"কওমী ও দেওবন্ধীদের পথ ভ্রষ্টতা,(অপারেশন ব্ল্যাক নাইফ)
![]() |
কওমী-দেওবন্ধীদের পথ ভ্রষ্টতা |
আজ আপনাদের দেখাব কওমী ও দেওবন্ধীদের কোন পথ ভ্রষ্টতার কারনে, কিভাবে আজও ভারতের মুসলমানরা এত নির্যাতিত হচ্ছে।
১। ভারত বর্ষের স্বাধীনতার পূর্বক্ষনে যখন মুসলিম নেতারা দেখল যে ভারতীয় কংগ্রেসের নিকট মুসলমানদের স্বার্থ ক্ষুন্ন হচ্ছে এবং হিন্দুরা আমাদের বোকা বানাচ্ছে তখন সকল মুসলমান স্কলার মুসলিম লীগ গঠন করে এবং মুসলমানদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র দাবী করে পাকিস্তান আন্দোলন শুরু করে। যদিও প্রথমেই অনেক আলেম পাকিস্তানের বর্তমান অবস্থা অনুমান করতে পেরেছিল আর তাই পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরোধীতা করেছিল কিন্তু পরবর্তীতে বৃহৎ স্বার্থের কথা ভেবে মুটামুটি সকল আলেম (একমাত্র দেওবন্দ বাদে) আপাতত পাকিস্তান আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নেন কিন্তু দেওবন্দ আলেমরা মুসলিম লীগে যোগদান না করে গান্ধী জী, বল্লভ ভাই পাতিল প্রমুখদের সাথে হিন্দু নেতৃত্বের জোট কংগ্রেসে যোগদান করে অখন্ড ভারত মাতার আন্দোলনে কাজ শুরু করে।
২। বরং তৎকালে যেসকল মুসলিম নেতারা পাকিস্তান আন্দোলনের পক্ষে কথা বলত তাদেরকে মানুষের নিকট বিভিন্ন ফতোয়া বানে জর্জরিত করে মুসলমানদের বিরাট একটা অংশকে বিভ্রান্ত করে ফেলে।( প্রমানের লিংক নিচে দেয়া হবে)
৩। যদিও এখনও দেওবন্দ ও তার সারগেদরা বলে যে তারা বস্তুবাদী রাজনীতি করে না আদতে তারা এখনো হিন্দুদের নেতৃতত্বের কংগ্রেস রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন বটে, এটানল কোন ধরনের কৌশননতারা কি বলতে পারবে?
৩। ঐ দিন যদি এই ওলামায়ে দেওবন্দ অখন্ড ভারত মাতা নামক মিথ্যা, জোৎচুরি ও কুফুরী আন্দোলনের পক্ষে কাজ না করত তাইলে হয়তো মুসলমানরা আরো বড় স্বাধীন ভুমি ব্রিটিশদের হতে নিজেদের জন্য আদায় করতে পারত এবং আরো বেশী মুসলমান নিরাপদ দেশ পেত আর আজকে বিজেপি'র এত অত্যাচার সহ্য করতে হত না।
৪। ভারতে আজ লক্ষ লক্ষ মুসলমান হিন্দুদের হাতে নির্যাতিত হচ্ছে কিন্তু এর বিরুদ্ধে ওলামায়ে দেওবন্দের অদ্যবধি কোন বক্তব্য আমরা এমনকি ভারতের মুসলমানরাও শোনতে পায়নি। ভারত এখন সরাসরি প্যালেস্টাইনের বিপক্ষে িহুদিদপর সাহায্য করছে, কিন্তু দেওবন্ধ চুপ।
৫। গান্ধীর অহিংস আন্দোলনের সময় এক হিন্দু দাঙ্গা কালীন সময়ে এক মুসলমানের হাতে মারা যায়, আর এই সুযোগে গান্ধীজি সুকৌশলে উগ্র হিন্দুদেরকে মুসলমানদের উপর লেলিয়ে দেয়, আর হিন্দুরা বর্তমানে বিজেপির মত মুসলমানদের কচুকাটা শুরু করে কিন্তু তখনও ওলামায়ে দেওবন্দ এ জুলুমের প্রতিবাদ করে নি বরং কংগ্রেসের সাথে থেকে দিল্লীর মসজিদের ইমাম অখন্ড ভারতের দোহাই দিয়ে হিন্দু-মুসলিম একজাতি তত্ব নামক কুফুরী মতবাদের পক্ষে জুমার খুতবায় বক্তব্য দেয়।
৬। এখন আসেন গুজরাটের দাঙ্গার ব্যাপারে, ঐ দাঙ্গায় হাজার হাজার মুসলমানকে পুড়িয়ে মারলো, কিন্তু এদের জন্য প্রতিবাদ তো দূরের কথা, মায়া কান্নাটুকুও দেওবন্দ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।
৭। ভারতে এন.আর.সি ও নাগরিকত্ব আইনে মুসলমানদের বাস্তু চ্যুত করার ব্যবস্থা করেছে, কিন্তু এ ব্যাপারেও তাদের কোন স্পষ্ট বক্তব্য আমরা শোনতে পাই নি।
৮। সম্প্রীতি ভারতে হিজাব আন্দোলন নিয়েও ওলামায়ে দেওবন্দ কোন প্রতিনাদ করেন নি।
৯। কাশ্মীরের উপর ভারত সরকার এমন কোন অত্যাচার নাই যে করে না, কাশ্মীরের সবাই মুসলমান হলেও ওলামায়ে দেওবন্দ তাদের জন্য একটি প্রতিবাদী বক্তব্যও প্রদান করে নি।
১০। বর্তমানে ভারতে অসম প্রদেশের প্রাদেশিক সরকার গরু জবাই নিষিদ্ধ সহ মুসলমানদের বাংলাদেশী আখ্যা দিয়ে বাস্তুহারা করছে, কিন্তু এ ব্যাপারে দেওবন্দের ওলামাদের কোন প্রতিবাদ দূরে থাক বক্তব্য টুকুও দেয় নাই।
১১। যারা ইতিহাস পড়েন তারা জানেন যে ১৯৪৮ সালে ভারত মুসলমানদের স্বাধীন ও স্বার্বভৌম হায়দারাবাদ রাষ্ট্র হঠাৎ করে দখল করে নেয়। ঐদিন ৪০,০০০(চল্লিশ হাজার) মুসলমানকে মেরে ভারতীয় হানাদার বাহিনী হায়দরাবাদের নদীতে ফেলে দিয়েছিল(প্রমান দেখুন আমার লেখা ”উপ মহাদেশে হিন্দু ধর্মের ভীতিকর ইতিহাস ও আধুনিক ভারতের সম্রাজ্যবাদীতা”)। যাদের মেরেছিল তাদের সবাই মুসলমান ও এই দেওবন্দীদের চোখে জল আসে নি, বরং ঐ খুনী কংগ্রেস সরকারের সাথে বহাল তবিয়্যতেই কংগ্রেসের অংগ সংগঠন হিসেবে চুপ ছিল, আজও আছে।( আমার লেখা " উপমহাদেশে হিন্দু ধর্মের ভীতিকর ইতিহাস ও আধুনিক ভারতের সম্রাজ্যবাদিতা, ৬ষ্ঠ পর্ব নেটে সার্চ দিয়ে পড়লে ডকুমেন্টারী সহ দেখতে পাবেন, কমেন্টে লিংক দেব)।
১২। জুনাগর ও আলীগড় নামেও দুটি মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ স্বাধীন দেশ ভারত জোর পূর্বক দখল করে নিয়েছে কংগ্রেসের নেতৃত্বে, আর তখনো ঐ কংগ্রেসে অংগ সংগঠনই ছিল এই ওলামায়ে দেওবন্দ।
১৩। বর্তমান বিশ্বের সর্বজন স্বীকৃত ইসলামী স্কলার ডা. জাকির নায়েককে ভারত সরকার সম্পূর্ন অন্যায় ভাবে দেশ ছাড়া করে তার সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে, তিনি মুসলমান হলেও তার উপর করা অত্যাচারের প্রতিবাদতো দূরে থাক বরং ডা. নায়েককে আলেম নয়, ইহুদির দালাল ইত্যাদি কুফুরী ফতোয়া দিয়ে তাকে বিতর্কীত করার চেষ্টা করেছে এই দেওবন্দী আলেমগন।
১৪। এই দেওন্ধীদের দল কংগ্রেস বাবরীর মসজিদ ভাংলো, আবার মসজিদের জায়গায় মান্দির করলো, এই বিষয়ে দেওবন্ধী আলেমরা চুপ কেনো?
১৫। ২০০৯ সালে দেবন্ধ মাদরাসায় হুসািন আহাম্মদ মাদানীর উপস্থিতিতে হিন্দু যোগী মুসলমান আলেম ছাত্রদের যোগ ব্যায়াম শিখালো, এখন প্রশ্ন হলো যোগ ব্যায়াম কি ইসলামে বৈধ? এটাতো হিন্দুদের তপস্যার আসন।
আকীদা গত সমস্যাঃ
৪. “আল্লাহর নবীর নিকট নিজের পরিণতি এবং দেয়ালের পেছনের জ্ঞানও নেই।”
[বারাহীন-ই ক্বাতি‘আহ্,পৃষ্ঠা ৫১,কৃত: খলীল আহমদ আম্বেটভী দেওবন্দী]
৫. “হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে আল্লাহ্ তা‘আলা তেমনি জ্ঞান দান করেছেন,যেমন জ্ঞান জানোয়ার,পাগল এবং শিশুদের নিকটও রয়েছে।”
[হিফযুল ঈমান,পৃষ্ঠা ৭,কৃত: মৌং আশ্রাফ আলী থানভী দেওবন্দী]।
৬. “নামাযে হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর প্রতি শুধু খেয়াল যাওয়া গরু-গাধার খেয়ালে ডুবে যাওয়া অপেক্ষাও মন্দতর।”
[সেরাতে মুস্তাক্বীম,পৃষ্ঠা ৮৬,কৃত: মৌং ইসমাঈল দেহলভী ওহাবী]।
৭. “‘রাহমাতুল্লিল ‘আলামীন’ (সমস্ত বিশ্বের জন্য রহমত) রসূলুল্লাহ্ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এঁর খাস উপাধি নয়।হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ছাড়া অন্যান্য বুযুর্গকেও ‘রাহমাতুল্লিল ‘আলামীন’ বলা যেতে পারে।”
[ফাতাওয়া-ই রশীদিয়া,২য় খণ্ড,পৃষ্ঠা-১২, কৃত মৌং রশীদ আহমদ গাঙ্গূহী দেওবন্দী]।
৮. “‘খাতামুন্নবিয়্যীন’ অর্থ ‘আখেরী বা শেষনবী’ বুঝে নেওয়া সাধারণ লোকদের খেয়াল মাত্র।জ্ঞানী লোকদের মতে এ অর্থ বিশুদ্ধ নয়।হুযূর আক্রামের যুগের পরও যদি কোন নবী পয়দা হয়, তবে হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম শেষ নবী হওয়ায় কোন ক্ষতি হবে না।”
[তাহযীরুন্নাস,পৃষ্ঠা ৩ ও ২৫, কৃত দারুল উলূম দেওবন্দ মাদরাসার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা মৌং কাসেম নানুতভী]।
৯. “হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম দেওবন্দের আলেমদের সাথে সম্পর্কের সুবাদে উর্দূ শিখতে পেরেছেন।”
[বারাহীন-ই ক্বাতি‘আহ্, পৃষ্ঠা ২৬,কৃত: মৌং খলীল আহমদ আম্বেটভী দেওবন্দী]।
১০. “নবী করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম-এঁর সম্মান শুধু বড় ভাইয়ের মতই করা চাই।”
[তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান,পৃষ্ঠা ৫৮,কৃত: মৌং ইসমাঈল দেহলভী ওহাবী] ১১. “আল্লাহ্ তা‘আলা ইচ্ছা করলে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সমকক্ষ কোটি কোটি পয়দা করতে পারেন।”
১১. আল্লাহ তায়ালা ইচ্ছা করলে মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর সমকক্ষ কোটি কোটি পয়দা করতে পারেন।
[তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান,পৃষ্ঠা ১৬,কৃত: মৌং ইসমাঈল দেহলভী ওহাবী]।
১২. নবী করিম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম মরে মাটিতে মিশে গেছেন। [তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান, পৃষ্ঠা ৫৯, কৃত মৌং ইসমাঈল দেহলভী]।
১৩. “নবী-রসূল সবাই অকেজো।”
[তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান,পৃষ্ঠা ২৯,কৃত: মৌং ইসমাঈল দেহলভী ওহাবী]
১৪। নবী প্রতিটি মিথ্যা থেকে পবিত্র ও মাসুম হওয়া বাঞ্ছনীয় নয়।
[তাক্বভিয়াতুল আকাঈদ পৃষ্ঠা ২৫ কৃত মৌং কাসেম নানুতবী]।
১৫. “নবীর প্রশংসা শুধু মানুষের মতই কর; বরং তা অপেক্ষাও সংক্ষিপ্ত কর।”
[তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান,পৃষ্ঠা ৬১,কৃত: মৌং ইসমাঈল দেহলভী]
[১।তথ্য সূত্র: আনজুমান-ই রহমানিয়া আহমাদিয়া সুন্নিয়া ট্রাষ্ট,
২।মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন। (বিএ ইন আরবি সাহিত্য ও ইসলাম শিক্ষা),
৩।(আবুল হাসান নাদভী, সীরাতে সাইয়েদ আহমাদ শহীদ এবং ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, আহলেহাদীছ আন্দোলন : উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষিতসহ,পিএইচ.ডি. থিথিস)। ]
৪।[omarfaruk.home.blog]
১৬. “বড় অর্থাৎ নবী (সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আর ছোট অর্থাৎ অন্যসব বান্দা বেখবর ও অজ্ঞ।”
[তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান,পৃষ্ঠা ৩,কৃত: মৌং ইসমাঈল দেহলভী ওহাবী]
১৭. “বড় মাখলূক অর্থাৎ নবী, আর ছোট মাখলূক অর্থাৎ অন্যসব বান্দা আল্লাহর শান বা মর্যাদার সামনে চামার অপেক্ষাও নিকৃষ্ট।”
[তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান,পৃষ্ঠা ১৪,কৃত: মৌং ইসমাঈল দেহলভী ওহাবী]
১৮. “নবীকে ‘তাগূত’ (শয়তান) বলা জায়েয।”
[তাফসীর-ই বুলগাতুল হায়রান, পৃষ্ঠা ৪৩, কৃত. মৌং হুসাইন আলী ওয়াঁভচরান ওয়ালা]
১৯. “নবীর মর্যাদা উম্মতের মধ্যে গ্রামের চৌধুরী ও জমিদারের মত।”
[তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান,পৃষ্ঠা ৬১,কৃত: মৌং ইসমাঈল দেহলভী ওহাবী]
২০. “যার নাম মুহাম্মদ কিংবা আলী তিনি কোন কিছুর ইখতিয়ার রাখেন না। নবী ও ওলী কিছুই করতে পারেন না।”
[তাক্ব্ভিয়াতুল ঈমান,পৃষ্ঠা ৪১,কৃত মৌং ইসমাঈল দেহলভী ওহাবী]
২১. “উম্মত বাহ্যিকভাবে আমলের মধ্যে নবী থেকেও বেড়ে যায়।”
[তাহযীরুন্নাস,পৃষ্ঠা ৫,কৃত: মৌং কাসেম নানুতভী]
২২. “দেওবন্দী মোল্লা হুযূর আকরাম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামকে পুলসেরাত হতে পতিত হওয়া থেকে রক্ষা করেছেন।”
[তাফসীর-ই বুলগাতুল হায়রান,পৃষ্ঠা ৮, মৌং হুসাইন আলী]
২৩. “‘লা-ইলাহা ইল্লাল্লাহ্ আশরাফ আলী রসূলুল্লাহ্’ আর ‘আল্লাহুম্মা সল্লি ‘আলা সায়্যিদিনা ওয়া নবীয়্যিনা আশরাফ আলী’ বলার মধ্যে সান্ত্বনা রয়েছে, কোন ক্ষতি নেই।”
[রিসালা-ই ইমদাদ,পৃষ্ঠা ৩৫,সফর – ১৩৩৬ হিজরি সংখ্যা
[১।তথ্য সূত্র: আনজুমান-ই রহমানিয়া আহমাদিয়া সুন্নিয়া ট্রাষ্ট,
২।মোহাম্মাদ ইস্রাফিল হোসাইন। (বিএ ইন আরবি সাহিত্য ও ইসলাম শিক্ষা),
৩।(আবুল হাসান নাদভী, সীরাতে সাইয়েদ আহমাদ শহীদ এবং ড. মুহাম্মাদ আসাদুল্লাহ আল-গালিব, আহলেহাদীছ আন্দোলন : উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ দক্ষিণ এশিয়ার প্রেক্ষিতসহ,পিএইচ.ডি. থিথিস)।
৪।[omarfaruk.home.blog]
এই পর্বে আপনাদের দেখাব কওমী ও দেওবন্ধীদের কোন পথ ভ্রষ্টতার কারনে কিভাবে আজও ভারতের মুসলমানরা এত নির্যাতিত হচ্ছে।
১। ভারত বর্ষের স্বাধীনতার পূর্বক্ষনে যখন মুসলিম নেতারা দেখল যে ভারতীয় কংগ্রেসের নিকট মুসলমানদের স্বার্থ ক্ষুন্ন হচ্ছে এবং হিন্দুরা আমাদের বোকা বানাচ্ছে তখন সকল মুসলমান স্কলার মুসলিম লীগ গঠন করে এবং মুসলমানদের জন্য আলাদা রাষ্ট্র দাবী করে পাকিস্তান আন্দোলন শুরু করে। যদিও প্রথমেই অনেক আলেম পাকিস্তানের বর্তমান অবস্থা অনুমান করতে পেরেছিল আর তাই পাকিস্তান রাষ্ট্রের বিরোধীতা করেছিল কিন্তু পরবর্তীতে বৃহৎ স্বার্থের কথা ভেবে মুটামুটি সকল আলেম (একমাত্র দেওবন্দ বাদে) আপাতত পাকিস্তান আন্দোলনের পক্ষে অবস্থান নেন কিন্তু দেওবন্দ আলেমরা মুসলিম লীগে যোগদান না করে গান্ধী জী, বল্লভ ভাই পাতিল প্রমুখদের সাথে হিন্দু নেতৃত্বের জোট কংগ্রেসে যোগদান করে অখন্ড ভারত মাতার আন্দোলনে কাজ শুরু করে।
২। বরং তৎকালে যেসকল মুসলিম নেতারা পাকিস্তান আন্দোলনের পক্ষে কথা বলত তাদেরকে মানুষের নিকট বিভিন্ন ফতোয়া বানে জর্জরিত করে মুসলমানদের বিরাট একটা অংশকে বিভ্রান্ত করে ফেলে।( প্রমানের লিংক নিচে দেয়া হবে)
৩। যদিও এখনও দেওবন্দ ও তার সারগেদরা বলে যে তারা বস্তুবাদী রাজনীতি করে না আদতে তারা এখনো হিন্দুদের নেতৃতত্বের কংগ্রেস রাজনৈতিক দলের অঙ্গ সংগঠন বটে, এটানল কোন ধরনের কৌশননতারা কি বলতে পারবে?
৩। ঐ দিন যদি এই ওলামায়ে দেওবন্দ অখন্ড ভারত মাতা নামক মিথ্যা, জোৎচুরি ও কুফুরী আন্দোলনের পক্ষে কাজ না করত তাইলে হয়তো মুসলমানরা আরো বড় স্বাধীন ভুমি ব্রিটিশদের হতে নিজেদের জন্য আদায় করতে পারত এবং আরো বেশী মুসলমান নিরাপদ দেশ পেত আর আজকে বিজেপি'র এত অত্যাচার সহ্য করতে হত না।
৪। ভারতে আজ লক্ষ লক্ষ মুসলমান হিন্দুদের হাতে নির্যাতিত হচ্ছে কিন্তু এর বিরুদ্ধে ওলামায়ে দেওবন্দের অদ্যবধি কোন বক্তব্য আমরা এমনকি ভারতের মুসলমানরাও শোনতে পায়নি। ভারত এখন সরাসরি প্যালেস্টাইনের বিপক্ষে িহুদিদপর সাহায্য করছে, কিন্তু দেওবন্ধ চুপ।
৫। গান্ধীর অহিংস আন্দোলনের সময় এক হিন্দু দাঙ্গা কালীন সময়ে এক মুসলমানের হাতে মারা যায়, আর এই সুযোগে গান্ধীজি সুকৌশলে উগ্র হিন্দুদেরকে মুসলমানদের উপর লেলিয়ে দেয়, আর হিন্দুরা বর্তমানে বিজেপির মত মুসলমানদের কচুকাটা শুরু করে কিন্তু তখনও ওলামায়ে দেওবন্দ এ জুলুমের প্রতিবাদ করে নি বরং কংগ্রেসের সাথে থেকে দিল্লীর মসজিদের ইমাম অখন্ড ভারতের দোহাই দিয়ে হিন্দু-মুসলিম একজাতি তত্ব নামক কুফুরী মতবাদের পক্ষে জুমার খুতবায় বক্তব্য দেয়।
৬। এখন আসেন গুজরাটের দাঙ্গার ব্যাপারে, ঐ দাঙ্গায় হাজার হাজার মুসলমানকে পুড়িয়ে মারলো, কিন্তু এদের জন্য প্রতিবাদ তো দূরের কথা, মায়া কান্নাটুকুও দেওবন্দ দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে।
৭। ভারতে এন.আর.সি ও নাগরিকত্ব আইনে মুসলমানদের বাস্তু চ্যুত করার ব্যবস্থা করেছে, কিন্তু এ ব্যাপারেও তাদের কোন স্পষ্ট বক্তব্য আমরা শোনতে পাই নি।
৮। সম্প্রীতি ভারতে হিজাব আন্দোলন নিয়েও ওলামায়ে দেওবন্দ কোন প্রতিনাদ করেন নি।
৯। কাশ্মীরের উপর ভারত সরকার এমন কোন অত্যাচার নাই যে করে না, কাশ্মীরের সবাই মুসলমান হলেও ওলামায়ে দেওবন্দ তাদের জন্য একটি প্রতিবাদী বক্তব্যও প্রদান করে নি।
১০। বর্তমানে ভারতে অসম প্রদেশের প্রাদেশিক সরকার গরু জবাই নিষিদ্ধ সহ মুসলমানদের বাংলাদেশী আখ্যা দিয়ে বাস্তুহারা করছে, কিন্তু এ ব্যাপারে দেওবন্দের ওলামাদের কোন প্রতিবাদ দূরে থাক বক্তব্য টুকুও দেয় নাই।
১১। যারা ইতিহাস পড়েন তারা জানেন যে ১৯৪৮ সালে ভারত মুসলমানদের স্বাধীন ও স্বার্বভৌম হায়দারাবাদ রাষ্ট্র হঠাৎ করে দখল করে নেয়। ঐদিন ৪০,০০০(চল্লিশ হাজার) মুসলমানকে মেরে ভারতীয় হানাদার বাহিনী হায়দরাবাদের নদীতে ফেলে দিয়েছিল(প্রমান দেখুন আমার লেখা ”উপ মহাদেশে হিন্দু ধর্মের ভীতিকর ইতিহাস ও আধুনিক ভারতের সম্রাজ্যবাদীতা, ১ম থেকে পর্ব ১৩”)। যাদের মেরেছিল তাদের সবাই মুসলমান হলেও এই দেওবন্দীদের চোখে জল আসে নি, বরং ঐ খুনী কংগ্রেস সরকারের সাথে বহাল তবিয়্যতেই কংগ্রেসের অংগ সংগঠন হিসেবে চুপ ছিল, আজও আছে।( আমার লেখা " উপমহাদেশে হিন্দু ধর্মের ভীতিকর ইতিহাস ও আধুনিক ভারতের সম্রাজ্যবাদিতা, ৬ষ্ঠ পর্ব নেটে সার্চ দিয়ে পড়লে ডকুমেন্টারী সহ দেখতে পাবেন, কমেন্টে লিংক দেব)।
১২। জুনাগর ও আলীগড় নামেও দুটি মুসলিম সংখ্যা গরিষ্ঠ স্বাধীন দেশ ভারত জোর পূর্বক দখল করে নিয়েছে কংগ্রেসের নেতৃত্বে, আর তখনো ঐ কংগ্রেসে অংগ সংগঠনই ছিল এই ওলামায়ে দেওবন্দ।
১৩। বর্তমান বিশ্বের সর্বজন স্বীকৃত ইসলামী স্কলার ডা. জাকির নায়েককে ভারত সরকার সম্পূর্ন অন্যায় ভাবে দেশ ছাড়া করে তার সকল সম্পদ বাজেয়াপ্ত করেছে, তিনি মুসলমান হলেও তার উপর করা অত্যাচারের প্রতিবাদতো দূরে থাক বরং ডা. নায়েককে আলেম নয়, ইহুদির দালাল ইত্যাদি কুফুরী ফতোয়া দিয়ে তাকে বিতর্কীত করার চেষ্টা করেছে এই দেওবন্দী আলেমগন।
১৪। এই দেওন্ধীদের দল কংগ্রেস বাবরীর মসজিদ ভাংলো, আবার মসজিদের জায়গায় মান্দির করলো, এই বিষয়ে দেওবন্ধী আলেমরা চুপ কেনো?
১৫। ২০০৯ সালে দেবন্ধ মাদরাসায় হুসািন আহাম্মদ মাদানীর উপস্থিতিতে হিন্দু যোগী মুসলমান আলেম ছাত্রদের যোগ ব্যায়াম শিখালো, এখন প্রশ্ন হলো যোগ ব্যায়াম কি ইসলামে বৈধ? এটাতো হিন্দুদের তপস্যার আসন।
আগের পর্ব গুলোতে আমি আপনাদের শুরু হতে অদ্যবদি ভারতের মাটিতে দেওবন্দের ভূমিকা নিয়ে বিস্তারিত বর্ননা করেছি।
এই পর্বে চেষ্টা করব যে দেওবন্দের পূর্ব পাকিস্তান ও বাংলাদেশ অংশে তাদের কর্ম তৎপরতা কেমন তা জানাতে।
আমি দেওবন্দি আলেম দের কিছু কিছু দোষ সংশোধনের উদ্দেশ্যে মুসলমানদের সামনে তুলে ধরছি, এর মানে এই নয় যে আমি ইসলামী শিক্ষা বা দেওবন্দের ঘোর বিরোধী। আবার এমনটাও না যে দেওবন্দী আলেমদের সবাই খারাপ, বরং অনেক ভাল মানুষও আছে।
বাংলাদেশে তথা তদানীন্ত পূর্ব পাকিস্তানে এই দেওবন্দিদের শাখা বা প্রতিনিধিরা হল কওমীওয়ালা বা কওমী এবং বর্তমানে হেফাজতে ইসলাম।
এখন দেখি ইসলাম এর জন্য কওমীওয়ালারা বাংলাদেশ নামক ভূখন্ডে কি কি ভুমিকা রেখেছে।
১। ১৯৪৭ থেকে ২০২২ পর্যন্ত কওমীদের ইতিহাস ঘাটলে কখনোই খোঁজে পাবেন না যে কওমীরা সম্মিলিত ভাবে দেশের জন্য, দেশের মানুষের জন্য কিংবা ইসলামের জন্য এমন কোন ভুমিকা রেখেছে।২০১৪ সাল ও তৎপরবর্তী কর্মকান্ড আলাদা প্রেক্ষিতে, তাও শেষের অংশে বলব।
২। আমরা জানি যে ১৯৪৮ সালে ভাষা আন্দোলন হয়েছিল, এতে দেশের আপামর জনতা যোগ দিলেও ইতিহাস ঘেটে কওমী ওয়ালাদের কোন সম্মিলিত ভুমিকা দেখা যায় না।
৩। ১৯৬৬ এর আন্দোলনেও তাদের কোন ভুমিকা আমরা ইতিহাসে পাইনা।
৪। ১৯৭১ সালে মহান মুক্তি যোদ্ধে কওমীওয়ালাদের কোন জোড়ালো ভুমিকা বা সম্মিলিত কোন কর্মকান্ডের ইতিহাস খোঁজে পাওয়া যায় না। বরং এই যোদ্ধে তারা চুপ থেকে নিজেদের পীঠ বাঁচিয়েছিল।
৫।এবার দেখুন বঙ্গ বন্ধুর স্বপরিবারে হত্যাকান্ড, আঃসত্তার সাহেবের ক্ষমতা দখল, মেজর জিয়ার সিপাহী বিপ্লব, এরশাদের স্বৈর শাসন ইত্যাদি কোন বিষয়েই তাদের কোন ভূমিকা নেই।
৬। কওমীরা কখনোই এদেশের মাটিতে কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ করেনি আর করবেও না। বরং ইসলামের অন্যান্য এদেশীয় দল ও কওম গুলোকে বিভিন্ন ফতোয়া বানে জর্জরিত করার মাধ্যমে জনগনকে বিভ্রন্তি ছাড়া আর কিছুই দেয় নি।
৭। কওমীদের দেখলে বুঝতে পারবেন যে তারা কখনোই ইসলামী ঐক্যের জন্য প্রচেষ্টা করেনি বরং যখনই ঐক্যের কথা হলেই বিভিন্ন আকিদার ফতোয়া দিয়ে ঐক্যকে প্রতিহত করে পেছনে ইসলাম বিদ্বেষী দলকে প্রকাশ্যে ও গোপনে সাহায্য করেছে(প্রমান ২০০৮ সালে নির্বাচনে তাদের অবস্থান)।
"কওমী ও দেওবন্ধীদের পথ ভ্রষ্টতা (অপারেশন ব্ল্যাক নাইফ) পর্ব-৬"
এ পর্বে হাক্বানী দাবীদার ও হক্বের ডিলার ব*ল*দ*কা*র বাহিনীর হাক্বানী সাইনবোর্ডের আড়ালে পথ ভ্রষ্টতা ও ফেরজায়ে বাতেলার যে চর্চাকারী তা প্রমান করব।
এ পর্যায়ে এই শিশু ব*ল*দ*কা*র কারী কওৃীদের সবচেয়ে জনপ্রিয় পীরের কিছু কুফুরী আকিদার প্রৃান দেব এবং পরবর্তীতে ক্রমান্বয়ে অন্যান্য পীরদেরও বর্ননা দপব। লেখাটি একটু দীর্ঘ হলেও প্রত্যাকটা লাইনে নতু নতুন তথ্য পাবেন।
আজ সহীহ আকিদা এবং চরমোনাই ও তাদের নিজেদের ঘোষনা মতে কুফুরী পীর দেওয়ানবাগীর কুফুরীর সাথে এই কওমীর হাক্বানী পীরের মিল দেখাব।
এ পর্বটি বুঝার জন্য একটি শব্দ চয়ন করব তা হল, অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন। অপেক্ষাকৃত সহীহ এ কারণে বলছি যে আমার মতে বর্তমানে দুনিয়ায় কোথাও ১০০% ইসলাম যেখানে প্রতিষ্ঠিত নাই সেখানে শত ভাগ সহীহ ইসলামী দল নাও পেতে পারি, এটা একান্ত আমার ব্যক্তিগত মতামত।
দেওয়ানবাগীর পীর মৃত্যুবরণ করার সাথে সাথে সোশ্যাল মিডিয়ায় তাকে নিয়ে তোলপার শুরু হয়েছিল। ইতিমধ্যে চরমোনাই পীর আকিদার দোহাই দিয়ে অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন গুলোকে ভ্রান্ত আখ্যা দিয়ে বলেছে পৃথিবীর সবাই ঐ দল গুলোর সাথে ঐক্য করলেও চরমোনাই ঐক্য করবে না।
এর প্রধান কারণ হল- অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন গুলো কখনোই চরমোনাইর আকিদা লালন করে না। আমরাও জানি বাতিলশক্তি সঠিক ইকামতে দ্বীন গুলোকে ঠেকাতে অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীনের বিপক্ষে যত দলকে মাঠে নামিয়েছে তার প্রধান দল চরমোনাই। তাই অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন সাথে চরমোনাই ঐক্য অসম্ভব বলা যেতেই পারে।
যাইহোক, চরমোনাই যেহেতু আকিদার প্রশ্ন তুলেছে এবং আমাদের অনেক লোক ধারণা করে যে, এদেশে সবচেয়ে বড় ভণ্ডপীর দেওয়ানবাগী আর বড় হক্কানী পীর চরমোনাই; সেহেতু এ দুই পীরের কতিপয় আকিদা ও কারামতির সাথে অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন আকিদা তুলে ধরা জরুরী মনে করছি।
১। দেওয়ানবাগী:
দেওয়ানবাগী পীর তার আকিদা পেশ করে বলেন, আপনারা যে মুর্শিদ ধরেছেন, আরশ মোকামে গিয়ে দেখবেন সেই (দেওয়ানবাগী) মুর্শিদই বসা। অর্থাৎ দেওয়ানবাগী পীরই আল্লাহ বা আল্লাহর সমকক্ষতা অর্জন করেছে। (নাউযূবিল্লাহ)
চরমোনাই:
চরমোনাই এই সমকক্ষতা অর্থাৎ "আনাল হক" আমি খোদা- হওয়ার ক্ষমতা বহু দিন আগেই অর্জন করেছেন। (আশেক মাশুক বা এস্কে এলাহী, পৃঃ ৪১-৪৩)
এছাড়াও চরমোনাই আল্লাহর নিকট থেকে জোরপূর্বক রূহ ছিনতাই করার ক্ষমতা অর্জন করেছেন। (ভেদের মারেফাত বা ইয়াদে খোদা পৃঃ ১৫) অর্থাৎ চরমোনাই আকিদা হল- শক্তির দিক দিয়ে চর্মনাই আল্লাহরও এক ধাপ উপরে। আল্লাহকে চর্মনাই পীরগং পরাজিত করতে সক্ষম (নাউযূবিল্লাহ)।
অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীনের আকিদা হল-
ﻭَﻣَﺎ ﻛَﺎﻥَ ﺍﻟﻠَّﻪُ ﻟِﻴُﻌْﺠِﺰَﻩُ ﻣِﻦْ ﺷَﻲْﺀٍ ﻓِﻲ ﺍﻟﺴَّﻤَﺎﻭَﺍﺕِ ﻭَﻟَﺎ ﻓِﻲ ﺍﻟْﺄَﺭْﺽِ ۚ ﺇِﻧَّﻪُ ﻛَﺎﻥَ ﻋَﻠِﻴﻤًﺎ ﻗَﺪِﻳﺮًﺍ.
আল্লাহ তো এমন নন যে, আসমান ও জমিনের কোন কিছু তাকে অক্ষম বা পরাজিত করে দেবে। নিশ্চয় তিনি সর্বজ্ঞ, সর্বশক্তিমান। (সূরা ফাতিরঃ৩৫/৪৪)।
অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীনের আকিদাও তাই।
.
২। দেওয়ানবাগী:
দেওয়ানবাগী পীর সরাসরিভাবে আল্লাহর সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করে কথাবার্তা বলার দাবী করে থাকে।
চরমোনাই:
চরমোনাই পীরেরা আল্লাহর সাথে দেখা-সাক্ষাৎ করেই ক্ষান্ত হয় না বরং তারা আল্লাহর সাথে নাকি মিলন দেয় সেভাবে উত্তেজিত হয়ে, যেভাবে তারা স্ত্রী মিলনের সময় উত্তেজিত হয়। (নাউযূবিল্লাহ) (ভেদে মারেফাত বা ইয়াদে খোদা পৃঃ ৬৯)
অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীনের আকিদা হল-
مَا لَهُمْ بِهِ مِنْ عِلْمٍ وَلَا لِآبَائِهِمْ ۚ كَبُرَتْ كَلِمَةً تَخْرُجُ مِنْ أَفْوَاهِهِمْ ۚ إِنْ يَقُولُونَ إِلَّا كَذِبًا.
এ ব্যাপারে তাদের কোন জ্ঞান নেই এবং তাদের পিতৃপুরুষদেরও না। বড় মারাত্মক কথা, যা তাদের মুখ থেকে বের হয়। মিথ্যা ছাড়া তারা কিছুই বলে না! (সূরা কাহ্ফঃ১৮/৫)।
অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন আরো বিশ্বাস করে,
سُبْحَانَ رَبِّكَ رَبِّ الْعِزَّةِ عَمَّا يَصِفُونَ.
তারা যা ব্যক্ত করে তোমার রব তা থেকে পবিত্র মহান, সম্মানের মালিক। (সূরা সাফফাতঃ৩৭/১৮০)।
অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীনের আকিদাও তাই।
৩।দেওয়ানবাগী:
দেওয়ানবাগী পীরের আকিদা তিনি তার মুরীদের জন্য সুপারিশকারী।
চরমোনাই:
চোরমনাই আকিদা হল- চরমোনাই পীর গং যাকে খুশী তাকে জান্নাতে নিয়ে যাবে। এমন কি কাফন চোরকেও চরমোনাই পীরেরা জান্নাতে নিয়ে যেতে পারে। (ভেদে মারেফাত বা ইয়াদে খোদা পৃঃ ২৭-২৮)
অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন আকিদা হল:
এ অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন আকিদা বিশ্বাস সেটাই যেটি আল্লাহ তা'আলা বলেছেন,
وَاتَّقُوا يَوْمًا لَا تَجْزِي نَفْسٌ عَنْ نَفْسٍ شَيْئًا وَلَا يُقْبَلُ مِنْهَا شَفَاعَةٌ وَلَا يُؤْخَذُ مِنْهَا عَدْلٌ وَلَا هُمْ يُنْصَرُونَ.
আর তোমরা সে দিনকে ভয় কর, যেদিন কেউ কারো কোন কাজে আসবে না। আর কারো পক্ষ থেকে কোন সুপারিশ গ্রহণ করা হবে না এবং কারও কাছ থেকে কোন বিনিময় নেয়া হবে না। আর তারা সাহায্যপ্রাপ্তও হবে না। (সূরা বাকারাঃ ২/৪৮)
তবে আল্লাহ তা'য়ালা যাকে অনুমতি দিবেন, তিনি সুপারিশ করতে পারবেন। (বাকারাঃ ২/২৫৫)
৪।দেওয়ানবাগী:
দেওয়ানবাগী তার মুরীদদের জান্নাতে নেওয়ার লোভ দেখালেও কিয়ামতের ময়দানে বড় বড় জাহাজে করে তার মুরীদদের জান্নাতে নেওয়ার আকিদা তার দরবারে প্রতিষ্ঠা করতে পারেনি।
চরমোনাই:
চোরমোনাই আকিদা হল- কিয়ামতের ময়দানে কঠিন মসিবতের সময় যখন নবী রাসূলগণ পর্যন্ত নাফসি নাফসি বলতে থাকবে তখন চরমোনাইর পীরেরা বড় বড় জাহাজে করে মুরীদদের জান্নাতে নিয়ে যাবে।
অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন আকিদা হল:
এ বিষয়ে অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীনের পরিষ্কার আকিদা বিশ্বাস সেটাই যা কুরআনে বর্ণিত হয়েছে,
أَمْ حَسِبْتُمْ أَنْ تَدْخُلُوا الْجَنَّةَ وَلَمَّا يَعْلَمِ اللَّهُ الَّذِينَ جَاهَدُوا مِنْكُمْ وَيَعْلَمَ الصَّابِرِينَ وَلَمَّا يَأْتِكُمْ مَثَلُ الَّذِينَ خَلَوْا مِنْ قَبْلِكُمْ ۖ مَسَّتْهُمُ الْبَأْسَاءُ وَالضَّرَّاءُ وَزُلْزِلُوا حَتَّىٰ يَقُولَ الرَّسُولُ وَالَّذِينَ آمَنُوا مَعَهُ مَتَىٰ نَصْرُ اللَّهِ ۗ أَلَا إِنَّ نَصْرَ اللَّهِ قَرِيبٌ.
তোমরা কি মনে করেছ যে, তোমরা এমনি এমনি (যেমন- পীর ধরে জাহাজে চড়ে) জান্নাতে প্রবেশ করবে? অথচ এখনো তোমাদের নিকট তাদের মত কিছু আসেনি, যারা তোমাদের পূর্বে বিগত হয়েছে। তাদেরকে স্পর্শ করেছিল কষ্ট-নির্যাতন ও দুঃখ-দুর্দশা এবং তারা (জালিমের নির্যাতনে) কম্পিত হয়েছিল। এমনকি রাসূল ও তার সাথি মুমিনগণ বলছিল, ‘কখন আল্লাহর সাহায্য আসবে’? জেনে রাখ, নিশ্চয় আল্লাহর সাহায্য নিকটবর্তী। (সূরা বাকারাঃ২/২১৪)
সংক্ষিপ্ত আলোচনায়, এ কথা পরিষ্কার হয়েছে দেওয়ানবাগী চোরমনাই পীরদের সাথে অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীনের আকিদার অনেক তফাৎ রয়েছে।
অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন এসব ভণ্ডপীরের শিরকি ও কুফুরী আকিদা বিশ্বাস করা তো দূরের কথা বরং তা ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করে এবং কুরআন সুন্নাহর আলোকে প্রতিষ্ঠিত আকিদা লালন করে।
আজব ব্যাপার হল- যাদের আকিদা শিরক কুফুরীতে ভরা তারা অগ্রগামী ও বর্তমান প্রেক্ষিতে অপেক্ষাকৃত সহীহ ইক্বামতে দ্বীন গুলোর আকিদার বিরুদ্ধে কথা বলে। বস্তুত তারা অর্থের লোভে বাতিলশক্তির এজেন্ট হয়ে আল্লাহর দ্বীন বিজয়ের পথে বাধা দান করে।
আল্লাহ তা'আলা তাদের ব্যাপারে মুমিনদের সতর্ক করে বলেন,
یٰۤاَیُّهَا الَّذِیْنَ اٰمَنُوْۤا اِنَّ كَثِیْرًا مِّنَ الْاَحْبَارِ وَ الرُّهْبَانِ لَیَاْكُلُوْنَ اَمْوَالَ النَّاسِ بِالْبَاطِلِ وَ یَصُدُّوْنَ عَنْ سَبِیْلِ اللّٰهِ١ؕ وَ الَّذِیْنَ یَكْنِزُوْنَ الذَّهَبَ وَ الْفِضَّةَ وَ لَا یُنْفِقُوْنَهَا فِیْ سَبِیْلِ اللّٰهِ١ۙ فَبَشِّرْهُمْ بِعَذَابٍ اَلِیْمٍۙ
হে ঈমানদারগণ! এ আহলে কিতাবদের অধিকাংশ আলেম ও দরবেশের অবস্থা হচ্ছে এই যে, তারা মানুষের ধন-সম্পদ অন্যায় পদ্ধতিতে খায় এবং তাদেরকে আল্লাহর পথ থেকে ফিরিয়ে রাখে। যারা সোনা রূপা জমা করে রাখে এবং তা আল্লাহর পথে ব্যয় করে না তাদেরকে যন্ত্রণাময় আযাবের সুখবর দাও।
(সূরাঃতাওবা, আয়াতঃ৩৪)।
অর্থাৎ এ জালেমরা শুধু ফতোয়া বিক্রি করে, ঘুষ খেয়ে এবং নজরানা লুটে নিয়েই ক্ষান্ত হয় না। এ সঙ্গে তারা এমন সব ধর্মীয় নিয়ম-কানুন ও রসম-রেওয়াজ উদ্ভাবন ও প্রবর্তন করে যেগুলোর সাহায্যে লোকেরা তাদের কাছ থেকে নিজেদের পরকালীন মুক্তি কিনে নেয়। তাদের উদর পূর্তি না করলে লোকের জীবন-মরণ বিয়ে-শাদী এবং আনন্দও বিষাদ কোন অবস্থাই অতিবাহিত হতে পারে না। তারা এদেরকে নিজেদের ভাগ্য ভঙ্গা-গড়ার একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী মনে করে। উপরন্তু নিজেরদের এমনসব স্বার্থ উদ্ধারের মতলব তারা আল্লাহর বান্দাদেরকে গোমরাহীতে লিপ্ত করে রাখে। যখনই কোন সত্যের দাওয়াত সমাজের সংশোধনের উদ্দেশ্যে এগিয়ে আসে তখনই সবার আগে এরাই নিজেদের জ্ঞানীসুলভ প্রতারণা ও ধান্দাবাজীর অস্ত্র ব্যবহার করে তার পথ রোধ করে দাঁড়ায়।
আজ এই কওমে লূতের অভিশপ্ত সমকামী ও শিশু বলাদকার কারী এই চরিত্রহীন দেওবন্ধী ও কওমীদের চরিত্র যেন আজ সূরাহ তাওবার ৩৪ নং আয়াতের সাথে মিলে যাচ্ছে।