"ইন্না-লিল্লাহ পড়ার ফলে দলীয় পদ হারানো কি জীবনের ব্যর্থতা না সফলতা"
আল্লামা দেলোয়ার হোসাইন সাঈদি হাফি: মৃত্যুতে এদেশের আপামর জনগন হৃদয় হতে ব্যথিত হয়েছে। শুধু জামায়াতে ইসলামী নয়, ইসলামী দলের কর্মী নয়, বরং সকল ধর্মের ও সকল মতের মানুষ ব্যথিত হয়েছে এক মাত্র এদেশের না*স্তি*ক ও মুসলিম নাম ধারী মোনাফেকরা ছাড়া। এটাই স্বাভাবিক,কেননা তাঁকে সবাই দল-মতের উর্ধ্বে রেখে শ্রদ্ধার জায়গায় স্থান দিয়েছে।একজন আলেমের প্রতি আল্লাহর জন্য ইমানদারদের মনে ভলবাসা থাকবেই।
বেশির ভাগ লোক সরাসরি দু:খ প্রকাশ করেছে, সহানুভূত দেখিয়েছে, আবার অনেকে মনে মনে কেঁদেছে। কিন্তু সবচেয়ে বেশী সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে আওয়ামীলীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের লোকদের যারা স্রেফ আল্লাহর জন্য একজন মুসলমান হিসাবে সাঈদি হুজুরের মৃত্যুতে পদ হারিয়েছে। তাঁদের যারাই প্রকাশ্যে ও ফেসবুকে ইন্না-লিল্লাহ... পড়েছে তাদের সবারই পদবী হারাতে হয়েছে।
আর সরাসরি সাঈদি ভক্তদের চেয়ে আমার মনে হয় এই আওয়ামিলীগে থেকে ইন্না লিল্লাহি.... পড়ে পদ হারানো ভাইয়েরা বেশী কষ্টে আছে। কারন তারা শুধু মাত্র একজন মুসলমানের মৃত্যুতে ধর্মীয় রীতিতে ইন্না-লিল্লাহ বলার কারণে পদ হারাতে হয়েছে। এই পদ হারানোদের পদ হারিয়েই শেষ নয়, আরো অনেক কিছু দিন দিন হারাতে হবে।
পদবী হারানো নেতা কর্মীদের চেয়েও বেশী কষ্ট ও চাপা দু:খ বুকে ধরে যারা দলের মধ্যে চুপ মেরে আছে তাদের হৃদয়ের আগুন আরো বেশী পুড়াচ্ছে।
সাঈদির ভক্তদের মনে রাখতে হবে যে সাঈদিকে শুধু আপনারাই দেশের ও ইসলামের সম্পদ মনে করেন না, সকল মুসলমানই মনে করে। তাঁর ইজ্জত কেউ কমাতে পারবে না। বরং সুখরঞ্জন বালীর বক্তব্যের পর তাঁর গ্রহন যোগ্যতা আকাশ ছুঁয়েছে।
এখন প্রশ্ন হলো যারা সাঈদী হুজুরের মৃত্যুর পর স্রেফ ইন্না লিল্লাহ বলার কারনে পদ-পদবী হারালের তারা কি পরাজিত হলেন না জিতে গেলেন? আমার নিচের প্রশ্ন গুলোর উত্তরে এই প্রশ্নের জবাব পাবেন।
১। আপনারা কি সাঈদি সাহেবকে নির্দোষ মনে করেন না দোষী ভাবেন? বিশেষ করে সুখরঞ্জন বালীর প্রকাশ্য বক্তব্যের পর।
২।আপনারা তো একজন মুসলমানের জন্য ইল্লা লিল্লাহ বলে পদ হারিয়েছেন, এটা কি হতাশার?
৩। আপনাদের সংগঠনটা তো ধর্ম নিরপেক্ষ, তো এই ধর্ম নিরপেক্ষতার মানে কি ধর্ম হীনতা না নিজ নি ধর্ম নিজের মত পালন করা?
৪। ধর্ম নিরপেক্ষতার মানে যদি নিজ নিজ ধর্ম স্বাধীন ভাবে পালন বুঝায় তাইলে আপনার ধর্মীয় স্বাধীনতা কোথায়, একজন আলেমের মৃত্যুতে ইন্না লিল্লাহি পড়ার ফলে কি পদ পদবী হরালে ধর্ম নিরপেক্ষতা বুঝায় না ধর্ম হীনতা বুঝায়?
৫।ধর্ম নিরপেক্ষতার জন্মই হয়েছে রাষ্ট্র ও আইন হতে ধর্মকে শুধু বিয়ে সাদী ও আচার অনুষ্ঠানে সীমাবদ্ধ করে মানুষকে ধমহীন জীবন ব্যবস্থা ও ইনসাফ বিহীন জীবন ব্যবস্থায় চালানোর জন্য, এটাকি আপনি সমর্থন করেন?
যাইহোক, উপরের প্রশ্নোত্তরের সারমর্ম যদি এমন হয় যে আপনার ধর্মনিরপেক্ষ সংগঠন নিজ নিজ ধর্ম পালনে আপনাকে স্বাধীনতা দেওয়ার নাম করে আপনাকে কৌশলে ধর্মহীন করছে তবে আমি বলব আপনার সংগঠন আপনাকে কুফরির দিকে নিয়ে যাচ্ছে আর নিজে অজান্তেই আপনি কুফরিকে আঞ্জাম দিয়ে যাচ্ছেন।
এতএব যারা ইন্না-লিল্লাহে ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজেউন বলে দলীয় পদ হারালেন আশা করি নিশ্চয় বুঝতে পেরেছেন যে আপনি হেরে গেছেন না বড় একটি অনিচ্ছাকৃত ভুল হতে নিজে বাঁচালেন।
সর্বশেষে বলব আপনারা এমন কোন দলের সমর্থকও হইয়েন না যারা ইসলামকে দমনের দোহাই দিয়ে বিদেশীদের স্বার্থ রক্ষায় ইসলামকে বলি দিয়ে ক্ষমতায় গিয়ে আপনাকে আমাকেও ধর্মহীন বানায়।
ডা.বশির আহাম্মদ, চিকিৎসক, জার্নালিস্ট ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ