expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর, ২০২৪

কোরআন আল্লাহর বানী হলে সূরা ফাতেহার শুরুতে শয়তানের নিকট হতে কেনো পাওনাহ চাওয়ার কথা বলা হয়েছে?




প্রশ্নঃ- সূরা ফাতিহায় শয়তান থেকে পানাহ চাওয়া হয়েছে আবার আল্লাহর প্রশংসা করা হয়েছে। যদি আল্লাহর বাণী হয় তবে আল্লাহ শয়তান থেকে বাঁচার দোয়া কার কাছে করলেন আবার নিজের প্রশংসা নিজে করে কার কাছে সাহায্য চাইলেন?


জবাব:
একটা সহজ কথা এই জ্ঞান পাপী নাস্তিকরা বুঝতে চায় না, সেটা হলো আল কোরআন হলো আল্লাহর উপদেশ বানী জ্বিন ও মানব জাতির প্রতি, তার মানে এখানকার সকল আদেশ আল্লাহ তা'লার প্রতি প্রযোয্য না, এই আদেশ নামা মানব ও জ্বিন জাতির প্রতি প্রযোয্য। অর্থাদ সকল আদেশ নামা আদেশ দাতার জন্য প্রযোয্য নয়, আদেশ নামা অধিনস্তদের জন্যই প্রযোয্য থাকে৷ অর্থাদ এই মহা গ্রন্থ আলকোরআন সৃষ্টি কর্তার নিকট হতে সৃষ্টির প্রতি আদেশ। আর সূরা ফাতেহার শুরুতে শয়তান হতে আশ্রয় চাওয়ার জন্য যে আদেশ নামা দেওয়া হয়েছে সে আদেশটি সৃষ্টির প্রতি, এবং আশ্রয় চাইতে বলা হয়েছে স্রষ্টার নিকট।


এবার আসুন তাত্ত্বিক আলোচনা করি।
আল্লাহ তা‘আলার কালাম কুরআন মাজীদের প্রথম ও সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ এক অংশ হলো এ সূরা আল-ফাতিহা। এ সূরা সমগ্র কুরআন মাজীদের সার-সংক্ষেপ। পূর্ণাঙ্গ সূরা রূপে এটিই প্রথম নাযিল হয় এবং কুরআন মাজীদের প্রথমেই এর স্থান নির্ধারণ করা হয়। এজন্য এর নাম সূরা আল-ফাতিহা (প্রারম্ভিক সূরা) রাখা হয়েছে।
সূরাটি কুরআনের মূল, কুরআনের ভূমিকা ও ছালাতের প্রতি রাক‘আতে পঠিতব্য সাতটি আয়াতের সমষ্টি ‘আস-সাব‘উল মাছানী’ নামে ছহীহ হাদীছে ও পবিত্র কুরআনে বর্ণিত হয়েছে। যেমন আল্লাহপাক এরশাদ করেন, وَلَقَدْ آتَيْنَاكَ سَبْعاً مِّنَ الْمَثَانِيْ وَالْقُرْآنَ الْعَظِيْمَ ‘আমরা তোমাকে প্রদান করেছি বারবার পঠিতব্য সাতটি আয়াত ও মহান কুরআন’ (হিজর ১৫/৮৭)।
বিষয়বস্ত :
সূরা ফাতিহার মূল বিষয়বস্ত হ’ল দো‘আ বা প্রার্থনা। একারণেই এই সূরার অন্যতম নাম হ’ল ‘সূরাতুদ দু‘আ’। 

রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) এরশাদ করেন,
أَفْضَلُ الذِّكْرِ لآ إِلَهَ إِلاَّ الله ُوَأَفْضَلُ الدُّعَاءِ اَلْحَمْدُ ِللهِ ‘শ্রেষ্ঠ যিকির হ’ল লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ এবং শ্রেষ্ঠ দো‘আ হ’ল ‘আলহামদুলিল্লাহ’ বা সূরা ফাতিহা’।এর দ্বারা একথাই বুঝানো হয়েছে যে, মহাগ্রন্থ আল-কুরআন হ’তে ফায়েদা পেতে গেলে তাকে অবশ্যই উক্ত নিয়তে আল্লাহর নিকটে প্রার্থনা করতে হবে। এই সূরাতে বর্ণিত মূল দো‘আ হ’ল ৫ম আয়াত, إِهْدِنَا الصِّرَاطَ الْمُسْتَقِيْمَ ‘তুমি আমাদেরকে সরল পথ প্রদর্শন কর’! বস্ত্ততঃ সমস্ত কুরআনই উক্ত প্রার্থনার বিস্তারিত জওয়াব।
দো‘আর আদব :
অত্র সূরাতে দো‘আ করার আদব শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। ১ম হ’তে ৩য় আয়াত পর্যন্ত যার নিকটে প্রার্থনা করা হবে, সেই মহান সৃষ্টিকর্তা আল্লাহর প্রশংসা করা হয়েছে। অতঃপর ৪র্থ আয়াতে তাঁর প্রতি পূর্ণ আনুগত্য প্রদর্শন করা হয়েছে ও কেবলমাত্র তাঁর নিকট থেকেই সাহায্য কামনার নিশ্চয়তা প্রদান করা হয়েছে। অতঃপর ৫ম আয়াতে মূল দো‘আর বিষয়বস্ত্ত ছিরাতে মুস্তাক্বীম-এর হেদায়াত প্রার্থনা করা হয়েছে। ৬ষ্ঠ ও ৭ম আয়াতদ্বয় মূলতঃ ৫ম আয়াতের ব্যাখ্যা হিসাবে এসেছে। এইভাবে প্রার্থনা নিবেদন শেষে রাসূলুল্লাহ (ছাঃ) আমাদেরকে আল্লাহর নিকটে ‘আমীন’ বলে দো‘আ কবুলের আবেদন করতে বলেছেন। মোটকথা প্রথমে প্রশংসা ও আনুগত্য নিবেদন করার পরে দো‘আ পেশ করা হয়েছে। একইভাবে ছালাতের বাইরে আল্লাহর জন্য হাম্দ ও রাসূল (ছাঃ)-এর উপর দরূদ পেশ করার পরে দো‘আ করা হ’ল দো‘আর সুন্নাতী তরীকা।
সূরা আল-ফাতিহা মূলত একটি প্রার্থনা বিশেষ, যা আল্লাহ তা‘আলা মানুষকে শিক্ষা দিয়েছেন। অবশিষ্ট কুরআন হলো তাঁর পক্ষ থেকে এর জবাব, যার মধ্যে মানবকুলের জন্য সহজ-সরল ও সঠিক জীবন-পথের পুর্ণাঙ্গ ও বিস্তারিত বর্ণনা রয়েছে।
সূরা আল-ফাতিহা সঠিকভাবে অনুধাবনের পথ উন্মুক্ত করার এক সর্বোত্তম সহায়ক হলো সহীহ মুসলিমে সংকলিত আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু ‘আনহু কর্তৃক বর্ণিত একটি বিশুদ্ধ হাদীস।
তিনি বলেন: আমি রাসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে বলতে শুনেছি--
 আল্লাহ তা‘আলা বলেন: আমি সালাত (সূরা আল-ফাতিহা) আমার ও আমার বান্দাদের মধ্যে অর্ধেক অর্ধেক ভাগ করে নিয়েছি, আর আমার বান্দা যা চাইবে তা-ই তাকে দেওয়া হবে। বান্দা যখন বলে:
﴿ٱلۡحَمۡدُ لِلَّهِ رَبِّ ٱلۡعَٰلَمِينَ ٢﴾ [الفاتحة: ٢]
“সমস্ত প্রশংসা আল্লাহ রাব্বুল আলামীনের জন্য।’’ [সূরা আল-ফাতিহা, আয়াত: ২]
আল্লাহ তা‘আলা তখন বলেন: আমার বান্দা আমার প্রশংসা করলো।
যখন বান্দা বলে:
﴿ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ ٣﴾ [الفاتحة: ٣]
‘‘পরম করুণাময় অতি দয়ালু।’’ [সূরা আল-ফাতিহা, আয়াত: ৩]
তখন আল্লাহ বলেন: আমার বান্দা আমার গুণগান করলো।
যখন বান্দা বলে:
﴿مَٰلِكِ يَوۡمِ ٱلدِّينِ ٤﴾ [الفاتحة: ٤]
‘‘প্রতিফল দিবসের মালিক।’’ [সূরা আল-ফাতিহা, আয়াত: ৪]
তখন আল্লাহ বলেন: আমার বান্দা আমার মর্যাদা বর্ণনা করলো।
যখন বান্দা বলে:
﴿إِيَّاكَ نَعۡبُدُ وَإِيَّاكَ نَسۡتَعِينُ ٥﴾ [الفاتحة: ٥]
‘‘আমরা তোমারই ইবাদাত করি এবং তোমারই কাছে সাহায্য চাই।’’ [সূরা আল-ফাতিহা, আয়াত: ৫]
তখন আল্লাহ বলেন: এটা আমার ও আমার বান্দার মধ্যে বিভক্ত এবং বান্দার জন্য তা-ই রয়েছে যা সে চাইবে।
অতঃপর যখন বান্দা বলে:
﴿ٱهۡدِنَا ٱلصِّرَٰطَ ٱلۡمُسۡتَقِيمَ ٦ صِرَٰطَ ٱلَّذِينَ أَنۡعَمۡتَ عَلَيۡهِمۡ غَيۡرِ ٱلۡمَغۡضُوبِ عَلَيۡهِمۡ وَلَا ٱلضَّآلِّينَ ٧﴾ [الفاتحة: ٦، ٧]
‘‘আমাদের সরল পথ দেখাও। তাদের পথ যাদের তুমি নি‘আমত দিয়েছ, তাদের পথ নয় যারা গযবপ্রাপ্ত এবং পথভ্রষ্ট।’’ [সূরা আল-ফাতিহা, আয়াত: ৬-৭]
তখন আল্লাহ তা‘আলা বলেন: এসব তো আমার বান্দার জন্য এবং আমার বান্দা যা চাইবে তার জন্য তা-ই রয়েছে।(সহি মুসলিম)
প্রশ্ন হচ্ছে এখানে আউজুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ কেন আসল?
********************************************
প্রথম কথা হচ্ছে -
আউজুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ এই সূরার অংশ নয় বরং সকল সূরার পূর্বেই পড়ার বিধান রয়েছে।
২য়ত-
আউজুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহর রয়েছে বিশাল মাহাত্ম্য!
আউযুবিল্লাহর তাফসীর-
**********************
أَعُوذُ بِاللَّهِ مِنَ الشَّيْطَانِ الرَّجِيمِ.
“আমি আশ্রয় গ্রহণ করছি আল্লাহর কাছে বিতাড়িত শয়তান থেকে”।
এর অর্থ হলো: আমি আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা করি, তাঁর দরবারে নিরাপত্তা কামনা করি এ মানব শত্রু বিতাড়িত শয়তানের অনিষ্ট থেকে, যাতে সে আমার ধর্মীয় বা পার্থিব কোনো ক্ষতি সাধন করতে না পারে, আমি যে বিষয়ে আদিষ্ট তা সম্পাদনে সে যেন আমাকে বাধা দিতে না পারে এবং যা নিষিদ্ধ তার প্রতি সে যেন আমাকে উদ্বুদ্ধ করতে না পারে। কেননা যখন বান্দা সালাত, কুরআন তিলাওয়াত বা অন্য কোনো কল্যাণকর কাজের ইচ্ছা পোষণ করে থাকে, তখন এ শয়তান তাকে বিভ্রান্ত করার জন্য তৎপর হয়ে উঠে।
আর তা এ জন্য যে, আল্লাহর আশ্রয় প্রার্থনা ব্যতিরেকে আপনার পক্ষে শয়তানকে দূর করার কোনো উপায় নেই। আল্লাহ তা‘আলা বলেন:
﴿ۚ إِنَّهُۥ يَرَىٰكُمۡ هُوَ وَقَبِيلُهُۥ مِنۡ حَيۡثُ لَا تَرَوۡنَهُمۡۗ ﴾ [الاعراف: ٢٧]
‘‘সে (শয়তান) ও তার দলবল তোমাদের এমনভাবে দেখতে পায় যে, তোমরা তাদের দেখতে পাও না।’’ [সূরা আল-আ‘রাফ, আয়াত: ২৭]

সুতরাং আপনি যখন আল্লাহর কাছে শয়তান থেকে আশ্রয় প্রার্থনা করবেন এবং তাঁকে আঁকড়ে ধরবেন তখন তা সালাতের মধ্যে আপনার আন্তরিক উপস্থিতি বা একাগ্রচিত্ত হওয়ার একটি প্রধান কারণ হয়ে দাঁড়াবে। অতএব, আপনি এ বাক্যের মর্মার্থ ভালোভাবে অনুধাবন করবেন এবং অধিকাংশ লোকের ন্যায় শুধু মুখে মুখে তা ব্যক্ত করে ক্ষান্ত হবেন না।
 
বিসমিল্লাহ-এর তাফসীর-
***********************
﴿بِسۡمِ ٱللَّهِ ٱلرَّحۡمَٰنِ ٱلرَّحِيمِ﴾ ‘বিসমিল্লাহ’ (আল্লাহর নামে) এর অর্থ হলো: আমি এ কাজে -পড়া, দো‘আ বা অন্য কিছুই হোক নিয়োজিত হলাম আল্লাহর নামে, আমার শক্তি সামর্থ্যের বলে নয়, বরং এ কাজ সম্পাদন করতে যাচ্ছি আল্লাহ তা‘আলার সাহায্যে, তাঁর কল্যাণময় ও মহান নামের বরকত কামনা করে। দীনি ও পার্থিব প্রতিটি কাজের প্রারম্ভে এ ‘বাসমালাহ’ পড়তে হয়। সুতরাং যখন আপনি মনে করবেন যে, আপনার এ পড়া কেবল আল্লাহরই সাহায্য নিয়ে শুরু হচ্ছে, স্বীয় শক্তি সামর্থের তোয়াক্কা করে নয়, তখন তা আপনার অন্তরের উপস্থিতি ও যাবতীয় কল্যাণ লাভের পথে সমূহ প্রতিবন্ধক দূরীকরণে প্রধান সহায়ক হয়ে থাকবে।
সুতরাং এটা স্পষ্ট যে সূরা ফাতিহায় আউজুবিল্লাহ, বিসমিল্লাহ বলা ও প্রার্থনা করা অত্যন্ত যৌক্তিক ও যুক্তিসঙ্গত। নূন্যতম জ্ঞান সম্পন্ন ব্যাক্তি মাত্রই এটি বুঝলেও হাঁটুতে জ্ঞান নিয়ে চলমান নাস্তিকরা এটা বুঝার সামর্থ্য অর্জনে ব্যার্থ!


1 টি মন্তব্য:

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...