expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

সোমবার, ৭ জুলাই, ২০২৫

কাল্পনিক প্রপাগান্ডা লাভ জিহাদের নামে প্রপাগান্ডা

 কাল্পনিক লাভ জিহাদের নামে প্রপাগান্ডা

লাভ জিহাদ কাল্পনিক প্রপাগান্ডা


প্রেম জিহাদ,রোমিও জিহাদ বা লাভ জিহাদ নামেও পরিচিত, হচ্ছে একটি প্রেম ঘটিত ধর্মান্তর অভিযান যাতে মুসলিম পুরুষরা প্রেমের ছল করে অমুসলিম মহিলাদের ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত করে। অনেক প্রতিবেদক বারংবার "প্রেম জিহাদ" কে একটি অলীক-কল্পনা ও নির্বাচনকালীন আবিষ্কার, এমনকি এটিকে ধর্মীয় ঘৃণা ও ভুল ধর্মীয় তথ্য ছড়ানোর একটি অভিযান বলে অস্বীকার করেছে।এই শব্দটি অনেকের কাছেই পরিচিত। এ ধরনের অনেক প্রমাণ আছে।এটি ২০০৯ সালে ভারতের জাতীয় নজরে আসে যখন কেরালা ও কর্ণাটকে ধর্মান্তরের ঘটনা সামনে আসে। ২০১০ সালে কেরলের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ও প্রবীণ বাম নেতা ভি. এস. অচ্যুতানন্দন প্রথম প্রেম জিহাদের বিষয়টি উত্থাপন করেছিলেন।

নভেম্বর ২০০৯ সালে ডিজিপি জ্যাকব পুন্নজ জানান যে, এমন কোনো দলের ধর্মান্তরের জন্য মেয়েদের প্রেমের ধোঁকা দেয়ার যথাযথ প্রমাণের অভাব আছে। তিনি কেরালা হাইকোর্টকে জানান তার কাছে আসা ১৮টি ঘটনার ৩টিই সন্দেহযুক্ত। শক্ত প্রমাণ না থাকলেও তদন্ত তখনও চলছিল।ডিসেম্বর ২০০৯ সালে, বিচারপতি কে.টি. সঙ্করণ পুন্নজের কথার উত্তরে তিনি একটি ঘটনার ডায়রি থেকে নিষ্পত্তি করেন যে এই বিষয়ে কিছু শক্ত তথ্য রয়েছে। তিনি বলেন এটা পরিষ্কার যে পুলিশের রিপোর্ট থেকে পাওয়া যায় মহিলাদের ধর্মান্তরের জন্য কিছু সংযুক্ত দল রয়েছে। প্রেম জিহাদে অভিযুক্ত দুজনের মামলা চলার সময় জানানো হয় গত ৪ বছরে ৩০০০-৪০০০ এমন ধর্মান্তর ঘটেছে। ডিসেম্বর ২০০৯ সালে কেরালা হাইকোর্ট দুজন অভিযুক্তকে মুক্তি দিয়ে উক্ত অনুসন্ধান চালিয়ে যেতে থাকে যদিও এতে পুলিশের অনুসন্ধান সমালোচিত হয়।বিচারপতি এম.শশীধরন নম্বিয়া কর্তৃক অনুসন্ধান কাজ বন্ধ হয়ে যায়, যেহেতু পুন্নজ প্রেম জিহাদের যথাযথ প্রমাণ পায় নি।

কর্ণাটক সরকার ২০১০ সালে জানায় অনেক বড় অংশে মহিলা ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে। ২০১২ সালে প্রেম জিহাদ অনুসন্ধানের ২ বছর পর কেরালা পুলিশ যথাযথ প্রমাণের অভাবে এটিকে অস্তিত্বহীন অভিযান হিসেবে ঘোষণা করে। পরবর্তীতে আরেকটি কেস চালু হয় একটি ওয়েবসাইটের বিষয়ে যেখানে মুসলিমদের সংগঠন মেয়েদের ধোঁকা দেওয়ার জন্য মুসলিম যুবকদের টাকা দিত। সেপ্টেম্বর ২০০৪ সালে, তিন মাসের মধ্যে প্রেম জিহাদ সম্পর্কে উত্তর প্রদেশ পুলিশ এর কাছে ৬টি এমন ঘটনার আসে। কিন্ত যথাযথ প্রমাণ না মেলায় পুলিশ জানায় এসব মামলায় এই ঘটনার কোনো প্রমাণ নেই।

২০১৭ সালে, কেরালা হাইকোর্ট প্রেম জিহাদ বন্ধে আইন করে যে, হিন্দু মেয়েদের মুসলিম ছেলেদের বিয়ে করা অবৈধ। একজন মুসলিম স্বামী এটি পুনর্বিবেচনার জন্য ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেন যেখানে কোর্ট রাষ্ট্ৰীয় অনুসন্ধান সংস্থা(এনআইএ) এর কাছ থেকে নিরপেক্ষ প্রমাণ চায় এবং এনআইকে প্রেম জিহাদ সম্পর্কিত সকল ঘটনা অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়। এতে এনআইএ বিভিন্ন সন্দেহজনক ঘটনা অনুসন্ধান করে যার মাধ্যমে তারা খোঁজ করে কোন নিষিদ্ধ সংস্থা যেমন সিমি হিন্দু মেয়েদের ধর্মান্তর করে মুসলিম সন্ত্রাসী হিসেবে তৈরি করছে কিনা।এনআইএ পূর্বে আদালতকে জানায় এই মামলা শুধুমাত্র একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, রাজ্যের মধ্যে এ ধরনের অনেক ঘটনা ঘটে চলেছে। তারা আরো বলে যে, সেই মামলার একই ব্যক্তি যে প্ররোচক হিসেবে কাজ করেছিল তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা রয়েছে।

এই বিষয়টি জাতীয় নজরে আসে প্রথম ২০০৯ সালে যখন কর্ণাটক ও কেরালায় ব্যাপক হারে ধর্মান্তর ঘটে। ধীরে ধীরে এটি ভারতের বাইরে পাকিস্তান ও যুক্তরাজ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। ২০০৯, ২০১০, ২০১১ ও ২০১৪ সালের ব্যাপক প্রচারণার জন্য প্রেম জিহাদ বিভিন্ন হিন্দুশিখ ও খ্রিস্টান সংস্থার মাঝে উদ্বেগের সৃষ্টি করে যদিও মুসলিম সংস্থা অভিযোগটিকে অস্বীকার করে। রয়টার্সের ভাষ্যমতে, বিষয়টি অনেকের কাছে একটি সামাজিক উদ্বেগের কারণ হিসেবে বিবেচিত হলেও অনেক ভারতীয় প্রধানদের মতে এটি একটি ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনা বৈ কিছু নয়।আগস্ট ২০১৭-তে, রাষ্ট্ৰীয় অনুসন্ধান সংস্থা(এনআইএ) জানায় যে তারা প্রেম জিহাদ সম্পর্কে মামলাগুলোতে কিছু সাধারণ প্রমাণ পেয়েছে।দি ইকোনমিস্টের পরবর্তী একটি নিবন্ধে জানানো হয়, পুলিশ বেশ কয়েকবার অনুসন্ধান করে ধর্মান্তর করার যথাযথ প্রমাণ পায় নি। "প্রেম জিহাদের"কে অনেক সংবাদদাতারা বারবার উচ্চপর্যায়ের অলীক কল্পনা এবং নিকৃষ্টতম বলে অভিহিত করে এবং নির্বাচন-কালীন উদ্ভাবন বলে।


প্রেম জিহাদ বা লাভ জিহাদ হল হিন্দুত্ববাদ প্রবক্তাদের তৈরি করা একটি ষড়যন্ত্র তত্ব-সম্পর্কীয় বিষয়,এতে মনে করা হয় যে, একটি সংগঠিত আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে ভারতের বিরুদ্ধে মুসলিমদের বৃহত্তর জনসংখ্যাগত যুদ্ধের জন্যে তাদের জনসংখ্যা বৃদ্ধি এবং প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে আধিপত্য বিস্তার করার লক্ষ্যে মুসলিম পুরুষরা হিন্দু মহিলাদের ইসলামে ধর্মান্তরিত করার লক্ষ্যে প্রলোভন, প্রেমের জাল, প্রতারণা, অপহরণ বা তাদের বিবাহ করে থাকে। কেবল মুসলিমদের ক্ষেত্রে এর ব্যাপক প্রয়োগ হলেও খ্রিস্টানদের ক্ষেত্রেও এর আংশিক প্রয়োগ লক্ষ্য করা যায়। 

বিশ্লেষকগণ প্রেম জিহাদ তত্বকে একটি ষড়যন্ত্র তত্ব ও অলীক-কল্পনা বা একটি রাজনৈতিক এজেন্ডা হিসেবে আখ্যায়িত করেন।[২৪] এমনকি এটিকে ধর্মীয় ঘৃণা ও ভুল ধর্মীয় তথ্য ছড়ানোর একটি অভিযান হিসেবে অস্বীকার করেন। ২০০৯ সালে প্রথম ভারতে চর্চা হওয়া শুরু হয়। ২০১০ সালে কেরলের তৎকালীন মুখ্যমন্ত্রী ভি. এস. অচ্যুতানন্দন প্রথম এই বিষয়টিকে প্রেম জিহাদ হিসেবে উত্থাপন করেন এবং এরপর মিডিয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের সাহায্যে তা ধীরে ধীরে প্রসার লাভ করে। 

২০০৯ সালে একটি প্রোপাগান্ডার অংশ হিসাবে এই ষড়যন্ত্রত ত্ত্বটি তৈরি হওয়ার পর হিন্দুত্ব প্রকাশনা দ্বারা প্রচার করা হয়। যেমন: সনাতন প্রভাত এবং হিন্দু জনজাগৃতি সমিতি হিন্দুসমাজকে তাদের মহিলাদের মুসলিম পুরুষদের থেকে রক্ষা করার আহ্বান জানায়, একই সাথে তাদেরকে কুৎসিত ও ধর্ষক হিসাবে চিত্রিত করা হয়। রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘ, বিশ্ব হিন্দুপরিষদকে ভারত ও বিদেশে এই তত্ব বিস্তারের জন্য দায়ী করা হয়। এই তত্ত্বটি উত্তর প্রদেশ একটি উল্লেখযোগ্য বিশ্বাস হয়ে উঠেছে বলে উল্লেখ করা হয় এবং ২০১৪ সালে রাজ্যে ভারতীয় জনতা পার্টির প্রচারের সাফল্যে অবদান রাখে বলে উল্লেখ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বাধীন ভারতীয় জনতা পার্টির নির্বাচনের পর ভারতে ধারণাটি প্রাতিষ্ঠানিক রূপ লাভ করে এবং সরকারপন্থী ডানপন্থী বিভিন্ন টেলিভিশন মিডিয়া ; যেমন : টাইমস নাউ, রিপাবলিক টিভি এবং সোশ্যাল মিডিয়ায় বিভ্রান্তিমূলক প্রচারণাকে সাধারণত এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির জন্য দায়ী করা হয়। বিজেপি দল দ্বারা শাসিত বেশ কয়েকটি রাজ্যে কথিত ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে আইন প্রণয়ন করা হয়েছে এবং যোগী আদিত্যনাথ সরকার দ্বারা উত্তর প্রদেশ রাজ্যে প্রয়োগ করা হয়েছে। সেখানে এটি মুসলমানদের উপর রাষ্ট্রীয় নিপীড়ন এবং ক্র্যাকডাউনের একটি উপায় হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়।


২০০৯ সালের নভেম্বরে জ্যাকব পুন্নজ জানান যে, কোনো দলের ধর্মান্তরের জন্য মেয়েদের প্রেমের ধোঁকা দেয়ার যথাযথ প্রমাণের অভাব আছে। তিনি কেরালা হাইকোর্টকে জানান, তার কাছে আসা ১৮টি ঘটনার ৭ টিই সন্দেহযুক্ত। ২০০৯ সালের ডিসেম্বর মাসে বিচারপতি কে.টি. সঙ্করণ পুন্নজের কথার উত্তরে একটি ঘটনার ডায়রি থেকে নিষ্পত্তি করেন যে, এই বিষয়ে কিছু শক্ত তথ্য রয়েছে। তিনি বলেন, এটা পরিষ্কার যে, পুলিশের রিপোর্ট থেকে পাওয়া যায় যে, মহিলাদের ধর্মান্তরের জন্য কিছু সংযুক্ত দল রয়েছে। প্রেম জিহাদে অভিযুক্ত দুজনের মামলা চলার সময় জানানো হয়, গত ৪ বছরে ৩০০০-৪০০০ এমন ধর্মান্তর ঘটেছে। তবে এসব ঘটনা স্বাভাবিক প্রক্রিয়া হিসেবে উল্লেখ করা হয়।  ডিসেম্বর, ২০০৯ সালে কেরালা হাইকোর্ট দুজন অভিযুক্তকে মুক্তি দিয়ে অনুসন্ধান চালিয়ে যেতে থাকে। যদিও এতে পুলিশের অনুসন্ধান সমালোচিত হয় পরে বিচারপতি এম.শশীধরন নম্বিয়া কর্তৃক অনুসন্ধান কাজ বন্ধ হয়ে যায়। কারণ পুন্নজ প্রেম জিহাদের যথাযথ প্রমাণ পাননি।

কর্ণাটক সরকার ২০১০ সালে জানায় যে, অনেক বড় অংশে হিন্দু মহিলা ইসলাম ধর্মে ধর্মান্তরিত হয়েছে। ২০১২ সালে প্রেম জিহাদ অনুসন্ধানের ২ বছর পর কেরালা পুলিশ যথাযথ প্রমাণের অভাবে এটিকে অস্তিত্বহীন অভিযান হিসেবে ঘোষণা করে। পরবর্তীতে আরেকটি কেস চালু হয় একটি ওয়েবসাইটের বিষয়ে, যেখানে মুসলিমদের সংগঠন মেয়েদের ধোঁকা দেওয়ার জন্য মুসলিম যুবকদের টাকা দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করা হয়। সেপ্টেম্বর, ২০০৪ সালে তিন মাসের মধ্যে প্রেম জিহাদ সম্পর্কে উত্তর প্রদেশ পুলিশ- এর কাছে ৬টি এমন ঘটনার আসে। কিন্ত যথাযথ প্রমাণ না মেলায় পুলিশ জানায় এসব মামলায় এই ঘটনার কোনো প্রমাণ নেই।


২০১৭ সালে কেরালা হাইকোর্ট কথিত প্রেম জিহাদ বন্ধে আইন করে যে, হিন্দু মেয়েদের মুসলিম ছেলেদের বিয়ে করা অবৈধ। একজন মুসলিম স্বামী এই আইনের পুনর্বিবেচনার জন্য ভারতের সর্বোচ্চ আদালতে আবেদন করেন। যেখানে কোর্ট রাষ্ট্ৰীয় অনুসন্ধান সংস্থার (এনআইএ) কাছ থেকে নিরপেক্ষ প্রমাণ চায় এবং এনআইকে প্রেম জিহাদ সম্পর্কিত সকল ঘটনা অনুসন্ধানের নির্দেশ দেয়। এতে এনআইএ বিভিন্ন সন্দেহজনক ঘটনা অনুসন্ধান করে যার মাধ্যমে তারা খোঁজ করে যে, কোনো নিষিদ্ধ সংস্থা যেমন: সিমি হিন্দু মেয়েদের ধর্মান্তর করে মুসলিম সন্ত্রাসী হিসেবে তৈরি করছে কিনা। এনআইএ আদালতকে জানায়, এই মামলা শুধুমাত্র একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়, রাজ্যের মধ্যে এ ধরনের অনেক ঘটনা ঘটে চলেছে। তারা আরো বলে যে, সেই মামলার একই ব্যক্তি যে প্ররোচক হিসেবে কাজ করেছিল তার বিরুদ্ধে আরেকটি মামলা রয়েছে। তবে তা প্রমাণিত হয়নি।

এই তত্বটি জাতীয় নজরে আসে প্রথম ২০০৯ সালে, যখন কর্ণাটক ও কেরালায় ব্যাপক হারে ধর্মান্তর ঘটে। ধীরে ধীরে এটি ভারতের বাইরে, যেমন: পাকিস্তান ও যুক্তরাজ্যেও ছড়িয়ে পড়ে। ২০০৯, ২০১০, ২০১১ ও ২০১৪ সালের ব্যাপক প্রচারণার জন্য প্রেম জিহাদ বিভিন্ন হিন্দুশিখ ও খ্রিস্টান সংস্থার মাঝে উদ্বেগের সৃষ্টি করে যদিও মুসলিম সংস্থাগুলো অভিযোগটিকে অস্বীকার করে। রয়টার্সের ভাষ্যমতে, এটি অনেকের কাছে একটি সামাজিক উদ্বেগের কারণ হিসেবে বিবেচিত হলেও অনেক ভারতীয় প্রধানদের মতে এটি একটি ষড়যন্ত্রমূলক ঘটনা বৈ কিছু নয়। আগস্ট, ২০১৭-তে রাষ্ট্ৰীয় অনুসন্ধান সংস্থা(এনআইএ) জানায় যে, তারা প্রেম জিহাদ সম্পর্কে মামলাগুলোতে কিছু সাধারণ প্রমাণ পেয়েছে তবে তা তত্ত্বটি প্রমাণে যথেষ্ট নয়।


প্রতিক্রিয়া:

২০০৯ঃ

২০০৯ সালে লাভ জিহাদ তত্ব প্রচারিত হওয়ার পর বিভিন্ন হিন্দুত্ববাদী ও খ্রিস্টান মৌলবাদী সংগঠন এর প্রতিরোধে একত্র হয়। যেমন : বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও ক্রিসচিয়ান এসোসিয়েশন ফর সোশিয়াল একশন এটি বন্ধের আহ্বান জানায় এবং হিন্দু পরিষদ একটি হিন্দু হেল্পলাইন তৈরি করে, যা ৩ মাসে প্রেম জিহাদ সম্পর্কে ১৫০০ কলের উত্তর দেয় বলে দাবি করে।এরপর দ্য ইউনিয়ন অফ ক্যাথলিক এশিয়ান নিউজ একটি প্রতিবেদনে জানায় যে, ক্যাথলিক চার্চ এই ঘটনার জন্য উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। কেরালা ক্যাথলিক বিশপস কাউন্সিল (কেসিবিসি) তাদের ক্যাথলিক সম্প্রদায়কে এই বিষয়ে সতর্ক করে। সেপ্টেম্বরে কেরালার তিরুবনন্তপুরমে শ্রী রাম সেনা নামে একটি হিন্দুত্ববাদী দল প্রেম জিহাদ সম্পর্কে একটি পোস্টার প্রকাশ করে। ডিসেম্বরে দলটি ঘোষণা করে যে তারা দেশব্যাপী প্রেম জিহাদ সম্পর্কিত একটি প্রচরণা চালাবে যার নাম সেভ আওয়ার ডটারস, সেভ ইন্ডিয়া

কেরালার মুসলিম সংগঠনগুলি এটিকে আক্রোশপূর্ণ ও ভুল তথ্য সংবলিত প্রচারণা বলে অভিহিত করে।পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়া (পিএফআই) কমিটির সদস্য নাসিরউদ্দিন ইলামারাম অস্বীকার করেন যে, পিএফআই কখনো প্রেম জিহাদের সাথে যুক্ত ছিল। তিনি বলেন, মানুষ হিন্দু ও খ্রিষ্টান ধর্মেও ধর্মান্তরিত হলে সেটি কোনো অপরাধ হিসেবে গণ্য হয় না, কিন্তু অন্য ধর্ম থেকে কেউ মুসলিম হলেই এসব তত্ব হাজির করা হয়।দক্ষিণ কর্ণাটকের উদুপি জেলার মুসলিম সেন্ট্রাল কমিটির সদস্যরা বলেন, মুসলিম বিশ্বাস ও সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধন করার জন্যই হিন্দু ও খ্রিস্টানরা এই ষড়যন্ত্র করে।

২০১০

২০১০ সালের জুলাইয়ে প্রেম জিহাদ বিষয়টি পুনরায় সংবাদে আসে, যখন মন্ত্রী ভি.এইচ. অচুটন্ডন নামে কেরালার তৎকালীন একজন মন্ত্রী উদাহরণ হিসেবে বলেন, কেরালাকে মুসলিম প্রধান রাজ্য তৈরি করতেই অমুসলিম মেয়েদের ধর্মান্তর করা হচ্ছে। কেরালায় বিষয়টি তদন্তের জন্য পিএফআই তার বক্তব্যটি অগ্রাহ্য করে। কিন্তু বিজেপি মহিলা মোর্চা প্রধান ও ভারতীয় জনতা পার্টি এনআইএ-এর কাছে অনুসন্ধানের আবেদন জানায়।কেরালাতে কংগ্রেস পার্টি সেই মন্ত্রীর মন্তব্যের কঠোর প্রতিবাদ জানায় এবং এটিকে খুবই নিকৃষ্ট ও বিপজ্জনক বিষয় হিসেবে বর্ণনা করে।


২০১১ঃ

২০১১ সালে বিষয়টি পুনরায় কর্ণাটকের আইনসভায় উত্থাপিত হয়। তখন ভারতীয় জনতা পার্টির সাংসদ মল্লিকা প্রসাদ দাবি করে, দেশে এখনো গোপনে প্রেম জিহাদ চলছে। সে বছরের জানুযারি থেকে নভেম্বরে পালিয়ে যাওয়া ৮৪ জন মেয়ের মধ্যে ৬৯ জন দাবি করে যে, তারা মুসলিম যুবকদের প্রেমে পড়ে প্রতারিত হয়েছে।তবে তাদের কারো দাবি মতে, প্রেম জিহাদ প্রমাণিত হয়নি। টাইমস অফ ইন্ডিয়া জানায়, এ বিষয়ে ডেপুটি স্পিকার এন.যোগিস ভাট ও এস.সুরেশ কুমার সরকারের পক্ষ সমর্থন করলেও কংগ্রেস সদস্য বি. রামানথ রায় ও অভয়চন্দ্র জাইন বিরোধিতা করে বলে যে, সমাজের একতা বিনষ্ট করার জন্যই বিজেপির নেতারা বিষয়টি পুনরায় আইনসভায় উত্থাপন করেছে।

সে বছরই হিন্দু হিতরক্ষণা ভেদির ১৫ জন সদস্যকে গ্রেফতারের প্রতিবাদ জানাতে গিয়ে রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের নেতারা পুনরায় এই তত্বটি সামনে নিয়ে আসে । তারা দাবি করে যে, পুলিশ মুসলিম যুবকদের ধরতে ভয় পায় এবং তারা হিন্দু মেয়েদের ফোন ব্যবহার করায় সাবধান হতে বলেন এবং দাবি করে যে, লাভ জিহাদের প্রসারে এসব অনেক বড় ভূমিকা রাখে। চলচ্চিত্রনির্মাতা পরমিতা ভোহরাও বিষয়টি তুলে ধরে এটিকে বিশ্ব হিন্দু পরিষদের (ভিএইচপি) ষড়যন্ত্র তত্ত্ব হিসেবে আখ্যায়িত করে।

২০১২ঃ

২০১২ সালের ২৫ জুন কেরলের তৎকালীন মন্ত্রী উম্মেন চান্দি রাজ্যের আইনসভায় পুনরায় প্রেম জিহাদ তত্ব উত্থাপন করেন এবং নিজের দাবির পক্ষে বেশ কিছু পরিসংখ্যান তুলে ধরেন।


২০১৪ঃ

২০১৪ সালে, প্রেম জিহাদের জন্য সংঘর্ষমূলক প্রতিবাদ শুরু হয়। যদিও রয়টার্স' এটিকে ভারতীয় প্রধান ও বুদ্ধিজীবীদের একটি ষড়যন্ত্র বলে। বিজেপি এমপি যোগী আদিত্যনাথ বলেন যে, প্রেম জিহাদ হলো ভারতকে লক্ষ্য করে একটি ষড়যন্ত্র।তিনি একটি টেলিভিশনে ঘোষণা করেন, মুসলিমরা জোরপূর্বক যা চায় তা ভারতে করতে পারে না, তাই তারা এখানে প্রেম জিহাদ পদ্ধতি ব্যবহার করছে।হিন্দু কর্মীরা উত্তর প্রদেশের মেয়েদের সাবধান করে যে তারা যেন মুসলিমদের কাছ থেকে দূরে থাকে ও তাদের সাথে যেন বন্ধুত্ব না করে। উত্তর প্রদেশের একটি কমিটি অখিল ভারতীয় বাইশ্য একতা পরিষদ বলে এই সমস্যায় কেউ যাতে আক্রান্ত না হয় সেজন্য যুবতী মেয়েদের ফোনের ব্যবহার হ্রাস করা উচিত।

এই ঘোষণার পর, টাইমস অফ ইন্ডিয়া প্রতিবেদন করে যে পুলিশের নিয়ন্ত্রক শালাব মাথুর বলেছে প্রেম জিহাদ শব্দটি শুধু ভয় ও সমাজে বিভক্তি সৃষ্টি করার জন্য তৈরি করা হয়েছে। মুসলিম নেতারা বলেন ২০১৪ সালের এই বিষয়টির প্রচার করা একটি ঘৃণ্য কাজ।অনেক নারী প্রবক্তারা উদ্বেগ প্রকাশ করেন যে এই ধরনের কাজ নারীদের মুক্ত পছন্দ বন্ধ করে নারীদের অধিকারে নেতিবাচক প্রভাব ফেলবে।

ভারতীয় জনতা পার্টির নেত্রী ও পানি মন্ত্রী উমা ভারতী, যুবক মেয়ে ও ছেলেদের প্রেম জিহাদ থেকে বাঁচাতে বিভিন্ন সমাজের নেতাদের নিয়ে একটি সামাজিক আলোচনার ডাক দেন।

সেপ্টেম্বর ২০১৪-এ, বিজেপি এমপি সাক্ষী মহারাজ বলেন মাদ্রাসার মুসলিম ছেলেদের বিভিন্ন অর্থের লোভ দেখিয়ে (শিখ মেয়ের সাথে সম্পর্কের জন ১১ লক্ষ, হিন্দু মেয়ের সাথে সম্পর্কের জন্য ১০ লক্ষ এবং জাইন মেয়ের সাথে সম্পর্কের জন্য ৭লক্ষ টাকা) প্রেম জিহাদে উৎসাহিত করা হয়। তিনি বলেন তিনি এগুলো কিছু মুসলিমদের কাছ থেকে জানতে পেরেছেন।জামিয়া উলামা হিন্দ এর সহ-সভাপতি আব্দুল রাজ্জাক খান এসব কাজ অস্বীকার করে ও মন্তব্য করে দেশের শান্তি বিনষ্টে এটি ষড়যন্ত্রের অংশ।[১০২] উত্তর প্রদেশের তৎকালীন মন্ত্রী মোঃ আজম খান উক্ত মন্তব্যকে নির্দেশ করে বলেন, দেশকে ভাঙার চেষ্টা করা হচ্ছে।

১৩ অক্টোবর, ইন্ডিয়া টুডে প্রতিবেদনে জানায়, যে নারী তাকে গণধর্ষণ ও জোরপূর্বক ধর্মান্তরিত করার অভিযোগ করেছিল, সে তার বক্তব্য পরিবর্তন করেছে ও পুলিশকে জানিয়েছে তাকে গোপনে চাপ দেওয়া হয়েছে।


২০১৫ঃ

জানুয়ারিতে, বিশ্ব হিন্দু পরিষদের নারী দল দুর্গা বাহিনী তাদের ম্যাগাজিনে প্রেম জিহাদ নিয়ে বোরকায় ঢাকা কারিনা কাপুরের ছবি প্রকাশ করে।চিত্রের নিচে শিরোনাম ছিল:কনভার্সন অফ ন্যাশনালিটি থ্রো রেলিজিয়াস কনভার্সন

২০১৬-১৮ঃ

মে ২০১৭, কেরালা হাই কোর্ট একজন ধর্মান্তরিত মেয়ে অখিলার (ধর্মান্তরের পরে হাদিয়া) সাথে একজন মুসলিম ছেলে শাফিন জাহানের বিয়েকে নাকচ করে দেয় কারণ ধর্মান্তরের সময় কনের পিতামাতা সেখানে উপস্থিত ছিলেন না। তার বাবা বলেন আইএসআইএসের নির্দেশে এই বিয়ে ও ধর্মান্তর হয়েছে। তারপর কেরালার ডিজিপিকে প্রেম জিহাদ সম্পর্কিত কেস অনুসন্ধান করার জন্য ও জোরপূর্বক ধর্মান্তরের ঘটনা খোঁজ করার আদেশ দেয়া হয় যেটা এই ধরনের সংগঠনের অস্তিত্ব প্রমাণ করবে ও এদের কাজ করার পেছনের ঘটনার ধারণা দিবে। কেরালার অধিকাংশ যুবক আইএসআইএস এর সাথে যুক্ত হওয়ার কারণে এই সিদ্ধান্ত নেয়া হয়। এটা আরো নজরে আনবে যদি বৃহৎ কোন সংস্থা এর সাথে যুক্ত থাকে। কিন্তু পরিতাপের বিষয় এই প্রশ্নের কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি। মেয়ের বাবা বলেন মেয়েকে একটি সংস্থা মুসলিম ছেলেকে বিয়ে করতে প্রলুব্ধ করে যার কারণে মেয়েটি পিতামাতার কথা শোনে না।


মেয়ের বাবা অশোকান মণি জানান ২০১৬ সালে, যখন তার মেয়ে যেখানে পড়ত সেই ক্যাম্পাস থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় তখন তিনি একটি হ্যাবিয়াস কর্পাস আবেদন লেখেন। তিনি জানান তার মেয়েকে জোর করে ধর্মান্তর করা হয়েছে ও তার মেয়ে অনেক সময়ই পরিবারকে জানাতো যে তাকে তার সহপাঠী জসীনা আবুবকর ও ফসীনা তার ইচ্ছার বাইরে কাজ করতে বাধ্য করত। যদিও অখিলাকে যখন পাওয়া যায় তখন সে জানায়, সে ২০১২ সাল থেকে ইসলাম ধর্ম অনুসরণ করছে ও সে নিজ ইচ্ছায় বাড়ি ছেড়েছে। সে আরও জানায় যে, তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে কেউ ছিল না। সে বলে সে তার রুমমেটদের কাছ থেকে এই ধর্মের শিক্ষা সম্পর্কে জানার পর এ ধর্মে আগ্রহী হয়েছে। সে জানায় সে ইসলাম ধর্ম জানার জন্য থারিভাথুল ইসলাম সভা কর্তৃক আয়োজিত একটি কোর্সে যোগ দেয়। সে আরো জানায় সে ব্রিফের সময় আবুবকরের সাথে ছিল ও মঞ্জেরীর সত্যসরণি হোস্টেলে চলে যায়, যেই প্রতিষ্ঠানটি ইসলামে ধর্মান্তর করছিল এবং এটি পিএফআই এর সাথে গভীরভাবে সম্পর্কযুক্ত। সেখানে ইরনাকুলামে সে সৈনাবার সাথে পরিচিত হয় যার সাথে সে তার বাবার আবেদন করার পর থাকে। জুনে সে সত্যসারণীতে ভর্তি হওয়ার প্রমাণ দিলে কোর্ট সৈনাবার সাথে তার থাকা বৈধ করে ও তার বাবার আবেদন খারিজ করে। দুই মাস পর তার বাবা আবার আবেদন করেন ও বলেন তার মেয়ে আইএসআইএস এর নির্দেশে ধর্মান্তরিত হয়েছে ও তার শঙ্কা সে আফগানিস্তানে উক্ত দলে যোগ দিবে, তিনি উদ্ধৃত করেন কেরালার দুই নারীর কথা যারা মুসলিম পুরুষদের দ্বারা ধর্মান্তরিত হয়েছে ও উক্ত দলে যোগ দিয়েছে। ডিসেম্বরে, অখিলা শাফিনকে বিয়ে করে ও আশোকানের আবেদন মন্জুর করা হয় জানুয়ারি ২০১৭ সালে। আখিলা বিয়ের সার্টিফিকেট কোর্টকে দেখায় কিন্তু এটা নাকচ করা হয়।


জুলাই ২০১৭ সালে,শাফিন জাহান কোর্টের সিদ্ধান্তকে ভারতের সুপ্রিমকোর্টে চ্যালেঞ্জ করে। শাফিন তার পরিবারের সাথে প্রথম মেয়েকে দেখে আগস্ট ২০১৬-তে একটি বৈবাহিক ওয়েবসাইটের বিজ্ঞাপনে। সুপ্রিমকোর্টে কেসের কাজ শুরু হয় ৪ আগস্ট ২০১৭-এ। মেয়ের বাবা বলেন তার মেয়েকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করা হয়েছে।[সুপ্রিমকোর্ট একইসাথে কেরালা সরকার ও এনআইএ-এর কাছ থেকে তথ্য গ্রহণ করে।প্রাক্তন বিচারক আর.বি. রবীন্দ্রন এনআইএ'কে ১৬আগস্ট বিষয়টি অনুসন্ধান করার নির্দেশ দেন যখন এনআইএ প্রকাশ করে যে, মেয়েটির বিয়ে করা ও ধর্মান্তরের ঘটনা ভিন্ন নয় এবং রাজ্যে এমন ঘটনা দেখা দিয়েছে, আরো বলেন তারা একই লোকের আরো একটি কেস পেয়েছেন। এনআইএ জানায় কেসে মেয়েটির স্বামী ইসলামী জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড দ্য লেভান্ট-এর সাথে যুক্ত। যারা হয়তো এই বিয়ে সম্পাদন করেছে।

২০১৮ সালের ৮ মার্চে সুপ্রিম কোর্ট কেরালা উচ্চ আদালত থেকে হাদিয়ার বিবাহ বাতিল সম্পর্কিত রায়টি তুলে নেয় এবং সেখান থেকে জানানো হয় তিনি তার নিজের স্বাধীন ইচ্ছায় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছেন। অবশ্য জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগের জন্য সুপ্রিম কোর্ট এনআইএকে তাদের তদন্ত অব্যাহত রাখতে নির্দেশ দান করেছে।


লেখকঃচিকিৎসক, জার্নালিস্ট ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী। 

(চলবে....)


সাবধান হতে হবেঃ
হে মুসলিম নোকা আবেগী বোনেরা সাবধান হউন।

টার্গেট যখন মুসলিম মেয়েরা। 
সাম্প্রদায়িক উস্কানী নয়; মেয়েদের সতর্ক করাই আমার কাজ। এর বেশী আর কি ই বা করার আছে আমার?

বর্তামান জেনারেশনের মাঝে ফ্রি মিক্সিং বেড়েছে। বেড়েছে হারাম রিলেশন থেকে শুরু করে জিনা, ধর্ষণ পরকীয়া এমনকি কিশোরী মাতা হওয়ার প্রবনতা।

এখন এসব অবৈধ সম্পর্ক গুলো শুধু কেবল নিজ ধর্মীয় লোকদের মাঝে সীমাবদ্ধ নেই৷ উদার মনমানসিকতার নামে বর্তমান সময়ে তরুন প্রজন্ম সম্পর্ক জড়িয়ে পড়ছে ভিন্ন ধর্মের লোকদের সাথে। 

মেয়েটার সহপাঠী অমুসলিম। শুরুটা বন্ধত্ব দিয়ে। ধীরে ধীরে বহুদূর সম্পর্ক গড়ায়। বন্ধুত্ব হতে হয় প্রেম, প্রেম হতে একান্তে সময় কাটানো এবং একসময় অমুসলিম বন্ধুটির হাতে হয়তো হচ্ছ সংঘবদ্ধ ধর্ষণ কিংবা মুসলিম হয়ে যাবার নামে বিয়ে করে হচ্ছে প্রতারণার শিকার। 


এমনটা এক দিনে হয় না, প্রথমে অমুসলিম ছেলেটি ভেজা বেড়াল সেজে পর্দাশীল মেয়েটির সাথে শুরু করে বন্ধুত্ব, ইসলামের প্রতি সন্মান দেখানোর অভিনয় করে। আফসোস করে পরিবারের জন্য মুসলমান হতে পারি না। মা বানার কথা মনে করে হতে পারছিনা মুসলিম, তবে এক সময় মুসলমান হওয়ার টার্গেট আছে। এই ফাঁকে মুসলিম মেয়েটি তাকে মুসলমান বানিয়ে বিনা হিসাবে জান্নাতে যাবে মর্মে শয়তানের এই যুক্তির প্রলোভনে পড়ে শুরু করে 
অমুসলিম ক্লাশমেট বা অফিস কলিগের সাথে বন্ধুত্ব। বন্ধুত্ব হতে ছেলেটিকে আটকে রাখার জন্য প্রেমের ব্যর্থ চেষ্টা, তার পর শয়তানের সেই ফাঁদে পা দিয়ে অবৈধ দৈহিক সম্পর্কে জাড়িয়ে এক সময় হয়ে যায় কিশোরী মাতা। তখন না পারে বলতে আর না পারে সইতে। এক সময় মান বাচাতে অনেক মেয়েরা নিজেই হয়ে যায় ধর্মান্তরিত। 

ইসলাম অন্য ধর্মের লোকদের বিয়ে করা জায়েয করেনি। কোনো ছেলে আপনাকে ভালোবেসে দ্বীনের ফিরতে চায়৷ আপনি ভাবছেন এতে মন্দ কী? একজন মানুষ ইসলামের ছায়াতলে আসবে। আসলে এটা একটা শয়তানের নেক সুরতে ধোকা, কিন্তু বোকা মুসলিম মেয়েরা বুঝে না।

আমার নিজের দেখা জামায়াতে ইসলামে এক রোকনের(সালাফী মতাদর্শের) মেয়ে, ঢাকা বিশ্ব বিদ্যালয়ে টিকেছে। সে মেয়েও পর্দাশীল। মেয়েটির স্বভাব চরিত্র ও ব্যক্তিত্ব দেখে ঢাবির এক কমিউনিস্ট বড় ভাই(কমরেড) তার প্রশংসা শুরু করে তার পর মেয়েটির কথায় সে মাঝে মাঝে নামাজ পড়াও শুরু করে। কিছুদিন পর দাড়ি টুপী পড়ে মেয়ের বাবাকে প্রস্তাব দেয়। তার বাবা খুশি হয়ে বিয়ে দেয় এই আশায় ছেলেটি ইমান আনবে। গত ২৯ নভেম্বর ঐ মেয়েটির বাবা আমাকে তার মেয়ের হ্যান্ডিক্রাফ্টের কোম্পানির কিছু প্রোডাক্টের ব্লগের ভিডিও আমাকে এক প্রকার জোড় করে দেখাচ্ছিল, ভদ্রতার খাতিরে ২০ সেকেন্ড ভিডিওতে দেখলাম মেয়ে বেপর্দা হয়ে নিজেই প্রডাক্টের মডেলিং করছে আর পাশে তার স্বামী বসে বসে বিড়ি টানছে, কোথায় গেলো সুন্নতি লেবাস আর কোথায় গেলো মেয়ের পর্দা। ঐ সালাফি জামায়াত নেতাকে বললাম আপনার মেয়ের জামাই তো কমিউনিস্ট ই রয়ে গেলো, বরং মেয়েটাকে বেপর্দা বানিয়ে ছাড়লো। সে বলছে ভাই সময় লাগবে, ঠিক হয়ে যাবে। আমিও বললাম নাতির বয়স কত। সে বলল ১০ বছর। আমি জিজ্ঞেস করলাম আর কবে ঠিক হবে? নাকি মেয়েটাও ওই খতায় নাম লেখাইলো? নিশ্চিত না হইয়া শয়তানের কথায় বিশ্বাস করলে পথ ভ্রষ্ট হবেনই। যান আপাতত বেরিয়ে যান। তার পর উপহার সরুপ একটা হ্যামফরের ডায়েরির দিয়ে দিলাম ঐ সালাফিকে।

কী নির্বোধ বোকা আপনি? বান্দা তার রব'এর কাছে আসবে৷ তার জন্য আপনাকেই তাকে বিয়ে করতে হবে কেন? আপনি কি নিশ্চিত পরবর্তীতে তার ধোঁকা খাবেন না? আপনি নিশ্চিত সে আপনাকে ছেড়ে চলে যাবে না?

সে যদি ইসলামের জন্যই আপনাকে বিয়ে করে তবে বগে সে মুসলমান হয়ে এফিডেভিডের কাগজ হাতে নিয়েই আপনার কাছে আসবে।

আপনার ইসলাম অন্য পুরুষের সাথে কথা বলা জায়েয করেনি। আপনার শুরুটাই তো অবৈধ। 

আপনার বন্ধুটির কাছে তার ধর্ম ভালে লাগে না৷ সে আপনাকে বলে আপনার ধর্ম শ্রেষ্ঠ সে যদি প্রকৃত পক্ষে ইসলাম গ্রহণ করতেই চায়; তবে তাকে আপনি নয়; বরং কোনো পুরুষের সাথে কথা বলতে বলুন। আগে ইমান আনতে বলুন।তার পর বাসায় প্রস্তাব দিতে বলুন।

আপনার ভার্সিটি কিংবা আপনি যে পরিবেশে বাস করেন; সেখানে অনেক পুরুষ আছে। অনেক আলেম আছে, সে সবাইকে ফেলে কেবল আপনাকেই কেন বেছে নিয়েছে? বুঝে নিন নিশ্চিত এখানেও কোনে ষড়যন্ত্র আছে। তাহলে চলুন বলি সে ষড়যন্ত্রের কথা।

ভারতে লাভ জিহাদ নিয়ে বেশ বিতর্ক চলছে৷ হিন্দু মেয়েরা মুসলিম ছেলেদের বিয়ে করে ধর্ম পরিবর্তন করছে৷ এটাকে কোনোভাবেই থামানো যাচ্ছে না৷ তাই তারাও বসে নেই। আবিষ্কার করেছে ভিন্ন পথ। তাদের টার্গেট এখন মুসলিম মেয়েরা। তাদের জীবন নরক বানানো৷ মুসলিম মেয়েরা ধর্ম পরিবর্তন করবে না তারা সেটা জানে৷ তাই তারাই ধর্ম পরিবর্তনের নাটক করে আপনাকে করবে সর্বশান্ত।

ওহে বোকা আবেগী মুসলিম বোনেরা!!!

তোমার জন্য অন্য পুরুষের সাথে বন্ধুত্ব করা জায়েয নেই। হোক সে মুসলিম কিংবা অমুসলিম। হারাম চিরকালই হারাম। এই হারামটা জেনে বুজেই করছো। তুমি প্রেম কর মানে নিজেকে ধর্ষনের জন্য প্রস্তুত করে একজন ধর্ষকের নিকট শপে দিচ্ছ। হোক সে মুসলিম বা অমুসলিম।

এদের টার্গেট যেমন নিম্ন পরিবারের মায়ে কিংবা শ্রমজীবী মানুষ। তেমন করেই টার্গেটে রয়েছে স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটির মেয়েরা। অনেক মেয়েরা নিজেকে প্রগতিশীল প্রমান করার জন্য নিজেকে ধর্মনিরপেক্ষ করে গড়ে তোলে সব ধর্মের লোকের সাথে মেলামেশা করে। এ মেয়ে গুলা আরো বড় গর্দভ। প্রতিদান যা পাওয়ার তাই পায়, প্রথমে ধর্ম হারায়, তার পর ইজ্জত খোয়ায়।

আমি আপনাদের সচেতন করা ছাড়া আমার কোন দায়িত্ব আছে বলে মনে করি না।

লেখক:চিকিৎসক, জার্নালিস্ট ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী। 



কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...