expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

শনিবার, ৩০ নভেম্বর, ২০২৪

গ্রামগুলো আজ মাকাল ফল




আমারা ছোট বেলা হতে এটা জেনে, শোনে ও দেখে বড় হয়েছি যে গ্রাম হলো শান্তির জায়গা, বিশেষ করে বাংলাদেশের গ্রাম গুলো। এখানে এক সময় ছিলো স্নিগ্ধতা, নম্রতা, ভদ্রতা আর ভালবাসায় ভরা একটা সমাজ। পাখির কলতান, নদীর প্রবাহমান স্রোত আর মানুষ গুলোর সারল্যতা। আজ আর এমনটা নাই। যারা এখনও গ্রামে আছে তারা বুঝতে না পারলেও যারা শহরে সারা বছর মানুষের কোলাহলে থাকে তারাই আজও এটা হৃদয় হতে অনুভব করে এবং বুঝতে পারে।

আপনি সারা বছর টাকার জন্য বাধ্য হয়ে দেশ বিদেশ হতে বছরে একবার যাবেন গ্রামে শান্তির জন্য, একটু হাফ ছেড়ে নি:শ্বাস ফেলার জন্য? উপায় নাই, শান্তি পাবেন না, এখন আর এই গ্রাম সেই গ্রাম নাই। আগে মুরব্বীরা বলতো গ্রামের মানুষ আগে স্বর্গে যাবে, আর এখন গেলে দেখবেন গ্রামের লোক গুলো এতই নীচু চিন্তভাবনা ধারন করে আদতে তারা স্রষ্টার নিকট ক্ষমা পাবে কিনা তাহাই অনিশ্চিত। 

গ্রামে এখন একজন ভদ্রলোক গেলে তাকে কিভাবে অপমান করে নিজের শ্রেষ্ঠত্ব জাহির করা যায় তা নিয়ে প্রতিযোগীতা করে একদল নিরক্ষর মানুষের দল, আরেক দল বসে থাকে বছরে একবার গ্রামে আসা লোকটাকে ঠকিয়ে কিছু টাকা আনার আশায়, আরেক দল বসে থাকে কোনো ভাবে তার বাসায় দরবার বসিয়ে তার বাড়ুতে কিভাবে শালীশ বসানো যায়। হিংসার আগুনে সুপ্ত আগ্নেয় গিরির মত গ্রামের মানুষ গুলোর হৃদয়, কিন্তু কাউকে বুঝতে দেয় না।

আমার মতে সামর্থ্য থাকলে কোন ভদ্রলোকের কখনোই গ্রামে থাকা উচিত না। এখানে বেশিরভাগ মানুষ এতটাই টক্সিক যে তারা তাদের ব্যাক্তিগত জীবনের থেকে আপনার জীবন নিয়ে বেশি চিন্তিত। আপনার চুল বড় কেন, আপনি বোরকা পড়েন না কেন, অনার্সে পড়লেও মেয়ের বিয়ে দেয়না কেন, মেয়ের ভাই নাই কেন, বয়স ২৫ পেরিয়ে গেলেও এখনো জব হয়না কেন, আপনার ব্যাচমেট কেউ বিদেশে গিয়ে লাখ লাখ টাকা কামায় আপনি এখনো পড়াশুনা করেন কেন এসব আজগুবি বিষয় নিয়ে তাদের অনেক টেনশন।মাঝে মাঝে দেখবেন আপনার নিজের ফ্যামিলিও যেসব বিষয় নিয়ে চিন্তিত নয় অন্যান্য মানুষ এর থেকে বেশি চিন্তিত।

গ্রামের টক্সিক বিষয়গুলোর আরেকটি বড় পার্ট হচ্ছে ঝগড়া, আপনি এমন কোনো বাড়ি খুজে পাবেন না যেখানে জায়গা-জমি নিয়ে কোনো বিরোধ নেই।প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে এই ফ্যামিলি সেই ফ্যামিলির সাথে কোনো একভাবে ঝগড়া লেগেই থাকে। ১ ইঞ্চি জায়গা নিয়ে মাথা ফাটাফাটি,অশ্লিল ভাষায় গালাগালি,মামলা মোকদ্দমা চলতেই থাকে।

এইজন ওইজনের নামে গোপনে প্যাঁচ লাগিয়ে ঝগড়া বাদিয়ে দেওয়া,কাউকে পছন্দ নাহলে তার নামে জায়গায় অজায়গায় বদনাম রটিয়ে দেওয়া,এমনকি বিয়ে আসলেও গোপনে প্যাঁচ লাগিয়ে দেওয়া গ্রামের বেশিরভাগ মানুষের যেনো একটি নিত্যদিনের কাজ।

গ্রামের বেশিরভাগ মানুষ ই এতটা অজ্ঞ যে তারা সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার বুঝেনা, ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার বুঝেনা, এমবিবিএস ডাক্তার এর মানে বুঝেনা। তাদের কাছে সরকারি চাকুরী মানে পুলিশ(হউক কনস্টেবল), সেনাবাহিনী (হউক সৈনিক), প্রাইমারি স্কুলের শিক্ষক এসব ই। আর একজন নার্সিং এ পড়া স্টুডেন্টকে যেমনভাবে ডাক্তার ভাবে তেমনি সরকারি মেডিকেলে এমবিবিএস পড়ুয়া কাউকেও সেরকম ই ভাবে। এলাকার একটা কলেজে থেকে ডিগ্রি পাশ করা মেয়ে, আর ইউনিভার্সিটি থেকে মাস্টার্স করা একই জিনিস ভাবে। তাদের কাছে আপনি সরকারের কত গ্রেডের চাকুরী করেন তার থেকে গুরুত্বপূর্ণ আপনি প্রাইভেট জব করেন নাকি সরকারি। আপনি যদি প্রাইমারি স্কুলের পিওন ও হোন তাও মেয়ে বিয়ে দিতে রাজি,কিন্তু বেসরকারি যতো ভালো চাকুরী ই করেন,আমতা আমতা করবেই। তাদের কাছে আপনার উচ্চশিক্ষা গ্রহনের থেকে আপনার সে বন্ধুর দাম বেশি যে এসএসসির পর সৈনিক/কনস্টেবল/ বিদেশে বা কোনো কাজে চলে গেছে।

আর টক্সিসিটির সবচেয়ে বিরক্তিকর পার্ট হচ্ছে গ্রামের চায়ের দোকানগুলো। গ্রামের প্রতিটি চায়ের দোকানে চায়ে চুমুক উঠেই গীবত দিয়ে। যেখানে কার বৌয়ের বাচ্চা হচ্ছেনা, কার বৌ প্র‍্যাগন্যান্ট থেকে শুরু করে রাজনীতি, অর্থনীতি, খেলাধুলা কোনোটার ই গবেষণা বাকি থাকেনা। যার অধিকাংশই আবার গুজব।

জন্ম থেকেই গ্রামের পলিমাটি গায়ে মেখেও,একজন খাঁটি গ্রাম্য মানুষ হয়েও এ কথাগুলো লিখার একমাত্র কারন তিক্ততা,কাউকে কষ্ট দেওয়ার জন্য লিখিনি, লিখেছি জীবনের বাস্তব উপলব্ধি গুলো শেয়ার করতে।

এখন গ্রামে নতুন একটা ট্রেন্ড চালু হয়েছে, গ্রামের যুব সমাজ ভদ্রলোজ গুলো বাড়ি গেলে তার সমস্যা খোঁজে বের করে তাকে সন্মানিত করার নামে গ্রামে থাকা দালাল গুলোর সাথে কৌশলে জড়িয়ে দেয়, তারা ভাবে এই ভদ্রলোকটা বছরে একদিন আসে, আর গ্রাম্য দালাল গুলা সারা বছর তাদের পাশে থাকে, তাই দালালদের দালালী করে এই যুবক গুলা ভদ্রতার মুখোশ পড়ে আসল ভদ্রলোককে অপমান করে।

ভার্সিটি পড়ুয়া / বেকার যে কেউ আশা করি কথাগুলো রিয়েলাইজ করতে পারবে। কারন ঈদের ছুটিটা সবার জন্য সুখকর নয়!

তাইতো বলি গ্রাম আর আগের সুজলা, সুফলা, সশ্য শ্যামলা, সারল্যতায় ভরা সেই স্বর্গ আর নাই, কেবল মাত্র গ্রাম গুলো আজ মাকাল ফল। 

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...