ে নাস্তিকদেরকে ছাড় দিয়ে চলার নীতি গ্রহণ করলেও মুসলমানরা সেটা করে না। এসব কারণেই হয়তো নাস্তিকরা মুসলিম আর ইসলামের প্রতি এত বিদ্বেষী হয়ে থাকেন।


ইসলামই হচ্ছে আল্লাহর কাছে একমাত্র মনোনীত ধর্ম। আর শয়তান আল্লাহর কাছে ওয়াদা করেছে সে মানুষকে তার থেকে দূরে রাখবে। এবার ইসলাম যদি আল্লাহর কাছে একমাত্র মনোনীত ধর্ম হয় তাহলে ইসলাম বিদ্বেষী নাস্তিকের উপর কে ভর করে সেটা তো বোঝাই যায়!


কেউ কেউ বলে মানুষ বিজ্ঞান পড়ে মানুষ নাস্তিক হয়,


লোকমুখে শুনে, আন্দাজে কোন ধারনা করবেন না। বিশ্বের ইতিহাসে কেউ কোনদিন বিজ্ঞান পড়ে নাস্তিক হয়নি। যে নাস্তিক হয়, সে এমনিতেই নাস্তিক। বিজ্ঞান পড়ুক বা না পড়ুক ; সে এমনিতেই নাস্তিক। কারো নাস্তিক হবার সাথে বিজ্ঞান পড়ার কোন সম্পর্ক নেই। অনেকের ধারনা, নাস্তিকতা এক ধরনের অনুধাবন। বিজ্ঞান পড়তে পড়তে একসময় কারো মনে হয় - আল্লাহ বলে কিছু নেই। এমন অনুধাবনের পরে একজন নাস্তিক হয়।আদতে এই লিখা যে আমি লিখছি আমিও একজন বিজ্ঞানের ছাত্র, চিকিৎসা আমার পেশা। তাইলে তো সবার আগে আমি নাস্তিক হওয়ার কথা, কিন্তু আমি যতই বিজ্ঞান পড়ছি ততই সৃষ্টি করৃতার অস্তিত্ব খেঁজে পাচ্ছি। বরং যত নাস্তিক তৈরী হয় মানবিক ও কলা বিভাগে পড়েই হয়। নাস্তিকদের ৯৮% বিজ্ঞানে ছাত্র নয়। আপনি সারা দুনিয়ায় মেডিকেল কলেজ ও ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ গুলোতে নাস্তিক খোঁজে রের করতে আপনার মাইক্রোস্কোপ লাগবে।


নাস্তিকতার ব্যাপারে মানুষের এই ধারনাটা সম্পুর্ন ভুল। নাস্তিকতা কোন অনুধাবন নয়। নাস্তিকতা হলো ইচ্ছা করে সৃষ্টিকর্তাকে অস্বীকার করা। নাস্তিকতা হলো একটা গভীর বিশ্বাস। মনে রাখবেন - নাস্তিকরা ইচ্ছা করেই অস্বীকার করে। ইচ্ছা করে সৃষ্টিকর্তা অস্বীকার করলেও, নাস্তিকরা বিজ্ঞানের অজুহাত দেয়।


নাস্তিকরা যে বিজ্ঞানের অজুহাত দেয়, সেটা বুঝতে বিজ্ঞান-মনস্ক লোকজন দেখুন। দেশের যত বিজ্ঞান-মনস্ক নাস্তিক আছে, তাদেরকে জিজ্ঞাসা করুন - কোন বিষয়ে লেখাপড়া করেছেন? উত্তরে জানবেন, তারা সাহিত্য, শিল্পকলা, চারুকলা, ইতিহাস, সমাজ-কল্যান, ইত্যাদি লেখাপড়া করেছে। যারা নিজেকে বিজ্ঞানমনস্ক দাবী করে, তাদের মধ্যে একজনও বিজ্ঞানে লেখাপড়া করেনি। বিজ্ঞান পড়ে বিজ্ঞান-মনস্ক হওয়া যায় না।


বিজ্ঞান পড়ে বিজ্ঞান মনস্ক হয় না। বিজ্ঞান পড়ে কেউ নাস্তিক হয় না। যেসব বিজ্ঞান জানা মানুষ নাস্তিক হয়েছে, তারা ইচ্ছা করেই সৃষ্টি কর্তাকে অস্বীকার করে। ওই অস্বীকার করার পেছনে বিজ্ঞানের কোন ভুমিকা নেই।


নাস্তিকদের ব্যাপারে ইসলামে কি বলা আছেঃ


কোরআনের ভুমিকা হলো সুরা ফাতিহা। ফাতিহা কথাটির অর্থ প্রারম্ভিকা (শুরু)। পরবর্তি সুরা বাকারা থেকেই কোরআনের মুল আলোচনা শুরু হয়েছে। সুরা বাকারার ৬-৭ নম্বর লাইনঃ


নিশ্চয় যারা কুফরী করেছে, তুমি তাদেরকে সতর্ক কর কিংবা না কর, উভয়ই তাদের জন্য বরাবর, তারা ঈমান আনবে না (সুরা বাকারা -৬)। আল্লাহ তাদের অন্তর ও কানের উপর মোহর করে দিয়েছেন, আর তাদের চোখে আছে আবরণ আর তাদের জন্য আছে মহা শাস্তি (সুরা বাকারা - ৭)।


যারা সতর্কতার পরেও অস্বীকার করবে। যাদের চোখ, কান, অন্তর সবই বন্ধ হয়ে আছে। হ্যাঁ, ওরা হলো সেই নাস্তিক যারা ইচ্ছা করে অস্বীকার করে, বিজ্ঞানের অজুহাত দেয়। 


লেখক: চিকিৎসক, জার্নালিস্ট ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী।

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...