একাত্তর পরবর্তী জামায়াতকে যুদ্ধাপরাধী বানানো হতে বাইশ সালের গনকমিশনের তালিকা, দীর্ঘ মেয়াদী ইসলাম বিরোধী প্রকল্প
১৯৭১ এর পর এদেশে অল্প সংখ্যাক জামায়াতের নেতাকর্মী ছিল। বর্তমান সরকার তাদেরকে বিচারের আওতায় এনেছে, এদের দলের অনেক অনেক নেতাকে ফাঁসি দিয়েছে, তবু তারা ইসলামকে গনতন্ত্রের কাছে বিক্রি
করেনি, জামায়াত নির্দোষ প্রমান করতে পারেনি এই সকল ব্যাপার নিয়ে একটি নিয়ে
পোস্টের Borhan khaled নামের এক ভাইয়ের কমেন্টস দিয়ে লেখাটা শুরু করছি।
Borhan khaled:এই অপারগতার কথা আমি গত ৩০ বছর ধরে বলে এসেছি বিভিন্ন দায়িত্বশীলদের কাছে, এর উত্তরে আমাকে বলা হয়েছিল, আপনি করেন আমাদের সময় নেই।
১৯৭১
সালে জামাতের ভূমিকা, এবং ১৯৭৮ সালে জিয়া কতৃক বহুদলীয় গনতন্ত্র
প্রবর্তনের ফলে বেনিফিশিয়ারী কি শুধু জামাত ছিল নাকি সকল রাজনৈতিক দলই সমান
বেনিফিশিয়ারী ছিল? এই বিষয়গুলো জনগনের কাছে পরিষ্কার করা কি খুব বেশী প্রয়োজন ছিল না।
৭১
সালের ভূমিকা কে ভূল ভাবে জনগনের কাছে উপস্থাপন করে জামাতকে, " রাজাকা"
"আলবদর" "আলসামস" এই শব্দগুলো দ্বারা জিকির করতে করতে সবগলো বামদল একহয়ে
"খেলাঘর আসর" এই জাতীয় কিছু সাংস্কৃতিক সংগঠনকে ব্যাবহার করে জনগনের সামনে
জামাতকে বিতর্কিত করা হয়েছিল। কিন্তু এর বিপরীতে জামাত ৭১ সালে তাদের ভূমিকা সম্পর্কে জনগনের মাঝে পরিষ্কারভাবে কোন প্রচারাভিজান চালু করেনি। পিনাকি
ভট্টচার্য এর মত একজন আন্য ধর্মের লোক যদি জামাতের ভূমিকা সম্পর্কে খুব
সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারে, তাহলে গত ৫০ বছর যাবত জামাত ৭১ সালে তাদের
ভূমিকা সম্পর্কে জনগনের কাছে পরিষ্কার করেনি কেন? সেই ভূলের মাসূল দিতে হল
কেন্দ্রীয় নেতৃবিন্দের প্রানের বিনিময়ে।
দ্বিতীয় বিষয়টি
ছিল, ১৯৭৮ সালে জিয়া কতৃক বহুদলীয় গনতন্ত্র প্রবর্তনের ফলে এর
বেনিফিশিয়ারী দল শুধু জামাতে ইসলামী ছিল না, এদেশের সকল রাজনৈতিক দলই সমান
ভাবে বেনীফিশিয়ারি ছিল, কিন্তু বি,এন,পি
এর উপরের লেবেল থেকে শুরু করে একেবারে নিম্ন পর্যায়ের নেতা এমনকি সমর্থক
পর্যন্ত এখনও মনে করে জিয়া শুধু জামাতকেই এদেশে রাজনীতি করার সুযোগ দিয়েছে,
তাই তারা ( জামাত) আজীবন বি,এন,পি র প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে, অর্থাৎ এই কৃতজ্ঞতার বশে শুধু জামাতই বি,এন,পি কে দিয়ে যাবে, বিনিময়ে বি,এন,পি থেকে কিছু চাওয়ার অধিকার জামাতের নেই।
এই বিষয়টি কি জনগনের সামনে জামাত পরিষ্কার কোন বক্তব্য বা প্রচারাভিজান চালিয়েছে?
এ বিষয়ে হয়তো কেন্দ্রীয় চিন্তা চেতনায়, "মওলানা মওদূদী" (রঃ) এর সেই উক্তটি কাজ করেছিল,
" আমি দৈনিক ৪০ পৃষ্ঠা দ্বীনি কিতাব লিখি, এখন আমি যদি নিন্দুকের জবাব দিতে যাই তাহলে আমার গবেষনা বাধাগ্রস্থ হবে।"
মওলানার জন্য এই ধরনের চিন্তা একেবারে সঠিক ছিল। কিন্তু পরবর্তি ইসলামী আন্দোলনের নেতৃবিন্দের
জন্য এ ধরনের চিন্তা- ভাবনা কোনভাবেই কোন ভাবেই যুক্তসংগত নয়। যে ভাবে
মওলানা ইলিয়াস (রহঃ) এর সময়ে তবলীগ গঠন করা, এবং লোকদের কাছ থেকে ওয়াদা
গ্রহন করা সম্পূর্ন ভাবে সঠিক ছিল। কিন্তু এখন এর কোনটিরই কোন প্রয়োজন বা
জরুরত নেই।
ইসলামী আন্দোলনের সুফল পেতে হলে, এই
আন্দোলনের প্রতিটি কর্মীকে রাসূল (সাঃ) এর নবুওতের আগের ৪০ বছরের জীবনের
মতো করে নিজের জীবনকে রাঙাতে হবে। নবুওতের আগের ৪০ বছরের জীবনের চাল-চলন,
আচার-ব্যাবহার, আমানতদারীতা, ওয়াদা রক্ষাকারী, চরম ধৈর্যশীলতা ন্যায়পরায়নতা
এসব কিছুই ছিল মানুষের কাছে রাসূল ( সাঃ) নবুওতের গ্রহনযোগ্যতার মাপকাঠি।
আল্লাহ পাক তো উনাকে প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার সাথে সাথেই নবুওত দিতে পারতেন,
কিন্তু ৪০ বছর বয়সে কেন নবুওত দিলেন।
মানুষের কাছে
গ্রহনযোগ্যতা পেতে যদি রাসূল (সাঃ) এর ৪০ বছর লাগে, তাহলে আপনি আমি জনগনের
কাছে কোন ধরনের আমানতদারীতা, ধৈর্যশীলতা, ওয়াদারক্ষাকারী, পরোপকারী, এ
সবের পরীক্ষায় উত্তীর্ন না হয়েই ইসলামী আন্দোলনের কামীয়াবি কামনা করছি।
ইসলামী আন্দোলনের প্রতিটি কর্মী নিজ নিজ অবস্থানের চারপাশের ৪০ টি ঘরের খবরাখবর, রাখবেনা, তাদের বড থেকে ছোট প্রতিটি প্রয়োজনে, বিপদে-আপদে অংশীদার হতে পারবেনা ততদিন ইসলামী আন্দোলনের সাফল্য কামনা করা নিরর্থকই থাকবে। কারন এটি রাসূল ( সাঃ) কতৃক নির্দেষিত।
ভাই
আপনার কাছে অনুরোধ, আমার লিখাটা যদি আপনার কাছে যুক্তিসংগত মনে হয়, তাহলে,
যারা নিজেকে দ্বায়ি ইলাল্লাহ বলে মনে করে তারা যেন তাদের নিজ নিজ
অবস্থানের চারপাশের ৪০ ঘর সম্পর্কে দ্বায়িত্ববান হয়। এ সম্পর্কিত রাসূল (
সাঃ) এর সেই হাদীসটি উল্লেখ করে আরো সুন্দরভাবে গুছিয়ে, ইসলামী আন্দোলনের
সাফল্যের মাপকাঠি হিসেবে, এ সম্পর্কে আপনি কিছু লিখুন। কারন, আপনার
লিখাগুলোতে অনেক তথ্যবহুল আলোচনা থাকে। এবং আল্লাহর এই জমিনে আল্লাহর
দ্বীনকে কায়েম করার আন্দোলনে যারা নিজেকে শরিক মনে করে তারা যেন এই বিষয়টিকে গূরুত্বসহকারে আমল করে সে জন্য প্রচারাভিযান চালু করুন।
তখন
মানে ১৯৭১ পর্বতীতে নাস্তিকরা মনে করত যে জামায়াতে ইসলামই একমাত্র দল যারা
ইসলামকে টিকিয়ে রাখবে তাই "খেলা ঘর" নামের খেলনা কমিশনে নাস্তিকদের দিয়ে
মিথ্যা প্রপাগান্ডা দিয়ে জামায়াতকে তথা কথিত যুদ্ধাপরাধী বানিয়ে ৫০ বছর পর
প্রহসনের বিচারের নামে আলেমদের হত্যা করেছে
তারা এখন দেখছে আরো কিছু উইপোকা মার্কা আলেম(তাদের চোখে) আছে তাদেরও দমাতে পারলে তাদের ষোল কলা পূরন হবে।
আর
তাই "গন কমিশন" নামে একটি নাস্তিক কমিশনের মাধ্যমে বাকি আলেমদের হত্যার
উদ্দেশ্যে এই ১২৬ জন আলেমের তালিকার করেছে। এটা এক দুই দিনের জন্য ষড়যন্ত্র
নয় মনে রাখবেন এটা শত বছর ব্যাপী ষড়যন্ত্রেই অংশ। এটা ইসলাম ধ্বংশের অংশ
দীর্ঘ মেয়াদি প্রকল্প।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ