পীর মানেই ভন্ড জেনেও মানুষ কেনো পীরের কাছে যায়?
![]() |
চরমোনাইর তাবিজের কিতাবের ৩১ তম পৃষ্ঠায় লিখিত স্বপ্ন দোষের তাবিজের নকশা |
সন্মানিত পাঠক বৃন্দ আসসালামু আলাইকুম, অনেক পাঠক প্রশ্ন করে যে পীর তন্ত্র নামক ভ্রান্তি নিয়ে আমরা এত জানার পরও কেন মানুষ পীরের কাছে যায়? হ্যাঁ এই আশ্চর্য টুকুই আজ আপনাদের বর্ননা করব। লেখার সবটা ধৈর্য ধরে পড়ার অনুরোধ রইলো, অনেক অজানা জিনিস জানতে পারবেন আসা করি।
আমরা দেখি যে পীর মানে ধর্ম ব্যবসা ও ভন্ডামীর আড্ডা দেখার পরও কেনো জানি মানুষ তাদের কাছে ভীড় জমায়। হ্যাঁ এটা একটা আশ্চর্যের বিষয়। খেয়াল করেলে দেখবেন পীরের নিকট চার ধরনের লোক যায়।
১। শিক্ষিত, ২। মূর্খ ৩। অপরাধী। ৪।হতাশা গ্রস্থরা।
১। শিক্ষিত লোক যে কারনে যায়ঃ
এটা জানার জন্য আরেকটা বিষয় সংক্ষেপে বুঝাতে চাই আর তা হলো অলৌকিক জ্ঞান ও ক্ষমতার লোভে। আর ঐ অলৌকিক জ্ঞান ও ক্ষমতার নাম হলো "বাকবিল্লাহ" ও "ফানা ফিল্লাহ"। বাকাবিল্লাহ মানে ইবাদত করতে করতে আল্লাহর আত্মার সাথে নিজেকে মিলিয়ে ফেলা। আর তখনই অলৌকিক ক্ষমতা অর্জন করে।
ফানা ফিল্লাহ হলো ইবাদতে মশগুল থাকতে থাকতে আল্লাহর প্রতি দিওয়ানা হওয়া। এই দুটি জ্ঞানের শাখার তালীম ও পথ বাতলে দেয় নাকি পীরেরা। এই আশায় শিক্ষিত লোক গুলো পীরের দরবারে যায়।
এবার আসুন ফানাফিল্লাহ ও বাকাবিল্লাহ কোত্থেকে এলো এটা জানি। আমি "ইসলামে তরীকত-মারেফাত ও সূফীবাদ ভ্রান্তিতে" বিস্তারিত এ ব্যাপারে লিখেছি যে এই তরিকত, মারেফত ও সূফীবাদ জিনিসটা ইসলাম সমর্থন করে না, এটা বৈরাগ্য বাদিতার পথ যা ইসলাম সম্পূর্ন রুপে হারাম ঘোষনা করেছে। এটা খ্রিস্টানদের আবিস্কার। ওরা ভাবে আল্লাহ হলো পরমাত্মা। এই ফানাফিল্লাহর মাধ্যমে ইবাদত করতে করতে নাকি বাকাবিল্লাহ অর্জন সম্ভব। তারা মনে করে যিশু ও মরিয়ম এভাবেই বাকাবিল্লাহ অর্জন করেছে আর তাই তারা মা মেরী ও যিশুকেও ইশ্বরের আত্মা মনে করে। যিশু এই পদ্ধতিতেই প্রচুর অলৌকিক ক্ষমতা অর্জন করেছিল বলে তারা মনে করে।
এই ফানাফিল্লাহ-বাকাবিল্লাহ অর্জনের লোভ দেখিয়ে দেখিয়ে শিক্ষিত লোক গুলারে পীরেরা দলে ভেড়ায়।
২। অপরাধীরা কেন ভিড়েঃ
অপরাধী লোক গুলো আজীবন অপকর্ম করে, চাকরি জীবনে সকল অপকর্ম করে শেষ জীবনে পীর বাবার নিকট ভক্তি সহকারে আসে হাশরের ময়দানে বাঁচিয়ে দেয়ার জন্য। এজন্যই দেখা যায় পীরের দরবার গুলোতে প্রায়ই বড় বড় মার্সিডিজ থামিয়ে পীরের নিকট আসতে। তারা পীরকে বড় বড় অবৈধ টাকার বান্ডেল গুঁজে দেয় মুক্তির আশায়।
৩। মূর্খ লোক আসার কারনঃ
এই প্রকারের লোক গুলো একান্তই মূর্খ শ্রেনীর হয়। তারা এত ইসলাম বুঝে না, তারা সহজেই পীরবাবাকে ধরে আখেরাতে মুক্তি পাওয়ার আশায় আসে মূরীদ হতে।তারা নামাজ-রোজার ধার ধারে না।
৪।হতাশা গ্রস্থ লোক কেন আসেঃ
কিছু রোগাক্রান্ত, সমস্যায় জর্জরিত ও হতাশা গ্রস্থ লোক উপায় অন্তর না পেয়ে পীরের নিকট আসে অলৌকিক ভাবে মুক্তির আশায়। তারা পীর হতে কিছু তাবিজ-কবজ, পানি পড়া, শলতে পড়া ক্রয় করে উছিলার জন্য।
আসুন এবার পীরালী হাসিল করে কেমনে তা জানি। যারা বংশানুক্রমে পীর তাদের পীরালি হাসিল করা লাগেনা, তারা পদাধিকার বলে পেয়ে যায়, যারা নতুন করে পীর হয় তারা পীরালি হাসিল করতে হয়।
পীরালি হাসিলের জন্য কাঙ্খিত ব্যক্তি তার কোন কুফুরী পদ্ধতি চর্চাকারী উস্তাদ এর আদেশে কিছু নিয়ম মেনে নির্জন স্থানে বা মাটির গর্তে থেকে কিছু নিয়ম মেনে এক ধরনের সাধনা করে, এটা কমপক্ষে ৪১ দিন হতে ৯০ দিন বা তারও বেশী সময় যাবত হতে পারে। এই সাধনার মাধ্যমে কিছু বদ ও জাদুকর জ্বীন ও প্রেতাত্মা তারা হাসিল করে যার উপর এই ব্যক্তির প্রভাব থাকে। আর ঐ জ্বীন গুলোও হয় মারাত্মক নাফরমান ও যাদুকর টাইপের, কুফুরীতে নিমজ্জিত। এই জাদুকর জ্বিন গুলোর মাধ্যমে মানুষের উপর যাদুর মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করে এই যাদুকর পীর।
এবার দেখা যাক কিভাবে পীর মূরীদ জমায়ঃ
১। দেখবেন পীরের দরবারে কেউ গেলেই সর্ব প্রথম যে কাজটি করে তা হলো পীর কিছু খাওয়ানোর চেষ্টা করে। ঐ খাবার গুলোতেই থাকে পীরের জাদু কৃত ফোঁক দেয়া কিছু যাদু যা মানুষকে বশিভুত করে ফেলে, তবে সবাইকে পারে না।
২। মাহফিলে "তবারক" নামে এক প্রকার খাবার দেয়, ঐ খাবার খাওয়ার জন্য উপস্থিত সবাইকে পীর দেখবেন অনুরোধ করে, কিন্তু এই তবারক নামক খাবারেই পীরেররা কিছু অপবিত্র যাদু করে রাখে যা মানুষকে বশিভূত করার জন্য।
৩। কোন কোন মাহফিলে দেখা যায় যে জিকিরের সময় শ্রোতারা জ্ঞানশূন্য হয়ে লাফালাফি সহ উদ্ভট আচরন করে তখন তার হুঁশ থাকে না, এ কাজ টা সবাই করে না, করে পীরের জাদুমকরা নির্দিষ্ট কিছু লোক। এগুলো হয় পীরের হাসিল করা কাফের ও জাদুকর জ্বিন গুলোর তাছির করার মাধ্যমে। এটাও এক মারাত্মক কুফুরী যাদুর মাধ্যমে ঘটানো হয়।
এই জাদু গুলো একদিকে হাসিল করা জ্বীনের মাধ্যমে করে অপরদিকে পীর সাহেবরাও বিভিন্ন মন্ত্রের মাধ্যমে করে।
মন্ত্র গুলো হলো আল কোরআনের কিছু আয়াতের অর্থ বিকৃত করে পড়া, বাইবেল, গীতা, ত্রিপিটক এর কিছু অংশ তাও বিকৃত করে পাঠ করে।
দ্বিতীয়ত তারা যে জঘন্য কাজটি যাদু করার সময় করে আর তা হলো নমরুদ, ফেরাউন, হামান, কারুন, লুসিফার ও ইবলিশ শয়তানের দোহাই দেয়। এটা যদি কেউ বিশ্বাস না করেন তাইলে আপনারা চরমোনাইর তাবিজের কিতাবের ৩১ তম পৃষ্ঠা দেখুন ঐখানে একটা তাবিজে অনুরুপ নকশা লেখা আছে। আমি এই বইয়ের পৃষ্ঠার ছবি আপোলড দেয়ার চেষ্টা করব। তাছাড়াও পীরেরা এক প্রকার অপবিত্র সাধনার মাধ্যমে কিছু অপবিত্র বস্তু দিয়েও জাদু করে থাকে যা এখানে বর্ননা করা সম্ভব না।
![]() |
চরমোনাইর তাবিজের কিতাবের ৩১নং পৃষ্ঠার স্বপ্ন দোষের তাবিজের নকশার অনুবাদ |
তারা যে সকল মন্ত্র গুলো পড়ে তার মধ্যে সবচেয়ে মারাত্মক কুফুরী মন্ত্র ২টি, এগিলো হলো "বসতুম......সাব্বেত লাহু...........বিহুব্বা..........ইয়ার রেহেমার....... "।
আরেকটি মন্ত্র হলো," নিনি....... নিখালো...ফাইদে.......খই খই.........ওখা"।
এ দুটি মন্ত্র তারা সবচেয়ে বেশী ব্যবহার করে। তাছাড়াও ১৭০১ সালের কমাখ্যা প্রকাশনির ৭০ খন্ডের " লজ্জাতুন নেসা" নামক বইয়ে অনুরুপ ৪০০ কুফুরী মন্ত্র আছে যে গুলো একবার পাঠ করলে সাথে সাথে ইসলাম হতে খারিজ হয়ে যায়। এই বইটিও আমার সংগ্রহ শালায় আছে, কেউ চ্যালেঞ্জ করলে আমি দেখাতে পারব শর্ত স্বাপেক্ষে।
এই পীরদের কুফুরী নিয়ে লিখে শেষ করা সম্ভব নয়। আমি লিখলে অনুরুপ আরো ১০০টি পর্ব লিখেও শেষ করতে পারব না। তাই সংক্ষিপ্ত করা হলো।
আল্লাহ সকল মুসলিমকে এই পীর নামক কুফুরী চক্র হতে সবাইকে রক্ষা করুক( আমীন)।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ