"আল্লামা মওদূদী রহঃ এর বিরুদ্ধে সমালোচনার প্রকৃত কারণ"
আমরা দেওবন্দ বা কওমী মাদ্রাসা থেকে ফারেগ হওয়া সকল বন্ধদের কে বিনীত ভাবে বলতে চাই যে, দেওবন্দের কিছু কংগ্রেস পন্থী ওলামারা যদি রাজনৈতিক বা ব্যক্তিগত হিংসার বশে মওদূদীর বিরুদ্ধে ফতোয়া দেওয়ার প্রয়োজন মনে করে,
তাহলে তুমি কিসের প্রয়োজনে সে ফতোয়াকে যাচাই বাছাই ছাড়াই প্রচার করছ। দেওবন্দ বা কওমী মাদ্রাসা থেকে দ্বীন শিখার পরিবর্তে যদি মুরব্বি পূজাই শিখে এলে, তবে সেটা কি কোন কল্যাণকর
হতে পারে। যদি মাওলানা মওদুদী আলেমই না হবেন তাহলে তাকে দেওবন্দের মুখপাত্র, মাসিক ইসলামী পত্রিকার সম্পাদক বানানো হলো কেন। মাওলানা মওদুদী ছিলেন সহজ সরল একজন আলেম সাংবাদিক। তার লেখার স্টাইল এবং যুক্তি প্রমান ও জ্ঞানের গভীরতা সকল আলেম সমাজের লোকের কাছে পৌছে গিয়েছিল। এ কারনে দেওবন্দ মাদ্রাসা থেকে প্রকাশিত, দেওবন্দ ওলামাদের সংগঠন জমিয়তে আল ইসলামের মাসিক মুখপাত্র ‘ আল-জমিয়াত’ প্রত্রিকার সম্পাদক হিসেবে মাওলানাকে নিয়োগ দেয়া হলো। যারা বর্তমানে মওদূদীকে আলেম মানতে নারাজ তাদের কাছে আমার প্রশ্ন হলো, বর্তমান হাটহাজারী থেকে প্রকাশিত মাসিক মুইনুল ইসলামের সম্পাদক কি একজন জাহেল বা আধুনীক শিক্ষিত কে বানানেরা কল্পনাও কেউ করতে পারেন। অথবা বর্তমান আল কাওসার পত্রিকার সম্পাদক কি একজন জাহেল হতে পারেন। তখনকার দেওবন্দ থেকে প্রকাশিত কোন দ্বীনি প্রত্রিকার সম্পাদক কোন আলেম ছিলেন না এমন দাবি যারা করেন তারা মুলত তাদের আকাবারদের কে মুর্খ এবং জাহেল হিসেবে ঘোষনা করছেন। কেননা তারা তো এত মুর্খ ছিলেন যে, শত শত ওলামাদের মুখপাত্র এবং তাদের পক্ষ থেকে প্রকাশিত প্রত্রিকার সম্পাদক এমন একজন কে বানানো হয়েছিল যিনি আলেম ছিলেন না, সাধারন শিক্ষিত ছিলেন। দেওবন্দ ওলামাদের একমাাত্র সংগঠন জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের মুখপাত্র আল জমিয়ত পত্রিকার সম্পাদনার ভার পড়ল মাওলান মওদূদীর ওপর। আল জমিয়ত পত্রিকাটি মুলত দেওবন্দ আলেমদের সংগঠন জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের কর্ম সুচি প্রচার প্রশার করার জন্য ছাপানো হতো। তৎকালিন দেওবন্দের বেশির ভাগ নেতৃত্বস্থানীয় আলেমরা কংগ্রেসের কট্টর সমর্থক ছিলেন এবং জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দ ছিল কংগ্রেসের সহযোগী সংগঠন। বৃটিশ বিরোধী আন্দোলনে কংগ্রেসের লেজুর বৃত্তি করাই ছিল এই ওলামা সংগঠনটির একমাত্র কাজ। আজকের বাংলাদেশ আওয়ামী ওলামা লীগের যেই রাজনৈতিক এবং নৈতিক পজিশান, তৎকালিন জমিয়াতে ওলামায়ে হিন্দেরও সেই একই পজিশান ছিল। কংগ্রেসের লেজুর বৃত্তি করাটা যেন জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের দায়িত্ব হয়ে গিয়েছিল। এখনো এই দলটির ইশারায়আবাংলাদেশের কিছু ইসলামী দল আলেম ওলামাদের মধ্যে বিভেদ তৈরিতে ভুমিকা রাখছেন। উল্লেখ্য না করলে ভূল হবে যে, তৎকালে কংগ্রেসের নেতৃত্বে ছিলেন মুসলমানদের চরম দুশমন হিসেবে চিহিত মহাত্মা গান্ধী। গান্ধির অহিংস আন্দোলন ছিল মুসলমানদের জিহাদের বিপরিতে প্রপাগান্ডা মুলক এক চরম বিদ্ধেষ ভাবাপন্ন সাম্প্রদায়িক আন্দোলন, যদিও তা অহিংস শব্দের আড়ালে ডেকে রাখা হয়েছিল।বএই আন্দোলন চলাকালে এক মুসলমান কতৃক তাদের এক নেতাকে -যার নাম ছিল শ্রদ্ধানন্দ -হত্যার অপরাধে সারা ভারত জুরে যে দাঙ্গা হয়েছিল তার ভিতর ঘী ঢেলেছিল গান্ধির,সেই নিকৃষ্ট উক্তি-” মুসলমানদের ইতিহাস থেকেবতলোয়ার আর রক্তের গন্ধ ভেসে আসে।” অবাক করা বিষয় হচ্ছে তখন কিন্তু জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের দায়িত্বে ছিলেন এমন সব ওলামারা যাদের তাকওয়া আর বুজুর্গীর ডংকা সারা ভারতীয় উপমহাদেশে বাজত। তাদের মধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য ছিলেন, মাওলানা আশরাফ আলি থানবি, মুফতি মোহাম্মদ শাফী, মাওলান আহমেদ হুসাইন মাদানী, মাওলানা আবুল কালাম আজাদ, মাওলানা মুফতি ফয়জুল্লাহ রহ সহ দেওবন্দের বিশিষ্ট আলেম গন। জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের তৎকালিন সভাপতি ছিলেন মাওলানা হুসাইন আহমেদ মাদানী এবং সেক্রেটারি হিসেবে ছিলেন মাওলানা আবুল কালাম
আজাদ। কিন্তু আশ্চর্য্যরে বিষয় হচ্ছে মহাত্মা গান্দির এই নিকৃষ্ট উক্তির পরে যখন ব্যাপক হারে মুসলমান হত্যা করা শুরু হলো এবং ইসলামী জিহাদের অপব্যাখ্যা করে জিহাদকে সন্ত্রাস আখ্যা দেওয়া হতে লাগল, তখন এই বুজুর্গদের কারো অন্তরে আল্লাহর দ্বীনের জন্য কোন মায়া লাগেনি এবং তারা কংগ্রেস ত্যাগ করার দরকারও মনে করেননি। কংগ্রেসের সাথে সংযুক্ত থাকা যাদের কাছে বৈধ ছিল, আজকের যুগে তাদের খলিফাদের কাছে নারী নেতৃত্ব্য আরো খারাপ হয়ে গেছে আবার শাপলা চত্বরে গাদের কর্মীদের হত্যার পর লাশ গুম করেও নারী নেতৃরা এখন কওমী জননী। যদিও হিন্দু নেতার নেতৃত্বে আন্দোলন করতে কোন
সমস্যা হয়নি। মহাত্মা গান্ধির কংগ্রেসের পরিচালিত অহিংস আন্দোলন ছিল মুসলমানদের বিরুদ্ধে একটি প্রকাশ্য যুদ্ধ কিন্তু দেওবন্দ কংগ্রেস পন্থী আলেমদের কাছে তা ছিল একেবারে সহনীয় কারন তাদের কাছে দেওবন্দ মাদ্রাসার হেফাজত এবং নিরাপত্তাই মুখ্য ছিল। মুসলমানদের অধিকার বা ইজ্জত তখন প্রধান্য পায়নি। আমাদেরববর্তমান মুরব্বিদের কাছে আমাদের প্রশ্ন হচ্ছে একজন হিন্দুর নেতৃত্বে দলন করা বা তার দলের অংগ সহযোগী হয়ে আন্দোলন করার সময় কি এসব ফতোয়া মনে ছিল যা তারা আজকে বলছেণ নারী নেতৃত্বের সাথে জোট বদ্ধ হয়ে স্বৈরাচার হটানোর আন্দোলন নাজায়েজ। জিহাদের বিরুদ্ধে সারা ভারত জুরে যখন এক ধরনে প্রপাগান্ডা চলতে লাগল ঠিক তখনি দিল্লী জামে মসজিদের খতিব তার জুমার খোতবায় আক্ষেপের সুরে বলছিলেন যে, মুসলমানদের মধ্যে এমন কোন নওজোয়ান আল্লাহর সৈনিক কি নেই যে মুশরিকদে এই প্রপাগান্ডার দাঁত ভাংগা জবাব দিতে পারে। মাওলানা মওদূদী বলেন, আমি সেই মসজিদে তখন অবস্থান করছিলাম এবং আমি মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলাম যে, কেউ করুক আর না করুক আমি এই দায়িত্ব পালন করবো। সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মাওলানা লিখে ফেললেন তার প্রথম বই- জিহাদ ফিল ইসলাম। মহাত্মাগান্ধির প্রচারিত অহিংস আন্দোলন যে ইসলামের শিক্ষার বিপরীত তার দাঁত ভাঙ্গা জবাব ছিল জিহাদ ফিল ইলসলাম। গ্রন্থটি প্রকাশ হওয়াতে দুটো কাজ হলো। প্রথম হচ্ছে মুশরিকদের প্রচারনারনপ্রকৃত জবাব দেয়া হলো এবং জিহাদ সম্পর্কে সঠিক মাসয়ালা বের হয়ে এলো। পুরো গ্রন্থটি পত্রিকার মাধ্যমে ধারাবাহিক ভাবে প্রচার করা হয়েছিল। অন্যদিকে এই বই রচনা করতে গিয়ে যে মাওলানা মওদূদীকে শত শত কিতাব পড়তে হয়েছিল। এনহিসেবে তার কাছে গোটা ইসলামের চিত্র ফুটে উঠলো। ইসলামকে তিনি নতুন ভাবে জানার সুযোগ পেলেন। তার জ্ঞান রাজ্যের সিমানায় নতুন এক রাজত্ব্য ঠাই করে নিল। তিনি মুগ্ধ হয়ে গেলেন। তিনি তার কলমের ব্যবহার সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিয়ে নিলেন। নিজের বড় ভাইর সাথে পরামর্শ করে বললেন যে, মুসলমানদের সামনে যে মস্তবড় বিপদ আসছে সেই বিপদ থেকে তাদের সাবধান
করা জরুরী। যে মহা প্লাবনের সংকেত আমি পাচ্ছি তা থেকে একজন মুসলমানকে যদি হেফাজত করতে পারি তাহলেও আমারআপ্রচেষ্টা র্স্বাথ্যক হবে। উল্লেখ্য যে, পাকিস্তান আন্দোলন এবং তার পরবির্ত দিনের মুসলমানদের ভবিষ্যত নিয়ে তিনি যে, আগাম ঘোষনা করেছিলেনবতা অক্ষরে অক্ষরে সত্যে পরিণত হয়েছে। আন্দোলনের মুখে পাকিস্তান কায়েমআহয়েছে ঠিকই কিন্তু যে ইসলামের নাম নিয়ে তাকে প্রতিষ্টা করা হয়েছিল, সেই ইসলামী রাষ্ট আর ইসলামী বিধান কে খোদ মুসলমানরাই অস্বীকার করে এবং প্রাশ্চাত্যের অনুকরনে একটি সংবিধান কায়েম করা হয়। পাকিস্তানের মধ্যে যে অস্থিরতা আজ বিরাজমান, তা সেদিনের সেই পাপের ফল। এ কারনে মাওলানা মওদূদী সেদিনবঘোষনা করে দেন যে,বআজকে থেকে আমার কলম যদি কোন একটি অক্ষরও লেখে তাও আল্লাহর কালাম এবং তার দ্বীনের প্রতিনিধিত্ব করবে আর তা কেবল আল্লাহর জন্যই হবে। কংগ্রেসের সমস্ত সমর্থকদের কাছে এমন কি কংগ্রেস পন্থী আলেমদের কাছেও মাওলানা মওদূদী অত্যান্ত বিপদ জনক ছিলেন। কারণ তারা দেখেছেন যে, মওদূদীর লেখার ধরন প্রমান করছে যে, তিনি তার কলমের কাচি থেকে ইসলামের নামে প্রচলিত জাহেলীয়াতের একটি অংশকেও ছাড় দেবেন না। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন যে, ইসলামী জিহাদের ওপর এমন প্রামন্য কিতাব মুসলিম জাহানে দ্বিতীয়টি লেখা হয়নি। সেই থেকে শুরু মাওলানা লেখার কাজ। মাওলানা নিজে স্বীকার করেছেন যে, উক্ত কিতাবটি লেখার পরে আমি ভিতর থেকে অনুভববকরতে লাগলাম যে আল্লাহ হয়তোআআমার ভিতর কিছু প্রতিভা দিয়েছেন এবং আমাকে এ কাজ অবশ্যই চালিয়ে যেতে হবে। উক্তবকিতাবটি লেখার পরে মুসলমানদের বিরুদ্ধে মুশরিকদের দেয়া অপবাদ সাময়িক সময়েরবজন্য বন্ধ হয়ে গেল ঠিক কিন্তু তারা অপেক্ষা করছিল মোক্ষম সুযোগের যাতে এর বদল তারা নিতে পারে।এরি মাঝে শুরু হয়ে গেল পাকিস্তান কায়েমের আন্দোলন।হিন্দুদের অত্যাচার নির্যাতন থেকে মুক্তি পেতে মুসলমানরা নিজেদের আলাদা আবাস ভুমির দাবি করে বসল এবং পাকিস্তান কায়েমেরবআন্দোলন একটা অবস্থান তৈরি করতে সক্ষম হলো। মুসলমানরাবএক যোগে এই আন্দোলনে একাত্মতা প্রকাশ করতে লাগল। মাওলানা মওদূদী যদিও জানতেন যে, যারা ইসলামের নামে পাকিস্তান কায়েমের আন্দোলন করছে তারা কখনোই পাকিস্তানে ইসলাম কায়েম করবে না তবুও তিনি এই নৈতিক ভাবে আন্দোলনে যোগ দিয়েছিলেন। আন্দোলনে যোগ দেয়ার আরো একটি কারন হিসেবে মাওলানা নিজেই বলছেন যে, কোন এক জায়গা থেকে ট্রেনে আসার পথে তিনি দেখলেন যে, হিন্দু জমিদার দের কে মুসলমানরা মাথা নিচু করে প্রনাম করে যা একেবারে সিজদার মতো। তিনি তখনই সিদ্ধান্তবনিলেন যে, যে করেই হোক মুসলমানদের জন্য আলাদা আবাস ভুমি অবশ্যই থাকতে হবে এবং জিন্নাহর মুসলীম লীগের কার্যক্রমে তিনি সরাসারি যুক্ত না হলেও কথা আর লেখার মাধ্যমে তার সমর্থন করে যেতে লাগলেন। পাকিস্তান কায়েমের আন্দোলনে মুসলমানদের কে বিভ্রান্ত করতে হিন্দু কংগ্রেস নেতারা ব্যবহার
করলেন মুসলমানদের সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠ দেওবন্দ মাদ্রাসা মোহতামিম কে। একদিন দিল্লীর জামে মসজিদে নামাজ পড়াতে গিয়ে দেওবন্দের মোহতামিম, জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের সভাপতি মাওলানা আহমেদ হুসাইন মাদানী জুমার খুতবায় অত্যান্ত স্পষ্ট করে বললেন যে, মুসলমানদের আলাদা আবাস ভমির
দাবি করা একটি মারাত্মক ভুল এবং তিনি এও বললেন যে, হিন্দু মুসলমান এক জাতী হয়ে এই উপমহাদেশে বাস করতে পারে। এ বিষয়ে তিনি একটি বড় ভাষন প্রদান করেন। মাওলানার সেই ভাষন প্রথমে লিফলেট পড়ে বই আকাড়ে প্রকাশ করা হয়। মাদানীর এই বক্তব্য লিফলেট আকারে হিন্দুরাও প্রচার করতে লাগল। মহাত্মা গান্দির কংগ্রেসের এই চালে জিন্নাহর মুসলীম লীগ কোনাঠাসা হয়ে পড়ল। যেহেতু আহমেদ হুসাইন মাদানী মাওলানা শফীর মত উপমহাদেশের একজন বিখ্যাত আলেম তাই তার কথায় মুসলমানরা পেরেশান হয়ে পরল কিন্তু কেউ এর প্রতিবাদ করার সাহস করলনা। কারন দেওবন্দের মোহতামিমের বিরুদ্ধে কথা বলার স্পষ্ট অর্থ হচ্ছে নিজেকে ফতোয়ার বানে জর্জরিত করা। ইতিহাসের পাতায় এ ঘটনাকে ওয়ান নেশন এন্ড টু নেশন থিউরি নামে আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। যারা ইতিহাসের প্রতি আগ্রহ রাখেন তারা এ বিষয়ে ভালো করেই জানেন। মাওলানা মওদূদীকে জমিয়তে ওলামায়ে হিন্দের পক্ষ থেকে বলা হলো, আল- জমিয়াত পত্রিকা মারফত এই হিন্দু মুসলমান এক জাতি তত্ত্বের ওপর লেখা লেখনীর মাধ্যমে প্রচারনা চালানোর জন্য। মাওলানা মুওদূদী সাফ জবাব দিয়ে দিলেন যে, আল্লাহ তাকে যদি সামান্য পরিমান মেধা শক্তি দিয়ে থাকেন তাহলে তা কেবলমাত্র মুসলমানদের উপকারের জন্য দিয়েছেন এবং জীবন বাকি থাকতে তিনি মুসলমানদের স্বার্থ্যরে বিরুদ্ধে এক কলম লিখার জন্য প্রস্তুত নন। জমিয়তের এই ঘোষনা শুনার পর তাদের পত্রিকায় আর এক মুহুর্ত্য কাজ করা সমীচিন মনে করেননি। তিনি আল জমিয়তের কাজ ছেড়ে দিয়ে তরজমানুল কোরআন পত্রিকার দায়িত্ব্য নেন এবং শর্ত দিয়ে দেন যে, ইসলাম প্রচারে তাকে কোন প্রকার বাধা দেয়া যাবেনা। পরবর্তিতে এই একটি পত্রিকা ভারত উপমহাদেশেরবইতিহাসে ইসলাম আর মুসলমানদের মুখপাত্র হিসেবে স্বিকৃতি পেয়ে যায়। মাওলানা আহমেদ হোসাইন মাদানির বক্তব্য যখন পাকিস্তান কায়েমের আন্দোলনে বিরাট বাঁধা হয়ে দাড়াল, এ পর্যায়ে মাওলানা মওদূদীও তার স্বভাব সুলভ কারনে চুপ থাকতে পারলেন না। এ বিষয়ে আল্লাহর সুন্নাত হচ্ছে যখন দায়িত্ব্যশীলরা কোন কাজ আঞ্জাম দিতে ব্যর্থ হন, তখন আল্লাহ সেই জনপদে অন্যকোন ব্যক্তি বা জাতীকে উত্থীত করেন যে, মানুষকে ভয় না পেয়ে আল্লাহর ইচ্ছা পুরন করবেন এবং নিজ দায়িত্ব্য পালন করবেন। এটাই হচ্ছে আল্লহর ফিতরাত। ভারত উপমহাদেশের ইতিহাসে আমরা সেই সত্যের মঞ্চায়ন হতে দেখেছি। যে কাজ করার কথা ছিল বড় বড় বুঝুর্গ দাবি ওয়ালাদের অথচ তারা সবাই মহাত্মা গান্ধির নৌকায় চড়ে হাওয়া খাচ্ছিলেন আর সে কাজ আঞ্জাম দেয়ার জন্য আল্লাহ পছন্দ করে নিলেন আরেক জনকে।
যাহোক, যে চিন্তা সেই কাজ, মাওলানা হুসাইন আহমেদ মাদানীর লিফলেটের জবাবে মাওলানা মওদূদী লিখে ফেললেন তার অমর এক গ্রন্থ মাসালায়ে কওমীয়াত বা জাতীয়তা বাদ সমস্যা। এই বইতে মাওলানা মওদুদী নাম ধরে হোসাইন আহমেদ মাদানীর যুক্তির সমালোচনা করে কোরআন হাদিসের অসংখ্য দলিল দিয়ে প্রমান করে দেন যে, হিন্দু মুসলমান এক জাতী নয়, বরং তারা দুটি পরস্পর বিরোধী আলাদ দুটি জাতি। তাদের সভ্যতা এবং সংস্কৃতি সম্পর্ন আলাদা। তাদরে মাঝে মুসলমানরা কেবল সংখ্যা লগু হয়ে নির্যাতন সইতে হবে নতুবা নিজেদের আমলের পরিবর্তন করতে হবে। হিন্দু জমিদার দের হাত থেকে রেহাই পেতে মুসলমানদের জন্য নিজস্ব সংস্কৃতি গড়ে তোল ছাড়া কোন উপায় নাই। তাছারা তিনিও এও প্রমান করলেন যে, হিন্দু মুসলমানকে এক জাতি বলা একটি সুস্পষ্ট কুফরি কেননা ভাষার ভিত্তিতে জাতীয়তা হয়না। আমরা মাওলানা হোসাইন আহমেদ মাদানীর কিছু বক্তব্য তার বই থেকে কোড করছি। এক জাতিতত্বের পক্ষে তিনি কিভাবে আদা জল খেয়ে নেমেছিলেন তার কিছু নমুনা পাঠকরা উপলদ্ধি করতে পারবেন। মাদানী রহ লিখেন-“ মাওলানা মাদানী লিখেন- এক জাতিতত্বের বিরুদ্ধে এবং এটাকে ন্যায় নীতির বিপরিত প্রমান করার,জন্য যা কিছু লেখা হয়েছে এবং হচ্ছে তার ভূল ত্রুটি দেখিয়ে দেওয়া জরুরী মনে করছি।......।
আরেকটু এগিয়ে গিয়ে তিনি বলেন- একজাতীয়তা যদি এতই অভিশপ্ত এবং নিকৃষ্ট হয়, তবুও ইউরোপীয়রা যেমন এই অস্ত্র ব্যবহার করে মুসলমানদের বাদশাহী ও ওসমানীয়া খেলাফতের মুলচ্ছেদ করেছে, তাই এই হাতিয়ারকেই বৃটিশদের মুলচ্ছেদের কাজে ব্যবহার। করা মুসলমানদের কর্তব্য। মাওলানা মওদূদী মাদানীর এই বক্তব্যের জবাবে যে,,বিপ্লবী গ্রন্থ লেখেন, তার প্রারম্ভে তিনি লেখেন- দারুল উলুম দেওবন্দের প্রিন্সিপাল জনাব মাওলানা হুসাইন আহমেদ মাদানীর “একজাতিতত্ত্ব ও,ইসলাম” নামে একটি পুস্তক,রচনা করেছেন। একজন সুপ্রসিদ্ধ আলেম এবং পাক-ভারতের সর্বশ্রেষ্ঠ ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানের লিখিত এই বইটি জটিল জাতি সত্ত্বার সরল বিশ্লেষন এবং প্রকৃত ইসলামী দৃষ্টি ভংগির পূর্ন অভিব্যাক্তি হবে বলে আশা করেছিলাম। কিন্তু এই বইটি পাঠ করে আমাদের কে নির্মমভাবে হতাশ হতে হয়েছে এবং বইটি লেখকের পদমর্যাদার পক্ষে হানিকর বলে মনে হচ্ছে। বর্তমান যুগে অসংখ্য ইসলাম বিরোধী মতবাদ ইসলামের মুলতত্ত্বের ওপর প্রবল আক্রমন চালাতে উদ্যত, ইসলাম আজ তার নিজের ঘরেই অসহায়।
স্বয়ং মুসলমানগন দুনিয়ার ঘটনাবলী এবং সমস্যাবলী খালেস ইসলামী দৃষ্ঠিতে যাচাই করে না। বলাবাহুল্য নিছক অজ্ঞতার কারনে তারা এমনটি করছে। উপরুন্ত জাতীয়তার বিষয়টি এতই জটিল যে, তাকে সুস্পষ্ট রুপে হৃদয়ঙ্গম করার উপরেই একটি জাতির জীবন মরন নির্ভর করে। কোন জাতি যদি নিজ জতীয়তার ভিত্তিসমূহের সাথে সম্পূর্ণ ভিন্ন মুলনীতির সংমিশ্রণ করে, তবে সে জাতি হিসাবে দুনিয়ার বুকে বাচঁতে পারবে না। এই জটিল বিষয়ে লেখনী ধারন করতে গিয়ে মাওলানা হোসাইন আহমেদ মাদানীর মতো ব্যক্তিত্ত্বের নিজের দায়িত্ব্য সম্পর্কে পূর্ণ সচেতন থাকা বাঞ্চনীয় ছিল। কারণ তার কাছে নবীর আমানত গচ্ছিত আছে।”
এই বইয়ে আরেক জায়গায় মাওলানা মওদূদী লিখেন- আমি স্পষ্ট ভাষায় বলতে চাই, ওলামায়ে হিন্দের কাছে কাউন্সিল ও এসেম্বলীতে যোগ দেয়া একদিন হারাম এবং অন্যদিন হালাল বলে ঘোষনা করা একেবারে পুতুল খেলার শামিল হয়ে গেছে। গান্ধীজির একটি শব্দই তাদের ফতোয়াদানের ক্ষমতা সক্রিয় হয়ে উঠে।
কিন্তু আমি ইসলামের শাশ্বত ও অপরিবর্তনীয় নীতি ও আদর্শের ভিত্তিতে বলছি- আল্লাহ ও রাসুল ফয়সালা করেছেন এমন কোন বিষয়ে নতুন করে ফয়সালা করার নিরংকুশ অধিকার মানুষকে দেয় যেসব সামগ্রিক প্রতিষ্ঠান- মুসলমানদের পক্ষে তা সমর্থন করা এক চিরন্তন অপরাধ সন্দেহ নাই।.......।
মাওলানা মওদুদী জাতিয়তার ভিত্তি বর্ননা করে বলেন-“ যেসব গন্ডীবদ্ধ, জড় ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য ও কুসংস্কারপূর্ণ ভিত্তির ওপর দুনিয়ার জাতীয়তার প্রসাদ গড়ে উঠেছে আল্লাহ ও তার রাসুল (স) তা চূর্ন বিচূর্ণ
করে দেন।”
জাতীয়তা ভাষা বা দেশের ভিত্তিতে হয়না, হয় আদর্শের ভিত্তিতে। আমরা মুসলীম জাতি। ইসলাম আদর্শ। পৃথিবীর যেকোন প্রান্তের একজন মুসলমান আমার ভাই। যদি আমার ঘরের আপন ভাইও ইসলামী আদর্শ থেকে বিচ্যুত হয়, তাহলে সেও আমার ভাই নয়। সে আমার জাতির অন্তর্ভূক্ত নয়। যারা এ বিষয়ে বিস্তারিত পড়তে চান তারা জাতীয়তা সমস্যা নামক বইটি পড়ে দেখতে পারেন। আলোচনার সুবিধার্থে আমরা কয়েক লাইন কোড করলাম যাতে পাঠকরা নিরেপক্ষ মন নিয়ে বিচার করতে পারেন শুরু থেকেই কারা হক্বের পক্ষ নিয়েছিল। মাওলানা মওদূদীর প্রতি মাওলানা মাদানীর আক্রোশের এটাই কারণ।।
আক্রোশকে ভিত্তি করেই মাওলানা মাদানী পরবর্তিকালে মাওলানা মওদূদীর ওপর আমরন ফতোয়াবাজীরবমেশিন গান থেকে অমুলক, ভিত্তিহীন ও বিদ্ধেষমুলক অভিযোগ টেনে রোষানল প্রজ্জলিত ফতোয়ার গোলা বর্ষন করেছেণ। এর চেয়েও অধিক পরিতাপের বিষয় হলো মাওলানা মাদানীর অনেক শিষ্য; সাগরেদ, যারা ‘ওলামায়ে দ্বীন’ বলে পরিচিত, ওস্তাদের অনুকরনে তারাও মাওলানা মওদূদীর অন্ধ বিরোধীতায় মেতে উঠেন। এ কারনে আমরা যদি লক্ষ করি তাহলে দেখবো যে, কেবল মাত্র কংগ্রেস সমর্থক
বা মহাত্মা গান্ধীর অনুসারী মাওলানা হোসাইন আহমেদ মাদানীর শিষ্য, সাগরেদ বা তার খলীফারা ছাড়া অন্য কেউই মাওলানা মওদূদীর বিরুদ্ধে ফতোয়া দেয়ার প্রয়োজন মনে করেননি। যতগুলো বই মাওলানা মওদূদীর বিরুদ্ধে এ যাবত লেখা হয়েছে, তার সবগুলোই এই হোসাইন আহমেদ মাদানীর খলীফা বা কোন কোন পর্যায়ের ভক্ত অনুশারীর দ্বারা লিখিত। কওমী আলেমদের মাঝে মুরব্বিদের আনুগত্যের একটি সংজ্ঞা চালু আছে।
সংজ্ঞাটি হলো মুরব্বির ভুল ধরাও ভূল। অথচ মওদূদীর মতো একজন সাধারন আলেম এত বড় মুরব্বির সমালোচনা করলেন এবং তার কথাকে স্পষ্ট ভাষায় অনৈসলামীক এবং ভ্রান্ত বলে রায় দিলেন, এতো বড় অপরাধ কি সহজে ক্ষমা পাওয়ার মতো। এসব কারনে দেওবন্দের,একাংশের কাছে মাওলানা মওদূদীর লেখা বিষতুল্য মনে হলো।
মাদানী সাহেব বললেন-
ইয়্যে লেড়কা বেয়াদব হ্যাঁয়। শুধু কি তাই। তারা ঘোষনা করলো মওদূদীর বই পড়লে সাধারন ছাত্রও মুরব্বিদের
সাথে বেয়াদবী করা শিখবে।”
এভাবেই মাওলানা মওদূদীর লিখিত বই জাতীয়তা সমস্যা বা মাসালায়ে কওমীয়াত লেখার কারনেই মওদূদীকে হোসাইন আহমেদ মাদানীর ফতোয়ার বানে জর্জরিত হতে হয়েছে। কি সব অবাস্তব মিথ্যাচার তারা করেছেণ তার নমুনা একটু পরেই আমরা দেখাতে পারবো।
এই বইটি যখন তরজমানুল কোরআনে প্রকাশ হতে লাগল, মুসলিম লীগের সমর্থক সহ সকল মুসলামনরা যেন চাঁদ হাতে পেল। তারাও হিন্দুদের প্রচারিত মাওলানা হুসাইন আহমেদ মাদানীর বক্তৃতার লিফলেটের জবাবে মাওলানা মুওদূদীল লিখিত তরজামানুলের কপি বিলি করতে লাগলেন। এদিকে আল্লামা ইকবাল শুরু থেকেই মাওলানার চরম ভক্তদের মধ্যে একজন ছিলেন। তিনিও সব পরিস্থিতির দিকে নজর রাখছিলেন। মাওলানা হোসাইন আহমেদ মাদানী যখন এক জাতী তত্ত্ব ঘোষনা করে বক্তৃতা করলে, তখন সাথে সাথে আল্লামা ইকবাল তার সমালোচনা করে একটি কবিতা লিখে ফেললেন।
কবিতাটির অনুবাদ দেয়া হলো।
“ আজমিয়া আল্লাহর দ্বীনের
হাকিকত বুঝিতে পারেনি,
তাই
যদি না হতো তাহলে দেওবন্দের
মাওলানা হুসাইন আহমেদ
মাদানী মিম্বরে দাড়িয়ে এমন
ধরনের কথা কিছুতেই
বলতে পারতেন না যে, দেশের
ভিত্তিতে জাতী হয়
( কলেমার ভিত্তিতে নয়)
আফসোস,
এরা আরবি মোহাম্মদের (স)
মতাদর্শ
আদৌ বুঝতে পারেনি।”
আল্লামা ইকবাল এই ধরনের একজন প্রসিদ্ধ আলেমের এক জাতী তত্ত্বের পক্ষে ওকালতি দেখে এতই মর্মাহত হয়েছিলেন যে, তিনি তার কবিতার মাধ্যমে মনের ব্যথা প্রকাশ করেছিলেন।
ইতিপুর্বে যে মওদূদীর জ্ঞান গরিমার কারনে তারা তাকে তাদের নিজস্ব পত্রিকার সম্পাদনার ভার দিয়েছিলেন এবং যার প্রশংসায় তারা ছিলেন পঞ্চমুখ, তারাই এবার তার বিরুদ্ধে আদা জলআখেয়ে মাঠে নামলেন।
মাওলানার সকল লেখাকে আতশি কাঁচ দিয়ে পরীক্ষা করতে লাগলেন।
যদি কোন সামান্য বানানে ভূল ধরা পরে সাথে সাথে তা পত্রিকা মারফত জানানো হতে লাগল। এভাবেই শুরু হয়ে গেল মাওলানা মওদূদীর সাথে আহমেদ হোসাইন মাদানীর প্রকাশ্য শত্রুতা। এবং এই শত্রুতার জের ধরে তিনি বলেছিলেন যে,ইয়ে লেরকা বেয়াদব হ্যায়- এই
ছেলেটি বেয়াদব।
কওমী ঘরনার কোন ব্যক্তি একথা কল্পনাওবকরতে পারেন না যে, তিনি তার উস্তাদের ভুল ধরিয়ে দিবেন। বরং চোখ বন্ধ করে মেনে নেয়াটাই ভদ্রতার আর শিষ্টাাচার হিসেবে গন্য হয়।
আল্লাহ তায়ালার অশেষ মেহেরবানী এই যে, এই ঘটনার পর দেওবন্দের আরেক বিখ্যাত বুজুর্গ মাওলানা সাব্বির আহমেদ ওসমানী কংগ্রেস আলেমদের ভুল ত্রুটি সঠিক সময়ে উপলদ্ধি করে অসংখ্য আলেমদের সাথে নিয়ে কংগ্রেস আলেমদের সঙ্গ ত্যাগ করে তার দল বল নিয়ে মুসলিম লীগে যোগদান করেন।
পরবর্তিতে তার ভ্রাতুস্পুত্র ও জামাতা মাওলানা আমের ওসমানী দেওবন্দ হতে প্রকাশিত তাজাল্লী পত্রিকার মারফত মুওদূদীর বিরুদ্ধে আনিত মিথ্যা অভিযোগের বিরুদ্ধে জবাব দিতে থাকেন। তার নেতৃত্বে দেওবন্দ জামায়াত অত্যান্ত শক্তী শালী অবস্থানে ছিল। বর্তমানে তিনি জিবিত নাই দেওবন্দ জামায়াতের অবস্থান অনেক ভালো। ইর্ষাপরায়ন কিছু আলেম ব্যক্তিগত
স্বার্থে মাওলানা মুওদূদীর বিরুদ্ধে যে সকল ভিত্তিহীন অভিযোগ দায়ের করেছেন তার অধিকাংশের জবাব বিভিন্ন সময় বিভিন্ন জন দিয়েছেন এবং এই বিষয়ে বিশাল কিতাবের ভান্ডার রয়েছে। ইচ্ছা করলে যে কেহ তা সংগ্রহ করে পরে দেখতে পারেন।
কিন্তু যারা মুরব্বি পুজায় লিপ্ত, মুরব্বিদের কথাকে কোরআনের চাইতেও বেশি মুল্যায়ন করেন, তারা মওদূদীর পক্ষে লিখিত এ সকল বই পড়ে কোন ফায়দা পাবেন না। এবং এটা বই পড়ার বিজ্ঞান সম্মত কোন পদ্ধতি নয়।
যারা খোলা মন নিয়ে শুধু মাত্র সত্যকে জানার জন্য অধ্যায়ন করেছেন তারাই কেবল মাত্র কোরআন থেকে হেদায়েত পেয়েছেন। কেননা কোন ব্যক্তির জন্য এটা হেদায়েতের কিতাব নয় যে ব্যাক্তির মনে আল্লাহর কোন ভয় নাই। অতএব যারা আল্লাহকে ভয় করে পথ চলেন তারা যেন পরিচ্ছন্ন মন নিয়ে কোরআন অধ্যায়ন করে তারাই কেবল মাত্র কোরআন থেকে হেদায়েত পেতে পারে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ