বাংলাদেশের মুক্তির পথ কি?
(ধৈর্য ধরে শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইলো)
আমি একটি পোস্টে আমার ব্লগে লিখেছিলাম যে জুলাই বিপ্লব ২৪ এর সুফল কি আমরা পাব? কারন ৪৮ এবং ৭১ এর স্বাধীনতা কুক্ষিগত হয়েছিল যার কারনে আমরা আবারও স্বাধীন হতে হয়েছে। এখনও বাংলাদেশে বিপ্লবী সরকারে মধ্যকার মুনাফেকদের কারনে আজ আমরা জুলাই বিপ্লবের সুফলও হারাতে বসেছি।
বিপ্লবীরা কোনো ভুয়া কালচারাল লড়াই করলে হবে না। ভারতের সঙ্গে বিরোধ ও বন্ধুত্ব প্রশ্নে আর কোনো ফাউল করা যাবে না। ভারতের সঙ্গে বিরোধ হবে জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে, অন্যায্য চুক্তি, পানি আগ্রাসন,স্বার্বভৌম বিরোধী গোয়েন্দা তৎপরতা ও চোরাচালান প্রশ্নে। আর বন্ধুত্ব হতে হবে ভারতের অগ্রসর নাগরিক সমাজ, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ ও উদ্যোক্তাদের প্রশ্নে। বিরোধ ও বন্ধুত্ব একই সঙ্গে চলবে। আমরা শুধু ভারতের গোলামির বিরোধী।
গোয়েন্দা সংস্থার সরবরাহকৃত তথ্য নিয়ে প্রচারণার উদ্দেশ্য নিয়ে সব সময় সজাগ দৃষ্টি রাখতে হবে। ইলিয়াসের ভিডিওর বিষয়ে সবাই নতুন করে ভাবতে হবে। ভিডিওটি দেখে মনে হয়েছে তার ৯৯ ভাগই সত্য, ১% হয়ত বাড়াবাড়ি, আর এটা অনিচ্ছাকৃত মনে হয়েছে। ইলিয়াসের কথা আর আমার কথা একই কথা।
শুধু একটি বিষয়ে বলি, শেখ হাসিনাকে দেশ ছাড়া করা হয়েছে নাকি তিনি পালিয়েছেন এ ব্যাপারে প্রকৃত তথ্য ছাড়া বড় সিদ্ধান্ত টানার আপাতত কোনো দরকার নাই,এখন প্রয়োজন হাসিনা ও তার গোলামদের মোকাবেলা, এক্ষনই মোকাবেলা না করতে পারলে দেশ ভারতের অধীনস্ত হবে।
হাসিনার পালানোর বিষয়ে মানবজমিনের মতিউর রহমান চৌধুরীর তথ্যই সঠিক। হাসিনাকে সেনাবাহিনী জোর করে ভারতে পাঠায়নি, বরং হাসিনা নিজেই স্বেচ্ছায় ভারতে পালিয়েছিল। সেক্ষেত্রে ভারত কখন হেলিকপ্টার পাঠাবে, কিভাবে ভারত যাবেন এ নিয়ে তিনি ব্যাকুল ছিলো।
আর সেনাবাহিনী আসিফ নজরুলকে সরকার প্রধান বানাতে চেয়েছে তাও সঠিক না বেঠিক তা জানার চেয়ে সেনা বাহিনীর অফিসারদের ৩৬০° পরিবর্তন করে হাসিনা বিরোধী নাটকই বড় ভয়ের বিষয়। এক্ষেত্রে বরং ড. সালেহ উদ্দিনই ছিলেন ভারত ও ডিজিএফআইয়ের পছন্দের লোক এটা স্পষ্ট । এমনকি সলিমুল্লাহ খানের কথাও বলা হয়েছিল।কিন্তু আসিফ নজরুলকে প্রধান করার কথা নতুন আবিষ্কার করলো ইলিয়াস।
মূলতঃ সেনাবাহিনী ও বিএনপি মিলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের উপদেষ্টারা বাছাই হয়, ছাত্ররা তাদের সম্পৃক্ততা ছাড়া নতুন সরকার মানবে না ঘোষণা দিলে ড. ইউনূস ও দুই ছাত্র উপদেষ্টা মনোনীত হয়, এ নিয়ে বঙ্গভবনে ছাত্রদের সঙ্গে মির্জা ফখরুলসহ বিএনপি নেতারা দুর্ব্যবহারও করেছিল। এই মীর্জা ফখরুলের উদ্ভট আচরনে বরং বিএনপির একাংশের গোপনে ভারতের দালালীর সন্দেহই বৃদ্ধি পাচ্ছে।
মাহফুজ আলমের সরকারে জায়গা করে নেওয়ার ব্যাপারটিও হুট করে হয়নি। মাহফুজ প্রথমে রাজনৈতিক সমন্বয় কমিটির প্রধান হয়, পরে নিরাপত্তাজনিত কারণে বিশেষ সহকারী হয়, কিন্তু এটি সচিব পদমর্যাদার বলে তার তৎপরতা সীমিত হয়ে যায়, ফলে পরে তাকে দপ্তরবিহীন উপদেষ্টা করা হয়। মাহফুজকে ড. ইউনূসের পাশ থেকে সরানোর তথ্য সঠিকই মনে হচ্ছে।
সর্বশেষ কথা হলো, ইলিয়াসের ভিডিওতে সেনাপ্রধানকেই টার্গেট করা হয়েছে। এটি ভয়ংকর বিষয়। সেনাপ্রধান হাসিনার পছন্দের লোক এবং ষোল বছরের সেট আপে আর্মিতে কয়েক স্তরে আওয়ামীপন্থীরা থাকাটা স্বাভাবিক। সেক্ষেত্রে হয় সেনাপ্রধানকে আস্থায় নিতে হবে আর না হলে পুরো সেট আপ বদলাতে হবে। কিন্তু সেনাপ্রধান দায়িত্বে থাকলে তার পক্ষে ব্যালান্স না করার উপায় নাই। চিহ্নিত ও ভেজালকারীদের হয়তো সেনাপ্রধান সরাতে পারেন, সাইড করতে পারেন। কিন্তু একেবারে আওয়ামীপন্থী ধরে সবাইকে সরানো তার পক্ষে রাতারাতি কঠিন হবে? সেক্ষেত্রে সবাই একজোট হলে বিদ্রোহ হওয়ার আশঙ্কা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
যতদূর বুঝি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ও সেনা প্রধানের মধ্যে কিছুটা গ্যাপ শুরু থেকেই আছে। একে ঘিরে সেনাবাহিনীর একাংশ সামরিক শাসন জারিরও সুযোগ নিতে চায়। কিন্তু আমি সব সময় সরকারকে বলেছি সেনাপ্রধানের সঙ্গে বিস্তারিত কথা বলুন এবং তাকে পরিবর্তনের সঙ্গী করুন। সেনাবাহিনীকে রাষ্ট্র পরিচালনায় সম্পৃক্ত করতে ৭ নভেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে আমার ফর্মুলাও উপস্থাপন করেছে৷ খোমেনি এহসানের নেতৃত্বের বিপ্লবী ছাত্র পরিষদ।তবে সেনা বাহিনীকে সরাসরি রাজনীতিতে সম্পৃক্ত করার আগে পাকিস্তান ও মায়ানমারের দিকে তাকালে আর রুচি থাকার কথা না। এই এহসান খোমেনি সম্পর্কে একটা কথা বলে রাখি এই লোকটা বাংলাদেশের রাজনৈতিক বিষয়প যে কথাই ভবিষ্যৎ বানী করে কেনো জানি অলৌকিক ভাবে ফলে যায়। এটা তার প্রজ্ঞার প্রমান করে, দেশ পরিচালনায় ইলিয়াস হোসেন, পিনাকীর মত তার পরামর্শ গুলোও সামনে আনা দরকার।
সেনা প্রধান ও ড.ইউনুসের দূরত্ব দ্রূত কমাতে হবে,আশা করি দূরত্ব কাটলে তখন হয়তো এটি বোধগম্য হবে যে প্রধানমন্ত্রী বা প্রধান উপদেষ্টা নিজে তার সামরিক সচিব বাছাই করলেও ড. ইউনূসের বেলায় কেন সেনা সদর থেকে সামরিক সচিব নিয়োগ দিয়ে পাঠানো হয়েছিল। এক্ষেত্রে ভুল বোঝাবুঝি দূর হওয়া ব্যাপার না।
এখানে একটা বিষয় খোমেনি সব সময় বলে, বাংলাদেশ কি রাষ্ট্র হিসাবে নেপাল, শ্রীলঙ্কা ও মালদ্বীপের চেয়ে দুর্বল? ওই তিন দেশে যদি ভারত টিকতে না পারে তাহলে বাংলাদেশে পারবে কিভাবে?
আনসার ও পুলিশ দিয়ে গেরিলা আক্রমণের পরিকল্পনা সত্যও হতে পারে, মিথ্যাও হতে পারে,অথবা আওয়ামিলীগ এর কোনো পাগল ছাগলের সিদ্ধান্তও হতে পারে তবে সত্য হওয়ার সম্ভাবনা বেশী। তিতা হলেও সত্য যে হাসিনা ও আওয়ামিলীগের ষড়যন্ত্রকারীরা কেউ বেঁচে ফিরতে পারবে না ইনশাআল্লাহ। আর হিন্দুদের দাঙ্গা লাগানোর বিষয়েও উড়িয়ে দেওয়া যায় না, তবে বাংলাদেশের মুসলমান কেউ আপাতত এই ফাঁদে সহজে পড়বে না। বরং দাঙ্গার ভয় দেখিয়ে মুসলমান মেরে আতঙ্ক দেখানোই ওদের কৌশল। এপিপি আলিফকে হত্যা করা হলো, যদি এমন ঘটনায় খুনীদের সবাইকে তৎক্ষনাত প্রতিরোধ করা হতো তাহলে সবাই শান্ত হয়ে যেত। কিন্তু বাংলাদেশে একটা ভয়ঙ্কর ব্যাপার ঘটছে যে একটা কচু কাটতে পারবে না এমন নিরীহ আওয়ামিলীগ এর লোকেরা মনে করছে যে তারা যদি মানুষ মারে তাহলেও তাদের কিছু হবে না, বরং ভারত তাদের রক্ষা করবে। এই ভুল ভেঙে না দিলে সহিংসতার কুড়কুড়ানি মন থেকে যাবে না।
আর হ্যাঁ, জেড আই খান পান্নাদের বিষয়েও একই আলাপ। আমরা মুক্তিযুদ্ধ প্রশ্নে এখনো এতটা নাজুক থাকি যে পান্নারা মনে করে তাদের কেউ কিছু বলবে না। অথচ পান্নাকে দুই তিন মাস আগে আদব কায়দা শিখিয়ে দেওয়া উচিত ছিলো। ছাত্ররা ঘিরে ধরে একটু সাবধান করে দিলেই হতো৷এরা এসব বিবেকহীন শয়তান ভীরু কাপুরুষ। যদি তার এত মুরোদ থাকতো ৫ আগস্ট হাসিনাকে রক্ষা করতো। মূলতঃ এজেন্সির লোকেরা চিকনে খেলে। এদেরকে গ্রেফতার করাই হলো বড় সমাধান।
যাই হোক, ইলিয়াসের ভিডিওর আলোকে এবং বাংলাদেশের চলমান আওয়ামী ষড়যন্ত্রের বাস্তবতায় দেশ শান্ত করার বিষয়ে নীচের লোক গুলোর কর্ম তৎপরতা বিশ্লেষন করে এদের বিষয়ে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহন করতে হবে:
(১) আসিফ নজরুল (উপদেষ্টা)
(২) জেড আই খান পান্না।
(৩)মেজর জেনারেল মাহবুবুর রশীদ
(৪)কর্নেল আসাদ (ডিজিএফআই)খুলনা
(৫)খালেদ আল মামুন(জিওসি,বগুরা)
(৬)মেজর জেনারেল ফেরদৌস হাসান সেলিম(মিলিটারি সেক্রেটারি অফ ডক্টর ইউনুস)
(৭)লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুজিব
(৮)লেফটেন্যান্ট জেনারেল হামিদুল হক
(৯)প্রেস সেক্রেটারি শফিকুল আলম
(১০)মেজর জেনারেল খালেদ আল মামুন
(১১)জাহাঙ্গীর আলম (জিওসি,কুমিল্লা)
(১২) ব্রিগেডিয়ার জেনারেল ইমরান হামিদ
(১৩)লেফটেন্যান্ট জেনারেল মুজিব
(১৪)কর্নেল রেদওয়ান (বিজিবি)
(১৫)মেজর জেনারেল আসরাফ (মহাপরিচালক বিজিবি)
আর ভারতের দাদাগিরি চিরকালের জন্য বন্ধের নিমিত্তে যে বিষয় গুলো দ্রুত করতে হবে সেটা হলো:
১। পাকিস্তনের সাথে অতীতের সকল তিক্ত অভিজ্ঞতা আপাতত ভুলে গিয়ে তাদের সাথে বানিজ্যিক সম্পর্ক বৃদ্ধি করা।
২। পাকিস্তনকে বাংলাদেশে তাদের ৭১ সালের অপরাধের জন্য আনুষ্ঠানিক ক্ষমা চাওয়ার জন্য চাপ বৃদ্ধি ও পাশাপাশি পারস্পরিক কমন শত্রুর বিষয়ে সামরিক সহযোগীতার জন্য দীর্ঘ মেয়াদি চুক্তি।
৩। আনুষ্ঠানিক ক্ষমা যদি পাকিস্তান চায় সে ক্ষেত্রে তাদেরকে টাকার পরিবর্তে বাংলাদেশকে অস্ত্র সহায়তার সুযোগ করে দেওয়া, কেননা এই মুহূর্তে পাকিস্তান নিজে খাওয়ার টাকাই নাই, তাই ইচ্ছা থাকলেও পাকিস্তান টাকা দেওয়ার ভয়ে ক্ষমা চাইবে না, তাই সহজ করে দিলে বাংলাদেশের উভয় দিকেই লাভ।
৪। বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দরে ভারতের উ:পূর্বাঞ্চলকে সীমিত সুযোগ দেওয়ার বিনিময়ে নেপাল ও ভুটানকে ভারতের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের সাথে বানিজ্য বৃদ্ধির সুযোগ করে দেওয়া। নেপাল ও ভুটানকে বাংলাদেশের সমুদ্র বন্দর ব্যবহারের সুযোগ করে দেওয়া।
৫। চীন, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা, মালদ্বীপ ও পাকিস্তানের সাথে নতুন করে ভারতকে এড়িয়ে দীর্ঘ মেয়াদি একটি শক্তিশালী বানিজ্যিক বেল্ট তৈরী করা, পাশাপাশি ভারতের সাথেও বানিজ্যিক সুসম্পর্ক নিজের স্বার্থে বজায় রাখা।
৬। বাংলাদেশে ভারতীয় ল্যাসপেন্সার যারা বিভিন্ন উচ্চ পদে কর্মরত তাদেরকে সতর্ক নিয়ন্ত্রণে রাখা।
আশা করি এসকল কাজ যদি সরকার করে তবে অবশ্যই বাংলাদেশ স্বাধীনতার পূর্নাঙ্গ স্বাধ পাবে বলে আশা করি। পরের লেখায় আরো নতুন বিষয়ে পরামর্শ থাকবে ইনশাআল্লাহ।
চমৎকার একটি পরামর্শ
উত্তরমুছুন