expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

ঈমানের মর্ম কথা


 "ঈমানের মর্ম কথা"

আমরা মুসলমান মানে ইসলাম ধর্মের অনুসারীরা ঈমান আনায়নের মাধ্যমে ইসলাম ধর্মে প্রবেশ করি। 

এই যে ইসলামে প্রবেশ করি তার অর্থ কি? কেউ বলে ইসলাম অর্থ শান্তি আবার কেউ বলে ইসলাম অর্থ আত্মসমর্পন। আসলে মূল অর্থটা কি? আসল অর্থটা আমরা অনেকেই বুঝতে পারি না। আসল অর্থটা হলো ঈমান আনায়নের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে নিজেকে সমর্পনের মাধ্যমে নিজের জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন, রাষ্ট্রীয় জীবনে শান্তি প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে আখিরাতের সফলতা অর্জনের নামই হলো ইসলাম।

আমরা জানি ঈমান আনায়নের মাধ্যমে ইসলামে দাখিল হয় মানুষ। আর ঈমান আনায়ন করে কালেমার মাধ্যমে। 

আমাদের ইমান আনায়নের শাহাদা বাক্য কালেমা হলো ' লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ।  এখানে দেখুন কালেমায় লা+ইলাহা+ ইল্লাল্লাহু +মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ। 

১। লা মানে নাই। অর্থাদ দুনিয়ার সব কিছু অস্বীকার করা।

২। ইলাহ, এটা পরে আলোচনা করব।

৩। ইল্লাল্লাহু,  মানে আল্লাহ ছাড়া।  মানে হলো একমাত্র আল্লাহ ছাড়া বাকী সব ইলাহকে(পরের আলোচনায় ইলাহ বুঝানো হবে) বাতিল ঘোষনা করা।

৪। এখানে বলা হয়েছে শুধু মাত্র হযরত মুুহাম্মদ সা: এর বর্নিত, পালনকৃত, আদেশ কৃত মত ও পথ অনুসারেই। বাকী পথে এই ইলাহকে মেনে নেওয়ার নামও ইমান নয়।


ইলাহ মানে কি(২ নাম্বারে বর্নিত):

আসুন "ইলাহ" মানে কি জানা যাক। ইলাহ এক অর্থে আল্লাহকে বুঝানো। এই অর্থ বিস্তৃত করলে বুঝা যায় ইলাহ মানে শুধু সৃষ্টি কর্তা আল্লাহ কে মেনে নেওয়ার নামই নয়। এখানে মহা বিশ্বের স্রষ্টা আল্লাহ তা'লার জারি কৃত সকল নিয়ম কানুন মেনে নেওয়ার কথাই বুঝানো হয়েছে।

আমার বলতে বা মানুষের তৈরী সকল কিছুই অস্বীকার করে একমাত্র আল্লাহর দেওয়া বিধিবিধানকে নি:সংকোচে মেনে নেওয়াই বুঝানো হয় আর সেই সাথে বাকী সকল বিধানকে অস্বীকারের কথাই বুঝায়। এ অর্থে আত্মসমর্পণ বুঝায়। মানুষের তৈরী যেমকোন বিধান হোক ব্যক্তিগত ক্ষেত্রে,পারিবারিক ক্ষেত্রে, সামাজিক ক্ষেত্রে, রাষ্ট্রীয় ক্ষেত্রে এমন কি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অর্থাদ মানব জীবনের কোন ক্ষেত্রেই নিজের মত চলার কোন সুযোগ নাই। একেউ যদি এই ধরা বাঁধা নিয়মের কিঞ্চিৎও ব্যতিক্রম করে তাইলেও ঈমানের শর্ত পূরন হবে না 

আবার মানুষের তৈরী বিধান অস্বীকারের মানে হলো মানুষের তৈরী আইন, মানুষের তৈরী জীবন ব্যবস্থা, মানুষের তৈরী অর্থ ব্যবস্থা, মানুষের তৈরী রাষ্ট্র ব্যবস্থা অস্বীকারের নামই হলো ঈমান এবং এসকল ব্যবস্থাকে অস্বীকার করে আল্লাহর তৈরী বিধান মেনে চলার নামই ইসলাম।

 ইসলামের আসল অর্থ হলো লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহ সাঃ, এই বাক্যকে মেনে নিয়ে আল্লাহর কাছে আত্মসমর্পনের মাধ্যমে মানুষের তৈরী সকল বিধিবিধানকে সমূলে উৎপাটনের মাধ্যমে আল্লাহর দেওয়া বিধান মতে শান্তি প্রতিষ্ঠা ও এই শান্তি বজায় রাখার নাম ইসলাম।

আর আল্লাহর নিকট আত্মসমর্পণ পূর্বক ইসলামের শান্তি শুধু মুসলমানের জন্যই প্রতিষ্ঠিত করা নয়, বরং আল্লাহর সৃষ্টি সকল প্রানী, সকল মানুষ, সকল জীবের বেলায় প্রজোয্য। আর এটার নাম ইসলামের ইনসাফ। ইসলাম ও ইনসাফ একই বৃক্ষের অংশ, একটা মূল হলে অন্যটা কান্ড। এই ইনসাফ মানুষের স্বাভাবিক দৃষ্টির বাইরের জীবানু হতে বৃহৎ নীল তিমির বেলায়ও প্রয়োজনে ইনসাফ প্রতিষ্ঠা।


এখন জানতে হবে আত্মসমর্পণ মানে কি?

আত্ম সমর্পণ মানে হলো নিজের সকল ইচ্ছা, অনিচ্ছা, আনন্দ-বেদনা, আবেগ,-অনুভুতি, জীবন পদ্ধতি, স্বাধ-আহ্লাদ সব কিছু আল্লাহর দেওয়া বিধান মত পরিচালিত করা, এখানে নিজের ইচৃছা অনিচ্ছার কোন সুযোগ নাই।


আল্লাহ মানুষ এবং জ্বীন ব্যতিত তাঁর আর কোন সৃষ্টিকে তার নফস ও বিবেকের স্বাধীনতা দেয় নি। এই দুই জাতিকে যেমন নফস ও বিবেকের স্বাধীনতা সাময়িক সময়ের জন্য দিয়েছে তেমনি তাদেরকে যুগে যুগে নবী ও রাসূল পাঠিয়ে তাদের সঠিক পথ প্রদর্শনও করেছেন কেননা আল্লাহ এই দুই জাতিকে এক দিকে বিবেকের স্বাধীনতা দিয়েছে আবার অন্য দিকে এক মাত্র তাঁর ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছেন।

জ্বীন ও মানুষকে আল্লাহর দাসত্ব করা ছাড়া আর কোন উদ্দেশ্যে সৃষ্টি করেন নি। তাদেরকে বিবেকের স্বাধীনতা দিয়ে যেমন পথ দেখিয়ে রেখেছেন,তেমনি আল্লাহর  নাফরমানী করার সাময়িক সুযোগও রেখেছে এবং এই মর্মে বার বার সতর্ক বানী দিয়েছেন যে নাফরমানী করলে কঠিন ভাবে দুনিয়া ও আখিরাতে পাকড়াও করা হবে।

এখন মানুষ এই দাসত্ব কিভাবে পালন করবে তা নবী ও রাসূলদের মাধ্যমে মানুষকে শিখিয়েছেন। আমাদের সর্ব শেষ নবী হযরত মুহাম্মদ সা: এর মাধ্যমে মানুষকে এই শান্তির পথ ইসলাম হাতে-কলমে আল্লাহ মানুষকে শিখিয়েছেন এবং পরবর্তীতে যাতে মানুষ আবার এ শিক্ষা ভুলে যাওয়ার কোন সুযোগ না থাকে সে উদ্দেশ্যে অপরিবর্তনীয় মহা গ্রন্থ আল কোরআন নাজিল করেছেন।

এই ইসলাম কায়েম করতে গিয়ে আল্লাহ তাঁর পয়গম্বর হযরত মুহাম্মদ সা: এর মাধ্যমে শুধু গতানুগতিক একটি ধর্মই মানুষকে শিক্ষা দেন নি, শিক্ষা দিয়েছেন মানুষের জীবনের সর্ব ক্ষেত্রে কিভাবে চলতে হবে। ব্যক্তি জীবন, পারিবারিক জীবন, সামাজিক জীবন ও রাষ্ট্রীয় জীবন, আন্তর্জাতিক জীবন, সমর নীতি, অর্থ নীতি, চিকিৎসা নীতি, মানবাধিকার নীতি সহ পূর্নাঙ্গ জীবন ব্যবস্থার সব কিছুই ইসলামের নিয়ম অনুযায়ী শিখিয়ে দিয়েছেন। আর এই নীতি অনুযায়ী মানব জীবন পরিচালিত করলেই একজন মানুষের জীবনের আসল উদ্দেশ্য অর্থাদ আল্লাহ যে উদ্দেশ্যে মানুষ ও জ্বীনকে সৃষ্টি করেছেন তার উদ্দেশ্য সম্পন্ন হবে। তা থেকে ব্যতিক্রম হলেই আল্লাহর পাকড়াও দুনিয়া ও আখিরাতে আমাদের গ্রাস করবে।

কিন্তু আজ অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় আমরা আজ সেই ঐশী শিক্ষা ভুলে গিয়ে সম্পূর্ণ নিজের নফসের প্রতারনা অনু্যায়ি চলতে গিয়ে এক দিকে নিজেরা আল্লাহর পাকড়াও হতে বাঁচতে পারছি না অপর দিকে আখিরাতেও যে সফলতা পাব না তা বুঝতেই পারছি। 

আল্লাহ সবাইকে সঠিক ভাবে ইসলাম বুঝে মেনে চলার তাওফিক দিক(আমীন)।


লেখক:

ডা.বশির আহাম্মদ,  চিকিৎসক, জার্নালিস্ট ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী। 

1 টি মন্তব্য:

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...