expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

বুধবার, ৩০ জুলাই, ২০২৫

আল্লাহকে আল্লাহ ব্যতিত অন্য ভাষায় অন্য নামে ডাকা যাবে?

 "আল্লাহকে আল্লাহ ব্যতিত অন্য ভাষায় অন্য নামে ডাকা যাবে?




এই প্রশ্নের উত্তরটি দেওয়ার আগে আল্লাহর নামের অর্থ ও ব্যাখ্যা বুঝতে হবে, তাই চলুন আগে আল্লাহ নামের অর্থ ও ব্যাখ্যা করা যাক।


আল্লাহ হলো সৃষ্টিকর্তার জন্য একটি আরবি শব্দ। এটি ইব্রাহিমীয় ধর্মসমূহে সৃষ্টিকর্তা বুঝাতে ব্যবহৃত হয়। বাংলা ভাষায়, শব্দটি সাধারণত ইসলাম ধর্মে স্রষ্টাকে বুঝায়।আল্লাহ’ শব্দটি ‘আল’ ও ‘ইলাহ’ (الإله) এর সংক্ষিপ্ত রূপের সমন্বয়ে উদ্ভূত বলে মনে করা হয়। এটি ভাষাগতভাবে হিব্রু এবং আরামীয় ভাষায় ঈশ্বরের প্রতিশব্দ ‘এল’ (এলোহিম) ও ‘এলাহ’ এর সাথে সম্পর্কিত।


ইসলাম-পূর্ব সময় থেকে আরবের বিভিন্ন ধর্মের লোকেরা ‘আল্লাহ’ শব্দটি ব্যবহার করে আসছে।সুনির্দিষ্টভাবে, স্রষ্টা বুঝাতে মুসলিমগণ (আরব ও অনারব উভয়) ও আরব খ্রিস্টানগণ এই শব্দটি ব্যবহার করে থাকে। বাহাই, মাল্টাবাসী, মিজরাহী ইহুদি এবং শিখ সম্প্রদায়ও ‘আল্লাহ’ শব্দটি ব্যবহার করে থাকে।পশ্চিম মালয়েশিয়ায় খ্রিস্টান ও শিখদের ‘আল্লাহ’ শব্দটির ব্যবহার সম্প্রতি রাজনৈতিক ও আইনগত বিতর্কের সৃষ্টি করেছে।এছাড়াও ভারত এবং বাংলাদেশের সিলেটি হিন্দু, ইয়াহুদী এবং খ্রিস্টানরা অনেক সময় ঈশ্বর বুঝাতে আল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করে থাকেন।


ইসলামি ধর্মবিশ্বাস অনুযায়ী, ‘আল্লাহ’ হলো একমাত্র প্রশংসাযোগ্য, উপাস্য ও সর্বশক্তিমান সত্তার প্রকৃত নাম এবং তার ইচ্ছা ও আদেশসমূহের প্রতি একনিষ্ঠ আনুগত্য প্রদর্শন ইসলামি ধর্মবিশ্বাসের মূলভিত্তি হিসেবে বিবেচিত। "তিনিই একমাত্র উপাস্য, সমগ্র মহাবিশ্বের স্রষ্টা এবং মানবজাতির বিচারক।""তিনি এক (ٱلْوَٰحِدُ), অদ্বিতীয় (ٱلْأَحَد), পরম করুণাময় ও সর্বশক্তিমান।" বিচার দিবস পর্যন্ত কোন মানুষের চোখ আল্লাহকে দেখতে পাবে না। ইসলামের পবিত্র ধর্মগ্রন্থ কুরআনে আল্লাহ বাস্তব সত্তা, তার গুণাবলি ও বিভিন্ন নাম, তার সাথে সৃষ্টির সম্পর্ক ও আরও অনেক বিষয় বর্ণিত হয়েছে।আল্লাহ কোন কিছুর উপর নির্ভরশীল নন এবং খ্রীষ্টীয় ত্রিত্বের অংশ নন। আল্লাহর কোন পিতা-মাতা নেই এবং সন্তান নেই।


আল্লাহর পরিচয় আল্লাহ সূরা ইখলাসে সরাসরি দিয়েছেন,

★বলুন, তিনিই আল্লাহ, এক-অদ্বিতীয়;

★ আল্লাহ অমুখাপেক্ষী;

★ তিনি কাউকে জন্ম দেননি এবং তাঁকেও জন্ম দেয়া হয়নি;

★ এবং তাঁর সমতুল্য কেউই নেই।


সূরাবসকারার ২৫৫ নং আয়াতে আল্লাহ তার নিজ পরিচয় দেন এভাবে,

আল্লাহ! তিনি ছাড়া অন্য কোনো উপাস্য নেই, তিনি জীবিত, সবকিছুর ধারক। তাঁকে তন্দ্রাও স্পর্শ করতে পারে না এবং নিদ্রাও নয়। আকাশ ও ভূমিতে যা কিছু রয়েছে, সবই তাঁর। কে আছে এমন, যে সুপারিশ করবে তাঁর কাছে তার অনুমতি ছাড়া? দৃষ্টির সামনে কিংবা পিছনে যা কিছু রয়েছে সে সবই তিনি জানেন। তাঁর জ্ঞানসীমা থেকে তারা কোনো কিছুকেই পরিবেষ্টিত করতে পারে না, কিন্তু তা ব্যতীত - যতটুকু তিনি ইচ্ছা করেন। তাঁর আসন সমস্ত আকাশ ও পৃথিবীকে পরিবেষ্টিত করে আছে। আর সেগুলোকে ধারণ করা তার পক্ষে কঠিন নয়। তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান।


আল্লাহর গুনবাচক নাম সমূহ:

ল্লাহ নাম ছাড়াও কিছু গুন বাচক নামও আছে যেমন,

কুরআন ও হাদিস অনুযায়ী, আল্লাহর অনেকগুলো গুণবাচক নাম রয়েছে যেগুলোকে একত্রে আসমাউল হুসনা (আরবি: الأسماء الحسنى, অনুবাদ 'সুন্দরতম নামসমূহ') বলা হয়। তন্মধ্যে, একটি প্রসিদ্ধ হাদিস অনুযায়ী, আল্লাহর ৯৯টি নাম আছে এবং নামগুলোর প্রত্যেকটির মাধ্যমে আল্লাহর একটি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য প্রকাশ পায়।[৪৩][৪৪] আল্লাহর ৯৯টি নামের মধ্যে সবচেয়ে পরিচিত ও বহুল ব্যবহৃত নামসমূহ হলো:


আর-রহমান (আরবি: ٱلْرَّحْمَـٰنُ, অনুবাদ 'করুণাময়')

আর-রহিম (আরবি: ٱلْرَّحِيْمُ, অনুবাদ 'পরম দয়ালু')

আল-গফুর (আরবি: ٱلْغَفُورُ, অনুবাদ 'অতি ক্ষমাশীল')

আল-আহাদ (আরবি: ٱلْأَحَد, অনুবাদ 'এক')

আল-ওয়াহিদ (আরবি: ٱلْوَٰحِدُ, অনুবাদ 'অনন্য, একক')।


ইসলাম ধর্মীয় বিশ্বাসে আল কোরআন অনুসারে আল্লাহর কিছু বৈশিষ্ট্য হলো:


আল্লাহর কোন অংশীদার নেই, কোন সমকক্ষ নেই এবং কোন প্রতিদ্বন্দ্বী নেই;

তার কোন সন্তান বা স্ত্রী নেই এবং তিনি কারও সন্তান নন;

তার উপাসনা অথবা সহায়তা প্রার্থনার জন্যে কাউকে বা কিছুর মধ্যস্থতার প্রয়োজন নাই;

তার কাউকে উপাসনার প্রয়োজন হয় না;

তিনি সার্বভৌম অর্থাৎ কারো নিকট জবাবদিহি করেন না;

তিনি কোন ব্যক্তি বা জিনিসের উপর নির্ভরশীল নন, বরং সকলকিছু তার উপর নির্ভরশীল;

তিনি কারো সহায়তা ছাড়াই সবকিছু সৃষ্টি ও নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন;

কোনো কিছুই তার উপরে বা সঙ্গে তুলনীয় নয়;

বিদ্যমান কোনো কিছুই সম্পূর্ণভাবে আল্লাহর পরাধীন নয়;

কেউ প্রতিরোধ করতে পারেন না, যা আল্লাহ প্রদান করে, আর কেউ প্রদান করতে পারেনা যা তিনি প্রতিরোধ করে;

শুধুমাত্র আল্লাহই কারো উপকার বা ক্ষতি করতে পারে, এই ক্ষমতা অন্য কেউ রাখে না;

তার কোনও অভাব নেই, তিনি কারও মুখাপেক্ষী নন;

নিদ্রা, তন্দ্রা ও ক্লান্তি আল্লাহকে স্পর্শ করে না;

তাঁর আকার তাঁর মতোই, যা কেউ কল্পনা করতে পারেনা;

তিনিই সর্বোচ্চ এবং সর্বাপেক্ষা মহান ও পবিত্র;

তার অনুরূপ কেউ নেই।


এখন প্রশ্ন হলো আল্লাহকে আলকোরআন ও হাদিসে বর্নিত নাম বাদে অন্য নামে ডাকা যাবে কি না?

আল্লাহ ব্যতিত উপরে বর্নিত অন্য নাম গুলো আল্লাহর গুন বাচক নাম, যেমন চিকিৎসক, জার্নালিস্ট, লেখক ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী বশির আহাম্মদ, এখানে বশির আহাম্মদ হলো আসল নাম আর চিকিৎসক,,জার্নালিস্ট, লেখক, আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী এগুলো হল গুন বাচক নাম। গুন বাচক নাম দিয়ে বিশেষ বিশেষ গুন বুঝালেও আসল নামেই মানুষ পরিচয় দিয়ে থাকে। কেননা এই একই গুন অনেকের থাকতে পারে, শুধু চিকিৎসক বললে অনেকেই আছ, লেখক বললে অনেকেই আছে বা অনেককে বুঝানো হয়ে থাকে,কিন্তু নির্দ্দিষ্ট করে বুঝাতে গেলে আসল নামটি বলতে হয়, তাই বলে গুন বাচক নাম বলা নিষেধ নয়।


আবার ফারসি ভাষায় আনেকে খোদা বলে, এই খোদা শব্দের অর্থ কখনোই আল্লাহ নামের গুনের সাথে সাংঘর্ষিক নয়। আবার মা'বুদ বলেও আল্লাহকে বুঝায়, এই মা'বুদ নাম দিয়েও কেরআনে বর্নিত আল্লাহর গুনাগুনের কোনো সাংঘর্ষিক নয়।অতএব মানুষ এই নাম গুলোতে ডাকে। ঠিক তেমনি পৃথিবীর যেকোনো ভাষায় আল্লাহকে সম্বোধন করতে পারেন যদি আল্লাহ নামের গুন গুলোর সাথে বিপরীত না হয়।


আসুন কিছু উদাহরন দেই:

১। খ্রিস্টানদের ইশ্বর:

আসিরীয় খ্রিস্টানদের ভাষায়, ঈশ্বর বা সৃষ্টিকর্তার জন্য আরামাইক শব্দ হলো ʼĔlāhā, বা en:Alaha। খ্রিস্টান এবং ইহুদিরা সহ আব্রাহামীয় সকল ধর্মের আরবি-ভাষী লোকই, ঈশ্বরকে বুঝাতে আল্লাহ শব্দ ব্যবহার করে থাকে। বর্তমান যুগের আরবি-ভাষী খ্রিস্টানদের ব্যবহারের জন্য ঈশ্বরকে ইঙ্গিত করতে আল্লাহ ব্যতীত উপযোগী অন্য কোনো শব্দই নেই। (এমনকি আরবি-বংশোদ্ভূত মাল্টাবাসী, যাদের অধিকাংশই রোমান ক্যাথলিক, ঈশ্বরকে বুঝাতে Alla(আল্লা) শব্দ ব্যবহার করে)। তবে আরবীয় খ্রিষ্টানরা অনেক সময়ই তাদের ত্রিত্ববাদ অনুযায়ী সৃষ্টিকর্তা বুঝাতে Allāh al-ʾab (الله الأب) অর্থাৎ, পিতা ঈশ্বর, ঈসা বা জিসাসকে বুঝাতে Allāh al-ibn (الله الابن) অর্থাৎ, পুত্র ঈশ্বর, এবং জিবরাঈল বা গেব্রিলকে বুঝাতেAllāh ar-rūḥ al-quds (الله الروح القدس) অর্থাৎ,পবিত্র আত্মা কথাগুলো ব্যবহার করে। (খ্রিস্টান ধর্ম-বিশ্বাস অনুযায়ী ঈশ্বরের ধারণার বিস্তারিতের জন্য দেখুন খ্রিস্টান ধর্মে ঈশ্বরের ধারণা)।


লেখার সময় আরবীয় খ্রিষ্টানদের মধ্যে দুই ধরনের প্রচলন পাওয়া যায়, মুসলিমদের থেকে গৃহীত বিসমিল্লাহ এবং অষ্টম-শতক থেকে নিজেদের ত্রিত্ববাদই ধারণার বিসমিল্লাহ। মুসলিমদের থেকে গৃহীত বিসমিল্লাহর অর্থ করা হয়, আল্লাহর নামে, যিনি পরম দয়ালু এবং অতিশয় মেহেরবান। অপরপক্ষে, ত্রিত্ববাদই বিসমিল্লাহর অর্থ করা হয়, এক ঈশ্বরের নামে যিনি পিতা, পুত্র এবং পবিত্র আত্মা। তবে সিরীয়, ল্যাটিন বা গ্রিক প্রার্থনার মধ্যে এক কথাটি যুক্ত করা হয় না। এই এক কথাটি যুক্ত করা হয় ত্রিত্ববাদের এক ঈশ্বর ধারণাকে ফুটিয়ে তোলার জন্য এবং কিছুটা মুসলিমদের নিকট গ্রহণযোগ্য রূপ দেয়ার জন্য।


কারো মতে, ইসলাম-পূর্ব আরব-এ কিছু কিছু আরবীয় খ্রিষ্টান সৃষ্টিকর্তা হিসেবে আল্লাহর সম্মানে কাবায় যেত, তবে তৎকালীন কাবা ছিলো মূর্তি পূজারীদের প্রার্থনাস্থল।


এই ইশ্বর নামটি একাত্ববাদের বিপরীত,সূরাহ ইখলাসের বিকৃতী এবং অস্বীকার করা,তাই এই নামে ডাকা যৌক্তিক নয়, বরং শিরক,কেননা আল্লাহর কোনো অংশীদার নাই,তিনি একক।এখনে স্রষ্টার সাথে আরো দুটি আত্বার অংশ বুঝায়।


ব্রক্ষা বা বিষ্ণু নামে ডাকা যাবে?


না, আল্লাহকে ব্রহ্মা বা বিষ্ণু ডাকা যাবে না। আল্লাহ এক ও অদ্বিতীয়, যিনি সকল কিছুর সৃষ্টিকর্তা, এবং তাঁর কোনো অংশীদার নেই। হিন্দুধর্মে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব ত্রিমূর্তি হিসেবে পূজিত হন, কিন্তু ইসলাম ধর্মানুসারে আল্লাহ্‌র সমকক্ষ বা অংশীদার কেউ নেই। তাই, আল্লাহকে ব্রহ্মা বা বিষ্ণু নামে ডাকা বা তাদের সাথে তুলনা করা সম্পূর্ণরূপে ভুল ও শিরক (আল্লাহর সাথে অংশীদার স্থাপন) হবে। হিন্দুধর্মে ব্রহ্মা, বিষ্ণু ও শিব যথাক্রমে সৃষ্টি, পালন ও ধ্বংসের দেবতা হিসেবে পূজিত হন। এই দেবতারা বিভিন্ন রূপে প্রকাশিত এবং তাঁদের নিজ নিজ বৈশিষ্ট্য রয়েছে। তবে, এই ধারণাগুলো ইসলামের বিশ্বাসের সাথে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক।সুতরাং, আল্লাহকে ব্রহ্মা বা বিষ্ণু ডাকা বা তাদের সাথে তুলনা করা কোনোভাবেই উচিত নয়। ইসলামে আল্লাহকে তাঁর নিজস্ব নামে ডাকা এবং তাঁর একত্ববাদে বিশ্বাস স্থাপন করা আবশ্যক। 

ইসলামে আল্লাহকে এক ও অদ্বিতীয় হিসেবে বিশ্বাস করা হয় এবং তাঁর পরিচয় ও গুণাবলী কুরআন ও সুন্নাহর মাধ্যমে বর্ণিত হয়েছে। আল্লাহ তা'লার কোনো প্রতিরূপ বা সমকক্ষ নেই, এবং তাঁর ইবাদত বা পূজা করা সকলের জন্য অপরিহার্য।


অতএব বুঝা গেলো আল্লাহকে আল্লাহ নামেই ডাকতে হবে, অন্য নামে ডাকলেও সমস্যা নাই,তবে যে নামেই ডাকা হোক যেনো আল্লাহর বৈশিষ্ট্যের বিপরীত অর্থ না হয় কিংবা শিরক না হয়, একাত্ববাদের বিপরীতে না হয়ে যায়।নিজ নিজ ভাষায় আল্লাহকে ডাকতে পারেন কিন্তু আল্লাহ নামের বিপরীত অর্থ যেনো যেনো না হয়।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...