রক্তাক্ত জুলাই ২৪ আন্দোলন পরবর্তীতে সাবেক স্বৈরাচারী পলাতক শেখ হাসিনা পালানোর পর এ পর্যন্ত যে কোনো ভোটের জরিপে বিএনপি বর্তমানে প্রথম স্থানে আছে, কিন্তু এই জরিপের পরিসংখ্যান দেখে যদি দলটি অতিরিক্ত আত্মতুষ্টি ও নির্বুদ্ধিতার পরিচয় দেয় তাইলে ধ্বংশ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা আছে।
ভোটের জরীপে বিগত ১৫ বছরে বিএনপি সবার আগে এগিয়ে আছে।কিন্তু ভোটের মাঠ সব সময় এক থাকে না, এটা পরিবর্তন হতে ২৪ ঘন্টাই যথেষ্ট। এখন যেহেতু স্বৈরাচার পালিয়েছে সেহেতু বিএনপি আর জামায়াতই মূখ্য দল। এই দুই দলের মধ্যে ভোটের ব্যধান বিশাল। কিন্তু সাংগঠনিক মজবুতির দিকে তাকালে বাংলাদেশ জামায়াত বিএনপি হতে অনেক এগিয়ে। বিএনপি যে ভোটের পাওয়ার দেখাচ্ছে সেটা পরিবর্তনশীল কিন্তু জামায়াত ভোটে এগিয়ে না থাকলেও সাংগঠনিক মজবুতিতে হাজার গুন এগিয়ে। জামায়াত শুধু নিজেদের সাংগঠনিক মজবুতির উপর ভরসা করেই বসে নেই,সেই সাথে তারা তাদের বেশ কয়েকটি শক্তিশালী প্রক্সি দলও ইতিমধ্যে মাঠে নামিয়েছে। এই প্রক্স গুলো জামায়াতের ভোট ব্যাংক হিসাবে কাজ করবে এবং দিন দিন জামায়াতের ভোট বাড়ানোর জন্য তারা কাজ করেই যাচ্ছে।
কিন্তু এই মুহূর্তে নিশ্চিত ক্ষমতায় যাওয়ার উজ্জল আলোতে বিএনপি এখন বিভোর। আর এই বিভোরতায় বিএনপি বর্তমানে বেশ কয়েকটি মারাত্মক ভুল করে যাচ্ছে।এগুলো হলো,
১। পরাজিত আওয়ামিলীগ এর নিষিদ্ধের বিষয়ে সরাসরি বিরোধিতা করা।
২। ইসকনের বিষয়ে মাখামাখি।
৩। ছাত্রলীগ নিষিদ্ধকরণের বিরোধী বক্তব্য।
৪। মির্জা ফখরুলের ভারত প্রীতি মনোভাব প্রকাশ্যে আনা।
৫।চট্রগ্রামে ইসক কর্তৃক আইন জীবি হত্যার পর ইসকনের পক্ষে পরোক্ষ ওকলাতি।
৬।বিভিন্ন স্থানে চাঁদাবাজি বন্ধ না করতে পারা, দখল বানিজ্য শুরু করা ইত্যাদি।
৭। চুপ্পুকে অপসারনের বিরোধিতা করা।
৮। আহত ছাত্রলীগের বাসায় উচ্চ পর্যায়ের নেতা পাঠানো।
বিএনপি বর্তমানে যে বিষয়টি অনুধাবন করতে ব্যর্থ:
১।বিএনপির সব চেয়ে বড় ব্যর্থতা বিগত ১৬ বছরে তাদের সাংগঠনিক দূর্বলতা। এরা এটা একবারও ভাবে না যে এ পর্যন্ত একটি সফল আন্দোলন করতে পারে নি তারা বিএনপি শুধু মাত্র তাদের নিজেদের দলে থাকা আওয়ামিলীগ ও ভারতের দালালদের জন্য।
২। রক্তাক্ত জুলাই আন্দোলন যদিও সকল দলের অংশ গ্রহনের ফল, তথাপিও এখানে বিএনেির অংশ গ্রহন এমন কোনো পর্যায়ের না যে তারা এই আন্দোলনের কৃতিত্ব ও আন্দোলন পরবর্তী জনশক্তি তারা তাদের নিজেদের জন্য কাজে লাগাতে পারবে। বরং এই রক্তাক্ত জুলাই ২০২৪ এর মূল সংগঠক জামায়াত ও তাদের ছাত্র সংগঠন ছাত্র শিবির।
৩। জুলাই আন্দোলনের মূল মোটিভ হলো আওয়ামিলীগ তথা স্বৈরাচার হটানো। এটা বিএনপির একটি ব্যর্থ এজেন্ডাকে জামায়াত কৌশলে ছাত্র জনতাকে দিয়ে করিয়েছে। এখনও বাংলাদেশে রাজনৈতিক শক্তির মূল প্রবাহ আবর্তন হচ্ছে চরম আওয়ামিলীগ ও ভারত বিরোধিতার মধ্য দিয়েই। এমতাবস্থায় আওয়ামিলীগ ও ভারতের দালালী করলে জনগন বিএনপির প্রতি নাখোশ হবে এটাই স্বাভাবিক।
৪। বাংলাদেশে চলছে ইসকন নিষিদ্ধের দাবী, আওয়ামিলীগ ব্যতীত ১০০% মুসলমানের দাবী ইসকন নিষিদ্ধকরণ। কিন্তু বিএনপি এ সময়ও ইসকনের মত সন্ত্রাসী সংগঠনের পক্ষে কথা বলে নিজেদের দালাল হিসাবে জনগনের নিকট উপস্থাপন করছে যা ভোটের মাঠে ব্যাপক পরিবর্তন আনবে।
৫।যে আওয়ামীলীগ বিরোধিতা ছাত্র জনতাকে হাসিনা হঠানোর জন্য শক্তি যুগিয়েছে সেই আওয়ামিলীগ প্রীতি, হাসিনা প্রীতি ও ভারত এবং হিন্দুত্ববাদ প্রীতি ছাত্র জনতার ঐক্যকে বিএনপির বিরোদ্ধে দাঁড় করাতে ১ সেকেন্ডও সময় লাগাবে না এটা বুঝতে পারছে না ফখরুলরা।
৬। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে রাজনীতির মাঠে আলেম সমাজ ও ইসলামি শক্তি একটি বিরাট নিয়ামক, কিন্তু এই ইসলামি শক্তির গুরুত্ব বুঝতে বিএনপি ব্যর্থ, আর এই ব্যর্থতা বিএনপির জন্য একদিন কাল হয়ে দাঁড়াবে।
উপরে আলোচিত সকল নির্বুদ্ধিতা ও আত্মতুষ্টি বিএনপিকে ধ্বংশের দিকে নিয়ে যাবে।
সত্য কথা।
উত্তরমুছুন