expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

রবিবার, ১০ আগস্ট, ২০২৫

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

 দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!



এক.  

শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের পৈতৃক ব্যবসার মধ্যে অন্যতম সফল ব্যবসা ছিল পতিতালয় ব্যবসা।  

রবীন্দ্রনাথের দাদা দ্বারকানাথের কলকাতা নগরীতে ৪৩টি বেশ্যালয় ছিল। এছাড়াও ছিল মদ ও আফিমের ব্যবসা।  

(সূত্র: *এ এক অন্য ইতিহাস*, অধ্যায়: অসাধারণ দ্বারকানাথ, লেখক: গোলাম আহমদ মর্তুজা, পৃষ্ঠা: ১৪১)  


"রবীন্দ্রনাথের দাদা দ্বারকানাথ ছিলেন দেড়শ টাকা বেতনের ইংরেজ ট্রেভর প্লাউডেনের চাকর। দ্বারকানাথ ধনী হয়েছিলেন অনৈতিক ব্যবসার দ্বারা। রবীন্দ্রনাথের দাদা দ্বারকানাথ ঠাকুরের তেতাল্লিশটি বেশ্যালয় ছিল কলকাতাতেই।"  

(তথ্যসূত্র: *কলকাতার আনন্দবাজার পত্রিকা*, ২৮শে কার্তিক, ১৪০৬, রঞ্জন বন্দ্যোপাধ্যায়)  


তবে রবীন্দ্রনাথ পতিতাদের মধ্যেও যে সাহিত্যরস খুঁজে পেয়েছেন, সেটা বলার অপেক্ষা রাখে না। রবীন্দ্রনাথ ঢাকায় বুড়িগঙ্গার পাশে বিখ্যাত 'গঙ্গাজলী' (একটি এলাকা যেখানে ঐ সময় বিশাল পতিতালয় ছিল) এর পাশে এসে লিখেছিলেন:  

"বাংলার বধূ বুকে তার মধু"।


সত্যি কথা বলতে, ঐ সময় কলকাতায় বিশেষ কারণে যৌনরোগ সিফিলিস খুব কমন ছিল। তাই ১৯২৮ সালে *অবতার পত্রিকা*য় কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সিফিলিস রোগের খবরটা তেমন গুরুত্ব পায়নি।  

(রবীন্দ্রনাথের সিফিলিস হয়েছিল—এর সূত্র: *নারী নির্যাতনের রকমফের*, লেখক: সরকার সাহাবুদ্দিন আহমদ, পৃষ্ঠা: ৩৪১)  


**রবীন্দ্রনাথকে যারা দেবতা ভাবতে চান, তাদের বলছি—সিফিলিস-গনোরিয়া কাদের হয়? বলবেন দয়া করে?**  


দুই. 

আজকাল ভারতের উগ্র জাতীয়তাবাদী দল বিজেপি প্রায়ই বলে থাকে, ভারতের সকল মুসলমানই হিন্দু। ফলে তাদেরকে ঘরে ফেরাতে হবে (ঘরে ওয়াপসি)। পুরোপুরি হিন্দু হয়ে যেতে হবে। কথাটা কিন্তু ভারতের জাতীয় কবি রবীন্দ্রনাথই প্রথম চালু করেছিলেন। তিনি বলেছিলেন:  

"মুসলমানরা ধর্মে ইসলামানুরাগী হলেও জাতিতে তারা হিন্দু। কাজেই তারা ‘হিন্দু মুসলমান’।"

(সূত্র: *আবুল কালাম শামসুদ্দিনের লেখা অতীত দিনের স্মৃতি*, পৃষ্ঠা: ১৫০)  


রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এমন ব্যক্তি, যিনি মুসলমানদের আবার হিন্দুতে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য যে কমিটি হয়, সেই কমিটির অন্যতম সদস্য ছিলেন। এই কমিটির কাজ ছিল নিম্নবর্ণের যেসব হিন্দু মুসলিম হয়েছে, তাদের আবার হিন্দু ধর্মে ফিরিয়ে নেওয়া।  

(উৎস: *প্রশান্ত পালের রবি জীবনী* ৬ষ্ঠ খণ্ড, পৃষ্ঠা ২০৭-২০৮, আনন্দ পাবলিশার্স লিমিটেড, কলকাতা)  


গোঁড়া হিন্দুদের মতো সতীদাহ প্রথাকে সমর্থন করে কবিতাও লিখেছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। লিখুন, সমস্যা নেই। কিন্তু স্বামীর চিতায় জীবন্ত স্ত্রীর পুড়ে যাওয়াকে মুসলমানরা অপছন্দ করেন বলে তিনি 'যবন' গালি দিয়ে মুসলমানদের হুমকি দিচ্ছেন:  


> **"জ্বল জ্বল চিতা! দ্বিগুণ দ্বিগুণ  

> পরান সপিবে বিধবা বালা  

> জ্বলুক জ্বলুক চিতার আগুন  

> জুড়াবে এখনই প্রাণের জ্বালা  

> শোনরে যবন, শোনরে তোরা  

> যে জ্বালা হৃদয়ে জ্বালালি সবে  

> স্বাক্ষী রলেন দেবতার তারা  

> এর প্রতিফল ভুগিতে হবে!"**  

> (জ্যোতিন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা জ্যোতিন্দ্রনাথের নাট্য সংগ্রহ, কলকাতা: বিশ্বভারতী, ১৯৬৯, পৃষ্ঠা: ২২৫)  


যারা রবীন্দ্রনাথকে অসাম্প্রদায়িক বানাতে চান, দয়া করে বলুন—কোন অর্থে তিনি অসাম্প্রদায়িক?


তিন.  

রবীন্দ্রনাথের প্রতিষ্ঠিত শান্তিনিকেতনে এক সময় কোনো মুসলমান ছাত্রের প্রবেশাধিকার ছিল না। রবীন্দ্রনাথ বিশ্বভারতী প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে চাঁদা চেয়েছিলেন হায়দরাবাদের নিজামের কাছেও। নিজাম তাকে চাঁদা দেন এক লাখ টাকা। এক লাখ টাকা সে সময় ছিল অনেক। রবীন্দ্রনাথ ভাবতে পারেননি নিজাম এতটা চাঁদা দেবেন। নিজামের চাঁদার সূত্র ধরেই সামান্য কিছু মুসলিম ছাত্র সুযোগ পায় বিশ্বভারতীতে লেখাপড়া শেখার। সাহিত্যিক মুজতবা আলী হলেন যাদের মধ্যে একজন।  


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হয় ১৯২১ সালের জুলাই মাসে। হিন্দুরা চাননি ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হোক। এমনকি ঢাকার হিন্দুরাও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিরুদ্ধে ছিলেন। তারা মনে করেছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হবে আসলে একটি মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়। শোনা যায়, রবীন্দ্রনাথও চাননি ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হোক।  

(সেক্যুলারদের অতিমাত্রায় রবীন্দ্রপুজার রহস্য উন্মোচন - এবনে গোলাম সামাদ : ০৭ মে, ২০১১, বিডিনিউজ টুয়েন্টি ফোর ডট কমে প্রকাশিত)  


১৯১২ খ্রিস্টাব্দের ২৮ মার্চ কলকাতার গড়ের মাঠে এক বিরাট সমাবেশ করা হয়। ঠিক তার দু'দিন পূর্বে আর একটি গুরুত্বপূর্ণ মিটিং হয়েছিল। সেখানেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল যে, ঢাকায় ইউনিভার্সিটি হতে দেওয়া যাবে না। উক্ত উভয় সভার সভাপতি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ।  

(তথ্যসূত্র: *কলকাতা ইতিহাসের দিনলিপি*, ড. নীরদ বরণ হাজরা, ২য় খণ্ড, ৪র্থ পর্ব)  


"ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করে কলকাতার গড়ের মাঠে যে সভা হয়, তাতে সভাপতি ছিলেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এসব বাধার কারণে ১৯১১ সালে ঘোষণা দিলেও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবটি আঁতুর ঘরে পড়ে থেকে মৃত্যুর প্রহর গুনছিল। অবশেষে নানা বিষয়ে সমঝোতা হয়, যার মধ্যে ছিল মনোগ্রামে ‘সোয়াস্তিকা’ এবং ‘পদ্ম’ ফুলের প্রতীক থাকবে। প্রতিবাদকারীরা খুশি হন। এরপর ১৯২১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়।"  

(তথ্যসূত্র: ডক্টর কাজী জাকের হোসেন : *দৈনিক ইনকিলাব*, ১০ মার্চ, ২০০২)  


১৯১২ সালের ২৮শে মার্চ কলকাতা গড়ের মাঠে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সভাপতিত্বে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার প্রতিবাদে এক বিশাল জনসভার আয়োজন করা হয়।  

[তথ্যসূত্র: *আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের ধারাবাহিকতা এবং প্রাসঙ্গিক কিছু কথা*, লেখক: মেজর জেনারেল (অব.) এম এ মতিন]  


১৯১২ সালের ১৮ই মার্চ কলকাতার গড়ের মাঠে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্তের প্রতিবাদ করে হিন্দুরা যে সভা করল, সেই সভায় সভাপতিত্ব করলেন স্বয়ং কবি রবীন্দ্রনাথ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিরুদ্ধে সেদিন নেমেছিল হিন্দু সংবাদপত্রগুলো, হিন্দু বুদ্ধিজীবী ও নেতারা। গিরিশচন্দ্র ব্যানার্জী, রাসবিহারী ঘোষ এমনকি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাইস চ্যান্সেলর স্যার আশুতোষ মুখার্জির নেতৃত্বে বাংলার এলিটরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার বিরুদ্ধে ১৮ বার স্মারকলিপি দেন লর্ড হার্ডিঞ্জকে এবং বড়লাটের সঙ্গে দেখা করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা বাধা দান করতে।  

(*ক্যালকাটা ইউনিভার্সিটি কমিশন রিপোর্ট*, খণ্ড ৪, পৃ. ১৩০)  


যারা এ দেশে রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লবিং করেন, দয়া করে বলুন—কিসের ঋণ পরিশোধে তাঁর নামে বিশ্ববিদ্যালয়?


চার. 

'প্রায়শ্চিত্ত' নাটকে প্রতাপাদিত্যের মুখ দিয়ে রবীন্দ্রনাথ বলাচ্ছেন-  

"খুন করাটা যেখানে ধর্ম, সেখানে না করাটাই পাপ। যে মুসলমান আমাদের ধর্ম নষ্ট করেছে তাদের যারা মিত্র তাদের বিনাশ না করাই অধর্ম।"


'রীতিমত নভেল' নামক ছোটগল্পে মুসলিম চরিত্র হরণ করেছেন -  

"আল্লাহু আকবর শব্দে বনভূমি প্রতিধ্বনিত হয়ে উঠেছে। একদিকে তিন লক্ষ যবন (অসভ্য) সেনা অন্য দিকে তিন সহস্র আর্য সৈন্য। ... পাঠক, বলিতে পার ... কাহার বজ্রমণ্ডিত ‘হর হর বোম বোম’ শব্দে তিন লক্ষ ম্লেচ্ছ (অপবিত্র) কণ্ঠের ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি নিমগ্ন হয়ে গেলো। ইনিই সেই ললিতসিংহ। কাঞ্চীর সেনাপতি। ভারত-ইতিহাসের ধ্রুব নক্ষত্র।" 


রবীন্দ্রনাথ তার ‘কণ্ঠরোধ’ (*ভারতী*, বৈশাখ-১৩০৫) নামক প্রবন্ধে বলেন,  

"কিছুদিন হইল একদল ইতর শ্রেণীর অবিবেচক মুসলমান কলিকাতার রাজপথে লোষ্ট্রখণ্ড হস্তে উপদ্রবের চেষ্টা করিয়াছিল। তাহার মধ্যে বিস্ময়ের ব্যাপার এই যে- উপদ্রবের লক্ষ্যটা বিশেষ রূপে ইংরেজদেরই প্রতি। তাহাদের শাস্তিও যথেষ্ট হইয়াছিল। প্রবাদ আছে- ইটটি মারিলেই পাটকেলটি খাইতে হয়; কিন্তু মূঢ়গণ (মুসলমান) ইটটি মারিয়া পাটকেলের অপেক্ষা অনেক শক্ত শক্ত জিনিস খাইয়াছিল।" 

(*রবীন্দ্র রচনাবলী*, ১০ খণ্ড, ৪২৮ পৃষ্ঠা)  


ঐতিহাসিক ডঃ রমেশচন্দ্র মজুমদারকে তাই লিখতে হলো -  

"হিন্দু জাতীয়তা জ্ঞান বহু হিন্দু লেখকের চিত্তে বাসা বেঁধেছিল, যদিও স্বজ্ঞানে তাঁদের অনেকেই কখনই এর উপস্থিতি স্বীকার করবে না। এর প্রকৃষ্ট দৃষ্টান্ত হচ্ছে, ভারতের রবীন্দ্রনাথ যাঁর পৃথিবীখ্যাত আন্তর্জাতিক মানবিকতাকে সাম্প্রদায়িক দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে কিছুতেই সুসংগত করা যায় না। তবুও বাস্তব সত্য এই যে, তার কবিতাসমূহ শুধুমাত্র শিখ, রাজপুত ও মারাঠাকুলের বীরবৃন্দের গৌরব ও মাহাত্ম্যেই অনুপ্রাণিত হয়েছে, কোনও মুসলিম বীরের মহিমা কীর্তনে তিনি কখনও একচ্ছত্রও লেখেননি। যদিও তাদের অসংখ্যই ভারতে আবির্ভূত হয়েছেন।"

(সূত্র: *Dr. Romesh Chandra Majumder, History of Bengal*, p 203.)  


যারা রবীন্দ্রনাথকে সর্বজনীন কবি হিসাবে গ্রহণ করতে চান, দয়া করে বলুন—মুসলিমদের অপমান করে, হত্যার উস্কানি দিয়ে এবং হিন্দুত্বের নিবেদিত প্রচারক হয়েও তিনি কোন বিচারে সর্বজনীন?


পাঁচ. 

কয়েক পুরুষ ধরে প্রজাদের উপর পীড়ন চালিয়েছেন জোড়াসাকোর ঠাকুর পরিবার। রবীন্দ্রনাথ ও তাঁর ব্যতিক্রম ছিলেন না। রবীন্দ্রনাথের পরিবারের জমিদারী ছিল কুষ্টিয়ার শিলাইদহ, পাবনার শাহজাদপুর, রাজশাহীর পতিসর প্রভৃতি অঞ্চলে। আর এই অঞ্চলগুলি ছিল মুসলিম প্রধান। মুসলিম প্রজাগণই তার রাজস্ব জোগাতো। কিন্তু রবীন্দ্রনাথ ব্যর্থ হন সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রজাদের সাথে মনের সংযোগ বাড়াতে। তাদের সমস্যাগুলোর সমাধান নিয়েও তিনি কোনদিন মাথা ঘামাননি। প্রজাদের জোগানো অর্থ দিয়ে মুসলিম প্রধান কুষ্টিয়া, পাবনা বা রাজশাহীতে তিনি একটি প্রাথমিক স্কুল প্রতিষ্ঠা করেছেন – তার প্রমাণ নাই। অথচ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করেছেন হিন্দুপ্রধান পশ্চিম বাংলার বোলপুরে। উল্টো তার সাহিত্যে প্রকাশ পেয়েছে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদের বিরুদ্ধে উগ্র সাম্প্রদায়িক মনভাব। উৎকট মুসলিম বিরোধী সংলাপ দেখা যায় তার নাটকে।  

(*ফিরোজ মাহবুব কামাল: বাঙালীর রবীন্দ্রাসক্তি ও আত্মপচন-৬ জুন ২০১৫-শেখনিউজডটকম*)  


"১৮৯৪ সনে রবীন্দ্রনাথ চাষীদের খাজনা বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, খাজনা আদায়ও করেছিলেন।"  

[তথ্যসূত্র: শচীন্দ্র অধিকারি, *শিলাইদহ ও রবীন্দ্রনাথ*, পৃঃ ১৮, ১১৭]  


সব জমিদার খাজনা আদায় করত একবার, কিন্তু রবীন্দ্রনাথ এলাকার কৃষকদের থেকে খাজনা আদায় করত দুইবার। একবার জমির খাজনা, দ্বিতীয় বার কালী পূজার সময় চাঁদার নামে খাজনা।  

(তথ্যসূত্র: *ইতিহাসের নিরিখে রবীন্দ্র-নজরুল চরিত*, লেখক: সরকার শাহাবুদ্দীন আহমেদ)  


কর বৃদ্ধি করে বল প্রয়োগে খাজনা আদায়ের ফলে প্রজাবিদ্রোহ ঘটলে তা তিনি সাফল্যের সঙ্গে দমন করেন।  

"শোষক রবীন্দ্রনাথের বিরুদ্ধে শিলাইদহের ইসলাইল মোল্লার নেতৃত্বে দু’শ ঘর প্রজা বিদ্রোহ করেন।"  

[তথ্যসূত্র: অমিতাভ চৌধুরী, *জমিদার রবীন্দ্রনাথ*, দেশ শারদীয়া, ১৩৮২]  


কবিতায় তো মানবতার কথা বলেছেন খুব জোরে। কিন্তু জীবনাচারে যিনি এমন, তিনি কেমন মানবতাবাদী?


ছয়. 

"মরহুম মোতাহার হোসেন চৌধুরী শান্তিনিকেতনে কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে জিজ্ঞাসা করেছিলেন, আপনার লেখায় ইসলাম ও বিশ্বনবী সম্পর্কে কোনো কথা লেখা নেই কেন? উত্তরে কবি বলেছিলেন, ‘কোরআন পড়তে শুরু করেছিলুম কিন্তু বেশিদূর এগুতে পারিনি আর তোমাদের রসুলের জীবন চরিতও ভালো লাগেনি।"  

[তথ্যসূত্র: *বিতণ্ডা*, লেখক: সৈয়দ মুজিবুল্লা, পৃ. ২২৯]  


অবাক হই, যখন কোনো কোনো মুসলিম রবীন্দ্রচর্চাকে ইবাদত বলে ঘোষণা করেন!


সাত. 

রবীন্দ্রনাথ বর্ণবাদী নন এমনকি হিন্দুত্ববাদী নন, তা প্রমাণ করার জন্য ব্রাহ্মধর্মকে হাতিয়ার বানানো হয়, ভুলে যাওয়া হয়, ব্রাহ্মধর্ম হিন্দুত্ববাদেরই এক শাখা। রবীন্দ্রনাথের বাবা দেবেন্দ্রনাথকে বলা হয় ব্রাহ্ম সমাজের প্রচারক ও দার্শনিক (উইকি দেখুন) অথচ ইতিহাস কি বলে!  


"পুরো পরিবারকে দুর্গা পূজার ব্যবস্থা করে দিয়ে নিজে একটু আড়ালে থাকতেন এই আরকি।"  

(সূত্র: *বসন্তকুমার চট্টপাধ্যায়ের লেখা জ্যোতিন্দ্রনাথের জীবনস্মৃতি*, ১৯২০, পৃষ্ঠা: ৩৬)  


নিজে ব্রাহ্ম দাবি করলেও বাবার শ্রাদ্ধ হিন্দু পদ্ধতিতেই করেছেন দেবেন্দ্রনাথ। ব্রাহ্মদের মধ্যে পৈতা ত্যাগ করা জরুরি ছিলো, অথচ রবীন্দ্রনাথকে অনুষ্ঠান করে পৈতা দেওয়া হয়েছিলো।  

(সূত্র: *এ এক অন্য ইতিহাস*, লেখক: গোলাম আহমদ মর্তুজা)  


শুধু তাই না, ব্রাহ্ম সমাজে জাতিভেদ নিষিদ্ধ। অথচ রবীন্দ্রনাথের পৈতা পরার অনুষ্ঠানে রাজনারায়ণ বসু নামক এক ব্যক্তিকে শূদ্র বলে অপমানিত করে বের করে দেওয়া হয়।  

(*রাজনারায়ণ বসুর লেখা আত্মচরিত*, পৃ: ১৯৯)  


বর্ণবাদ ও হিন্দুত্বে যিনি মজ্জমান, তার পিছে আমাদের সংস্কৃতিকে হাঁকিয়ে নেয়ার আগে পরিণতি ভেবে নেয়া উচিত নয় কি মুসলমান?


আট. 

রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ইংরেজি লেখার কারিগর ছিলো সি. এফ. অ্যানড্রুজ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একজন প্রধান সহযোগী ছিল মি. অ্যানড্রুজ। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর যার নাম দিয়েছিলেন ‘দীনবন্ধু’।  

(তথ্যসূত্র: *আত্মঘাতী রবীন্দ্রনাথ-অখণ্ড সংস্করণ*, দ্বিতীয় খণ্ড, কলকাতা, পৃষ্ঠা ১০৮)  


এই রবীন্দ্রই ড. ডেভিসের মধ্যস্থতায় এন্ডারসনের কাছ থেকে টাকা নিয়ে ‘চার অধ্যায়’ লেখেন। শুধু তাই নয়, ‘ঘরে বাইরে’ও তাকে টাকা দিয়ে লেখানো হয়।”  

(তথ্যসূত্র: *দৈনিক বাংলাবাজারে প্রকাশিত ড. আহমদ শরীফের সাক্ষাৎকার*, তারিখ ০১/০৫/১৯৯৭)  


"কালীপ্রসন্ন বিদ্যাবিশারদ তার 'মিঠেকড়া'তে পরিষ্কার বলেই দিয়েছিলেন যে, রবীন্দ্রনাথ মোটেই লিখতে জানতেন না, স্রেফ টাকার জোরে ওর লেখার আদর হয়। পাঁচকড়ি বাবু একথাও বহুবার স্পষ্ট বলে দিয়েছেন, রবীন্দ্রনাথের প্রায় যাবতীয় সৃষ্টিই নকল। বিদেশ থেকে ঋণ স্বীকার না করে অপহরণ।"  

(তথ্যসূত্র: *জ্যোতির্ময় রবি, ও কালোমেঘের দল*, লেখক: সুজিত কুমার সেনগুপ্ত, পৃ. ১১১)  


রবীন্দ্রনাথ ১৯১৩ সালে নোবেল পুরস্কার পেয়েছিলেন গীতাঞ্জলির জন্য নয়, বরং গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদ 'Song Offerings'-এর জন্য। রবীন্দ্রনাথ হলেন বাংলা ভাষী, ইংরেজিতে কবিতা লিখে নোবেল প্রাইজ পাওয়াটা তার মতো ব্যক্তির পক্ষে একদমই অসম্ভব। কিন্তু এই অসম্ভবটাই সম্ভব হয়েছিল, কারণ পর্দার আড়ালে থেকে কলম ধরেছিল সি. এফ. অ্যানড্রুজ। ‘গীতাঞ্জলি’র ইংরেজি অনুবাদ কিন্তু বাংলা থেকে হুবহু অনুবাদ ছিল না, বরং তা ছিল ভাবানুবাদ। সেই ইংরেজি অনুবাদের ভাব সম্পূর্ণ মিলে গিয়েছিল খ্রিস্টানদের বাইবেল ও তাদের ধর্মীয় সাধকদের রচনার সাথে। যে প্রসঙ্গে গীতাঞ্জলির ইংরেজি অনুবাদের ভূমিকার লেখক, কবি ইয়েটস বলেছিলেন -  

**"Yet we are not moved because of its strangeness, but because we have met our own image"**  

অর্থাৎ 'গীতাঞ্জলি’র ভাব ও ভাষার সাথে পশ্চিমাদের নিজস্ব মনোজগতে লালিত খ্রিস্টীয় ভাবধারা সম্পূর্ণ মিলে গিয়েছিল। ইয়েটস তার বক্তব্যের যৌক্তিকতা তুলে ধরতে সেন্ট বার্নার্ড, টমাস-এ- কেম্পিস ও সেন্ট জন অফ দি ক্রসের সাথে ‘গীতাঞ্জলি’র ইংরেজি অনুবাদের মিল উল্লেখ করেছিলেন। অন্যান্য পশ্চিমা সাহিত্য সমালোচকরাও ‘গীতাঞ্জলি’র ইংরেজি অনুবাদের ২৬নং কবিতা ও ইংরেজি বাইবেলের *Songs of Solomon*-এর ৫: ২-৬ নম্বর শ্লোক, তাছাড়া সেন্ট ফ্রান্সিসের রচিত খ্রিস্টীয় গান *Canticle* এবং ইংরেজি গীতাঞ্জলির ৮৬নং কবিতা এই দুটো পাশাপাশি রেখে তাদের মিল দেখিয়েছেন।  

(তথ্যসূত্র: *আত্মঘাতী রবীন্দ্রনাথ*-১ম খণ্ড, পৃষ্ঠা ১৪৫)  


ভাগ্য রবীন্দ্রনাথের! ইংরেজি অনুবাদটি রবীন্দ্রনাথ-অ্যানড্রুজের নবসৃষ্টি হলেও নোবেল পেয়েছেন শুধু রবীন্দ্রনাথ, এতে আমরা বেজার হবার কে?  


নয়. 

"'শিবাজী উৎসব' (১৯০৪) কবিতাটি যখন রবীন্দ্রনাথ রচনা করেন তখন তিনি কবি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত। একই সঙ্গে কলকাতার বুদ্ধিজীবী মহলেও তিনি সম্মানের সাথে সমাদৃত। পারিবারিক এবং আর্থিক কারণে তিনি কলকাতার অভিজাত মহলের নেতৃস্থানীয় পর্যায়ে অবস্থান করছেন। বয়সের পরিসীমায়ও তিনি পরিণত। বলা যেতে পারে উনিশ শতকের শেষ এবং বিশ শতকের শুরুর পর্বের রবীন্দ্রনাথের চিন্তা ও কর্মের ধারাবাহিকতার সাথে কবিতাটির মর্মার্থ ওতপ্রোতভাবে জড়িত।  


মহারাষ্ট্রের বালগঙ্গাধর তিলক ১৮৯৫ সালের ১৫ এপ্রিল সেখানে শिवাজী উৎসব প্রতিষ্ঠা করেন। তিলক শিবাজী উৎসব প্রতিষ্ঠা করেছিলেন উগ্র হিন্দু জাতীয়তা ও সাম্প্রদায়িকতা প্রচার ও প্রসারের জন্য। ক্রমে শিবাজী উৎসবের অনুকরণে চালু হয় গণপতি পূজা। ইতিপূর্বে ১৮৯৩ সালে প্রতিষ্ঠিত গো-রক্ষিণী সভা ঐ অঞ্চলে প্রভাব বিস্তারের চেষ্টা করে।  


মহারাষ্ট্রের শিবাজী উৎসবের অনুকরণে সখারাম গণেশ দেউস্করের প্রচেষ্টায় কলকাতায় শিবাজী উৎসব প্রচলিত হয় ১৯০২ সালের ২১ জুন তারিখে। সরলা দেবী ১৯০২ সালের অক্টোবর মাসে দূর্গাপূজার মহাষ্টমীর দিনে বীরাষ্টমী উৎসব প্রচলন করেন। তিনি ১৯০৩ সালের ১০ মে শिवাজী উৎসবের অনুকরণে প্রতাপাদিত্য উৎসব প্রচলন করেন এবং একই বছরের ২০ সেপ্টেম্বর তারিখে প্রবর্তন করেন উদয়াদিত্য উৎসব।  


কলকাতার বাইরে থাকার কারণে রবীন্দ্রনাথ এই তিনটি উৎসবে উপস্থিত ছিলেন না। কিন্তু ২৯ সেপ্টেম্বর ১৯০৩ সালে দূর্গাপূজার মহাষ্টমীর দিনে ২৬ বালিগঞ্জ সার্কুলার রোডে জানকীনাথ ঘোষালের বাড়িতে যে বীরাষ্টমী উৎসব অনুষ্ঠিত হয় রবীন্দ্রনাথ তাতে সক্রিয়ভাবে যোগ দেন।  


... শিবাজী উৎসবের মূল মন্ত্র ছিল চরম মুসলিম বিদ্বেষ, সন্ত্রাস এবং সাম্প্রদায়িকতা। বস্তুত এই শিবাজী উৎসবের সূত্র ধরেই বাংলায় সন্ত্রাসবাদী রাজনীতির এবং সাম্প্রদায়িক ভেদনীতির ভিত্তি স্থাপিত হয়।  


------"কবিতার শুরুতে রবীন্দ্রনাথ শিবাজীর কর্মকাণ্ড ও জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলেন :  


> "কোন দূর শতাব্দীর এক অখ্যাত দিবসে  

> নাহি জানি আজ  

> মারাঠার কোন শৈল অরণ্যের অন্ধকারে ব'সে  

> হে রাজা শিবাজী  

> তব ভাল উদ্ভাসিয়া এ ভাবনা তরীৎ প্রভাবৎ  

> এসেছিল নামি  

> 'একরাজ্যধর্ম পাশে খণ্ড ছিন্ন বিক্ষিপ্ত ভারত  

> বেধে দিব আমি'।


এখানে রবীন্দ্রনাথ শিবাজীকে ভারতের ঐক্যের প্রতীক হিসেবে তুলে ধরেছেন। তিনি বলতে চেয়েছেন যে খণ্ড, ছিন্ন, বিক্ষিপ্ত ভারত ধর্মের ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ করা ছিল শিবাজীর জীবনের উদ্দেশ্য। মহারাষ্ট্রে শিবাজী উৎসবের প্রচলন, পরবর্তী সময়ে কলকাতাসহ ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে শিবাজী উৎসব প্রচলনের এবং এই উৎসবকে জনপ্রিয় করে তোলার জন্য নিবেদিত প্রাণ বালগঙ্গাধর তিলক এবং সখারাম দেউস্করের মূল উদ্দেশ্য ছিল শিবাজীর আদর্শে ভারতকে ঐক্যবদ্ধ করা। এখানে এটা স্পষ্টতই লক্ষণীয় যে তিলক, দেউস্কর আর রবীন্দ্রনাথের ভাবনা সম্পূর্ণ অভিন্ন।  

(- ড. নুরুল ইসলাম মনজুর / *শতবর্ষ পরে ফিরে দেখা ইতিহাস : বঙ্গভঙ্গ ও মুসলিম লীগ*॥  

[গতিধারা - জুলাই, ২০১০। পৃ: ৫২-৮৬])  


যারা বলেন রবীন্দ্রনাথের বাংলাদেশ, বাংলাদেশের রবীন্দ্রনাথ, তারা কি জানেন না—রবীন্দ্রনাথের বাংলাদেশ হিন্দুত্ববাদের মহাভারতে বিলীন হয়ে যায়? তখন সে আর স্বাধীন থাকে না!


দশ. 

“এখন ভারতের ‘ইতিহাস ব্যবসায়ী’দের মধ্যে রবীন্দ্রনাথের সংখ্যাই বেশি। তাঁহারা সাড়ে পাঁচশত বৎসরের মুসলিম শাসনকে বিদেশি শাসনই মনে করেন।"  

(*সলিমুল্লাহ খান-সাম্প্রদায়িকতা*)  


জনাব খানের এ প্রবন্ধের সমালোচনায় মাসুদ রানা লিখেন—  

“১৯৪৭ সালে আসিয়া ভারত দুই ভাগ হইল কেন? সবাই বলে, হিন্দু-মুসলমান দুই জাতি। তাই দুই আলাদা দেশ হইল। দ্বিজাতি তত্ত্বের মূল কথা এই। এই বাবদ মুহম্মদ আলী জিন্নাহকে বাহবা দিয়া থাকেন সকলেই। এখানে তাঁহার কৃতিত্ব কি? এ তো ষোল আনা রবীন্দ্রনাথ পথিকের কৃতিত্ব।”  


ডঃ খানের প্রবন্ধে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের নাম বারবারই ফিরে এসেছে। তাঁকে সাম্প্রদায়িক হিসেবে চিহ্নিত করেই তিনি ক্ষান্ত হননি। এ-প্রবন্ধে তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে ‘চুতিয়া’ বানিয়ে ছেড়েছেনঃ  

“বৌধায়ন চট্টোপাধ্যায় সিপিআইয়ের অনেক বড় নেতা ছিলেন। ১৯৬৮ সালে দাস ক্যাপিটালের শতবর্ষ উপলক্ষে তাঁহারা একটি বই প্রকাশ করেন। দিল্লির পিপলস পাবলিশিং হাউস প্রকাশ করে বইটি। ‘মার্কস অ্যান্ড উইন্ডিয়াস ক্রাইসিস’ নামের নিবন্ধে বৌধায়ন বলেন, ‘ভারতের বুদ্ধিজীবীরা সবাই চুতিয়া; দুইজনই শুধু ব্যতিক্রম—গান্ধীজি ও রবীন্দ্রনাথ।’ ‘চুতিয়া’ বলিয়া তিনি ঠিক বলিলেন; কিন্তু ওই দুইজনের ব্যাপারে ব্যতিক্রম কেন? ভারতের সব বুদ্ধিজীবীই যদি চুতিয়া, রবীন্দ্রনাথও ব্যতিক্রম নহেন।”  


“চুতিয়া” শব্দটি হিন্দি, যা এসেছে ‘চুত’ থেকে। হিন্দিতে ‘চুত’ মানে হচ্ছে অক্ষত যোনি বা কুমারী। আর “চুতিয়া” হচ্ছে অক্ষত যোনিজাত বা কুমারী মাতার সন্তান, যার বাংলা অর্থ হচ্ছে জারজ।  


ডঃ সলিমুল্লাহ খান মনে করেন, কমিউনিস্ট নেতা বৌধায়ন চট্টোপাধ্যায় ভারতের বুদ্ধিজীবীদেরকে চুতিয়া বলে ঠিক করেছেন। কিন্তু ডঃ খান তাঁর ওপরও তিনি সন্তুষ্ট নন, কারণ তিনি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ও গান্ধীকে রেহাই দিয়েছেন। ডঃ খানের দাবী, রবীন্দ্রনাথ ঠакুরও “চুতিয়া”।  

(*সাপ্তাহিক পত্রিকা-১৫--০১-২০১৪*)  


কিন্তু কেন? কেন বামপন্থী সলিমুল্লাহ খান এমন আক্রমণ করলেন? জবাব পাবো ইতিহাসে।  


১৯০৫ সালে বঙ্গ প্রদেশকে দ্বিখণ্ডিত করে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিম প্রধান পূর্ববঙ্গ ও আসামকে নিয়ে যে প্রদেশ গঠন করা হয়, তার পক্ষে সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের সমর্থন ছিল। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এ প্রদেশ বাতিল করার জন্য প্রবল গণআন্দোলনে অংশগ্রহণ করেন। এই প্রদেশকে বিলীন করার জন্য সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনসমূহের নেতা কর্মীদের অত্যন্ত দক্ষতার সাথে বীর হিসেবে উপস্থাপন করা হয় এখন। এখন বলা হয় না, মুসলিম প্রধান প্রদেশ সৃষ্টির ফলে অনগ্রসর ও শোষিত মুসলিম সম্প্রদায় কি সুফল পেয়েছিল? রবীন্দ্রনাথ ও সন্ত্রাসবাদী আন্দোলনের নেতা কর্মীরা কেনই বা এই প্রদেশকে রদ করার জন্য তৎপরতা চালালেন?  


১৯০৫ সালে পূর্ববঙ্গ ও আসামকে নিয়ে প্রতিষ্ঠিত মুসলিম প্রধান নতুন প্রদেশ সৃষ্টির প্রথম বছরই এই প্রদেশের বৈদেশিক বাণিজ্য, ২,৯৮,২৭,৩৯৭ টাকা থেকে বেড়ে ৩,১৭,৭৭,৮৪৬ টাকায় উন্নীত হয়। ১৯০৫ সালেই শিক্ষাখাতে ব্যয় হয় ৭৩,০৫,২৬০ টাকা। স্কুল ছাত্র সংখ্যা বেড়ে ৬,৯৯,০৫১ থেকে ৯,৩৬,৬৫৩তে দাঁড়ায়। নারী শিক্ষার আশানুরূপ উন্নতি সাধিত হয়। বালিকা বিদ্যালয় সংখ্যা ৮১৯ থেকে বেড়ে ১৯১০-১১ সালে ৪,৫৫০ তে বৃদ্ধি পায় এবং ছাত্রী সংখ্যা ২৪,৪৯৩ থেকে বেড়ে ১,৩১,১৩৯ এ উন্নীত হয়।  

(উৎস: ১. *Report on the Administration of Eastern Bengal and Assam, 1905-06 and 1910-11*  

২. *The pioneer mail*, ২৩শে ফেব্রুয়ারি, ১৯১২  

৩. এ সম্পর্কে আরো তথ্য: *বাঙালী বুদ্ধিজীবী ও বিচ্ছিন্নতাবাদ*—অমলেন্দু দে, ৩য় অধ্যায়, পশ্চিম বঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষদ)  


এ প্রদেশ ছয় বছর টিকে না থাকলে আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় না হলে আজ যারা রবীন্দ্রনাথকে প্রণম্য মনে করছেন তাদের হিন্দু জমিদারদের গরু-ছাগলের রাখাল হয়ে থাকতে হত কি না—একটু ভেবেছেন কি? রবীন্দ্রনাথ চেয়েছিলেন তারা সেভাবেই থাকুক।

শনিবার, ৯ আগস্ট, ২০২৫

পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙ্গালিরাই আদিবাসী,পাহাড়িরা উদ্বাস্তু নৃগোষ্ঠী

 "পার্বত্য চট্টগ্রামের বাঙ্গালিরাই আদিবাসী,পাহাড়িরা উদ্বাস্তু  নৃগোষ্ঠী "




ইদানিং বাংলাদেশের পার্বত্য চট্টগ্রামের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী কে আদিবাসী ঘোষনা নিয়ে প্রচুর সমালোচনা চলছে। চলুন এদেশের আদিবাসী কারা জানা যাক।


আদিবাসীর সংজ্ঞা


১. সমাজতাত্ত্বিকভাবে আদিবাসী বলতে তাদেরকেই বোঝায় যারা প্রাগ-ঐতিহাসিককাল থেকে নির্দিষ্ট অঞ্চলের বাসিন্দ বা ভূমিজ সন্তান। অর্থাৎ যারা নির্দিষ্ট জনপদের সৃষ্টিলগ্ন থেকে সেই জনপদের বাসিন্দা এবং যারা আদিম সংস্কৃতির ধারক এবং বাহক। আদিম সংস্কৃতির কোনো কিছু তারা ত্যাগ করেনি। আদিবাসীদের কাছে সভ্যতার আলোকবর্তিকা পৌঁছায়নি এবং তারা অনগ্রসর এবং পশ্চাৎপদ।


২. জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলওর) আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সম্মেলনে আদিবাসী চিহ্নিত করা হয়েছে এভাবেÑআদিবাসী বা দেশজ মানবসমাজ, জনগোষ্ঠী 

অথবা জাতিসত্তার পরিচিতি পাওয়ার অধিকারী তারাই, যাদের প্রাক-আগ্রাসন ও প্রাক-সাম্রাজ্যবাদী অধিকারের আগে থেকেই একটি ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা আছে, যা তারা নিজ বাসভূমিতে তৈরি করেছিল। যারা তাদের বাসভূমিতে অথবা কিয়দংশে পাশাপাশি বসবাসকারী অন্যান্য মানবকুল থেকে নিজের একটি বিশেষত্বময় পৃথক সত্তার অধিকারী মনে করে। যারা আজ সমাজের প্রতিপত্তিশালী না হয়েও ভবিষ্যৎ বংশধরদের জন্য তাদের নিজস্ব গোষ্ঠীসত্তা, সাংস্কৃতিক কাঠামো, সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও বিধিব্যবস্থা রেখে যেতে চায় একটি বিশেষ মানবসমাজের ধারাবাহিকতা অক্ষুণ্ন রাখার জন্য। 


আদিবাসী সম্পর্কে গ্রহণযোগ্য সংজ্ঞা দুটি বিশ্লেষণ করতে অনুধাবন করা যায়, বাংলাদেশের উপজাতিরা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী নাকি আদিবাসী।


প্রথম সংজ্ঞাতে আমরা দেখতে পাই আদিবাসী হতে হলে প্রাগ-ঐতিহাসিককাল থেকে অর্থাৎ যখন থেকে ইতিহাস লিপিবদ্ধ শুরু হয়নি তখন থেকে সে অঞ্চলের বাসিন্দা হতে হবে। আবার বলা হয়েছে জনপদের সৃষ্টিলগ্ন থেকে সেখানকার বাসিন্দা হতে হবে।


কিন্তু বাংলাদেশের উপজাতিদের বাংলাদেশে আগমনের ইতিহাস আমরা জানি। তারা তিব্বত, লুসাই পাহাড়, মঙ্গোলীয় বংশোদ্ভূত চিন, কাচিন, রাখাইন, আরাকান ও মিয়ানমার বা বার্মা থেকে বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশে বসতি স্থাপন করেছিল ১৭০০ সালের পরে। ঐতিহাসিকভাবে প্রমাণিত বৃহৎ পার্বত্য জেলার ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীরা মঙ্গোলয়েড জনগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত। ঐতিহাসিক দলিল-দস্তাবেজ, উপজাতীয় লেখকদের নিজস্ব গ্রন্থ পর্যালোচনায় প্রমাণিত যে চাকমা, মারমা, ত্রিপুরাসহ সব নৃগোষ্ঠী আরাকান, ত্রিপুরা, মিজোরাম ইত্যাদি অঞ্চল থেকে বিভিন্ন ঘটনাপ্রবাহে এ দেশে এসেছে। চাকমারা বিজয়গিরি নামক একজন যুবরাজের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে আরাকান ও চট্টগ্রামের একটি অংশ দখল করে। এ দেশের চাকমারা মনে করে, তারা বিজয়গিরির সেই আরাকান বিজয়ী সৈন্যদের বংশধর। ১৭১৫ সালে চাকমা রাজা জলিল খান বা জালাল খান (১৭১৫-১৭২৪) সর্বপ্রথম চট্টগ্রামে মোগল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ১১ মণ কার্পাস তুলা উপহার দিয়ে যোগাযোগ স্থাপন করেন। ১৭৩৭ সালে সেরগুস্ত খান (১৭৩৭-৫৮) আরাকানের পক্ষ ত্যাগ করে মোগলদের বশ্যতা স্বীকার করেন এবং দেওয়ান পদ লাভ করেন। মারমারা ১৭৫৬ সালে আরাকানে আশ্রয় লাভ করে। ১৭৭৪ সালে রামু, ঈদগড়, মাতামুহুরী এবং সর্বপ্রথম ১৮০৪ সালে বান্দরবান শহরে বসতি স্থাপন করে। ১৭৮৪ সালে বর্মী রাজা বোদপায়ার সেনাবাহিনী স্বাধীন আরাকান রাজ্য দখল করলে হাজার হাজার শরণার্থী কক্সবাজার, পার্বত্য চট্টগ্রাম ও পটুয়াখালীতে পালিয়ে এসে স্থায়ীভাবে বসবাস করা শুরু করে। দ্বিতীয় বৃহৎ উপজাতি সাঁওতালসহ অন্যান্য গোষ্ঠী এ দেশে এসেছে সাঁওতাল বিদ্রোহের পর। অনেকে এসেছে ব্রিটিশ আমলে মৌসুমি শ্রমিক হিসেবে।


বর্তমানে উপজাতি সমাজে আদিম কোনো রীতি নেই বললেই চলে। তারা মডার্ন জীবনযাপন করছে, শিক্ষা-দীক্ষায় অনেক এগিয়েছে এবং সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা হিসেবে চাকরি করছে অর্থাৎ আদিম সমাজের কিছুই তাদের মধ্যে নেই।


তা হলে তারা কীভাবে আদিবাসী হয়!


(আইএলওর) সংজ্ঞার শর্তই হলো- যাদের প্রাক-আগ্রাসন ও প্রাক-সাম্রাজ্যবাদী অধিকারের আগে থেকেই একটি ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা আছে, যারা প্রতিপত্তিশালী ও শাসকগোষ্ঠীর সদস্য নয়। কিন্তু ইসলাম-খ্রিস্টান-বৌদ্ধ, হিন্দু ধর্ম বা ধর্মের মানুষ অবশ্যই প্রতিপ্রত্তিশালী বা শাসকগোষ্ঠী। সুতরাং কোনো প্রকৃতি-উপাসক ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর মানুষ যখনই ধর্মান্তরিত হয়ে খ্রিস্টান-হিন্দু-বৌদ্ধ-মুসলিম হবে তখন সে শাসকগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত হবে এবং আদিবাসী সংজ্ঞার আওতায় পড়বে না।


উপরোক্ত আলোচনার মাধ্যমে আমরা পরিষ্কার ধারণা পেয়েছি বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী নেই। এখন আগের প্রশ্নে আসি উপজাতিরা হঠাৎ করে কেন নিজেদের আদিবাসী দাবি করছে?


আদিবাসী দাবি বাস্তবায়ন করতে পারলে জাতিসংঘের ঘোষণাপত্র অনুযায়ী উপজাতিরা নিম্নলিখিত সুবিধাগুলো পাবে-


১. আদিবাসীদের আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার এবং অভ্যন্তরীণ ও স্থানীয় বিষয়ে স্বায়ত্তশাসন।

২. ভূমি ও ওই স্থানের ওপর পূর্ণ অধিকার।

৩. নিজস্ব শিক্ষাব্যবস্থা প্রতিষ্ঠা ও তা নিয়ন্ত্রণের অধিকার।

৪. আদিবাসীদের অনুমতি ব্যতিরেকে বা যৌক্তিক না হলে ওই অঞ্চলে সামরিক কার্যক্রম পরিহার।

৫. জাতিসংঘ বা আন্তঃরাষ্ট্রীয় সংস্থা কর্তৃক এই অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য চাপ প্রয়োগের নিমিত্তে জনমত গঠন, নিজেদের আত্মনিয়ন্ত্রণ অধিকার হিসেবে স্বাধীন দেশ প্রতিষ্ঠা, অর্থনৈতিক সহযোগিতা বা কারিগরি সহায়তা প্রদান।


উল্লেখিত অনুচ্ছেদগুলো কেবল আদিবাসীদের জন্য প্রযোজ্য। আর এমন লোভনীয় অনুচ্ছেদগুলোর সুবিধা নিতেই ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীগুলো নিজেদের আদিবাসী হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে উঠে পড়ে লেগেছে। এ দেশীয় ষড়যন্ত্রকারী ও বৈদেশিক কিছু এনজিও এবং মিশনারির খপ্পরে পড়েই আদিবাসী স্বীকৃতি দাবি করে। চুক্তি করেছে উপজাতি হিসেবে। সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে উপজাতি কোটায়, দাবি করে নিজেদের আদিবাসী। এমন দাবি হাস্যকর।


জাতিসংঘের এই অনুচ্ছেদগুলো পর্যালোচনা করলে দেখা যাবে, বাংলাদেশের উপজাতীয় জনগোষ্ঠী আদিবাসী স্বীকৃতি পেলে পার্বত্য চট্টগ্রামসহ সারা দেশে নিজস্ব আইনে নিজস্ব ভূমি ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলতে পারবে। পার্বত্য চট্টগ্রামের মুষ্টিমেয় চিহ্নিত উপজাতিরা দাবি করছে ঐতিহ্য ও প্রথাগত অধিকার বলে পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল ভূমির মালিক তারা। একই অধিকার বলে সমতলের উপজাতীয় অধ্যুষিত এলাকার সকল ভূমির মালিকানা সেখানকার উপজাতীয়রা দাবি করবে। সেখানে যেসব ভূমি সরকারি ও ব্যক্তিগত মালিকানায় বাঙালীরা রয়েছে তা ফেরত দিতে হবে। পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে যেহেতু ঐ গোষ্ঠী সকল সামরিক স্থাপনা সরিয়ে নেয়ার দাবি জানাচ্ছে, সে কারণে সেখান থেকে সকল সামরিক স্থাপনা সরিয়ে নিতে হবে। ইউএনডিপিসহ কিছু বৈদেশিক সংস্থা ইতোমেধ্যে প্রকাশ্যে এ দাবি তুলেছে।


যখন দেখি দেশের কিছু মানুষ (বিশেষ করে বাম রাজনীতিধারা) উপজাতি, ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী আর আদিবাসীর ভিতর পার্থক্য বুঝতে চায় না তখন নিজেকে খুব অসহায় লাগে! রাজনীতি তো দেশকে নিয়ে, আমার কাজ যদি দেশ বিরোধী হয়ে যায় তাহলে কিসের রাজনীতি করা?


মেজর জিয়া ভূমিহীন বাঙ্গালিদের তিন পার্বত্য জেলায় বসতি স্থাপন করেন। সেখানে এখন বাঙালী আর উপজাতি সম পরিমান আছে। না হয় এতদিনে পার্বত্য অঞ্চল বাংলাদেশ থেকে ছুটে যেত।মেজর জিয়ার পরিকল্পনার কাছে উপজাতিরা ব্যর্থ হলে তখন আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয় তারা। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হলো আদিবাসী থিউরি।


মেজর জিয়া ভূমিহীন বাঙ্গালিদের তিন পার্বত্য জেলায় বসতি স্থাপন করেন। সেখানে এখন বাঙালী আর উপজাতি সম পরিমান আছে। না হয় এতদিনে পার্বত্য অঞ্চল বাংলাদেশ থেকে ছুটে যেত।মেজর জিয়ার পরিকল্পনার কাছে উপজাতিরা ব্যর্থ হলে তখন আন্তর্জাতিক ষড়যন্ত্রের আশ্রয় নেয় তারা। সেই ষড়যন্ত্রের অংশ হলো আদিবাসী থিউরি।


ভুখন্ডের মূল অধিবাসী যারা ভূমিপুত্র তারাই আদিবাসী। এই কন্সেপ্ট অষ্ট্রেলিয়া নিউজিল্যান্ড এবং আমেরিকার জন্য প্রযোজ্য যেখানে দখলদার অভিবাসীগণ মেইনস্ট্রিম পিপল। সেখানে ভূমির মূল অধিবাসীরা হলো আদিবাসী। বাংলাদেশে আমরাই আদিবাসী এবং অন্যরা উপজাতি কিংবা ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী। আজ থেকে সর্বোচ্চ ৩০০ বছর আগে চাকমারা বার্মা থেকে ধাওয়া খেয়ে এদেশের পার্বত্য চট্রগ্রামে আশ্রয় নেয়। অথচ এ ভুখণ্ডে হাজার বছরের ইতিহাস রয়েছে বাঙালীদের। আর এখন উপজাতিরা হইলো আদিবাসী! আদিবাসী হইলে পূর্ব তীমুরের মত তাদের স্বাধীন দেশ দিয়ে দিতে হবে।


২০০৫ সালে বিএনপি সরকার প্রথম জাতিসংঘে চিঠি দিয়ে জানিয়েছে বাংলাদেশে কোন আদিবাসী নেই। রাষ্ট্রীয়ভাবে সেই ধারাবাহিকতা আওয়ামি লীগ ধরে রেখেছে।


সূত্র:উইকিপিডিয়া। 


লেখক:চিকিৎসক, জার্নালিস্ট ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী।

শুক্রবার, ৮ আগস্ট, ২০২৫

গান্ধীবাদি দেওন্ধিরা ভারত বর্ষের মুসলমানদের জন্য আশীর্বাদ না অভিশাপ

 গান্ধীবাদি দেওন্ধিরা ভারত বর্ষের মুসলমানদের জন্য আশীর্বাদ না অভিশাপ



দারুল উলুম দেওবন্দ মুসলিম, না দারুল উলুম হিন্দু?দেওবন্দীরা হিন্দু হয়ে গেছে পাপাত্মা গান্ধীর সময়েই।

ইন্টারনেটে দেওবন্দীদের গরু কুরবানীর সর্বপ্রথম বিরোধিতার খবরটি ২০০৪ সালে প্রকাশ হয়, প্রায় একুশ বছর আগের। এখন বিষয়টি গতানুগতিক হয়ে গিয়েছে, প্রতিবছরই কুরবানীর সময়ে দেওবন্দ থেকে গরু কুরবানীর বিরুদ্ধে ফতওয়া দেয়া হয়। সেখান থেকে একে একে সেসবের সংবাদ ও সূত্র তুলে ধরা হচ্ছে।

(দ্য হিন্দুর খবর, ২০০৪ সালের)


[http://www.hindu.com/2004/02/02/stories/2004020204261100.htm]


নয়াদিল্লি, ফেব্রুয়ারি ১ তারিখ: দারুল উলুম দেওবন্দ, ভারতের মুসলমানদের কথিত শীর্ষস্থানীয় ধর্মীয় সংগঠন, আজ গরু কুরবানীর বিরুদ্ধে ফতওয়া জারি করেছে।

মৌলভী জাফরুল্লাহর নেতৃত্বে পরিচালিত তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটির পক্ষ থেকে সাফাই গাওয়া হয়েছে যে, পবিত্র ঈদুল আযহাতে মুসলমানরা গরু ছাড়া অন্য যে কোন হালাল পশু যবেহ করতে পারে। (নাউযুবিল্লাহ!)

বিজেপি এবং আরএসএস-এর মতো বেশ কয়েকটি উগ্র হিন্দু মৌলবাদী সংগঠন তারা এই ফতওয়াকে স্বাগতম জানিয়েছে এবং বলেছে যে, এটা মুসলমান ও হিন্দুদের মধ্যে ঐক্য ও ভ্রাতৃত্বের মেলবন্ধন সৃষ্টিকারী কার্যকরী একটি পদক্ষেপ।

আরএসএস-এর মুখপাত্র রাম মাধব এ প্রসঙ্গে বলেছে, এই ফতওয়া গরু যবেহ ইস্যুর শান্তিপূর্ণ সুষ্ঠু সমাধা করবে এবং দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সুনিশ্চিত করবে।

বিজেপি মুখপাত্র, মুখতার আব্বাস নাকভী বলে দারুল উলুমের এই ফতওয়া দুই সম্প্রদায়ের ভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক আরো বৃহদাকারে ত্বরান্বিত করবে।

জমিয়তে উলামায়ে হিন্দ-এর মৌলভী মেহমুদ মাদানী বলেছে যে, তার সংগঠন এক বছর আগেই এই সমাধান সম্পর্কে অবহিত করেছিল। ইউনিভার্সাল এসোসিয়েশন অফ স্পিরিচুয়াল অ্যাওয়ারনেস এর প্রতিষ্ঠাতা-সভাপতি এন.কে শর্মা দারুল উলুম-এর এই সাহসী (!!!) পদক্ষেপকে সাধুবাদ জানিয়েছে।


টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবর, ২০০৪ সালের


দেওবন্দের আহবান, “গরু কুরবানী নিষিদ্ধের হুকুমকে সম্মান জানান।”

সাহরানপুর : মুসলমানদের ধর্মীয় জ্ঞানচর্চার কথিত পীঠস্থান দারুল উলুম গত রোববার মুসলমানদের পবিত্র ঈদুল আযহা উপলক্ষে ভারতের বুকে গরু কুরবানী না দেয়ার জন্য আহবান জানিয়েছে, যেখানে ভারতে গরু কুরবানী দেয়া নিষিদ্ধ। (নাউযুবিল্লাহ)

সাহরানপুর থেকে ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত, দারুল উলুমের ফতওয়া বিভাগের প্রধান মুফতী হাবীবুর রহমান ফতওয়া দেয় “যদিও শরীয়তের দৃষ্টিতে গরু কুরবানী করা নিষিদ্ধ(!)নয়, তথাপি দেশে গরু কুরবানী নিষিদ্ধ হওয়ার কারণে ভেড়া, ছাগল, এবং উট কুরবানী দেয়ার জন্য উপদেশ দেয়া যাচ্ছে। দেশের আইন কোনভাবেই ভঙ্গ করা যাবে না এবং দেশ এবং রাষ্ট্রের মধ্যে শান্তি পরিপূর্ণভাবে বজায় থাকতে হবে।


টাইমস অব ইন্ডিয়ার খবর, ২০০৮ সালের:


”গরুর গোশত খাওয়া অনৈসলামিক যদি সেখানে রাষ্ট্রীয় নিষেধাজ্ঞা থাকে।”

লক্ষ্মৌ/নয়াদিল্লি : গত জুমুয়াবার, দারুল উলুম, দেওবন্দ ফতওয়া ইস্যু করেছে, “মুসলমানদের অবশ্যই গরু কুরবানী থেকে, গরুর গোশত খাওয়া থেকে অথবা গোপনে গরু বিক্রি করা থেকে বিরত থাকতে হবে।”

দারুল উলুমের ফতওয়া বিভাগের প্রধান মোফতি হাবীবুর রহমান ফতওয়া দেয়, “গোশত ভোজনকারীরা বিকল্প হিসেবে মহিষের গোশত, ছাগলের গোশত, মুরগি এবং মাছ বেছে নিতে পারে। আইনত যদি নিষিদ্ধ থাকে তবে শরীয়ত কখনোই গরুর গোশত খাওয়াকে সমর্থন করে না।” (নাঊযুবিল্লাহ)

উল্লেখ্য, ২০০৮, ২০০৯, ২০১০, ২০১১, ২০১২, ২০১৩ প্রত্যেক বছরেই দেওবন্দ গরু কুরবানীর বিরোধিতা করেছে।


দারুল উলুম দেওবন্দের ফতওয়া, “হিন্দুদের ধর্মীয় অনুভূতিকে সম্মান জানিয়ে ঈদে গরু কুরবানী পরিহার করুন।”


[http://khabar.ibnlive.in.com/news/109892/13]


बकौल अशरफ उस्मानी दारूल उलूम हमेशा से ही गौहत्या के खिलाफ रहा है और समय समय पर इसके बारे में फतवे भी जारी किए गए हैं। सबसे पहला फतवा स्वतंत्रता आंदोलन के दौरान महात्मा गांधी के अनुरोध पर दारूल उलूम द्वारा जारी किया गया था।

(খবরটি হিন্দিতে, গুগল ট্রান্সলেটে এরকম আসে)

“আশরাফ ওসমানী বলেছে, দারুল উলুম সবসময়েই গরু কুরবানীর বিরুদ্ধে ছিল এবং টাইম টু টাইম, বারবার গরু কুরবানীর বিরুদ্ধে ফতওয়া ইস্যু করেছে। সর্বপ্রথম দারুল উলুম, মালউন পাপাত্মা গান্ধীর নির্দেশে স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় গরু কুরবানীর বিরুদ্ধে ফতওয়া দেয়।” (নাঊযুবিল্লাহ মিন যালিক)


[http://shobujbanglablog.net/58398.html]

ফ্যাসিবাদ বিরোধী একজন সিরাজ শিকদার

ফ্যাসিবাদ বিরোধী একজন সিরাজ শিকদার 

সিরাজ সিকদার 


 ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় লাইব্রেরির পাশে শিরাজ শিকদারের গ্রাফিতি রয়েছে। কমরেড শিরাজ শিকদারের অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক মতাদর্শ অনেকের অপছন্দ। তবে তার আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক মতাদর্শ ছিলো আধিপত্যবাদীদের বিরুদ্ধে, বিশেষ করে ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে। 


আদর্শিক বিরোধিতা না করে জুতা নিক্ষেপের কালচারটা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যারা এনেছে,বামদের মোকাবেলা করতে না পেরে যারা গ্রাফিতি মুছতে যায়- তারা নিরেট অশিক্ষিত। 


নিচের লেখাটি তাদের উদ্দেশ্যে -


১৯৭২ সালে সিরাজ সিকদারের সেই খোলা চিঠিঃ ইন্দিরা গান্ধী জবাব দেবেন কি?


১৯৭২ সালের মার্চ মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশ সফরে এলে এই প্রচারপত্রটি রচনা ও প্রচার করা হয় ]


১। আপনার সেনাবাহিনী মিত্র বাহিনী। কিন্তু মিত্র বাহিনী কিভাবে পাক সামরিক ফ্যাসিস্টদের কয়েকশত কোটি টাকার অস্ত্র-যুদ্ধ সরঞ্জাম ভারতে নিয়ে গেল, পূর্ববাংলার বহু কলকারখানা, তার খুচরো অংশ, গাড়ী, উৎপাদিত পণ্য, পাট, চা, চামড়া, স্বর্ণ, রৌপ্য ভারতে পাচার করল?


আপনি আপনার দখলদার বাহিনী প্রত্যাহার করার কথা বলে জনগণকে ভাওতা দিচ্ছেন। আপনার প্রকৃত উদ্দেশ্য হলো বাঙালীদের দ্বারা আপনার উপনিবেশ পাহারা দেওয়া, বাঙালীদের দমন করা। এছাড়া অসংখ্য ভারতীয় দখলদার সৈন্য আপনি সাদা পোশাকে এবং বাংলাদেশ বাহিনী ও বাংলাদেশ রাইফেলের ইউনিফর্মে পূর্ববাংলায় রেখেছেন। আপনার সৈন্য প্রত্যাহারের কথা সম্পূর্ণ মিথ্যা।


২। আপনি নিজেকে মুক্তি সংগ্রামের বন্ধু বলে জাহির করেন। কিন্তু নাগা, মিজো, কাশ্মিরী, শিখদের মুক্তি সংগ্রামকে কেন ফ্যাসিবাদী উপায়ে দমন করছেন?


ইহা কি প্রমাণ করে না আপনি বিশেষ উদ্দেশ্য নিয়ে পূর্ববাংলার মুক্তি সংগ্রামের সহায়তয়ার বেশ ধরেছেন? এ উদ্দেশ্য হলো পূর্ববাংলায় আপনার উপনিবেশ স্থাপন, আপনার হারানো পশ্চাদভূমি পুনরুদ্ধার, পূর্ববাংলা শোষণ ও লুন্ঠন করে আপনার আর্থিক ও রাজনৈতিক সংকট হ্রাস করা, চীন ও কমিউনিজম প্রতিহত করার ঘাঁটি স্থাপন করা।


৩। আপনি মিত্রের বেশে পূর্ববাংলার মাছ-মাংস-ডিম-তরকারী-ধান-চাল ও অন্যান্য খাদ্যদ্রব্য, পাট, চা, চামড়া ও অন্যান্য কাঁচামাল, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য, ভূমি, প্রাকৃতিক সম্পদ, প্রশাসন, দেশরক্ষা, শিক্ষা, সংস্কৃতি প্রভৃতি সকল ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করে শোষণ ও লুন্ঠন করেছেন, পূর্ববাংলায় আপনার উপনিবেশ কায়েম করেছেন।


এ উপনিবেশ কায়েমের জন্য আপনি পূর্ববাংলার দেশপ্রেমিকদের খোরাক হিসেবে ব্যবহার করেছেন।


যে সকল দেশপ্রেমিক বিশেষ করে পূর্ববাংলার সর্বহারা পার্টির কর্মী যারা আপনার গোলাম হতে রাজী হয়নি তাদেরকে ‘নকশাল’ অভিহিত করে আপনি খতম করিয়েছেন। এভাবে পূর্ববাংলার দেশপ্রেমিকদের রক্তে আপনি হাত কলঙ্কিত করেছেন।


এতদিন আপনি এ শোষণ ও লুন্ঠন গোপন চুক্তির মাধ্যমে করেছেন। বর্তমানে ২৫ বৎসরের শান্তি, মৈত্রী ও সহযোগিতার চুক্তির নামে আপনার তাবেদার বাংলাদেশ পুতুল সরকার প্রকাশ্যে আপনাকে বাঙালী জাতির দসখত লিখে দিয়েছে এবং আপনার শোষণ-লুন্ঠনকে ন্যায়সঙ্গত করেছে।


আপনার ও আপনার তাবেদারদের শোষণ ও লুন্ঠনের ফলে পূর্ববাংলায় ৭০-৮০ টাকা মণ হয়েছে চাল, নিত্য ব্যবহার্য দ্রব্য হয়েছে অগ্নিমূল্য। অনাহার-অর্ধাহার ও বেকারীর হাহাকার উঠেছে পূর্ববাংলায়। পূর্ববাংলায় দুর্ভিক্ষ শুরু হয়ে গেছে। না খেয়ে লোক মরছে। পূর্ববাংলার জন্য আপনার দরদ উছলে পড়ছে, চাল ও অন্যান্য সাহায্য দ্রব্য পূর্ববাংলায় পাঠাবার কথা বলে বেড়াচ্ছেন, কিন্তু কত গুণ বেশী লুটে নিচ্ছেন তা তো বলেন না, এর ফলেই আজ ভারতে চাল ও খাদ্যদ্রব্যের দাম কমেছে।

এভাবে ভারতের অর্থনৈতিক সংকট আমাদের উপর চাপিয়ে দিয়ে আপনি উদ্ধার পাবার ব্যর্থ চেষ্টা করছেন।

৪। আপনি গণতন্ত্রের কথা বলেন। কিন্তু আপনার দেশে কি আপনি সামরিক বাহিনী, রিজার্ভ পুলিশ, পুলিশ, সশস্ত্র যুব কংগ্রেসের পাণ্ডাদের মাধ্যমে ফ্যাসিস্ট শাসন চালাচ্ছেন না? ‘নকশাল’ অভিহিত করে শত-সহস্র জনগণকে হত্যা করছেন, পাক সামরিক ফ্যাসিস্টদের সাথে আপনার নির্যাতনের কোন পার্থক্য আছে কি?

৫। আপনি গলাবাজি করে বেড়ান আপনি ধর্ম নিরপেক্ষ। বৃটিশ সাম্রাজ্যবাদী দস্যুদের তাবেদার কংগ্রেসস্থ হিন্দু ধর্মাবলম্বী প্রতিক্রিয়াশীল জমিদার, জোতদার, পুঁজিপতি ও বুদ্ধিজীবীরা যদি পূর্ববাংলার মুসলিম জনগণের উপর রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, ধর্মীয়, সাংস্কৃতিক নিপীড়ন না চালাতো তবে কি পূর্ববাংলার জনগণ পৃথক ভূ-খণ্ড দাবী করতো? তারা এ কারণেই বঙ্গভঙ্গ প্রস্তাব সমর্থন করেছে।

১৯৪৭-এর পরে ভারতে মুসলিম বিরোধী কয়েক শত রায়ট হয়েছে। অবাঙালী মুসলমান, কলিকাতা, আসাম, ত্রিপুরার লক্ষ লক্ষ নিরীহ বাঙালী মুসলমান জনগণকে নির্মমভাবে হত্যা করা হয়েছে। তাদেরকে বলপূর্বক কপর্দকহীন অবস্থায় পূর্ববাংলায় ঠেলে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে। হিন্দু ধর্মাবলম্বী যারা ১৯৪৭ সালে ভারতে গিয়েছিল তাদেরকে আপনি শরনার্থীর বেশে পূর্ববাংলায় পাঠাচ্ছেন, আপনার পুতুল সরকারের মাধ্যমে তাদের ভূ-সম্পত্তি ফেরত দেওয়াচ্ছেন।

কিন্তু ভারত থেকে বিতাড়িত বিহারী এবং বাঙালী জনগণকে আপনি তাদের জন্মস্থান ভারতে ফেরত নিতে, তাদের সম্পত্তি ফেরত দিয়ে তাদেরকে পুনর্বাসন করতে কেন রাজী হচ্ছেন না? আপনি আফ্রিকা, বার্মা, সিংহল থেকে হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ফেরত নিয়েছেন। কিন্তু ভারত থেকে বিতাড়িত বাঙালী মুসলমানদের ফেরত না নিয়ে আপনি কি প্রমাণ করছেন না যে, ‘মুসলিম’ এই কারণে তাদেরকে ফেরত নিচ্ছেন না? ইহা প্রমাণ করে আপনি সাম্প্রদায়িক, ধর্মনিরপেক্ষ নন। আপনার ধর্মনিরপেক্ষতার বুলির উদ্দেশ্য হলো পূর্ববাংলায় আপনার উপনিবেশ বজায় রাখার পথে মুসলিম ধর্মের বাধা দূর করা এবং ধর্মীয় নিপীড়ন চালানো।

৬। আপনি ‘সমাজন্ত্র’, ‘গরিবী হটাও’ বুলি কপচাচ্ছেন। এটা কি জনগণকে ভাওতা দেওয়া ছাড়া আর কিছু? সমাজতন্ত্রের নামে ভারতে চলছে সোভিয়েট সামাজিক সাম্রাজ্যবাদ, সাম্রাজ্যবাদ, আমলাতান্ত্রিক পুঁজিবাদ, সামন্তবাদ এই চার পাহাড়ের নির্মম শোষণ-লুন্ঠন। এর ফলে জনগণ অকল্পনীয় খারাপ অবস্থায় পতিত হয়েছে।

আপনার ‘গরিবী হটাও’, ‘সমাজতন্ত্র’-এর বুলির ভাওতা ঢাকার জন্য অন্য দেশ শোষণ ও লুন্ঠন করে চরম অর্থনৈতিক সংকট কাটাবার ব্যর্থ চেষ্টা করছেন।

অতীতে জাপানী ফ্যাসিস্টরা ‘এশিয়াসহ উন্নত অঞ্চল’ এর বুলিকে এশিয়ায় উপনিবেশ স্থাপনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে। তাদের দখলকৃত এলাকায় তথাকথিত স্বাধীন পুতুল সরকার বসায়।

আপনিও জাপানী ফ্যাসিস্টদের কবরে যাওয়ার পদচিহ্ন বেয়ে অগ্রসর হচ্ছেন, গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র ও ধর্মনিরপেক্ষতার বুলিকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে আপনার সম্প্রসারণবাদী আকাঙ্খা পূরণের চেষ্টা করছেন।

পূর্ববাংলার জাতীয় সমস্যার সুযোগ গ্রহণ করে পূর্ববাংলায় ছয় পাহাড়ের দালাল মীরজাফরদের সহায়তায়

রবিবার, ৩ আগস্ট, ২০২৫

সাবধান মুসলমান

 "সাবধান মুসলমান, আর কত প্রতারিত হবেন, তাগুতের সহযোগী হয়ে ইসলাম প্রতিষ্ঠার চেষ্টা আর না"




আসসালামু আলাইকুম,  আজকের লেখাটি শুধু মাত্র আলেম সমাজ ও মুসলমানদের জন্য। বাংলাদেশের ইসলামি রাজনীতির অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নিয়ে। এই ব্রিটিশ ভারত যে দ্বিজাতিতত্ত্বে বিভাজিত হয়ে ছিলো এর দুটি জাতি ছিল হিন্দু আর মুসলিম।

১৯৪৭ সালে তৎকালীন পূর্ব বাংলার নেতৃবিন্দ এ দেশকে ইসলামের সুরক্ষা ও মুসলমানদের অধিকারের কথা ভেবেই পাকিস্তানের সাথে থাকার সিদ্ধান্ত নেন। পাকিস্তানের নেতারা একটি শরিয়াহ ভিত্তিক ইসলামিক দেশ প্রতিষ্ঠা করবে মর্মে অঙ্গীকার করেই দেশটি আলাদা করে ভারত হতে। কিন্তু অত্যান্ত পরিতাপের বিষয় তখন মুসলমানদের মুখোশের আড়ালে মুহাম্মদ আলী জিন্নাহ, তখনকার সেনা প্রধান হতে প্রায় সবাই ছিলো নামধারী স্যেকুলার শিয়া মুসলিম। আর জেনে শোনেই ইংরেজরা মুসলমানদের জন্য বরাদ্দকৃত ভুখন্ডটি এই স্যেকুলারদের হাতে তুলে দেশ, কেননা তারা জানত যে এই নাম ধারী মুসলমানদের হাতে মুসলমানদের ভাগ্যের চরকা তুলে দিলে কি হবে ভবিষ্যৎ। এখানে বোকা আলেম সমাজ কৌশলের কাছে প্রতারিত হলো। সাইনবোর্ড দেখালো ইসলামের, পতাকা দেখলো চাঁদ তারকা খচিত, আর ভেতরে ভেতরে তৈরি করলো অমসুলিম দেশ।

ফলাফল যা হওয়ার তাই হলো, পাকিস্তান নামে একটি ইসলামি দেশ হলেও আদতে পাকিস্তানেও একটি তাগুতী শক্তি ঝেঁকে বসল, শুরু হলো অশান্তির দাবানল। সর্ব প্রথম প:পাকিস্তানের মুসলিম নামধারী তাগুতি শক্তির জালিম শাসকরা আঘাত হানে পূর্ব পাকিস্তানের মানুষের কপালে। যা হওয়ার তাই হলো, পূর্ব পাকিস্তান তাদের স্বাধিকারের দাবীতে মরহুম শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃবে এক ভয়াবহ রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে দেশ স্বাধীন করে।


স্বাধীনতার পূর্বে ব্রিটিশ আমলে এদেশ মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ ছিলো, তাই তারা কথিত ইসলামি প্রজাতন্ত্র পাকিস্তানের সাথে মুসলিম দেশের অংশ হিসাবে যুক্ত হয়। এখনও সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশই এটি।

এই স্বাধীন বাংলাদেশের যত ইতিহাস পড়েছি সব জায়গায়ই দেখেছি পশ্চিমাদের শোষনের হাত হতে জাতিকে মুক্তির জন্য এদেশ স্বাধীন হয়েছে। কোথাও কোন ইতিহাসে কিংবা কোন নেতার বক্তৃতায় একথা পড়িনি বা শুনিনি যে পূর্ব পাকিস্তান ধর্মীয় বিদ্বেষ থেকে এদেশ স্বাধীন হয়েছে।  নেতারা এমন কথা কথাও বলে থাকলে কিংবা আপনারা যদি কোথাও শোনে থাকেন তাইলে আমাকে জানাবেন।

বাংলাদেশ স্বাধীন হলো স্বাধিকারের জন্য, বাংলাদেশ তখনও মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ ছিলো। স্বাধীনতার পর এদেশের সংবিধান ইসলামের ভিত্তিতে রচিত না হয়ে কোনো এক অজানা শক্তির প্রভাবে হয়ে গেলো ধর্ম নিরপেক্ষতার ভিত্তিতে। শুরু হলো স্যেকুলার রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার কাজ। আবারও প্রতারিত হলো মুসলমান, মুসলিম দেশটি হয়ে গেলো ধর্মনিরপেক্ষ দেশ। অপরদিকে স্বাধীনতার স্থপতি মরহুম শেখ মুজিবুর রহমান দেশকে ওআইসিতে যুক্ত করে বাংলাদেশকে আন্তর্জাতিক মহলে মুসলিম দেশ হিসাবে পরিচিত করলো, ইসলামি ফাউন্ডেশন তৈরী করল, জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররম করল, ইসলামি বিশ্ববিদ্যালয় করল। এতে মনে হলো এটি একটি মুসলিম দেশ, কিন্তু সংবিধান দেশ পরিচালনার মূলমন্ত্র হলো ধর্ম নিরপেক্ষতা। এমন দ্বৈত নীতি দুনিয়ার কোন জাতির ভাগ্যে জুটেছে কিনা তা আমার জানা নাই, এখানেও প্রতারিত হলো মুসলমানরা।

যাইহোক শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপরিবারে নিহত হওয়ার পর সংবিধান স্থগিত হলো, একের পর এক দেশে ক্ষমতার পালাবদল হতে হতে মরহুম মেজর জিয়াউর রহমানের শাসনামল আসল। উনি চালু করলো বহুদলীয় গনতন্ত্র।  সকল দলের কার্যক্রম চালু হলো। চালু হলো ইসলামি দল গুলোর কার্যক্রমও। মেজর জিয়াউর রহমানও বেশীদিন দেশ শাসন করতে পারে নি। উনি বহুদলীয় গনতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ইসলামি দল গুলোর রাজনীতি করার অনুমতি দিলেও তার পেছনেও ছিলো একটি উদ্দেশ্য যা অনেকে বুঝতে পারে না। 

মেজর জিয়াউর রহমান একজন সেনা অফিসার হতে রাতারাতি হয়ে যায় একজন রাষ্ট্রপতি।রাতারাতি আবার এরকম রাষ্ট্রপতিরা কখনোই জনপ্রিয়তার পায় না। এই জানপ্রিয়তার জন্যই তিনি বহুদলীয় গনতন্ত্র চালু করেন আবার জাতীয়তাবাদী আদলে একটি দলও কেন্টনমেন্ট হতে জন্ম দেন। এখানে উল্লেখ্য যে যারা বলেন যে ইসলামি দল গুলো জিয়াউর রহমানের কাছে ঋনি থাকা উচিত তাদের যদি প্রশ্ন করি যে কেনো ইসলামিনদলগুলো একাই ঋনী থাকবে? উনি কি কোন ইসলামি দলকে ক্ষমতায় বসিয়েছে? নাকি উনি নিজে একটি ইসলামি দল গঠন করেছে? উনি তো জাতীয়তাবাদ প্রতিষ্ঠা করার চেষ্টায় মত্য ছিল যা আদতে একটি ইসলাম বিরোধী মতবাদ। আর বহু দলীয় গনতন্ত্রের জন্য যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার করার কথা বলেন তাইলে সকল দলেরই জিয়াউর রহমানের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকা উচিত। এমন কি বর্তমান ক্ষমতাসীন আওয়ামিলীগ সরকারও। কেননা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীকে দেশে এনে রাজনীতিতে সক্রিয় করার পেছনেও মেজর জিয়ার অবদান রয়েছে।



যাই হোক, জিয়াউর রহমানের শাসনামলের পরে আসল স্বৈর শাসক বিশ্ব বেহায়া এরশাদের আমল। ১৯৮৬ তে একটি সাজানো নির্বাচন হলো।  নির্বাচনে আপোষহীন নেত্রী খালেদা জিয়া প্রতিবাদ সরুপ অংশগ্রহন করে নি। সর্বদলীয় জোটের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে তখন আওয়ামিলীগ ও জামায়াতে ইসলামি নির্বাচনে অংশগ্রহন করে বসে যদিও সর্বদলীয় সিদ্ধান্ত ছিলো এই ইলেকশনে যে দল অংশগ্রহন করবে সে দল জাতীয় বেইমান হিসাবে চিহ্নিত হবে। এই ইলেকশনে অংশগ্রহন করে এরশাদ সরকারকে বৈধতা দেওয়া যদি জাতির সাথে বেঈমানী হয়ে থাকে তাইলে তখনকার ঘটনার দায়ে জামায়াত ও আওয়ামিলীগ উভয়ই এই অপরাধে সমান অপরাধী। এখানেও মুসলমানরা ইসলামি দলের নিকট ঈনসাফ হতে বঞ্চিত হয়। আর এখানে জামায়াত তাদের রাজনৈতিক অপরিপক্বতার কারনেই আওয়ামিলীগ এর পাল্লায় পড়ে নিজেও প্রতারিত হয়ে বেঈমানের খতায় নাম উঠিয়ে বসে।

তার পর ১৯৯১ সালে খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে বিএনপি ক্ষমতায় আসে। জামায়াতে ইসলামী ১৮ টি আসনে বিজয়ী হয়। যেহেতু আওয়ামিলীগ ও বিএনপির দুই নেতাই মহিলা ছিলো, সেহেতু মুসলমানদের নারী নেতৃত্ব হারাম হলেও অনিচ্ছায় বিএনপিকে সরকার গঠনে সমর্থন করে। কিন্তু ঐ সংসদেও জামায়াতে ইসলামিকে তার ন্যায্য অধিকার দেয় নি তৎকালীন বিএনপি। আসে ১৯৯৬ সালের নির্বাচন। তত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জামায়াত আবার আওয়ামিলীগের সাথে মিলে বহু আন্দোলন আর দেন দরবার করে তত্বাবধায়ক সরকার প্রবর্তন করে।  শেষে সফল হয়ে জানায়াতের আন্দোলনের পুরাতন সঙ্গী আওয়ামিলীগ ক্ষমতায় আসে। এসেই লীগ সরকার একে একে ইসলাম বিদ্বেষী কর্যক্রম শুরু করে। দেশকে আবার ধর্ম নিরপেক্ষতার আদলে প্রতিষ্ঠা করার জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলিমদেরকে ডি-ইসলামাইজেশন শুরু করে। জামায়াত বুঝতে পারে তারা যে আওয়ামিলীগ কে বন্ধু ভাবত তা আসলে ভুল ছিলো, ততক্ষনে বিষয়টা হাতের নিয়ন্ত্রনের বাইরে চলে যায়। প্রতারিত হয় মুসলমানরা।

তার পর ২০০১ সালে বিএনপির সাথে জোট করে জামায়াতে ইসলামি।  ইসলামে নারী নেতৃত্ব হারাম হলেও জামায়াত নারীর নেতৃত্বে বিএনপির সাথে এবার শক্ত রাজনৈতিক গাঁটছড়া বেঁধে বসে। নিরঙ্কুশ ভাবে ক্ষমতায় যায়। শাসন করে ৫ বছর। এই বিএনপি-জামায়াত জোট সরকার ৫ বছর শান্তিতে দেশ শাসন করলেও ২১শে আগষ্ট বোমা হামলা নিয়ে বিএনপিকে কোন জবাব দিহীতার আওতায় আনতে পারে নি এবং আনার চেষ্টাও করে নি। তখন ভাবছিলো আওয়ামিলীগ দূর্বল হলে পরবর্তী উদিয়মান রাজনৈতিক দল জামায়াত, আর খলেদা মারা গেলে এমনিতেই বিএনপি শেষ হয়ে যাবে এই আশায় বুক বেঁধে শান্তির ঢেঁকুর তোলে কানে তুলা গোঁজে চোখ বন্ধ করে থাকে। এই শান্তির নিশ্চলতা ২০০৬ সালে ২৮ অক্টোবর জামায়াতের জন্য কাল হয়ে দাঁড়ায়। জামায়াত এই ঘটনার কিছুদিন পূর্বেও বুঝেনি যে এই বিএনপি মেজর জিয়ার বিএনপি হতে সম্পূর্ণ আলাদা, এই বিএনপির সূঁতো এখন খালেদা জিয়ার হাতে নয়, এটা মি  টেনপার্সেন্ট তারেকের হাতে। যা হবার তাই হলো, ২১ আগস্টের আদলে এবার আওয়ামিলীগকে দিয়ে জামায়াতকে চির বিদায়ের জন্য নাটক মঞ্চস্থ করে।২৮শে অক্টোবর ২০০৬ সালে হামলার বিষয়ে বার বার এনএসআই ও ডিজিএফআইয়ের সতর্ক বার্তা আসলেও এই খাম্বা তারেক এই রিপোর্ট গুলো খলেদা জিয়ার চোখের আড়াল করে ৫০ লক্ষ টাকার বিনিময়ে তখনকার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী চুল খাড়া বাবরের মাধ্যমে এই লগিবৈঠার তান্ডবের ঘটনা ঘটায়।তখনও বোকা আবেগী জামায়াত বুঝতে পারেনি তারেকের নেতৃত্বে বিএনপির প্রতারনা। আর এখনও বুঝতে পারছে না।


জামায়াতে ইসলামী এই লীগ সরকারের আমলে সাজানো মামলায় অনেক নেতা হারিয়েছে এবং নিবন্ধনও হারিছে। কিন্তু বিএনপির সংস্পর্শ এখনও ছাড়তে পারে নি। ইসলাম পন্থিরা ভাবছে বিএনপি ক্ষমতায় আসলে জামায়াত সহ ইসলামি দল গুলোর হিল্লে হবে, কিন্তু হবে না। ইসলামি দল গুলো এখনও উপলব্ধি করতে পারছে না যে জিয়াউর রহমানে বিএনপি আর এখনকার বিএনপি এক না। আপোষ হীন এক জবানের নেত্রী খালেদার হাতে আর বিএনপির নেতৃত্ব নাই। এখন বিএনপির ক্ষমতা বারতের "র" এর নিয়ন্ত্রনে, নাস্তিকদের হাতে, সর্বোপরি ইসলাম বিদ্বেষীদের মির্জা ফকরুলদের হাতে, ২৮শে অক্টোবরের কুশীলব মি.টে পার্সেন্ট ওরফে খাম্বা তারেকের হাতে।

এ বিএনপি এমন একটি দল যে দল ভারতের নূপূর শর্মা মহানবীকে অপমানের পরও একটি বক্তব্য দেয় নি, এদেশের হাজার হাজার আলেম নিধনের পরও আলেমদের পক্ষে একটাও বক্তব্য দেয় নি। বর্তমান ফিলিস্তিন ইস্যুতে একটা বিবৃতিও দেওয়ার মত নৈতিকতা নাই। ওদের নেতা মির্জা ফকরুল প্রকাশ্যে বলে আমরা ইসলামকে প্রমোট করি না। এমন কি চট্টগ্রামে বিএনপির সাবেক নেতার ছেলে হুম্মাম কাদেরের নারায়ে তাকবীর আল্লাহুআকবার স্লোগানে নাকি কেন্দ্রীয় নেতারা বিব্রত বোধ করে, আবার তা মিডিয়ার সামনে প্রকাশ্যে বলেও বেড়ায়।  এবার ভাবুন এই দলটি তলে তলে কতটা ইসলাম বিদ্বেষীদের নিয়ন্ত্রনে আছে? কিন্তু বোকা ইসলামি দল গুলো বুঝে না। এরা মনে করে বিএনপি আওয়ামিলীগ হতে বেশী ইসলাম সহনশীল, আসলে তা নয়। আবারও প্রতারিত হচ্ছে।

আমি বলি কোন অনৈসলামিক দলকে সাপোর্ট দিয়ে নয়, বরং ইসলামি দল গুলোকেননিজেরা নিজেদেরকে সঙ্গে নিয়ে ইসলামি দল গুলোর আগাতে হবে। আর কোন ইসলামী দলের সাথে পরস্পর সহবস্থানে না থাকতে পারলে একলা চল নীতিতে অটল থাকতে হবে। ইসলামি দল গুলোর আদতে কোন বন্ধু নাই এটা উপলব্ধি করতে হবে। এক আল্লাহকে ভরসা করেই চলতে হবে। এটা তালেবান, হামাসকে দেখে শিখতে হবে।

আপনারা যে বাতিলের সহযোগী হয়ে ইসলাম কায়েম করতে চাচ্ছেন তা নিত্যন্তই ভুল। এ পথে প্রতারিত হওয়া ছাড়া আর কিছুই পাবেন না।

লেখক:চিকিৎসা, জার্নালিস্ট ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী। 

শুক্রবার, ১ আগস্ট, ২০২৫

বাংলাদেশের মিশনারী প্রতারণা

 বাংলাদেশের মিশনারী প্রতারণা 




বাংলাদেশের পার্বত্য এলাকাকে ঘিরে এনজিও এবং আন্তর্জাতিক খ্রিষ্টান লবি ভিন দেশী সংস্কৃতিকৃষ্টি  ধর্ম প্রচারের লক্ষ্যে সুদীর্ঘ কাল ব্যাপী নানা মুখী চক্রান্ত চালিয়ে আসছে। চিকিৎসাসমা  মানবতার সেবার অভিনয়ে তারা মূলতঃ

পার্বত্য এলাকার দারিদ্র্যপীড়িত জনগোষ্ঠীকে ইউরোপীয় জীবনাচার  দর্শনের দিকে আকৃষ্ট করার প্রয়াস চালাচ্ছে। মুঘল আমলেই এদেশের প্রতি এন জি  এবং খ্রিষ্টা মিশনারীদের শ্যেন দৃষ্টি পতিত হয়। 

ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানীর শাসনামলে মিশনারীগণ ভিন দেশী সংস্কৃতির বিকাশ  ধর্মান্তরের যে প্রক্রিয়া আনুষ্ঠানিক ভাবে চালু রেনপর্যায়ক্রমে পাকিস্তান  বাংলাদেশ আমলে তার ক্রমবিকাশ সাফল্যের সাথে অব্যাহত থাকে। স্কুল প্রতিষ্ঠাশিক্ষা উপকরণ বিতরণহাসপাতাল স্থাপনঋণ প্রদানঘূর্ণিঝড় আশ্রয় কেন্দ্র নির্মাণদারিদ্র্য বিমোচনকমিউনিটি ডেভেলপমেন্ট  নারীর ক্ষমতায়ন প্রভৃতি মুখরোচক কর্মসূচীর আড়ালে রয়েছে  দেশে ইউরোপীয় সংস্কৃতি  খ্রিষ্টান ধর্ম প্রচার করার নীল নকশা বাস্তবায়ন। উল্লেখ্য যেবাংলাদেশের পার্বত্য এলাকায় প্রায় ৪৫টি ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র নৃতাত্ত্বিক জাতিগোষ্ঠীর অধিবাস। শত বছর ধরে বহুবিধ সমস্যায় জর্জরিত হয়ে ২০ লাখ আদিবাসী ক্রমাগত প্রান্তীয় পরিণতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। রাজনৈতিক বিচ্ছিন্নতাচরম দারিদ্র্যক্ষুধাঅনাহারমৃত্যু, মহামারীঅপুষ্টি  স্যানিটেশন সমস্যা তাদের নিত্যসঙ্গী। খাদ্বস্ত্রচিকিৎসাশিক্ষা  বাসস্থান এই পাঁচটি মৌলিক মানবাধিকার থেকে তাঁরা বঞ্চিত। রাখাইন ডেভেলপমেন্ট ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান মি.উসিথ মং বলেনরাখাইনরা ক্ষুদ্র জাতিগোষ্ঠী হিসেবে এই অঞ্চলে আদিম অধিবাসী। প্রায় ৩৩ শতাংশ রাখাইন এখন ভূমিহীন  গত ৩৫ বছরে পটুয়াখালীতে প্রায় ৯০ শতাংশ রাখাইনকে নিজ ভূমি থেকে উচ্ছেদ হতে হয়েছে।১৯৯১ সালের আদম শুমারি অনুযায়ী কেবল পার্বত্য চট্টগ্রামের জন সংখ্যা ১০ লাখ  হাজার ৩৬২ জন। অধিকাংশ চাকমা  মারমা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী, টিপরা অধিবাসিরা হিন্দু ধর্মের আর মিজো বম  থেয়াং খ্রিষ্টান। কিছু কিছু গোত্র আত্মাপ্রাণী  উদ্ভিদের পূজারী। (বাংলাপিডিয়া৫খন্ডপৃ.৩৭১-)
সাধারণভাবে এসব ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী এবং বিশেষভাবে পাহাড়িরা অত্যন্ত কষ্টে আছে, 'মানুষকরার জন্য নানামুখী সহযোগিতা প্রয়োজনতাদের পৃথক সত্তা  নিজস্ব সংস্কৃতি রক্ষা নিশ্চিত করতে হবে ইত্যাদি বক্তব্য দেশের সীমানা পেরিয়ে বিদেশেও প্রচুর শোনা যায়। এর সূত্র ধরে বিদেশি ফান্ড দ্বারা পরিপুষ্ট ঝাঁকে ঝাঁকে এনজিও এখন তিন পার্বত্ জেলায় সক্রিয় আছে। কিন্তু এতদিনে পরিষ্কার হয়ে গেছে যেআর্ত-মানবতার সেবার নামে এসব এনজিও বেশিরভাগই আসলে পাহাড়ি জনগোষ্ঠীকে ধর্মান্তরিত করার কাজে কোমর বেঁধে নেমেছে।  কাজে তাদের সাফল্য রীতিমত চোখ ধাঁধানো। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের তৈরি করা প্রতিবেদনের বরাত দিয়ে আমার দে- প্রকাশিত এক রিপোর্টে বলা য়েছে,গত ২০ বছরে সেখানে ১২ হাজা উপজাতীয় পরিবারকে ধর্মান্তরিত করে খ্রিস্টান বানানো হয়েছে  রিপোর্টের তথ্য অনুযায়ীতিন পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়িবান্দরবান  রাঙামাটিতে বর্তমানে ১৯৪টি গির্জা উপজাতীয়দের ধর্মান্তরিত করে খ্রিস্টান বানানোর ক্ষেত্রে মুখ্য ভূমিকা পালন করছে। খাগড়াছড়ি জেলায় আছে ৭৩টি গির্জা। ১৯৯২ সাল থেকে ২০১০ সাল পর্যন্ত  জেলায়  হাজার ৩১টি পরিবার খ্রিস্টান হয়েছে। বান্দরবান জেলায় গির্জা আছে ১১৭টি। এখানে একই সময়কালে খ্রিস্টান হয়েছে  হাজার ৪৮০টি উপজাতীয় পরিবার। রাঙামাটিতে ৪টি চার্চ খ্রিস্টান বানিয়েছে  হাজার ৬৯০টি উপজাতীয় রিবারকে। এগুলো তুলনামূলকভাবে হা আমলের হিসাব। পাহাড়ি যেসব জনগোষ্ঠীর লোকসংখ্যা তুলনামূলকভাবে কমতাদের প্রায় শতভাগ খ্রিস্টা হয়ে গেছে অনেক আগেই (এম নোমানআমার দেশ১২.০৮.২০১১)


পাহাড়িদের নিজস্ব সংস্কৃতি অটুট রাখার জন্য কুম্ভীরাশ্রু বিসর্জনকারী পশ্চিমা গোষ্ঠীর প্রত্যক্ষ মদদে চলা ধর্মান্তকরণ সেখানে এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছে যেউপজাতীয়দের নিজস্ব সংস্কৃতিধর্মীয় মূল্যবোধ আজ আক্ষরিক অর্থেই বিপন্ন। তাদের সামাজিক  পারিবারিক বন্ধন শিথিল হয়ে যাচ্ছে দিন দিন। পার্বত্য চট্টগ্রামে খ্রিস্টান হয়ে যাওয়া পাহাড়িদের দ্রুত সংখ্যা বৃদ্ধি যারা ঘটাচ্ছে তারা যদি পাহাড়িদের রাষ্ট্রীয় আনুগত্যের শিকড় কেটে দিতে সক্ষম হয় তবে তা বাংলাদেশের অখন্ডতা  সার্বভৌমত্বের জন্য  ধরনের হুমকি হয়ে উঠবে। এভাবে দেশের একটি স্পর্শকাতর এলাকায় ডেমোগ্রাফির নাটকীয় পরিবর্তন স্বাভাবিকভাবে মেনে নেয়া যায় না। ত্রাণ  সেবার নামে আসলে ওই অঞ্চলের দরিদ্র  পিছিয়ে পড়া লোকজনকে ধর্মান্তরিত হতে প্রলুব্ধ করা হচ্ছে বলে জোরালো অভিযোগ য়েছে। একথা সত্য যেআমরা বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ সমতলবাসী বাঙালিরা পাহাড়িদের আর্থ-সামাজিক উন্নতির জন্য পর্যাপ্ত সহযোগিতা করিনি। পাশাপাশি এটাও সত্য যেব্রিটিশ রাজশক্তি ঔপনিবেশিক আমলে বিশেষ মতলব নিয়ে পাহাড়ি  বাঙালিদের মধ্যে বিভাজন রেখা টেনে দিয়েছিল যাতে পরস্পরের মধ্যে সার্বিকভাবে দূরত্ব তৈরি হয়। তাদের সেই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনার ফল এখন পাকতে শুরু করেছে বলে মনে  (এম নোমানআমার দেশ১২..২০১১)

ঊইলিয়াম কেরি.টমাসরিচার্ড হলওয়েফাদার ক্লাউজ বার্লাটরবেন ভি পিটারসনআলফ্রেড বিন মন্ডল  .অলসন এর মতো লোকেরা বাংলা ভাষাভাষী জনগোষ্ঠীর মধ্যে বাইবেলের শিক্ষাকৃষ্টি  আদর্শ প্রচারের জন্য বাংলা ভাষা রপ্ত করেন। ১৭৯৩ সালে মিশনারীদের একটি শক্তিশালী দল বাংলাদেশে আসেন। মি.কেরি  মিপাওয়েল মিলে দিনাজপুরে একটি ক্ষুদ্র চার্চ প্রতিষ্ঠা করেন যা বাংলাদেশে প্রথম ব্যাপ্টিস্ট  প্রটেষ্ট্যান্ট চার্চ। মি.কেরি নতুন আঙ্গিকে বাংলা ব্যাকরণ সংশোধন করেন বং ১৮০০ সালে ইংল্যান্ড থেকে বাংলা বর্ণ মালার ছক এনে কলকাতার শ্রীরামপূর মিশন থেকে বাংলায় বাইবেল মুদ্রন  প্রচারের ব্যবস্থা করেন। ফোর্ট উইলিয়াম কলেজের বাংলা বিভাগের প্রধান হিসেবে কর্মরত বস্থায় কেরি কথোপকথন’  ইতিহাসমালা’ নামক বাংলায় দুটি গ্রন্থ রচনা করেন। ১৮৫৭ সালে সিপাহী বিপ্লবের সময় ভারতীয় উপমহাদেশে ৯০টি প্রটেস্ট্যান্ট খ্রিষ্টান মিশনারী সংস্থা কর্মরত ছিল। রোমান ক্যাথলিক চার্চের সংখ্যা এর বাইরে (মাসিক তরজমানুল কুরআনলাহোরমার্চ১৯৬১)


এদেশে প্রতিকুল পরিবেশে খ্রিষ্ট ধর্ম-সংস্কৃতির প্রচার  বিকাশে তাঁরা যে ত্যাগ  সাধনা করেন তা রীতিমত বিস্ময়ের উদ্রেক করে চন্দ্রঘোনামালুমঘাটময়মনসিংরংপুর  রাজশাহী সহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে হাসপাতাল  মাতৃসদন প্রতিষ্ঠা করে কুষ্ঠ রোগ সহ জটিল ব্যাধির চিকিৎসা  অস্ত্রোপচার চালিয়ে আসছে একটি মাত্র লক্ষ্যকে সামনে রেখেতা হলো  দেশে খ্রিষ্ট ধর্মসংস্কৃতি  ঐতিহ্যের প্রচার  প্রসার। এই  হাসপাতাল হলো মূলতঃ মানুষ ধরা ফাঁদ  ষড়যন্ত্রের নীল কুঠি। মিশনারীদের এই নিরন্তর সাধনা ব্যর্থ হয়নি। উপজাতীয় জন গোষ্ঠীর দরিদ্রতার সুযোগ নিয়ে তাদের শিক্ষা  চিকিৎসার অভাবকে পুঁজি রে খ্রিষ্টান এনজিও কর্মি  মিশনারী পাদ্রীরা দূর্গম পার্বত্য এলাকায় নীরবে-নিভৃতে ধর্মান্তরের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন।

বাংলাদেশে কর্মতৎপর এনজিও সংখ্যা ৩০ হাজার। এই দেশে বহুজাতি কোম্পানির আর্থ-রাজনৈতিক স্বার্থে এবং অসহায়নিঃস্বনিরক্ষর  প্রপীড়িত মানুষকে সেবা করা নামে ইউরোপীয় সংস্কৃতির বিকাশ  খ্রিষ্ট-ধর্মে দীক্ষিত করার অমানবিক তৎপরতায় যেসব এনজিও জড়ি রয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে.কারিতাস .এমসিসি (মেনোনাইট সেন্ট্রাল কমিটি.বাংলাদেশ লুতারা মিশন .দীপ শিখা .স্যালভেশন আর্মি .ওয়ার্ল্ড ভিশন .সিডিএস (সেন্টার ফর ডেভেলপমেন্ট সার্ভিস.আরডিআরএস (রংপুর-দিনাজপু রুরাল সার্ভিস.সিসিডিবি (খ্রিষ্টান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট১০.হিড বাংলাদেশ ১১.সেভেনথ ডে এ্যডভেঞ্চারিষ্ট ১২.চার্চ অব বাংলাদেশ ১৩.প্লান ইন্টারন্যাশনাল ১৪সুইডিস ফ্রি মিশন ১৫.কনসার্ ১৬.এডরা ১৭.অষ্ট্রেলিয়ান ব্যাপটিষ্ট সোসাইটি ১৭ফ্যামেলিজ  চিলড্রেন ১৮ফুড ফর হাংরী ইন্টারন্যাশনাল। এই সব সংস্থার বাজেটের শতকরা ৯০ ভাগ অর্থ খ্রিষ্টানদের বা খ্রিষ্টধর্মে দীক্ষিত বার সম্ভাবনাময় ব্যক্তিদের স্বার্থেনির্বাহী কর্মকর্তা  বিদেশী কনসালটেন্টের পেছনে ব্যয়িত হয়।
চার্চ অব বাংলাদেশ নামে একটি খ্রিষ্টান মৌলবাদী এনজি সংস্থা ১৯৬৫ সালে কক্সবাজারের মালুমঘাটে খ্রিষ্টান মেমোরিয়াল হাসপাতাল স্থাপন করে। স্থানীয় জনসাধারণের দরিদ্রতাঅভাব  নিরক্ষরতার সুযোগ নিয়ে হাসপাতালের পরিচালক ডাভিগা বি অলসন বিগত ৩৮ বছর যাবত খ্রিষ্ট ধর্ম প্রচারে তৎপর রয়েছেন। ১৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে অত্র এলাকায় যেখানে এক জন খ্রিষ্টানও ছিলনা সেখানে বর্তমানে  হাজার বয়স্ক নাগরিক খ্রিষ্টান হয়েছে এবং তাদের পরিবার সহ এই সংখ্যা বর্তমানে ৪০ হাজারে উন্নীত হয়েছে। মালুমঘাটের আশে পাশে জমি চড়া দামে উক্ত এনজিও কিনে নিচ্ছে ধর্মান্তরিতদের পুর্নবাসনের উদ্দেশ্যে। ইতোমধ্যে হায়দারের নাসি গ্রামের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে বিশাল গীর্জা গড়ে উঠেছে এবং অত্র এলাকায় ভিন দেশী সংস্কৃতির বিকাশ চোখে পড়ার মতো। য়েক বছর আগে মালুমঘাট হাসপাতালে ডাঅলসন ১৩টি মুসলিম পরিবারে ২৫ জন গরীব মুসলমানকে ফুসলিয়ে খ্রিষ্ট ধর্মে দীক্ষিত করার অভিযোগে সংক্ষুব্ধ শত শত স্থানীয় মানুষ হাসপাতাল আক্রমন করে এবং যেসব ঘরে ধর্মান্তর করা হতো তা জালিয়ে দেয়। বিক্ষুব্ধ জনতাকে ছত্রভঙ্গ করার চেষ্টা করলে ২০ জন পুলিশ সহ ১০০ ব্যক্তি আহত হয় (দৈনিক সংগ্রাম২৪অক্টোবর১৯৯২)

ফস্টার প্যারেন্টস ইন্টারন্যাশনাল নামক একটি এনজিও সংস্থা বাংলাদেশের ৯৬ হাজার পরিবারের একটি শিশুকে পোষ্য সন্তান হিসেবে গ্রহণ করে খ্রিষ্টান বানানোর এক ঘন্য পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। ইতঃপূর্বে ধর্মান্তরিতকরণের অভিযোগে উক্ত সংস্থাকে জাকার্তাবালি  সুদান থেকে বহিষ্কার করা য়। সেভেনথ ডে এডভানচারিষ্ট চার্ নামক একটি খ্রিষ্টান এনজিও ৮৫টি স্কুল পরিচালনা করে এবং মাধ্যমিক পর্যায়ের স্কুল বা এতিমখানায় কোন মুসলমান ছেলেকে ভর্তি রা হয় না। ভারতেও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে এই সংস্থাটির প্রতিষ্ঠান রয়েছে। উচ্চ শিক্ষা  প্রশিক্ষনের জন্য খ্রিষ্টান কর্মচারী  খ্রিষ্টান ছাত্রদেরকে সেখানে পাঠিয়ে থাকে। এই সংস্থাটি সেবা নামে বাংলাদেশের মানুষকে খ্রিষ্টান বানানোর জন্য ১৯৯০-৯১ এবং ১৯৯১-৯২ আর্থিক বছরে ২৩০ মিলিয়ন টাকা খরচ করেছে। হিড বাংলাদে নামের এনজিও মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জেঢাকাস্থ বিহারী রিফিউজি ক্যাম্পে এবং সুন্দরবনে সেবার ড়ালে খ্রিষ্ট সংস্কৃতির প্রচার  খ্রিষ্টান জনগনের উন্নয়নের জন্য বছরে  লাখ মার্কিন ডলার ব্যয় করে খ্রিষ্টান কমিশন ফর ডেভেলপমেন্ট ইন বাংলাদেশ (CCDB) জেনেভা ভিত্তিক একটি খ্রিষ্টান মিশনারী প্রতিষ্ঠান। বাংলাদেশের রিবার প্রথাসামাজিক ব্যবস্থা, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য  ধর্মীয় মূল্যবোধ ভেঙ্গে ইউরোপীয় আদলে নতু সমাজ গড়ার কর্মসূচী বাস্তবায়নে লিপ্ত। সিসিডিবির বার্ষিক . মিলিয়ন মার্র্কিন ডলার বাজেট খেকে খ্রিষ্টান জনগণ এবং ভবিষ্যতে যারা খ্রিষ্টান হবে তারাই পকৃত হয়। সিসিডিব বর্তমান মূল লক্ষ্য হচ্ছে উপজাতি  আদিবাসীদের সকল জনগোষ্ঠীর ক্ষমতায়ন স্থিতিশীল  অংশীদারিত্ব ভিত্তিক উন্নয়ন কর্মকান্ডে নারীদের কার্যকর অংশগ্রহণ নিশ্চত করার জন্য তাদের ছোট ছোট উদ্যোগকে সমর্থন দানসকল পর্যায়ে লিঙ্গ বৈষম্য দূরীকরণ ইত্যাদি। ইউরোপের কয়েকটি দেশ,অস্ট্রেলিয়া এবং মার্কি যুক্তরাষ্ট্র সহ বিশ্বের অন্যান্য দেশের দাতা সংস্থা  খ্রিষ্টান মিশনারী সংগঠন বিশেষতঃ জেনেভার ওয়ার্ল্ড কাউন্সিল অব চার্চেসব্রাড ফর দি ওয়ার্ল্ডইংল্যান্ডের খ্রিষ্টান এইডনিউজিল্যান্ডের চার্চ ওয়ার্ল্ড সার্ভিস এবং হল্যান্ডের ইন্টারন্যাশনাল চার্চ এইড ঢাকা সিসিডিবিকে অর্থ যোগান দেয়। ওয়ার্ল্ড কাউন্সিল অব চার্চেস বছরে একবার সিসিডিবি একটি গোল টেবিল বৈঠকের আয়োজন করে। (বাংলাপিডিয়া,১০ খন্ড,পৃ.১৯৮-) লুথারান ওয়ার্ল্ড ফেডারেশন অব বাংলাদেশের কর্তৃত্বাধীনে পরিচালিত একটি শক্তিশালী নজিও সংস্থার নাম রংপুর-দিনাজপু রুরাল সার্ভিস (RDRS) বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে থাকা  লাখ লুথারেন বিশ্বাসী এই সংস্থার সাথে জড়িত। নরওয়েসুইডেনডেনমার্ক  ফিনল্যান্ডের লুথারেন চার্চ এই সংস্থাকে অর্থের যোগান দেয়। মিরবেন ভি পিটারসনের নেতৃত্বে ১৯৮ সাল হতে এই সংস্থা নিরব-কৌশলে প্রায় ২১৮ কোটি ৬৯ লাখ ৯৮ হাজা ৪৭৬ টাকা ব্যয়ে বৃহত্তর দিনাজপুর  রংপুর জেলার সীমান্ত অঞ্চলের আদিবাসী  সাঁওতাল অধ্যুষি এলাকায় ধর্ম প্রচারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। সীমান্ত এলাকার বদলে দেশের অভ্যন্তরে প্রকল্প এলাকা সম্প্রসারণে সংস্থা অনাগ্রহী ১৯৮১ সালের পরিসংখ্যান অনুযায়ী একমাত্র দিনাজপুরেই ৩৫ হাজার সাঁওতাল খ্রিষ্টান হয়ে গেছে। (মুহাম্মদ নূরুজ্জামানবাংলাদেশ-এনজিও উপনিবেশবাদের দূর্ভেদ্য জালেঢাকা১৯৯৬পৃ.৬১-৭৩দৈনিক ইত্তেফাক ডিসেম্বর১৯৮১)

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...