expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪

দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনার দরকার জামায়াতের

দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা দরকার জামায়াতের

খুবই দুঃখের সাথে বলতে হয় যে জামায়াতে ইসলামী ছাত্রশিবিরের পোলাপানকে একদমই ব্যবহার করে না। এটা মারাত্মক জেনারেশন গ্যাপের কারনে হচ্ছে। শিবির থেকে বিদায় নেয়ার পরে একটা ছেলে যে ফর্মে থাকে সেটা পারফর্ম করার জন্য জামায়াতে কোন ক্ষেত্র নাই। ওরা রোকন বানানোই কাজ মনে করে। একটা ছেলে ভার্সিটি থেকে বিদায় নেয়ার পরে তার আগের কাছাকাছি সময়ের বিদায় নেওয়া দায়িত্বশীলদের আলাদা প্ল্যাটফর্ম দরকার। এটা পেশাগত কাজের ভিত্তিতে গড়ে উঠলে ভাল। তাহলে কেউ ক্যারিয়ার যেদিকে গড়বে সেদিকে যেতে পারবে। রাজনৈতিক অনেক প্ল্যাটফরম করা দরকার, রিক্রুট করা দরকার। যেন বিদায় নেওয়ার পরেই কেউ জামায়াতের ক্যাডার ভিত্তিক সিস্টেমের কারনে একদমই হাওয়া হয়ে না যায়। 

ইন্টার্নালী রোকন হোক আর যা হওয়ার হোক। কিন্তু প্রকাশ্যই কোন একটা প্লাটফরমের মাধ্যমে যেন সবসময় আলোচনায় হাজির থাকতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।  কিছু লোককে টাকা দিয়ে চাকরির মত করে পালতে হবে। যেমন, যে ছেলেটা ভার্সিটিতে ছাত্র ইউনিয়নের সভাপতি ওরে বিদায়র পরে রোকন বানানো হয়। জীবিকার জন্য ও আর রাজনীতিও করে না। আর জামায়াতের তো দীর্ঘমেয়াদের সুদুরপ্রসারী চিন্তা করার নেতা একন নাই। থাকলে ওরে সিপিবি করানোটাই হতো চাকরি। বামদের প্রতিষ্ঠানগুলোতে ক্যাম্পাসে যারা বাম করেছে তাদের দিয়েই দখলে নিতে হবে। 

অনেকের অভিযোগ ডেইলি স্টারে চাকরি করে এখন ওদের মতোই আচরণ করে আমাদের ভাইয়েরা। অথচ ভার্সিটির সাংবাদিক সমিতির সভাপতি উনারে আমরাই বানিয়েছিলাম। ভাই ক্যাম্পাসে আপনি উনার থেকে আদায় করে নিতে পেরেছেন কারণ আপনার ঐটুকই কন্ট্রোলে ছিল। এখন আপনি তো শিবির থেকে বিদায় নেয়ার পরে এদের ঐভাবে আর ইউজ করার জন্য কিছুই করেন নাই। তার যারা নেতা ছিল বিদায়ের পরে পেশাগত সেক্টরে তাদের দিয়েই প্ল্যাটফরম গঠন করে ন্যাশনাল লেভেলেও সিন্ডিকেট করার জন্য এজন্যই তো বলছি।

জামায়াত যে একটা মারা খেয়েছে এটা কি আপনারা টের পেয়েছেন? ঢাবি শিবিরের সাবেক সভাপতি জুনায়েদ, নাগরিক কমিটিতে যোগ দেওয়ার পরে ভবিষ্যতে জামায়াত মেধাবী নেতৃত্ব আর পাবে না শিবির থেকে। এমনকি প্রথমবারের মত জুনায়েদ জামায়াতকে ধারন না করে পোষ্টও নাকি করেছে। সুতরাং ভবিষ্যতে ঢাবি শিবিরের যারা জামায়াতের মধ্যে মূল্যায়িত হবে না সে আর জামায়াত করবে না। এটা সারাদেশেও প্রভাব পড়বে। শিবিরের যে ছেলেটার সুযোগ আছে নাগরিক কমিটিতে গিয়ে ভালো পলিটিকস করার সে রুকন হয়ে কেন নিজেকে রাজনীতি করার যে মজা সেটা থেকে বঞ্চিত করে খোয়াড়ে ঢুকাবে? আমি স্পষ্ট দেখতে পাচ্ছি নাগরিক কমিটির শিবির রিক্রুট করার মাধ্যমে সবচেয়ে বড় মারা খেয়েছে দুইটা দল নুরুর পার্টি, এবি পার্টি। আর জামাতের লোকসংখ্যা বেশিই থাকবে তবে এটা ক্রমান্বয়ে চরমোনাই পার্টি হয়ে যাবে হয়ত।কেননা জামায়াতের শপথ শুধু আনুগত্যই তৈরী করে না, অতি আনুগত্যের কারনে প্রতিভাও ধ্বংশ করে। 



দাঙ্গা প্রতিহতের প্রস্তুতি নিন!!!

সাধুরা সাবধান!! দাঙ্গা প্রতিহতের প্রস্তুতি নিন।

এদেশে কেনো প্রকার ধর্মীয় দাঙ্গা একজন মুসলমানও চায় না, আওয়ামিলীগ ছাড়া, এমনকি বেশীর ভাগ হিন্দুও চায় না কোনো প্রকার দাঙ্গা। মুসলমানরা দাঙ্গা না চাওয়ার প্রমান এ্যাডভোকেট আলিফ হত্যার পর মুসলমানদের ধৈর্য্য ধারন, পূজায় মাদরাসা ছাত্রদের মন্দির পাহারা। 

এদেশে দাঙ্গা চায় পরাজিত শক্তি। জুলাই বিপ্লবের পর পরাজিত ও পলাতক স্বৈরাচার বাংলাদেশে প্রত্যাবর্তনের একমার উপায় হলো হিন্দু-মুসলিম দাঙ্গা আর এর মূল এজেন্ডা বাস্তবায়নের দায়িত্ব এখন ইসকনের। 

ইসকনের ব্যানারে এবার লক্ষ লক্ষ আওয়ামীলীগার মাঠে নামবে, তারপর হিন্দু সেজে মুসলমানদের ঘর বাড়ি মসজিদ- মাদ্রাসা ও ধর্মীয় স্থাপনায় হামলা ভাংচুর চালাবে এবং এর দায় আসবে সাধারণ নিরীহ সনাতনীদের উপর। এর জবাবে কিছু মুসলমানও মাঠে নামবে, তারাও ভুলে উগ্রপন্থা অবলম্বন করে তবে সাধারন নিরীহ সনাতনীরা মারা পরবে। মাঝখান দিয়ে বেঁচে যাবে ইসকন আর ভারতে দাঙ্গা ছড়িয়ে বিজেপি ও আরএসএস কচুকাটা করবে সাধারন মুসলমানদেরকে। ভারতীয় বাহিনী আসবে সনাতনী রক্ষার কবচ নিয়ে বাংলাদেশে, দখল করবে বাংলাদেশ, ক্ষমতায় বসাবে আওয়ামীলীগ। পূর্নতা পাবে অখন্ড ভারত মাতার স্বপ্ন।



ফেসবুকে ছবি তোলা হারাম কেনো?

 

কেমেরায় কিংবা মোবাইলে ছবি তোলায় ক্ষতি কি?  এটা কি হারাম?




শরীয়তের একটি সর্বজন স্বীকৃত মাস  আলা বা সিদ্ধান্ত হল,কোনো জিনিষের মূল হুকুম হারাম থাকলে,সেই জিনিষ সর্বদাই হারাম হবে।চায় সেই জিনিসের মাধ্যম পরিবর্তন হোক বা না হোক।যেমন ফটো তাসবীরের অন্তর্ভুক্ত হয়ে হারাম।প্রথমে হাতে অঙ্কিত হত,তখনও হারাম ছিলো।এখন ডিজিটাল প্রক্রিয়ায় ছবিকে তুলা হচ্ছে,এখনও হারাম হবে।

হযরত ইবনে আব্বাস রাযি থেকে বর্ণিত
ﺃﺧﺮﺝ ﺍﻹﻣﺎﻡ ﺍﻟﺒﺨﺎﺭﻱ ﺑﺴﻨﺪ ﺍﻟﻤﺘﺼﻞ ﻋﻦ ﺍﺑﻦ ﻋﺒﺎﺱ ﻗﺎﻝ : ﺳﻤﻌﺖ ﻣﺤﻤﺪﺍ ﺻﻠﻰ ﺍﻟﻠﻪ ﻋﻠﻴﻪ ﻭﺳﻠﻢ ﻳﻘﻮﻝ : « ﻣﻦ ﺻﻮﺭ ﺻﻮﺭﺓ ﻓﻲ ﺍﻟﺪﻧﻴﺎ ﻛﻠﻒ ﻳﻮﻡ ﺍﻟﻘﻴﺎﻣﺔ ﺃﻥ ﻳﻨﻔﺦ ﻓﻴﻬﺎ ﺍﻟﺮﻭﺡ، ﻭﻟﻴﺲ ﺑﻨﺎﻓﺦ »
রাসূলুল্লাহ সাঃ বলেন,যে ব্যক্তি দুনিয়াতে কোনো ফটো অঙ্কন করবে,কিয়ামতের দিন তাকে ঐ ফটোতে রূহ ফুকে দিয়ে জীবিত করার দায়িত্ব দেয়া হবে।অথচ সে ঐ ফটোকে জীবিত করতে পারবে না।(সহীহ বোখারী-৫৯৬৩)

শরীয়তে তাসবীর হারাম।কুরআন হাদীসে তাসবীর শব্দ উল্লেখ করা হয়েছে।তাসবীর যে হারাম,এতে কারো দ্বিমত নাই।
এখন প্রশ্ন জাগতে পারে,তাহলে তাসবীর কি? কোন কোন জিনিষ তাসবীরের অন্তর্ভুক্ত?ডিজিটাল ক্যামেরা দিয়ে তুলা ফটো কি তাসবীরের অন্তর্ভুক্ত?
এই প্রশ্নের জবাবে বলা যায় যে,
সরাসরি বাস্তবে নির্মিত মুর্তি,এবং হাত দ্বারা অঙ্কিত  মুর্তির ফটো,এগুলো তাসবীরের অন্তর্ভুক্ত। এতে কারো দ্বিমত নাই।
ডিজিটাল ফটো কি তাসবীরের অন্তর্ভুক্ত?
এ সম্পর্কে উলামায়ে কেরামদের মতবিরোধ রয়েছে।কেউ কেউ ডিজিটাল ফটোকে নাজায়েযের হুকুম থেকে বের করে বৈধতার ফাতাওয়া দিয়েছেন।

জাস্টিস আল্লামা তাকী উসমানী (দাঃবাঃ)লিখেন,
ﻛﺜﻴﺮ ﻣﻦ ﻋﻠﻤﺎﺀ ﺍﻟﺒﻼﺩ ﺍﻟﻌﺮﺑﻴﺔ، ﻭ ﺟﻠﻬﻢ ﺃﻭﻛﻠﻬﻢ ﻓﻲ ﺍﻟﺒﻼﺩ ﺍﻟﻬﻨﺪﻳﺔ، ﻗﺪ ﺃﻓﺘﻮﺍ ﺑﺄﻧﻪ ﻻﻓﺮﻕ ﺑﻴﻦ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﻤﺮﺳﻮﻣﺔ ﻭ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﺸﻤﺴﻴﺔ ﻓﻲ ﺍﻟﺤﻜﻢ ..… ﻭﺍﻟﻮﺍﻗﻊ ﺃﻥ التفريق ﺑﻴﻦ ﺍﻟﺼﻮﺭﺓ ﺍﻟﺸﻤﺴﻴﺔ ﻻ ﻳﻨﺒﻐﻲ ﻋﻠﻰ ﺃﺻﻞ ﻗﻮﻯ، ﻭﻣﻦ ﺍﻟﻤﻘﺮﺭ ﺷﺮﻋﺎ ﺃﻥ ﻣﺎﻛﺎﻥ ﺣﺮﺍﻣﺎ ﺃﻭ ﻏﻴﺮﻣﺸﺮﻭﻉ ﻓﻲ ﺃﺻﻠﻪ ﻻﻳﺘﻐﻴﺮ ﺣﻜﻤﻪ ﺑﺘﻐﻴﺮ ﺍﻵﻟﺔ
আরব দেশের অনেক উলামায়ে কেরাম,এবং হিন্দুস্তানের অধিকাংশ বা সকল উলামায়ে কেরাম সিদ্ধান্ত দিয়ে থাকেন যে,হাতে অঙ্কিত ছবি এবং ডিজিটাল ছবির মধ্যে কোনো পার্থক্য নাই। বাস্তবতা হচ্ছে, হাতে অঙ্কিত ছবি এবং ডিজিটাল ছবির মধ্যে পার্থক্য করার ভিত্তি মজবুত নয়।শরয়ী সিদ্ধান্তকৃত মাসআ'লা হল,যে জিনিসের মূল হারাম,সেই জিনিষের হুকুমে মাধ্যম বা উসিলা পরিবর্তনের কারণে কোনো প্রকার পরিবর্তন আসবে না।(তাকমিলাতু ফাতাহিল মুলহিম-৪/৯৭)

অর্থাৎ হাতে আকাঁ ছবির মতই ক্যামেরায় তোলা ছবিও হারাম হবে। তবে এক্ষেত্রে উলামায়ে কেরামের মতামত হচ্ছে ক্যামেরায় তোলা ছবি যতক্ষণ পর্যন্ত ছাপানো না হয় ততক্ষণ তা হারাম হিসেবে গণ্য হবেনা। তবে জরুরি প্রয়োজনে যেমন পাসপোর্ট,  আইডি কার্ড,  রেজিষ্ট্রেশন সহ বিভিন্ন বাধ্যতামূলক প্রয়োজনে ছবি তোলা জায়েজ বলে মত দিয়েছেন উলামায়ে কেরাম।

এখন আসেন একটা বৈজ্ঞানিক আলচনা করি। ছবি মানে অবয়ব, অর্থাদ যে বস্তু বাস্তবে দেখা যায় তার হুবহু অবয়ব তৈরী করার নামই হলো ছবি এটা যে প্রকারেই হোক, মূর্তির মাধ্যমে হোক, কলমের মাধ্যমে হোক আর আলোর ঝলকের মাধ্যমেই হোক।

সহজ উদহরন দেই, কোথাও কোনো নগ্ন বা বেপর্দা মানুষু মুসলমানদের জন্য দেখা শরীয়তে হারাম করেছেন। এখন যদি কেউ কোনো বেপর্দা পুরুষ কিংবা নারী সরাসরি না দেখে ছবি, মূর্তি কিংবা ভিডিওর মাধ্যমে দেখে তাইলে কি জায়েজ হয়ে যাবে? একটা নগ্ন মানুষকে সরাসরি দেখলে যে অনুভুতি হওয়ার কথা ঠিক একই ব্যক্তির মূর্তি, ছবি কিংবা কেমেরার ছবি ও ভিডিও দেখলে তো একই অনুভূতি তৈরী হবে, তাইলে আলোর ঝলকের মাধ্যমে দেখা ছবি জায়েজ হবে কেমনে? জায়েজ হওয়ার কারন নাই।

অতএব বিনা কারনে পেসবুক সহ বিভিন্ন সামাজিক ও ইলেকট্রনিকস যোগাযোগ মাধ্যমে ছবি তোলা কিংবা টিকটক করা সম্পূর্ণ হারাম।

তবে হ্যাঁ, যদি কোনো ছবি, ভিডিও,শিক্ষনীয় লেকচার, মাহফিলের আলচনা হয় যেখানে বেপর্দা মানুষ থাকবেনা এমন সব ভিডিও কিংবা ছবির বিষয়ে ইসলামি চিন্তাবিদগন শৈথিল্য দেখিয়েছে।

প্রামাণ্য গ্রন্থাবলীঃ
(১)বুখারী শরীফ : ২/৮৮০; হাঃ ৫৭২৯
(২)মুসলিম শরীফ- ২/২০০, হাঃ ৫৪৭১
(৩)ফাতাওয়ায়ে শামী- ২/৪১৬-১৭
(৪)তাকমিলায়ে ফাতহুল মুলহিম- ৪৯৭,৯৮
(৫)শরহে নববী আলা সহীহ মুসলিম : (২)১৯৯;
(৬)কিফায়াতুল মুফতী : ৯/২৪৩



বায়ু নির্গত হলে শুধু ওযু করলেই পাক হয় কেমনে?

 

পায়ু পথে বায়ু নির্গত হলে অজু করতে হয় কেন? বায়ু বের হয় পায়ু পথে আর ধূতে হয় হাত, মুখ বিষয়টা কি মজার নয়? এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কি?



 
জবাবঃ
আসুন আগে শরীয়ত হতে ব্যাখ্যা দেই তার পর বিজ্ঞান হতে দেবো।

শরীয়ত হতে এই জবাবের জন্য আমাদের জানা দরকার অজু ও ইবাদত কি এবং ইবাদতের জন্য
অজুর প্রয়োজনীয়তা কি!

অজু কিঃ
অজু (وضوء) শব্দের আভিধানিক অর্থ সৌন্দর্য ( الحسن) ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা (النظافة)। অজুর মাধ্যমে বাহ্যিকভাবে অজুর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়। অপর দিকে অজুর কারণে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হতে গুনাহ ঝরে গিয়ে সেগুলো পাপমুক্ত হয়ে নূরানী ও উজ্জ্বল হয়ে যায়। শরিয়তের পরিভাষায় অজু হলো- নির্দিষ্ট অঙ্গসমূহে নির্ধারিত পদ্ধতিতে পানি প্রবাহিত করা।
[الفقه على المذاهب الاربعة পৃষ্ঠা ৪৬]

অজুর হুকুম -
অজু মানে নাপাকী ও অপবিত্রতা দূর করা। ফলে অজুর মাধ্যমে ফরজ ও নফল যেমন নামায, তেলাওয়াতে সেজদা, শোকরের সেজদা, বায়তুল্লাহ্র তাওয়াফ ইত্যাদি আদায় করা যায়। সুতরাং উপরিউক্ত কাজ সমূহ আদায়ের জন্য অজু করা ফরজ-আবশ্যক। অতএব, এ কাজগুলো অজুবিহীন ব্যক্তির জন্য জায়েয নয়। অনুরূপ ক্বোরআন শরীফ স্পর্শ করার জন্য অজু ফরজ।
অজুর আধ্যাতিক ফজিলতের পাশাপাশি রয়েছে শারীরিক(বৈজ্ঞানিক) উপকারিতা।দৈনিক পাঁচবার নামাজের জন্য অজু করলে শরীরে নির্ধারিত অংগের সকল ধুলো ময়লা পরিষ্কার হয় এতে রোগ জীবানু থেকে রক্ষা পেয়ে রোগাক্রান্ত হওয়া থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।

ইবাদত কি ও কেনঃ
******************
‘ইবাদাত শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো:- চূড়ান্ত বিনয়, আনুগত্য ও বশ্যতা।

শারী‘আতের পরিভাষায়:-
প্রকাশ্য কিংবা গোপনীয় যতসব কথা ও কাজ আল্লাহ ভালোবাসেন ও পছন্দ করেন, সে সবের একটি সামষ্টিক নাম হলো ‘ইবাদাত।
তাই যতসব কথা-বার্তা ও কাজ-কর্মকে আল্লাহ পছন্দ করেন,
যেমন:-
সালাত (নামায) ক্বায়িম করা, সিয়াম (রোযা) পালন করা, ক্বোরবানী, নয্‌র-মানত প্রদান করা, সাদাক্বাহ, যাকাত প্রদান করা, আল্লাহ্‌র নিকট প্রার্থনা (দু‘আ) করা, আল্লাহ্‌কে ডাকা, আল্লাহ্‌র প্রতি ভয় ও আশা পোষণ করা, আল্লাহ্‌র উপর ভরসা করা, আল্লাহ্‌র তাছবীহ্‌ (মহিমা), তাহ্‌মীদ (প্রশংসা), তাকবীর (মহত্ব), তাহ্‌লীল (আল্লাহ্‌র একত্ব) বর্ণনা করা, ক্বোরআনে কারীম তিলাওয়াত করা, ক্বোরআন ও ছুন্নাহ্‌তে বর্ণিত ও নির্দেশিত দু‘আ ও যিকর-আযকার করা, রাছূলের প্রতি দূরুদ পাঠ করা ইত্যাদি, এ সব প্রতিটি কাজ হলো একেকটি ‘ইবাদাত।
রাছূলের (সাঃ) অনুসৃত ও প্রদর্শিত পন্থানুযায়ী একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীনের উদ্দেশ্যে, তাঁরই (আল্লাহ্‌র) সন্তুষ্টি লাভের নিমিত্তে, তাঁর (আল্লাহ্‌র) প্রতি শ্রদ্ধাপূর্ণ ভয় ও সর্বোচ্চ ভালোবাসা নিয়ে, তাঁর প্রতি পূর্ণ বশ্যতা ও আনুগত্য প্রদর্শন পূর্বক তাঁর (আল্লাহ্‌র) মহত্বের সম্মুখে অবনত মস্তকে চূড়ান্ত বিনয়ের সাথে আল্লাহ্‌র নিকট উত্তম প্রতিদান লাভের আগ্রহ ও সুদৃঢ় আশা নিয়ে উপরোক্ত যে কোন কর্ম সম্পাদন করাকে আল্লাহ্‌র ‘ইবাদাত বলা হয়।
যেসব ইবাদতের জন্য অজু বাধ্যতামূলক তার মধ্যে নামাজ প্রথম ও প্রধান। অন্যান্য ইবাদতের ক্ষেত্রে অজুর বাধ্যবাধকতায় কিছু বিশেষ ছাড় রয়েছে।
নামাজের জন্য শুধু শরীর পাকই যথেষ্ট নয়।প্রয়োজন দেহ,মন,পোশাক,নামাজের স্থান সব কিছুর পবিত্রতা ও মনের ঐকান্তিক একাগ্রতার সাথে চূড়ান্ত বিনয়, আনুগত্য ও বশ্যতা স্বীকার।এর যেকোন একটির অভাব ইবাদতের অপূর্ণতা এনে দিবে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে বায়ু ত্যাগে অজুর কি প্রয়োজন?
আগেই বলেছি একাগ্রতা ইবাদতের অন্যতম শর্ত। এখন আপনি নামাজে দাঁড়ালেন আর এসময় বিভিন্ন পাশ থেকে ভুটভাট বায়ু ছাড়ছে, পরিবেশ কেমন হবে? একাগ্রতা থাকবে নাকি পরিবেশ নষ্ট হবে?
একটা জাগতিক উদাহরণ দিচ্ছি--
ধরেন আপনি যদি কোন অফিসে চাকরি করেন সেই অফিসে আপনার বসের সামনে বসে আছেন তখন বায়ু নির্গমন করতে পারবেন? সেটা কেমন দেখাবে?
অফিস বাদ দেন!! কয়েকজন বসে আছেন- এ অবস্থায় বায়ু ত্যাগ কেমন লাগবে?
তাহলে ভেবে দেখুন আপনার প্রতিপালক, মহাবিশ্বের মালিকের সামনে দাঁড়াচ্ছেন ইবাদতের জন্য আর ভুট- ভাট বায়ু ত্যাগ করছেন !!! কেমন লাগবে বিষয়টা?
ইবাদতের একাগ্রতা কি আসবে নাকি পরিবেশ নষ্ট হবে?
স্বাভাবিকভাবে একাগ্রতা ও পরিবেশ উভয়ই নষ্ট হবে।
মহান রব সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাবান! তিনি যা কিছুরই নির্দেশ দেন তা তার বান্দার জন্য মঙ্গলজনক ও কল্যানকর। তিনি কোন বোঝা তার বান্দার উপর চাপিয়ে দেননা।
এজন্যই নামাজের সময় বায়ু নির্গত হওয়ার ব্যাপারে কিছু নির্দেশনা রয়েছে।
তা হচ্ছে-
যদি নামাজে শব্দ ও গন্ধ বিহীন বায়ু নির্গত হয় এবং তা নির্গমনকারীর সন্দেহ হয় কিন্তু নিশ্চিত না হয় তবে সন্দেহের মধ্যে নামাজ ত্যাগ না করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া মাজুর ব্যাক্তি যিনি বার বার বায়ু ত্যাগের সমস্যায় ভোগছেন তিনি এক অজুতেই নামাজ পড়বেন যদি নামাজে বায়ু নির্গত হয় তবুও।
সুতরাং বলতে পারি ইবাদতের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব অনুধাবন ও একাগ্রচিত্তে ইবাদতে মনোনিবেশ করার জন্যই আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিন বায়ু নির্গত হলে অজুর নির্দেশ দিয়েছেন অন্য কোন কারনে নয়।

এবার আসেন বিজ্ঞান হতে ব্যাখ্যা করি কারন বিজ্ঞানের ছাত্ররা নাস্তিক না হলেও কলা বিজ্ঞানের ছাত্ররা বিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে নাস্তিকতা করে যদিও তারা নিজেরাই বিজ্ঞান বুঝে না তবুও বিজ্ঞান হতেই বিস্তারিত বলছি।

পায়ু পথে নির্গত বায়ু নিয়ে যেহেতু বিতর্ক সেহেতু বায়ুর ভৌত বিজ্ঞান নিয়েই কিছু কথা বলি।বায়বীয় পদার্থ একটি নির্দ্দিষ্ট তাপ, চাপ ও ঘনত্বে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য বজায় রাখে। যদি কোনো বায়বীয় পদার্থের এই তাপ, চাপ, ঘনত্ব পরিবর্তন করা হয় তাইলে তার স্বকীয়তা পরিবর্তন করে, এমনকি একটি নিয়ামক পরিবর্তন করলেও স্বকীয়তা পরিবর্তন করে।

উদাহরন-১:
আপনি যদি একটি জ্বলন্ত দিয়াশলাই কাঠি গ্যাসের চুলার নিকট রেখে চাবি অন কটেন তাইলে ধপ করে আগুন জ্বলবে। কিন্তু দিয়াশলাই কাঠি যত দূরে নিবেন ততই আগুন জ্বলতে সময় লাগবে এবং একটি নির্দিষ্ট দূরুত্বে জলন্ত কাঠি সরিয়ে নিলে গ্যাসে আর আগুন ধরবে না কারন একটি নির্দিষ্ট দূরুত্বের বাহিটে গ্যাস এর চাপ ও ঘনত্ব এত কমে যে তার আর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য বজায় রাখতে পাটে না।

উদাহরন-২:
আপনি আপনার বডিস্প্রে কাপরের খুব নিকটে স্প্রে করলে দেখবেন কাপড়টি ভিজে যায় এবং একটু পরই তা এমনি এমনি শুকিয়ে যায়। শুকিয়ে যাওয়ার পর আর এই স্প্রের আর বৈশিষ্ট্য থাকে না।

উদাহরন-৩:
আপনি অর্ধেক গ্যাসে পূর্ন দিয়াশ লাইটে দেখবেন নীচের অংশ তরল আর উপরের অংশ খালি, আর ঐ খালি অংশ আসলে খালি নয় আরং এখানেও গ্যাস থাকে কিন্তু ঘনত্ব কম থাকে। গ্যাস কমতে কমতে এক সময় তরল অংশ শেষ হওয়ার পরও গ্যাস বের হয় কিছুক্ষণ।  তার পর চাপ কমে গেলে যে গয়াস বের হয় তাতে আর আগুন ধরে না কারন তখন আর গ্যাসের বৈশিষ্ট্য থাকে না।

ঠিক তেমনি আমাদের পেটের ভিতরের নাপাক বস্তু হতে যে বায়ু নির্গত হয় তা পায়ুপথ দিয়ে বপর হওয়ার সময় তার নিজস্ব নাপাকী বৈশিষ্ট্য ধরে রাখে এবং খুব অল্প সময়ের জন্য পায়ুপথের মুখ ও নিকটস্থ কাপড় চোপড় নাপাক করে ফেলে কিন্তু খানিকক্ষণ পরই উদ্বায়ী স্বভাবের কারনে পেট হতে নির্গত বায়ু আবার উধাও গয়ে যায় এবং ঐস্থান এমনি এমনি নাপাক মুক্ত হয়ে যায়। তাই অজু করার সময় আর পুনরা ঐ স্থান ধৌত করতে হয় না। ওযু করতে হয় অল্প সময়ে যে নাপাকী ওযু নষ্ট করে তার জন্য।
আশা করি উত্তরটি পেয়েছেন।




বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

ইসকন একটি কাল্ট সংগঠন

 

ইসকন একটা কাল্ট সংগঠন।এরা জোর জবরদস্তি খাটিয়ে, লোকের মগজ ধোলাই করে নিজেদের দলে ভেরায়।ইসকন শুধু ইসলামের জন্যে নয় মূলধারার হিন্দুদের জন্যেও ক্ষতিকর। আমরা প্রকৃত হিন্দুরা এদের হিন্দু বলেই মনে করি না।

এরা একগুঁয়ে এবং আজ পর্যন্ত হাজার হাজার বাবা-মায়ের কোল খালি করে জোর করে ছেলে-মেয়েদের ইসকনে ঢুকিয়েছে। ছেলে ইসকনের সঙ্গে যুক্ত হলে পিতামাতার কাছ থেকে ছেলেকে বঞ্চিত করে ইসকনেররা , সেই মায়ের হাতের রান্না টুকু খেতে পাবে না।

একবার এদের পাল্লায় পড়লে বেরিয়ে আসা খুবই কঠিন।বেরিয়ে আসতে গেলে ভয় দেখায়, নির্যাতন করে। কারুর জাগতিক কাজকর্মে অগ্রগতি দেখলেই এদের মাথা খারাপ হয়ে যায়, এরা যেভাবে পারে তাকে মগজ ধোলাই করে।

এদের বাংলাদেশে নিষিদ্ধ করুন।



ইসলাম ও তরবারির সম্পর্ক

 "ইসলাম ও তরবারির সম্পর্ক"





আজকাল ইসলাম বিরোধিতা করার জন্য ইসলাম বিদ্বেষীরা ইসলাম তরবারির জোরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে বলে মানব সমাজে প্রোপাগান্ডা চালায়। আবার মুসলমানরা ইসলাম বিদ্বেষীদের প্রপাগান্ডাকে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার মত অস্বীকার করতে গিয়ে ইসলাম ও তরবারির সম্পর্কের মর্মার্থ না বুঝে ইসলামের সাথে তরবারির সম্পর্ক নাই বলে প্রচার করে। আসুন ইসলামের সাথে তরবারির কি সম্পর্ক তা আজ জানা যাক।

আমার এই প্রবন্ধ বুঝার আগে ইমান ও কালেমার অর্থটা একটু আগে মনে করিয়ে দিতে চাই, তা না হলে ভুল বুঝাবুঝির সমূহ সম্ভাবনা আছে।

আমরা জানি ঈমান আনায়নের মাধ্যমে ইসলামে দাখিল হয় মানুষ। আর ঈমান আনায়ন করে কালেমার মাধ্যমে। 

আমাদের কালেমা হলো ' লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ।  এখানে দেখুন কালেমায় লা+ইলাহা+ ইল্লাল্লাহু +মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ। 


১। লা মানে নাই। অর্থাদ দুনিয়ার সব কিছু অস্বীকার করা।

২। ইলাহ, এটা পরে আলোচনা করব।

৩। ইল্লাল্লাহু,  মানে আল্লাহ ছাড়া।  মানে হলো একমাত্র আল্লাহ ছাড়া বাকী সব ইলাহকে(পরের আলোচনায় ইলাহ বুঝানো হবে) বাতিল ঘোষনা করা।

৪। এখানে বলা হয়েছে শুধু মাত্র হযরত মুুহাম্মদ সা: এর বর্নিত, পালনকৃত, আদেশ কৃত মত ও পথ অনুসারেই। বাকী পথে এই ইলাহকে মেনে নেওয়ার নামও ইমান নয়। 

আসুন "ইলাহ" মানে কি জানা যাক। ইলাহ এক অর্থে আল্লাহকে বুঝানো। এই অর্থ বিস্তৃত করলে বুঝা যায় ইলাহ মানে শুধু সৃষ্টি কর্তা আল্লাহ কে মেনে নেওয়ার নামই নয়। এখানে মহা বিশ্বের স্রষ্টা আল্লাহ তা'লার জারি কৃত সকল নিয়ম কানুন মেনে নেওয়ার কথাই বুঝানো হয়েছে।

আমার বলতে বা মানুষের তৈরী সকল কিছুই অস্বীকার করে একমাত্র আল্লাহর দেওয়া বিধিবিধানকে নি:সংকোচে মেনে নেওয়াই বুঝানো হয় আর সেই সাথে বাকী সকল বিধানকে অস্বীকারের কথাই বুঝায়। এ অর্থে আত্মসমর্পণ বুঝায়।

আবার মানুষের তৈরী বিধান অস্বীকারের মানে হলো মানুষের তৈরী আইন, মানুষের তৈরী জীবন ব্যবস্থা, মানুষের তৈরী অর্থ ব্যবস্থা, মানুষের তৈরী রাষ্ট্র ব্যবস্থা অস্বীকারের নামই হলো ঈমান এবং এসকল ব্যবস্থাকে অস্বীকার করে আল্লাহর তৈরী বিধান মেনে চলার নামই ইসলাম।

 ইসলাম এর অর্থ বলতে কেউ বলে শান্তি আবার কেউ বলে আত্মসমর্পণ। শান্তি অথবা আত্মসমর্পন এই দুটি আলাদা আলাদা অর্থ যদি ধরা হয় তাইলে এখানে তরবারির কোন সম্পর্ক কি থাকে?  থাকে না, আর তাই এই অর্থ আলাদা আলাদা ধরে অনেকে বলে ইসলামের সাথে তরবারির কোন সম্পর্ক নাই।

কিন্তু ইসলামের আসল অর্থ হলো লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ, এই বাক্যকে মেনে নিয়ে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পনের মাধ্যমে মানুষের তৈরী সকল বিধিবিধানকে সমূলে উৎপাটনের মাধ্যমে আল্লাহর দেওয়া বিধান মতে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও এই শান্তি বজায় রাখার নাম ইসলাম।

আর আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ পূর্বক ইসলামের শান্তি শুধু মুসলমানের জন্যই প্রতিষ্ঠিত করা নয়, বরং আল্লাহর সৃষ্টি সকল প্রানী, সকল মানুষ, সকল জীবের বেলায় প্রজোয্য। আর এটার নাম ইসলামের ইনসাফ। ইসলাম ও ইনসাফ একই বৃক্ষের অংশ, একটা মূল হলে অন্যটা কান্ড। এই ইনসাফ মানুষের স্বাভাবিক দৃষ্টির বাইরের জীবানু হতে বৃহৎ নীল তিমির বেলায়ও প্রয়োজনে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা।


এবার আসুন ইসলাম ও তরবারির সম্পর্ক কি বুঝাই।

আপনি কালেমা পড়ে সারা দুনিয়ায় ইসনসাফের মাধ্যমে শন্তি প্রতিষ্ঠা করবেন আর বাতিল শক্তি ঘুমিয়ে যাবে এমন নয়। বাতিল শক্তি তিলে তিলে আপনাকে পীষে মারার জন্য সর্বশক্তি প্রয়োগ করবে।  বাতিলরা জল, স্থল ও আকাশ পথে আপনাকে আক্রমন করে আপনার প্রতিষ্ঠা করা শান্তিকে ব্যহত করে বাতিলকে টিকিয়ে রাখতে চাইবে। আর তখনই আপনি তাদের বাঁধাকে প্রতিহত করে আপনার প্রতিষ্ঠা করা ইসলামের শান্তি বজায় রাখতে তরবারির ব্যবহার করতে হবে।

এই তরবারি হবে আত্মরক্ষার তরবারি, এটা হবে প্রতিরক্ষামূলক তরবারি, এই তরবারি ইসলামকে বিজয়ী রাখার তরবারি, এই তরবারি ইনসাফ প্রতিষ্ঠার তরবারি। আর এটাই জিহাদ।

মনে রাখবেন, এই জীহাদের তরবারি নাই যেখানে, ইসলাম কখনোই প্রতিষ্ঠিত হবেনা সেখানে। ইসলামের প্রচার হবে দাওয়াতের মাধ্যমে, আর ইসলামের বাঁধা ডিঙ্গাতে হবে তারবারির মাধ্যমে।

তাই বলি ইসলাম ও তরবারি (জী*হা*দ) একে অন্যের সাথে জড়িত। তরবারি ছাড়া যারা ইসলাম প্রতিষ্ঠা,ইসলামের বিজয় ও ইসলাম টিকিয়ে রাখার কথা বলে তারা হয় নিত্যান্ত মূর্খ আর না হয় মুনাফেক।


লেখক:চিকিৎসক, জার্নালিস্ট ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী।

জুলাই স্বাধীনতার সুফল কি পাব?

 বিপ্লব ২০২৪ এর সুফল কি আগের স্বাধীনতা গুলোর মতই অন্য কেউ ভোগ করবে




বাংলাদেশ নামক ভুখন্ডটির স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বের সাথে হাজার বছরের বহু চড়াই-উৎরাইয়ের ঘটনা জড়িত। কিন্তু এই স্বাধীনতা অর্জনের জন্য যেসকল বিপ্লব সংগঠিত হয়েছিলো তার প্রত্যেকটিরই সুফল বাঙ্গালীরা পুরোপুরি কখনোই ভো করতে পারে নি, কেনো যেনো বার বার তৃতীয় শক্তি তা কুক্ষিগত করে নিচ্ছে। আমি আজ ১৯৪৭,১৯৭১ এবং ১৯৭৭ এর সিপাহী জনতার বিপ্লন্বের কথা জানাবো।


১৯৪৭ এর স্বাধীনতার সুফল কে পেলোঃ
বাংলাদেশ ব্রিটিশ পরাধীনতা হতে অনেক রক্তের বিনিময়ে স্বাধীন হয়েছিলো। কিন্তু দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে ভাগ হয়ে স্বাধীন হলেও বাধীনতার পর দেখা গেলো আমাদের বাংলাদেশ নামক ভুখন্ডটির মানুষের ভাগ্যের নিয়ন্ত্রন কবচ অন্যের হাতে। মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ হিসাবে পাকিস্তান স্বাধীন হয়েছিলো, একটি ইসলামিক স্টেট গঠনের স্বার্থে তখনকার মুসলীম লীগ নেতাদের বহু ত্যাগ তিতিক্ষার ফলে স্বাধীন হওয়া ভুখন্ডটির নিয়ন্ত্রণ চলে গেলো সেকুলার শিয়া নেতা কায়েদে আলী মুহাম্মদ আলর জিন্নাহর কাছে। পূর্ব পাকিস্তানে জনসংখ্যা বেশি হওয়ার পরও জমিদার বনে গেল পশ্চিম পাকিস্তানিরা আর বাঙ্গালীকে বানালো গোলামের জাতিতে।

আমার প্রশ্ন হলো পূর্ব পাকিস্তানে শেরে বাংলা একে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও মাওলানা ভাষানীর মত নেতা থাকার পরও এ দেশের জনগনের ভাগ্য পাকিস্তানিদের হাতে তুলে দিলো কে? কিভাবে এটা হলো?

স্বাধীনতা ১৯৭১ঃ
১৯৭১ সালে বঙ্গবন্ধুর উদ্যোগে,দেশের আপাৃর জনতার অংশ গ্রহনে, মেজর জিয়াউর রহমানের আহ্বানে সবাই মিলে দেশ স্বাধীন করলো। শেখ মুজিবুর রহমান প্রচুর জনপ্রিয় লোক ছিলো। দেশ স্বাধীনের মূল ইস্যু ছিল স্বাধিকার। আমরা যেহেতু ১৯৪৭ সালে মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ হিসাবে স্বাধীন হয়ে ছিলো সেহেতু ১৯৭১ সালে স্বাধীনতার মূল লক্ষ্য ছিলো স্বাধিকার।  এই স্বাধীনতা কোন আদর্শের ভিত্তিতে হয় নি, অধিকার আদায়ের জন্য হয়ে ছিলো। কিন্তু অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় দেশ স্বাধীনের পর দেশের সংবিধানে ধর্মকেই অস্বীকার করে ধম নিরপেক্ষতা প্রবতন হলো, অথচ এদেশের ৯৯% ধর্ম প্রান হিন্দু-মুসলিম ধর্ম মিরপেক্ষতার কথা জানতোই না। 

*মুক্তির দূত শেখ মুজিবর রহমান হয়ে গেলো এক নায়ক, গনতন্ত্রের পরিবর্তে চালু হলো বাকশাল, বাক স্বাধীনতার পরিবর্তে শেখ মুজিব পরিকা বন্ধ করে দিলো, গনতন্ত্র চর্চার অপরাধে শিরাজ শিখদার নামক এক এমেিক হত্যা করলো শেখ মুজিবুর রহমান, নারী নির্যাতনের সাথে জড়িত হানাদারনপাক বাহিনীকে সরানোর পর জাতির ঘাড়ে ঝেঁকে বসলো ভারতের অমুগগ দেশীয় রক্ষী বাহিনী নামক আরেক হানাদার বাহিনী। দেশ চলে গেলো ভারতের নিয়ন্ত্রিত দালালদের হাতে। শুরু হয় শোষন, অত্যাচার, অবিচার। অবশেষে ১৯৭৫ সালে শেখ মুজিবুর রহমান নিহতের মধঢ় দিয়ে জাতি মুক্তিমপায়, কিন্তু জাতির ভাগ্য নিয়ন্ত্রণের কবচ রয়ে গেল আধিপত্যবাদি ভারতের হাতে। 

১৯৭৭ সালের সিপাহী-জনতার বিপ্লব:
শেখ সাহেবের মৃত্যুর পর জাতির ভাগ্যের সুখ বেশিদিন সহ্য হয় নি, আবার শুরু হয় জাতির ভাগ্য নিয়ে লীলা খেলা। অবশেষে মেজর জিয়াউর রহমান ক্ষমতা দখল করে বহু দলীয় গনতন্ত্র চালু করেন। পরে এই বহুদলী গনতন্ত্র চালুর পর হঠাৎ করে ভারতীয় বংশদ্ভূত হু.মু এরশাদকে দিয়ে ভারত জিয়াউর রহমান করে সরিয়ে পুতুল সরকার হিসাবে ক্ষমতা দখল করায়। এবারেও বহুদলীয় গনতন্ত্রের সুফল চলে যায় ভারতীয় দালালদের পকেটে, জাতির ভাগ্যের কন পরিবর্তন হয় নি।

বিপ্লব ২০২৪:
রক্তাক্ত জুলাই বিপ্লব ২০২৪ এর পর সাড়ে পনের বছরের দানবীয় জালিম শাসক,  চরম প্রতিশোধ পরায়ন শেখ হাসিনার স্বৈর শাসন হতে মুক্তিৃপায় দেশের মানুষ, যা হয়েছে বহু রক্তের বিনিময়ে।  এবারের স্বাধীনতার বিপ্লবের মূল উদ্দেশ্য বৈষম্যহীনতা অর্থাদ সকল স্তরে সাম্য ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা করা। এ লক্ষে অন্তর্বরতী কালীন সরকার প্রধান করা হলো বিশ্ব নন্দিত ড.ইউনুস কে। সাথে যারা এডভাইজার হিসাবে আছেন তাদের অনেকেই আছে হাসিনা সরকারের আমলে সরাসরি নির্যাতনের স্বীকার। আবার অনেকেই আছেন ২০০৬-০৭ এর কুচীলব যারা কিনা দানবীয় শাসক শেখ হাসিনাকে ক্ষমমতায় আনতে জীবন দিতেও প্রস্তুত ছিলো, কেউ কেউ আছেন সরাসরি নাতিক্য বাদের দালাল।

যার কারনে এখনও দেশে কাঙ্খিত পরিবর্তন আসে নি। মানুষ এখনও আতংকে আছে।কেননা দেশের ক্ষমতার একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হাসিনার পা চাটা গোলাম আর নাস্তিক্যবাদিদের দখলেই রয়ে গেছে। হাসিনার সাজানো প্রশসনের অধীনেই সরকার কাজ করতে হচ্ছে।

আন্দোলনকারী ছাত্ররা বলছে এটা আমাদের নতুন স্বাধীনতা। এই নতুন স্বাধীনতার যুদ্ধের বীর নায়কদের নিকট কিছু প্রশ্নঃ
১। এই স্বাধীনতা কি শুধু মাত্র হাসিনাকে সরানোর বিপ্লবই ছিলো?

২। এই স্বাধীনতা কি শুধু হতাহতদের বিচারের জন্যই।

৩। নতুন স্বাধীনতা কি শুধু দপয়াল লিখনের জন্যই ছিলো?

৪। এ নতুন বাংলাদেশ কি আগের সংবিধানের আলোকে চলার জন্যই অর্জন করেছেন? যদি তাই হয় তা হলে যে সংবিধান দিয়ে হাসিনা দেশকে ভারতে অঙ্গ রাজ্য ও জাতিকে গোলামের জাতিতে পরিনত করে ছিলো সে সংবিধান দিয়ে কি বৈষম্যহীন ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন সম্ভব?

৫। উপরের ৪ নং প্রশ্নের উত্তর যদি না হয়, তাইলে আরেক প্রশ্ন হলো যে সংবিধানের বিরোদ্ধে গিয়ে বিপ্লব করলেন সে সংবিধান বহাল রেখে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা সম্ভব?

৬। বৈষম্য হীন ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করার জন্য মধ্যবর্তী সরকারে ১/১১ এর কুশীলবরা কেনো? এটার উদ্দেশ্য বিঝার ক্ষমতা কি কারো নাই?

এজন্যই মনে বার বার প্রশ্ন আসে আমাদের রক্তে কেনা বিপ্লব ২০২৪ কি আগের তিনটি বিপ্লবের ভাগ্য বরন করতে হবে?

বাংলাদেশের ইসলাম

 

বাংলাদেশের আলেম, ইসলাম ও বাস্তবতা




বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি আপনি কেউকে জিজ্ঞেস করেন, আলেম কাকে বলে?

শতকরা ৯৯ জন উত্তর দিবেন, আলেম মানে তো হুজুর,মাদরাসায় পড়ুয়া, মাথায় বড় পাগড়ী,লম্বা কোর্তা ওয়ালারাই আলেম!


বলা বাহুল্য উত্তরটি নিঃসন্দেহে ভুল! মাদ্রাসায় পড়লেন, দাঁড়ি টুপি পড়লেই কেউ আলেম হয়ে যান না। আলেম মানে হচ্ছে জ্ঞানী। যিনি কোন বিষয়ে সঠিক ও সুক্ষ জ্ঞান ধারন করেন তিনিই আলেম। তবে শব্দিক অর্থ দিয়ে আলেমের পরিচয় সম্ভব না, পারিভাষিক অর্থ দ্বারা আলেমের পরিচয় পাওয়া যায়। আলেম হবার জন্য কারো মাদ্রাসায় পড়া জরুরী নয়। ধার্মিক প্রেক্ষাপটে বিশেষ করে ইসলামি প্রেক্ষাপটে যে ব্যক্তি কোরআন, হাদীস, ইজমা কিয়াস ও অন্যান্য বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম হবেন এবং যিনি পরিবর্তিত সমাজ ব্যবস্থার সাথে প্রচলিত দ্বীনের সঠিক সমন্বয় ঘটানোর ব্যাপারে নিজ অবস্থানকে যৌক্তিকভাবে প্রমান করতে পারবেন, তিনিই একজন ধর্মীয় আলেম।বর্তমানে আমাদের দেশে প্রকৃত কোন ধর্মীয় আলেম আছে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। অন্য ধর্মের কথা জানি না, তবে মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ইসলামিক আলেমদের সংখ্যা দিন দিন আশংকাজনক হারে কমে যাচ্ছে।


বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যানে যে সকল তথাকথিত আলেম বিখ্যাত হয়েছেন বা শ্রোতা প্রিয়তা পেয়েছেন দুই একজন বাদ দিয়ে অধিকাংশ বিভিন্ন দল, আকীদা বা মতে বিভক্ত। সেই সাথে আছে আত্ম অহংকার, ক্ষমতার দাপট, একে অন্যের সাথে রেষারেষি ও গীবত। অথচ একজন প্রকৃত আলেম কখনই অহংকারী হবেন না। তিনি কখনই নিজের ক্ষমতার কথা, নিজের প্রভাবের কথা মানুষকে জোর গলায় জানাবেন না। কিন্তু আমরা ইউটিউব সহ বাস্তবে দেখেছি আমাদের বিখ্যাত সব আলেমরা কি পরিমান অহংকারী, গোঁয়াী, মূর্খ, অশালীন, অশ্লীল কথাবার্তায় পারদর্শী, ক্ষমতা প্রয়োগ করতে চায়, নিজ সুবিধার কারনে কোরান হাদীস ব্যবহার করে। আমাদের দেশের মানুষ এই সব জেনে বুঝেও এদেরকে অনুসরন করে। কারন অলস বাংলাদেশী মুসলমানরা নিজে কোরআন হাদীস পড়বে না, বুঝবে না। তারা শটকার্ট প্রিয়। অন্যের লেজ না ধরলে আমরা সাহস পাই না। অবশ্য তাদেরকে ধন্যবাদ কারন এত লেজ ধরে টানাটানির কারনে অনেক কিছুই দৃশ্যমান হচ্ছে।


তবে ঢালাও ভাবে দায়ী কছি না, আলেম-উলামারাও মানুষ, তারা ফেরেশতা নন। সুতরাং তাদের দ্বারা অন্যায় হতে পারে না, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। সুতরাং আলেমদের থেকে কোনো অপরাধ প্রকাশ পেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এমতাবস্থায় অপরাধীকে আড়াল না করে তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো দরকার। এ কথা অনস্বীকার্য যে, আলেম সমাজ আমাদের সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এদেশে ইসলাম আবির্ভাবের সময় থেকেই কথিত আলেম সমাজের আবির্ভাব। এদেশে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকেই আলেম সমাজ সামাজিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

ব্রিটিশ আমলে প্রথম একশ বছর আলেম সমাজই ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের কার্যকর ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে শাহ ওয়ালিউল্লাহ (রহ.)-এর প্রবর্তিত আন্দোলন, সৈয়দ আহমদ বেরেলভী (রহ.) ও শাহ ইসমাঈল (রহ.)-এর আন্দোলন, বাংলায় তিতুমীর (রহ.) ও হাজী শরিয়তুল্লাহ (রহ.) আন্দোলন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। ধর্মীয়-সামাজিক ক্ষেত্রেও এসব আন্দোলন আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। তবে ফেনীর সোনাগাজীতে একটি মাদ্রাসায় আগুনে পুড়িয়ে নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার ঘটনাপ্রবাহ চারটি বিষয় সামনে এনেছে: এক নারীর যৌন নিপীড়ন, মাদ্রাসার ভেতরে অধ্যক্ষের দ্বারা ছাত্রীর যৌন নিপীড়ন, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের দায়িত্বহীন ভূমিকা এবং স্থানীয় রাজনীতির কলুষিত বৃত্তচক্র যদিও অধ্যক্ষ পরে নির্দোষ প্রমানিত হয়েছে। এর প্রতিটি বিষয় আলাদাভাবে আমাদের মনোযোগ দাবি করে। সম্প্রতি দু’জন মাদরাসার শিক্ষককে একাধিক শিক্ষার্থী ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অহরহ এরকম ঘটনা ঘটেই চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক অবস্থায় তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েচ্ছেন। জয়পুরহাট শহরের আরাম নগর হাফেজিয়া মাদ্রসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক তার অপকর্মের খবর জানাজানি হওয়ার পর মাদ্রাসা বন্ধ করে পালিয়ে গেছেন। এগুলো নিয়ে বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে সংগত কারণেই উদ্বেগ ও আশঙ্কা আছে। সমাজের বড় একটি অংশের মধ্যে যদি মনুষত্বের চেয়ে পশুত্বের পরিমাণ বেশি দেখা যায়, তাহলে ওই সমাজের নাগরিকদের উদ্বেগ উৎকণ্ঠা এমনিতেই বেড়ে যায়।


শীতকালে বাংলাদেশে ওয়াজ মাহফিল হয়। মানুষ ধর্মীয় নানা বিষয়ে জানতে পারেন, আলোচনা সভা হয়। এই ওয়াজ হচ্ছে গ্রামীন অঞ্চলে অন্যতম বিনোদন, ধর্মীয় দোহাই দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি।  ছোট ছোট শিশুরা ভিক্ষা করে টাকা আদায় করে মাহফিলের আয়োজন করে আর ওয়ায়েজিন সেই ভিক্ষার টাকা দিয়ে নিজের উদর পূর্তি করে, অথচ ইসলামের দাওয়াতের বিনিময়ে অর্থ গ্রহন সম্পূর্ণ হারাম,তার পরও কথিত মাহফিল ব্যবসায়ী আলেম গুলো এই হারাম ব্যবসাটাই চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশে বর্তমানে ওয়াজের হট টপিক হচ্ছে - কোন হুজুর কে কি বলেছে, সেটার পক্ষে বিপক্ষে কথা বলা, অন্যের গীবত করা। দুই, আত্ম অহংকার করা, নিজের প্রচারনা করা, নিজের ক্ষমতা জাহির করা, কে কত ওয়াজ করেছেন, কিভাবে গিয়েছেন ইত্যাদি।


যে কয়টা ওয়াজে আমি গিয়েছে বা দেখেছি বা শুনেছি প্রায় সব ওয়াজের বক্তাদের কথা শুনলে মনে হয়- দেশে আন্তর্জাতিক চিৎকার প্রতিযোগিতা চলছে কিংবা তাদেরকে বলা হইছে ওয়ার ক্রাই বা প্রতিপক্ষের মনে ভয় ধরার জন্য যুদ্ধকালীন চিৎকার দেয়ার জন্য। ইয়া আল্লাহ! উনাদের কে বুঝাবে - ইসলাম শান্তির ধর্ম।


গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ্য করে আসছি, আমাদের মাদ্রাসাগুলোতে শিশু নির্যাতন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ছেলে-মেয়ে কারো রক্ষা নাই। কয়েকদিন আগে এক শিশু বালককে যৌন নির্যাতনের কারনে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিলো। আজকে গাজীপুরের কালীগঞ্জে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের থাকার কক্ষের ওয়ারড্রোব থেকে চার বছরের এক ছেলে শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


আমরা কি কেউ বলতে পারি, শুধুমাত্র মাদ্রাসায় কেন শিশুকামী এই সব জানোয়ারদের দেখা যায়? কেন এই চুড়ান্ত ভয়াবহতা, বিকৃতি? এর জবাব অনেকেরই ভালো লাগবে না। দেশের অনেক মাদ্রাসা আছে যেখানে নুন্যতম মানবিক সুযোগ সুবিধা নাই। দরিদ্র এতিম বাচ্চাদের নিয়ে চলছে অমানবিকতার চুড়ান্ত। পড়া শিখানোর নামে, মুখস্ত করার নামে চলে ভয়াবহ শারিরীক নির্যাতন। এই সব নির্যাতনের কোন কোন পর্যায়ে তা রূপ নেয় পাশবিক যৌন নির্যাতনেও। যে প্রচন্ড মানসিক চাপে এই ছোট বাচ্চাগুলোর শৈশব কাটে তাতে বড় হয়ে তাদের মানসিক বিকৃতি ঘটা অস্বাভাবিক কিছু না। বরং সেটাই যৌক্তিক সম্ভবনা। মহিলা মাদরাসা গুলার অবথা একই, এদের উপরে আমি একটা স্টাডি প্রকাশ করেছিলাম গত মার্চে, ওখানে মাদরাসার মেয়েদের উপর কি পরিমান নির্যাতন হয় তা দেখানো হয়েছে অপারেশন ব্ল্যাক নাইফ নামে। ইদানীং আবার মাদরাসার হিজাবী মেয়েরা বোরকার ফাঁকে দুটি হরিনীর চোখ দেখিয়ে বিভিন্ন আেত্তিকর ভঙ্গীতে ছবি ও ভিডিও আপলোড করে বলে একজন দ্বীনদার জীবন সঙ্গী চায়, কি আশ্চর্য!!!  এটা তো তার পরিবারের কাজ, ফেসবুক তো ইলুমিনাতি রুপের শয়তানদের তৈরী যা নারীদের ঘরের খবর মানুষের কাছে প্রকাশ করে দেয়। কত বড়"বাংলাদেশের আলেম ও ইসলামি শিক্ষার বাস্তবতা"।


দেশের আলেম-উলামা, মাদরাসার শিক্ষক, মসজিদের ইমাম ও খানকার পীরদের প্রতি সাধারণ মানুষের অপরিসীম শ্রদ্ধা রয়েছে। আমিও তাদের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রাখি। তারপরও কিছু লেবাসধারীদের শিশু নির্যাতন, স্ত্রী নির্যাতন ও যৌন হয়রানিসহ নানা অপরাধের কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হন গোটা আলেম সমাজ। বলতেও লজ্জা লাগে, ভাবলেও ঘৃণা হয়। মাদরাসায় শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের বিষয়টি মোটেও নতুন নয়। যখন শুধু ছেলে মাদরাসা ছিল তখন অনেক ছেলে নির্যাতনের শিকার হতো আর এখন মেয়েরা দানবরূপী শিক্ষকের যৌন লালসার শিকার হচ্ছে। বিষয়টি খুবই লজ্জার ও ঘৃণার। যেহেতু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ জাতীয় কেলেঙ্কারির ঘটনা দিন দিন বাড়ছে, এটা থেকে পরিত্রাণের জন্য নেতৃস্থানীয় আলেমদের ভাবতে হবে। নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ। এখনই এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষের আস্থা হারিয়ে যাবে, ভরসার জায়গাটুকুও শেষ হয়ে যাবে।


আফসোসের বিষয়, এই বিকৃত অনাচার নিয়ে আমাদের হুজুররা বা আলেমরা তেমন সোচ্চার নন। আজকে আপনি অনুগ্রহ করে ইউটিউবে একটু সার্চ দিয়ে দেখবেন দেশের মাদ্রাসায় এই ধরনের ঘটনার ব্যাপারে কয়টি ওয়াজ পান, প্রকাশ্যে কে কি বলেছেন। আমি হয়ত খারাপ মানুষ, শয়তান ( এই লেখা পড়লে প্রিয় হুজুররা আমাকে হয়ত এই নামেই ডাকবেন) তাই হুজুরদের ভালো কথা খুঁজে পাই নি, খুঁজে পেয়েছি মাদ্রাসার সাথে বাংলা ও ইংলিশ মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে অসুস্থ তুলনা। আমাদের আলেমরা, আমাদের হুজুররা বাংলা বা ইংরেজি মাধ্যমের খারাপ দিক দিয়ে মাদ্রাসায় সংঘটিত ভয়াবহ অন্যায়ের তুলনা করে ভালো মন্দের বিচার করেন। অথচ একটা খারাপ বা অন্যায় দিয়ে আরেকটি খারাপ বা অন্যায় জাস্টিফাইড হয় না। এটাই প্রকৃত আলেম আর তথাকথিত আলেমদের মধ্যে পার্থক্য। আমি খুব আশাবাদী মানুষ, আমি বিশ্বাস করি, নিশ্চয় আমাদের কোন না কোন আলেম, এই বিষয়ে ওয়াজ করেছেন, কথা বলেছেন, কালোকে কালো আর সাদাকে সাদা বলতে তিনি কোন ভয় করেন নি, দ্বিধা করেন নি।


আরেকটি বিষয় - বাংলাদশে ধর্ম চর্চা এখনও খুব প্রাগৈতিহাসিক পর্যায়ে আছে। একটা প্রচন্ড কামুম, বর্বর, হিংসুট এবং জেলি ফিস মস্তিস্কের জাতিকে ধর্ম দিয়ে জোর করে অবদমিত করে রাখা হয়েছে। ফলে হাজার হাজার চটি পেইজ, পর্ণগ্রাফিক পেইজে দেখবেন সব কিছু দেখে শুনে ইসলামের দাওয়াত দেয়া হয়, লাইক দিয়ে কাউন্ট করা হয় কে আল্লাহকে ভালোবাসে, কে নবীকে ভালোবাসে। ধার্মিকতার নামে কি প্রচন্ড বিকৃতি! পার্ভাসন কোথায় গেছে যে- চটি পেইজে গিয়ে সৃষ্টিকর্তাকে ভালোবেসে লাইক দিয়ে আসতে হবে।


যাইহোক, যদি আপনি ধার্মিক হন, তাহলে মনে রাখবেন - যে জাতির আলেমমা মিথ্যে নিয়ে পড়ে আছে, গীবত নিয়ে পড়ে আছে, অহংকার করে, মিথ্যে অপব্যাখ্যা করে কোরান ও সুন্নাহের সেই জাতীর অবস্থা ভয়াবহ হতে যাচ্ছে। আর যদি অধার্মিক হন তাহলে মনে রাখবেন প্রকৃতির বিচার বলে একটা ব্যাপার আছে। এই বিচার খুবই সুক্ষ এবং ভয়াবহ!


দেশের আলেম-উলামা, মাদরাসার শিক্ষক, মসজিদের ইমাম ও খানকার পীরদের প্রতি সাধারণ মানুষের অপরিসীম শ্রদ্ধা রয়েছে। আমিও তাদের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রাখি। তারপরও কিছু লেবাসধারীদের শিশু নির্যাতন, স্ত্রী নির্যাতন ও যৌন হয়রানিসহ নানা অপরাধের কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হন গোটা আলেম সমাজ। বলতেও লজ্জা লাগে, ভাবলেও ঘৃণা হয়। মাদরাসায় শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের বিষয়টি মোটেও নতুন নয়। যখন শুধু ছেলে মাদরাসা ছিল তখন অনেক ছেলে নির্যাতনের শিকার হতো আর এখন মেয়েরা দানবরূপী শিক্ষকের যৌন লালসার শিকার হচ্ছে। বিষয়টি খুবই লজ্জার ও ঘৃণার। যেহেতু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ জাতীয় কেলেঙ্কারির ঘটনা দিন দিন বাড়ছে, এটা থেকে পরিত্রাণের জন্য নেতৃস্থানীয় আলেমদের ভাবতে হবে। নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ। এখনই এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষের আস্থা হারিয়ে যাবে, ভরসার জায়গাটুকুও শেষ হয়ে যাবে।


আফসোসের বিষয়, এই বিকৃত অনাচার নিয়ে আমাদের হুজুররা বা আলেমরা তেমন সোচ্চার নন। আজকে আপনি অনুগ্রহ করে ইউটিউবে একটু সার্চ দিয়ে দেখবেন দেশের মাদ্রাসায় এই ধরনের ঘটনার ব্যাপারে কয়টি ওয়াজ পান, প্রকাশ্যে কে কি বলেছেন। আমি হয়ত খারাপ মানুষ, শয়তান ( এই লেখা পড়লে প্রিয় হুজুররা আমাকে হয়ত এই নামেই ডাকবেন) তাই হুজুরদের ভালো কথা খুঁজে পাই নি, খুঁজে পেয়েছি মাদ্রাসার সাথে বাংলা ও ইংলিশ মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে অসুস্থ তুলনা। আমাদের আলেমরা, আমাদের হুজুররা বাংলা বা ইংরেজি মাধ্যমের খারাপ দিক দিয়ে মাদ্রাসায় সংঘটিত ভয়াবহ অন্যায়ের তুলনা করে ভালো মন্দের বিচার করেন। অথচ একটা খারাপ বা অন্যায় দিয়ে আরেকটি খারাপ বা অন্যায় জাস্টিফাইড হয় না। এটাই প্রকৃত আলেম আর তথাকথিত আলেমদের মধ্যে পার্থক্য। আমি খুব আশাবাদী মানুষ, আমি বিশ্বাস করি, নিশ্চয় আমাদের কোন না কোন আলেম, এই বিষয়ে ওয়াজ করেছেন, কথা বলেছেন, কালোকে কালো আর সাদাকে সাদা বলতে তিনি কোন ভয় করেন নি, দ্বিধা করেন নি।


আরেকটি বিষয় - বাংলাদশে ধর্ম চর্চা এখনও খুব প্রাগৈতিহাসিক পর্যায়ে আছে। একটা প্রচন্ড কামুম, বর্বর, হিংসুট এবং জেলি ফিস মস্তিস্কের জাতিকে ধর্ম দিয়ে জোর করে অবদমিত করে রাখা হয়েছে। ফলে হাজার হাজার চটি পেইজ, পর্ণগ্রাফিক পেইজে দেখবেন সব কিছু দেখে শুনে ইসলামের দাওয়াত দেয়া হয়, লাইক দিয়ে কাউন্ট করা হয় কে আল্লাহকে ভালোবাসে, কে নবীকে ভালোবাসে। ধার্মিকতার নামে কি প্রচন্ড বিকৃতি! পার্ভাসন কোথায় গেছে যে- চটি পেইজে গিয়ে সৃষ্টিকর্তাকে ভালোবেসে লাইক দিয়ে আসতে হবে।


যাইহোক, যদি আপনি ধার্মিক হন, তাহলে মনে রাখবেন - যে জাতির আলেমমা মিথ্যে নিয়ে পড়ে আছে, গীবত নিয়ে পড়ে আছে, অহংকার করে, মিথ্যে অপব্যাখ্যা করে কোরান ও সুন্নাহের সেই জাতীর অবস্থা ভয়াবহ হতে যাচ্ছে। আর যদি অধার্মিক হন তাহলে মনে রাখবেন প্রকৃতির বিচার বলে একটা ব্যাপার আছে। এই বিচার খুবই সুক্ষ এবং ভয়াবহ!


ডা.বশির আহাম্মদ।

বাংলাদেশে ইসলাম ও বাস্তবতা


বাংলাদেশের আলেম, ইসলাম ও বাস্তবতা




বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে যদি আপনি কেউকে জিজ্ঞেস করেন, আলেম কাকে বলে?

শতকরা ৯৯ জন উত্তর দিবেন, আলেম মানে তো হুজুর,মাদরাসায় পড়ুয়া, মাথায় বড় পাগড়ী,লম্বা কোর্তা ওয়ালারাই আলেম!


বলা বাহুল্য উত্তরটি নিঃসন্দেহে ভুল! মাদ্রাসায় পড়লেন, দাঁড়ি টুপি পড়লেই কেউ আলেম হয়ে যান না। আলেম মানে হচ্ছে জ্ঞানী। যিনি কোন বিষয়ে সঠিক ও সুক্ষ জ্ঞান ধারন করেন তিনিই আলেম। তবে শব্দিক অর্থ দিয়ে আলেমের পরিচয় সম্ভব না, পারিভাষিক অর্থ দ্বারা আলেমের পরিচয় পাওয়া যায়। আলেম হবার জন্য কারো মাদ্রাসায় পড়া জরুরী নয়। ধার্মিক প্রেক্ষাপটে বিশেষ করে ইসলামি প্রেক্ষাপটে যে ব্যক্তি কোরআন, হাদীস, ইজমা কিয়াস ও অন্যান্য বিষয়ে দক্ষতা অর্জন করতে সক্ষম হবেন এবং যিনি পরিবর্তিত সমাজ ব্যবস্থার সাথে প্রচলিত দ্বীনের সঠিক সমন্বয় ঘটানোর ব্যাপারে নিজ অবস্থানকে যৌক্তিকভাবে প্রমান করতে পারবেন, তিনিই একজন ধর্মীয় আলেম।বর্তমানে আমাদের দেশে প্রকৃত কোন ধর্মীয় আলেম আছে কি না তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দেহ আছে। অন্য ধর্মের কথা জানি না, তবে মুসলিম প্রধান দেশ হিসেবে বাংলাদেশে ইসলামিক আলেমদের সংখ্যা দিন দিন আশংকাজনক হারে কমে যাচ্ছে।


বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের কল্যানে যে সকল তথাকথিত আলেম বিখ্যাত হয়েছেন বা শ্রোতা প্রিয়তা পেয়েছেন দুই একজন বাদ দিয়ে অধিকাংশ বিভিন্ন দল, আকীদা বা মতে বিভক্ত। সেই সাথে আছে আত্ম অহংকার, ক্ষমতার দাপট, একে অন্যের সাথে রেষারেষি ও গীবত। অথচ একজন প্রকৃত আলেম কখনই অহংকারী হবেন না। তিনি কখনই নিজের ক্ষমতার কথা, নিজের প্রভাবের কথা মানুষকে জোর গলায় জানাবেন না। কিন্তু আমরা ইউটিউব সহ বাস্তবে দেখেছি আমাদের বিখ্যাত সব আলেমরা কি পরিমান অহংকারী, গোঁয়াী, মূর্খ, অশালীন, অশ্লীল কথাবার্তায় পারদর্শী, ক্ষমতা প্রয়োগ করতে চায়, নিজ সুবিধার কারনে কোরান হাদীস ব্যবহার করে। আমাদের দেশের মানুষ এই সব জেনে বুঝেও এদেরকে অনুসরন করে। কারন অলস বাংলাদেশী মুসলমানরা নিজে কোরআন হাদীস পড়বে না, বুঝবে না। তারা শটকার্ট প্রিয়। অন্যের লেজ না ধরলে আমরা সাহস পাই না। অবশ্য তাদেরকে ধন্যবাদ কারন এত লেজ ধরে টানাটানির কারনে অনেক কিছুই দৃশ্যমান হচ্ছে।


তবে ঢালাও ভাবে দায়ী কছি না, আলেম-উলামারাও মানুষ, তারা ফেরেশতা নন। সুতরাং তাদের দ্বারা অন্যায় হতে পারে না, এটা ভাবার কোনো কারণ নেই। সুতরাং আলেমদের থেকে কোনো অপরাধ প্রকাশ পেলে অবাক হওয়ার কিছু নেই। এমতাবস্থায় অপরাধীকে আড়াল না করে তাকে বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো দরকার। এ কথা অনস্বীকার্য যে, আলেম সমাজ আমাদের সমাজের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। এদেশে ইসলাম আবির্ভাবের সময় থেকেই কথিত আলেম সমাজের আবির্ভাব। এদেশে মুসলিম শাসন প্রতিষ্ঠা হওয়ার পর থেকেই আলেম সমাজ সামাজিক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে।

ব্রিটিশ আমলে প্রথম একশ বছর আলেম সমাজই ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনের কার্যকর ভূমিকা পালন করেন। বিশেষ করে শাহ ওয়ালিউল্লাহ (রহ.)-এর প্রবর্তিত আন্দোলন, সৈয়দ আহমদ বেরেলভী (রহ.) ও শাহ ইসমাঈল (রহ.)-এর আন্দোলন, বাংলায় তিতুমীর (রহ.) ও হাজী শরিয়তুল্লাহ (রহ.) আন্দোলন ব্রিটিশবিরোধী আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। ধর্মীয়-সামাজিক ক্ষেত্রেও এসব আন্দোলন আলোড়ন সৃষ্টি করেছিলো। তবে ফেনীর সোনাগাজীতে একটি মাদ্রাসায় আগুনে পুড়িয়ে নুসরাত জাহান রাফিকে হত্যার ঘটনাপ্রবাহ চারটি বিষয় সামনে এনেছে: এক নারীর যৌন নিপীড়ন, মাদ্রাসার ভেতরে অধ্যক্ষের দ্বারা ছাত্রীর যৌন নিপীড়ন, স্থানীয় প্রশাসন ও পুলিশের দায়িত্বহীন ভূমিকা এবং স্থানীয় রাজনীতির কলুষিত বৃত্তচক্র যদিও অধ্যক্ষ পরে নির্দোষ প্রমানিত হয়েছে। এর প্রতিটি বিষয় আলাদাভাবে আমাদের মনোযোগ দাবি করে। সম্প্রতি দু’জন মাদরাসার শিক্ষককে একাধিক শিক্ষার্থী ধর্ষণ ও যৌন হয়রানির অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে এবং অহরহ এরকম ঘটনা ঘটেই চলছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর হাতে আটক অবস্থায় তারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েচ্ছেন। জয়পুরহাট শহরের আরাম নগর হাফেজিয়া মাদ্রসার এক শিক্ষকের বিরুদ্ধে ছাত্রদের যৌন নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে। অভিযুক্ত মাদ্রাসা শিক্ষক তার অপকর্মের খবর জানাজানি হওয়ার পর মাদ্রাসা বন্ধ করে পালিয়ে গেছেন। এগুলো নিয়ে বাংলাদেশের সাধারণ নাগরিকদের মধ্যে সংগত কারণেই উদ্বেগ ও আশঙ্কা আছে। সমাজের বড় একটি অংশের মধ্যে যদি মনুষত্বের চেয়ে পশুত্বের পরিমাণ বেশি দেখা যায়, তাহলে ওই সমাজের নাগরিকদের উদ্বেগ উৎকণ্ঠা এমনিতেই বেড়ে যায়।


শীতকালে বাংলাদেশে ওয়াজ মাহফিল হয়। মানুষ ধর্মীয় নানা বিষয়ে জানতে পারেন, আলোচনা সভা হয়। এই ওয়াজ হচ্ছে গ্রামীন অঞ্চলে অন্যতম বিনোদন, ধর্মীয় দোহাই দিয়ে ভিক্ষাবৃত্তি।  ছোট ছোট শিশুরা ভিক্ষা করে টাকা আদায় করে মাহফিলের আয়োজন করে আর ওয়ায়েজিন সেই ভিক্ষার টাকা দিয়ে নিজের উদর পূর্তি করে, অথচ ইসলামের দাওয়াতের বিনিময়ে অর্থ গ্রহন সম্পূর্ণ হারাম,তার পরও কথিত মাহফিল ব্যবসায়ী আলেম গুলো এই হারাম ব্যবসাটাই চালিয়ে যাচ্ছে। আমাদের দেশে বর্তমানে ওয়াজের হট টপিক হচ্ছে - কোন হুজুর কে কি বলেছে, সেটার পক্ষে বিপক্ষে কথা বলা, অন্যের গীবত করা। দুই, আত্ম অহংকার করা, নিজের প্রচারনা করা, নিজের ক্ষমতা জাহির করা, কে কত ওয়াজ করেছেন, কিভাবে গিয়েছেন ইত্যাদি।


যে কয়টা ওয়াজে আমি গিয়েছে বা দেখেছি বা শুনেছি প্রায় সব ওয়াজের বক্তাদের কথা শুনলে মনে হয়- দেশে আন্তর্জাতিক চিৎকার প্রতিযোগিতা চলছে কিংবা তাদেরকে বলা হইছে ওয়ার ক্রাই বা প্রতিপক্ষের মনে ভয় ধরার জন্য যুদ্ধকালীন চিৎকার দেয়ার জন্য। ইয়া আল্লাহ! উনাদের কে বুঝাবে - ইসলাম শান্তির ধর্ম।


গত কয়েক বছর থেকে লক্ষ্য করে আসছি, আমাদের মাদ্রাসাগুলোতে শিশু নির্যাতন ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। ছেলে-মেয়ে কারো রক্ষা নাই। কয়েকদিন আগে এক শিশু বালককে যৌন নির্যাতনের কারনে হাসপাতালে ভর্তি করতে হয়েছিলো। আজকে গাজীপুরের কালীগঞ্জে এক মাদ্রাসা শিক্ষকের থাকার কক্ষের ওয়ারড্রোব থেকে চার বছরের এক ছেলে শিশুর লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। তাকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।


আমরা কি কেউ বলতে পারি, শুধুমাত্র মাদ্রাসায় কেন শিশুকামী এই সব জানোয়ারদের দেখা যায়? কেন এই চুড়ান্ত ভয়াবহতা, বিকৃতি? এর জবাব অনেকেরই ভালো লাগবে না। দেশের অনেক মাদ্রাসা আছে যেখানে নুন্যতম মানবিক সুযোগ সুবিধা নাই। দরিদ্র এতিম বাচ্চাদের নিয়ে চলছে অমানবিকতার চুড়ান্ত। পড়া শিখানোর নামে, মুখস্ত করার নামে চলে ভয়াবহ শারিরীক নির্যাতন। এই সব নির্যাতনের কোন কোন পর্যায়ে তা রূপ নেয় পাশবিক যৌন নির্যাতনেও। যে প্রচন্ড মানসিক চাপে এই ছোট বাচ্চাগুলোর শৈশব কাটে তাতে বড় হয়ে তাদের মানসিক বিকৃতি ঘটা অস্বাভাবিক কিছু না। বরং সেটাই যৌক্তিক সম্ভবনা। মহিলা মাদরাসা গুলার অবথা একই, এদের উপরে আমি একটা স্টাডি প্রকাশ করেছিলাম গত মার্চে, ওখানে মাদরাসার মেয়েদের উপর কি পরিমান নির্যাতন হয় তা দেখানো হয়েছে অপারেশন ব্ল্যাক নাইফ নামে। ইদানীং আবার মাদরাসার হিজাবী মেয়েরা বোরকার ফাঁকে দুটি হরিনীর চোখ দেখিয়ে বিভিন্ন আেত্তিকর ভঙ্গীতে ছবি ও ভিডিও আপলোড করে বলে একজন দ্বীনদার জীবন সঙ্গী চায়, কি আশ্চর্য!!!  এটা তো তার পরিবারের কাজ, ফেসবুক তো ইলুমিনাতি রুপের শয়তানদের তৈরী যা নারীদের ঘরের খবর মানুষের কাছে প্রকাশ করে দেয়। কত বড়"বাংলাদেশের আলেম ও ইসলামি শিক্ষার বাস্তবতা"।


দেশের আলেম-উলামা, মাদরাসার শিক্ষক, মসজিদের ইমাম ও খানকার পীরদের প্রতি সাধারণ মানুষের অপরিসীম শ্রদ্ধা রয়েছে। আমিও তাদের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রাখি। তারপরও কিছু লেবাসধারীদের শিশু নির্যাতন, স্ত্রী নির্যাতন ও যৌন হয়রানিসহ নানা অপরাধের কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হন গোটা আলেম সমাজ। বলতেও লজ্জা লাগে, ভাবলেও ঘৃণা হয়। মাদরাসায় শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের বিষয়টি মোটেও নতুন নয়। যখন শুধু ছেলে মাদরাসা ছিল তখন অনেক ছেলে নির্যাতনের শিকার হতো আর এখন মেয়েরা দানবরূপী শিক্ষকের যৌন লালসার শিকার হচ্ছে। বিষয়টি খুবই লজ্জার ও ঘৃণার। যেহেতু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ জাতীয় কেলেঙ্কারির ঘটনা দিন দিন বাড়ছে, এটা থেকে পরিত্রাণের জন্য নেতৃস্থানীয় আলেমদের ভাবতে হবে। নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ। এখনই এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষের আস্থা হারিয়ে যাবে, ভরসার জায়গাটুকুও শেষ হয়ে যাবে।


আফসোসের বিষয়, এই বিকৃত অনাচার নিয়ে আমাদের হুজুররা বা আলেমরা তেমন সোচ্চার নন। আজকে আপনি অনুগ্রহ করে ইউটিউবে একটু সার্চ দিয়ে দেখবেন দেশের মাদ্রাসায় এই ধরনের ঘটনার ব্যাপারে কয়টি ওয়াজ পান, প্রকাশ্যে কে কি বলেছেন। আমি হয়ত খারাপ মানুষ, শয়তান ( এই লেখা পড়লে প্রিয় হুজুররা আমাকে হয়ত এই নামেই ডাকবেন) তাই হুজুরদের ভালো কথা খুঁজে পাই নি, খুঁজে পেয়েছি মাদ্রাসার সাথে বাংলা ও ইংলিশ মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে অসুস্থ তুলনা। আমাদের আলেমরা, আমাদের হুজুররা বাংলা বা ইংরেজি মাধ্যমের খারাপ দিক দিয়ে মাদ্রাসায় সংঘটিত ভয়াবহ অন্যায়ের তুলনা করে ভালো মন্দের বিচার করেন। অথচ একটা খারাপ বা অন্যায় দিয়ে আরেকটি খারাপ বা অন্যায় জাস্টিফাইড হয় না। এটাই প্রকৃত আলেম আর তথাকথিত আলেমদের মধ্যে পার্থক্য। আমি খুব আশাবাদী মানুষ, আমি বিশ্বাস করি, নিশ্চয় আমাদের কোন না কোন আলেম, এই বিষয়ে ওয়াজ করেছেন, কথা বলেছেন, কালোকে কালো আর সাদাকে সাদা বলতে তিনি কোন ভয় করেন নি, দ্বিধা করেন নি।


আরেকটি বিষয় - বাংলাদশে ধর্ম চর্চা এখনও খুব প্রাগৈতিহাসিক পর্যায়ে আছে। একটা প্রচন্ড কামুম, বর্বর, হিংসুট এবং জেলি ফিস মস্তিস্কের জাতিকে ধর্ম দিয়ে জোর করে অবদমিত করে রাখা হয়েছে। ফলে হাজার হাজার চটি পেইজ, পর্ণগ্রাফিক পেইজে দেখবেন সব কিছু দেখে শুনে ইসলামের দাওয়াত দেয়া হয়, লাইক দিয়ে কাউন্ট করা হয় কে আল্লাহকে ভালোবাসে, কে নবীকে ভালোবাসে। ধার্মিকতার নামে কি প্রচন্ড বিকৃতি! পার্ভাসন কোথায় গেছে যে- চটি পেইজে গিয়ে সৃষ্টিকর্তাকে ভালোবেসে লাইক দিয়ে আসতে হবে।


যাইহোক, যদি আপনি ধার্মিক হন, তাহলে মনে রাখবেন - যে জাতির আলেমমা মিথ্যে নিয়ে পড়ে আছে, গীবত নিয়ে পড়ে আছে, অহংকার করে, মিথ্যে অপব্যাখ্যা করে কোরান ও সুন্নাহের সেই জাতীর অবস্থা ভয়াবহ হতে যাচ্ছে। আর যদি অধার্মিক হন তাহলে মনে রাখবেন প্রকৃতির বিচার বলে একটা ব্যাপার আছে। এই বিচার খুবই সুক্ষ এবং ভয়াবহ!


দেশের আলেম-উলামা, মাদরাসার শিক্ষক, মসজিদের ইমাম ও খানকার পীরদের প্রতি সাধারণ মানুষের অপরিসীম শ্রদ্ধা রয়েছে। আমিও তাদের প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা রাখি। তারপরও কিছু লেবাসধারীদের শিশু নির্যাতন, স্ত্রী নির্যাতন ও যৌন হয়রানিসহ নানা অপরাধের কারণে প্রশ্নবিদ্ধ হন গোটা আলেম সমাজ। বলতেও লজ্জা লাগে, ভাবলেও ঘৃণা হয়। মাদরাসায় শিশুদের ওপর যৌন নির্যাতনের বিষয়টি মোটেও নতুন নয়। যখন শুধু ছেলে মাদরাসা ছিল তখন অনেক ছেলে নির্যাতনের শিকার হতো আর এখন মেয়েরা দানবরূপী শিক্ষকের যৌন লালসার শিকার হচ্ছে। বিষয়টি খুবই লজ্জার ও ঘৃণার। যেহেতু ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলোতে এ জাতীয় কেলেঙ্কারির ঘটনা দিন দিন বাড়ছে, এটা থেকে পরিত্রাণের জন্য নেতৃস্থানীয় আলেমদের ভাবতে হবে। নিতে হবে কার্যকর পদক্ষেপ। এখনই এ বিষয়ে ব্যবস্থা না নিলে সাধারণ মানুষের আস্থা হারিয়ে যাবে, ভরসার জায়গাটুকুও শেষ হয়ে যাবে।


আফসোসের বিষয়, এই বিকৃত অনাচার নিয়ে আমাদের হুজুররা বা আলেমরা তেমন সোচ্চার নন। আজকে আপনি অনুগ্রহ করে ইউটিউবে একটু সার্চ দিয়ে দেখবেন দেশের মাদ্রাসায় এই ধরনের ঘটনার ব্যাপারে কয়টি ওয়াজ পান, প্রকাশ্যে কে কি বলেছেন। আমি হয়ত খারাপ মানুষ, শয়তান ( এই লেখা পড়লে প্রিয় হুজুররা আমাকে হয়ত এই নামেই ডাকবেন) তাই হুজুরদের ভালো কথা খুঁজে পাই নি, খুঁজে পেয়েছি মাদ্রাসার সাথে বাংলা ও ইংলিশ মাধ্যমের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সাথে অসুস্থ তুলনা। আমাদের আলেমরা, আমাদের হুজুররা বাংলা বা ইংরেজি মাধ্যমের খারাপ দিক দিয়ে মাদ্রাসায় সংঘটিত ভয়াবহ অন্যায়ের তুলনা করে ভালো মন্দের বিচার করেন। অথচ একটা খারাপ বা অন্যায় দিয়ে আরেকটি খারাপ বা অন্যায় জাস্টিফাইড হয় না। এটাই প্রকৃত আলেম আর তথাকথিত আলেমদের মধ্যে পার্থক্য। আমি খুব আশাবাদী মানুষ, আমি বিশ্বাস করি, নিশ্চয় আমাদের কোন না কোন আলেম, এই বিষয়ে ওয়াজ করেছেন, কথা বলেছেন, কালোকে কালো আর সাদাকে সাদা বলতে তিনি কোন ভয় করেন নি, দ্বিধা করেন নি।


আরেকটি বিষয় - বাংলাদশে ধর্ম চর্চা এখনও খুব প্রাগৈতিহাসিক পর্যায়ে আছে। একটা প্রচন্ড কামুম, বর্বর, হিংসুট এবং জেলি ফিস মস্তিস্কের জাতিকে ধর্ম দিয়ে জোর করে অবদমিত করে রাখা হয়েছে। ফলে হাজার হাজার চটি পেইজ, পর্ণগ্রাফিক পেইজে দেখবেন সব কিছু দেখে শুনে ইসলামের দাওয়াত দেয়া হয়, লাইক দিয়ে কাউন্ট করা হয় কে আল্লাহকে ভালোবাসে, কে নবীকে ভালোবাসে। ধার্মিকতার নামে কি প্রচন্ড বিকৃতি! পার্ভাসন কোথায় গেছে যে- চটি পেইজে গিয়ে সৃষ্টিকর্তাকে ভালোবেসে লাইক দিয়ে আসতে হবে।


যাইহোক, যদি আপনি ধার্মিক হন, তাহলে মনে রাখবেন - যে জাতির আলেমমা মিথ্যে নিয়ে পড়ে আছে, গীবত নিয়ে পড়ে আছে, অহংকার করে, মিথ্যে অপব্যাখ্যা করে কোরান ও সুন্নাহের সেই জাতীর অবস্থা ভয়াবহ হতে যাচ্ছে। আর যদি অধার্মিক হন তাহলে মনে রাখবেন প্রকৃতির বিচার বলে একটা ব্যাপার আছে। এই বিচার খুবই সুক্ষ এবং ভয়াবহ!


ডা.বশির আহাম্মদ


 


শয়তান কার প্ররোচনায় বিদ্রোহ করলো?


শয়তানকে কে স্রষ্টার নির্দেশ অমান্য করার প্ররোচনা দিয়েছিল?



জবাবঃ
 নাস্তিকদের অত্যন্ত জনপ্রিয় অভিযোগ হচ্ছে ইবলিস মানুষকে ধোঁকা দেয় কিন্তু ইবলিস যখন ফেরেস্তাদের সর্দার ছিল তখন তাকে ধোঁকা দিল কে?!

এখন শয়তান মানুষের শত্রু,মানুষকে আল্লাহর হুকুম অমান্য করতে প্ররোচনা দেয়। কিন্তু শয়তান আদম(আ:)কে সেজদা করতে অস্বীকৃতি জানানোর পূর্বে তো আর বিদ্রোহী ছিলো না, শয়তানকেও তো প্ররোচনা দেওয়ার মত কোনো নিয়ামক বা প্রভাবক ছিলো না।তাইলে শয়তান কার প্ররোচনায় আল্লাহর সাথে বিদ্রোহ করে বসলো?

সত্য সম্পর্কে অবগত না থাকাই তাদের এই প্রশ্নের অবতারণার কারন।
প্রশ্ন হচ্ছে ধোঁকা কি শুধু শয়তান দেয়?
না, এটি একটি ভুল ধারণা।
জ্বীন ও ইনসানের দুটি বড় শত্রু আছে। এগুলো হল-
১/ নাফস,
২/ শয়তান।
এই নফস ও শয়তান দুটোই প্রতি মুহূর্তে আমাদেরকে নানান গুনাহের প্রতি উদ্বুদ্ধ করে। নফস ভিতর থেকে উদ্বুদ্ধ করে আর শয়তান সেটিকে আমাদের সামনে আকর্ষণীয় করে তুলে তাতে লিপ্ত করায়। নফস ও শয়তান দুটোই আমাদের শত্রু। তবে নফস শয়তানের চেয়েও বেশি ভয়ঙ্কর শত্রু।
কেন ভয়ঙ্কর ?
কারণ, এই নফসই শয়তানকে শয়তান বানিয়েছে। শয়তানের আগে তো আর কোন শয়তান ছিল না। এই নফসই শয়তানকে আল্লাহর হুকুম অমান্য করতে উদ্বুদ্ধ করেছে। পরিণামে সে চিরকালের জন্য অভিশপ্ত শয়তানে পরিণত হয়েছে।
 নফসের একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, সে সব সময় খারাপ বা নিষিদ্ধ কাজের প্রতি উৎসাহিত করবে, এটাই সৃষ্টির বৈশিষ্ট্য,  আর এজন্যই এই নফস এর বিষয়ে বার বার সতর্ক করা হয়েছে। এই নফস কিন্তু ভালো কাজের দিকে আহবান করবে না। এই পুরা সৃষ্টিটাই আল্লাহ এমন বৈচিত্র্যময় করে তৈরী করেছেন আর এজন্যই বিচার হবে।

পবিত্র কুরআনে আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেছেন,
 (হযরত ইউসুফ আলাইহিস সালাম বললেন)
 وَمَا أُبَرِّئُ نَفْسِي إِنَّ النَّفْسَ لَأَمَّارَةٌ بِالسُّوءِ إِلَّا مَا رَحِمَ رَبِّي إِنَّ رَبِّي غَفُورٌ رَّحِيمٌ.
আমি নিজের নফসকে পবিত্র মনে করি না। নিশ্চয়ই নফস (সবাইকেই) মন্দ কাজের নির্দেশ দিয়ে থাকে, একমাত্র ওই ব্যক্তি ছাড়া যার প্রতি আমার প্রতিপালক অনুগ্রহ করেন। নিশ্চয় আমার প্রতিপালক ক্ষমাশীল, দয়ালু। (সূরা ইউসুফ: ৫৩)।

অর্থাৎ আল্লাহ তাআলা যার প্রতি দয়া করেন, কেবল সে-ই নফসের কুমন্ত্রণা থেকে বেঁচে থাকতে পারে। তবে কেউ চাইলেই নিজের নফসকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে আল্লাহর দয়ায়।
সৃষ্টির প্রতিটি জ্ঞানসম্পন্ন জীবেরই রয়েছে এই নফস যা তাকে মন্দের দিকে ধাবিত করে।
এবার আমাদের ভালো করে বোঝা দরকার সেদিন কী ঘটেছিল!

হজরত আদম আলাইহিস সালামকে সৃষ্টি করার পর আল্লাহ তায়ালা  তাঁকে সেজদা করার নির্দেশ প্রদান করেন সকল ফেরেশতাদেরকে। তাদের মধ্যে একজন জ্বিনও ছিল। যে আল্লাহর এ আদেশকে মানতে পারেনি। যে কাজটি তাকে আদেশ পালনে বিরত রেখেছে, তাহলো আত্ম-অহংকার। সে তার নফসের দ্বারা প্ররোচিত হয়ে নিজেকে আদমের চেয়ে বড় ভাবে এবং সিজদা করতে অস্বীকার করে।
কুরআনুল কারিমের সুরা বাক্বারার ৩৪নং আয়াতে আল্লাহ বলেন,
 وَإِذْ قُلْنَا لِلْمَلاَئِكَةِ اسْجُدُواْ لآدَمَ فَسَجَدُواْ إِلاَّ إِبْلِيسَ أَبَى وَاسْتَكْبَرَ وَكَانَ مِنَ الْكَافِرِينَ
 অর্থাৎ এবং যখন আমি আদমকে সেজদা করার জন্য ফেরেশতাগণকে নির্দেশ দিলাম, তখনই ইবলিস ব্যতিত সবাই সিজদা করলো। সে (নির্দেশ) পালন করতে অস্বীকার করল এবং অহংকার প্রদর্শন করল। ফলে সে কাফেরদের অন্তর্ভূক্ত হয়ে গেল।
অত্র আয়াতে অহংকার বলতে وَاسْتَكْبَرَ শব্দটিকে বুঝিয়েছেন। ইবলিস আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করার ভিত্তি কোনো ভুল ধারণা কিংবা দ্বিধা-সংশয় নয়; বরং আত্ম-অহংকারই ছিল এর ভিত্তি। শ্রেষ্ঠত্ববোধ থেকেই ইবলিসের এ অস্বীকৃতি এসেছিল। মানে নিজেকে নিজে শ্রেষ্ঠ মনেকরার অহমিকাই শয়তানকে বিদৃরোহী করেছিলো।

ধরুন, আপনি আপনার চাকরি জীবনের প্রথম থেকে একটা কোম্পানিতে নিষ্ঠার সাথে কাজ করে আসছেন। গত ত্রিশ বছর কঠোর পরিশ্রম করে আপনি একজন মামুলি কেরানি থেকে আজকে কোম্পানির প্রেসিডেন্ট হয়েছেন।ল, যেমনটা শেখ হাসিনার পিয়ন এবং কাজের বুয়া হয়েছিলো। আপনার সাথে কোম্পানির চেয়ারম্যানের অনেক ভালো সম্পর্ক, আপনি তার অনেক কাছের একজন মানুষ। কিন্তু হঠাৎ একদিন চেয়ারম্যান সাহেব আপনাকে বলল যে, সদ্য বিশ্ববিদ্যালয়  থেকে গ্রাজুয়েট একজন তরুন ছেলে কালকে থেকে কোম্পানির প্রেসিডেন্ট হবে এবং আপনাকে তার অধীনে ভাইস-প্রেসিডেন্ট হিসেবে কাজ করতে হবে। আপনার অবস্থা তখন কী হবে? একজন সদ্য গ্রাজুয়েট হবে প্রেসিডেন্ট, আর আপনি যেখানে ত্রিশ বছর ধরে কোম্পানিতে কাজ করছেন, আপনি হবেন তার অধীনে একজন কর্মচারী! আপনার সাথে এতো বড় অন্যায়!

 বিষয়টা তেমনই ছিল ইবলিসের জন্য। এই ভাবনা থেকেই তার নফস, তার অহমিকা তাকে প্ররোচিত করল আর সে রবের হুকুম পালনে অস্বীকৃতি জ্ঞাপন করল।
 কো’রআনে পরে কয়েকটি সূরায় আল্লাহ  ইবলিসের সাথে সেদিন তাঁর যে কথোপকথন হয়েছিল, তা আমাদেরকে জানিয়েছেন,
আল্লাহ বললেন, “ইবলিস, যাকে আমি নিজের হাতে সৃষ্টি করেছি, তার প্রতি তুমি অনুগত হতে পারলে না কেন? তুমি কি তখন অহংকার করছিলে, নাকি তুমি নিজেকে মহিমান্বিতদের একজন মনে করো?” – [সাদ ৩৮:৭৫]

স্রষ্টার কাছ থেকে এত কঠিন একটা প্রশ্ন সরাসরি শোনার পরে স্বাভাবিকভাবেই ইবলিসের উচিৎ ছিল সাথে সাথে ক্ষমা চাওয়া এবং স্বীকার করা যে, সে বড় ভুল করে ফেলেছে, তাকে মাফ করে দেওয়া হোক। কিন্তু সে তা না করে উল্টো আল্লাহকে  বোঝানোর চেষ্টা করল।
সে বলল, “আমি ওর থেকে বড়। আপনি আমাকে আগুন থেকে বানিয়েছেন, আর ওকে বানিয়েছেন মাটি থেকে।” [সাদ ৩৮:৭৬]
“মহান আল্লাহ সকল প্রশ্নের ঊর্ধ্বে, সর্বশক্তিমান, একমাত্র প্রভু এবং আমি আল্লাহর  এক মামুলি দাস”—এটা ইবলিস তার অহংকারের জন্য ভুলে গিয়েছিল।
সে আল্লাহকে সৃষ্টিকর্তা মানে ঠিকই। কিন্তু তিনি যে সব প্রশ্নের ঊর্ধ্বে একজন প্রভু—এটা মানে না।
ইবলিস শুধু আল্লাহর সাথে যুক্তিতর্ক করেই শেষ করেনি, তার মধ্যে কখনোই কোনো ধরনের অনুশোচনাও ছিল না। একে তো সে আল্লাহর আদেশ অমান্য করল, তার উপর উল্টো সে তার স্রষ্টাকেই যুক্তি দিয়ে বোঝানোর মতো ঔদ্ধত্য দেখাল।
তার অহংকার এতই বেশি ছিল যে, সে চিরকালের জন্য জাহান্নামে যেতেও রাজি ছিল, কিন্তু তারপরেও সে কারও কাছে মাথা নত করবে না।এমনকি তার স্রষ্টার কাছেও না!

হাদিসে কুদসিতে এসেছে-
 আল্লাহ তাআলা বলেছেন-‘বড়ত্ব আমার চাদর এবং মহানত্ব আমার ইযার (লুঙ্গি)। কেউ যদি এ দুইটির কোনো একটির ব্যাপারে আমার সঙ্গে ঝগড়ায় লিপ্ত হয় তবে আমি তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব।’ (মুসলিম, মিশকাত)

কেউ কেউ প্রশ্ন করেন, “এভাবে ইবলিসকে কি একটা ফাঁদে ফেলা হলো না? আদম (আ) এর প্রতি সমর্পণ করতে না বললেই তো সে আর কোনোদিন শয়তান হয়ে যেত না, আর আমাদের এত বড় একজন শত্রু তৈরি হতো না।”
ইবলিসের মতো ভয়ংকর প্রবৃত্তি একদিনে তৈরি হয় না। এর জন্য অনেক সময় লাগে এবং আগে থেকেই ভিতরে অনেক সমস্যা থাকতে হয়।
আল্লাহ বলেন-
… সে কাফিরদের [অবিশ্বাসীদের, অস্বীকারকারীদের] একজন ছিল। [বাকারাহ ৩৪]
অর্থাৎ ইবলিসের আগেই আরও জিন ছিল, যারা আগে থেকেই কাফির (অবিশ্বাসী, অকৃতজ্ঞ) ছিল। ইবলিস সেই জ্বীনদেরই বংশধর ছিল। সেই অবিশ্বাসী পূর্বপুরুষ জ্বীনদের তাছির বা প্রভাব তার উপর রয়েই গিয়েছিল যা একদিন না একদিন প্রকাশ পেত।এটা পদরৃথ বিজ্ঞানের ভাষায় অনেকটা আবেশের মত।

 মহান আল্লাহ খুব ভালো করেই জানতেন যে, ইবলিস মানুষের ক্ষতি করার চেষ্টা করবেই, কারণ সে মানুষের মতো উন্নততর একটা সৃষ্টিকে কোনোভাবেই মেনে নিতে পারেনি, যা ফেরেশতারা নিঃসঙ্কোচে মেনে নিয়েছে। মানুষের প্রতি তার হিংসা, তার ভিতরের ভয়ংকর অহংকার, ক্রোধ, মহান আল্লাহর প্রতি অবাধ্যতা—এগুলো যদি আল্লাহ একদম শুরুতেই প্রকাশ করে না দিতেন, তাহলে ইবলিস মানুষের এক গোপন শত্রু হয়ে যেত। আল্লাহ  ইবলিসের আসল রূপকে একদম শুরুতেই প্রকাশ করে দিয়ে এবং নবী, রাসুল ও ঐশী গ্রন্থগুলোর মাধ্যমে আমাদেরকে ইবলিসের ব্যাপারে সাবধান করে দিয়ে আমাদের এক বিরাট উপকার করেছেন। আমরা এখন জানি যে, ইবলিস আমাদের প্রকাশ্য শত্রু।
আল্লাহ আমাদের সকলকে ইবলিসের ধোঁকা আর  নফসের প্ররোচনা থেকে হেফাজত করুন,আমিন।

কবি কা'ব বিন আশ্রাফকে হত্যার কারন

     

কবি কাব বিন আশরাফকে কেন হত্যা করেছিলেন মুহাম্মদ (সাঃ)?
     জবাবঃ
কা‘ব বিন আশরাফ। মদিনার প্রসিদ্ধ ইহুদী নেতা। কবিতা লেখায় সিদ্ধহস্ত। কাব্যে তার পারদর্শিতা। ইহুদীদের মধ্যে এমনই এক ব্যক্তি তিনি, যিনি ইসলাম ও মুসলিমদের প্রতি অত্যন্ত শত্রুতা ও হিংসা পোষণ করতেন। তিনি নাবী কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কষ্ট দিতেন এবং তাঁর বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে যুদ্ধের হুমকি দিয়ে বেড়াতেন। ‘বনু তাঈ’ গোত্রের শাখা   বনু নাবাহান   এর সাথে তার পিতা সম্পর্কযুক্ত ছিলেন। আর তার মাতা   বনু নাযীর   গোত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। কা‘ব বিন আশরাফ ছিলেন ধনাঢ্য ব্যক্তি। তিনি পুঁজিপতিও ছিলেন। আরবে তার সৌন্দর্য্যের খ্যাতি ছিল। মদীনার দক্ষিণে বনু নাযীর গোত্রের আবাদী ভূমির পেছনের দিকে ছিল তার বসবাসের সুরম্য দূর্গ।
ইসলাম এবং ইসলামের নবীর প্রতি তিনি যে কি পরিমান শত্রুতা পোষন করতেন তা অনুমান করা যায় মুসলমানদের সাথে তার শত্রুতামূলক বিভিন্ন কথা, কাজ ও আচরণে। ইসলামের বিরুদ্ধে তার অব্যাহত ষড়যন্ত্র, মুসলিম সতীসাধ্বী নারীদের নামে মিথ্যে অপবাদ প্রদান করে তাদের নামে কুৎসা রটনা, আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হত্যার প্রকাশ্য হুমকিসহ তার ইসলাম ও মুসলিম বিদ্বেষের কিছু নমুনা উপস্থাপন করছি-
বদরের যুদ্ধে মুসলিমদের বিজয় তিনি মেনে নিতে পারেননিঃ
উদাহরণতঃ বদর যুদ্ধে মুসলিমদের বিজয় লাভ এবং নেতৃস্থানীয় কুরাইশদের নিহত হওয়ার প্রথম খবর শুনে তিনি অকস্মাৎ বলে ওঠেন- ‘সত্যিই কি ঘটনা এটাই? এরা ছিল আরবের সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি এবং জনগণের বাদশাহ। যদি মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদেরকে হত্যা করে থাকে তবে পৃথিবীর অভ্যন্তর ভাগ ওর উপরিভাগ হতে উত্তম হবে; অর্থাৎ আমাদের বেঁচে থাকার চেয়ে মরে যাওয়াই উত্তম হবে।
ধরা পড়ে যায় কা  বের গোপন চিঠিঃ
ইবনে ইসহাকের বর্ণনা উদ্ধৃত করে কা  বকে হত্যা করার পেছনে কারণ হিসেবে উইকিপিডিয়ায় উল্লেখ করা হয়েছে যে, কাবের প্রেরিত একটি চিঠি বদর যুদ্ধের পর মক্কায় পৌঁছেছিলো এবং তা মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিরুদ্ধে কুয়াইশদেরকে ক্ষেপিয়ে দিয়েছিল। সে চিঠির বিষয় ফাঁস হয়ে গেলে কা  বের গোপন ষড়যন্ত্র সম্মন্ধে মুসলিমরা নিশ্চিত হন।
বিশ্বাসঘাতকতার আরেক নাম কা  বঃ
অঙ্গীকার ভঙ্গকারীদেরকে ক্ষমা করার বিধান পৃথিবীর কোথাও নেই। মক্কাবাসীদের সাথে মদিনার চুক্তি থাকা সত্ত্বেও তিনি মদিনাবাসী লোক হয়ে মদিনার বিরুদ্ধে মক্কার কুরাইশদেরকে যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার জন্য বিভিন্ন উপায়ে উষ্কানি দিয়ে আসছিলেন। তার এই বিশ্বাসঘাতকতা নজিরবিহীন। যে কোনো দেশ, রাষ্ট্র ও জনপদের নিরাপত্তা ও অস্তিত্ব রক্ষার প্রয়োজনে এই ধরণের বিশ্বাসঘাতককে উচিত শিক্ষা দেয়া অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়ে।
কুরাইশদের সাথে মুসলিমদের স্বার্থ বিরোধী লিখিত চুক্তিপত্রে আবদ্ধ হন কা  বঃ
বিভিন্ন ঐতিহাসিক সূত্র দাবি করে যে, কাবকে হত্যা করার কারণ ছিল যে, তিনি মুহাম্মদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে হত্যার জন্য একদল ইহুদির সঙ্গে গোপন পরিকল্পনা করেছিলেন। বিখ্যাত মুফাসসির আল্লামা যারুল্লাহ যামাখাশারি, আল-তাবারসি, আল-রাযি এবং আল-বায়দাভির মত পরবর্তী ভাষ্যকারদের কাছ থেকে আরেকটি পৃথক মত পাওয়া যায় যে, কাবকে হত্যা করা হয়েছিল কারণ ফেরেশতা জিবরাইল আলাইহিস সালাম মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কাবের চুক্তি সম্পর্কে জানিয়ে দিয়েছিলেন, যেখানে কাব তার মক্কা সফরের সময় কুরাইশ এবং চল্লিশজন ইহুদির মধ্যে মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর বিরুদ্ধে দ্বিপাক্ষিক সন্ধিচুক্তিতে আবু সুফিয়ানের সাথে সাক্ষর করেন।
সূত্রঃ উইকিপিডিয়া
অধ্যাপক ইউরি রবিনের ভাষ্যমতে, প্রাথমিক উৎসগুলোতে কুরাইশ এবং ইবনে আশরাফের মাঝে স্বাক্ষরিত একটি মুসলিমবিরোধী সন্ধির অস্তিত্বের বিষয়ে বর্ণনা পাওয়া যেতে পারে।
সূত্রঃ উইকিপিডিয়া।
পৃথিবী থেকে মুসলিমদের অস্তিত্ব মিটিয়ে ফেলার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন তিনিঃ
পরে যখন তিনি নিশ্চিতরূপে জানতে পারলেন যে, বদরের যুদ্ধের ফলাফলের যে খবর তিনি শুনেছেন তা সত্য, তখন আল্লাহর এ দুশমন রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এবং মুসলিমদের নিন্দা এবং ইসলামের শত্রুদের প্রশংসা করতে শুরু করলেন এবং তাদেরকে মুসলিমদের বিরুদ্ধে উত্তেজিত করতে লাগলেন। কিন্তু এতেও তার বিদ্বেষবহ্ণি প্রশমিত না হওয়ায় তিনি পৃথিবী থেকে মুসলিমদের অস্তিত্ব মিটিয়ে ফেলার গভীর স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। এ স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তিনি পথ খুঁজতে থাকেন।
যুদ্ধের আগুন জ্বালাতে তিনি ছুটে গেলেন সুদূর মক্কায়ঃ
অবশেষে অন্য কোনো উপয়ান্তর না পেয়ে তিনি মক্কার কুরাইশদের সাথে যোগ দেয়াকেই অধিক উপযুক্ত মনে করলেন। তার ধারণা ছিল, একমাত্র কুরাইশদের বৃহত শক্তিই নতুন ধর্মবিশ্বাস ইসলাম এবং এর অনুসারীদের নিশ্চিহ্ন করতে সক্ষম হবে। তাই তিনি কুরাইশদের সাথে হাত মেলানোর উদ্দেশ্যে অশ্বে আরোহণ করে প্রায় পাঁচশো কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে সুদূর মক্কায় উপনীত হলেন এবং মুত্তালিব ইবনু আবী অদাআ সাহমীর অতিথি হলেন। তারপর তিনি কুরাইশ নেতৃবৃন্দের সামনে নিজের কাব্যপ্রতিভার প্রকাশ ঘটালেন। তিনি কুরাইশদের মর্যাদাবোধ তুলে ধরে তাদের উত্তেজিত করতে, তাদের প্রতিশোধাগ্নি প্রজ্জ্বলিত করতে এবং তাদেরকে নাবী কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর বিরুদ্ধে যুদ্ধের জন্যে উৎসাহিত করতে কবিতা বলে বলে ঐ কুরাইশ নেতাদের জন্য বিলাপ করতে লাগলেন যাদের বদর প্রান্তরে হত্যা করার পর কূপে নিক্ষেপ করা হয়েছিল।
তিনি যে মিথ্যাবাদী এবং শঠ তার প্রমানঃ
মক্কায় তার অবস্থানকালে আবূ সুফিয়ান ও মুশরিকরা তাকে জিজ্ঞেস করল, ‘তোমার নিকট আমাদের দ্বীন বেশী পছন্দনীয়, না মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ও তাঁর সঙ্গীদের দ্বীন? আর উভয় দলের মধ্যে কোন্ দলটি বেশী হিদায়াতপ্রাপ্ত?’
উত্তরে কা‘ব বিন আশরাফ বললেন- ‘তোমরাই তাদের চেয়ে বেশী হিদায়াতপ্রাপ্ত এবং উত্তম।
তার এই মিথ্যাচারের অপনোদনেই আল্লাহ তা‘আলা নিম্নের আয়াত নাযিল করেন-
‏(‏أَلَمْ تَرَ إِلَى الَّذِيْنَ أُوْتُوْا نَصِيْبًا مِّنَ الْكِتَابِ يُؤْمِنُوْنَ بِالْجِبْتِ وَالطَّاغُوْتِ وَيَقُوْلُوْنَ لِلَّذِيْنَ كَفَرُوْا هَؤُلاء أَهْدَى مِنَ الَّذِيْنَ آمَنُوْا سَبِيْلاً النساء.
‘যাদেরকে কিতাবের জ্ঞানের একাংশ প্রদত্ত হয়েছে, সেই লোকেদের প্রতি তুমি কি লক্ষ্য করনি, তারা অমূলক যাদু, প্রতিমা ও তাগূতের প্রতি বিশ্বাস করে এবং কাফিরদের সম্বন্ধে বলে যে, তারা মু’মিনগণের তুলনায় অধিক সঠিক পথে রয়েছে।’ -আন-নিসা ৪ : ৫১
মদিনায় প্রত্যাবর্তন এবং সতিসাধ্বী মুসলিম নারীদের চরিত্রহননঃ
কিছু দিন মক্কায় অবস্থান করে মক্কাবাসী কুরাইশ নেতৃবৃন্দের অন্তরে যুদ্ধের লেলিহান আগুনের শিখা প্রজ্বলিত করে দিয়ে, মদিনার মুসলিমদের নিশ্চিহ্ন করার অভিযানে গমন করলে তাদেরকে সর্বপ্রকার সাহায্য সহযোগিতা প্রদান করার আশ্বাস দিয়ে কা‘ব ফিরে এলেন মাদিনায়। কিন্তু মদিনায় ফিরে এসেও তিনি যেন শান্তি পাচ্ছিলেন না। ইসলাম ও মুসলিমদের তার কোনোভাবেই সহ্য হচ্ছিল না। এ পর্যায়ে নব উদ্যমে তিনি ভিন্ন এক ন্যাক্কারজনক কাজে হাত বাড়ালেন। সাহাবায়ে কেরাম রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুমগণের স্ত্রীদের ব্যাপারে বাজে কবিতা বলতে শুরু করলেন এবং কটুক্তির মাধ্যমে তাঁদেরকে ভীষণ কষ্ট দিতে থাকলেন।
আল্লাহর এই দুশমনকে হত্যার ঘটনাঃ
তার ধারাবাহিক এসব জঘন্য অপকর্ম, সতিসাধ্বী মুসলিম নারীদের প্রতি মিথ্যা অপবাদ ও কলঙ্ক রটানো, ইসলাম ও মুসলিমদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে অবস্থান নিয়ে মক্কার কুরাইশদের সাথে ষড়যন্ত্রে শামিল হয়ে তাদেরকে যুদ্ধে ঝাপিয়ে পড়তে পরামর্শ প্রদানসহ সাহায্য সহযোগিতার আশ্বাস দেয়া, সর্বোপরি আল্লাহ তাআলা এবং রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে নানাবিধভাবে দুর্ব্যবহারের লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করায় এক পর্যায়ে অতিষ্ঠ হয়ে রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন,
من لى بكعب إبن الأشرف فإنه قد أذى الله و رسوله
অর্থ:   কে এমন আছে? যে কাব ইবনে আশরাফের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে! কেননা সে আল্লাহ এবং তার রাসূলকে কষ্ট দিচ্ছে।
রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর এ প্রশ্নের জবাবে মুহাম্মাদ বিন মাসলামাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু, আব্বাদ বিন বিশর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু, হারিস বিন আউস রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু, আবূ নায়িলাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু যার আরেক নাম সিলকান বিন সালামাহ এবং যিনি ছিলেন কা’বের দুধ ভাই, তিনি এবং আবূ আবস বিন হিবর রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এ অভিযানে পথপ্রদর্শকের দায়িত্ব পালনের জন্যে এগিয়ে আসেন। ক্ষুদ্র এ বাহিনীর নেতা ছিলেন মুহাম্মাদ বিন মাসলামাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু।
কা‘ব বিন আশরাফের হত্যার ব্যাপারে যেসব বর্ণনা রয়েছে তার সারমর্ম হচ্ছে, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন বললেন, ‘কা‘ব বিন আশরাফকে কে হত্যা করতে পারে? সে আল্লাহ এবং তার রাসূল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে কষ্ট দিয়েছে।’
তখন মুহাম্মাদ বিন মাসলামাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু উঠে আরয করলেন, ‘হে আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম! আমি প্রস্তুত আছি। আমি তাকে হত্যা করব এটা কি আপনি চান?’
রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম জবাবে বললেন, ‘হ্যাঁ’।
তিনি বললেন, ‘তাহলে আপনি আমাকে অস্বাভাবিক কিছু বলার অনুমতি দিচ্ছেন কি?’
রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম উত্তরে বলেন, ‘হ্যাঁ, তুমি বলতে পার।’
এরপর মুহাম্মাদ বিন মাসলামা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু কা‘ব ইবনু আশরাফের নিকট গমন করলেন এবং তাকে বললেন, ‘এ ব্যক্তি অর্থাৎ, মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আমাদের কাছে সাদাকাহ চাচ্ছে এবং প্রকৃত কথা হচ্ছে সে আমাদেরকে কষ্টের মধ্যে ফেলে দিয়েছে।
একথা শুনে কা‘ব বলল, ‘আল্লাহর কসম! তোমাদের আরো বহু দুর্ভোগ পোহাতে হবে।’
মুহাম্মাদ বিন মাসলামাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বললেন, ‘আমরা যখন তার অনুসারী হয়েই গেছি তখন হঠাৎ করে এখনই তার সঙ্গ ত্যাগ করা উচিত মনে করছি না। পরিণামে কী হয় দেখাই যাক। আচ্ছা, আমি আপনার কাছে এক অসাক বা দু’ অসাক (এক অসাক =১৫০ কেজি) খাদ্য শস্যের আবেদন করছি।’
কা‘ব বলল ‘আমার কাছে কিছু বন্ধক রাখো।’
মুহাম্মাদ বিন মাসলামা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বললেন, ‘আপনি কী জিনিস বন্ধক রাখা পছন্দ করেন?’
কা‘ব উত্তর দিলো, ‘তোমাদের নারীদেরকে আমার নিকট বন্ধক রাখো।’
মুহাম্মাদ বিন মাসলামাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বললেন, ‘আপনি আরবের মধ্যে সর্বাপেক্ষা সুদর্শন পুরুষ, সুতরাং, আমরা আমাদের নারীদেরকে কিরূপে আপনার নিকট বন্ধক রাখতে পারি?’
সে বলল, ‘তাহলে তোমাদের পুত্রদেরকে বন্ধক রাখো।’
মুহাম্মাদ বিন মাসলামাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বললেন, ‘আমরা আমাদের পুত্রদেরকে কী করে বন্ধক রাখতে পারি? এরূপ করলে তাদেরকে গালি দেয়া হবে যে, এক অসাক বা দু অসাক খাদ্যের বিনিময়ে তাদেরকে বন্ধক রাখা হয়েছিল। এটা আমাদের জন্যে খুবই লজ্জার কথা হবে। আমরা অবশ্য আপনার কাছে অস্ত্র বন্ধক রাখতে পারি।’
এরপর দুজনের মধ্যে সিদ্ধান্ত গৃহীত হলো যে, মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু অস্ত্র নিয়ে তার কাছে আসবেন। এদিকে আবূ নায়িলাও রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু অগ্রসর হলেন অর্থাৎ কা‘ব বিন আশরাফের কাছে আসলেন। কিছুক্ষণ পর্যন্ত উভয়ের মধ্যে বিভিন্ন দিকের কবিতা শোনা ও শোনানোর কাজ চললো। তারপর আবূ নায়িলা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বললেন, ‘ভাই বিন আশরাফ! আমি এক প্রয়োজনে এসেছি। এটা আপনাকে আমি বলতি চাচ্ছি এই শর্তে যে, আপনি কারো কাছে এটা প্রকাশ করবেন না।’
কা‘ব বলল, ‘ঠিক আছে, আমি তাই করব।’
আবূ নায়িলাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বললেন, ‘এ ব্যক্তির অর্থাৎ, মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর আগমন তো আমাদের জন্যে পরীক্ষা হয়ে দাঁড়িয়েছে। গোটা আরব আমাদের শত্রু হয়ে গেছে। আমাদের পথ ঘাট বন্ধ হয়ে গেছে, পরিবার পরিজন ধ্বংস হতে চলেছে। সন্তান-সন্ততির কষ্টে আমরা চৌচির হচ্ছি।’
এরপর তিনি ঐ ধরণেরই কিছু আলাপ আলোচনা করলেন, যেমনটা মুহাম্মাদ বিন মাসলামা করেছিলেন। কথোপকথনের সময় আবূ নায়িলাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এ কথাও বলেছিলেন যে, আমার কয়েকজন বন্ধু বান্ধব রয়েছে যাদের চিন্তাধারা ঠিক আমারই মত। আমি তাদেরকেও আপনার কাছে নিয়ে আসতে চাচ্ছি। আপনি তাদের হাতেও কিছু বিক্রি করুন এবং তাদের উপর অনুগ্রহ করুন।’
মুহাম্মাদ বিন মাসালামা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু এবং আবূ নায়িলাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু নিজ নিজ কথোপকথনের মাধ্যমে নিজেদের উদ্দেশ্য সাধনে সফলকাম হন। কেননা, ঐ কথোপকথনের পরে অস্ত্রশস্ত্র বন্ধু বান্ধবসহ এ দুজনের আগমনের কারণে কা‘ব বিন আশরাফের সতর্ক হয়ে যাওয়ার কথা নয়।
জোছনাস্নাত রাতে কা  ব বিন আশরাফের পরকাল যাত্রাঃ
হিজরি ৩য় সনের রবিউল আওয়াল মাসের ১৪ তারিখ জোছনাস্নাত এক রাতে এ ক্ষুদ্র বাহিনী রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম -এর নিকট একত্রিত হন। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বাকীয়ে গারকাদ অর্থাৎ, জান্নাতুল বাকী কবরস্থান পর্যন্ত তাঁদের অনুসরণ করেন। তারপর বলেন, ‘আল্লাহর নাম নিয়ে যাও। বিসমিল্লাহ। হে আল্লাহ! এদেরকে সাহায্য করুন।’
তারপর তিনি নিজের বাড়িতে ফিরে আসেন। তারপর বাড়িতে তিনি সালাত ও মুনাজাতে লিপ্ত হয়ে পড়েন।
এদিকে এ বাহিনী কা‘ব বিন আশরাফের দুর্গের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছার পর আবূ নায়িলাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু উচ্চৈঃস্বরে ডাক দেন। ডাক শুনে কা‘ব তাদের নিকট আসার জন্যে ঘর হতে বের হতে উদ্ধত হলে তার স্ত্রী তাকে বললেন, ‘এ সময় কোথায় যাচ্ছেন? আমি এ ডাকের ভেতরে এমন শব্দ শুনতে পাচ্ছি, যেন তা হতে ফোঁটা ফোঁটা রক্ত পড়ছে।’
স্ত্রীর এ কথা শুনে কা‘ব বলল, ‘এটা তো আমার ভাই মুহাম্মাদ বিন মাসলামা এবং দুধ ভাই আবূ নায়িলাহ। সম্ভ্রান্ত লোককে যদি তরবারী যুদ্ধের দিকে আহবান করা হয় তবে সে ডাকেও সে সাড়া দেয়।’
এরপর তিনি বাইরে এলেন। তার দেহ থেকে সুগন্ধি ছড়িয়ে পড়ছিল এবং তার মাথায় যেন খোশবুর ঢেউ খেলছিল।
আবূ নায়িলাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু তাঁর সঙ্গীদেরকে বলে রেখেছিলেন যে, ‘যখন তিনি আসবেন তখন আমি তার চুল ধরে শুঁকবো। যখন তোমরা দেখবে যে, আমি তার মাথা ধরে তাকে ক্ষমতার মধ্যে পেয়ে গেছি তখন ঐ সুযোগে তোমরা তাকে হত্যা করবে।’
সুতরাং, যখন কা‘ব এলেন তখন দীর্ঘক্ষণ ধরে আলাপ আলোচনা ও গল্পগুজব চললো। তারপর আবূ নায়িলাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বললেন, ‘বিন আশরাফ! আজুয ঘাঁটি পর্যন্ত চলুন। সেখানে আজ রাতে কথাবার্তা বলাবলি হবে।
তিনি বললেন, ‘তোমাদের ইচ্ছা হলে চলো।’ তারপর তাদের সাথে তিনি চললেন।
পথিমধ্যে আবূ নায়িলাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু তাকে বললেন, ‘আজকের মতো এমন উত্তম সুগন্ধি আপনাকে ইতোপূর্বে ব্যবহার করতে দেখিনি।’
একথা শুনে কা  বের বক্ষ গর্বে ফুলে উঠল। তিনি বললেন, ‘আমার পাশে আরবের সর্বাপেক্ষা অধিক সুগন্ধি ব্যবহারকারিণী মহিলা রয়েছে।’
আবূ নায়িলাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বললেন, ‘আপনার মাথাটি একটু শুঁকবো, এ অনুমতি আছে কি?’
তিনি উত্তরে বললেন ‘হ্যা, হ্যাঁ’।
আবূ নায়িলাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু তখন কা‘বের মাথায় হাত রাখলেন। তারপর তিনি নিজেও তার মাথা শুঁকলেন এবং সঙ্গীদেরকেও শুঁকালেন। কিছুদূর যাওয়ার পর আবূ নায়িলাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু বললেন, ‘ভাই আর একবার শুঁকতে পারি কি?’
কা‘ব উত্তর দিল ‘হ্যাঁ হ্যাঁ। কোন আপত্তি নেই।’
আবূ নায়িলাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু আবার শুঁকলেন। সুতরাং, তিনি নিশ্চিত হয়ে গেলেন।
আরো কিছুদূর চলার পর আবূ নায়িলাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু পুনরায় বললেন, ‘ভাই আর একবার শুঁকবো কি?’
এবারও কা‘ব উত্তর দিলেন, ‘হ্যাঁ, শুঁকতে পারো।
এবার আবূ নায়িলাহ রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু তার মাথায় হাত রেখে ভালভাবে মাথা ধরে নিলেন এবং সঙ্গীদেরকে বললেন, ‘আল্লাহর এ দুশমনকে হত্যা করে ফেল।’
ইতোমধ্যেই তার উপর কয়েকটি তরবারী পতিত হলো, কিন্তু কাজ হলো না। এ দেখে মুহাম্মাদ ইবনু মাসলামা রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু নিজের কোদাল ব্যবহার করে তার দুনিয়ার স্বাদ চিরতরে মিটিয়ে দিলেন। আক্রমণের সময় কা  ব এত জোরে চিৎকার করেছিলেন যে, চতুর্দিকে তার চিৎকারের শব্দ পৌঁছে গিয়েছিল এবং আশপাশে এমন কোন দূর্গ বাকী ছিল না যেখানে বিপদ সংকেত স্বরূপ অগ্নি প্রজ্জ্বলিত করা হয়নি। কিন্তু এতদসত্বেও মুসলিমদের ক্ষুদ্র এ বাহিনী কোনোরূপ বাধার সম্মুখিন না হয়ে সফলতার সাথে অভিযান সমাপ্ত করে প্রত্যাবর্তন করতে সক্ষম হন।
আল্লাহর রাসূল (সাঃ) বললেন, ‘আফলাহাতিল উজূহু’
কা‘বকে আক্রমণ করার সময় হারিস ইবনু আউস রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুকে তাঁর কোন এক সাথীর তরবারীর কোণার আঘাত লেগেছিল। ফলে তিনি আহত হয়েছিলেন এবং তাঁর দেহ হতে রক্ত প্রবাহিত হচ্ছিল। কা‘বকে হত্যা করে ফেরার সময় যখন এ ক্ষুদ্র মুসলিম বাহিনী হররায়ে আরীয নামক স্থানে পৌঁছেন তখন দেখেন যে, হারিস রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু অনুপস্থিত রয়েছেন। সুতরাং, তারা সেখানে থেমে যান। অল্পক্ষণ পরে হারিস রাদিআল্লাহু তাআলা আনহুও সঙ্গীদের পদচিহ্ণ ধরে সেখানে পৌঁছে যান। সেখান হতে তাঁরা তাঁকে উঠিয়ে নেন এবং বাকীয়ে গারকাদে পৌঁছে এমন জোরে তাকবীর ধ্বনি দেন যে, রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-ও তা শুনতে পান। তিনি বুঝে নেন যে, কা‘ব নিহত হয়েছে। সুতরাং, তিনিও আল্লাহু আকবার ধ্বনি উচ্চারণ করেন। তারপর যখন এ মুসলিম বাহিনী তাঁর খিদমতে উপস্থিত হন তখন তিনি বলেন, ‘আফলাহাতিল উজূহু’ অর্থাৎ এ চেহারাগুলো সফল থাকুক।
তখন তারা বললেন, ‘অ অজুহুকা ইয়া রাসূলুল্লাহ’ অর্থাৎ হে আল্লাহর রাসূল সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম আপনার চোহরাও সফলতা লাভ করুক। আর সাথে সাথেই তাঁরা তাগূতের (কা‘বের) কর্তিত মস্তক তাঁর সামনে রেখে দেন। তিনি তখন আল্লাহ পাকের প্রশংসা করেন এবং হারিস রাদিআল্লাহু তাআলা আনহু -এর ক্ষত স্থানে স্বীয় পবিত্র মুখের লালা লাগিয়ে দেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি আরোগ্য লাভ করেন এবং পরে আর কখনো তিনি কষ্ট অনুভব করেন নি। -এ ঘটনাটির বিস্তারিত বিবরণ ইবনু হিশাম ২য় খন্ড ৫১-৫৭ পৃঃ, সহীহুল বুখারী ১ম খন্ড ৩৪১-৪২৫ পৃঃ, ২য় খন্ড ৫৭৭ পৃঃ, সুনানে আবূ দাউদ আউনুল মা’বূদ সহ দ্রষ্টব্য ২য় খন্ড ৪২-৪৩ পৃঃ এবং যা’দুল মাআ’দ ২য় খন্ড ৯১ পৃঃ, এ সব হাদীস গ্রন্থ হতে গৃহীত হয়েছে।
কা  ব হত্যার ফলাফলঃ
এদিকে ইহুদীরা যখন কা‘ব বিন আশরাফের হত্যার খবর জানতে পারে তখন তাদের শঠতাপূর্ণ অন্তরে ভীতি ও ত্রাসের ঢেউ খেলে যায়। তারা বুঝতে পারে যে, রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন অনুধাবন করবেন যে, শান্তি বিনষ্টকারী, গন্ডগোল ও বিপর্যয় সৃষ্টিকারী এবং প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকার ভঙ্গকারীদেরকে উপদেশ দিয়ে কোন ফল হচ্ছে না, তখন তিনি তাদের উপর শক্তি প্রয়োগ করতেও দ্বিধাবোধ করবেন না। এ জন্যেই তারা এই বিশ্বাসঘাতককে হত্যার প্রতিবাদে কোন কিছু করার সাহস করেননি, যদিও তাদের এ যুগের উত্তরসূরীদের কেউ কেউ আগপাছ না ভেবে ইতিহাসের সত্যকে ঢেকে রেখে হাহাকার রব তুলে শোরগোল করতে চান মাঝে মাঝেই, বস্তুতঃ কা  বের খুনের ঘটনার পরে মদিনা এবং আশপাশ অঞ্চলের বাদবাকি ইহুদিদের মধ্যে যারা তার পথে হাটছিলেন, তাকে অনুসরণ করছিলেন তারাও একে একে সকলে মুনাফিকির এই পথ থেকে ফিরে আসেন। তারা অঙ্গীকার পূরণের স্বীকৃতি দান করেন এবং মুসলিমদের বিরুদ্ধাচরণের দুঃসাহস সম্পূর্ণরূপে হারিয়ে ফেলেন।
এভাবে ইসলাম ও মুসলিমদের দুশমন, আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তাআলা এবং রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর দুশমন দুর্বৃত্ত কা  ব বিন আশরাফকে উচিত শিক্ষা দেয়ার মাধ্যমে রাসূলে কারিম সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মদিনার বিরুদ্ধে বহিরাক্রমণের সম্ভাবনা বিদূরিত করতে সক্ষম হলেন। এর ফলে মুসলিমরা মদিনার অভ্যন্তরীণ গোলযোগ হতেও সম্পূর্ণরূপে মুক্ত হয়ে গেলেন; যে গোলযোগের শঙ্কা বহু দিন থেকে তাঁদেরকে চিন্তিত, শঙ্কিত ও উদ্বেগাকুল করে রেখেছিল এবং যার নেতৃত্বে ছিলেন মানবতাবিরোধী অপরাধে যুক্ত দুর্বৃত্ত কা  ব বিন আশরাফ।
সূত্র থেকেঃ
০১। সহীহ বুখারী ১ম খন্ড, পৃষ্ঠা ৩৪১, ৪২৫,
০২। সহীহ বুখারী ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৫৭৭,
০৩। সুনানে আবূ দাউদ ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৪২, ৪৩,
০৪। যাদুল মায়াদ ২য় খন্ড পৃষ্ঠা ৯১,
০৫। সিরাতে ইবনে হিশাম, ২য় খন্ড, পৃষ্ঠা ৫১, ৫৭।
০৬। আর রাহীকুল মাখতুম (বঙ্গানুবাদ), মূলঃ আল্লামা ছফিউর রহমান মোবারকপুরি, অনুবাদকঃ খাদিজা আকতার রেজায়ী, আল কোরআন একাডেমি লন্ডন কর্তৃক প্রকাশিত, পৃষ্ঠা ২৪৮ - ২৫১ন্ডন কর্তৃক প্রকাশিত, পৃষ্ঠা ২৪৮ - ২৫১




দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...