expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

নাস্তিকদের প্রশ্নের জবাব-১

 ইসলাম নিয়ে নাস্তিকদের বিভ্রান্তিকর প্রশ্নের জবাব 




 প্রশ্ন: বোখারীর হাদীসে নারীদের কি অর্থে অপয়া বলা হয়েছে?

বাংলা অভিধান মতে অপয়া শব্দের অর্থ অপয়া শব্দের বাংলা অর্থ অপয়া কুলক্ষণযুক্ত, অলক্ষণা, অলক্ষুনে, পয়মন্ত নয় এমন। অলক্ষণা, কূলক্ষণা। অমঙ্গলজনক, অশুভ।


আমি বুখারী শরীফের একটি হাদীসে নাকি বলা হয়েছে যে, নারীদের ভিতর অলক্ষুনে বা অপায়া থাকতে পারে। অলুক্ষুনে বলতে কি বুঝায়? 
এখানে কি নারীদের অপমান করা হয় নি?


জবাব:

وعليكم السلام ورحمة الله وبركاته

بسم الله الرحمن الرحيم


এ বিষয়ে আলোচনার আগে অপয়া
য়া শব্দের অর্থ কি জেনে নেওয়া যাক।


চলুন এ বিষয়ক হাদীসগুলো দেখে নেই।

ইমাম বুখারী রহঃ তার বুখারীতে শিরোনাম কায়েম করেছেন

بَابُ مَا يُتَّقَى مِنْ شُؤْمِ المَرْأَةِ

তথা অশুভ স্ত্রীলোকদের থেকে দূরে থাকা।

তারপর কুরআনে কারীমের আয়াত এনেছেন-

وَقَوْلِهِ تَعَالَى: {إِنَّ مِنْ أَزْوَاجِكُمْ وَأَوْلاَدِكُمْ عَدُوًّا لَكُمْ} [التغابن: 14]

আল্লাহ তাআলা ইরশাদ করেন, নিশ্চয়ই  তোমাদের স্ত্রীগণ এবং সন্তান সন্তুতিদের মাঝে তোমাদের শত্রু রয়েছে। {সূরা তাগাবুন-১৪}

এরপর তিনি হাদীস এনেছেন-

 

عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ عُمَرَ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا: أَنَّ رَسُولَ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «الشُّؤْمُ فِي المَرْأَةِ، وَالدَّارِ، وَالفَرَسِ

হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ বলেছেন, নিশ্চয়ই তোমাদের স্ত্রী, বাড়িঘর এবং ঘোড়ার মাঝে অশুভের লক্ষণ আছে। {বুখারী, হাদীস নং-৫০৯৩}

عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: ذَكَرُوا الشُّؤْمَ عِنْدَ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، فَقَالَ النَّبِيُّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «إِنْ كَانَ الشُّؤْمُ فِي شَيْءٍ فَفِي الدَّارِ، وَالمَرْأَةِ، وَالفَرَسِ

হযরত আব্দুল্লাহ বিন ওমর রাঃ থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূল সাঃ এর কাছে লোকেরা অশুভ স্ত্রীলোক সম্পর্কে আলোচনা করলে তিনি বলেন, কোন কিছুর মধ্যে যদি অপয়া থাকে, তা হলো বাড়ি ঘর, স্ত্রীলোক এবং ঘোড়া। {বুখারী, হাদীস নং-৫০৯৪}

عَنْ أُسَامَةَ بْنِ زَيْدٍ رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا، عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ قَالَ: «مَا تَرَكْتُ بَعْدِي فِتْنَةً أَضَرَّ عَلَى الرِّجَالِ مِنَ النِّسَاءِ»

হযরত উসামা বিন জায়েদ রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ বলেন, পুরুষের উপরে মেয়েলোকের অপেক্ষা অন্য কোন বড় ফিতনা আমি রেখে গেলাম না।{বুখারী, হাদীস নং-৫০৯৬}

 

বুখারীর শিরোনাম তারপর কুরআনের আয়াত এবং উপরে দেয়া তিনটি হাদীস একত্রে দেখলে পরিস্কার হয়ে যায় আসলে মহিলাদের অপয়া এবং অশুভ লক্ষণ বলতে কি বুঝানো হয়েছে?

শেষ হাদীসটিতে দেখুন। রাসূল সাঃ বলেছেন, পুরুষদের উপর সবচে’ বড় ফিতনা হল নারী।

এ নারীর কারণেই মানুষ খুনের মত ঘটনা ঘটায়। বাড়ি ঘর ছেড়ে দেয়। পিতা-মাতার অবাধ্য হয়। অনেকে অবৈধ উপায়ে উপার্জন করে। মিথ্যা বলে। গোনাহে লিপ্ত হয়। জিনায় লিপ্ত হয়।

তাহলে যে নারীর কারণে মানুষ গোনাহে প্রলুব্ধ হয় কেবল সেই নারীই অপয়া এবং অলুক্ষুণে। সকল নারীকে এখানে বুঝানো হয়নি।

ঘোড়াকেও অলুক্ষুণে বলা হয়েছে। অথচ ঘোড়া দিয়ে জিহাদ করা হয়। রাসূল সাঃ নিজেও ঘোড়ার পিঠে চড়েছেন। তাহলে এর দ্বারা উদ্দেশ্য কি? উদ্দেশ্য হল যে ঘোড়া দিয়ে দ্বীনী বা দুনিয়াবী কোন কাজ করা যায়  না, তাই অপয়া এবং অলুক্ষূনে ঘোড়া।

ঘরবাড়িকেও অলুক্ষুনে বলা হয়েছে। এর মানে হল, যে ঘর নির্মানের লোভ মানুষকে অসৎ পথে উপার্জন করতে প্রলুব্ধ করে সেটিই অপয়া এবং অলুক্ষুনে ঘর।

মোটকথা, আমাদের সমাজে প্রচলিত অলুক্ষনে বা অপয়া পরিভাষা হাদীসে উদ্দিষ্ট নয়। আমাদের সামাজিক পরিভাষায় অপয়া বা অলুক্ষুনে বলা হয় এমন ব্যক্তিকে, যার দ্বারা মানুষের ক্ষতি হয়। যাকে অনুকরন করলে বা যার পরামর্শ 

 মানুষের ধ্বংস নেমে আসে। এমন আকিদা রাখা জায়েজ নেই। কোন ব্যক্তিই আমাদের পরিভাষায় যে অপয়া বা অলুক্ষুনে বলা হয় সেই অপয়া বা অলুক্ষুনে নয়।

হাদীসে যে অপয়া বা অলুক্ষুনের কথা বলা হয়েছে এর দ্বারা উদ্দেশ্য হল যার মাধ্যমে গোনাহে লিপ্ত হয় মানুষ। যার কারণে মানুষ গোনাহ করতে প্রলুব্ধ হয়।

হাদীসের দ্বারা কোন নারী অপয়া প্রমাণিত?

যে নারী স্বামীকে গোনাহ করতে প্রলুব্ধ করে। দ্বীন পালন করতে বাঁধা দেয়। হারাম উপার্জন করতে বাধ্য করে। স্বামীর হক আদায় করে না। স্বামী ও পরিবারের হক আদায় করে না।

এমন নাফরমান ও অবাধ্য নারী হল হাদীসের বক্তব্য অনুপাতে অপয়া বা অলুক্ষুনে।

এমন নাফরমান ও অবাধ্য নারী না হয়ে ভাল ও সাধ্বী নারী কিছুতেই অপয়া বা অলুক্ষুনে নয়।

রাসূল সাঃ অনেক স্থানে নারী জাতির প্রশংসা করেছেন। নারীর পায়ের নিচে সন্তানের বেহেশত বলেছেন। যার পায়ের নিচে বেহেশত সে কি করে অপয়া হতে পারে?

তাছাড়া স্ত্রীদের সাথে ভাল ব্যবহার, উত্তম আচরণ করতে রাসূল সাঃ পরিস্কার ভাষায় নির্দেশ দিয়েছেন।

عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: لَا يَفْرَكْ مُؤْمِنٌ مُؤْمِنَةً، إِنْ كَرِهَ مِنْهَا خُلُقًا رَضِيَ مِنْهَا آخَرَ

হযরত আবূ হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, কোন মুমিন পুরুষ যেন কোন মুমিন নারীকে শত্রু মনে না করে। কেননা, যদি সে তার এক কাজকে নাপছন্দ করে, তার অপর কাজকে পছন্দ করবে। {সহীহ মুসলিম, হাদীস নং-১৪৬৯, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৮৩৬৩}

عَنْ عَائِشَةَ قَالَتْ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” إِنَّ مِنْ أَكْمَلِ الْمُؤْمِنِينَ إِيمَانًا، أَحْسَنَهُمْ خُلُقًا، وَأَلْطَفَهُمْ بِأَهْلِهِ

হযরত আয়শা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, মুমিনদের মধ্যে সেই ব্যক্তি অধিকতর পূর্ণ মুমিন, যে ব্যক্তি সদাচারী এবং নিজ পরিবারের জন্য কোমল এবং অনুগ্রহশীল। {সুনানে তিরমিজী, হাদীস নং-২৬১২, মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-২৪২০৪}

আমাদের সমাজে যাকে অলুক্ষুনে বা অপয়া বলা হয়। সেই বিশ্বাস জায়েজ নয়। এ বিষয়ে কয়েকটি হাদীস দেখা যেতে পারে-

 عَنْ أَبِي هُرَيْرَةَ، عَنْ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، قَالَ: «لَا عَدْوَى، وَلَا طَيْرَةَ،

হযরত আবু হুরায়রা রাঃ থেকে বর্ণিত। রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, সংক্রামক ব্যাধি এবং কুলক্ষণ বলতে কিছুই নেই। {মুসনাদুল হুমায়দী, হাদীস নং-১১৫০, বুখারী, হাদীস নং-৫৭০৭}

عَنْ عَبْدِ اللهِ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: ” الطِّيَرَةُ شِرْكٌ وَمَا مِنَّا إِلَّا، وَلَكِنَّ اللهَ يُذْهِبُهُ بِالتَّوَكُّلِ

হযরত আব্দুল্লাহ বিন মাসঈদ রাঃ বলেন, রাসূল সাঃ ইরশাদ করেছেন, অলক্ষী বা কুলক্ষণ মনে করা শিরক। এটি আমাদের আকিদা নয়। তবে কারো মনে এরূপ দুর্ভাবনার উদয় হলে আল্লাহর উপর পূর্ণ ভরসা করলে তা দূরিভূত হয়ে যাবে। {মুসনাদে আহমাদ, হাদীস নং-৩৬৮৭, সুনানে ইবনে মাজাহ, হাদীস নং-৩৫৩৮, সুনানে আবু দাউদ, হাদীস নং-৩৯১০}

এ সকল হাদীস একথাই প্রমাণ করছে যে, আসলে নারীদের মাঝে মূলত আমাদের সমাজের প্রচলিত কুলক্ষণ বিশ্বাস করা জায়েজ নয়। হাদীসে কুলক্ষণ বলতে বুঝানো হয়েছে।

যে নারীর কারণে সংসারে অশান্তি আসে। যার কারণে পরিবারে ধর্মপালন কষ্টকর হয়ে যায়। যার কারণে স্বামী গোনাহের কাজ করতে বাধ্য হয়। যার কারণে সমাজের যুবকরা খারাপ কাজে লিপ্ত হয়। লম্পট হয়। স্বামী হারাম উপার্জন করতে বাধ্য হয়। এমন নারীকে হাদীসে অপয়া এবং অলুক্ষুনে বলা হয়েছে। সকল নারীকে নয়।

 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...