expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

ওয়াজ ব্যবসা হারাম

 "ওয়াজ করে টাকা নেওয়া নাজায়েজ' এটা খাওয়া হারাম"


এসেছে শীতকাল,শুরু হবে ওয়াজ। বাংলার আকাশে,বাতাসে বেজে উঠবে কোরআনের সুর। এই ওয়াজ ইসলামি দাওয়াতের একটা বড় উপায় এবং বর্তমানে এটা বাংলাদেশের মুসলমানদের সাংস্কৃতি হয়ে উঠেছে। শীতকাল মানেই ওয়াজ মাহফিল।

এই ওয়াজ মাহফিল গুলো দাওয়াতের মঞ্চ।দাওয়াত দিয়ে আনা হয় বিভিন্ন মোফাস্সের গনকে মানুষকে দ্বীনের পথে আনার জন্য, হেদায়েতের জন্য ডাকা হয়। আমরা ছোট বেলা দেখতাম এই মাহফিল শোনে এসে অনেকেই নামাজ পড়া শুরু করত, মাবাবাকে সন্মান করত আরো কত কি শিখত।

এই ওয়াজ মাহফিলে যে বক্তা আনা হয় তাকে বর্তমান ১০হাজার হতে বক্তা ভেদে ১লক্ষ টাকা পর্যন্ত দিতে হয়। এই টাকা নেওয়া হয় কন্টাক্ট করে। ওয়াজের টাকার জোগারের জন্য বিভিন্ন মানুষের কাছে হাত পাতে এন্তেজামিয়া কমিটি। হোক ভাল মানুষ, হোক গরু চোর, সুদ খোর সমস্যা নাই, মাহফিলে টাকা দিলেই হলো তার সাথে যোগ হয় ছোট ছট ছেলেদের দিয়ে মাহফিলের বক্তাকে দেওয়ার জন্য টাকার জোগান দিতে ভিক্ষা বৃত্তি।

চলুন এই ওয়াজ করে টাকা নেওয়া ইসলামী শরীয়তে জায়েজ না না জায়েজ সেটা জানা যাক। প্রথমেই মনে রাখতে হবে মাহফিল কোনো ক্লাশরুম নয় যে এখানে কেউ লেকচার দিবে আর বাকীরা শোনবে, এটা হয় ছাত্র শিক্ষকের মধ্যে। মাহফিল হলো ইসলামের দাওয়াতের কাজ, আর দাওয়াত দিবেন ফি সাবিলিল্লাহ।


আলকোরআনে আল্লাহ বলেন,

১।


وَ اٰمِنُوْا بِمَاۤ اَنْزَلْتُ مُصَدِّقًا لِّمَا مَعَكُمْ وَ لَا تَكُوْنُوْۤا اَوَّلَ كَافِرٍۭ بِهٖ ۪ وَ لَا تَشْتَرُوْا بِاٰیٰتِیْ ثَمَنًا قَلِیْلًا ٘ وَّ اِیَّایَ فَاتَّقُوْنِ

আর আমি যে কিতাব পাঠিয়েছি তার ওপর ঈমান আন। তোমাদের কাছে আগে থেকেই যে কিতাব ছিল এটি তার সত্যতা সমর্থনকারী। কাজেই সবার আগে তোমরাই এর অস্বীকারকারী হয়ো না। সামান্য দামে আমার আয়াত বিক্রি করো না।  আমার গযব থেকে আত্মরক্ষা করো।(আল-বাক্বারাহ, আয়াত-৪১)


২।

فَوَیْلٌ لِّلَّذِیْنَ یَكْتُبُوْنَ الْكِتٰبَ بِاَیْدِیْهِمْ ۗ ثُمَّ یَقُوْلُوْنَ هٰذَا مِنْ عِنْدِ اللّٰهِ لِیَشْتَرُوْا بِهٖ ثَمَنًا قَلِیْلًا ؕ فَوَیْلٌ لَّهُمْ مِّمَّا كَتَبَتْ اَیْدِیْهِمْ وَ وَیْلٌ لَّهُمْ مِّمَّا یَكْسِبُوْنَ

কাজেই তাদের জন্য ধ্বংস অবধারিত যারা স্বহস্তে শরীয়াতের লিখন লেখে তারপর লোকদের বলে এটা আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে। এভাবে তারা এর বিনিময়ে সামান্য স্বার্থ লাভ করে। তাদের হাতের এই লিখন তাদের ধ্বংসের কারণ এবং তাদের এই উপার্জনও তাদের ধ্বংসের উপকরণ।(আল-বাক্বারাহ-৭৯)


৩।

اِنَّ الَّذِیْنَ یَكْتُمُوْنَ مَاۤ اَنْزَلَ اللّٰهُ مِنَ الْكِتٰبِ وَ یَشْتَرُوْنَ بِهٖ ثَمَنًا قَلِیْلًا ۙ اُولٰٓئِكَ مَا یَاْكُلُوْنَ فِیْ بُطُوْنِهِمْ اِلَّا النَّارَ وَ لَا یُكَلِّمُهُمُ اللّٰهُ یَوْمَ الْقِیٰمَةِ وَ لَا یُزَكِّیْهِمْ ۖ ۚ وَ لَهُمْ عَذَابٌ اَلِیْمٌ

মূলতঃ আল্লাহ‌ তাঁর কিতাবে যে সমস্ত বিধান অবতীর্ণ করেছেন সেগুলো যারা গোপন করে এবং সামান্য পার্থিব স্বার্থের বেদীমূলে সেগুলো বিসর্জন দেয় তারা আসলে আগুন দিয়ে নিজেদের পেট ভর্তি করছে। কিয়ামতের দিন আল্লাহ‌ তাদের সাথে কথাই বলবেন না, তাদের পত্রিতার ঘোষণাও দেবেন না এবং তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি।

اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ اشْتَرَوُا الضَّلٰلَةَ بِالْهُدٰى وَ الْعَذَابَ بِالْمَغْفِرَةِ ۚ فَمَاۤ اَصْبَرَهُمْ عَلَى النَّارِ

এরাই হিদায়াতের বিনিময়ে ভ্রষ্টতা কিনে নিয়েছে এবং ক্ষমার বিনিময়ে কিনেছে শাস্তি। এদের কী অদ্ভুত সাহস দেখো। জাহান্নামের আযাব বরদাস্ত করার জন্য এরা প্রস্তুত হয়ে গেছে।

ذٰلِكَ بِاَنَّ اللّٰهَ نَزَّلَ الْكِتٰبَ بِالْحَقِّ ؕ وَ اِنَّ الَّذِیْنَ اخْتَلَفُوْا فِی الْكِتٰبِ لَفِیْ شِقَاقٍۭ بَعِیْدٍ۠


এসব কিছুই ঘটার কারণ হচ্ছে এই যে, আল্লাহ‌ তো যথার্থ সত্য অনুযায়ী কিতাব নাযিল করেছিলেন কিন্তু যারা কিতাবে মতবিরোধ উদ্ভাবন করেছে তারা নিজেদের বিরোধের ক্ষেত্রে সত্য থেকে অনেক দূরে চলে গিয়েছে।

(বাক্বারাহ-১৭৪-১৭৬)


৪।

اَنْ لَّا تَعْبُدُوْۤا اِلَّا اللّٰهَ ؕ اِنِّیْۤ اَخَافُ عَلَیْكُمْ عَذَابَ یَوْمٍ اَلِیْمٍ

তোমরা আল্লাহ‌ ছাড়া আর কারোর বন্দেগী করো না। নয়তো আমার আশঙ্কা হচ্ছে তোমাদের ওপর একদিন যন্ত্রণাদায়ক আযাব আসবে।” (সূরাহ হূদ,আয়াত-২৬)


৫।

یٰقَوْمِ لَاۤ اَسْئَلُكُمْ عَلَیْهِ اَجْرًا ؕ اِنْ اَجْرِیَ اِلَّا عَلَى الَّذِیْ فَطَرَنِیْ ؕ اَفَلَا تَعْقِلُوْنَ

হে আমার কওমের ভাইয়েরা! এ কাজের বিনিময়ে আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না। আমার পারিশ্রমিক তো তাঁরই জিম্মায় যিনি আমাকে পয়দা করেছেন। তোমরা কি একটুও বুদ্ধি-বিবেচনা করে কাজ করো না?(হুদ-৫১)


৬।

وَ مَاۤ اَسْئَلُكُمْ عَلَیْهِ مِنْ اَجْرٍ ۚ اِنْ اَجْرِیَ اِلَّا عَلٰى رَبِّ الْعٰلَمِیْنَؕ 

এ কাজের জন্য আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান প্রত্যাশী নই। আমার প্রতিদান দেবার দায়িত্ব তো রব্বুল আলামীনের।(আশ-শুয়ারা-১৪৫)


৭।

وَ مَاۤ اَسْئَلُكُمْ عَلَیْهِ مِنْ اَجْرٍ ۚ اِنْ اَجْرِیَ اِلَّا عَلٰى رَبِّ الْعٰلَمِیْنَؕ 

এ কাজের জন্য আমি তোমাদের কাছে কোন প্রতিদানের প্রত্যাশী নই। আমার প্রতিদান দেবার দায়িত্ব তো রব্বুল আলামীনের।(আশ-শুয়ারা,আয়াত-১৬৪)


৮।

وَ مَاۤ اَسْئَلُكُمْ عَلَیْهِ مِنْ اَجْرٍ ۚ اِنْ اَجْرِیَ اِلَّا عَلٰى رَبِّ الْعٰلَمِیْنَؕ 

আমি এ কাজে তোমাদের কাছ থেকে কোন প্রতিদান প্রত্যাশী নই। আমার প্রতিদান দেবার দায়িত্ব তো রব্বুল আলামীনের।(স-শুয়ারা,আয়াত-১৮০)


৯। হযরত মুহাম্মদ সা: এর অঙ্গীকার:

★ ইউসুফ, আয়াত: ১০৪


وَ مَا تَسْئَلُهُمْ عَلَیْهِ مِنْ اَجْرٍ ؕ اِنْ هُوَ اِلَّا ذِكْرٌ لِّلْعٰلَمِیْنَ۠


অথচ তুমি এ খেদমতের বিনিময়ে তাদের কাছে কোন পারিশ্রমিকও চাচ্ছো না। এটা তো দুনিয়াবাসীদের জন্য সাধারণভাবে একটি নসীহত ছাড়া আর কিছুই নয়।


★ সোয়াদ, আয়াত: ৮৬


قُلْ مَاۤ اَسْئَلُكُمْ عَلَیْهِ مِنْ اَجْرٍ وَّ مَاۤ اَنَا مِنَ الْمُتَكَلِّفِیْنَ


(হে নবী!) এদেরকে বলো, আমি এ প্রচার কাজের বিনিময়ে তোমাদের কাছে কোন প্রতিদান চাইছি না এবং আমি বানোয়াট লোকদের একজনও নই। 


★ আল-আনয়াম, আয়াত: ৯০


اُولٰٓئِكَ الَّذِیْنَ هَدَى اللّٰهُ فَبِهُدٰىهُمُ اقْتَدِهْ ؕ قُلْ لَّاۤ اَسْئَلُكُمْ عَلَیْهِ اَجْرًا ؕ اِنْ هُوَ اِلَّا ذِكْرٰى لِلْعٰلَمِیْنَ۠


হে মুহাম্মাদ! তারাই আল্লাহর পক্ষ থেকে হেদায়াত প্রাপ্ত ছিল, তাদেরই পথে তুমি চল এবং বলে দাও, এ (তাবলীগ ও হেদায়াতের) কাজে আমি তোমাদের কাছ থেকে কোন পারিশ্রমিক চাই না। এটি সারা দুনিয়াবাসীর জন্য একটি সাধারণ উপদেশমালা।


★আশ-শূরা, আয়াত: ২৩


ذٰلِكَ الَّذِیْ یُبَشِّرُ اللّٰهُ عِبَادَهُ الَّذِیْنَ اٰمَنُوْا وَ عَمِلُوا الصّٰلِحٰتِ ؕ قُلْ لَّاۤ اَسْئَلُكُمْ عَلَیْهِ اَجْرًا اِلَّا الْمَوَدَّةَ فِی الْقُرْبٰى ؕ وَ مَنْ یَّقْتَرِفْ حَسَنَةً نَّزِدْ لَهٗ فِیْهَا حُسْنًا ؕ اِنَّ اللّٰهَ غَفُوْرٌ شَكُوْرٌ


এটাই সেই জিনিস যার সুসংবাদ আল্লাহ‌ তাঁর সেই সব বান্দাদের দেন যারা ঈমান এনেছে এবং সৎকাজ করেছে। হে নবী, এসব লোককে বলে দাও, এ কাজের জন্য আমি তোমাদের কাছে কোন পারিশ্রমিক চাই না। তবে আত্মীয়তার ভালবাসা অবশ্যই চাই। যে কল্যাণ উপার্জন করবে আমি তার জন্য তার সেই কল্যাণের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে দেব। নিশ্চয়ই আল্লাহ‌ বড় ক্ষমাশীল ও নেক কাজের মর্যাদাদাতা।


আল্লাহ আরো বলেন,


لَوْ لَا یَنْهٰىهُمُ الرَّبّٰنِیُّوْنَ وَ الْاَحْبَارُ عَنْ قَوْلِهِمُ الْاِثْمَ وَ اَكْلِهِمُ السُّحْتَ ؕ لَبِئْسَ مَا كَانُوْا یَصْنَعُوْنَ


এদের উলামা ও মাশায়েখগণ কেন এদেরকে পাপ কথা বলতে ও হারাম খেতে বাধা দেয় না? অবশ্যি এরা যা করে যাচ্ছে তা অত্যন্ত জঘন্য কার্যক্রম।


(আলমায়িদা,আয়াত-৬৩)


یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِنَّ كَثِیْرًا مِّنَ الْاَحْبَارِ وَ الرُّهْبَانِ لَیَاْكُلُوْنَ اَمْوَالَ النَّاسِ بِالْبَاطِلِ وَ یَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِیْلِ اللّٰهِ ؕ وَ الَّذِیْنَ یَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَ الْفِضَّةَ وَ لَا یُنْفِقُوْنَهَا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ ۙ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ اَلِیْمٍۙ 


হে ঈমানদারগণ! এ আহলে কিতাবদের অধিকাংশ আলেম ও দরবেশের অবস্থা হচ্ছে এই যে, তারা মানুষের ধন-সম্পদ অন্যায় পদ্ধতিতে খায় এবং তাদেরকে আল্লাহর পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে। যারা সোনা রূপা জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না তাদেরকে যন্ত্রণাময় আযাবের সুখবর দাও।(আত'তাওবাহ-৩৪)


এখন দেখা যায় অনেকে বলে এই টাকা নাকি সময়ের জন্য নেওয়া হয়, আবার বলে লেকচার হিসাবে দেওয়া হয়। আদতে কি এটা যুক্তি যুক্ত?আদতে ওয়াজ করে টাকা নেওয়ার কোনো আইন ইসলামী শরীয়তে নাই।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...