expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

বুধবার, ২ এপ্রিল, ২০২৫

জরুরিয়ত ছাড়া ছবি সহ কাগজের পোস্টার ছাপানো, শরয়ী হুকুম

 "জরুরিয়ত ছাড়া ছবি সহ কাগজের পোস্টার ছাপানো ও শরয়ী হুকুম"





সন্মানিত পাঠক, আমি ছবি সহ কাগজের পোস্টারে শুভেচ্ছা জানানো নিয়ে শরীয়ত কি বলে এটা জানার জন্য ছোট একটি পোস্ট করেছিলাম। এখানে নির্দ্দিষ্ট কোন দল বা মতকে নির্দেশ করি নাই, সম্মিলিত মুসলমানদের নিকট জানতে চেয়েছিলাম, বিশেষ করে আমার আলেম ফ্রেন্ডদের নিকট। কোন আলেম এ বিষয়ে এই পর্যন্ত কোন মন্তব্য না করলেও একটা বিশেষ ইসলমি দলের সমর্থক ভাইয়েরা অনর্থক নিজেদের গায়ে মেখে আমাকে কমেন্ট বক্সে কোন দলিল না দিয়ে তুলাধুনা করে ছাড়ছে। আর ইনবক্সের কথা বাদই দিলাম, ওটার কথা বললে ঐদলের লোক গুলো নিশ্চিত লজ্জিত হবে। যাক ঐ দলটি সম্পর্কে শেষের দিকে বলব।

আসুন ছবি তৈরির বিষয়ে ইসলাম কি বলে তা জেনে নেই তার পর ঐ ভাইদের প্রশ্ন গুলোর উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করব।

ছবি এর অর্থ হলো অবয়ব, প্রতিকৃতি, ইংরেজিতে Picture বা Scalpture বলে যা দিয়ে কোন কিছুর হুবহু পরিচিত প্রকাশ করা হয়। এটা হতে পারে কাগজে তৈরি ছবি কিংবা মূর্তি যেকোনটি। আর বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতি তৈরী  শরীয়ত অনুযায়ী হারাম বিধায় সকল আলেমরা মিলে তার প্রতিবাদ করেছিলেো। নিশ্চয়ই ২ বছরের ব্যবধানে আশা করি এই ফতোয়া উল্টে যাওয়ার কথা না। আর উল্টে যাওয়ার জরুরিয়ত থাকলে আমি দলিল দেখার আবেদন করছি।

কোন প্রাণীর ছবি তোলাকে হাদিসে পাকে কঠোর হারাম কাজ বলা হয়েছে এবং ছবির সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আল্লাহর নবী লা'নত করিয়াছেন।

হযরত আবু তালহা (রাযি.) হইতে বর্ণিত হাদিসে রাসূল (সা.) ইরশাদ করেছেন :

لاتدخل الملئكة بيتا فيه كلب ولاتصاوير
“ফেরেশতাগণ সেই ঘরে প্রবেশ করে না যাহাতে কুকুর রহিয়াছে, এবং সেই ঘরেও না, যাহাতে আছে (প্রাণীর) ছবি। (বোখারী, মুসলিম)


এখন কারো অন্তরে এই চিন্তার উদয় হতে পারে যে, তাহলে তো নাকে তৈল দিয়ে ঘরে ছবি টাঙ্গিয়ে ঘুম পারব। রূহ কবয করার ফেরেশতা ঘরে ঢুকবে না ভালই হল! “ফেরেশতাগণ প্রবেশ করেন না" কিন্তু যেসব ফেরেশতা মানুষের আমল লিপি বদ্ধ করেন, কিংবা মানুষের হেফাযতে নিয়োজিত অথবা রূহ কবয করার জন্য আসেন, তাহারা ইহার অন্তর্ভুক্ত নয়।

হযরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাযি.) হইতে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি রাসূলুল্লাহ (সা.) কে বলিতে শুনিয়াছি, তিনি বলিয়াছেন (কিয়ামতের দিন) আল্লাহ তায়ালার নিকট সব চাইতে কঠিন আযাব হইবে ছবি প্রস্তুত কারীদের।

বিদায় হজ্বের ভাষন পড়ে দেখুন মূর্তি বা ছবি তৈরীর বিষয়ে হযরত মুহাম্মদ(স:) কি ঘোষণা করেছেন,...  তোমরা ছবি ও মূর্তি তৈরীকারীদের কঠিন আজাবের খবর দাও.....।

(বুখারী, মুসলিম)। 

হযরত আয়েশা (রাযি.) বর্ণনা করেন, একবার তিনি একটি গদি (বা আসন) খরিদ করিলেন, উহাতে প্রাণীর অনেক গুলি ছবি ছিল, যখন রাসূল (সা.) (বাহির হইতে) উহা দেখিলেন, দরজায় দাড়াইয়া গেলেন, ঘরে প্রবেশ করিলেন না, আমি তাঁহার চেহারায় ঘৃণার ভাব দেখিতে পাইলাম, হযরত আয়েশা (রাযি.) বলেন, তখন আমি বলিলাম ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমি (আমার গুনাহের জন্য) আল্লাহ ও তাঁহার রাসূলের কাছে তওবা করিতেছি, বলুন তো আমি কি অপরাধ করিয়াছি? তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলিলেন : এই গদিটি কেন? আমি বলিলাম, আপনার বসার এবং বিছানা হিসেবে ব্যবহার করার জন্য আমি উহা খরিদ করিয়াছি। তখন রাসূলুল্লাহ (সা.) বলিলেন, এই সমস্ত ছবি যাহারা তৈয়ার করিয়াছে কিয়ামতের দিন তাহাদিগকে শাস্তি দেওয়া হইবে। এবং তাহাদিগকে বলা হইবে যাহা তোমরা বানাইয়াছ তাহাতে জীবন দান কর। অতঃপর বলিলেন, ফেরেশতাগণ কখনো এমন ঘরে প্রবেশ করে না, যেই ঘরে (প্রাণীর) ছবি থাকে। (বোখারী, মুসলিম)


উল্লেখিত হাদিস গুলো ছাড়াও আরো বহু সংখ্যক হাদিস রয়েছে, যে গুলোর দ্বারা কোন প্রাণীর ছবি তোলা কিংবা অংকন করার নিষেধাজ্ঞা প্রমাণিত হয়। তবে সমস্ত ওলামাদের ঐক্যমত যে, কোন প্রাণহীন বস্তু যেমন : ঘর বাড়ি, আসবাব পত্র, গাছ পালা ইত্যাদির ছবি তোলা অথবা অংকন করা জায়েজ আছে।


তবে কোন ব্যক্তির ব্যক্তিগত আইডেন্টিটি, রাষ্ট্রীয় প্রমান ও নিরাপত্তার মত বাস্তব সমস্যার ক্ষেত্রে ইসলামি চিন্তাবিদগন ছবি তোলা জায়েজ বলেছেন যা শুধু মাত্র প্রয়োজনীয় ব্যবহারের জন্য, প্রদর্শনের জন্য নয়।


এবার আসুন নির্বাচন চলাকালীন প্রার্থীদের ছবি ও মার্কা সম্মলিত পোস্টারের ক্ষেত্রে কি করনীয়। যেহেতু বাংলাদেশ ইসলামি আইনে চলে না সেহেতু হারামকে হারাম জেনেই রাষ্ট্রীয় আইনের বাধ্যবাধকতার জন্য এটা মানুষ করে, এর মানে এই নয় যে এখানে ছবি তৈরী হালাল হয়ে যাবে কিংবা এখানে ছবি বানানোর বিষয়টা ইসলামের দলিল হয়ে যাবে।

এখন আসেন যে দলটি এই হারাম বিয়ষটি নিজেদের মাঝে গাঁয়ে মেখে আমাকে গালিগালাজ করে ইনবক্স পূর্ন করছে তাদের বিষয়ে বলি। ওনাদের যুক্তি এবার নাকি ওনাদের আগামী নির্বাচনের প্রার্থী হিসাবে পরিচিতির জন্য কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে করেছে। কেউ কেউ বলছে যে, যেই প্রার্থীকে ভোট দিবে তাকে কি না চিনে মানুষ ভোট দিবে? কেউ বলছে আমি ফেসবুকে কেন ছবি দিয়েছি?


আসুন ঐ দলের নেতা কর্মীদের কিছু প্রশ্ন করার মাধ্যমে আমি ওনাদের যুক্তি গুলোর জবাব দেই।


★ আপনারা আপনাদের কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্তে এগুলো করতেই পারেন, কিন্তু আপনার দলের কেন্দ্র কি শরীয়তের বিধান দাতা না কোরআন হাদিস মতে বিধান চলবে?

★ আপনারা প্রার্থী পরিচিতির জন্য নির্বাচনের সময় পোস্টার করে পরিচয় করিয়ে দিলেই তো পারেন, এত আগে কেনো আপনারা ছবি যুক্ত পোস্টার যা শরীয়তের হারাম তা করতে যাবেন।


★এদেশে গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নেতা নির্বাচিত হয়, তাই নেতাদেরকে ভোটারের নিকট পরিচিত হতেই হয়, তাই বলে ছবি যুক্ত হারাম পোস্টার ছাড়া কি গনমানুষের নিকট পরিচিত হওয়ার কোন পথ নেই, যদি না থেকে থাকত তাইলে এটা করতেন?


★আপনারা এমন কোন নেতাদের ভোটে দাঁড় করাতে যাচ্ছেন যাদেরকে মানুষ চিনেই না, এক বছর আগে থেকে হারাম ছবি বানিয়ে তা দিয়ে পরিচিত করাবেন আর নিজেদেরকে ইসলামি দলের নেতা দাবি করবেন?


★ আপনাদের গন বিচ্ছিন্ন কর্মী সর্বস্ব নেতারা যারা নিজেকে ছবি দিয়ে গনমানুষের সাথে বছরে এক দুইবার পরিচিত হতে হয় এরকম নেতাদের সিলেকসন করলেন কেনো? তাদেরকে কি মানুষ ভোট দিবে?


★ আপনারা বলতে পারেন প্রার্থী সিলেকশন কেন্দ্রীয় সিদ্ধান্ত,  ভাল কথা আপনাদের দলের কেন্দ্রীয় আনুগত্য করছেন সমস্যা নাই বরং উত্তম, কিন্তু আপনার দলের কেন্দ্র কেমন ইসলামী চিন্তাবিদ দিয়ে নিয়ন্ত্রন হয় যেখানে কিনা দলের প্রয়োজনে  শরীয়তের হারাম শিথিল করে দিল কিন্তু দলীয় সিদ্ধান্ত শিথিল করে দলের জনপ্রিয় লোক গুলোকে প্রার্থীকে সিলেকশন করতে রাজী নয়?


★ আপনাদের যে দলের নেতারা দলীয় আইন ছাড় না দিয়ে শরীয়তের দলিল শিথিল করে দেয়, সে দল ক্ষমতায় গেলে নিজের স্বার্থে আরো কোন কঠিন সিদ্ধান্ত মানুষের ঘাড়ে চাপিয়ে দিবে কিনা তা নিয়ে জনগন চিন্তিত হয়ে আপনাদের সমর্থন করা হতে বিরত থাকলে কি আপনাদের নিকট তার কোন বিকল্প সমাধান আছে?


★ আমার ফেসবুক ছবি নিয়ে প্রশ্ন তোলেছেন তাদেরকে বলি আমি আইডেন্টিটির জন্য একটা ছবি দিয়েছি ফেসবুকের ভেরিফিকেশন শর্তের জন্য বাধ্য হয়ে যদিও এটা আমি হালাল মনে করিনা, কিন্তু আপনারা যারা ইসলামের দোহাই দেন আর সারা দিন ফেসবুকে ছবি ছাড়েন, বেপর্দা বউ সহ ছবি দেন তাদের বেলায় কতটুকু হালাল মনে করেন?


সব শেষে বলব আল্লাহ সবাইকে সহীহ বুঝ দান করুক, হারামকে হারাম ও হালালকে হালাল চিনার বোধ শক্তি দিক(আমীন)

লেখক:চিকিৎসক, জার্নালিস্ট ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী। 


কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...