expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর, ২০২৪

বায়ু নির্গত হলে শুধু ওযু করলেই পাক হয় কেমনে?

 

পায়ু পথে বায়ু নির্গত হলে অজু করতে হয় কেন? বায়ু বের হয় পায়ু পথে আর ধূতে হয় হাত, মুখ বিষয়টা কি মজার নয়? এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা কি?



 
জবাবঃ
আসুন আগে শরীয়ত হতে ব্যাখ্যা দেই তার পর বিজ্ঞান হতে দেবো।

শরীয়ত হতে এই জবাবের জন্য আমাদের জানা দরকার অজু ও ইবাদত কি এবং ইবাদতের জন্য
অজুর প্রয়োজনীয়তা কি!

অজু কিঃ
অজু (وضوء) শব্দের আভিধানিক অর্থ সৌন্দর্য ( الحسن) ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা (النظافة)। অজুর মাধ্যমে বাহ্যিকভাবে অজুর অঙ্গ প্রত্যঙ্গ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন হয়। অপর দিকে অজুর কারণে অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ হতে গুনাহ ঝরে গিয়ে সেগুলো পাপমুক্ত হয়ে নূরানী ও উজ্জ্বল হয়ে যায়। শরিয়তের পরিভাষায় অজু হলো- নির্দিষ্ট অঙ্গসমূহে নির্ধারিত পদ্ধতিতে পানি প্রবাহিত করা।
[الفقه على المذاهب الاربعة পৃষ্ঠা ৪৬]

অজুর হুকুম -
অজু মানে নাপাকী ও অপবিত্রতা দূর করা। ফলে অজুর মাধ্যমে ফরজ ও নফল যেমন নামায, তেলাওয়াতে সেজদা, শোকরের সেজদা, বায়তুল্লাহ্র তাওয়াফ ইত্যাদি আদায় করা যায়। সুতরাং উপরিউক্ত কাজ সমূহ আদায়ের জন্য অজু করা ফরজ-আবশ্যক। অতএব, এ কাজগুলো অজুবিহীন ব্যক্তির জন্য জায়েয নয়। অনুরূপ ক্বোরআন শরীফ স্পর্শ করার জন্য অজু ফরজ।
অজুর আধ্যাতিক ফজিলতের পাশাপাশি রয়েছে শারীরিক(বৈজ্ঞানিক) উপকারিতা।দৈনিক পাঁচবার নামাজের জন্য অজু করলে শরীরে নির্ধারিত অংগের সকল ধুলো ময়লা পরিষ্কার হয় এতে রোগ জীবানু থেকে রক্ষা পেয়ে রোগাক্রান্ত হওয়া থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।

ইবাদত কি ও কেনঃ
******************
‘ইবাদাত শব্দের আভিধানিক অর্থ হলো:- চূড়ান্ত বিনয়, আনুগত্য ও বশ্যতা।

শারী‘আতের পরিভাষায়:-
প্রকাশ্য কিংবা গোপনীয় যতসব কথা ও কাজ আল্লাহ ভালোবাসেন ও পছন্দ করেন, সে সবের একটি সামষ্টিক নাম হলো ‘ইবাদাত।
তাই যতসব কথা-বার্তা ও কাজ-কর্মকে আল্লাহ পছন্দ করেন,
যেমন:-
সালাত (নামায) ক্বায়িম করা, সিয়াম (রোযা) পালন করা, ক্বোরবানী, নয্‌র-মানত প্রদান করা, সাদাক্বাহ, যাকাত প্রদান করা, আল্লাহ্‌র নিকট প্রার্থনা (দু‘আ) করা, আল্লাহ্‌কে ডাকা, আল্লাহ্‌র প্রতি ভয় ও আশা পোষণ করা, আল্লাহ্‌র উপর ভরসা করা, আল্লাহ্‌র তাছবীহ্‌ (মহিমা), তাহ্‌মীদ (প্রশংসা), তাকবীর (মহত্ব), তাহ্‌লীল (আল্লাহ্‌র একত্ব) বর্ণনা করা, ক্বোরআনে কারীম তিলাওয়াত করা, ক্বোরআন ও ছুন্নাহ্‌তে বর্ণিত ও নির্দেশিত দু‘আ ও যিকর-আযকার করা, রাছূলের প্রতি দূরুদ পাঠ করা ইত্যাদি, এ সব প্রতিটি কাজ হলো একেকটি ‘ইবাদাত।
রাছূলের (সাঃ) অনুসৃত ও প্রদর্শিত পন্থানুযায়ী একমাত্র আল্লাহ রাব্বুল ‘আলামীনের উদ্দেশ্যে, তাঁরই (আল্লাহ্‌র) সন্তুষ্টি লাভের নিমিত্তে, তাঁর (আল্লাহ্‌র) প্রতি শ্রদ্ধাপূর্ণ ভয় ও সর্বোচ্চ ভালোবাসা নিয়ে, তাঁর প্রতি পূর্ণ বশ্যতা ও আনুগত্য প্রদর্শন পূর্বক তাঁর (আল্লাহ্‌র) মহত্বের সম্মুখে অবনত মস্তকে চূড়ান্ত বিনয়ের সাথে আল্লাহ্‌র নিকট উত্তম প্রতিদান লাভের আগ্রহ ও সুদৃঢ় আশা নিয়ে উপরোক্ত যে কোন কর্ম সম্পাদন করাকে আল্লাহ্‌র ‘ইবাদাত বলা হয়।
যেসব ইবাদতের জন্য অজু বাধ্যতামূলক তার মধ্যে নামাজ প্রথম ও প্রধান। অন্যান্য ইবাদতের ক্ষেত্রে অজুর বাধ্যবাধকতায় কিছু বিশেষ ছাড় রয়েছে।
নামাজের জন্য শুধু শরীর পাকই যথেষ্ট নয়।প্রয়োজন দেহ,মন,পোশাক,নামাজের স্থান সব কিছুর পবিত্রতা ও মনের ঐকান্তিক একাগ্রতার সাথে চূড়ান্ত বিনয়, আনুগত্য ও বশ্যতা স্বীকার।এর যেকোন একটির অভাব ইবাদতের অপূর্ণতা এনে দিবে।

এখন প্রশ্ন হচ্ছে বায়ু ত্যাগে অজুর কি প্রয়োজন?
আগেই বলেছি একাগ্রতা ইবাদতের অন্যতম শর্ত। এখন আপনি নামাজে দাঁড়ালেন আর এসময় বিভিন্ন পাশ থেকে ভুটভাট বায়ু ছাড়ছে, পরিবেশ কেমন হবে? একাগ্রতা থাকবে নাকি পরিবেশ নষ্ট হবে?
একটা জাগতিক উদাহরণ দিচ্ছি--
ধরেন আপনি যদি কোন অফিসে চাকরি করেন সেই অফিসে আপনার বসের সামনে বসে আছেন তখন বায়ু নির্গমন করতে পারবেন? সেটা কেমন দেখাবে?
অফিস বাদ দেন!! কয়েকজন বসে আছেন- এ অবস্থায় বায়ু ত্যাগ কেমন লাগবে?
তাহলে ভেবে দেখুন আপনার প্রতিপালক, মহাবিশ্বের মালিকের সামনে দাঁড়াচ্ছেন ইবাদতের জন্য আর ভুট- ভাট বায়ু ত্যাগ করছেন !!! কেমন লাগবে বিষয়টা?
ইবাদতের একাগ্রতা কি আসবে নাকি পরিবেশ নষ্ট হবে?
স্বাভাবিকভাবে একাগ্রতা ও পরিবেশ উভয়ই নষ্ট হবে।
মহান রব সর্বজ্ঞ ও প্রজ্ঞাবান! তিনি যা কিছুরই নির্দেশ দেন তা তার বান্দার জন্য মঙ্গলজনক ও কল্যানকর। তিনি কোন বোঝা তার বান্দার উপর চাপিয়ে দেননা।
এজন্যই নামাজের সময় বায়ু নির্গত হওয়ার ব্যাপারে কিছু নির্দেশনা রয়েছে।
তা হচ্ছে-
যদি নামাজে শব্দ ও গন্ধ বিহীন বায়ু নির্গত হয় এবং তা নির্গমনকারীর সন্দেহ হয় কিন্তু নিশ্চিত না হয় তবে সন্দেহের মধ্যে নামাজ ত্যাগ না করতে বলা হয়েছে।
এছাড়া মাজুর ব্যাক্তি যিনি বার বার বায়ু ত্যাগের সমস্যায় ভোগছেন তিনি এক অজুতেই নামাজ পড়বেন যদি নামাজে বায়ু নির্গত হয় তবুও।
সুতরাং বলতে পারি ইবাদতের মাহাত্ম্য ও গুরুত্ব অনুধাবন ও একাগ্রচিত্তে ইবাদতে মনোনিবেশ করার জন্যই আল্লাহ্‌ রাব্বুল আলামিন বায়ু নির্গত হলে অজুর নির্দেশ দিয়েছেন অন্য কোন কারনে নয়।

এবার আসেন বিজ্ঞান হতে ব্যাখ্যা করি কারন বিজ্ঞানের ছাত্ররা নাস্তিক না হলেও কলা বিজ্ঞানের ছাত্ররা বিজ্ঞানের দোহাই দিয়ে নাস্তিকতা করে যদিও তারা নিজেরাই বিজ্ঞান বুঝে না তবুও বিজ্ঞান হতেই বিস্তারিত বলছি।

পায়ু পথে নির্গত বায়ু নিয়ে যেহেতু বিতর্ক সেহেতু বায়ুর ভৌত বিজ্ঞান নিয়েই কিছু কথা বলি।বায়বীয় পদার্থ একটি নির্দ্দিষ্ট তাপ, চাপ ও ঘনত্বে নিজস্ব বৈশিষ্ট্য বজায় রাখে। যদি কোনো বায়বীয় পদার্থের এই তাপ, চাপ, ঘনত্ব পরিবর্তন করা হয় তাইলে তার স্বকীয়তা পরিবর্তন করে, এমনকি একটি নিয়ামক পরিবর্তন করলেও স্বকীয়তা পরিবর্তন করে।

উদাহরন-১:
আপনি যদি একটি জ্বলন্ত দিয়াশলাই কাঠি গ্যাসের চুলার নিকট রেখে চাবি অন কটেন তাইলে ধপ করে আগুন জ্বলবে। কিন্তু দিয়াশলাই কাঠি যত দূরে নিবেন ততই আগুন জ্বলতে সময় লাগবে এবং একটি নির্দিষ্ট দূরুত্বে জলন্ত কাঠি সরিয়ে নিলে গ্যাসে আর আগুন ধরবে না কারন একটি নির্দিষ্ট দূরুত্বের বাহিটে গ্যাস এর চাপ ও ঘনত্ব এত কমে যে তার আর নিজস্ব বৈশিষ্ট্য বজায় রাখতে পাটে না।

উদাহরন-২:
আপনি আপনার বডিস্প্রে কাপরের খুব নিকটে স্প্রে করলে দেখবেন কাপড়টি ভিজে যায় এবং একটু পরই তা এমনি এমনি শুকিয়ে যায়। শুকিয়ে যাওয়ার পর আর এই স্প্রের আর বৈশিষ্ট্য থাকে না।

উদাহরন-৩:
আপনি অর্ধেক গ্যাসে পূর্ন দিয়াশ লাইটে দেখবেন নীচের অংশ তরল আর উপরের অংশ খালি, আর ঐ খালি অংশ আসলে খালি নয় আরং এখানেও গ্যাস থাকে কিন্তু ঘনত্ব কম থাকে। গ্যাস কমতে কমতে এক সময় তরল অংশ শেষ হওয়ার পরও গ্যাস বের হয় কিছুক্ষণ।  তার পর চাপ কমে গেলে যে গয়াস বের হয় তাতে আর আগুন ধরে না কারন তখন আর গ্যাসের বৈশিষ্ট্য থাকে না।

ঠিক তেমনি আমাদের পেটের ভিতরের নাপাক বস্তু হতে যে বায়ু নির্গত হয় তা পায়ুপথ দিয়ে বপর হওয়ার সময় তার নিজস্ব নাপাকী বৈশিষ্ট্য ধরে রাখে এবং খুব অল্প সময়ের জন্য পায়ুপথের মুখ ও নিকটস্থ কাপড় চোপড় নাপাক করে ফেলে কিন্তু খানিকক্ষণ পরই উদ্বায়ী স্বভাবের কারনে পেট হতে নির্গত বায়ু আবার উধাও গয়ে যায় এবং ঐস্থান এমনি এমনি নাপাক মুক্ত হয়ে যায়। তাই অজু করার সময় আর পুনরা ঐ স্থান ধৌত করতে হয় না। ওযু করতে হয় অল্প সময়ে যে নাপাকী ওযু নষ্ট করে তার জন্য।
আশা করি উত্তরটি পেয়েছেন।




কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...