expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

সোমবার, ৩০ ডিসেম্বর, ২০২৪

সৌদি আরবের ইসলাম বিরোধী মুনাফেকীর ইতিহাস

 সৌদি আরবের ইসলাম বিরোধী মুনাফেকীর ইতিহাস




এক.
আরব শরীফ আমি 1922 তাক তুরস্ক কি হুকুমাত থি।

যা খেলাফত-ই-ওসমানিয়া নামে পরিচিত

দুই.

বিশ্বে যখন মুসলমানরা নির্যাতিত ও নির্যাতিত ছিল তখন তুর্কি সরকারই ছিল প্রধান।

উত্তর আমেরিকা, ব্রিটেন (ইউকে), ইউরোপ, নাসরানি বা ইহুদিদের সবচেয়ে বেশি ভয় পেলে তারা করত খেলাফত-ই-ওসমানিয়ার গল্প।

আমেরিকা ও ইউরোপ এমনই ছিল।
খিলাফত-ই-ওসমানিয়া মুসলমানদের দল

কিছুই করার নেই আমেরিকা বা ইউরোপ নে খেলাফত-ই-উসমানিয়া কি কর্মকে ধ্বংস করার ষড়যন্ত্র শুরু করেন।

আমেরিকা ও ইউরোপ ছিল প্রথম খ্রিস্টান কি আরবি ভাষায় কথা বলতেন?

তিনি যে একজন আরব তাতে কারো সন্দেহ নেই।

যারা খিলাফত-ই-উসমানিয়ার বিরুদ্ধে এবং ব্যর্থ চেষ্টা করেছে তাদের কেন বিভ্রান্ত করছেন?

এটা কি আরবি নাকি তুর্কি আজমি (গাইর আরবি)আমরা আমাদের সময়ের শাসনকে কিভাবে সহ্য করব কিন্তু আমরা (সে সময়ের আরব সুন্নিরা) না মানি। এই মানুষদের নাম দেওয়া হয়েছে ‘লরেন্স অফ আরাবিয়া’।

মাশুর হুয়া, (আপনি গুগলে লরেন্স অফ অ্যারাবিয়া লেখেন।) অনুগ্রহ করে অনুসন্ধান করুন।

তখন আমেরিকা আরেকটা জিনিস খেয়েছে

নাম ছিল "হেমফার",আপনি গুগলে হেমফারের জন্য অনুসন্ধান করতে পারেন।


হেমফার ইবনে আব্দুল ওয়াহাব নজদী বা আরবের একজন ডাকাত এর সাথে দেখা করেছিলেন, ডাকাতটির নাম ছিল ইবনে সৌদ।

হেমফার ইবনে সৌদকে আরবের শাসক বানিয়েছিলেন আহ্বানে প্রলুব্ধ।

ফিট ইবনে সৌদ নে মক্কা, মদিনা বা তায়েফ মে তুরস্ক কে খেলাফ জং শুরু কার দি মক্কা। মদিনা 

ইবনে সৌদ তুরস্কের সাথে মক্কা, মদীনা বা তায়েফে সংঘাত শুরু করেছিলেন। ইবনে সৌদের ডাকাত বাহিনীর হাতে মক্কা, মদীনা শরীফ বা তায়েফের লক্ষ লক্ষ মুসলমান শহীদ - তুরস্ক যখন দেখল ইবনে সৌদ আরব সেল হয়ে গেছে।

খোদ আরবের উপর শাসন করার জন্য মক্কা, মদীনা শরীফ বা তায়েফের নিরীহ মুসলমানদেরকে শহীদ করা হচ্ছে, তুরস্ক জাগতিকভাবে ঘোষণা করেছে, ‘আমরা এ পৃথিবীতে হত্যা বা নির্যাতন পছন্দ করি না।

এই মুখ নিয়ে আমরা খিলাফত-ই-উসমানিয়ার অবসান ঘটিয়ে স্বদেশে ফিরছি- ১৪০০ বছরে প্রথমবারের মতো পাল্টেছে আরব ও মুসলমানদের আন্দোলন।

ইবনে সৌদ তার নাম অনুসারে হিজাজ মুকাদ্দাসের নাম পরিবর্তন করে “সৌদিয়া” রাখেন।

জান্নাতুল বাকী বা জান্নাতুল মাআল্লার সাহাবারা রিজওয়ানুল্লাহ আজমাঈনের জামাতে বুলডোজার চালান। হারাম শরীফের জিন দরজার নাম রাখা হয়েছিল সাহাবা-ই-কেরাম বা আহলে বাইতের নামের উপর, তাদের নাম রাখা হয়েছিল আল ও সৌদ (দাকু) নামে। ইয়াহুদ ও নাসারা আরব সমাজে প্রবেশের অনুমতি পেল।

যেদিন ইবনে সৌদ আরবের বাদ-শাহ হয়েছিলেন, সেই দিনটি আমেরিকা, ইউরোপ, ব্রিটেন (ইউকে) বা অন্যান্য কাফের দেশের প্রধানমন্ত্রীরা ইবনে সৌদকে অভিনন্দন জানাতে এসেছেন। আপনি আরবদের নামে ইহুদীদের অপকর্মের কথা বলছেন, যারা সৌদি আমেরিকার ইশারায় নাচছেন বা আজ তাদের সাথে নাচছেন, আপনি ইহুদী-খ্রিস্টানদের বিশুদ্ধ ষড়যন্ত্রের কথা বলছেন-

ডাঃ. মুহাম্মদ ইকবাল তার কালামে লিখেছেন।

যারা মৃত্যুকে ভয় করে না, তাদের হৃদয় থেকে মুহাম্মদের রূহ বের করে দিতে হবে- আরবের চিন্তাধারাকে ইসলামের নতুন দিকনির্দেশনা দিতে হবে এবং পৃথিবী থেকে বের করে দিতে হবে।

রূহ-ই-মুহাম্মদ, হৃদয় থেকে বের করে দাও- আরবের চিন্তাধারা পরিবর্তন কর, ইসলামকে হিজাজ বা ইয়ামান থেকে বের করে দাও রেফারেন্স: (তারিখ-ই-নজদ-ও-হিজাজ) অথবা নিচের ভিডিওতে ওয়াহাবি ধর্মের বর্ণনা। তিনি নোট করুন:




"জান্নাতুল বাকী নিয়ে ওহাবীদের ষড়যন্ত্র "


৮ শাওয়াল ইসলামের ইতিহাসের এক শোকাবহ দিন। ৯৬ চন্দ্র-বছর আগে এই দিনে ওয়াহাবি ধর্মদ্রোহীরা পবিত্র মক্কা ও মদিনায় ক্ষমার অযোগ্য কিছু পাপাচার ও নজিরবিহীন বর্বরতায় লিপ্ত হয়েছিল।

ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যখন পবিত্র জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)’র দ্বিতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ নিষ্পাপ উত্তরসূরির পবিত্র মাজার জিয়ারত করছিলেন তখন ওয়াহাবি দুর্বৃত্তরা সেখানে ভাঙ্গচুর ও লুটপাট অভিযান চালায়এবং ওই নিষ্পাপ ইমামদের পবিত্র মাজারের সুদৃশ্য স্থাপনা ও গম্বুজগুলো মাটির সঙ্গে গুড়িয়ে দেয়। এরপর বর্বর ও ধর্মান্ধ ওয়াহাবিরা আরো কয়েকটি পবিত্র মাজারের অবমাননা করে এবং এইসব মাজারের গম্বুজ ও স্থাপনাগুলো ভেঙ্গে-চুরে ইসলাম অবমাননার ন্যক্কারজনক তাণ্ডব চালায়। এইসব মাজার ছিল বিশ্বনবী (সা.)’র ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন,সাহাবি, স্ত্রী, বংশধর ও খ্যাতনামা আলেমদের।

তৎকালীন পত্র-পত্রিকার খবর থেকে জানা যায়, সৌদি রাজা আবদুল আজিজ জান্নাতুল বাকিতে ধ্বংসযজ্ঞ চালানোর ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করে বিবৃতি দিয়েছিলেন। কিন্তু এটা যে লোক-দেখানো বিবৃতি ছিল তাতে কোনো সন্দেহ নেই। কারণ, তিনি এইসব অপরাধের সঙ্গে জড়িত কাউকে শাস্তি দেননি বা কাউকে গ্রেফতার কিংবা এ বিষয়ে তদন্ত করারও নির্দেশ দিয়েছেন বলে শোনা যায়নি। আসলে একজন ওয়াহাবি রাজা ওয়াহাবিদের সুপরিকল্পিত অপরাধযজ্ঞের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেবেন-এটা ভাবাই যায় না।

জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে এসে বিশ্বনবী (সা.) বলতেন, “ তোমাদের ওপর সালাম! হে বিশ্বাসীদের আবাসস্থল! আল্লাহ চাইলে আমরাও শিগগিরই তোমাদের সঙ্গে মিলিত হব। হে আল্লাহ, আল-বাকির (জান্নাতুল বাকি কবরস্থানের) অধিবাসীদের ক্ষমা করুন।”

সুন্নি ও শিয়া সূত্রে বর্ণিত হাদিস অনুযায়ী বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) তাঁর সাহাবায়ে কেরাম ও আত্মীয়-স্বজনদের কবরে সালাম দিতেন।


বিশ্বনবী (সা.) কবর জিয়ারতের সুন্নাতকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দান করেছিলেন। সম্ভবত এর অন্যতম কারণ এটাও ছিল যে এর মাধ্যমে তিনি মুসলমানদের মধ্যে বিভেদকামী এই ওয়াহাবি-সালাফি গোষ্ঠীর মুনাফেকি বা কপট চরিত্র উন্মোচন করবেন। এই সুন্নাতের মাধ্যমে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এটা স্পষ্ট করেন যে, একটি গতিশীল ইসলামী সমাজ সবসময় তার মৃত ব্যক্তিদের স্মরণ করে যেই মৃত ব্যক্তিরা মৃত্যুর পরেও খোদায়ী রহমত পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। অন্যদিকে শহীদদের অবস্থা আরো উন্নত। স্বয়ং মহান আল্লাহ বলেছেন,

‘যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়েছে তাদের তোমরা মৃত ভেবো না, বরং তারা জীবিত এবং তাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে জীবিকা-প্রাপ্ত।’ (সুরা আলে ইমরান-১৬৯)

অন্য একটি আয়াত হতে জানা যায় এই বিশেষ জীবন (বারজাখের জীবন) শুধু শহীদদের জন্যই নয়, বরং আল্লাহর সকল অনুগত ও সৎকর্মশীল বান্দার জন্য নির্ধারিত।

মহান আল্লাহ্ বলেছেন :

‘যারা আল্লাহ্ ও তাঁর প্রেরিত পুরুষের আনুগত্য করবে তারা সেই সব ব্যক্তির সঙ্গে থাকবে নবীগণ, সত্যবাদিগণ, শহীদগণ ও সৎকর্মশীলদের মধ্য হতে যাদের তিনি নিয়ামত দিয়েছেন। তারা কতই না উত্তম সঙ্গী!’ (সুরা নিসা-৬৯)

বিশ্বনবী (সা.)’র জন্য এটা কতই না হৃদয় বিদারক যে তাঁর প্রিয় আহলে বাইত, সাহাবি ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনের মাজারগুলো গুড়িয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে! জান্নাতুল বাকি কোনো সাধারণ কবরস্থান নয়। এখানে রয়েছে অন্তত সাত হাজার সাহাবির কবর। এখানে রয়েছে বিশ্বনবী (সা.)’র ফুপি বা পিতার বোন হযরত সাফিয়া ও আতিকার কবর। এখানেই রয়েছে বিশ্বনবী (সা.)’র শিশু পুত্র হযরত ইব্রাহিম (তাঁর ওপর অশেষ শান্তি বর্ষিত হোক)-এর কবর। এই পুত্রের মৃত্যুর সময় বিশ্বনবী (সা.) অশ্রু-সজল চোখে বলেছিলেন, “চোখগুলো থেকে পানি ঝরছে এবং হৃদয় শোকাহত, কিন্তু আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি উদ্রেককারী কথা ছাড়া অন্য কিছুই বলব না। আমরা তোমার জন্য শোকাহত হে ইব্রাহিম!”


জান্নাতুল বাকি হচ্ছে সে স্থান যেখানে সমাহিত হয়েছেন বিশ্বনবী (সা.)’র চাচা হযরত আবু তালিব (রা.)’র স্ত্রী ফাতিমা বিনতে আসাদ (সালামুল্লাহি আলাইহা)। এই মহীয়সী নারী বিশ্বনবী (সা.)-কে লালন করেছিলেন নিজ সন্তানের মত স্নেহ দিয়ে এবং তাঁকে কবরে রাখার আগে বিশ্বনবী (সা.) এই মহান নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য নিজেই ওই কবরে কিছুক্ষণ শুয়েছিলেন। রাসূল (সা.) তার জন্য তালকিন উচ্চারণ করেছিলেন শোকার্ত কণ্ঠে।

জান্নাতুল বাকি হচ্ছে সেই কবরস্থান যেখানে বেহেশতী নারীদের সর্দার তথা খাতুনে জান্নাত হযরত ফাতিমা (সা.) বিশ্বনবী (সা.)’র ইন্তিকালের পর যে ৯০ দিন নিজে বেঁচে ছিলেন প্রায়ই সেখানে গিয়েই শোক প্রকাশ করতেন। যেখানে বসে তিনি শোক প্রকাশ করতেন সেই স্থানটিকে বল হল বাইতুল হুজন বা শোক প্রকাশের ঘর। একই স্থানে কারবালার শোকাবহ ঘটনার পর বিশ্বনবী (সা.)’র নাতি শহীদদের নেতা ইমাম হুসাইন (আ.) ও নিজের পুত্র হযরত আবুল ফজল আব্বাস (রা.) ’র জন্য শোক প্রকাশ করতেন মুমিনদের নেতা হযরত আলী (আ.)’র স্ত্রী উম্মুল বানিন (সা. আ.)। এখানেই মদিনাবাসী যোগ দিতেন শোক-অনুষ্ঠানে। এখানে প্রায়ই শোক প্রকাশের জন্য আসতেন ইমাম হুসাইন (আ.)’র স্ত্রী হযরত রাবাব (সা. আ.)। বিশ্বনবী (সা.)’র নাতনী ও ইমাম হুসাইন (আ.)’র বোন হযরত জয়নাব (সা. আ.) ও উম্মে কুলসুম (সা.আ.) নিয়মিত শোক প্রকাশের জন্য এখানেই আসতেন।


প্রায় ৯১ বছর আগেও জান্নাতুল বাকিতে টিকে ছিল বিশ্বনবী (সা.)’র ১২ জন নিষ্পাপ  উত্তরসূরির মধ্য থেকে তাঁর নাতি হযরত ইমাম হাসান (আ.), অন্য নাতি ইমাম হুসাইন (আ.)’র পুত্র ইমাম জয়নুল আবেদিন (আ.), তাঁর পুত্র ইমাম মুহাম্মাদ বাকির (আ.) ও বাকির (আ.)’র পুত্র ইমাম জাফর সাদিক (আ.)’র সুদৃশ্য মাজার। কিন্তু বর্তমানে এ এলাকায় টিকে রয়েছে একমাত্র বিশ্বনবী (সা.)’র মাজার। ওয়াহাবিরা বিশ্বনবী (সা.)’র পবিত্র মাজার ভাঙ্গার জন্য বেশ কয়েকবার উদ্যোগ নেয়ার পরও মুসলমানদের প্রতিরোধের মুখে ও ব্যাপক প্রতিক্রিয়ার ভয়েই তা বাস্তবায়নের সাহস করেনি।

ব্রিটিশ ও কাফিরদের সহযোগী ইহুদিবাদী চরিত্রের অধিকারী ওয়াহাবিরা কেবল মদিনায় নয় পবিত্র মক্কায়ও ইসলামের অনেক নিদর্শন ও পবিত্র মাজার ধ্বংস করেছে। এইসব মাজারের মধ্যে রয়েছে মক্কায় জান্নাতুল মোয়াল্লা নামক কবরস্থানে অবস্থিত বিশ্বনবী (সা.)’র স্ত্রী ও প্রথম মুসলমান উম্মুল মুমিনিন হযরত খাদিজা (সা. আ.)’র পবিত্র মাজার এবং বিশ্বনবী (সা.)’র পুত্র হজরত কাসেম (আ.), চাচা হযরত আবু তালিব (রা.) ও দাদা হযরত আবদুল মুত্তালিব (আ.)সহ অন্যান্য পারিবারিক সদস্যদের মাজার।

ওয়াহাবিরা মদীনায় ওহুদ যুদ্ধের ঐতিহাসিক ময়দানে বিশ্বনবী (সা.)’র চাচা শহীদদের নেতা হযরত হামজা (সা.)’র মাজারসহ অন্যান্য শহীদ সাহাবিদের মাজারও ধ্বংস করেছে।


ওয়াহাবিরা এভাবে ইসলামের ইতিহাসের নিদর্শনগুলো ধ্বংস করছে ঠিক যেভাবে বায়তুল মোকাদ্দাস শহরে মুসলমানদের পবিত্র প্রথম কেবলা এবং এর আশপাশের ইসলামী নিদর্শনগুলো ধ্বংসের চেষ্টা করছে দখলদার ইহুদিবাদীরা। ফিলিস্তিনের অনেক ইসলামী নিদর্শন ধ্বংস করেছে ইহুদিবাদীরা। অনেকেই মনে করেন ওয়াহাবিদের পৃষ্ঠপোষক সৌদি রাজবংশ (যারা তুর্কি খেলাফতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে ইংরেজদের সহায়তা করেছে এবং পুরস্কার হিসেবে হিজাজে বংশীয় রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে) ছিল একটি ইহুদিবাদী ইহুদি গোত্রেরই বংশধর। এরা মুখে মুখে মুসলমান বলে দাবি করলেও সব সময়ই ইসলামের শত্রুদের সহযোগী।

আজ থেকে প্রায় ৩০০ বছর আগে ওয়াহাবি মতবাদের প্রবক্তা আবদুল ওয়াহহাব নজদি সৌদ বংশের সহায়তা নিয়ে ইবনে তাইমিয়ার বিভ্রান্ত চিন্তাধারা প্রচার করতে থাকে। তার ভুল দৃষ্টিভঙ্গির আলোকে নজদি অলি-আওলিয়ার উসিলা দিয়ে দোয়া করা, তাদের মাজারে মানত করা ও শ্রদ্ধা জানানোসহ অলি-আওলিয়ার মাজার ও কবর জিয়ারতের মত ইসলামের মৌলিক কিছু ইবাদত এবং আচার-অনুষ্ঠানকে হারাম ও শির্ক বলে ঘোষণা করেছিল। ফলে ওয়াহাবিরা মাজার ও পবিত্র স্থানগুলো ধ্বংস করে আসছে। শুধু তাই নয় নজদি তার চিন্তাধারার বিরোধীদেরকে কাফির ও তাদেরকে হত্যা করা ওয়াজিব বলে উল্লেখ করত।


অথচ বিশ্বনবী (সা.) নিজে কবর জিয়ারত করতেন এবং বিশেষ করে তাঁর মাতা হযরত আমিনা (সালামুল্লাহি আলাইহা)’র কবর জিয়ারত করতে ছুটে যেতেন। তিনি নিজের মায়ের কবরের পাশে কাঁদতেন। (আল মুস্তাদরাক, খণ্ড-১, পৃ.৩৫৭, মদিনার ইতিহাস, ইবনে শাব্বাহ, খণ্ড-১, পৃ.১১৮) আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, মহানবী (সা.) বলেছেন, “তোমরা কবর জিয়ারত কর। এই জিয়ারত তোমাদেরকে পরকালের স্মরণে মগ্ন করবে।”

ওয়াহাবিরা বিশ্বনবী (সা.)’র পবিত্র মাজারে এবং কারবালায় হযরত ইমাম হুসাইন (আ.) মাজারে হামলা চালিয়ে মূল্যবান অনেক সম্পদ, উপহার ও নিদর্শন লুট করেছিল।

ইসলামের পবিত্র ও ঐতিহাসিক নিদর্শনগুলো ধ্বংস করে ওয়াহাবিরা শুধু মুসলিম উম্মাহর হৃদয়কেই ক্ষত-বিক্ষত করেনি, একইসঙ্গে মানব সভ্যতার অবমাননার মত জঘন্য কলঙ্কও সৃষ্টি করেছে। কারণ, প্রত্যেক জাতি ও সভ্যতাই নিজের পুরনো ঐতিহাসিক চিহ্ন ও নিদর্শনগুলোকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে সংরক্ষণ করে। এ জন্য বিপুল অংকের অর্থ খরচ করে থাকে জাতিগুলো। অথচ ওয়াহাবিরা ইসলামের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনগুলোও ধ্বংস করে দিচ্ছে যাতে ভবিষ্যত প্রজন্মগুলো এইসব নিদর্শন সম্পর্কে অজ্ঞ থাকে। এটা ইসলাম ও মানব সভ্যতার জন্য এক অপূরণীয় ক্ষতি।

ওয়াহাবিরা অতীতেও জান্নাতুল বাকিতে হামলা চালিয়ে নিষ্পাপ ইমামদের মাজার ধ্বংস করেছিল। প্রথমবার তারা হামলা চালিয়েছিল হিজরি ১২২০ সালে (১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে)। (এ সময় হিজাজে সৌদি ওয়াহাবিদের গঠিত প্রথম বিদ্রোহী ও অবৈধ সরকারটি নির্মূল হয়েছিল তুরস্কের ওসমানিয় খেলাফতের মাধ্যমে। ) সে সময় ওয়াহাবিরা দেড় বছর ধরে মদীনাকে অবরুদ্ধ করে শহরটি দখল করতে সক্ষম হয় এবং বিশ্বনবী (সা.) পবিত্র মাজারের দামী পাথর ও সোনা-রূপাসহ মূল্যবান জিনিষগুলো লুট করে এবং জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে ধ্বংসযজ্ঞ ও লুটপাট চালায়। তারা পবিত্র মক্কায়ও হামলা চালিয়েছিল।


তারা ওই একই বছর কেবল বিশ্বনবী (সা.)’র মাজার ছাড়া মক্কা ও মদীনায় সব মাজার ধ্বংস করে। শ্রদ্ধার জন্য নয়, বরং জনগণের ব্যাপক প্রতিরোধের মুখে ও ভয়াবহ পরিণামের ভয়ে বিশ্বনবী (সা.)’র মাজার ধ্বংস করার সাহস তারা করেনি। ওয়াহাবিরা মক্কা ও মদিনার কাজি বা বিচারকদের অপসারণ করে সেখানে নিজেদের কাজি নিয়োগ করে। নবনিযুক্ত ওয়াহাবি কাজি বিশ্বনবী (সা.)’র মাজার বা কবর জিয়ারত থেকে জনগণকে বিরত রাখার চেষ্টা করতেন। মক্কা ও মদিনার জনগণকে জোর করে ওয়াহাবি মতবাদ মেনে নিতে বাধ্য করেছিল ওয়াহাবিরা।

ধর্মপ্রাণ সুন্নি ও শিয়া মুসলমানরা অর্থ ব্যয় করে আবারও জান্নাতুল বাকির মাজারগুলো পুনর্নির্মাণ করেন। কিন্তু ওয়াহাবিরা দ্বিতীয়বার মক্কা দখলের পর পর ১৩৪৪ হিজরিতে তথা ১৯২৬ সালে মদীনা অবরোধ করে এবং প্রতিরোধাকামীদের পরাজিত করে এই পবিত্র শহর দখল করে। ওসমানিয় পুলিশদের শহরের বাইরে হটিয়ে দিয়ে এবারও তারা জান্নাতুল বাকিতে অবস্থিত নবী (সা.)- পরিবারের নিষ্পাপ ইমামদের মাজারসহ সব মাজার ধ্বংস করে এবং লুটপাট চালায়। মুসলমানরা এই দিনটিকে ইয়াওমুল আলহাদাম বা ধ্বংসের দিন বলে অভিহিত করেছেন। এ সময় ওয়াহাবি সন্ত্রাসীরা বহু মুসলমানকে হত্যা করে জান্নাতুল বাকির আশপাশে। একজন প্রত্যক্ষদর্শী  উল্লেখ করেছিলেন: আমার সামনে একটা  উপত্যকা ঢেকে আছে মানুষের লাশে। চারদিকে ছড়িয়ে আছে শুকনো রক্ত। এমন কোনো গাছ ছিল না যার নীচে পড়ে থাকা একটি বা দুটি লাশ দেখা যায়নি।


ওয়াহাবিরা এখানে বিশ্বনবী (সা.)’র পিতা হযরত আবদুল্লাহ (আ.), পুত্র ইব্রাহিম (আ.), মুমিনদের নেতা আলী (আ.)’র স্ত্রী উম্মুল বানিন প্রমুখের মাজারও ধ্বংস করে। এ ছাড়াও তারা মদীনায় ওহুদ পাহাড়ের মসজিদসহ এখানে বিশ্বনবী (সা.)’র চাচা হযরত হামজা (আ.)’র মাজার এবং ওহুদের অন্যান্য শহীদ সাহাবিদের মাজার ধ্বংস করে। এখানে ১২ জন শহীদ ও সাহাবিদের মাজারের মধ্যে হযরত মুসআব বিন উমাইর (রা.), জাফর বিন শামস (রা.) ও আবদুল্লাহ বিন জাহাসের মাজার ছিল লক্ষণীয়।

লন্ডন-ভিত্তিক হিজাজের ঐতিহাসিক নিদর্শন বিষয়ক আন্তর্জাতিক গ্রুপ জানিয়েছে, সৌদি আরবে ইসলামী নিদর্শনগুলোর শতকরা ৯৫ ভাগই ধ্বংস করে ফেলেছে ওয়াহাবিরা। ইসলামের দুই প্রধান কেন্দ্র তথা মক্কা ও মদিনায় ইসলামের প্রধান নিদর্শনগুলোর বেশির ভাগই ধ্বংস করে ফেলেছে তারা। অথচ ওয়াহাবিরা হিজাজে তথা সৌদি আরবে ইহুদি ও খ্রিস্টানদের নিদর্শনগুলো রক্ষা করছে! এটা খুবই বিস্ময়কর ও লক্ষণীয় বিষয়। যেমন, খায়বরের মারহাব দুর্গ রক্ষা করছে তারা। মারহাব ছিল মদিনার অন্যতম ইহুদি গোত্র-প্রধান ও পালোয়ান যে হযরত আলী (আ.)’র সঙ্গে দ্বন্দ্ব যুদ্ধে নিহত হয়েছিল। এমনকি ওয়াহাবিদের প্রথম শাসনামলের দিকে নির্মিত খ্রিস্টানদের একটি গির্জাকে ঐতিহাসিক নিদর্শন হিসেবে রক্ষা করছে ওয়াহাবিরা। অথচ বিশ্বনবী (সা.)’র পবিত্র স্মৃতি-বিজড়িত নিদর্শনগুলো ধ্বংস করছে তারা।


বিভিন্ন দলিল প্রমাণে দেখা গেছে ওয়াহাবিরা সৌদি আরবে, বিশেষ করে, মক্কা ও মদিনায় অলি-আওলিয়ার মাজার বা কবর ধ্বংসের পাশাপাশি তাদের অবমাননার জঘন্য ও দুঃখজনক পদক্ষেপও নিয়েছে। যেমন, ওয়াহাবিরা মক্কায় বিশ্বনবী (সা.)’এর স্ত্রী ও প্রথম মুসলমান উম্মুল মুমিনিন হযরত খাদিজা (সালামুল্লাহি আলাইহার) বাসভবনটিকে ধ্বংস করে সেখানে টয়লেট নির্মাণ করেছে। তারা ‘মৌলুদুন্নবি’ নামে খ্যাত বিশ্বনবী (সা.)’র জন্মের স্থানটিকে পশু রাখার স্থানে পরিণত করেছে।

ওয়াহাবিদের নারকীয় তাণ্ডব আজও অব্যাহত রয়েছে। প্রায়ই তাদের অনুগত সন্ত্রাসীদের হামলায় নিহত হচ্ছে ইয়েমেন ইরাক, পাকিস্তান ও সিরিয়ার নিরপরাধ নারী, পুরুষ ও শিশু। নিরপরাধ নারী ও শিশুসহ গলা কেটে হত্যা করছে বেসামরিক নাগরিকদের। তাদের দুষ্কৃতির সহযোগী হতে রাজি না হওয়ায় বেসামরিক নাগরিকদের জীবন্ত কবর দিচ্ছে ও পুড়িয়ে মারছে এবং গণ-কবর দিচ্ছে। এমনকি তারা লাশের অবমাননা করে কলিজা বের করে তা চিবিয়ে খেয়েছে। মানুষ-খেকো এই ওয়াহাবিদের নৃশংসতা বিশ্বনবী (সা.)’র চাচা ও শহীদদের নেতা হযরত হামজার কলিজা-খেকো নারী হিন্দার কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। হিন্দা ছিল ইসলামের সবচেয়ে বড় শত্রু আবু-সুফিয়ানের স্ত্রী ও মুয়াবিয়ার মা তথা ইয়াজিদের দাদী।


কেউ কেউ বলে থাকেন যে সৌদি রাজ-পরিবার আসলে “দোমনেহ” নামের বিভ্রান্ত ইহুদিবাদী গোষ্ঠীর বংশধর। এই গোষ্ঠী ভণ্ড ইহুদিবাদী নবী ‘শাব্বিটি জিভি’র অনুসারী। তারা প্রকাশ্যে ইসলামের অনুসারী বলে দাবি করত। কিন্তু তারা বাস্তবে মদ্যপ ও নির্বিচার যৌনাচার বা যৌন অনাচারসহ নানা ঘৃণ্য কাজে অভ্যস্ত ছিল।

আজ বিশ্বের মুসলমানদের সচেতন হতে হবে কেননা ওহাবীদের নতুন ষড়যন্ত্র তারা হাজিদের মাঝে প্রচার করা শুরু করেছে যে জান্নাতুল বাকি বলা যাবে না বরং বলতে হবে বাকি কবরস্থান। এভাবে তারা জান্নাতুল বাকির মর্যাদাকে ক্ষুন্ন করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। বর্তমান মুসলমানদের দাবী মক্কা ও মদীনার মত পবিত্র শহরগুলো পরিচালনার দায়িত্ব থেকে ওয়াহাবিদের সরিয়ে দিয়ে তা মুসলমানদের প্রকৃত প্রতিনিধিদের কাছে অর্পণ করতে হবে।



"জান্নাতুল বাকী ধ্বংসের হোতা আব্দুল ওহাব নযদি ও তার অনুসারীরা"


১৯২৫ সালের ৮ ই শাওয়াল (শুক্রবার) ইসলামের ইতিহাসের এক শোকাবহ দিন। এই দিনে ওয়াহাবি ধর্মদ্রোহীরা পবিত্র মক্কা ও মদিনায় ক্ষমার অযোগ্য কিছু পাপাচার ও বর্বরতায় লিপ্ত হয়েছিল। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যখন পবিত্র জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)’র দ্বিতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ নিষ্পাপ উত্তরসূরির পবিত্র মাজার জিয়ারত করছিলেন তখন ওয়াহাবি দুর্বৃত্তরা সেখানে ভাঙ্গচুর ও লুটপাট অভিযান চালায় এবং ওই নিষ্পাপ ইমামদের পবিত্র মাজারের সুদৃশ্য স্থাপনা ও গম্বুজগুলো মাটির সঙ্গে গুড়িয়ে দেয়।

ওয়াহাবি বিচারক শেখ আবদুল্লাহ বিন বালহিদ এইসব পবিত্র মাজার ধ্বংসের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এরপর বর্বর ও ধর্মান্ধ ওয়াহাবিরা আরো কিছু পবিত্র মাজারের অবমাননা করে এবং এইসব মাজারের গম্বুজ ও  স্থাপনাগুলো ভেঙ্গে-চুরে ইসলাম অবমাননার ন্যক্কারজনক তাণ্ডব চালায়। এইসব মাজার ছিল বিশ্বনবী (সা.)’র  ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন (ফুপু, খালা বা চাচী),সাহাবি, স্ত্রী, বংশধর ও খ্যাতনামা আলেমদের।

জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে এসে বিশ্বনবী (সা.) বলতেন, “ তোমাদের ওপর সালাম! হে বিশ্বাসীদের আবাসস্থল! আল্লাহ চাইলে আমরাও শিগগিরই তোমাদের সঙ্গে মিলিত হব। হে আল্লাহ, আল-বাকির (জান্নাতুল বাকি কবরস্থানের) অধিবাসীদের ক্ষমা করুন।”

এভাবে ( সুন্নি ও শিয়া সূত্রে বর্ণিত হাদিস অনুযায়ী) বিশ্বনবী  হযরত মুহাম্মাদ (সা.) তাঁর সাহাবায়ে কেরাম ও আত্মীয়-স্বজনদের কবরে সালাম দিতেন।

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) গোটা সৃষ্টি জগতের জন্য রহমত (রাহমাতুললিল আলা’মিন) হিসেবে তাঁর যুগের  ও অন্য সব অনাগত যুগের মুসলমানদের জন্য সত বা মহত লোকদের কবর জিয়ারতের ব্যাপারে নিজের সুন্নাত ও কর্মপন্থা শিখিয়ে গেছেন।

মহান আল্লাহর ইচ্ছায় নেককার কবরবাসী সালাম ও দোয়া শুনতে পান। বিশ্বনবী (সা.) নিশ্চয়ই জানতেন যে, মুসলমান নামধারী এক শ্রেণীর মানুষ সুদূর ভবিষ্যতে তাঁর এইসব সুন্নাত পদদলিত করবে এবং মক্কা ও  মদিনায় মুসলমানদের রক্ত ঝরাবে এবং বেদাআত বা কুপ্রথা প্রতিরোধের নামে তাঁর পবিত্র আহলে বাইত বা নিষ্পাপ ইমামদের পবিত্র মাজারগুলোসহ  তাঁর  ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন (ফুপু, খালা বা চাচী),সাহাবি, স্ত্রী, বংশধর ও খ্যাতনামা আলেমদের মাজারগুলো গুড়িয়ে দেবে।

বিশ্বনবী (সা.) কবর জিয়ারতের সুন্নাতকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দান করেছিলেন। সম্ভবত এর অন্যতম কারণ এটাও ছিল যে এর মাধ্যমে তিনি মুসলমানদের মধ্যে বিভেদকামী এই ওয়াহাবি-সালাফি গোষ্ঠীর মুনাফেকি বা কপট চরিত্র উন্মোচন করবেন। এই সুন্নাতের মাধ্যমে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এটা স্পষ্ট করেন যে, একটি গতিশীল ইসলামী সমাজ সবসময় তার মৃত ব্যক্তিদের স্মরণ করে যেই মৃত ব্যক্তিরা মৃত্যুর পরেও খোদায়ী রহমত পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। অন্যদিকে শহীদদের অবস্থা আরো উন্নত। স্বয়ং মহান আল্লাহ বলেছেন,

و لا تحسبن الذین قتلوا فی سبیل الله امواتا بل احیاء عند ربهم یرزقون

‘যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়েছে তাদের তোমরা মৃত ভেবো না, বরং তারা জীবিত এবং তাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে জীবিকা-প্রাপ্ত।’ (সুরা আলে ইমরান-১৬৯)

অন্য একটি আয়াত হতে জানা যায় এই বিশেষ জীবন (বারজাখের জীবন) শুধু শহীদদের জন্যই নয়, বরং আল্লাহর সকল অনুগত ও সৎকর্মশীল বান্দার জন্য নির্ধারিত।

মহান আল্লাহ্ বলেছেন :

ومن یطع الله والرسول فاولئک مع الذین انعم الله علیهم من النبیین و الصدیقین و الشهداء والصالحین و حسن اولئک رفیقا

‘যারা আল্লাহ্ ও তাঁর প্রেরিত পুরুষের আনুগত্য করবে তারা সেই সব ব্যক্তির সঙ্গে থাকবে নবিগণ, সত্যবাদিগণ, শহীদগণ ও সৎকর্মশীলদের মধ্য হতে যাদের তিনি নিয়ামত দিয়েছেন। তারা কতই না উত্তম সঙ্গী!’ (সুরা নিসা-৬৯)

যদি শহীদগণ আল্লাহর কাছে জীবিত থাকেন ও জীবিকা লাভ করেন তবে যে কেউ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের অনুগত হবে, সেও শহীদদের সাথে থাকবে, (যেহেতু রাসূল নিজেও তাঁর আনীত নির্দেশের আনুগত্যকারী, সেহেতু তিনিও এই সুবিধার অন্তর্ভুক্ত)। কারণ এ আয়াতে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যকারীরা শহীদদের সঙ্গে থাকবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যদি শহীদরা মৃত্যুর পর আল্লাহর কাছে জীবিত থাকেন তবে তারাও অর্থাত আল্লাহ ও নবী-রাসূলদের আনুগত্যকারীরাও আল্লাহর কাছে জীবিত রয়েছেন ও বারজাখী জীবনের অধিকারী।

বিশ্বনবী (সা.)’র জন্য এটা কতই না হৃদয় বিদারক যে তাঁর প্রিয় আহলে বাইত, সাহাবি ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনের মাজারগুলো গুড়িয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে! জান্নাতুল বাকি কোনো সাধারণ কবরস্থান নয়। এখানে রয়েছে অন্তত সাত হাজার সাহাবির কবর। এখানে রয়েছে বিশ্বনবী (সা.)’র ফুপি বা পিতার বোন হযরত সাফিয়া ও আতিকার কবর। এখানেই রয়েছে বিশ্বনবী (সা.)’র শিশু পুত্র হযরত ইব্রাহিম (তাঁর ওপর অশেষ শান্তি বর্ষিত হোক)-এর কবর। এই পুত্রের মৃত্যুর সময় বিশ্বনবী (সা.) অশ্রু-সজল চোখে বলেছিলেন, “চোখগুলো থেকে পানি ঝরছে এবং হৃদয় শোকাহত, কিন্তু আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি উদ্রেককারী কথা ছাড়া অন্য কিছুই বলব না। আমরা তোমার জন্য শোকাহত হে ইব্রাহিম!” জান্নাতুল বাকি হচ্ছে সে স্থান যেখানে সমাহিত হয়েছেন বিশ্বনবী (সা.)’র চাচা হযরত আবু তালিব (রা.)’র স্ত্রী ফাতিমা বিনতে আসাদ (সালামুল্লাহি আলাইহা)। এই মহীয়সী নারী বিশ্বনবী (সা.)-কে লালন করেছিলেন নিজ সন্তানের মত স্নেহ দিয়ে এবং তাঁকে কবরে রাখার আগে বিশ্বনবী (সা.) এই মহান নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য নিজেই ওই কবরে কিছুক্ষণ শুয়েছিলেন। রাসূল (সা.) তার জন্য তালকিন উচ্চারণ করেছিলেন শোকার্ত কণ্ঠে।

জান্নাতুল বাকি হচ্ছে সেই কবরস্থান যেখানে বেহেশতী নারীদের সর্দার তথা খাতুনে জান্নাত হযরত ফাতিমা (সা.) বিশ্বনবী (সা.)’র ইন্তিকালের পর যে ৯০ দিন নিজে বেঁচে ছিলেন প্রায়ই সেখানে গিয়েই শোক প্রকাশ করতেন। যেখানে বসে তিনি শোক প্রকাশ করতেন সেই স্থানটিকে বল হল বাইতুল হুজন বা শোক প্রকাশের ঘর। একই স্থানে কারবালার শোকাবহ ঘটনার পর  বিশ্বনবী (সা.)’র নাতি শহীদদের নেতা ইমাম হুসাইন (আ.) ও নিজের পুত্র হযরত আবুল ফজল আব্বাস (রা.) ’র জন্য শোক প্রকাশ করতেন মুমিনদের নেতা হযরত আলী (আ.)’র স্ত্রী উম্মুল বানিন। এখানেই মদিনাবাসী যোগ নিতেন শোক-অনুষ্ঠানে। এখানে প্রায়ই শোক প্রকাশের জন্য আসতেন ইমাম হুসাইন (আ.)’র স্ত্রী হযরত রাবাব (সা. আ.)। বিশ্বনবী (সা.)’র নাতনী ও ইমাম হুসাইন (আ.)’র বোন হযরত জয়নাব (সা. আ.) ও উম্মে কুলসুম (সা.আ.) নিয়মিত শোক প্রকাশের জন্য এখানেই আসতেন।

৯২ বছর আগেও (১৯২৫ সালে) জান্নাতুল বাকিতে টিকে ছিল বিশ্বনবী (সা.)’র ১২ জন নিষ্পাপ উত্তরসূরির মধ্য থেকে তাঁর নাতি হযরত ইমাম হাসান (আ.), নাতির পুত্র ইমাম জয়নুল আবেদিন (আ.), তার পুত্র ইমাম মুহাম্মাদ বাকির (আ.) ও ইমাম জাফর সাদিক (আ.)’র সুদৃশ্য মাজার। বর্তমানে এ এলাকায় টিকে রয়েছে একমাত্র বিশ্বনবী (সা.)’র মাজার। ওয়াহাবিরা মুসলমানদের প্রতিক্রিয়ার ভয়েই এই পবিত্র মাজার ভাঙ্গার সাহস করেনি।

ব্রিটিশ ও কাফিরদের সহযোগী ইহুদিবাদী চরিত্রের অধিকারী ওয়াহাবিরা কেবল মদিনায় নয় পবিত্র মক্কায়ও ইসলামের অনেক নিদর্শন ও পবিত্র মাজার ধ্বংস করেছে। এইসব মাজারের মধ্যে রয়েছে মক্কায় জান্নাতুল মোয়াল্লা নামক কবরস্থানে অবস্থিত বিশ্বনবী (সা.)’র স্ত্রী ও  প্রথম মুসলমান  উম্মুল মুমিনিন হযরত খাদিজা (সা. আ.)’র পবিত্র মাজার এবং বিশ্বনবী (সা.)’র  পুত্র হজরত কাসেম (আ.), চাচা হযরত আবু তালিব (রা.) ও দাদা হযরত আবদুল মুত্তালিব (আ.)সহ অন্যান্য পারিবারিক সদস্যদের মাজার।

ওয়াহাবিরা মদীনায় ওহুদ যুদ্ধের ঐতিহাসিক ময়দানে বিশ্বনবী (সা.)’র চাচা শহীদদের নেতা হযরত হামজা (সা.)’র মাজারসহ অন্যান্য শহীদ সাহাবিদের মাজারও ধ্বংস করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াহাবিরা সিরিয়ায় বেশ কয়েকজন প্রখ্যাত সাহাবির মাজারে হামলা চালিয়ে সেইসব মাজারের অবমাননা করেছে। তারা বিখ্যাত সাহাবি হজর ইবনে ওদাই (রা.) মাজার ধ্বংস করে তার লাশ চুরি করে নিয়ে গেছে।

ওয়াহাবিরা এভাবে ইসলামের ইতিহাসের নিদর্শনগুলো ধ্বংস করছে ঠিক যেভাবে বায়তুল মোকাদ্দাস শহরে মুসলমানদের পবিত্র প্রথম কেবলা এবং এর আশপাশের  ইসলামী নিদর্শনগুলো ধ্বংসের চেষ্টা করছে দখলদার ইহুদিবাদীরা। ফিলিস্তিনের অনেক ইসলামী নিদর্শন ধ্বংস করেছে ইহুদিবাদীরা। অনেকেই মনে করেন ওয়াহাবিদের পৃষ্ঠপোষক সৌদি রাজবংশ (যারা তুর্কি খেলাফতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে ইংরেজদের সহায়তা করেছে এবং পুরস্কার হিসেবে হিজাজে বংশীয় রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে) ছিল একটি ইহুদিবাদী ইহুদি গোত্রেরই বংশধর। এরা মুখে মুখে মুসলমান বলে দাবি করলেও সব সময়ই ইসলামের শত্রুদের সহযোগী।

কেউ কেউ বলে থাকেন যে সৌদি রাজ-পরিবার আসলে “দোমনেহ” নামের বিভ্রান্ত ইহুদিবাদী গোষ্ঠীর বংশধর। এই গোষ্ঠী ভণ্ড  ইহুদিবাদী নবী ‘শাব্বিটি জিভি’র অনুসারী। তারা প্রকাশ্যে ইসলামের অনুসারী বলে দাবি করত। কিন্তু তারা বাস্তবে মদ্যপ ও নির্বিচার যৌনাচার বা যৌন অনাচারসহ নানা ঘৃণ্য কাজে অভ্যস্ত ছিল। 

"জাজরিরাতুল আরবের জান্নাতুল বাকী ধ্বংসের ন্যায়পথ্যে আব্দুল ওহাব নযদির অনুসারী ও সৌদ পরিবার"


"ওহাবীদের কর্তৃক জান্নাতুল বাকী ধ্বংশের ইতিহাস"


জান্নাতুল বাকি, বর্তমান সৌদি আরবের মদিনায় অবস্থিত প্রাচীনতম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি ইসলামী কবরস্থানের মধ্যে একটি, যা ১৮০৬ সালে ভেঙে ফেলা হয়েছি] এবং ১৯ শতকের মাঝামাঝিতে পুনর্নির্মাণের পরে, ১৯২৫ বা ১৯২৬ সালে আবার ধ্বংস করা হয়েছিল।] আল সৌদের একটি জোট এবং দিরিয়া আমিরাত নামে পরিচিত ওয়াহাবি আন্দোলনের অনুসারীরা প্রথম ধ্বংসযজ্ঞ চালায়। নজদ সালতানাত, আল সৌদ দ্বারা শাসিত এবং ওয়াহাবি আন্দোলনের অনুসারীরা দ্বিতীয় ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালনা করেছিল। উভয় ক্ষেত্রেই, ধ্বংসযজ্ঞ যারা চালিয়েছিল তারা ইসলামের ওয়াহাবি ব্যাখ্যা দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিল, যা কবরের উপর স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ নিষিদ্ধের নামে তা করেছিলো যদিও জান্নাতুল বাকী সাহাবেদের যুগ হতেই ছিলো।


পটভুমি:

বাকি আল-গারকাদ (আরবিبقیع الغرقد, "the field of thorny trees"), যা জান্নাত আল-বাকি (আরবিجنة البقیع, "garden of tree stumps") নামেও পরিচিত।মুহাম্মদ (সাঃ) এর জীবদ্দশায় আল-বাকিতে দাফন করা সবচেয়ে বিখ্যাত ব্যক্তি ছিলেন তাঁর শিশু পুত্র ইব্রাহিম। অনেক বর্ণনা প্রমাণ করে যে মুহাম্মদ (সাঃ) নিয়মিত এই কবরস্থান পরিদর্শন করতেন এবং সেখানে সমাহিতদের জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করতেন।

মুহাম্মদ (সাঃ) এর প্রথম সাহাবী উসমান ইবনে মাজউন (বা আসাদ ইবনে জুররাহ) কে সেখানে ৬২৫ সালে সমাহিত করার পর স্থানটি আরও গুরত্ব পায়। চার ইমাম: হাসান ইবনে আলীআলী ইবনে হোসাইন জয়নুল আবিদীনমুহম্মদ আল-বাকির এবং জাফর আস-সাদিককেও সেখানে সমাহিত করা হয়েছে। ঐতিহাসিক নথিগুলিতে দেখায় যে বিংশ শতাব্দীর আগে জান্নাতুল বাকিতে গম্বুজ, কপোলা এবং মাজার ছিল; যেটি আজ কোনো ভবন ছাড়া একটি খালি জমি।



প্রথম ধ্বংস যজ্ঞঃ

ঊনবিংশ শতাব্দীতে (১৮০৬) আল সৌদ মক্কা ও মদিনা তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়ার শুরুতে, তারা তাদের মতবাদ ওহাবী মতবাদ অনুসারে জান্নাতুল বাকির ভিতরে বা বাইরে, সমাধি ও মসজিদ সহ অনেক ধর্মীয় ভবন ভেঙে ফেলে।] এগুলোকে মাটিতে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল এবং সমাধির সাজসজ্জা ও জিনিসপত্র লুটপাট করা হয়েছিল।

পবিত্র শহরগুলির নিয়ন্ত্রণে নেওয়ার পর, সৌদিরা ওয়াহাবি নয় এমন মুসলমানদের হজ্জ পালন না করতে দেওয়ার বাধা সৃষ্টি করার চেষ্টা করেছিল। পরের কয়েক বছরে তারা ধীরে ধীরে হজের শুল্ক বাড়ায়। তারা হজ্জ যাত্রীদের মহমাল (সমৃদ্ধভাবে সজ্জিত পালকি) আনতেও নিষেধ করেছিল, যেগুলো প্রায়শই হজ্জ যাত্রীদের দ্বারা আনা হত কিন্তু ওয়াহাবি ধর্মীয় মানদণ্ডের সাথে যা ছিল বেমানান, এবং পরে করা হয় "ছেলে বা অন্যান্য দাড়িবিহীন ব্যক্তি"।

১৮০৫ সালে, ধ্বংসযজ্ঞের এক বছর আগে, ইরাকি এবং ইরানি মুসলমানদের হজ্জ করার অনুমতি দেওয়া হয়নি। সিরীয় ও মিশরীয়দের ১৮০৬ এবং ১৮০৭ সালে হজ্জ করার অনুমতি প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল।মাগরেবি মুসলমানদের হজ্জ পালনে বাধা দেওয়া হয়নি।

ইউরোপীয় পর্যটক জোহান লুডউইগ বার্কহার্ট প্রথম ধ্বংসযজ্ঞের পরে ১৮১৫ সালে জান্নাতুল বাকি পরিদর্শন করেছিলেন। জান্নাতুল বাকির চারপাশে গম্বুজগুলির ধ্বংসাবশেষ দেখে তিনি বলেছিলেন যে মদিনার লোকেরা "কিপটে" ছিল, "তাদের খ্যাতিমান দেশবাসীদের" সম্মান করার দিকে তারা খুব কম মনোযোগ দেয়। যদিও, ধ্বংসযজ্ঞ সেখানকার বাসিন্দাদের তাদের আচার পালন থেকে বাধা দেয়নি।

উসমানীয় সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদ, মিশরের গভর্নর মুহাম্মদ আলি পাশাকে ওয়াহাবি বিদ্রোহীদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত অঞ্চলগুলি পুনরুদ্ধার করার আদেশ দেন।শুরু হয় উসমানীয়-সৌদি যুদ্ধ। মুহাম্মদ আলি পাশার পুত্র ইবরাহিম পাশা, ১৮১৮ সালে দিরিয়াহ যুদ্ধে বিদ্রোহী গোষ্ঠীকে পরাজিত করেন। সুলতান দ্বিতীয় মাহমুদের আদেশে উসমানীয়রা ১৮৪৮ থেকে ১৮৬০ সাল পর্যন্ত "অপূর্ব নান্দনিক শৈলীতে" ভবন, গম্বুজ এবং মসজিদ নির্মাণ ও সংস্কার করে। স্যার রিচার্ড ফ্রান্সিস বার্টন, যিনি ১৮৫৩ সালে "আব্দুল্লাহ" নামে একজন আফগান মুসলিমের ছদ্মবেশে মদিনায় গিয়েছিলেন, তিনি বলেছিলেন যে উসমানীয়দের দ্বারা পুনর্গঠনের পর সেখানে ৫৫টি মসজিদ এবং মাজার ছিল। ১৮৭৭-১৮৭৮ সালে মদিনা পরিদর্শনকারী আরেক ইংরেজ অভিযাত্রী শহরটিকে "ইস্তাম্বুলের মতো একটি ছোট সুন্দর শহর" হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন। তিনি এর "সাদা দেয়াল, সোনালী সরু মিনার এবং সবুজ মাঠ" উল্লেখ করেছেন। এছাড়াও, ইব্রাহিম রিফাত পাশা, যিনি একজন মিশরীয় কর্মকর্তা, তিনি ১৯০১ এবং ১৯০৮ সালের মধ্যে ভ্রমণ করেছিলেন, ষোলটি গম্বুজকে চিহ্নিত করেছেন এবং মাজারের একটি সংগ্রহ বর্ণনা করেছেন।

দ্বিতীয় ধ্বংসযজ্ঞঃ

আল সৌদ ১৯২৪ (বা ১৯২৫) সালে হেজাজের নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করে।পরের বছর ইবনে সৌদ কাজী আবদুল্লাহ ইবনে বুলাইহিদের প্রদত্ত ধর্মীয় অনুমোদনের সাথে স্থানটি ধ্বংস করার অনুমতি দেন। ২১ এপ্রিল ১৯২৬ (বা ১৯২৫) সালে ওয়াহাবি ধর্মীয় মিলিশিয়া ইখওয়ান ("ব্রাদার্স") এর দ্বারা ধ্বংসযজ্ঞ শুরু হয়। এমনকি সহজতম সমাধির পাথরগুলিও ধ্বংস করা অন্তর্ভুক্ত ছিল। ব্রিটিশ রূপান্তরিত এলডন রাটার ধ্বংসযজ্ঞকে একটি ভূমিকম্পের সাথে তুলনা করেছিলেন: "সমস্ত কবরস্থান জুড়ে ছড়িয়ে পড়া মাটি এবং পাথরের সামান্য অনির্দিষ্ট ঢিবি, কাঠের টুকরো, লোহার টুকরো, পাথরের খণ্ড এবং সিমেন্ট ও ইটগুলির একটি ভাঙা ধ্বংসস্তুপ ছাড়া কিছুই দেখা যায়নি।

ভবনগুলো ধ্বংসকারী শ্রমিকরা ১,০০০ মাজিদি রিয়াল পেয়েছিল, যা ছিল সেই সময়ের মুদ্রার একক।ধ্বংস হওয়া মাজারগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ছিল: আবদুল্লাহ ইবনে আবদুল মুত্তালিব এবং মা আমিনামুহাম্মদ (সাঃ) এর পিতা ও মাতা; জাফর আস-সাদিকের বড় ছেলে ইসমাইল ইবনে জাফর; মুহাম্মদ (সাঃ) এর উভয় চাচা আব্বাস ইবনে আব্দুল মুত্তালিব এবং হামজা ইবনে আবদুল-মুত্তালিব; মুহাম্মদ (সাঃ) এর ছেলে ইব্রাহিম ইবনে মুহাম্মাদমালিক ইবনে আনাসউসমান ইবন আফফান; চার ইমাম; এবং ৭,০০০ ব্যাক্তিদের মাজার, যাদের নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এর সাথে সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করা হয় হয়।[১৩]

প্রতিক্রিয়াঃ

দ্বিতীয় ধ্বংসের বিষয়টি মজলেস-ই শোরা-ই মেলি (ইরানের ন্যাশনাল কনসালটেটিভ অ্যাসেম্বলি)-তে আলোচনা করা হয়েছিল এবং তদন্তের জন্য প্রতিনিধিদের একটি দল হিজাজে পাঠানো হয়েছিল। ইসলামিক এনসাইক্লোপিডিয়া অনুসারে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে, কবরস্থান এবং এর মাজারগুলি পুনরুদ্ধার করার জন্য ইরানের ধর্মীয় পণ্ডিত এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বদের দ্বারা প্রচেষ্টা করা হয়েছিল।সুন্নি এবং শিয়া উভয় মুসলিমই ধ্বংসের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করেছিল এবং ভারত, পাকিস্তান, ইরান এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি বছর সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দিনটিকে অনেক শিয়ারা ইয়াউম-ই ঘাম ("দুঃখের দিন") হিসাবে গণ্য করে। ইসলামিক এনসাইক্লোপিডিয়ার মতে, বিশিষ্ট সুন্নি ধর্মতাত্ত্বিক এবং বুদ্ধিজীবীরা আল-বাকির "অযোগ্য" পরিস্থিতির নিন্দা করেছেন কিন্তু সৌদি কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত সমস্ত সমালোচনা উপেক্ষা করেছে এবং সমাধি ও মাজারগুলো পুনরুদ্ধারের জন্য সব ধরনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করেছে।

তথ্য সূত্র:
১। ইসলামিক এনসাইক্লোপিডিয়া, 
২। ফিতনাত আল-ওহাবীয়াত, আহমেদ জাইনী দাহলান হাফি: প্রকাশ কাল ১৮৭৮ ইসায়ী, ১ম খন্ড।


১৯২৫ সালের ৮ ই শাওয়াল (শুক্রবার) ইসলামের ইতিহাসের এক শোকাবহ দিন। এই দিনে ব্রিটিশ গোয়েন্দা ড.হামফেরী কর্তৃক সৃষ্ট ফেতনার জনক আব্দুল ওয়াহাব নযদির অনুসারী ধর্মদ্রোহীরা পবিত্র মক্কা ও মদিনায় ক্ষমার অযোগ্য কিছু পাপাচার ও বর্বরতায় লিপ্ত হয়েছিল। ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা যখন পবিত্র জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.)’র দ্বিতীয়, চতুর্থ, পঞ্চম ও ষষ্ঠ নিষ্পাপ উত্তরসূরীগনের পবিত্র মাজার শরীফ জিয়ারত করছিলেন তখন ওয়াহাবি দুর্বৃত্তরা সেখানে ভাঙ্গচুর ও লুটপাটের এক ঘৃন্য অভিযান চালায় এবং ওই নিষ্পাপ ইমামদের পবিত্র মাজারের সুদৃশ্য সকল স্থাপনা ও গম্বুজগুলো মাটির সঙ্গে গুড়িয়ে দিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয়।


ব্রিটিশ গোয়েন্দা ড.হামফেরী কর্তৃক সৃষ্ট ফেতনার জনক আব্দুল ওয়াহাব নযদির কুপরামর্শে তার অনুসারী ওয়াহাবি বিচারক শেখ আবদুল্লাহ বিন বালহিদ এইসব পবিত্র মাজার ধ্বংসের নির্দেশ দিয়েছিলেন।

এরপর বর্বর ও ধর্মান্ধ ওয়াহাবিরা আরো কিছু পবিত্র মাজারের অবমাননা করে এবং এইসব মাজারের গম্বুজ ও  স্থাপনাগুলো ভেঙ্গে-চুরে ইসলাম অবমাননার মত ন্যক্কারজনক তাণ্ডব চালায়। এইসব মাজার ছিল বিশ্বনবী (সা.)’র  ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন (ফুপু, খালা বা চাচী),সাহাবি,সাহাবা গনের স্ত্রী, বংশধর ও খ্যাতনামা আলেমদের।

জান্নাতুল বাকি কবরস্থানে এসে বিশ্বনবী (সা.) বলতেন, “ তোমাদের ওপর সালাম! হে বিশ্বাসীদের আবাসস্থল! আল্লাহ চাইলে আমরাও শিগগিরই তোমাদের সঙ্গে মিলিত হব। হে আল্লাহ, আল-বাকির (জান্নাতুল বাকি কবরস্থানের) অধিবাসীদের ক্ষমা করুন।”

এভাবে বিভিন্ন সূত্রে বর্ণিত হাদিস অনুযায়ী জানা যায় বিশ্বনবী  হযরত মুহাম্মাদ (সা.) তাঁর সাহাবায়ে কেরাম ও আত্মীয়-স্বজনদের কবরে সালাম দিতেন।

বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) গোটা সৃষ্টি জগতের জন্য রহমত (রাহমাতুললিল আলা’মিন) হিসেবে তাঁর যুগের  ও অন্য সব অনাগত যুগের মুসলমানদের জন্য সত বা মহত লোকদের কবর জিয়ারতের ব্যাপারে নিজের সুন্নাত ও কর্মপন্থা শিখিয়ে গেছেন।

মহান আল্লাহর ইচ্ছায় নেককার কবরবাসী সালাম ও দোয়া শুনতে পান। বিশ্বনবী (সা.) নিশ্চয়ই জানতেন যে, মুসলমান নামধারী এক শ্রেণীর মানুষ সুদূর ভবিষ্যতে তাঁর এইসব সুন্নাত পদদলিত করবে এবং মক্কা ও  মদিনায় মুসলমানদের রক্ত ঝরাবে এবং বেদাআত বা কুপ্রথা প্রতিরোধের নামে তাঁর পবিত্র আহলে বাইত বা নিষ্পাপ ইমামদের পবিত্র মাজারগুলোসহ  তাঁর  ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজন (ফুপু, খালা বা চাচী),সাহাবি, স্ত্রী, বংশধর ও খ্যাতনামা আলেমদের মাজারগুলো গুড়িয়ে দেবে।

বিশ্বনবী (সা.) কবর জিয়ারতের সুন্নাতকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দান করেছিলেন। সম্ভবত এর অন্যতম কারণ এটাও ছিল যে এর মাধ্যমে তিনি মুসলমানদের মধ্যে বিভেদকামী এই ওয়াহাবি-সালাফি গোষ্ঠীর মুনাফেকি বা কপট চরিত্র উন্মোচন করবেন। এই সুন্নাতের মাধ্যমে বিশ্বনবী হযরত মুহাম্মাদ (সা.) এটা স্পষ্ট করেন যে, একটি গতিশীল ইসলামী সমাজ সবসময় তার মৃত ব্যক্তিদের স্মরণ করে যেই মৃত ব্যক্তিরা মৃত্যুর পরেও খোদায়ী রহমত পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন। অন্যদিকে শহীদদের অবস্থা আরো উন্নত। স্বয়ং মহান আল্লাহ বলেছেন,

و لا تحسبن الذین قتلوا فی سبیل الله امواتا بل احیاء عند ربهم یرزقون

‘যারা আল্লাহর রাস্তায় নিহত হয়েছে তাদের তোমরা মৃত ভেবো না, বরং তারা জীবিত এবং তাদের প্রতিপালকের কাছ থেকে জীবিকা-প্রাপ্ত।’ (সুরা আলে ইমরান-১৬৯)

অন্য একটি আয়াত হতে জানা যায় এই বিশেষ জীবন (বারজাখের জীবন) শুধু শহীদদের জন্যই নয়, বরং আল্লাহর সকল অনুগত ও সৎকর্মশীল বান্দার জন্য নির্ধারিত।

মহান আল্লাহ্ বলেছেন :

ومن یطع الله والرسول فاولئک مع الذین انعم الله علیهم من النبیین و الصدیقین و الشهداء والصالحین و حسن اولئک رفیقا

‘যারা আল্লাহ্ ও তাঁর প্রেরিত পুরুষের আনুগত্য করবে তারা সেই সব ব্যক্তির সঙ্গে থাকবে নবিগণ, সত্যবাদিগণ, শহীদগণ ও সৎকর্মশীলদের মধ্য হতে যাদের তিনি নিয়ামত দিয়েছেন। তারা কতই না উত্তম সঙ্গী!’ (সুরা নিসা-৬৯)

যদি শহীদগণ আল্লাহর কাছে জীবিত থাকেন ও জীবিকা লাভ করেন তবে যে কেউ আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের অনুগত হবে, সেও শহীদদের সাথে থাকবে, (যেহেতু রাসূল নিজেও তাঁর আনীত নির্দেশের আনুগত্যকারী, সেহেতু তিনিও এই সুবিধার অন্তর্ভুক্ত)। কারণ এ আয়াতে আল্লাহ্ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যকারীরা শহীদদের সঙ্গে থাকবেন বলে উল্লেখ করা হয়েছে। যদি শহীদরা মৃত্যুর পর আল্লাহর কাছে জীবিত থাকেন তবে তারাও অর্থাত আল্লাহ ও নবী-রাসূলদের আনুগত্যকারীরাও আল্লাহর কাছে জীবিত রয়েছেন ও বারজাখী জীবনের অধিকারী।

বিশ্বনবী (সা.)’র জন্য এটা কতই না হৃদয় বিদারক যে তাঁর প্রিয় আহলে বাইত, সাহাবি ও ঘনিষ্ঠ আত্মীয়-স্বজনের মাজারগুলো গুড়িয়ে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দেয়া হয়েছে! জান্নাতুল বাকি কোনো সাধারণ কবরস্থান নয়। এখানে রয়েছে অন্তত সাত হাজার সাহাবির কবর। এখানে রয়েছে বিশ্বনবী (সা.)’র ফুপি বা পিতার বোন হযরত সাফিয়া ও আতিকার কবর। এখানেই রয়েছে বিশ্বনবী (সা.)’র শিশু পুত্র হযরত ইব্রাহিম (তাঁর ওপর অশেষ শান্তি বর্ষিত হোক)-এর কবর। এই পুত্রের মৃত্যুর সময় বিশ্বনবী (সা.) অশ্রু-সজল চোখে বলেছিলেন, “চোখগুলো থেকে পানি ঝরছে এবং হৃদয় শোকাহত, কিন্তু আমরা আল্লাহর সন্তুষ্টি উদ্রেককারী কথা ছাড়া অন্য কিছুই বলব না। আমরা তোমার জন্য শোকাহত হে ইব্রাহিম!” জান্নাতুল বাকি হচ্ছে সে স্থান যেখানে সমাহিত হয়েছেন বিশ্বনবী (সা.)’র চাচা হযরত আবু তালিব (রা.)’র স্ত্রী ফাতিমা বিনতে আসাদ (সালামুল্লাহি আলাইহা)। এই মহীয়সী নারী বিশ্বনবী (সা.)-কে লালন করেছিলেন নিজ সন্তানের মত স্নেহ দিয়ে এবং তাঁকে কবরে রাখার আগে বিশ্বনবী (সা.) এই মহান নারীর প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য নিজেই ওই কবরে কিছুক্ষণ শুয়েছিলেন। রাসূল (সা.) তার জন্য দোয়া করেছিলেন শোকার্ত কণ্ঠে।

জান্নাতুল বাকি হচ্ছে সেই কবরস্থান যেখানে বেহেশতী নারীদের সর্দার তথা খাতুনে জান্নাত হযরত ফাতিমা (রা:) বিশ্বনবী (সা.)’র ইন্তিকালের পর যে ৯০ দিন নিজে বেঁচে ছিলেন প্রায়ই সেখানে যেতেন। একই স্থানে কারবালার শোকাবহ ঘটনার পর  বিশ্বনবী (সা.)’র নাতি শহীদদের নেতা ইমাম হুসাইন (রা:) ও নিজের পুত্র হযরত আবুল ফজল আব্বাস (রা.) ’র জন্য দোয়া করতেন মুমিনদের নেতা হযরত আলী (রা:)’র স্ত্রী উম্মুল বানিন। এখানেই মদিনাবাসী যোগ নিতেন বিভিন্ন দোয়া-অনুষ্ঠানে। এখানে প্রায়ই দোয়ার জন্য আসতেন ইমাম হুসাইন (রা:)’র স্ত্রী হযরত রাবাব (রা:)। বিশ্বনবী (সা.)’র নাতনী ও ইমাম হুসাইন (রা:)’র বোন হযরত জয়নাব (রা.) ও উম্মে কুলসুম (রা.) নিয়মিত দোয়ার জন্য এখানেই আসতেন।

৯২ বছর আগেও (১৯২৫ সালে) জান্নাতুল বাকিতে টিকে ছিল বিশ্বনবী (সা.)’র ১২ জন নিষ্পাপ সাহাবার মধ্য থেকে তাঁর নাতি হযরত ইমাম হাসান রা.), নাতির পুত্র ইমাম জয়নুল আবেদিন( রা.) ও ইমাম জাফর সাদিক( রা.)’র সুদৃশ্য মাজার। বর্তমানে এ এলাকায় টিকে রয়েছে একমাত্র বিশ্বনবী (সা.)’র মাজার। ওয়াহাবিরা মুসলমানদের প্রতিক্রিয়ার ভয়েই এই পবিত্র মাজার ভাঙ্গার সাহস করেনি।

ব্রিটিশ ও কাফিরদের সহযোগী ইহুদিবাদী চরিত্রের অধিকারী ব্রিটিশ গোয়েন্দা ড.হামফেরী কর্তৃক সৃষ্ট ফেতনার জনক আব্দুল ওয়াহাব নযদির অনুসারী ওয়াহাবিরা কেবল মদিনায় নয় পবিত্র মক্কায়ও ইসলামের অনেক নিদর্শন ও পবিত্র মাজার ধ্বংস করেছে। এইসব মাজারের মধ্যে রয়েছে মক্কায় জান্নাতুল মোয়াল্লা নামক কবরস্থানে অবস্থিত বিশ্বনবী (সা.)’র স্ত্রী ও  প্রথম মুসলমান  উম্মুল মুমিনিন হযরত খাদিজা (রা.)’র পবিত্র মাজার এবং বিশ্বনবী (সা.)’র  পুত্র হজরত কাসেম (রা.), চাচা হযরত আবু তালিব (রা.) ও দাদা হযরত আবদুল মুত্তালিব (রা.)সহ অন্যান্য পারিবারিক সদস্যদের মাজার।

ওয়াহাবিরা মদীনায় ওহুদ যুদ্ধের ঐতিহাসিক ময়দানে বিশ্বনবী (সা.)’র চাচা শহীদদের নেতা হযরত হামজা (সা.)’র মাজারসহ অন্যান্য শহীদ সাহাবিদের মাজারও ধ্বংস করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে ওয়াহাবিরা সিরিয়ায় বেশ কয়েকজন প্রখ্যাত সাহাবির মাজারে হামলা চালিয়ে সেইসব মাজারের অবমাননা করেছে। তারা বিখ্যাত সাহাবি হজর ইবনে ওদাই (রা.) মাজার ধ্বংস করে তার লাশ চুরি করে নিয়ে গেছে।

ওয়াহাবিরা এভাবে ইসলামের ইতিহাসের নিদর্শনগুলো ধ্বংস করছে ঠিক যেভাবে বায়তুল মোকাদ্দাস শহরে মুসলমানদের পবিত্র প্রথম কেবলা এবং এর আশপাশের  ইসলামী নিদর্শনগুলো ধ্বংসের চেষ্টা করছে দখলদার ইহুদিবাদীরা। ফিলিস্তিনের অনেক ইসলামী নিদর্শন ধ্বংস করেছে ইহুদিবাদীরা। কমনওয়েলথ ব্রিটিশ গোয়েন্দা ড.হামফেরী তার বিখ্যাত বই হ্যামফারের ডায়েরী ও বিখ্যাত আলেম, তৎকালীন জাজিরাতুল আরবের গৃরযান্ড মূখতী আহামদ জিনদানী দাহলান হাফি: এর ১৮৭৮ সালের লিখা কিতাব ফিতনাত আল-ওহাবিয়াত কিতাবে প্রমান করেন ওয়াহাবিদের পৃষ্ঠপোষক সৌদি রাজবংশ (যারা তুর্কি খেলাফতের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে ইংরেজদের সহায়তা করেছে এবং পুরস্কার হিসেবে হিজাজে বংশীয় রাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে) ছিল যারা একটি ইহুদিবাদী ইহুদি গোত্রেরই বংশধর। এরা মুখে মুখে মুসলমান বলে দাবি করলেও সব সময়ই ইসলামের শত্রুদের সহযোগী।

কেউ কেউ বলে থাকেন যে সৌদি রাজ-পরিবার আসলে “দোমনেহ” নামের বিভ্রান্ত ইহুদিবাদী গোষ্ঠীর বংশধর। এই গোষ্ঠী ভণ্ড  ইহুদিবাদী নবী ‘শাব্বিটি জিভি’র অনুসারী। তারা প্রকাশ্যে ইসলামের অনুসারী বলে দাবি করত। কিন্তু তারা বাস্তবে মদ্যপ ও নির্বিচার যৌনাচার বা যৌন অনাচারসহ নানা ঘৃণ্য কাজে অভ্যস্ত যা তারা রিয়াদে হ্যালোইন নামক ইহুদীদের শয়তানের পূজার মত অনুষ্ঠান প্রকাশ্যে পালনের মাধ্যমে প্রমান করে। এরা এখন পবিত্র জাজিরাতুল আরবে প্রকাশ্যে নাচ, গান ও নগ্ন সিনেমা ব্যবসার রমরমা ব্যবসা চালু করেছে। ভারত বর্ষেও এদের অনুসারীরা কখনও মুহাম্মদী, কখনও নামধারী সালাফি, কখনও আহলে হাদিস ও মাদখালী নামে পরিচয় দেয়। এই অপবিত্র সম্প্রদায় এদেশকেও সহীহ আকিদার নামে স্বল্প ও অল্প শিক্ষিত মুসলমানদের ধেকা দিচ্ছে।

তথ্য সূত্র: 
১। হ্যামফারের ডায়েরী, লেখক: ব্রিটিশ গোয়েন্দা ড.হামফেরী।
২। ফিতনাত আল-ওহাবিয়াত, লেখক: বিখ্যাত আলেম আহমাদ জিনদাইনী দাহলান(হাফি:)
৩। ওয়াহাবি মতবাদের বই পুস্তক।





কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে!

  দলিল প্রমাণসহ রবীন্দ্রনাথের কুকর্ম তুলে ধরা হলো, কষ্ট করে পড়ুন—কত জঘন্য ব্যক্তি ছিল সে! এক.   শুনতে খারাপ শোনালেও এটা সত্য, রবীন্দ্রনাথের...