মানবাধিকারের কিছু পরিভাষা
![]() |
মানবাধিকারের কিছু পরিভাষা |
ভুমিকাঃ
মানুষ হিসেবে একজন ব্যক্তি যে অধিকার, সম্মান ও নিরাপত্তা লাভ করে তাই মানবাধিকার। মৌলিক অধিকারই মানবাধিকারের ভিত্তি। যেকোনো ধরনের জুলুম, নির্যাতন ও শোষণের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসেবে মানবাধিকারের ধারণা বিকাশ লাভ করেছে। মানবাধিকার বর্তমানে বিশ্বমানবতা ও সভ্য সমাজ কর্তৃক স্বীকৃত অধিকার। অবাধ ও মুক্ত চিন্তা, মত প্রকাশ ও প্রতিবাদের অধিকার মানবাধিকারের মূলকথা। মানবাধিকার মৌলিক অধিকার থেকে লাভ করলেও এর বিস্তৃতি বিশ্বব্যাপী। মৌলিক অধিকার রাষ্ট্রীয় সংবিধানে সন্নিবেশিত এবং রাষ্ট্রীয় পরিমণ্ডলেই এর তাৎপর্য সীমাবদ্ধ। কিন্তু মানবাধিকার বিশ্বব্যাপী পরিব্যাপ্ত এবং যেকোনো রাষ্ট্রীয় জুলুমের বিরুদ্ধেও মানবাধিকার সংস্থা সোচ্চার হতে পারে। তবে মৌলিক অধিকারের মত মানবাধিকার বলবৎ করা সম্ভব হয় না। অবশ্য ১৯৪৮ সালের ১০ই ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মৌলিক মানবিক অধিকারসমূহ ঘোষিত ও গৃহীত হওয়ায় এগুলো তাৎপর্যপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এই মানবাধিকারগুলের মধ্যে ব্যক্তিগত, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় অধিকারকে পরিপূর্ণরূপে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে।
মানবাধিকারের সংজ্ঞাঃ
মানুষই সবকিছুর পরিমাপক এই ধারণা থেকেই মানবাধিকারের জন্ম। বিশ্ব মানবতার সদস্য হিসেবে জাতি, ধর্ম ও বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ তার ব্যক্তিত্ব বিকাশ ও আত্মোপলব্ধির জন্য যে সমস্ত সুযোগ সুবিধা দাবী করতে পারে তাকে মানবাধিকার বলে। মানুষ হিসেবে একজন ব্যক্তি যে সম্মান, শ্রদ্ধা, অধিকার ও নিরাপত্তা লাভ করে তাই মানবাধিকার। মানবাধিকারের বলে একজন মানুষ তার নিজ রাষ্ট্রের স্বৈরাচারী নিপীড়নের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক মানবতা কর্তৃক নিরাপত্তা লাভ করতে পারবে। ১৯৪৮ সালের ১০ই ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মৌলিক মানবাধিকারসমূহ ঘোষিত ও গৃহীত হয়।
মানবাধিকারের ব্যাখ্যা ও স্বরূপ বিশ্বসংস্থা কর্তৃক ঘোষিত ও স্বীকৃত অধিকারসমূহ মানবাধিকার হিসেবে চিহ্নিত। কাজেই নাগরিক অধিকার এবং মানবাধিকারের বৈশিষ্ট্য ও স্বরূপ পৃথক। নাগরিক অধিকার ব্যক্তির সেই অধিকার যা রাষ্ট্রীয় পরিমণ্ডলে সীমিত। অপরপক্ষে মানবাধিকার সমাজ, রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে স্বীকৃত। মানবাধিকারবলে কোন ব্যক্তি তার নিজ রাষ্ট্রে নিরাপদ মনে না করলে অন্য রাষ্ট্রে আশ্রয় নিতে পারে। একজন কবি, সাহিত্যিক বা দার্শনিক তার মতাদর্শ প্রকাশের কারণে নিজ রাষ্ট্রে নিগৃহীত হলে অন্য রাষ্ট্রে আশ্রয় প্রার্থনা করতে পারেন এবং মানবাধিকারের কারণে আশ্রয় পেতেও পারেন। একজন মহিলা স্বামী কর্তৃক নিগৃহীত হলে বা কোন শ্রমিক বা বাড়ির কাজের ছেলে বা মেয়ে গৃহস্বামী কর্তৃক অত্যাচারিত হলে মানবাধিকার সংস্থা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ এবং তাকে নিরাপদ করার জন্য এগিয়ে আসতে পারে। মানবাধিকার বলে একজন শ্রমিককে নির্ধারিত সময়ের বেশি কাজ করতে বাধ্য করা যাবে না। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা কর্তৃক প্রণীত বিধিসমূহ সাপেক্ষে একজন শ্রমিক মজুরী, মর্যাদা ও নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকারী হবে।
মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকারের সম্পর্কঃ মৌলিক অধিকার বলতে সেই অধিকার বুঝায় যা সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংবিধানে সন্নিবেশিত ও বলবৎযোগ্য। রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যেই মৌলিক অধিকার উপভোগযোগ্য। অপরপক্ষে মানবাধিকার আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক ঘোষিত ও গৃহীত এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উপভোগযোগ্য। সংবিধান কর্তৃক গৃহীত হওয়ার ফলে মৌলিক অধিকার সুস্পষ্ট এবং অধিকতর দৃঢ়তার সাথে বলবৎযোগ্য । কিন্তু মানবাধিকার সুস্পষ্ট হলেও দৃঢ়তার সাথে বলবৎযোগ্য নয়। কোন রাষ্ট্র তার কোন নাগরিককে নিগৃহীত করলে সেই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করা গেলেও তাকে বিরত করা সব সময় সম্ভব হয় না। এসব এগিয়ে আসতে পারে। মানবাধিকার বলে একজন শ্রমিককে নির্ধারিত সময়ের বেশি কাজ করতে বাধ্য করা যাবে না। আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা কর্তৃক প্রণীত বিধিসমূহ সাপেক্ষে একজন শ্রমিক মজুরী, মর্যাদা ও নিরাপত্তা পাওয়ার অধিকারী হবে।
মৌলিক অধিকার ও মানবাধিকারের সম্পর্কঃ মৌলিক অধিকার বলতে সেই অধিকার বুঝায় যা সার্বভৌম রাষ্ট্রের সংবিধানে সন্নিবেশিত ও বলবৎযোগ্য। রাষ্ট্রীয় সীমানার মধ্যেই মৌলিক অধিকার উপভোগযোগ্য।
অপরপক্ষে মানবাধিকার আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক ঘোষিত ও গৃহীত এবং আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উপভোগযোগ্য। সংবিধান কর্তৃক গৃহীত হওয়ার ফলে মৌলিক অধিকার সুস্পষ্ট এবং অধিকতর দৃঢ়তার সাথে বলবৎযোগ্য। কিন্তু মানবাধিকার সুস্পষ্ট হলেও দৃঢ়তার সাথে বলবৎযোগ্য নয়। কোন রাষ্ট্র তার কোন নাগরিককে নিগৃহীত করলে সেই রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করা গেলেও তাকে বিরত করা সব সময় সম্ভব হয় না। এসব পার্থক্য থাকলেও এরা একে অপরকে প্রভাবিত করে। মৌলিক অধিকারের ধারণা থেকেই মানবাধিকারের সৃষ্টি। অপরপক্ষে মৌলিক মানবাধিকারসমূহ রাষ্ট্রের অভ্যন্তরে মৌলিক অধিকারের কামনাকে বেগবান করে। তাই এরা একে অপরের পরিপূরক।
মানবাধিকার ও আর্থ-সামাজিক সাম্যঃ
মানবাধিকার আর্থ-সামাজিক সাম্যের ভিত্তি রচনা করে। খাদ্য, বস্ত্র, বাসস্থান, শিক্ষা ও চিকিৎসার মত মৌলিক অধিকারগুলো মানবাধিকারের আওতাভুক্ত হওয়ায় বিশ্বের সকল নাগরিকের ন্যূনতম চাহিদা পূরণের আকুতি অগ্রাধিকার লাভ করেছে। এগুলো প্রতিষ্ঠা করতে পারলে অর্থনেতিক ও সামাজিক বৈষম্য দূর হবে। যেকোনো পেশা গ্রহণ, উপযুক্ত পারিশ্রমিক লাভ, কর্মের অনুকূল শর্তাদি লাভের অধিকার এবং অসুস্থতা, অসামর্থ ও দৈব দুর্বিপাকে সামাজিক নিরাপত্তা লাভের অধিকারের ব্যবস্থা করে মানবাধিকার আর্থ-সামাজিক সাম্যের ভিত্তি রচনা করেছে।
জাতিসংঘ স্বীকৃত মৌলিক মানবাধিকার ও মানবাধিকার সংক্রান্ত সাধারণ নীতিঃ
১৯৪৮ সালের ১০ই ডিসেম্বর জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে মৌলিক মানবাধিকারসমূহ ঘোষিত ও গৃহীত হয়। জাতিসংঘের সনদে উল্লেখ করা হয়েছে যে জাতি, ধর্ম, বর্ণ ও ভাষা নির্বিশেষে সকল মানুষের স্বাধীনতাকে সমুন্নত করতে হবে। মৌলিক মানবাধিকারের ঘোষণা জাতিসংঘের লক্ষ্যকে বাস্ত বায়িত করার এক মহান ও বলিষ্ঠ পদক্ষেপ। জাতিসংঘের সকল সদস্যরাষ্ট্র একক ও যৌথ প্রচেষ্টায় এই অধিকারগুলোকে বাস্তবায়িত করতে বদ্ধপরিকর।
জাতিসংঘের ঘোষণায় বর্ণিত মৌলিক মানবাধিকারের নীতিসমূহ নিরূপ :
(১) সকল মানুষই জন্মগতভাবে স্বাধীন, সম অধিকার ও সমমর্যাদা সম্পন্ন। সকলেই বিবেক বিবেচনার অধিকারী। সুতরাং তারা পরস্পর ভ্রাতৃত্বমূলক আচরণ করবে।
(২) এ ঘোষণায় উল্লিখিত সকল অধিকার ও স্বাধীনতা জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নারী, পুরুষ, ধনী, নির্ধন, রাজনৈতিক মতাদর্শ, পদমর্যাদা নির্বিশেষে সকলের জন্য সমভাবে প্রযোজ্য।
(৩) পৃথিবীর সব স্বাধীন, অর্ধস্বাধীন বা অ-স্বায়ত্তশাসিত রাষ্ট্রের নাগরিকবৃন্দকে তাদের দেশের রাজনৈতিক বা আন্তর্জাতিক মর্যাদা নির্বিশেষে সমদৃষ্টিতে দেখা হবে।
জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত মৌলিক অধিকার নিম্নে জাতিসংঘ কর্তৃক গৃহীত মৌলিক অধিকারসমূহ উল্লেখ করা হলঃ
(ক) ব্যক্তিগত, সামাজিক ও রাজনৈতিক অধিকারসমূহ-
(১) প্রত্যেক ব্যক্তিরই নিজের জীবন, স্বাধীনতা ও নিরাপত্তার অধিকার থাকবে। (৩নং ধারা)
(২) কাউকেও দাসত্বে আবদ্ধ রাখা যাবে না। (৪নং ধারা)
(৩) কারও প্রতি অমানুষিক নির্যাতন ও মর্যাদা হানিকর আচরণ করা যাবে না। (৫নং ধারা)
(৪) আইনের দৃষ্টিতে সকলেই সমান। (৭নং ধারা)
(৫) মৌলিক অধিকার খর্ব করা হলে আদালতে যথার্থ প্রতিকারের ব্যবস্থা করা যাবে। (৮নং ধারা)
(৬) কাউকে বিনা কারণে আটক, গ্রেফতার ও নির্বাসিত করা যাবে না। (৯নং ধারা)
(৭) প্রত্যেকেই নিরপেক্ষ সুবিচার পাওয়ার অধিকারী। (১০নং ধারা)
(৮) অপরাধ প্রমাণিত না হওয়া পর্যন্ত প্রত্যেকে নিজেকে নির্দোষ বলে দাবী করতে পারবে এবং অপরাধ সংঘটিত হওয়ার প্রাক্কালে কাউকেও অভিযুক্ত করা না হলে বা তার কাজকে অপরাধ বলে গণ্য করা না হলে তাকে শাস্তি দেওয়া যাবে না। (১১নং ধারা)
(৯) সকলের গৃহের নিরাপত্তা ও যোগযোগের গোপনীয়তার অধিকার থাকবে। (১২নং ধারা)
(১০) দেশের সর্বত্র চলাফেরা, নিজ দেশত্যাগ ও প্রত্যাবর্তন করার অধিকার সকলের থাকবে। (১৩নং ধারা)
(১১) প্রত্যেক ব্যক্তিই নির্যাতন থেকে আত্মার জন্য অন্য দেশে আশ্রয় নিতে পারবে। (১৪ নং ধারা)
(১২) জাতীয় অধিকার থেকে কাউকেও বঞ্চিত করা যাবে না। (১৫ নং ধারা)
(১৩) সকলের বিবাহের অধিকার থাকবে এবং বিবাহ বিচ্ছেদের ক্ষেত্রে নারী পুরুষের সমঅধিকার থাকবে। (১৬ নং ধারা)
(১৪) সকলের সম্পত্তির অধিকার থাকবে এবং জোরপূর্বক কাউকেই সম্পত্তির অধিকার থেকে বঞ্চিত করা যাবে না। (১৭নং ধারা)
(১৫) প্রত্যেকের চিন্তা, বিবেক ও ধর্মের স্বাধীনতা থাকবে। ( ১৮ নং ধারা)
(১৬) সকলের স্বাধীন মত প্রকাশের অধিকার থাকবে। (১৯ নং ধারা)
(১৭) সম্মিলিত হওয়ার ও সংঘ গঠনের অধিকার সকলের থাকবে। (২০নং ধারা)
(খ) অর্থনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক অধিকারসমূহঃ-
(১) প্রত্যেকের সামাজিক নিরাপত্তা লাভের অধিকার থাকবে। (২২নং ধারা)
(২) কর্মের অধিকার, যেকোনো পেশা গ্রহণ, পারিশ্রমিক লাভ এবং কর্মের উপযুক্ত শর্তাদি লাভের অধিকার সকলের থাকবে। (২৩নং ধারা)
(৩) প্রত্যেকের কর্মজীবনে বিশ্রাম, অবকাশ ও কাজের সুনির্দিষ্ট সময়সীমা লাভের অধিকারসহ বেতন ও ছুটি ভোগ করার অধিকার থাকবে। (২৪ নং ধারা)
(৪) প্রত্যেকেই তার নিজের ও পরিবারের স্বাস্থ্য ও জীবনযাত্রার উপযোগী খাদ্য, বাসস্থান ও চিকিৎসা লাভের অধিকার পাবে। এছাড়া বেকারত্ব, অসুস্থতা, অসামর্থ্য, বৈধব্য ও বৃদ্ধ বয়সে কিংবা দৈব দুর্বিপাকে পূর্ণ সামাজিক নিরাপত্তা লাভের অধিকার পাবে। মা ও শিশু বিশেষ যত্নলাভের অধিকার পাবে। (২৬নং ধারা)
(৫) প্রত্যেকের শিক্ষালাভের অধিকার থাকবে। ব্যক্তিত্বের বিকাশ ও যেকোনো কাজের যোগ্যতা অর্জনের জন্য কারিগরী ও বৃত্তিমূলক শিক্ষাসহ উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের অধিকার থাকবে। (২৬নং ধারা)
(৬) প্রত্যেকেরই তার সমাজের সকল সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের এবং শিল্প ও বিজ্ঞানের বিকাশে সুবিধা লাভের পূর্ণ অধিকার থাকবে। (২৭নং ধারা)
(গ) শেষ ধারাসমূহঃ-
জাতিসংঘের অধিকার সনদের ২৮ নম্বর থেকে ৩০ নং ধারা পর্যন্ত নাগরিক জীবনের পরিপূর্ণ বিকাশের জন্য সুস্থ ও সুশৃঙ্খলাপূর্ণ সামাজিক জীবনের প্রতি গুরুত্ব আরোপ করে নিচের ৩টি অধিকারের বর্ণনা করা হয়েছে—
(১) সন্ত্রাসের রাজত্বে বা কোলাহলপূর্ণ বিশ্বে জাতিসংঘ ঘোষিত অধিকারগুলো উপভোগ করা সম্ভব নয়, তাই সকলের জন্য সামাজিক ও আন্তর্জাতিক শৃঙ্খলার অধিকার থাকবে। (২৮নং ধারা)
(২) জাতিসংঘের আদর্শ ও উদ্দেশ্যের পরিপন্থী কোন অধিকার ও স্বাধীনতা কেউ ভোগ করতে পারবে না। (২৯নং ধারা)
(৩) অধিকার সনদে সাবধান করে দেওয়া হয়েছে যে, জাতিসংঘের ঘোষিত অধিকার ও স্বাধীনতা ধ্বংসকারী কোন রাষ্ট্র, দল বা ব্যক্তির প্রতি অধিকারের ঘোষণা আরোপ করা যাবে না। ( ৩০ নং ধারা)।
বাংলাদেশে মৌলিক অধিকারঃ
বাংলাদেশের সংবিধানে সন্নিবেশিত মৌলিক অধিকারসমূহ মানবাধিকারের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। বাংলাদেশ সংবিধানের ২৮ থেকে ৩০ অনুচ্ছেদে সাম্যের অধিকার অর্থাৎ জাতি, ধর্ম, বর্ণ, নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলের রাষ্ট্রীয় কাজে অংশ গ্রহণের অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। এই ধারাটি 'কেউ ছোট বা কেউ বড় নয়'— মানবাধিকারের এই নীতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সংবিধানের ৩১ থেকে ৩৫ অনুচ্ছেদ পর্যন্ত ধারাগুলি মানবাধিকারের ব্যক্তির জীবন ও স্বাধীনতার ধারাগুলির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ। সংবিধানের ৩৬ থেকে ৪১ অনুচ্ছেদ পর্যন্ত চলাফেরার অধিকার, সমাবেশের অধিকার সংগঠনের অধিকার, চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা, বাক-স্বাধীনতা, পেশা ও বৃত্তির স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, সম্পত্তির অধিকার, ব্যক্তিগত অধিকার প্রভৃতি মৌলিক অধিকারগুলো মৌলিক মানবাধিকারের সাথে পুরোপুরি সাম্যপূর্ণ।
উপরিউক্ত আলোচনা থেকে সুস্পষ্টভাবে বুঝা যায় যে, বাংলাদেশ জাতিসংঘের মানবাধিকারকে পুরাপুরি সম্মান ও শ্রদ্ধা করে। বাংলাদেশ তাই সর্বপ্রকারের জুলুম, নির্যাতন ও শোষণের বিরুদ্ধে সোচ্চার। বাংলাদেশ মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যথাযোগ্য ভূমিকা পালনে অঙ্গীকারাবদ্ধ।
লেখকঃচিকিৎসক,জার্নালিস্ট,আন্ তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ