expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

বুধবার, ৪ ডিসেম্বর, ২০২৪

হাসিনা ভারতকে যা দিলো

 ১৬ বছরে হাসিনা ভারতকে যা দিলো




ভারতকে যা দিয়েছি সেটি তারা সারা জীবন মনে রাখবে’—উক্তিটি আওয়ামী লীগ সভাপতি ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার। ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট পদত্যাগ করে যিনি পালিয়ে গিয়ে আশ্রয় নেন ভারতেই। বর্তমানে তিনি ভারতের আতিথিয়েতায় দেশটিতে অবস্থান করছেন। সেই স্বৈরশাসকের উক্তির প্রেক্ষাপটে রাজনৈতিক অঙ্গন, প্রশাসনসহ জনমনে ঘুরপাক খাচ্ছে—ভারতকে কী দিয়েছেন শেখ হাসিনা?

 গত ১৫ বছরে শেখ হাসিনার সরকারের আমলে ভারতের সঙ্গে অন্তত ২০টি চুক্তি ও ৬৬টি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। অন্তবর্তী সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দাবি, এসব চুক্তি ও সমঝোতা স্মারকের অধিকাংশতেই উপেক্ষিত হয়েছে বাংলাদেশের স্বার্থ। ফলে চুক্তিগুলো পর্যালোচনায় উদ্যোগের কথা জানিয়েছেন সরকারের একাধিক উপদেষ্টা।

ভারত ট্রানজিট পেলেও ‘সিঙ্গাপুরের মতো’ হয়নি বাংলাদেশঃ

২০০৯ সালে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর প্রতিবেশি দেশ ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার বিষয়টি জোরেশোরে আলোচনায় আসে। সে সময়ের স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন সরকারের মন্ত্রী ও আমলাদের মুখেমুখে ছিল সিঙ্গাপুর, ব্যাংকক, দুবাইয়ের মতো হয়ে উঠছে বাংলাদেশের অর্থনীতি ও অবকাঠামো। অনেকে দেশটিকে খুব শিগগির ইউরোপ-আমেরিকার দেশের সঙ্গেও তুলনা হবে বলে প্রচারণা শুরু করেন। ‘ভারতকে ট্রানজিট দিলে’ এই সম্ভাবনার দ্বারে খুব অল্প সময়েই পৌঁছাবে বলে আলোচনা হচ্ছিল। যদিওর ওই সময় প্রস্তাবিত ট্রানজিটের বিপক্ষে বিএনপিসহ বিরোধী দল ও মতের মানুষ তুমুল আন্দোলন গড়ে তোলে। তাতে ভ্রুক্ষেপ না করে নিজ সিদ্ধান্তের পথে হেঁটে যায় শেখ হাসিনার সরকার।

নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ভারত ও বাংলাদেশ প্রথম নৌ-ট্রানজিট চুক্তি স্বাক্ষর করে ২০১০ সালের নভেম্বর মাসে। এর আগে নৌ-মন্ত্রণালয় চুক্তির খসড়া পর্যালোচনা করে মতামত চেয়ে তা আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠায়। আইন মন্ত্রণালয় নেতিবাচক মতামত দিয়ে কিছু পর্যবেক্ষণসহ তিন দফায় চুক্তির খসড়াটি নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় ফেরত পাঠিয়ে দেয়।

আইন মন্ত্রণালয়ের লেজিসলেটিভ বিভাগ সূত্র বলছে, নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার বিনিময়ে কোনো ধরনের শূল্ক বা ট্যারিফ আরোপের বিষয়টি চুক্তির খসড়ায় উল্লেখ করেনি। শেষ পর্যন্ত চতুর্থ দফায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনায় আইন মন্ত্রণালয় ভারতকে ট্রানজিট দেওয়ার চুক্তির পক্ষে মতামত দিতে বাধ্য হয়। আইন মন্ত্রণালয়ের অভিমতে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নির্দেশনার কথাটি উল্লেখ করে বলা হয়, ‘বিভিন্ন দেশের ট্রানজিট চুক্তির খসড়া পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, বিনা শুল্কে ট্রানজিট দেওয়ার উদাহরণ (রেফারেন্স) নেই। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের বিশেষ নির্দেশনা ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর মাননীয় অর্থ উপদেষ্টার টেলিফোনে দেওয়া পরামর্শের আলোকে ভারতের সঙ্গে ট্রানজিট চুক্তির খসড়া পর্যালোচনা করে অভিমত দেওয়া গেল। তারপরও চুক্তিটি সম্পাদনের আগে এ সংক্রান্ত আন্তর্জাতিক চুক্তি ও ট্রিটিসমূহ গভীরভাবে পর্যালোচনা ও গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে এ সংক্রান্ত অনুচ্ছেদ অনুসরণ করার অনুরোধ জানানো হলো।’

নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ২০১০ সালের চুক্তির আওতায় ২০১৫ সালে ভারতের সঙ্গে আরও একটি প্রটোকল সই হয়। এ প্রটোকলের মাধ্যমে ভারতকে বাংলাদেশের চারটি নদীপথ ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। এতে করে ভারতের কলকাতা ও মুর্শিদাবাদকে বাংলাদেশের পূর্বে ভারতের আসাম, ত্রিপুরা ও মেঘালয়ের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন করতে পারবে।

পর্যায়ক্রমে ভারত বাংলাদেশের কাছ থেকে সড়ক ও রেল ট্রানজিটও আদায় করে নিয়েছে। সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় এবং রেলপথ মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ অন্যান্য রাজ্যের পণ্যগুলো বাংলাদেশের সড়ক, রেল এবং জলপথে আখাউড়া আশুগঞ্জ ও আখাউড়া হয়ে ত্রিপুরা, আসাম ও মেঘালয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশের স্থল ও জলভাগ ব্যবহার করে নৌপথ, সড়কপথ ও রেলপথে ভারতের এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পণ্য পরিবহণের বিনিময়ে কী পরিমাণ অর্থ বাংলাদেশ সরকার পেয়েছে তার সঠিক তথ্য এখনও পাওয়া যায়নি।

প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ভারতকে ট্রানজিটের বিনিময়ে বাংলাদেশ ‘সিঙ্গাপুর’ হয়নি কেনো? এমন প্রশ্ন ছিল নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তার কাছে। জবাব দেওয়ার জন্য তিনি দুদিন সময় নেন। তৃতীয় দিনে এনটিভি অনলাইনকে ওই কর্মকর্তা জানান, আসলে ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্টের বিনিময়ে আমরা ভারতের কাছ থেকে কী পরমাণ অর্থ পেয়েছি, তার হিসাব করা হচ্ছে। ট্রানজিট চুক্তির পর প্রায় ১৪ বছর পার হতে চলেছে। দেশটি যেহেতু সিঙ্গাপুরের মতো উন্নত হয়নি, তাই শুল্ক ও ট্যারিফ বাবদ খুব বেশি কিছু পেয়েছি তা বলা যাবে না।


চট্রগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের অনুমতিঃ

ট্রানজিট আদায় করে নেওয়ার পর ভারত বাংলাদেশের চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের সুবিধা পায়। নৌপরিবহণ মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বাংলাদেশের এ দুটি বন্দর ব্যবহারের জন্য ভারত বহু বছর ধরেই চেষ্টা চালিয়ে আসছিল। ২০১৫ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে এ সংক্রান্ত প্রটোকল সই হয়। এ প্রটোকলের আওতায় ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) স্বাক্ষরিত হয়। এ চুক্তি অনুযায়ী, চট্টগ্রাম এবং মংলা সমুদ্র বন্দরগুলোতে পৌঁছানো পণ্যসমূহ বাংলাদেশেল ভূখণ্ডের ভেতর দিয়ে সড়ক, রেল এবং জলপথে আখাউড়া হয়ে ত্রিপুরা, তামাবিল হয়ে মেঘালয় ও সুতারকান্দি হয়ে আসামে এবং বিবির বাজার হয়ে সীমান্তপুর (আসাম) আনা করতে পারবে।

২০২৩ সালের ২৫ এপ্রিল ভারতে চট্রগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহারের চুড়ান্ত অনুমতি দিয়ে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রজ্ঞাপন জারি করে। এ প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে সম্পাদিত ‘অ্যাগ্রিমেন্ট অন দ্য ইউজ অব চট্টগ্রাম অ্যান্ড মোংলা পোর্ট ফর মুভমেন্ট অব গুডস ফ্রম ইন্ডিয়া’-এর আওতায় উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিউর (এসওপি) অনুযায়ী ট্রানজিট ও ট্রানশিপমেন্ট পণ্যের কাস্টমস প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে এ আদেশ জারি করা হয়েছে। ফলে ভারত বন্দর দুটি ব্যবহার করে নিজ দেশে পণ্য পরিবহণ করতে পারবে। চট্টগ্রাম-আখাউড়া-আগরতলা, মোংলা-আখাউড়া-আগরতলা, তামাবিল-ডাউকি, শেওলা-সুতারকান্দি এবং বিবিরবাজার-শ্রীমন্তপুর রুটে ১৬টি ট্রানজিট রুট খোলা হয়েছে।


এ চুক্তির আগে শেখ হাসিনা জাতীয় সংসদ ও মন্ত্রিসভার অনুমোদন নেননি বলে অভিযোগ ওঠে। পানি বিশেষজ্ঞরাসহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন এ চুক্তির তীব্র সমালোচনা করে।

পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধতন এক কর্মকর্তা এনটিভি অনলাইনকে বলেন, ফেনী নদীর উৎপত্তি খাগড়াছড়িতে আর বাংলাদেশের ভেতরের ১১৬ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে বঙ্গোপসাগরে গিয়ে পতিত হয়েছে। কাজেই এ নদীর পানির ওপর ভারতের কোনো অধিকার নেই।

এক প্রশ্নের জবাবে ওই কর্মকর্তা জানান, তিস্তা হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক নদী। ভারত চাইলেই একতরফাভাবে এ নদীর পানি প্রত্যাহার করতে পারে না। এটি আন্তর্জাতিক নদী শাসন আইনের স্পষ্ট লঙ্ঘন, কিন্তু ভারত সেটাই করে আসছে বছরের পর বছর ধরে।

এ চুক্তির পর দেশে ফিরে শেখ হাসিনা একটি সংবাদ সম্মেলন করে সমালোচনার জবাব দেন। ভারতকে ফেনী নদীর পানি দেওয়ার পক্ষে সাফাই গেয়ে শেখ হাসিনা সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘ফেনী নদীর উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশ হলেও এটি একটি সীমান্তবর্তী নদী। নদীর কিছু অংশ ভারতের সীমান্তেও লেগেছে। ফলে ত্রিপুরার মানুষকে কিছু পানি খাওয়ার জন্য দিচ্ছি। এ বিশাল নদীর কিছু পানি ভারতকে দেওয়ার ফলে এতো চিৎকার করা হচ্ছে কেনো? ভারত পান করার জন্য কিছু পানি চেয়েছে, আমরা দিয়েছি। এটা নিয়ে কিছু মানুষ খুব সমালোচনা করছে ও লেখালেখি করছে। আর বিএনপি তো সমালোচনা করেই চলেছে। তারা এটা নিয়ে সমালোচনা করছে কোন মুখে?’

মাসে ৭০০ কোটি টাকার ক্ষতি করে মোদির বন্ধু আদানির কাছ থেকে বিদ্যুৎ আমদানিঃ

দেশে বর্তমানে বিদ্যুতের চাহিদা সর্বোচ্চ ১৭ হাজার ৮০০ মেগাওয়াট। দেশের বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতা ২৬ হাজার ৮৪৪ মেগাওয়াট। এ তথ্য বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের। চাহিদার তুলনায় উৎপাদন ক্ষমতা বেশি হওয়ার পরও ভারত থেকে উচ্চ মূল্যে বিদ্যুৎ আমাদিনর চুক্তি করে শেখ হাসিনার সরকার। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০১৭ সালে তার নয়াদিল্লি সফরের সময় ভারতের আদানি পাওয়ারের সাথে চূড়ান্ত বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) স্বাক্ষর হয়েছিল। ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঘনিষ্ঠ বন্ধু হিসেবে পরিচিত গৌতম আদানি বিশ্বের অন্যতম শীর্ষ ধনি ব্যক্তিদের একজন। তিনি আদানি পাওয়ারের মালিক।

২০১৫ সালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির প্রথম ঢাকা সফরের সময় ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির বিষয়ে প্রথম চুক্তি হয়।

দেশের বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের অভিমত, ভারতের আদানির সঙ্গে সম্পাদিত এ চু্ক্তি দেশের স্বার্থে নয়, ভারতীয় প্রতিষ্ঠান আদানির স্বার্থকে প্রাধান্য দিয়েই সম্পাদন করা হয়েছে। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন বারবার দাবি করে আসলেও এ চুক্তিটি প্রকাশ করেনি তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার।

বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের একজন ঊর্ধতন কর্মকর্তা এনটিভি অনলাইনকে জানান, এ চুক্তিতে কিছু নিয়ম ও বিধান বজায় রাখতে পারলে বিদ্যুৎ আমদানি খরচ অনেক কমে যেতো। বর্তমানে প্রতি মাসে প্রায় অতিরিক্ত ৭০০ কোটি টাকা গচ্ছা দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। বিদ্যুৎ আমদানির কয়েকটি অসঙ্গতি তুলে ধরে তিনি বলেন, চুক্তিতে যে ট্যারিফের কথা বলা হয়েছে তা আমাদের স্থানীয় কয়লাচালিত বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে ক্রয়মূল্যের প্রায় দ্বিগুণ। চুক্তি অনুযায়ী, আগামী ২৫ বছরে ভারতের আদানি পাওয়ারকে বাংলাদেশ প্রায় ২৩ দশমিক ৮৭ বিলিয়ন ডলার দিতে হবে, যা বর্তমানে বাংলাদেশের সমুদয় রিজার্ভের চেয়েও বেশি।

বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, ভারতের আদানি পাওয়ারসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বিদ্যুৎ সরবরাহ সংক্রান্ত ১১টি চুক্তি খতিয়ে দেখতে ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের চুক্তি পর্যালোচনা’ সংক্রান্ত একটি কমিটি গঠন করা হয়েছে। এ কমিটি ইতোমধ্যেই ১১টি বিদ্যুৎকেন্দ্র সম্পর্কিত সব নথিপত্র তলব করেছে।

বাংলাদেশের আশীর্বাদপুষ্ট ভারতের রেমেট্যান্স!

বাংলাদেশে লাখো বেকার চাকরির জন্য ঘুরছেন। শিক্ষিত বেকার তরুণরা ভালো চাকরি প্রত্যাশায় অবৈধভাবে ইউরোপের দেশগুলোতে পাড়ি দিতে গিয়ে ভূমধ্যসাগরে নৌকা ডুবিতে প্রাণ হারাচ্ছে। কেউ আবার লিবিয়ার কারাগারে কিংবা থাইল্যান্ডের গহীন অরণ্যে অরণ্যরোধন করে চলেছেন।  এই অবস্থায় বাংলাদেশে ভারতের কয়েক লাখ মানুষ বৈধ ও অবৈধভাবে চাকরি করছেন। ভারতে রেমিট্যান্স প্রদানকারী দেশগুলোর মধ্যে শীর্ষ পাঁচটি দেশের মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের নামও।

বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিসংখ্যান বিভাগ তথ্য বলছে, ‘২০২০-২১ অর্থবছরে দেশে কর্মরত বিদেশিরা ৯ কোটি ৪০ লাখ ডলারের সমপরিমাণ অর্থ নিজ দেশে পাঠিয়েছেন। ২০২১-২২ অর্থবছরে যা দাঁড়ায় ১১ কোটি ৫০ লাখ ডলারে। আর এই টাকা পাঠানোর দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে ভারতীয়রা। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব বলছে, গত অর্থবছরে চার কোটি ৪০ লাখ ডলার রেমিট্যান্স গেছে ভারতে, যা দেশের বাইরে যাওয়া রেমিট্যান্সের মধ্যে সর্বোচ্চ।’

অসংখ্য বাংলাদেশি বেকার থাকলেও বাংলাদেশের শ্রম বাজারে বিপুল সংখ্যক ভারতীয় কাজ করছেন বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক পররাষ্ট্র সচিব ও বর্তমান পররাষ্ট্র উপদেষ্টা মো. তৌহিদ হোসেন৷ গত ২৬ জানুয়ারি এক আলোচনায় তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অবশ্যই আনডকুমেন্টেড ভারতীয়রা কাজ করছে৷ আনঅফিশিয়ালি বাংলাদেশ থেকে পাঁচ বিলিয়ন ডলার ভারতে রেমিট্যান্স যায়৷’ এক প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই সচিব বলেন, ‘ডকুমেন্টেড করলে কিছু ঝামেলা আছে৷ বিভিন্ন কোম্পানি যারা তাদেরকে নিয়োগ দেয় তারা হয়তো ভাবে, বাংলাদেশি নেওয়ার থেকে ভারতীয় নিয়োগ দিলে তাদেরকে এতো অধিকারের ব্যাপারে চিন্তা করতে হয় না৷ তারা যখন তখন চাকরি ছেড়েও যাবে না৷’

বাংলাদেশের চাকরির বাজার নিয়ে কাজ করা সবচেয়ে বড় প্রতিষ্ঠান হলো বিডিজবস ডটকম৷ প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাশরুর বলেন, ‘কর্মরত বিদেশিদের মধ্যে ভারতীয়রাই শীর্ষে৷ তারপরে শ্রীলঙ্কা, চীন, থাইল্যান্ড৷ এদেরমধ্যে শতকরা ১০ ভাগেরও ওয়ার্ক পারমিট নেই৷ অধিকাংশই অবৈধভাবে কাজ করেন৷ তাদের পেমেন্টও এখানে করা হয়না৷ ভারতীয় হলে তার পেমেন্ট ভারতেই দেয়া হয়৷ যারা নিয়োগ করেন তারা এরকম একটা সিস্টেম গড়ে তুলেছেন৷


পাঠ্যপুস্তক বাংলাদেশের ছাপানো হতো ভারতে

প্রতিবছর দেশের স্কুল, মাদরাসা ও কারিগরি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের মাধ্যমিক পর্যায়ের এক কোটি ৮৯ লাখ শিক্ষার্থীর জন্য ২৩ কোটির বেশি কপি বইয়ের প্রয়োজন। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি) এসব পাঠ্য বইয়ের যোগান দেয়। এনসিবিটির বই ছাপানোকে কেন্দ্র করে দেশে একটি বিশাল প্রকাশনা শিল্প গড়ে ওঠে। এ শিল্পের সঙ্গে দেশের কয়েক লাখ মানুষ যুক্ত হয়। কাগজ আমদানি, ছাপাখানা তৈরি, বই ছাপানো, বাঁধাই ও সরবরাহের কাজে সরগরম থাকতো রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর শিক্ষার্থীদের এসব পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর দায়িত্ব ভারতের হাতে তুলে দেওয়া হয়।

শেখ হাসিনার আমলে নেওয়া সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ভারতীয় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কাজ করায় প্রথম দিকে ব্যাপক আন্দোলন করে দেশের ছাপাখানার মালিক ও কর্মীরা।

আগের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী বছরের জন্য প্রাথমিকের প্রায় এক কোটি পাঠ্যবই ছাপানোর কাজ পায় ভারতীয় প্রিতম্বর বুকস প্রাইভেট লিমিটেড ও পাইওনিয়ার প্রিন্টার্স নামের দুই প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান। দেশের প্রকাশকদের বাদ দিয়ে ভারতীয় প্রকাশকদের বই ছাপাতে দেয়ায় ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন অনেকেই।

ব্যাপক সমালোচনার পর গত ২৮ অক্টোবর ভারতীয় প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া বই ছাপানোর কার্যাদেশ বাতিল করে অন্তর্বর্তী সরকার নতুন করে দরপত্র আহ্বানের সিদ্ধান্তের কথা জানায়। ভারতের কব্জা থেকে পাঠ্যপুস্তক ছাপানোর কাজ বাংলাদেশে পুরোপুরিভাবে ফিরে আসায় দেশের প্রকাশনা শিল্প ফের সরগরম হয়ে ওঠবে বলে আশা করছেন প্রকাশনা শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা।

স্বার্বভৌমত্বকে হুমকিতে রেখে ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চু্ক্তি

২০১৪ সালে শেখ হাসিনা টানা দ্বিতীয় মেয়াদে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর আসনে বসার পরপরই ভারতের সঙ্গে একটি প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চু্ক্তি করতে যাচ্ছেন বলে বিভিন্ন মহল থেকে অভিযোগ উঠতে থাকে। এ ধরনের একটি চুক্তি হলে বাংলাদেশ সিকিম ও হায়দারাবাদের মতোই স্বাধীনতা হারানোর ঝুঁকিতে পড়তে পারে। ভূ-রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে সিকিম ও হায়দারাবাদ দুটি স্বাধীন-সার্বভৌম রাষ্ট্র ছিল। বিভিন্ন চুক্তির বেড়াজালে ফেলে ভারত এ দুটি দেশকে নিজেদের অংগ রাজ্য হিসেবে দখল করে নেয়।

বিভিন্ন মহলের আপত্তি ও প্রতিবাদ উপেক্ষা করেই শেখ  হাসিনা ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা চুক্তি সই করেন। ২০১৮ সালের ১২ মে দেশের একটি প্রভাবশালী দৈনিক এ চুক্তি নিয়ে একটি বিষদ প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এতে উল্লেখ করা হয়েছে,  প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় ঋণ বাস্তবায়ন এবং সার্বিক সহযোগিতার বিস্তার ঘটাতে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে মোট চারটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে। বাংলাদেশ সরকারকে ভারত প্রতিরক্ষা খাতে যে ৫০০ মিলিয়ন ঋণ দিয়েছে, কীভাবে সেই অর্থ ব্যয় হবে তার রূপরেখা ঠিক করা ছাড়াও সই হয়েছে আরও তিনটি সমঝোতা স্মারক। বাংলাদেশ হাইকমিশন সূত্রে এ খবর জানা গেছে।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার (পিএসও) লে. জেনারেল মাহফুজ রহমানের নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল এই বিষয়ে বৈঠক করে ভারতের প্রতিরক্ষাসচিব সঞ্জয় মিত্রর সঙ্গে। ঋণের অর্থ কীভাবে খরচ হবে, কোন কোন প্রতিরক্ষাসামগ্রী কেনাবেচা হবে, সহযোগিতার ক্ষেত্র কোথায় কীভাবে বাড়ানো হবে, তা আলোচনার পর একটা কাঠামো বা ‘ফ্রেমওয়ার্ক’ চুক্তি সই হয়। বাংলাদেশের যেসব প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম প্রয়োজন ভারত যদি সেসব তৈরি করে, তাহলে দুই দেশের সম্মতিতে তা কেনাবেচা হবে। বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় তাদের প্রয়োজনভিত্তিক চাহিদাপত্র ভারতকে দেবে, তা পাওয়ার পর ঠিক হবে ভারত কী কী সরবরাহ করতে পারে।


হাইকমিশন সূত্রের খবর, প্রতিরক্ষা খাতে যে ৫০ কোটি ডলার ভারত ঋণ দিচ্ছে, তার পুরোটাই যে ভারত থেকে আমদানির মাধ্যমে খরচ করতে হবে তা নয়। চুক্তির একটা অংশ (প্রায় ৩৫ শতাংশ) তৃতীয় দেশ থেকে সামরিক সরঞ্জাম কিনে বাংলাদেশ খরচ করতে পারে। তবে সে ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে ভারতের অনুমতি নিতে হবে।

দুই দেশের মধ্যে অন্য যে তিনটি সমঝোতা স্মারক সই হয়েছে তার দুটি বাংলাদেশের সঙ্গে ভারতের নৌবাহিনীর। খুলনায় বাংলাদেশ নৌবাহিনীর শিপইয়ার্ডের সঙ্গে যৌথভাবে নৌ-জাহাজ তৈরি করা এই দুই বোঝাপড়ার লক্ষ্য। চতুর্থ সমঝোতা দুই দেশের সামরিক স্কুলের শিক্ষার্থী বিনিময় নিয়ে। এর ফলে শুরু থেকেই পরস্পরকে চেনাজানার সুযোগ হয় এবং সম্পর্কের উন্নতি ঘটে। দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে আগে থেকেই প্রশিক্ষণ বিনিময় চালু আছে। চালু আছে দুই বাহিনীর মধ্যে সামরিক মহড়াও। তার ব্যাপ্তিও ঘটছে। এই সমঝোতা স্মারক তার পরিধি আরও বাড়াবে।

ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সমঝোতার বিষয়টি বাংলাদেশের কাছে যথেষ্টই স্পর্শকাতর। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগে থেকেই এই সমঝোতা নিয়ে বাংলাদেশে বিতর্ক সৃষ্টি হয়। প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হলে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব বিপন্ন হবে কি না, সেই সংশয় বিভিন্ন মহল প্রকাশও করেছিল। কিন্তু সেই সব আশঙ্কা উপেক্ষা করে দুই দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা চুক্তি সই হয়।

ভারতের সঙ্গে প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয়চুক্তিঃ

বাংলাদেশের মূল ভূখণ্ডের তিন পাশের প্রায় পুরোটাই ভারত দ্বারা বেষ্টিত। সেই ভারতের সঙ্গে ৫০০ মিলিয়ন ডলারের প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম ক্রয়চুক্তি সই করে বাংলাদেশ। বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে অত্যন্ত গোপনে এ চুক্তি করেছে বলে অভিযোগ ওঠে। এ চু্ক্তির পর ২০২২ সালে ৬ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে ভারতের প্রতিরক্ষা সচিব বিনয় মোহন কাত্রা সাংবাদিকদের এ চুক্তির কথা জানান।

৫০০ মিলিয়ন ডলারের চুক্তিটির বিষয়ে প্রতিরক্ষা সচিব সাংবাদিকদের বলেন, ‘প্রতিরক্ষা এলওসির (লাইন অব ক্রেডিট) অধীনে প্রথম চুক্তিটি এই সপ্তাহের শুরুতে স্বাক্ষরিত হয়েছে। আমি নিশ্চিত যে, আপনারা বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছেন। সামান্য পরিমাণে হলেও এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রথম পদক্ষেপ।’ তিনি আরও বলেন, ‘প্রতিরক্ষা এলওসি হলেও এটি উন্নয়ন অংশীদারত্ব কাঠামোর একটি অংশ। নিরাপত্তা ও কৌশলগত সহযোগিতার ক্ষেত্রেও এর ভূমিকা আছে।’ 

এই প্রচেষ্টা প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দুই দেশের পারস্পরিক অংশগ্রহণ আরও উন্মুক্ত করবে বলেও আশা প্রকাশ করেন বিনয় মোহন কাত্রা।


সীমান্ত হত্যা বন্ধে শেখ হাসিনার নতজানুনীতি

২০০৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর থেকেই বাংলাদেশের মন্ত্রীসহ ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের নেতাদের বক্তব্য ‘বাংলাদেশ ও ভারতের সঙ্গ স্বামী-স্ত্রীর মতো’ কিংবা ‘বাংলাদেশ-ভারতের দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক রক্তের রাখিবন্ধনে আবদ্ধ। কেউ বলেছেন, বাংলাদেশ ভারত সম্পর্ক এক অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। অথচ, সীমান্তে ভারতীয় বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে অংসখ্য বাংলাদেশি নাগরিক নিহত হয়েছেন। হতভাগা ফেলানিকে গুলি করে হত্যার পর তার মৃতদেহ কাঁটাতারের বেড়ার ওপর ঝুলিয়ে রেখেছে।

ভারতীয় বাহিনীর গুলিতে সীমান্তে মানুষ মারা গেলেও বাংলাদেশের মন্ত্রীরা এর জন্য উল্টো নিহতদেরই দায়ী করে বক্তব্য দিয়েছেন। তারা বিএসএফকে মোটেও দায়ী করতে রাজি ছিলেন না। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে বিএসএফের গুলি করে বাংলাদেশিদের হত্যা বন্ধ করতে হলে ভারতীয় সীমান্তরক্ষীদের দোষ দিয়ে লাভ নেই বলে বক্তব্য দিয়ে ভাইরাল হয়েছিলেন বাংলাদেশের সাবেক খাদ্যমন্ত্রী সাধন চন্দ্র মজুমদার।

২০২০ সালের ২৫ জানুয়ারি এক সভায় সাধারন চন্দ্র বলেন, ‘আসলে আমাদের চরিত্র যদি ভালো না হয়, পরের দোষ দিয়ে লাভ নেই। এখানে দোষ বাংলাদেশি নাগরিকদেরই, সুতরাং সরকারের কিছুই করণীয় নেই। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতাসীন হওয়ার পর ২০০৯ সাল ১৫ বছরে প্রায় পাঁচশ বাংলাদেশি নাগরিককে সীমান্তে গুলি করে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্ত-রক্ষী বাহিনী বিএসএফ। বাংলাদেশ কখনোই এসব হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদ করেনি। বরাবরই শেখ হাসিনার সরকার নতজানু নীতি অনুসরণ করে চলেছে।

দেশে ঢুকে বিজিবি সদস্যকে হত্যার পর লাশ নিয়ে গেলেও চুপ ছিলেন শেখ হাসিনা

২০২৪ সালের ৭ জানুয়ারির নির্বাচনে সুখ্যাতি পায় ‘ডামি নির্বাচন’ নামে। এই ডামি নির্বাচনের মাধ্যমে টানা চারবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর মসনদে বসেন শেখ হাসিনা। এ নির্বাচনেও শেখ হাসিনাকে প্রত্যক্ষ সমর্থন দেয় ভারত। নির্বাচনের আগে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদেরকে ডেকে নিয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ প্রেসক্রিপশন দিয়েছেন বলে দাবি ওঠে। দেশে ফিরে এই দাবি তোলেন তিনি নিজেই। যদিও ভারতের প্রেসক্রিপশন প্রকাশ করতে ভারতীয় কর্তৃপক্ষের নিষেধাজ্ঞা রয়েছে বলেও সাংবাদিকদের জানান জাপা চেয়ারম্যান।

ক্ষমতায় বসে শেখ হাসিনা ভারতের প্রতি কতটা অনুগত, তার পরীক্ষাও নেওয়া হয়। নির্বাচনের দুই সপ্তাহ পর ২২ জানুয়ারি ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) যশোরের শার্শা উপজেলার ধান্যখোলা সীমান্তে বাংলাদেশের ভূখণ্ডের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে বিজিবি সদস্য করে গুলি করে হত্যা করে তাদের মৃতদেহ ভারতে নিয়ে যায়। অবশ্য দুদিন পর ভারত বিজিবি সদস্যের মরদেহ ফেরত দেয়। বাংলাদেশের ভূ-খণ্ডের ভেতরে ঢুকে প্রতিরক্ষা বাহিনীর একজন সদস্যকে হত্যা করে লাশ নিয়ে যাওয়ার ঘটনায় দেশের মানুষের মনে ক্ষোভ জন্মালেও চুপ ছিলেন শেখ হাসিনা। এভাবে পরীক্ষার খাতায় অনেকটাই এগিয়ে যান স্বৈরশাসক।

পরে সচিবালয়ে নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ে সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালের কাছে এ বিষয়ে একজন সাংবাদিক প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ‘আপনারা আমার কাছে এমন একটি প্রশ্ন করেছেন সেটাও মিডিয়াতে আনবেন না। এ বিষয়টি পুরোপুরি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দেখভাল করছেন।’

বিষয়টি নিয়ে ওই সময়ের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদের কাছেও প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। জবাবে হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘এমন কোনো ঘটনা আমি এখনও শুনিনি। আগে জেনে পরে আপনাদের প্রশ্নের জবাব দেব।’ যদিও এরপর এ বিষয়ে আর কোনো উত্তর দেননি হাছান মাহমুদ। তবে, সাবেক নৌপরিবহণ প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরীকে সংবাদ সম্মেলনে এ বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, ‘এটি একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা। এমন ঘটনায় আমাদের বন্ধুপ্রতীম দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান সমর্কে কোনো সমস্যা হবে না।’


পিলখানা হত্যাকাণ্ডের তদন্ত থেকে সরে আসেন শেখ হাসিনাঃ

২০০৯ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি অন্য দিনের মতোই সোনালি আভা ছড়িয়ে পূর্বদিগন্তে সূর্য ওঠে।  কর্মব্যস্ত দিন শুরু হয়েছে মাত্র। তখনই সবাইকে হতবাক করে দিয়ে নরকে পরিণত হয় রাজধানীর বিডিআর সদর দপ্তর। মাত্র ৩৬ ঘণ্টার ব্যবধানে বিডিআররের তৎকালীন মহাপরিচালকসহ (ডিজি) দেশের মেধাবী ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ মোট ৭৪ জনকে হত্যা করা হয় এ বিদ্রোহে।

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের মূল লক্ষ্য ছিল দেশের সীমান্তকে অরক্ষিত করে তোলা। আর এ ন্যাক্কারজনক হত্যাকাণ্ডের পেছনে প্রকাশ্যভাবে প্রতিবেশি দেশ ভারতের ইন্ধন ছিল বলে অভিযোগ ওঠে বিভিন্ন মহল থেকে। এ কারণেই এ ঘটনার আর আন্তর্জাতিক কোনো তদন্ত হয়নি বলেও অভিযোগ ওঠে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সাবেক প্রধান জেনারেল (অব.) মঈন ইউ আহমেদও তদন্তের দাবি জানিয়েছেন বর্তমান অন্তবর্তীকালীন সরকারের কাছে। নিজের ইউটিউভ চ্যানেলে সাবেক এ সেনা প্রধান বলেন, ‘বিডিআর বিদ্রোহ ঘটনার আমি যখন তদন্তের আদেশ দেই, তখন আমাকে বলা হয় যখন সরকার এই বিষয়ে তদন্ত করছে, তখন আমাদের এর প্রয়োজনটা কী? এই তদন্ত করতে ওই সময় সরকারের কাছ থেকে যে সাহায্য প্রয়োজন তা আমরা পাইনি।’

বিডিআর হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারতকে সরাসরি দায়ী করেন প্রতিষ্ঠানটির সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) মেজর জেনারেল (অব.) মইনুল ইসলাম, যিনি বিডিআর হত্যকাণ্ডের পরপরই বিজিবি মহাপরিচালকের দায়িত্ব পালন করেন। একটি গণমাধ্যমকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তাঁকে এ বিষয়ে তিনটি প্রশ্ন করা হয়েছিল।

প্রথম প্রশ্নে ‘ইন্ডিয়ানদের প্রসঙ্গ এলো কেন’র উত্তরে মইনুল ইসলাম বলেন, স্বাধীনতা যুদ্ধ চলাকালে ইন্ডিয়ান বিএসএফ পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে বাংলাদেশের বর্ডারের খুব কাছে অবস্থান নিয়েছিল। যুদ্ধের পর ইন্ডিয়ান বিএসএফ কয়েকটি ঘাঁটি ছেড়েছিল। আবার কোথাও কোথাও ছাড়েনি। বিডিআরের তুলনায় ইন্ডিয়ান বিএসএফ দুর্বল ছিল। কারণ, বিএসএফের কমান্ডিংয়ে আর্মি ছিল না। কিন্তু বিডিআরের কমান্ডে ছিল আর্মি। ইন্ডিয়ান বিএসএফ তাদের ক্যাম্পের সীমা পেরিয়ে বাংলাদেশের বেশ কয়েকটি বিওপিতে অবস্থান করছিল সেই মুক্তিযুদ্ধ চলাকালে। ১৯৭৫ সালের পর ১৯৮১ সালের আগে ইন্ডিয়ান বিএসএফকে বাংলাদেশের বিওপি ছাড়তে বাধ্য করার জন্য বেশ কয়েকটি অপারেশন শুরু হয়েছিল। অপারেশনে ইন্ডিয়ান বিএসএফ পিছু হটতে বাধ্য হয়েছিল। ইন্ডিয়া এটার কাউন্টার কখনো করেনি বা করতে পারেনি। সেই সক্ষমতা বিএসএফের ছিলও না। সেই সুযোগও বিএসএফ পায়নি। ইন্ডিয়া সব সময়ই চেয়েছিল, কীভাবে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে দুর্বল করা যায়। পিলখানা হত্যাকাণ্ড ছিল মোক্ষম সময়। সেনাবাহিনীর সবগুলো মেধাবী কর্মকর্তাকে দুদিনের মধ্যে গুলি করে মেরে ফেলা হলো। এটা সবাই সেভাবেই দেখে। এই বিষয়টিও তখন আমলে নেওয়া জরুরি ছিল, বিভিন্ন পক্ষ থেকে কথাও এসেছিল। এর ওপর পিলখানার পরিস্থিতি বিশেষ করে অস্ত্রাগারের পরিবেশ দেখে পরিষ্কার বোঝাই যাচ্ছিল এটি পরিকল্পিত ভাবেই ঘটানো হয়েছিল এবং সেই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে ঘটনার পেছনের লোকজন ২০-২১ দিন আগেই এখানে ঢুকেছিল।

দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রশ্নে ইন্ডিয়ার সম্পৃক্ততার আলামত ও অন্য কারও সম্পৃক্ততা বিষয়ে জানতে চাইলে মইনুল ইসলাম বলেন, ইন্ডিয়া সবসময়ই বিডিআরের কমান্ডিংয়ে আর্মি এবং ১৯৮১ সালের আগের বেশ কয়েকটি অপারেশন এবং পরবর্তিতেও বেশ কয়েকটি অপারেশন নিয়ে প্রতিশোধপরায়ণ ছিল। তারা চেষ্টাও করেছিল। এখানেই পরিষ্কার, এখানে ইন্ডিয়ার ইন্ধন ছিল। তিনি আরও বলেন, আমরা যখন বিডিআর (বিজিবি) রিফর্ম করি তখনও ইন্ডিয়ানদের অনেক বাধার মুখে পড়েছি। আর্মি কেন বিডিআরকে কমান্ড করে এটাও ইন্ডিয়া সহ্য করতে পারত না। সঠিক তদন্ত করলে নিশ্চয়ই বেরিয়ে আসত। আরো অনেকের সম্পৃক্ততা ছিল। তা-ও বেরিয়ে আসত।


মইনুল ইসলাম বলেন, স্থানীয় রাজনৈতিক একটি পক্ষের সম্পৃক্ততা ছিল। বিদ্রোহের আগে বেশ কয়েকবার স্থানীয় ক্ষমতাসীন দলের নেতারা সদর দপ্তরে বিভিন্ন ক্যাম্পে দায়িত্ব পালনকালে অসদুপায় অবলম্বনের দায়ে বিডিআরের অভিযুক্ত জওয়ানদের পক্ষে দাবি নিয়ে যেতে দেখা গেছে। বিদ্রোহের দিন বিডিআরের কিছু লোক রিভেঞ্জ (প্রতিশোধপরায়ণ) ছিল। তাদের সাথে আশপাশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের লোকজন ছিল। কেন বিডিআর আর্মি অফিসার দ্বারা পরিচালিত হবে- এসব নিয়ে কথাও বলেছেন তারা। ঘটনার দিন পিলখানায় গোলাগুলি চলছে, আশপাশের সাধারণ মানুষ জীবন নিয়ে নিরাপদে সরে যাচ্ছিলেন। আর পাশেই বিদ্রোহীদের পক্ষে আজিমপুরে ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দিয়ে আওয়ামী লীগ রাস্তায় মিছিলও করেছে। নিশ্চয়ই তাদেরও সমর্থন ছিল এই ঘটনায়। আর তারাও নিশ্চিত ছিল তাদের ওপর কেউ গুলি করবে না। সেগুলোও তদন্ত করা হয়নি। সবকটি পক্ষ মিলেই আর্মিকে শেষ করে দেয়ার ষড়যন্ত্র করেছিল।

ভারতের সঙ্গে ‘গোলামি’র রেল চুক্তিঃ

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলো থেকে পণ্য ও মালামাল আনার-নেওয়ার ক্ষেত্রে বেশ বেগ পেতে হয় ভারতকে। মাঝখানে বাংলাদেশ থাকায় দেশের অন্য অংশের সাথে রাজ্যগুলোর পণ্য পরিবহণ বেশ ব্যয়বহুল এবং সময়সাপেক্ষ। সেই কারণেই বাংলাদেশের কাছে পণ্য ট্রানজিট সুবিধা চেয়ে আসছিল ভারত।

ছাত্র-জনতার তীব্র গণআন্দোলনে ক্ষমতা হারিয়ে ভারতে পলায়নের মাত্র দুই মাস আগে দেশটিতে যান শেখ হাসিনা। ওই সফরটিই ছিল শেখ হাসিনার শেষ আনুষ্ঠানিক সফর। এ সফরে তিনি ভারতকে রেল ট্রানজিট প্রদানে সম্মতি দিয়ে আসেন। এটিকে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক সংগঠন ‘গোলামির চুক্তি’ হিসেবে চিহ্নিত করে তীব্র সমালোচনা করেন। তারা চুক্তিটি প্রকাশ করারও দাবি জানান। ভারতকে একতরফা রেল ট্রানজিট দেওয়ার বিষয়ে দেশি ও বিদেশি বিভিন্ন গণমাধ্যম বিশ্লেশষণধর্মী সংবাদ প্রকাশ করে।

রেল ট্রানজিট চুক্তির পর শেখ হাসিনা কিংবা আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে অত্যন্ত গোপনীয়তা রক্ষা করা হলেও ভারতের পররাষ্ট্র সচিব বিনয় মোহন কোয়াত্রা সাংবাদিদের জানান, ‘এই ট্রানজিট চালু হলে নিজ দেশের মধ্যে রেলপথে দূরত্ব অনেকখানি কমবে ভারতের।


ভারতের স্বার্থ রক্ষায় রামপালে বিদ্যুৎকেন্দ্র

বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞদের দেওয়া তথ্যমতে, ভারতের ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার করপোরেশনের (এনটিপিসি) সেই দেশের ছত্তিশগড়ে ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার প্রস্তাব দিয়েছিল। সেই দেশের পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের গ্রিন প্যানেলের ইআইএ রিপোর্ট প্রকল্পটিকে পরিবেশের জন্য মারাত্মক হুমকি বলে প্রতিবেদন দাখিল করায় ভারত সরকার এ প্রকল্পটি সেদেশের পরিবর্তে বাংলাদেশে করার প্রস্তাব করে।

২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছিল সেখানে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতার ভিত্তিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং সঞ্চালনের একটি প্রস্তাব ছিল। এই প্রস্তাবের ভিত্তিতে ২০১২ সালে সুন্দরবনের নিকটবর্তী রামপালে দুটি ৬৬০ ইউনিট মিলে মোট ১৩২০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কয়লাভিত্তিক তাপ-বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠার জন্য ভারতের ন্যাশনাল থারমাল পাওয়ার করপোরেশনের (এনটিপিসি) সঙ্গে বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের আগেই ২০১০ সালের ২৭ ডিসেম্বর কোনোরূপ পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ না করেই প্রকল্পের জন্য জমি অধিগ্রহণের আদেশ জারি করা হয় এবং অবকাঠামো উন্নয়নের রূপরেখা চূড়ান্ত করা হয়।

সুন্দরবনের সঙ্কট দূরত্বের মধ্যে এই কয়লাভিত্তিক তাপ-বিদ্যুৎ প্রকল্পের পরিবেশ ঝুঁকি বিবেচনা করে বাংলাদেশের পরিবেশবিদরা প্রতিবাদ করেন এবং এক পর্যায়ে পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ সার্টিফিকেট না নিয়ে এই প্রকল্প চালুর বিষয়ে হাইকোর্ট রুল জারি করে। এমতাবস্থায় তড়িঘড়ি করে পরিবেশ অধিদপ্তরের ইনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট রিপোর্টে এই প্রকল্পকে পরিবেশবান্ধব বলে সার্টিফিকেট দেয় এবং সেই প্রতিবেদন অনলাইনে আপলোড করে জনগণের মতামত চাওয়া হয়। বিতর্কিত ইআইএ প্রতিবেদনকে সঠিক ধরে নিয়েই ঢাকায় ভারতের সঙ্গে রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের জন্য চূড়ান্ত চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। স্বাক্ষরিত তিনটি চুক্তির মধ্যে রয়েছে- যৌথ উদ্যোগ চুক্তি, বাস্তবায়ন চুক্তি ও বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি।

তীব্র সমালোচনাকে পাশ কাটিয়ে ২০২২ সালের শেষ দিকে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করা হলেও কারিগরি ত্রুটি, কয়লা সংকট ও অন্যান্য কারণে এখন পর্যন্ত মোট সাতবার বন্ধ হয়ে যায়। বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা বলেছেন, ‘এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি মূলত ভারতের আবদার রক্ষার জন্যই করা হয়েছে। এটি বাংলাদেশেল জন্য কখনোই লাভজনক হবে না। এটি দেশের জন্য একটি বিশাল বোঝা ছাড়া আর কিছু্ই নয়।


এদিকে, এ বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালুর আগে সরেজরিমনে গিয়ে দেখা গেছে, এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের নির্মাণ শ্রমিক থেকে শুরু করে কারিগরি কাজে যুক্তদের মধ্যে বেশিরভাগই ছিলেন ভারতের নাগরিক। খুব সামান্য সংখ্যকই বাংলাদেশের নাগরিক। ভারতীয় নাগরিকদের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে দৈনন্দিন প্রয়োজনের ব্যবহৃত সবকিছুই শ্রমিকরা ভারত থেকে আমদানি করেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।

ভারতীয়দের দখলে তুলে দেওয়া হয় বাংলাদেশের আইটি

তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিখাতে ভারতের একচেটিয়া প্রাধান্য রয়েছে। বিশেষ করে গত ১৫ বছরে বাংলাদেশের আইটি খাতে এখন ভারতীয় নাগরিকদের রাজত্ব চলছে বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিভিন্ন গণমাধ্যম। আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম ডয়েচে ভেলে এ সংক্রান্ত এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করে, এসব খাতে এখন প্রায় পাঁচ লাখ ভারতীয় নাগরিক কাজ করছে। এর মধ্যে শতকরা মাত্র ১০ ভাগ বৈধভাবে। বাকি ৯০ ভাগই অবৈধভাবে কাজ করছে। পোশাকের বায়িং হাউসগুলো নিয়ন্ত্রণ করে ভারতীয়রা৷

চীনকে পাশ কাটিয়ে ভারতকে তিস্তা প্রকল্প দেওয়ার পরিকল্পনা

ভারত তিস্তা নদীর পানি একতরফাভাবে প্রত্যাহার করে নেওয়ার ফলে বাংলাদেশ উত্তরাঞ্চলে দিনদিন মরুময়তা তৈরি হচ্ছে। এতে কৃষি ফলন মারাত্মক ব্যহত হচ্ছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্যই বাংলাদেশ তিস্তা মহাপ্রকল্প নামে একটি প্রকল্প গ্রহণ করে। চীন এ প্রকল্পে অর্থায়ন ও কারিগরি সহায়তা প্রদানে আগ্রহ প্রকাশ করে। এরই ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড এবং চীনের পাওয়ার কনস্ট্রাকশন করপোরেশন অব চায়না বা পাওয়ার চায়নার মধ্যে ২০১৬ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়। অথচ, চলতি বছরে শেখ হাসিনা ভারত সফর করে দেশে ফিরে হঠাৎ করেই তিস্তা প্রকল্পের বিষয়ে উল্টো কথা বলা শুরু করেন। তিনি তিস্তা প্রকল্প ভারতকে দিয়ে করাবেন বলে ঘোষণা দেন। শেখ হাসিনা বলেন, ‘তিস্তা প্রকল্প আমাদের করতে হবে। এ নিয়ে চীন-ভারত দুই দেশই আমাদেরকে প্রস্তাব দিয়েছিল। এরই মধ্যে চীন সম্ভাব্যতা যাচাই করেছে। ভারতও সম্ভাব্যতা যাচাই করবে। দুই দেশের সম্ভাব্যতা যাচাই শেষে আমাদের জন্য যুক্তিযুক্ত হবে আমরা সেটা নেব।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমি এখানে বেশি প্রাধান্য দেবে যে এটা ইন্ডিয়া করুক। কারণ তিস্তার পানিটা ইন্ডিয়া আটকে রেখেছে। তাদের কাছ থেকে যদি আমাদের আদায় করতে হয় তাহলে এই প্রজেক্টের কাজ তাদেরই করা উচিত। তারা প্রজেক্ট করে যখন যে প্রয়োজন তারা দেবে। এটা তো একটা ডিপ্লোমেসি।’

হাসিনা জানান, ‘এই প্রকল্প বাস্তবায়নে চীন তো রেডি, কিন্তু আমি চাচ্ছি এটা ইন্ডিয়া করে দিক। তাহলে এই প্রজেক্টের জন্য যা যা দরকার, ইন্ডিয়া দেবে।’


বাংলাদেশে ভারতীয় টিভি চ্যানেলের অবাধ সম্প্রচার

বাংলাদেশ ও ভারত অকৃত্রিম বন্ধুত্বের সব সীমা অতিক্রম করেছে বলে প্রতিনিয়ত বলতেন শেখ হাসিনাসহ তার মন্ত্রিসভার সদস্যরা। যদিও বহু চেষ্টার পরও ভারতে বাংলাদেশের কোনো টিভি চ্যানেলের সম্প্রচার চালু করা সম্ভব হয়নি। অপরদিকে, বাংলাদেশে ভারতের একশটিরও বেশি টিভি চ্যানেল সম্প্রচার চালিয়ে আসছে। সেইসঙ্গে শত কোটি টাকার বিজ্ঞাপন ব্যবসাও ভারতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোই নিয়ন্ত্রণ করেছে।

ভারতের জি ও স্টার গ্রুপের দুটি চ্যানেল ‘জি বাংলা’ ও ‘স্টার জলসা’ আলাদা বিমে বাংলাদেশে মাত্র তিন লাখ টাকায় ডাউনলিংক করে কোটি কোটি টাকার বিজ্ঞাপন নিয়েছে। বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলের মালিকদের হিসাবে, ২০১৬ সাল পর্যন্ত প্রায় ৭০ কোটি টাকার বিজ্ঞাপন পেয়েছে এ দুটি চ্যানেল। অথচ, বাংলাদেশ কেবল টেলিভিশন নেটওয়ার্ক পরিচালনা আইন, ২০০৬-এর ১৯ (১৩) ধারায় বলা হয়েছে, বাংলাদেশের দর্শকদের জন্য বিদেশি কোনো টিভি চ্যানেলের মাধ্যমে বিজ্ঞাপন প্রচার করা যাবে না।

বাংলাদেশ ছিল ভারতের উম্মুক্ত বাজারঃ

২০২৩ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ঘাটতি ছিল ৭১৬০.৮১ মিলিয়ন ডলার। এমন বাণিজ্য ঘাটতি বিশ্বে বিরল ঘটনা বলে মনে করেন অর্থনীতিবিদরা। তাদের মতে, বাংলাদেশ ভারতের একটি উম্মুক্ত বাজারে পরিণত হয়েছিল গত ১৫ বছরে।

দেশের চাহিদা অনুযায়ী অনেক পণ্যই আমদানি করতে হয়। কিন্তু বিকল্প বাজার না খুঁজে সবকিছুই ভারত থেকে কিংবা ভারতের মাধ্যমে আমদানি করা শেখ হাসিনার একটি প্রবণতা হয়ে দাঁড়িয়েছিল বলেও জানান অর্থনীতিবিদরা।

বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সূত্র জানিয়েছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছর স্থলপথে দু’দেশের মধ্যে এক কোটি ৬০ লাখ ২৮ হাজার ৮০০ টন পণ্য আমদানি-রপ্তানি হয়। এর মধ্যে ভারত থেকে আমদানি হয় এক কোটি ৫০ লাখ ৫০ হাজার ৩৬৩ টন পণ্য। এ সময় বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি হয় ৯ লাখ ৭৮ হাজার ৪৩৮ টন পণ্য। অর্থাৎ প্রায় ৯৪ শতাংশই ভারতের অনুকূলে। ভারত থেকে আমদানি হয় এমন পণ্যের তালিকায় রয়েছে তুলা, সুতা, বস্ত্র, শিল্পের বিভিন্ন রাসায়নিক, পাথর, আদা-রসুন-পেঁয়াজ, সব ধরনের মসলা, বিভিন্ন ধরনের সবজি ও ফল।


বাংলাদেশের গ্যাস ক্ষেত্র বিনা মূল্যে ভারতকে প্রদানঃ

স্বৈরাচার হাসিনা বিগত ১৬ বছরে বাংলাদেশের ১৯ নং সালদা গ্যাসক্ষেত্র হতে কাশিরামপুর পয়েন্ট হতে ভারতের ত্রিপুরার সীমান্তবর্তী কোনাবনের ড্রিলিং পয়েন্টে ও কসবার তারাপুর পয়েন্ট হতে একই রাজ্যের সীমান্তবর্তী কমলা সাগর থানার হরিয়াবাহা ড্রিলিং পয়েন্টে সরাসরি এঙ্গেল পাইপ ড্রিলিংয়ের মাধ্যমে চুরিনকরার সুযোগ করে দিয়ে বাংলাদেশের এই দুটি পয়েন্ট পরিত্যাক্ত ঘোষনা করেছে, অথচ এই  দুটি খনি হতে ৯৯ বছর চট্টগ্রাম বিভাগের বর্ধিত চাহিদা সহ সম্পূর্ণ চাহিদা পূরন হওয়ার কথা।


সূত্র: এনটিভি নিউজ, গুগল, ওনিওন সার্চ।

1 টি মন্তব্য:

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

মাদখালিদের বিচ্যুতি ও 'বিদা': ভুলভাবে একাধিক ধর্মনিরপেক্ষ শাসককে একক খিলাফত হিসাবে একই শরী' অধিকারের অধীনে রাখা। "মাদখালি" শব্দটি এসেছে শায়খ রাবী ইবনে হাদি আল-মাদখালির মতামত থেকে, যিনি একজন সৌদি পণ্ডিত যিনি মুসলমানদের বিষয়ে (তাদের দলটির সশস্ত্র বাহিনী ব্যবহার করে) ক্ষমতা অধিষ্ঠিত করার সময় যারা নিজেদেরকে মুসলিম হিসাবে পরিচয় দেয় তাদের কঠোর আনুগত্য প্রচার করেছিলেন - আরও বিশেষ করে, আরবের মুসলমানদের উপর সৌদি গোষ্ঠীর নিয়ন্ত্রণ। রাবীই প্রথম বা একমাত্র পণ্ডিত ছিলেন না যিনি এই ধরনের যুক্তি দেন, কিন্তু যারা 'শাসক' উপাধি গ্রহণ করেন তাদের আনুগত্যের জন্য একজন উল্লেখযোগ্য উকিল হয়ে ওঠেন - এবং পূর্বে শোনা যায় না এমন মতবাদ চালু করেছিলেন: মুসলিম জামাতের একাধিক শাসক থাকতে পারে, এবং এমনকি এই শাসকরা (ধর্মনিরপেক্ষ) কুফর আইন প্রণয়ন করলেও তারা এখনও মুসলিম এবং বৈধ, এবং জনসমক্ষে শাসকের খারাপ কর্মের (বা কুফর আইন) নিন্দা করা নিষিদ্ধ। মাদখালিদের বিচ্যুতি ও ‘বিদা’কে এইভাবে সংক্ষেপে বলা যেতে পারে, মাদখালি: মুসলমানদের দাবি একাধিক শাসককে মেনে নেওয়া দাবি করুন যে মুসলমানরা প্রকাশ্যে এই শাসনের বিরুদ্ধে ভালোর আদেশ এবং মন্দ নিষেধ করতে পারে না দাবি করুন যে ধর্মনিরপেক্ষ শাসনব্যবস্থাগুলি আল্লাহর আইনের উপর কুফর আইন প্রণয়ন করে, তারা এখনও মুসলিমদের আনুগত্যের জন্য ইসলামীভাবে বৈধ শাসনব্যবস্থা রয়ে গেছে। এটি ইসলামী শরীয়াহ এবং রাজনৈতিক ফিকাহ থেকে ভিন্ন, যা আদেশ দেয়: মুসলমানদের কেবল একজন ইমাম (নেতা) থাকতে পারে, যদি দ্বিতীয় নেতা থাকে (পরে বায়আহ দেওয়া হয়), সে হয় অবৈধ বা – যদি সে অন্যের সাথে একযোগে নেতৃত্ব পেয়ে থাকে, তাহলে কোন নেতা নেই এবং মুসলমানরা পাপী। নৈরাজ্যের অবস্থা (গিয়াতুল উমামে ইমাম জুওয়াইনির ব্যাখ্যা দেখুন) কোনো মুসলমানকে জনগণের দ্বারা বায়আত দেওয়া একজন যথাযথভাবে নিযুক্ত খলিফা/ইমামের বৈধতা নষ্ট করার অনুমতি নেই। যতক্ষণ খলিফা শুধুমাত্র কুরআন ও সুন্নাহ থেকে ইসলামী আইনকে সমর্থন করেন, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি বৈধ এবং আনুগত্য করতে হবে যতক্ষণ তিনি শাসনের অবস্থানে আছেন। এমনকি যদি (আহুল সুন্নাহ অবস্থান অনুযায়ী, কিন্তু ইবাদি অবস্থান অনুযায়ী নয়) সে পাপ করে, এবং মানুষের অধিকার (অর্থাৎ অত্যাচার) ভঙ্গ করে। খলিফা তার পক্ষে কাজ করার জন্য ডেপুটি নিয়োগ করতে পারেন, উদাহরণস্বরূপ, আঞ্চলিক গভর্নর (উলা) এবং সেনাবাহিনীর স্কোয়াড্রনের কমান্ডার (আমির)। এরা হলেন আমির যাদের আনুগত্য করতে হবে। যাইহোক, এই 'নেতারা' শুধুমাত্র ডেপুটি যাদের কর্তৃত্ব খলিফা কর্তৃক আনুষ্ঠানিকভাবে নিযুক্ত হওয়ার শর্তযুক্ত - তারা খিলাফত থেকে পৃথক কর্তৃপক্ষ নয়, বা তার থেকে স্বাধীনও হতে পারে না। যদি ইসলামী ফিকহের অবস্থানগুলি নতুন বা অদ্ভুত শোনায়, তবে এটি নতুন নয় (এগুলি ধ্রুপদী ইসলামী পণ্ডিতদের দ্বারা লিখিত রাজনৈতিক ফিকহের প্রতিটি বইতে রয়েছে) বরং ঔপনিবেশিকতার পরে আজ মুসলিম অজ্ঞতার প্রসারের কারণে। মোটকথা, মাদখালিদের বিচ্যুতি এবং ‘বিদা’ হল, তারা আধুনিক ধর্মনিরপেক্ষ ‘শাসকদের’ গোষ্ঠীকে মুসলমানদের উপর একই ইসলামী আইনগত বাধ্যবাধকতা, 100% ইসলামিক আইনের সাথে একক খিলাফত হিসাবে বিবেচনা করে। ঔপনিবেশিকতার পরে রাজনীতি এবং শাসন সম্পর্কে মুসলমানদের অজ্ঞতা এবং অগভীর উপলব্ধিকে কাজে লাগিয়ে মাদখালিরা যেভাবে এটি করতে সক্ষম হয়। এর কারণ হল মুসলিম বিশ্বের অধিকাংশ মুসলমান তার সৈন্য, প্রশাসক বা জনসাধারণকে আদেশ জারিকারী নেতার (অর্থাৎ একটি নির্বাহী কমান্ড) এবং সমাজের জন্য আইন প্রণয়নের মধ্যে পার্থক্য দেখতে পায় না যা অধিকারের জন্য সরকারী ঘোষিত মানদণ্ড হিসাবে দাঁড়ায়। এবং মানুষের মধ্যে ভুল, বৈধ (হালাল) বা অবৈধ (হারাম)। অধিকন্তু, ইসলামিক পরিভাষায় মানুষের অগভীর বোঝার অর্থ হল, আদালতের মামলার বিচার (অর্থাৎ একটি মামলার রায়) থেকে শুরু করে ইসলামিক পাঠ্যে ইয়াহকুমু (যেমন হুকম, রায় বা রায়) ব্যবহার করা যেতে পারে তা অনেকেই বুঝতে পারে না। সমাজের আইন হিসাবে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার হুকম (আহকাম)। উভয়ের অবস্থাই এক নয়! একজন দুর্নীতিগ্রস্ত নেতা একটি একক আদালতের মামলায় একটি খারাপ রায় দেওয়ার মতো নয় যে তারা আইন প্রণয়ন করে যা আমাদের কুরআন ও সুন্নাহর বাইরে - এমনকি একটি 'ইয়াহকুমু' উল্লেখ থাকলেও। যাইহোক, পন্ডিত সহ অনেক মুসলিম আছেন যারা পার্থক্য জানেন এবং তাদের মধ্যে কেউ যদি মুসলমানদেরকে এটি মনে করিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেন, ধ্রুপদী ইসলামী অবস্থানের দিকে ইঙ্গিত করে এবং মুসলমানদেরকে ক্লাসিক্যাল অবস্থান (এবং হাদিস এবং কুরআন) একটি লেন্স হিসাবে ব্যবহার করার আহ্বান জানান। আজ মুসলমানদের অবস্থা বিচার করুন, মাদখালিরা তাদের বিরুদ্ধে নিম্নলিখিত প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ব্যবহার করবে: তাদেরকে 'বিপথগামী' এবং 'খাওয়ারিজ' বলাধ্রুপদী ইজমা এবং ইসলামিক বোঝাপড়ার পক্ষে ওকালতি করার সহজ 'অপরাধ' - যেমন, শুধুমাত্র মুসলমানদের দ্বারা প্রদত্ত একক খলিফা বায়াহ্ (আনুগত্যের অঙ্গীকার) বৈধ, এবং তারপরও শুধুমাত্র যদি এটি শুধুমাত্র কুরআন ও সুন্নাহ থেকে আইন প্রণয়ন করে। তদুপরি, মাদখালিরা লোকেদেরকে বিচ্যুত 'তাকফিরি' বলে নিন্দা করতে পছন্দ করে এই বলে যে যে কেউ অন্য কুরআন ও সুন্না থেকে আইন প্রণয়ন করে সে বড় কুফর করেছে, ধ্রুপদী এবং আধুনিক (সালাফী) পণ্ডিতরাও একই অবস্থানে থাকা সত্ত্বেও। মাদখালিরা এইসব কথা বলার কারণ হল, ঔপনিবেশিকতার পর, নতুন ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদী রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠানের সাথে, ইসলামী প্রতিষ্ঠানগুলোকে বিলুপ্ত করা এবং খিলাফতপন্থী (উসমানীয়) পন্ডিতদের তাদের অবস্থান থেকে অপসারণ করার পরে, বেশিরভাগ মুসলমান ভুলে গিয়েছিল যে কীভাবে ইসলামী রাজনৈতিক ফিকহ কাজ করে এর সাথে মিলিয়ে, বেশিরভাগ মুসলমান যারা রাষ্ট্রকল্পের কথা বলে তারা এমনকি একটি রাষ্ট্র কীভাবে কাজ করে তাও বুঝতে পারে না, তাই তারা জানে না যে কীভাবে পণ্ডিতদের উদ্ধৃতি এবং হাদিসগুলিকে ব্যাখ্যা করতে হয় যেমন একটি খলিফার মধ্যে পার্থক্যের মত একটি একক আদালতে খারাপভাবে বিচার করা। মামলা, এবং একটি 'শাসক' ধর্মনিরপেক্ষ কুফর আইনকে দেশের আদর্শ আইন হিসাবে আইন প্রণয়ন করে। মাদখালিরা একমত হবেন যে, কেউ দুই দেবতা বলে ঘোষণা করছে – কোনো জোর বা উন্মাদনা ছাড়াই- ইসলাম ত্যাগ করেছে। এবং তবুও, তাদের ধর্মনিরপেক্ষ মানসিকতা বুঝতে পারে না যে একজন শাসক কুফর আইন ঘোষণা করা তাদের (বিকল্প মতামত) হালাল ও হারামের একটি সর্বজনীন ঘোষণা, যা শিরক (এই সংযোগ নিয়ে আলোচনা করা একজন পণ্ডিতের জন্য নীচে দেখুন)। ধ্রুপদী পণ্ডিতদের মূলধারার উপলব্ধি হল: যে কেউ অনৈসলামিক আইন প্রণয়ন করে সে কাফের। আহলে সুন্নাহর চারটি মাযহাব, বা ইবাদিয়্যাহ ("আহল উল হক ওয়াল ইস্তিকামাহ" যে নামটি তারা গ্রহণ করে) বা শিয়া মাযহাবের যেকোনো মাযহাবের মধ্যেই এই বিষয়ে কোনো মতভেদ নেই। (বারো, ইসমাইলি [দাউদি বোহরা], এবং জাইদি)। মাদখালিরা যখন পণ্ডিতদের উদ্ধৃতি বা নবী (ﷺ) এর হাদীস ভুল পড়ে তখন কী ভুল করছে? মাদখালিরা হাদিস বা ধ্রুপদী পণ্ডিতদের উদ্ধৃতিতে শব্দগুলি লুকিয়ে বা অস্পষ্ট করার প্রবণতা রাখে, অনেকে এমনকি ইবনে তাইমিয়াকে উদ্ধৃত করে মনে করে যে তিনি তাদের সমর্থন করেন, যখন বাস্তবে তারা সুবিধাজনকভাবে সেই অংশগুলির উপর চকচকে করে যেখানে তিনি স্পষ্টভাবে বলেছেন: "সুতরাং যে ব্যক্তি নিজেদের মধ্যে বিবাদের বিষয়ে আল্লাহ ও তাঁর রসূলের ফয়সালার প্রতি অঙ্গীকার করে না, তবে আল্লাহ তাঁর নিজের নামে শপথ করেছেন যে তিনি বিশ্বাসী নন..." [ইবনে তাইমিয়া, মাজমু আল ফাতাওয়া] তো কেমন যাচ্ছে? কেন মানুষ আজ স্পষ্ট হাদিস ও কোরআনের সূরাগুলোকে ভুল বুঝছে? এবং আজ আমরা ধর্মনিরপেক্ষ শাসকদের এবং তাদের কুফর আইন সম্পর্কে কি করব? উত্তর হল প্রসঙ্গ (অর্থাৎ একটি রাষ্ট্র কী এবং এটি কী করে), এবং অন্যান্য হাদিস এবং কুরআনের আয়াতের সাথে ক্রস-রেফারেন্সিং। একটি রাষ্ট্রে এবং খিলাফতে, শাসন ব্যবস্থা করে: 1. নিয়ন্ত্রিত করার জন্য আইন প্রণয়ন - শাস্তি বা পুরস্কারের হুমকি দ্বারা - জনগণের ক্রিয়াকলাপ (শাসন সহ) 2. আদালতে বিবাদের বিচার করা 3. কার্যনির্বাহী পদক্ষেপ (সেনা, পুলিশ মোতায়েন ইত্যাদি) 4. নেতা একটি ব্যক্তিগত ব্যক্তি হিসাবে কাজ করে, যেমন ব্যক্তিগত জীবন আছে। একজন নেতা যে পাবলিক পাপ করে বা অত্যাচারী তাকে ক্ষমতা থেকে অপসারণ করা যেতে পারে - তবে শুধুমাত্র 'আহল উল হাল ওয়াল আকদ' দ্বারা সুন্নি ফিকহে, খলিফা যদি ব্যক্তিগত জীবনে গুনাহগার হন, গোপন রাখা হলে তা জনসাধারণের ব্যবসা নয়। কিন্তু যদি খলিফার পাপ জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়, অথবা তিনি ইচ্ছাকৃতভাবে খারাপ নির্বাহী কাজ করেন (যেমন তার সৈন্যদের অন্যায়ভাবে কাউকে হত্যা করার আদেশ দেন), বা ইচ্ছাকৃতভাবে আদালতের মামলার বিচার করতে ভুল করেন, তাহলে তাকে আদালতে নিয়ে যেতে হবে এবং বিচার করতে হবে। তাকে হয় শাস্তি দেওয়া হতে পারে (অপরাধের উপর নির্ভর করে), অথবা সাধারণভাবে অভিশংসিত হতে পারে (মাহখামাত উল মাদালিমের একজন উপযুক্ত বিচারক দ্বারা অপসারিত - অন্যায় কাজের আদালত), অথবা উভয়ই। 'ইমাম যদি উম্মাহর অধিকার পূর্ণ করেন... তিনি তাদের অধিকার ও কর্তব্যের ব্যাপারে আল্লাহর দাবি বাস্তবায়ন করবেন: সেক্ষেত্রে যতক্ষণ পর্যন্ত তার রাষ্ট্র থাকে ততক্ষণ তাকে আনুগত্য করা এবং সমর্থন করা তাদের কর্তব্য। পরিবরতিত না. একজন ব্যক্তির অবস্থার দুটি পরিবর্তন তাকে ইমামতি থেকে বাদ দেবে: এর মধ্যে প্রথমটি হল শালীনতার অভাব… সে নিষিদ্ধ কাজ করে, মন্দের অনুসরণ করে, তার লালসা দ্বারা শাসিত হয় এবং তার আবেগের অধীন হয়; এটি একটি নৈতিক বিচ্যুতি হিসাবে গণ্য হয় যা তাকে ইমামতি গ্রহণ করা বা এটি চালিয়ে যাওয়া থেকে বাদ দেয়। এভাবে ইমাম হয়েছেন এমন কারো সাথে এ ধরনের আচরণ হলে তাকে সরিয়ে দেয়া হয়। যদি সে তার শালীনতা পুনরুদ্ধার করে তবে নতুন চুক্তি ছাড়া সে ইমামতিতে ফিরে যেতে পারবে না। ইমাম মাওয়ারদী,আখম উল সুলতানিয়া এর কারণ হল মুসলমানদের একজন অন্যায্য খলিফা থাকতে পারে না, তবে তাকে অপসারণের একমাত্র উপায় হল কুরআন উদ্ধৃত করে একজন বিচারকের দ্বারা তাকে শান্তিপূর্ণভাবে অভিশংসন করা উচিত (2:124)। 'এবং [উল্লেখ করুন, হে মুহাম্মদ], যখন ইব্রাহীমকে তার পালনকর্তা আদেশ দিয়ে পরীক্ষা করেছিলেন এবং তিনি তা পূরণ করেছিলেন। [আল্লাহ] বললেন, "নিশ্চয়ই আমি তোমাকে জনগণের নেতা করব।" [ইব্রাহিম] বললেন, "এবং আমার বংশধরদের?" [আল্লাহ] বললেন, আমার অঙ্গীকার যালিমদের অন্তর্ভুক্ত নয়। [কুরআন 2:124] যাইহোক, যদি কোনো কারণে আমরা খলিফাকে বিচারকের কাছে আনতে না পারি, খলিফা পদে বহাল থাকেন, এবং তাঁর পদে থাকাকালীন আমাদের অবশ্যই আনুগত্য চালিয়ে যেতে হবে (তিনি জারি করা কোনো পাপপূর্ণ আদেশ ব্যতীত)। একজন শাসককে কেবল ততক্ষণ মানতে হবে যতক্ষণ সে একজন শাসক থাকে - এবং যদি রাষ্ট্রের ক্ষমতার দালালরা (আহল উল হাল ওয়াল আকদ - "যারা আলগা করে এবং বাঁধে" - যার সিদ্ধান্ত নেওয়ার জন্য যথেষ্ট প্রভাব এবং ক্ষমতা রয়েছে নিজেদের মধ্যে কে খলিফা) খলিফাকে বরখাস্ত করার সিদ্ধান্ত নেয়, খলিফা তাৎক্ষণিকভাবে শাসক হওয়া বন্ধ করে দেন। তাদের বলা হয় "যারা আলগা করে এবং বাঁধে" কারণ তারা একজন নতুন খলিফাকে 'আবদ্ধ' করতে পারে এবং পুরোনোকে অফিস থেকে 'আবদ্ধ' করতে পারে। ক্ষমতার দালালদের দায়িত্ব আছে খলিফার বৈধতা সংক্রান্ত বিচারকদের রায় বহাল রাখা। যাইহোক, যদি বিচারক খলিফাকে পদে বহাল রাখেন কারণ তার অপরাধ অপসারণের পরোয়ানা দেওয়ার পক্ষে খুব ছোট, বা আহল উল হাল ওয়াল আকদ দুর্নীতিগ্রস্ত হয় এবং খলিফাকে বিচারকের কাছে নিয়ে যাওয়া বা বিচারকদের রায় কার্যকর করতে কাউকে বাধা দেয়, মুসলমানদের উচিত নয় খলিফার বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিদ্রোহ ব্যবহার করুন। এর কারণ হল খলিফাকে খলিফা থাকাকালীন মানতে হবে। এমনকি পশ্চিমা রাষ্ট্রপতিদের জন্যও একই কথা, যাদের মেয়াদ শেষ হওয়ার মুহূর্ত পর্যন্ত কর্তৃত্ব রয়েছে, অথবা তারা সংসদ বা সেনেট দ্বারা অভিশংসিত হয়। একজন খলিফা অত্যাচারী হলেও সাধারণত বিদ্রোহের অনুমতি দেওয়া হয় না তার কারণ হল দ্বীন ও মুসলমানদের ঐক্য রক্ষাকারী রাষ্ট্রকে রক্ষা করার জন্য। এর কারণ হল, এমনকি একজন স্ব-সেবাকারী খলিফাও সীমান্ত রক্ষা করবে এবং হারবি কুফার বিরুদ্ধে লড়াই করবে, এবং উম্মাহকে রক্ষা করবে এবং ইসলামের আইন আদালতকে সমুন্নত রাখবে (যদিও সে নিশ্চিত করে যে সে নিজে হাজির না হয়)। ঐতিহাসিকভাবে, মুসলিম ইতিহাসের সবচেয়ে বড় সাফল্যগুলি একজন নিখুঁত খলিফার অধীনেই হয়েছে। খলিফা ও তার ডেপুটিদের প্রকাশ্য পাপ ও অত্যাচারের কথা বলা যতক্ষণ না একজন বিচারক কর্তৃক দুর্নীতিগ্রস্ত খলিফাকে পদ থেকে অপসারণ করা হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত তিনি পদে বহাল থাকেন এবং তাকে অবশ্যই মান্য করতে হবে। কিন্তু, সে পাপের আদেশ দিলে তাকে মানা যায় না। তদুপরি, মুসলমানদের প্রকাশ্যে ভালোর আদেশ এবং মন্দকে নিষেধ করার এবং তার প্রকাশ্য খারাপ কাজগুলিকে ডাকার অনুমতি দেওয়া হয়েছে কারণ তারা সর্বজনীন। ভাল কাজের আদেশ এবং মন্দ কাজ থেকে নিষেধ করার পুরো বিষয়টি হল, যাতে মুসলমানরা মনে না করে যে খলিফার কলুষিত কাজগুলি ঠিক বা ইসলামের অংশ। এছাড়াও, এটি তার দুর্নীতিবাজ সমর্থকদের জন্য একটি দাওয়াহ যারা নিছক অজ্ঞ হতে পারে এবং তাদের পাপ না মানতে শিখতে হবে। মাদখালিস, খুব বেশি বৈশ্বিক বা ঐতিহাসিক সচেতনতা ছাড়াই, অদ্ভুতভাবে দাবি করে যে প্রকাশ্যে ভালোর দিকে আহ্বান করা এবং মন্দকে নিন্দা করা একরকম বলে যে এটি 'বিশৃঙ্খলা' সৃষ্টি করে যদিও পশ্চিমারা তাদের শাসকদের সর্বদা সমালোচনা করে এবং ঠাট্টা করে এবং কোনো অস্থিরতা দেখা দেয় না। মাদখালিরা এমন একটি হাদিসকেও অস্পষ্ট করে যা শুধুমাত্র একজন খলিফাকে (নসিহা) গোপনে উপদেশ দেওয়ার কথা বলে, এবং এটিকে অস্পষ্ট করে যাতে ভালোর আদেশ এবং মন্দকে নিষেধ করাও অন্তর্ভুক্ত থাকে। যেখানে সত্য বলা যায় তার কোন সীমাবদ্ধতা নেই - যেমন একজন শাসকের আনুগত্য করার বিষয়ে হাদিসটিও উল্লেখ করে: উবাদা বিন আস-সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ 'আমরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর কাছে বায়আত করেছিলাম যে, যখন আমরা সক্রিয় ছিলাম এবং ক্লান্ত ছিলাম তখন উভয় সময়েই আমরা তাঁর কথা শুনব এবং মানব। শাসকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব বা তার অবাধ্য হব এবং সত্যের পক্ষে অটল থাকব বা আমরা যেখানেই থাকব সত্য বলব এবং আল্লাহর পথে আমরা দোষারোপকারীদের দোষে ভয় পাব না। [সহীহ আল-বুখারী 7199, 7200] সাহাবাগণ খারাপ নেতাদের অত্যাচার প্রতিরোধ করার গুরুত্ব বুঝতেন (এমনকি তা শুধুমাত্র জিহ্বা দ্বারা হলেও)। প্রকৃতপক্ষে, সাহাবাগণ এমনকি রোমানদের তাদের রাজাদের নিপীড়ন প্রতিরোধ করার ভাল গুণ থাকার জন্য প্রশংসা করেছেন: সাহাবি আমর বিন আল-আস বলেন, রোমানদের একটি "ভাল গুণ" ছিল তাদের রাজাদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা। আধুনিক মুসলমানদের অবশ্যই কুফর আইনের সাথে ধর্মনিরপেক্ষ যুদ্ধবাজদেরকে "আমাদের শাসক" বলার 'বিদা' বন্ধ করতে হবে এবং এই "ভাল গুণ" অবলম্বন করতে হবে। মুস্তাউরিদ আল কুরাশি বর্ণনা করেছেন: ‘আমি আল্লাহর রাসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ শেষ।কেয়ামত আসবে (যখন) রোমানরা মানুষের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ হবে। ‘আমর তাকে (মুসতাউরিদ কুরাশি) বললেন, দেখ তুমি কী বলছ? তিনি বললেনঃ আমি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম থেকে যা শুনেছি তাই বলছি। অতঃপর তিনি বললেনঃ আপনি যদি তা বলেন তবে এটা সত্য যে তাদের চারটি গুণ রয়েছে। তাদের ধৈর্য আছে একটি বিচারের মধ্য দিয়ে এবং অবিলম্বে সমস্যা এবং উড্ডয়নের পরে আবার আক্রমণের পরে নিজেদের বিচক্ষণতা ফিরিয়ে আনে। তাদের (গুণ আছে) নিঃস্ব ও এতিমদের প্রতি ভালো হওয়ার, দুর্বলদের প্রতি এবং পঞ্চমত, তাদের মধ্যে ভালো গুণ হল তারা রাজাদের অত্যাচারের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলে। [সহীহ মুসলিম ২৮৯৮ক] ইনি সেই একই কাব বিন উজরা যিনি শাসকদের হিসাব-নিকাশ সম্পর্কে নিম্নোক্ত হাদীসটি বর্ণনা করেছেন: “আল্লাহর রসূল (সাঃ) আমাদের কাছে বের হয়ে এসেছিলেন, আমরা নয়জন ছিলাম; পাঁচ এবং চার সংখ্যার প্রথমটি আরবদের জন্য এবং পরেরটি অনারবদের জন্য। তিনি বললেন: 'শোন, তুমি কি শুনেছ যে, আমার পরে এমন নেতা হবে, যে কেউ তাদের মধ্যে প্রবেশ করবে এবং তাদের মিথ্যাকে ক্ষমা করবে এবং তাদের অত্যাচারে তাদের সমর্থন করবে, তাহলে সে আমার থেকে নয় এবং আমি তার থেকে নই, এবং সে হবে না? আমার সাথে হাওদ থেকে পান করুন। আর যে কেউ তাদের উপর প্রবেশ করবে না, তাদের জুলুমে তাদের সাহায্য করবে না এবং তাদের মিথ্যাকে ক্ষমা করবে না, সে আমার থেকে এবং আমি তার থেকে এবং সে আমার সাথে হাওদে পান করবে।" [জামে আত-তিরমিযী 2259] আরেকটি ঘটনা ছিল ইয়াহিয়া বিন ইয়ামার, একজন তাবি’ তাবিঈন এবং বিখ্যাত হাদীস বর্ণনাকারী যিনি প্রকাশ্যে খলিফা আবদ আল-মালিক ইবনে মারওয়ানের অধীনে গভর্নর হাজ্জাজকে তিরস্কার করেছিলেন: আসিম বিন বাহদালাহ বর্ণনা করেছেন "লোকেরা হাজ্জাজের চারপাশে জড়ো হয়েছিল [এবং] তারপর হুসাইন বিন 'আলী (রাঃ) এর কথা উল্লেখ করা হয়েছিল। হাজ্জাজ বললেন, “তিনি নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর বংশধরদের মধ্যে নন” [তর্ক করা বংশধর মায়ের মাধ্যমে নয়, শুধুমাত্র পিতার মাধ্যমে]। সমাবেশে ইয়াহিয়া বিন ইয়ামার ছিলেন যিনি জবাব দিয়েছিলেন "আপনি হে [গভর্নর] আমিরুল মুমিনীন (মুসলিমদের নেতা) মিথ্যা বলেছেন"। হাজ্জাজ: "তুমি অবশ্যই আল্লাহর কিতাব থেকে যা বলেছ তার প্রমাণ পেশ করবে নাহলে আমি তোমাকে হত্যা করব।" ইয়াহিয়া তিলাওয়াত করলেন (সূরা আনআম বনাম 84-85): “তাঁর বংশধরদের মধ্যে, দাউদ, সুলাইমন, আইয়ুব, ইউসুফ, মুসা এবং হারুন থেকে... যাকারিয়া, ইয়াহিয়া এবং ঈসা। অতঃপর আল্লাহ উল্লেখ করেছেন যে, ঈসা তার মায়ের মাধ্যমে আদমের বংশধর এবং হোসাইন বিন আলী তার মায়ের মাধ্যমে মুহাম্মদ (সা.)-এর বংশধরদের মধ্যে রয়েছেন।” হাজ্জাজ: *সত্যি বলেছ! কিন্তু আমার মজলিসে আমার কথা বিশ্বাস করার কি নির্মমতা আছে?* ইয়াহিয়া: “আল্লাহ নবীদের সাথে অঙ্গীকার নিয়েছিলেন যে তাদের স্পষ্টীকরণ দিতে হবে এবং তা গোপন করবে না। (অতঃপর তিনি উদ্ধৃত করলেন) “..কিন্তু তারা তা তাদের পিঠের পিছনে ফেলে দিয়েছে এবং তা দিয়ে দুর্বিষহ লাভ ক্রয় করেছে!_…. [আল-ইমরান: 187]" তাই হাজ্জাজ তাকে খোরাসানে নির্বাসিত করেন। [হাকিম নং 4772, বায়হাকী খণ্ড 6 পৃ. 166-এর সুনানুল কুবরা, ইবনে আবি হাতিম খণ্ড 4 পৃ. 1335-এর তাফসীর] স্পষ্টতই এই হাদিসগুলি সাহাবা এবং বর্ণনার প্রসিদ্ধ ট্রান্সমিটারদেরকে স্পষ্টভাবে খলিফা এবং তাদের গভর্নর/আমিরদের সকলের শোনার জন্য প্রকাশ্যভাবে হিসাব-নিকাশ করে। শাসকদের ব্যাপারে ইসলামের শর্তসাপেক্ষ সীমাবদ্ধতা মুসলমানদের যদি একজন প্রকাশ্য-মিত্র পাপী এবং অত্যাচারী খলিফার আনুগত্য করতে হয় (কিন্তু তার অত্যাচারে পাপ বা তাকে সাহায্য করার আদেশ নয়), তাহলে মুসলমানদের উত্থান না করে একজন খলিফা যা করতে পারে তার জন্য কি কোন ‘লাল রেখা’ নেই? না। একটি পরিষ্কার লাল রেখা আছে। যদি খলিফা ইসলাম ত্যাগ করেন বা 'স্পষ্ট কুফর' প্রদর্শন করেন তবে তাদের সাথে যুদ্ধ করা যেতে পারে। কেন? কারণ একজন নেতা যে কুফর আইনের সাথে শাসন করে মুসলমানরা যে কারণে একজন খলিফা নিয়োগ করে তার একেবারে বিপরীত। জুনাদা ইবনে আবী উমাইয়া থেকে বর্ণিত, আমরা উবাদা ইবনে আস-সামিত (রা) অসুস্থ অবস্থায় তাঁর কাছে প্রবেশ করলাম। আমরা বললাম, “আল্লাহ আপনাকে সুস্থ রাখুন। আপনি কি আমাদেরকে এমন একটি হাদীস বলবেন যা আপনি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) থেকে শুনেছেন এবং যা দ্বারা আল্লাহ আপনাকে উপকৃত করবেন? তিনি বলেন, “রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে ডেকে আনলেন এবং আমরা তাঁকে ইসলামের প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার দান করলাম এবং যে শর্তে তিনি আমাদের কাছ থেকে বাইয়াত নিয়েছিলেন তা হল, আমরা উভয় স্থানেই শুনব এবং (আদেশ) পালন করব। যখন আমরা সক্রিয় ছিলাম এবং সেই সময়ে যখন আমরা ক্লান্ত ছিলাম, এবং আমাদের কঠিন সময়ে এবং আমাদের স্বাচ্ছন্দ্যের সময় এবং শাসকের আনুগত্য করা এবং আমাদের অধিকার না দিলেও তাকে তার অধিকার দেওয়া, এবং বিরুদ্ধে যুদ্ধ না করা যদি না আমরা লক্ষ্য করি যে তার কাছে প্রকাশ্য কুফর (কুফর) রয়েছে যার জন্য আমাদের কাছে আল্লাহর পক্ষ থেকে প্রমাণ থাকবে। এমন অনেক হাদিস আছে যা বলে যে আমাদের আনুগত্যের শর্ত রয়েছে কেবলমাত্র একজন শাসককে মুসলিম হিসাবে চিহ্নিত করার বাইরে। সরকারের পুরো বিষয় হল, জনগণকে রক্ষা করা এবং ভালো-মন্দের সংজ্ঞা অনুযায়ী তাদের বিষয়গুলো পরিচালনা করা। ইসলামে ভালো মন্দ শুধুই হতে পারেআল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার ইচ্ছায় নির্ধারিত। অতএব, ইসলামে একটি সরকার কেবলমাত্র বৈধ যদি এটি আইন প্রণয়ন করে এবং বিচারের মাপকাঠি হিসেবে কুরআন ও সুন্নাহকে ধরে রাখে। উম্মুল হুসাইন আল-আহমাসিয়াহ (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ ‘আমি রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বিদায়ী হজ্জের সময় খুতবা দিতে শুনেছি এবং তিনি একটি বোর পরিধান করেছিলেন যা তিনি তাঁর বগলের নিচ থেকে মুড়িয়ে রেখেছিলেন। তিনি বলেন: “আমি তার উপরের বাহুর পেশীর দিকে কাঁপতে থাকা অবস্থায় দেখছিলাম এবং আমি তাকে বলতে শুনেছি: হে লোকেরা! আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন করুন। যদি কোন বিকৃত ইথিওপিয়ান ক্রীতদাসকে তোমাদের উপর কর্তৃত্ব করা হয়, তবে তার কথা শুনুন এবং তার আনুগত্য করুন, যতক্ষণ না সে তোমাদের মধ্যে আল্লাহর কিতাবকে সমুন্নত রাখে। উম্মে হুসাইন (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, তিনি রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে বলতে শুনেছেন: "এমনকি যদি আপনার উপর নিযুক্ত ব্যক্তি একজন বিকৃত ইথিওপিয়ান ক্রীতদাস হয় যার নাক এবং কান কাটা হয়েছে, তার কথা শুনুন এবং আনুগত্য করুন, যতক্ষণ না তিনি আপনাকে আল্লাহর কিতাব অনুযায়ী পরিচালনা করেন।" [সুনানে ইবনে মাজাহ ২৮৬১] যে ব্যক্তি ইচ্ছা বা আকাঙ্ক্ষা অনুযায়ী শাসন করে তাকেই নৈরাজ্যের সংজ্ঞা। কোন রাষ্ট্রে কোনটি অনুমোদিত এবং কোনটি নিষিদ্ধ তার মাপকাঠি হতে পারে একমাত্র আল্লাহর ইচ্ছা। নবী মুহাম্মদ (সাঃ) এটিকে বৈধতার পূর্বশর্ত হিসেবে বলেছেন। এমনকি এমন একটি হাদিস আছে যে বলে যে আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার অবাধ্যতার কোনো আনুগত্য নেই। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ “আমি চলে যাবার পর তোমাদের মধ্যে এমন লোক থাকবে যারা সুন্নাতকে নিভিয়ে দেবে এবং বিদআতের অনুসরণ করবে। তারা সালাতকে যথাযত সময় থেকে বিলম্বিত করবে।” আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি তাদের দেখতে বেঁচে থাকি তাহলে কি করব? তিনি বললেনঃ তুমি আমাকে জিজ্ঞেস কর, হে ইবনে আবদ, তোমার কি করা উচিত? যে আল্লাহর নাফরমানী করে তার আনুগত্য নেই।" [সুনানে ইবনে মাজাহ ২৮৬৫] এমনকি আমেরিকানদেরও এই লাল রেখা রয়েছে, যদিও উদারনীতির জন্য। ২য় সংশোধনী আমেরিকানদের অস্ত্র বহনের অনুমতি দেয়, কারণ তারা যদি সরকার উদারনীতি এবং জনসাধারণের সম্মতির নীতির দ্বারা শাসন বন্ধ করে দেয়, তাহলে এটি বৈধতা হারায় এবং জনগণ এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করতে পারে। যাইহোক, যদি খলিফা আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কিতাব এবং সুন্নাহ ব্যতীত অন্য আইন প্রণয়নের মাধ্যমে স্পষ্ট কুফর প্রদর্শন করেন (কিন্তু আবার, তার কার্যনির্বাহী ভূমিকায় সুন্নাহ অনুসরণ না করে, বিজোড় আদালতের মামলা বা সাধারণ নিপীড়নের ভুল বিচার করে তার নিছক খারাপ অনুশীলনের দ্বারা নয়। অথবা অন্যায়), তাহলে মুসলমানদের অবশ্যই তার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। এখন কি এর মানে এই যে, আজ উম্মাহকে শাসকদের তাকফির করতে হবে এবং সশস্ত্র বিদ্রোহ শুরু করতে হবে - আমি আলেমদের সাথে একমত হব যারা এটা না করতে বলে। কিন্তু বিদ্রোহ ছাড়াই শাসনব্যবস্থা পরিবর্তনের আরও উপায় আছে। কিন্তু এই সমস্যা সমাধানের একটি বিজ্ঞ পদ্ধতিতে নামার আগে আমাদের অবশ্যই আলোচনা করতে হবে যে, খাওয়ারিজদের প্রকৃত গুনাহ কী ছিল? যদি এমন সময় হয় যে মুসলমানরা একজন শাসকের সাথে যুদ্ধ করতে পারে তবে খাওয়ারিজদের নিন্দা করা হয়েছিল কেন? বিশেষ করে তারা কি ভুল করেছে? খাওয়ারিজদের প্রকৃত পাপ যা তাদেরকে খাওয়ারিজ করে তোলে (আহল-উল-সুন্নার দৃষ্টিকোণ থেকে) খাওয়ারিজরা আলী (রা.)-এর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল কারণ তারা অনুভব করেছিল যে আলী (রা.) মুয়াবিয়ার সাথে কে খলিফা হওয়া উচিত তা নিয়ে বিরোধে সালিশ করতে রাজি হয়েছিলেন, তিনি মানবিক রায় প্রদান করছেন যা ইতিমধ্যেই ঈশ্বরের দ্বারা নির্ধারিত হয়েছিল (অর্থাৎ প্রথম বায়আত দেওয়া ব্যক্তিটি হল। খলিফা এবং আলী প্রথম ছিলেন) আবু হুরায়রা থেকে বর্ণিতঃ আবু হুরায়রা (রাঃ) থেকে বর্ণিতঃ নবী (সাঃ) বলেছেন, “ইসরাঈলীরা শাসন করত এবং নবীদের দ্বারা পরিচালিত হতঃ যখনই কোন নবী মারা যেতেন, অন্য একজন তার স্থলাভিষিক্ত হতেন। আমার পরে কোন নবী হবে না, কিন্তু খলিফা হবেন যারা সংখ্যায় বৃদ্ধি পাবে।” লোকেরা জিজ্ঞেস করল, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি আমাদের কি আদেশ করেন? তিনি বললেন, “যাকে প্রথমে আনুগত্য করা হবে তার আনুগত্য কর। তাদের (অর্থাৎ খলিফাদের) অধিকারগুলো পূরণ করুন, কারণ আল্লাহ তাদের শাসনে (কোন ত্রুটি) সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করবেন যাদের আল্লাহ তাদের অভিভাবকত্বে রেখেছেন। [সহীহ আল-বুখারী 3455] খাওয়ারিজরা যুক্তি দিয়েছিল যে আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তায়ালা) যা নাজিল করেছেন তা ব্যতীত অন্য কিছুর বিচার করা কুফর ছিল এবং তারা আলী (রা) কে ধর্মত্যাগী বলে ঘোষণা করেছিল যার বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে। এই যে, আলী (রাঃ) নিজেই বলেছিলেন যে তারা উদ্ধৃত নীতিগুলি সত্য ছিল, কিন্তু তারা (ভুল) এটি ভুল ক্ষেত্রে প্রয়োগ করেছে। উবায়দুল্লাহ খ. রসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-এর মুক্তকৃত গোলাম আবু রাফি বলেছেন: যখন হারুরিয়া (খাওয়ারিজ) রওনা হলেন এবং যখন তিনি আলীর সাথে ছিলেন। আবু তালিব (আল্লাহ্‌) তারা বললেন, “আল্লাহ ছাড়া আর কোন নির্দেশ নেই। এর উপর ‘আলী বলেন: বিবৃতিটি সত্য কিন্তু এটি ইচ্ছাকৃতভাবে (সমর্থন করার জন্য) একটি ভুল (কারণ) প্রয়োগ করা হয়েছে। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম তাদের বৈশিষ্ট্য বর্ণনা করেছেন এবং আমিতাদের মধ্যে এই বৈশিষ্ট্যগুলি পাওয়া গেছে। তারা তাদের জিহ্বা দিয়ে সত্য প্রকাশ করে, কিন্তু তা তাদের শরীরের এই অংশের বাইরে যায় না (এবং বর্ণনাকারী তার গলার দিকে ইঙ্গিত করে)"। আল্লাহর সৃষ্টির মধ্যে সবচেয়ে ঘৃণ্য হলো তাদের মধ্যে একজন কালো মানুষ (খাওয়ারিজ)” [সহীহ মুসলিম 1066 গ্রাম] আলী (রাঃ) আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তায়ালার কিতাবের কাছে একটি বিবাদ জমা দিয়ে কুরআনের আনুগত্য করছিলেন এবং অবশ্যই এর বিচার করার জন্য একজন মানব সালিসের প্রয়োজন। এর অর্থ এই নয় যে আলী (রাঃ) আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা ব্যতীত অন্য কিছু দিয়ে বিচার করছিলেন। খাওয়ারিজরা তা বুঝতে পারেনি এবং সীমালঙ্ঘন করেছে। পরবর্তীতে, খাওয়ারিজরা এমন একটি মতবাদ গড়ে তুলেছিল যে এমনকি একজন পাপী খলিফার বিরুদ্ধেও বিদ্রোহ করা যেতে পারে এবং বড় পাপ একজনকে ইসলামের ভাঁজ থেকে বের করে দেয়। এজন্য তারা সুন্নি নয়। খাওয়ারিজরা ‘তাকফিরের শৃঙ্খল’ গড়ে তুলেছিল: যে কেউ আলীকে কাফের মনে করে না, সেও কাফের। মাদখালিরা বিপজ্জনক, কারণ তারা তাদের প্রতিপক্ষকে খাওয়ারিজ বলে, এবং কারণ একটি হাদিস আছে যে খাওয়ারিজরা 'জাহান্নামের কুকুর' যাকে হত্যা করা উচিত - মাদখালিরা (এবং তারা যে সরকারগুলিকে রক্ষা করে) তাদের প্রতিপক্ষকে দৃঢ় অনুমোদনের সাথে হত্যা করতে পারে এবং দায়মুক্তি শাসনের ইসলামী ফিকহ সম্পর্কে আরও কিছু বলার আছে, যেমন ইবনে তাইমিয়া দেখেন যে শাসক দুর্নীতিগ্রস্ত হলে সে জনগণকে কলুষিত করবে, কিন্তু খলিফার চেয়ে খারাপ খলিফা থাকা উত্তম। এটি আমাদের মাদখালিদের আরেকটি অযৌক্তিকতায় নিয়ে আসে.. মুসলিম উম্মাহর এক সময়ে একজন ইমাম থাকতে পারে মুসলমানদের নিজেদের মধ্যে বিভাজন (সীমান্ত) থাকতে পারে না এবং মুসলমানদের শুধুমাত্র একজন খলিফা/ইমাম থাকতে পারে (এছাড়া তার ডেপুটি [আমির] এবং আঞ্চলিক গভর্নর [উলা]) যিনি তার পক্ষে বিভিন্ন অঞ্চল এবং সেনাবাহিনীর স্কোয়াড্রন শাসন করেন। মুসলমানদের অবশ্যই এক জামাতে, এক ইমামের অধীনে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। এর অর্থ এই যে, যে কেউ নিজেকে নেতা (ইমাম) দাবি করে প্রথমটির পরে লড়াই করা হয়। আবা সাঈদ আল-খুদরী (রাঃ) থেকে বর্ণিত হয়েছে যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ ‘যখন দুই খলিফার জন্য আনুগত্যের শপথ নেওয়া হয়, তখন যার জন্য পরে শপথ নেওয়া হয়েছিল তাকে হত্যা কর’ [সহীহ মুসলিম 1853] ‘আর তোমরা সবাই মিলে আল্লাহর রজ্জুকে শক্ত করে ধারণ কর এবং বিচ্ছিন্ন হয়ো না। আর তোমাদের উপর আল্লাহর অনুগ্রহের কথা স্মরণ কর - যখন তোমরা শত্রু ছিলে এবং তিনি তোমাদের অন্তরকে একত্রিত করলেন এবং তাঁর অনুগ্রহে তোমরা ভাই ভাই হয়ে গেলে। আর তুমি ছিলে আগুনের গর্তের কিনারায়, আর তিনি তোমাকে তা থেকে রক্ষা করলেন। এভাবেই আল্লাহ তোমাদের জন্য তাঁর আয়াতসমূহ সুস্পষ্ট করে দেন যাতে তোমরা হেদায়েত পেতে পার’ [কুরআন 3:103] মাদখালিরা যদি অসংখ্য ধর্মনিরপেক্ষ মুসলিম রাষ্ট্রকে 'বৈধ' হিসেবে দেখে এবং তারা হাদিসটি আজ যা প্রয়োজন তা প্রয়োগ করে, তাহলে আমাদের মুসলিম রাষ্ট্রের 50 জন নেতার মধ্যে 49 জনকে হত্যা করতে হবে, কারণ আমাদের কেবল একজন ইমাম থাকতে পারে। মাদখালিরা যখন শাসনের ইসলামী ফিকহ অনুসারে একটি ধর্মনিরপেক্ষ অনৈসলামিক বাস্তবতাকে ন্যায্যতা দেওয়ার চেষ্টা করে তখন এটিই অযৌক্তিকতা। নবী মুহাম্মাদ (ﷺ) যখন ফিতনা এবং দুষ্ট লোকদের জাহান্নামে আমন্ত্রণ জানানোর সময় সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, তখন তিনি মুসলমানদেরকে জামাআত (মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ সংগঠন) এবং তাদের ইমামের আশ্রয় নিতে আদেশ করেছিলেন। কিন্তু জামায়াত না থাকলে মুসলমানদের দলাদলি থেকে আলাদা হতে হবে। তবে দলগুলোর প্রধানদের (ফিরাক) আনুগত্য করার নির্দেশ দিয়ে মাদখালিরা তার বিপরীত নির্দেশ দেয়। খাওয়ারিজরা জামাআত থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে তাদের ইমামের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করেছিল, কিন্তু আজ, জামাআত ভেঙ্গে যাওয়ার পরে এবং কোন ইমাম নেই, প্রকৃত খাওয়ারিজ আজ তারাই যারা এটিকে সেভাবেই রাখতে চায়, বিভক্ত দলগুলোর আনুগত্য করার আহ্বান জানায়। প্রধানদের ' আজকে খাওয়ারিজ বিরোধী হওয়া মানে এর বিপরীত। বর্ণিত হয়েছে যে, 'আরফাজাহ বিন শুরাইহ আল-আশজা'ই বলেছেন: “আমি নবী (সাঃ) কে মিম্বারে লোকদের উদ্দেশ্যে ভাষণ দিতে দেখেছি। তিনি বললেনঃ আমার পরে অনেক বিপর্যয় এবং অনেক খারাপ আচরণ হবে। যাকে তুমি জামাআত থেকে বিচ্ছিন্ন হতে দেখো বা মুহাম্মাদ (সাঃ) এর উম্মতের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করতে দেখো, তাকে হত্যা কর, কেননা আল্লাহর হাত জামাতের সাথে এবং শয়তান তার সাথে রয়েছে যে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। উম্মতের পক্ষ থেকে, তার সাথে দৌড়াচ্ছে।'” [সুনান আন-নাসায়ী 4020] ইবনে আব্বাস বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন: "আল্লাহর হাত জামাতের সাথে।" [জামিআত-তিরমিযী 2166] ইবনে উমর বর্ণনা করেছেন: “উমর আল-জাবিয়াতে আমাদেরকে খুতবা দিয়েছিলেন। তিনি বললেনঃ ‘হে লোকেরা! নিশ্চয়ই আমি তোমাদের মাঝে দাঁড়িয়েছি যেমন আল্লাহর রাসুল (সাঃ) আমাদের মাঝে দাঁড়িয়েছিলেন এবং তিনি বলেছিলেন: “... জামাআতকে আঁকড়ে ধর, বিচ্ছিন্নতা থেকে সাবধান, কেননা আশ-শয়তান একজনের সাথে আছে এবং সে তার থেকে অনেক দূরে রয়েছে। দুই যে ব্যক্তি জান্নাতে সর্বোত্তম স্থান চায়, সে যেন জামাআতের সাথে লেগে থাকে। যে তার ভালো নিয়ে আনন্দ করেকর্ম এবং তার খারাপ কাজের জন্য দুঃখিত হয়, তাহলে সে তোমাদের মধ্যে ঈমানদার।’’ [জামি’ আত-তিরমিযী 2165 হুযাইফা বিন আল-ইয়ামান থেকে বর্ণিত: তিনি বলেন, লোকেরা আল্লাহর রসূল (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে ভালো বিষয়ে জিজ্ঞাসা করত কিন্তু আমি তাঁকে মন্দ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতাম, যাতে আমি তাদের দ্বারা আক্রান্ত না হই। তখন আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আমরা জাহেলিয়াতের মধ্যে এবং (অত্যন্ত) খারাপ পরিবেশে বাস করছিলাম, তখন আল্লাহ আমাদের জন্য এই কল্যাণ (অর্থাৎ ইসলাম) নিয়ে আসেন; এই কল্যাণের পরে কি কোন মন্দ থাকবে?” সে হ্যাঁ বলেছে." আমি বললাম, ‘মন্দের পরে কি কোনো কল্যাণ থাকবে? তিনি উত্তর দিলেন, "হ্যাঁ, তবে এটি কলঙ্কিত হবে (শুদ্ধ নয়।)" আমি জিজ্ঞাসা করলাম, "এর কলঙ্ক কি হবে?" তিনি উত্তরে বললেন, “(কিছু লোক থাকবে) যারা আমার রীতি অনুযায়ী অন্যদের পথ দেখাবে না? আপনি তাদের কিছু কাজ অনুমোদন করবেন এবং কিছুকে অস্বীকার করবেন।” আমি জিজ্ঞেস করলাম, “সেই ভালোর পরে কি কোন মন্দ থাকবে?” তিনি উত্তরে বললেন, হ্যাঁ, (জাহান্নামের) দরজায় কিছু লোক ডাকবে, আর যে তাদের ডাকে সাড়া দেবে, তাকে তারা (জাহান্নামের) আগুনে নিক্ষেপ করবে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কি আমাদের কাছে তাদের বর্ণনা করবেন?" তিনি বলেছিলেন, "তারা আমাদের নিজেদের লোকদের থেকে হবে এবং আমাদের ভাষায় কথা বলবে।" আমি বললাম, "আমার জীবনে এমন অবস্থা হলে আমাকে কি করতে আদেশ করবেন?" তিনি বললেন, “জামাআত ও তাদের ইমাম [একবচন] কে লেগে থাকো” আমি বললাম, “যদি কোন জামাআত বা ইমাম [একবচন] না থাকে? তিনি বললেন, “তাহলে ঐ সমস্ত দলাদলি [ফিরাক] থেকে দূরে সরে যাও, এমনকি যদি তুমি গাছের শিকড় কামড়াও (খাও) যতক্ষণ না তুমি সেই অবস্থায় থাকবে মৃত্যু তোমাকে গ্রাস করবে। এই হাদিসটি সহীহ মুসলিমে পুনরাবৃত্তি করা হয়েছে: হুযাইফা (রা) থেকে বর্ণিত হয়েছে। আল-ইয়ামান যিনি বলেছেন: তিনি বলেন, লোকেরা রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে উত্তম সময় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করত, কিন্তু আমি তাকে খারাপ সময় সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করতাম এই ভয়ে যে তারা আমাকে ধরে ফেলবে। আমি বললামঃ আল্লাহর রসূল, আমরা অজ্ঞতা ও মন্দের মধ্যে ছিলাম, তখন আল্লাহ আমাদের এই কল্যাণ (ইসলামের মাধ্যমে) এনেছেন। এই ভালোর পরে কি কোনো খারাপ সময় আছে? সে হ্যাঁ বলেছে. আমি জিজ্ঞেস করলামঃ সেই খারাপ সময়ের পর কি আবার ভালো সময় আসবে? তিনি বললেনঃ হ্যাঁ, তবে সেখানে লুকানো অনিষ্ট থাকবে। আমি জিজ্ঞেস করলামঃ এর মধ্যে কি মন্দ লুকিয়ে থাকবে? তিনি বললেনঃ (সে সময় উত্থানের সাক্ষী হবে) যারা আমার ব্যতীত অন্য পথ অবলম্বন করবে এবং আমার পরিবর্তে অন্য পথের সন্ধান করবে। আপনি ভাল পয়েন্টের পাশাপাশি খারাপ পয়েন্টগুলিও জানবেন। আমি জিজ্ঞেস করলাম, এই ভালোর পর কি খারাপ সময় আসবে? সে হ্যাঁ বলেছে. (একটা সময় আসবে) যখন জাহান্নামের দরজায় লোকেরা দাঁড়িয়ে থাকবে এবং দাওয়াত দেবে। যে তাদের ডাকে সাড়া দেবে তারা তাদেরকে আগুনে নিক্ষেপ করবে। আমি বললাম, আল্লাহর রাসূল, আমাদের জন্য সেগুলো বর্ণনা করুন। তিনি বললেনঃ ঠিক আছে। তারা হবে আমাদের মতো একই রঙের এবং আমাদের ভাষায় কথা বলার লোক। আমি বললামঃ আল্লাহর রসূল, আমি যদি সেই সময়ে বেঁচে থাকি তাহলে আপনি কী পরামর্শ দেবেন? তিনি বললেনঃ তোমরা মুসলমানদের প্রধান অঙ্গ ও তাদের নেতার সাথে লেগে থাকো। আমি বললাম: যদি তাদের কোন (যেমন জিনিস) প্রধান সংস্থা না থাকে এবং কোন নেতা না থাকে? তিনি বললেন: এই সমস্ত দলাদলি থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করুন, যদিও আপনাকে (জঙ্গলে) গাছের শিকড় খেতে হতে পারে যতক্ষণ না মৃত্যু আপনার কাছে আসে এবং আপনি এই অবস্থায় থাকেন’ [সহীহ মুসলিম 1847a] শাস্ত্রীয় পণ্ডিত ইমাম মাওয়ার্দী স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করেছেন যে, উম্মাহর দুজনের বেশি ইমাম থাকতে পারে না, তারা একই ভূমিতে বা ভিন্ন ভূমিতে থাকুক না কেন। তিনি আরও ব্যাখ্যা করেছেন যে একবার কোথাও একজন ইমাম নিযুক্ত হলে, সর্বত্র সমস্ত মুসলমানদের অবশ্যই তাদের বায়আ (তাঁর প্রতি আনুগত্যের অঙ্গীকার) দিতে হবে। 'যখন ক্ষমতা ও প্রভাবশালীরা নির্বাচন করার জন্য একত্রিত হয়... যদি তাদের কাছে স্পষ্ট হয়ে যায় যে সম্প্রদায়ের মধ্যে থেকে কোন ব্যক্তি তাদের বেছে নিতে তাদের ইজতিহাদ তাদের নেতৃত্ব দিচ্ছে, তাদের উচিত তাকে ইমামতি দেওয়া: যদি তিনি গ্রহণ করেন তবে তাদের উচিত। তার প্রতি আনুগত্যের শপথ করা এবং তাদের আনুগত্যের মাধ্যমে ইমামত তৈরি হয় এবং তখন সমগ্র উম্মাহর উপর এই আনুগত্যে প্রবেশ করা এবং তার আনুগত্য স্বীকার করা কর্তব্য হয়... যদি দুটি দেশে দুটি ইমামতি প্রতিষ্ঠিত হয় তবে দুটির কোনোটিই বৈধ নয় কেননা এক সময়ে দুটি ইমাম থাকা বৈধ নয় ইমামতি সেই ব্যক্তির জন্য যিনি প্রথম আনুগত্যের শপথ এবং চুক্তির চুক্তিটি পেয়েছেন: এটি সেই ক্ষেত্রের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ যেখানে দুজন অভিভাবক একজন মহিলাকে বিয়ে করছেন কারণ তাদের মধ্যে দুজন যদি তাকে বিয়ে করে তবে প্রকৃতপক্ষে শুধুমাত্র প্রথমটির দ্বারা চুক্তিবদ্ধ হয়। দুই. এইভাবে এটা হয়প্রথম কে ইমামতি প্রাপ্ত হবেন, তা তাঁর কাছেই রয়ে গেছে এবং দুজনের মধ্যে দ্বিতীয় জনের দায়িত্ব প্রথম জনের কাছে পেশ করা এবং তাঁর আনুগত্যের শপথ করা। ইমাম মাওয়ারদী, আহকামুল সুলতানীয়া রহ এটি বোঝার স্পষ্ট প্রমাণ যে সমগ্র উম্মাহর শুধুমাত্র একজন ইমাম - খলিফা থাকতে পারে - এবং যদি একাধিক থাকে তবে এটি কোন (সামগ্রিক) নেতার সমতুল্য নয় এবং এটি একটি নৈরাজ্যের অবস্থা (জাহিলিয়াহ, আলোকিত। জাহেলিয়াতের সময়)। মাদখালী তাদের আনুগত্য করার আহবান যাদের অন্তরে শায়তিন মাদখালিরা উপরোক্ত হাদিসের একটি (দুর্বল) ২য় সংস্করণের উপর নির্ভর করে, যা শক্তিশালী সংস্করণের মতো অন্য কোনো হাদিস সংগ্রহে প্রমাণিত নয়। এটি হুযাইফা (রহ.)-এর বরাতে একটি ভিন্ন ট্রান্সমিটারের মাধ্যমে বর্ণনা করা হয়েছে। আল-ইয়ামান যিনি বলেছেন: 'আল্লাহর রসূল, নিঃসন্দেহে, আমাদের একটি খারাপ সময় ছিল (অর্থাৎ জাহিলিয়ার বা জাহেলিয়াতের দিনগুলি) এবং আল্লাহ আমাদের জন্য একটি ভাল সময় নিয়ে এসেছিলেন (অর্থাৎ ইসলামী যুগ) যার মধ্য দিয়ে আমরা এখন বেঁচে আছি এই ভাল সময়ের পরে কি খারাপ সময় আসবে? ? তিনি (সাঃ) বললেনঃ হ্যাঁ। আমি বললামঃ এই খারাপ সময়ের পর কি ভালো সময় আসবে? সে হ্যাঁ বলেছে. আমি বললামঃ ভালো সময়ের পর কি খারাপ সময় আসবে? সে হ্যাঁ বলেছে. আমি বললামঃ কিভাবে? অতঃপর তিনি বললেনঃ এমন নেতা থাকবে যারা আমার নির্দেশে পরিচালিত হবে না এবং যারা আমার পথ অবলম্বন করবে না? তাদের মধ্যে এমন কিছু মানুষ থাকবে যাদের মানুষের দেহে শয়তানের হৃদয় থাকবে। আমি বললামঃ কি করবো। রসূলুল্লাহ (সাঃ) যদি আমি (হতে) সেই সময় থাকতে পারি? তিনি উত্তর দিলেন: আপনি আমির [একবচন] শুনবেন এবং তার আদেশ পালন করবেন; এমনকি যদি তোমার পিঠে চাবুক মারা হয় এবং তোমার সম্পদ ছিনিয়ে নেওয়া হয় তবুও তোমার কথা শুনতে হবে এবং মান্য করতে হবে। [সহীহ মুসলিম 1847খ] মাদখালিদের দাবি, শয়তানের অন্তর যাদের আছে তাদের মানতে হবে। এবং তারা এই যুক্তিটি ব্যবহার করে যে আমাদেরকে অনেক দল (ফিরাক) এর প্রধানদের আনুগত্য করতে হবে যেগুলি থেকে আমাদেরকে ফَاعْتَزِلْ বিচ্ছিন্ন করার আদেশ দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আপনি যদি এই সংস্করণটির দিকেও মনোযোগ দেন, তবে এটি এখনও মাদখালিরা এটি সম্পর্কে যা বলে তা সমর্থন করে না। দুষ্ট ‘নেতাদের’ বলা হয় أَئِمَّةٌ (‘ইমাম’, বহুবচন) কিন্তু যে মুসলমানদের একত্রিত হতে হবে তাকে বলা হয় لِلأَمِيرِ আমীর (একবচন)। হাদিসের আগের শক্তিশালী সংস্করণের সমান্তরাল। দুর্বল সংস্করণের দ্বিতীয় অংশটি ভুলভাবে একটি পৃথক বর্ণনার সাথে বিভক্ত করা হয়েছে বলে মনে করা হয় যা সম্পূর্ণরূপে উল্লেখ করে না যে শাসকরা কুরআন ও সুন্নাহর আইন পরিত্যাগ করেছে, তবে শুধুমাত্র শাসকদের আনুগত্য করার জন্য এমনকি যদি তারা মানুষের প্রতি পদক্ষেপ নেয়। যে মানুষ পছন্দ করে না। উবাদা বিন সামিত বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “হে উবাদা”, আমি জবাব দিলাম “আপনার খেদমতে (হে আল্লাহর রাসূল)” তিনি বললেন, “তোমরা অনিচ্ছা হোক না কেন, সমৃদ্ধি ও প্রতিকূলতার মধ্যে [ইমাম] শোন এবং আনুগত্য কর, অথবা যখন কাউকে আপনার উপর অযথা প্রাধান্য দেওয়া হয়, অথবা যখন তারা আপনার সম্পদ খায়, অথবা যখন তারা আপনাকে আল্লাহর নাফরমানি করার জন্য স্পষ্টভাবে নির্দেশ দেয়, তখন তারা আপনার পিঠ চাপড়ে।" [ইবনে হিব্বান] আবু হুরায়রা রাদিয়াল্লাহু আনহু বর্ণনা করেন, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের অবশ্যই কষ্ট ও স্বাচ্ছন্দ্যে শুনতে হবে এবং মান্য করতে হবে, যে বিষয়ে আপনি আগ্রহী এবং যা অপছন্দ করেন, যদিও তারা আপনার উপর অযথা অগ্রাধিকার দেয়। মুসলিম 1836] যাইহোক, যখনই আমরা হাদিস পাই যে শাসকগণ প্রকৃতপক্ষে সুন্নাহের সাথে নেতৃত্ব দিচ্ছেন না বা এটি নির্বাপণ করছেন না, বা মন্দের আদেশ দিচ্ছেন (মন্দকে বৈধ করেছেন) এবং ভালকে (অবৈধ হিসাবে) নিষেধ করছেন, শব্দটি তাদের আনুগত্যের আদেশ দেয় না, কেবল তাদের আদেশ নয়। হাদিসও তাদের সাহায্য না করার নির্দেশ দিয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেনঃ “আমি চলে যাবার পর তোমাদের দায়িত্বপ্রাপ্তদের মধ্যে এমন লোক হবে যারা সুন্নাহকে নির্বাপিত করবে এবং বিদআতের অনুসরণ করবে। তারা সালাতকে যথাযত সময় থেকে বিলম্বিত করবে।” আমি বললামঃ হে আল্লাহর রাসুল, আমি যদি তাদের দেখতে বেঁচে থাকি তাহলে কি করব? তিনি বললেনঃ তুমি আমাকে জিজ্ঞেস কর, হে ইবনে আবদ, তোমার কি করা উচিত? যে আল্লাহর নাফরমানী করে তার আনুগত্য নেই।" [সুনানে ইবনে মাজাহ ২৮৬৫] উবাদা বিন সামিত থেকে বর্ণিত যে, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “আমি চলে যাওয়ার পর তোমাদের উপর নেতা থাকবে। তারা আপনাকে আদেশ করবে যা আপনি অপছন্দ করেন (অর্থাৎ মন্দ) এবং আপনি যা পছন্দ করেন (অর্থাৎ ভালো) তারা আপনাকে নিষেধ করবে, তাই তারা আপনার উপর নেতা হবে না" (সুয়ুতি, আল-জামিউ আস-সাগীর দ্বারা রিপোর্ট করা হয়েছে) উবাদা বিন সামিত (রাঃ) থেকে বর্ণিত যে, রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) বলেছেন, “আমি চলে যাবার পর তোমাদের মধ্যে এমন কিছু লোক থাকবে যারা তোমরা যা অপছন্দ করবে (মন্দের) আদেশ করবে এবং তোমরা যা পছন্দ করবে তা থেকে নিষেধ করবে। মধ্যে যে কেউআপনি তাদের জানার জন্য বেঁচে থাকেন, যারা আল্লাহ আজ্জা ওয়া জালকে অমান্য করে তাদের কোন আনুগত্য নেই” (সুয়ুতি, আল-জামিউ আস-সাগীর দ্বারা রিপোর্ট করা হয়েছে) জাবির ইবনে আবদুল্লাহ বর্ণনা করেন যে, রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) কা’ব ইবনে উজরাকে বলেছেন, “আল্লাহ তোমাকে মূর্খ নেতাদের থেকে রক্ষা করুন”। তিনি জিজ্ঞাসা করলেন, "মূর্খ নেতারা কি?" তিনি বলেন, “আমার পরে যারা নেতা আসবে, তারা আমার হেদায়েত নিয়ে নেতৃত্ব দেবে না, তারা আমার সুন্নাতকে অবলম্বন করবে না। যে কেউ তাদের মিথ্যার প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করে এবং তাদের অন্যায় কাজে সাহায্য করে সে আমার দলভুক্ত নয় এবং আমিও তার নই এবং সে আমার কুন্ডে (হাউদ) আমার কাছে আসবে না। যে তাদের মিথ্যাকে বিশ্বাস করে না এবং তাদের অন্যায় কাজে সাহায্য করে না, সে আমারই এবং আমিও তার, এবং সে আমার কুন্ডে (হাউদ) আমার কাছে আসবে” [আহমেদ, দারামী ও ইবনে হিব্বান] এটি আসলে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। কারণ অন্যান্য হাদীসে বলা হয়েছে যে অত্যাচারীর (দালিম) হাত নিয়ন্ত্রণ না করলে আল্লাহ (সুবহানাহু ওয়া তায়ালা) সবাইকে শাস্তি দিতে পারেন। আবু বকর আস-সিদ্দিক বলেন, “হে লোকেরা! আপনি এই আয়াতটি পাঠ করুন: নিজেদের যত্ন নিন! হেদায়েত মেনে চললে তোমার কোন ক্ষতি হবে না। আমি সত্যই আল্লাহর রাসূল (সাঃ) কে বলতে শুনেছিঃ 'যখন লোকেরা অন্যায়কারীকে দেখে এবং তার হাত ধরে না, তখন শীঘ্রই আল্লাহ তোমাকে তার কাছ থেকে আযাব ঢেকে দেবেন। ] আবু বকর আস-সিদ্দিক থেকে বর্ণিত: “হে লোকেরা! আপনি এই আয়াতটি পাঠ করুন: নিজেদের যত্ন নিন! আপনি যদি হেদায়েতের অনুসরণ করেন তবে পথভ্রষ্টদের থেকে আপনার কোন ক্ষতি হবে না (5:105)। আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি: 'যখন লোকেরা অন্যায়কারীকে দেখে এবং তাকে (অন্যায় করা থেকে) বাধা দেয় না, তখন খুব শীঘ্রই আল্লাহ তোমাদেরকে তাঁর পক্ষ থেকে শাস্তিতে আচ্ছন্ন করবেন।' জামিআত-তিরমিযী 3057] আবু বকর বর্ণনা করেছেন: ‘তোমরা এই আয়াতটি পাঠ কর “হে ঈমানদারগণ, নিজেদের যত্ন কর; যে পথভ্রষ্ট হয় সে তোমার কোন ক্ষতি করতে পারে না যখন তুমি সৎপথে পরিচালিত হও" এবং এটাকে তার অনুচিত জায়গায় রাখো। আমরা নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছিঃ “মানুষ যখন কোন অন্যায়কারীকে দেখে তাকে বাধা দেয় না, তখন আল্লাহ শীঘ্রই তাদের সবাইকে শাস্তি দেবেন। আমর ইবনে হুশাইমের বর্ণনায় আছে: আমি রাসুলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম)-কে বলতে শুনেছি: যদি কোন সম্প্রদায়ের মধ্যে অবাধ্যতামূলক কাজ করা হয় এবং তারা তা করতে সক্ষম হওয়া সত্ত্বেও তা পরিবর্তন না করে, তবে আল্লাহ শীঘ্রই তাদের সবাইকে শাস্তি দেবেন।” [সুনান আবি দাউদ 4338] আমরা কিভাবে আমাদের শাসন পরিবর্তন করতে পারি? সর্বজনীন দাওয়াহের গুরুত্ব এবং ভালো কাজের আদেশ/মন্দ কাজে নিষেধ করা আরেকটি ভুল ধারণা হল যে এটা বিশ্বাস করা হয় যে উম্মাহ কুফর আইন দিয়ে শাসনকারী দুষ্ট নেতাদের বিরুদ্ধে শক্তিহীন - যাতে 'আমাদের নিষ্কৃতি দেয়'। এটা হয় না। নেতাদের পরাশক্তি নেই, তারা তাদের আনুগত্য করার জন্য মুসলিম সৈন্য, পুলিশ, বিচারক, আইনজীবী এবং সরকারী প্রশাসকদের উপর নির্ভর করে। কিন্তু দাওয়াহ প্রদান করা মানুষকে শিক্ষিত করা যে পাপপূর্ণ আদেশ কেমন, তা মাদখালিদের দ্বারা বাধাগ্রস্ত হয় যারা 'শাসকদের' সমস্ত কথাবার্তাকে বাধা দেয়। হাস্যকর, তারা হাম্বলী হওয়ার প্রবণতা বিবেচনা করে, এবং তবুও আহমদ বিন হাম্বল মুতাজিল খলিফাদের অন্যায়ের বিরোধিতা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন, যারা উম্মাহকে তাদের ইসলামী আক্বীদার ব্যাখ্যা গ্রহণ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন, তাদের প্রকাশ্যে করা পাল্টা যুক্তি দিয়ে খণ্ডন করে। হাম্বল বিন ইসহাক বলেন: “[খলিফা] ওয়াথিকের শাসনামলে বাগদাদের ফকীহগণ আহমদ বিন হাম্বলের সামনে সমবেত হন। তাদের মধ্যে রয়েছে আবু বকর বিন ‘উবাইদ, ইব্রাহিম বিন ‘আলি আল-মাতবাখী এবং ফাদল বিন ‘আসিম। অতঃপর তারা আহমদ বিন হাম্বলের কাছে আসলেন তাই আমি তাদের অনুমতি দিলাম। তারা তাকে বললো, ‘এই ব্যাপারটি (অর্থাৎ অনুসন্ধান) উত্তেজিত ও উচ্চতর হয়ে উঠেছে।’ তারা শাসকের কথা উল্লেখ করছিলেন যে কুরআন সৃষ্টি হওয়ার বিষয়টি প্রকাশ করছে এবং এর বাইরেও। তখন আহমদ বিন হাম্বল তাদের বললেন, ‘তাহলে তোমরা কী চাও?’ তারা বললো: ‘আমরা চাই আপনি আমাদের সাথে যোগ দিন এই বলে যে আমরা তার শাসন ও নেতৃত্বে সন্তুষ্ট নই। তাই আহমাদ বিন হাম্বল তাদের সাথে এক ঘন্টা বিতর্ক করলেন এবং তিনি তাদেরকে বললেন: 'তোমাদের বক্তব্য দিয়ে বিরোধিতা করতে থাকো কিন্তু আনুগত্য থেকে হাত সরিয়ে নিও না এবং মুসলমানদের বিদ্রোহ করতে উৎসাহিত করো না এবং তোমাদের রক্ত ​​ও মুসলমানদের রক্ত ​​ঝরাবে না। তোমার সাথে. আপনার কর্মের ফলাফল দেখুন. আর ধৈর্য্য ধারণ কর যতক্ষণ না তুমি সৎ বা পাপী নিয়মে সন্তুষ্ট হও।’’ [মিহনাতুল-ইমাম আহমদ (পৃ. ৭০-৭২); আল-খাল্লাল ইন আস-সুন্নাহ (নং 90) একটি নির্ভরযোগ্য বর্ণনার সাথে।] ইবনে তাইমিয়া (মৃত্যু ৭২৮ হি) বলেছেন: “আহমদ [বিন হাম্বল] এবং তার মত এই শাসকদের [মুতাযিলীয় খলিফাদের] কাফের বলে ঘোষণা করেননি। বরং তিনি তাদের ইমানে বিশ্বাস করেছিলেন এবং তাদের নেতৃত্বে বিশ্বাস করেছিলেন এবং তিনি তাদের জন্য দোয়া করেছিলেন এবং তিনি মনে করেছিলেন যে তাদের অনুসরণ করা হবেতাদের সাথে নামায ও হজ এবং সামরিক অভিযান [জিহাদ] করা হত। তিনি তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ নিষিদ্ধ করেছিলেন - এবং এটি (অর্থাৎ বিদ্রোহ) তাঁর মত পণ্ডিতদের মধ্যে কখনও দেখা যায়নি। তবুও তারা মিথ্যা বিবৃতিতে যা কিছু উদ্ভাবন করেছিল সে তার বিরোধিতা করেছিল, কারণ এটি ছিল বড় কুফর, যদিও তারা এটি জানত না। তিনি এর বিরোধিতা করতেন এবং সাধ্যমত খন্ডন করার চেষ্টা করতেন। সুতরাং সুন্নাহ ও দ্বীন প্রকাশে এবং বিধর্মী জাহমাতদের উদ্ভাবনের বিরোধিতা এবং মুমিন, শাসক ও উম্মাহর অধিকার রক্ষার মধ্যে আল্লাহ ও তাঁর রাসূলের আনুগত্যের সমন্বয় থাকতে হবে, যদিও তারা অজ্ঞ বিদআতকারী এবং সীমালঙ্ঘনকারীই হয়। পাপী।" [মাজমু'আল-ফাতাওয়া, 7/507-508।] এটি হাইলাইট করে যে যদি কোন শাসক একটি মিথ্যা বিবৃতি দেয় বা একটি পাপের প্রচার করে, তবে এটিকে ডাকা যেতে পারে - যাতে উম্মাহকে এই ধরনের বক্তব্য এবং কাজগুলি ভাল এবং ঠিক বলে মনে করা থেকে রক্ষা করা যায়। ইসলাম কি সেই ব্যক্তির বিরুদ্ধে তাকফীর বাধ্যতামূলক করে যে আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন তা ব্যতীত আইন প্রণয়ন করে? আরও বিদ্রুপের বিষয় হল, মাদখালিরা এক ধরনের ইরজা (তাকফির স্থগিত করা) করে এবং হাম্বলী হওয়া সত্ত্বেও এবং বিশ্বাস করে যে কেউ অলসতার কারণে নামাজকে অবহেলা করলেও কুফর আইনের অধীনে 'আমরা জানি না হৃদয়ে কী আছে' বলে চিৎকার করে। একজন কাফির ইবনে কাছীর (রহঃ) : 'যে ব্যক্তি নবীদের সীলমোহর মুহাম্মদ ইবনে আবদ-আল্লাহর প্রতি অবতীর্ণ হওয়া আইনকে পরিত্যাগ করে এবং অন্য যে কোন আইনের বিচারের জন্য নির্দেশ করে। রহিত করেছেন, কুফর কাজ করেছেন, তাহলে যিনি বিচারের জন্য আল-ইয়াসাকে নির্দেশ করেন এবং তাকে প্রাধান্য দেন তার কী অবস্থা? যে এটা করে সে মুসলমানদের ঐক্যমত অনুযায়ী কাফির’ [আল-বিদায়াহ ওয়াল-নিহায়া, 13/139]। যাইহোক, যে ব্যক্তি কুফর আইন প্রণয়ন করে তার সম্পর্কে ইসলামের পণ্ডিতরা কী বিশ্বাস করেন তার যুক্তিগুলি ইতিমধ্যেই ব্যাখ্যা করেছেন শাইখ উসাইমিন, একজন সালাফি পন্ডিত, আমি এখনও মাদখালির নিন্দা করতে দেখিনি (এখনও): 'যে ব্যক্তি আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, সে অনুযায়ী শাসন করে না, কারণ সে তার সম্পর্কে সামান্য চিন্তা করে বা একে তুচ্ছ মনে করে বা অন্য কিছুকে এর চেয়ে উত্তম এবং মানুষের জন্য বেশি উপকারী বা এর সমতুল্য বলে বিশ্বাস করে, সে একজন কাফির যার কুফরি। তাকে ইসলামের ঊর্ধ্বে। এর মধ্যে তারা অন্তর্ভুক্ত যারা লোকেদের জন্য আইন জারি করে যা ইসলামী আইনের পরিপন্থী, এমন একটি ব্যবস্থা হতে যা মানুষ অনুসরণ করে। তারা কেবল সেই আইনগুলি জারি করে যেগুলি ইসলামী আইনের পরিপন্থী কারণ তারা বিশ্বাস করে যে সেগুলি মানুষের জন্য আরও ভাল এবং আরও উপকারী, কারণ এটি যুক্তিযুক্ত এবং মানবিক প্রকৃতির ভিত্তিতে জানা যায় যে কেউ এক পথ থেকে ভিন্ন পথে ফিরে যায় না। সে বিশ্বাস করে যে সে যে দিকে ফিরেছে তা উত্তম এবং সে যা থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে তার অভাব রয়েছে' [শারহ আল-উসুল আল-থালাতাহ] মহান আলেম আল-আল্লামা মুহাম্মাদ আল-আমীন আল-শানকিতি (রহঃ) বলেছেন: 'আয়াত থেকে যেমন আল্লাহ বলেছেন (অর্থের ব্যাখ্যা) "এবং তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত এবং তাঁর শাসনে কাউকে অংশীদার করেন না" [আল-কাহফ 18:26], এটি বোঝা যায় যে যারা প্রচার করে তাদের অনুসারীরা আল্লাহর নির্ধারিত বিধান ব্যতীত অন্য শরীক করা (শিরক)। এই বোঝাপড়াটি অন্যান্য আয়াতে স্পষ্টভাবে ব্যাখ্যা করা হয়েছে, যেমন আয়াতটি যারা মৃত মাংসের অনুমতি দেওয়ার ক্ষেত্রে শয়তানের আইন অনুসরণ করে, দাবি করে যে এটি আল্লাহ কর্তৃক হত্যা করা হয়েছে [এবং এইভাবে অনুমতি দেওয়া উচিত]: “(হে ঈমানদারগণ) যে মাংসে (প্রাণী জবাই করার সময়) আল্লাহর নাম উচ্চারিত হয়নি, তা খাও না, নিশ্চয়ই তা ফিসক (আল্লাহর অবাধ্যতা)। এবং অবশ্যই, শয়তানরা তাদের বন্ধুদের (মানুষের কাছ থেকে) আপনার সাথে বিবাদ করার জন্য উদ্বুদ্ধ করে এবং যদি আপনি তাদের আনুগত্য করেন [আল-মায়তাহ (একটি মৃত প্রাণী) খাওয়ার মাধ্যমে] তবে আপনি অবশ্যই মুশরিক হয়ে যাবেন। মুশরিক)" [আল-আন‘আম 6:121]। … নবী (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আদী ইবন হাতেম (রাঃ) এর কাছে এটি ব্যাখ্যা করেছিলেন যখন তিনি তাকে সেই আয়াত সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করেছিলেন যেখানে আল্লাহ বলেন (অর্থের ব্যাখ্যা): “তারা (ইহুদী এবং খ্রিস্টানরা) আল্লাহ ব্যতীত তাদের রবী ও সন্ন্যাসীদেরকে তাদের প্রভু হিসাবে গ্রহণ করেছিল" [আল-তওবাহ 9:31]। তিনি ব্যাখ্যা করেছেন যে তারা তাদের জন্য হালাল করেছে যা আল্লাহ হারাম করেছেন এবং তারা তাদের জন্য হারাম করেছেন যা আল্লাহ অনুমতি দিয়েছেন এবং তারা [লোকেরা] তাতে তাদের অনুসরণ করেছে; এভাবেই তারা তাদের প্রভু হিসাবে গ্রহণ করেছিল। যে বিষয়ে স্পষ্ট প্রমাণ একসত্য যে, সূরা আল-নিসা'তে, আল্লাহ, তিনি মহিমান্বিত ও মহিমান্বিত হতে পারেন, এমন লোকদের উল্লেখ করেছেন যারা বিচারের জন্য তাঁর দ্বারা নির্ধারিত আইন ব্যতীত অন্য কিছুর প্রতি নির্দেশ করতে চান এবং তাদের বিশ্বাসী হওয়ার দাবিতে বিস্মিত হন, কারণ তাদের দাবি বিশ্বাসী। যদিও তারা মিথ্যা বিচারকদের কাছে রায়ের জন্য উল্লেখ করতে চায় তা দেখায় যে তারা মিথ্যা বলার পর্যায়ে পৌঁছেছে যা বিস্ময়কর। এটাই আল্লাহ বলেন (অর্থের ব্যাখ্যা): “আপনি কি তাদের (মুনাফিকদের) দেখেননি যারা দাবী করে যে, আপনার প্রতি যা অবতীর্ণ হয়েছে এবং আপনার পূর্বে যা অবতীর্ণ হয়েছে তাতে তারা বিশ্বাস করে এবং তারা (তাদের বিবাদের) ফয়সালা তাগুতের (মিথ্যা) কাছে যেতে চায়? বিচারক) যখন তাদের প্রত্যাখ্যান করার আদেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু শয়তান (শয়তান) তাদের পথভ্রষ্ট করতে চায়" [আল-নিসা' 4:60] আমরা উদ্ধৃত খোদায়ী নাযিলকৃত কিতাবসমূহ থেকে সকলের কাছে এটা খুবই স্পষ্ট হয়ে যায় যে, যারা শয়তান কর্তৃক তার সমর্থকদের ঠোঁটে প্রবর্তিত মানবসৃষ্ট আইন অনুসরণ করে যা আল্লাহ তাআলার ঠোঁটে যা নির্ধারণ করেছেন তার বিপরীত। তাঁর রসূলগণ (আল্লাহর আশীর্বাদ ও সালাম), এতে কোন সন্দেহ নেই যে, তারা কাফির ও মুশরিক, একমাত্র সেই ব্যক্তি ব্যতীত যাদেরকে আল্লাহ ওহীর আলোয় অন্ধ করে দিয়েছেন এবং পথভ্রষ্ট হতে ছেড়ে দিয়েছেন। স্বর্গ ও পৃথিবীর স্রষ্টা কর্তৃক নির্ধারিত আইনের পরিপন্থী যে আইনী ব্যবস্থা, সে অনুযায়ী শাসন করা স্বর্গ ও পৃথিবীর স্রষ্টার প্রতি অবিশ্বাসের কারণ, যেমন উত্তরাধিকারে নারীর উপর পুরুষকে প্রাধান্য দেওয়ার দাবি। ন্যায্য নয় এবং উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে তাদের সমান করা আবশ্যক, এবং বহুবচন বিবাহ অন্যায়, বা বিবাহবিচ্ছেদ নারীর জন্য অন্যায়, এবং পাথর ছুঁড়ে মারা, হাত কেটে ফেলা ইত্যাদি বর্বর কাজ যা করা উচিত নয়। মানুষের কাছে, এবং তাই। এই ধরনের ব্যবস্থাকে সমাজের মানুষের জীবন এবং তাদের সম্পদ, সম্মান, বংশ, যুক্তি এবং ধর্মকে শাসন করা স্বর্গ ও পৃথিবীর স্রষ্টাকে অবিশ্বাস করা এবং যিনি সমস্ত কিছু সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি সৃষ্টি করেছেন তার দ্বারা নির্ধারিত ঐশী ব্যবস্থার বিরুদ্ধে লঙ্ঘন। তাদের সর্বোত্তম স্বার্থে কি ভাল জানেন; তিনি মহিমান্বিত এবং তিনি ব্যতীত অন্য কোন আইনদাতা থাকার ঊর্ধ্বে মহিমান্বিত হতে পারেন। "নাকি আল্লাহর সাথে তাদের শরীক (মিথ্যা উপাস্য) আছে যারা তাদের জন্য এমন একটি দ্বীন প্রতিষ্ঠা করেছে যা আল্লাহ নির্ধারিত করেননি?" [আল-শুরা 42:21] “(হে মুহাম্মাদ এই মুশরিকদেরকে) বলুন: ‘আমাকে বলুন, আল্লাহ আপনার জন্য কি বিধান নাযিল করেছেন! আর তুমি এটাকে হালাল ও হারাম করেছ।’ (হে মুহাম্মদ) বলুন: ‘আল্লাহ কি তোমাকে (এটা করার) অনুমতি দিয়েছেন, নাকি তুমি আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যারোপ করছ?’ (ইউনুস 10:59) "বলুন, 'নিশ্চয়ই যারা আল্লাহর বিরুদ্ধে মিথ্যা আরোপ করে, তারা কখনই সফলকাম হবে না'" [ইউনুস 10:69]' [আদওয়া আল-বায়ান, আয়াতের ভাষ্য (অর্থের ব্যাখ্যা): "এবং তিনি তাঁর সিদ্ধান্ত ও শাসনে কাউকে শরীক করেন না" [আল-কাহফ 18:26]]। মাদখালিরা মুসলিম বিশ্বে ধর্মনিরপেক্ষতার কারণকে সাহায্য করে শেষ পর্যন্ত, মাদখালিরা মুসলিম বিশ্বের ধর্মনিরপেক্ষকরণের পথ প্রশস্ত করবে। কিভাবে? কারণ তারা আগে খ্রিস্টানদের পথ অনুসরণ করে – যারা ‘রাজাদের ঐশ্বরিক অধিকার’ মতবাদ উদ্ভাবন করেছিল, এবং তারপর হবসের অত্যাচারীদের সহ্য করার ধর্মনিরপেক্ষ ন্যায্যতা… রাজাদের মতবাদের ঐশ্বরিক অধিকার বলে যে রাজারা ঈশ্বরের দ্বারা নিযুক্ত, এবং মন্দ রাজা ঈশ্বরের শাস্তি। তাই আরও প্রার্থনা করুন এবং ব্যক্তিগতভাবে ধার্মিক হন, এবং রাজা আবার ভাল হবেন। পরিচিত শব্দ? হ্যাঁ, খ্রিস্টানরা জনসাধারণকে শান্ত করার জন্য এটি বিশ্বাস করেছিল। টমাস হবস যুক্তি দিয়েছিলেন যে একজন নেতা থাকা কোন নেতার চেয়ে ভাল ছিল এবং এটি যে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, তাই তিনি যা করেন তা সহ্য করার যুক্তি দেন – তিনি যতই হত্যা, নিপীড়ন এবং এমনকি ধর্মীয় মতবাদের বাধ্যবাধকতাও করেন না কেন… হবসের প্রতিক্রিয়া ধর্মনিরপেক্ষ উদারতাবাদের দিকে নিয়ে যায়। . লক যুক্তি দিয়েছিলেন যে আপনাকে বিশৃঙ্খলা থেকে রক্ষা করার জন্য একজন নেতা থাকার অর্থ কী, যখন নেতার ইচ্ছা বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে, এবং তিনি (বা তার বন্ধুরা) দায়মুক্তির সাথে যে কোনও সময় কাউকে হত্যা করতে পারেন। তিনি বলেছিলেন যে এটি নেতার জনগণকে দাস করে তোলে, কারণ সে তার ইচ্ছামতো তাদের জীবনের মালিক। লক যুক্তি দিয়েছিলেন যে আইনের জন্য যা প্রয়োজন তা হল নিরঙ্কুশ হওয়া, এবং নেতা সহ এর অধীনে থাকা প্রত্যেকে। ppl তাহলে জানবেন যে তারা যদি আইনের অনুমতিযোগ্য এলাকায় থাকে তবে তারা নিরাপদ। এটাকে তিনি ‘স্বাধীনতা’ বলেছেন। কিন্তু এটি একটি ধর্মনিরপেক্ষ উদার দিক নিয়েছিল কারণ খ্রিস্টানরা অত্যাচারীদের প্রতি নিষ্ক্রিয়তা সমর্থন করার জন্য অনেক বাইবেলের ব্যাখ্যা সংযুক্ত করেছিল, লোকেরা বাইবেল থেকে দূরে সরে গিয়েছিল এবং ধর্মনিরপেক্ষ খ্রিস্টান, দেববাদী (এবং পরে,নাস্তিক)। বাইবেল অত্যাচার থেকে 'স্বাধীনতার' গ্যারান্টি দেওয়ার জন্য খুব অস্পষ্ট ছিল। এভাবে সেকুলারিজম লিবারেলিজমের জন্ম হয় মাদখালিরা ইসলামের সাথেও তাই করছে। জনগণ যদি অত্যাচারী শাসকদের প্রতি নিষ্ক্রিয় হওয়ার সাথে ইসলামকে যুক্ত করে রাখে, তবে তারা যা কিছু করতে পারে (এবং তাদের সহযোগী/অধীনস্থরা) মানুষের 'অধিকার' শুধুমাত্র আপনার মাথা নিচু করে, ঘুষ দিয়ে এবং সুবিধার সুবিধা অর্জনের মাধ্যমেই বিদ্যমান থাকে। হাস্যকরভাবে, ইসলামের পক্ষে কথা বলতে না পেরে মানুষের দুর্নীতি ত্বরান্বিত হয়, পাছে আপনাকে একজন 'ধর্মান্ধ' হিসাবে দেখা হবে এবং কারারুদ্ধ বা আরও খারাপ করা হবে। ইসলামের ভাবমূর্তি এবং উম্মাহর ভবিষ্যৎ বিশ্বাসকে বাঁচাতে আমাদের মাদখালীদের খণ্ডন করতে হবে। এখন, আজ কি করতে হবে। আজ ইসলামিক শাসন ব্যবস্থা কিভাবে পরিবর্তন করা যায় উম্মাহর অগভীর চিন্তাধারা, এবং এর ফলে মাদখালিদের, মানে শাসকের আনুগত্য করার একমাত্র বিকল্প হল বিপ্লব। তাই না. দুর্ভাগ্যবশত জিহাদিরা (যারা বিশ্বাস করে যে আমাদের আজ ধর্মনিরপেক্ষ শাসকদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করা উচিত) দুর্ভাগ্যক্রমে মুদ্রার অন্য দিক। জিহাদিরা তাদের মাদখালী চাচাতো ভাইয়ের মতো নেতাদের বিরুদ্ধে তাকফির করে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ শুরু করতে চায়। তারা এটি করা ভুল, কারণ রাষ্ট্রের কাছে তাদের চেয়ে বেশি সম্পদ রয়েছে এবং তারা কেবল দুর্বল ব্যর্থ রাষ্ট্রগুলিতেই সফল। এছাড়াও অনেক মুসলিম মারা যাবে। সমস্যা হল, সৈন্য এবং সরকারী প্রশাসক ইত্যাদি যারা রাষ্ট্রকে সমর্থন করে তারা অজ্ঞ, তাদের উদ্দেশ্য সম্পর্কে অজ্ঞ, ইসলামী আইন এমনকি যা বলে তা অজ্ঞ (এটির বিবরণ)। ইসলাম একটি পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা হিসেবে অনেক মুসলমানের কাছে অদ্ভুত, যারা জন্মেছে শুধুমাত্র একটি ধর্ম হিসেবে শেখানো হয়েছে। যদি মুসলিম উম্মাহ সত্যিই বুঝতে পারে জাতীয়তাবাদ হারাম, ঐক্য বাধ্যতামূলক এবং রাজনৈতিক, এবং শুধুমাত্র একজন নিযুক্ত ইমাম (একবচন) বৈধ যিনি ইসলামী আইনকে সমর্থন করেন, তারা আমাদের প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ঘটাবে। মুআযহিব জাবাল বলেছেন: "জ্ঞান হল নেতা এবং কর্ম হল তার অনুসারী।" আঞ্চলিক 'নেতাদের' কোনো বৈধতা আছে এমন ভ্রান্ত বিশ্বাস অন্যতম বাধা। তারা করে না। তারা গ্যাং লিডারও হতে পারে। গ্যাংদের শক্তি আছে, কিন্তু এটি তাদের বৈধ করে না, এমনকি যদি তারা একটি ছোট এলাকা ‘শাসন’ করে যেখানে পুলিশ প্রবেশ করে না। এবং শুধুমাত্র গ্যাং বা মাফিয়া নেতাদের কোন বৈধতা নেই, তার মানে এই নয় যে আমাদের তাদের সাথে লড়াই করতে হবে। জিহাদি পদ্ধতিটি হবে একটি প্রতিদ্বন্দ্বী মিলিশিয়া তৈরি করা, যা একটি কার্টেল বা মাফিয়ার উচ্চতর সম্পদের বিরুদ্ধে সফল হতেও পারে বা নাও পারে - প্রতিদ্বন্দ্বী মিলিশিয়াদের সম্পদের প্রয়োজন হবে, যা তারা কেবলমাত্র চাঁদাবাজি, অপহরণ এবং অবৈধ চুক্তির মাধ্যমে পাবে, শেষ পর্যন্ত মিলিশিয়া একটি নতুন গ্যাং বা মাফিয়া হয়ে উঠছে। যাইহোক, গ্যাংগুলির বিরুদ্ধে লড়াই করার সবচেয়ে যুক্তিসঙ্গত উপায় হল সমস্ত লোককে তাদের আনুগত্য করা বন্ধ করে দেওয়া এবং পরিবর্তে পুলিশকে তাদের সাথে লড়াই করার জন্য জোগাড় করা, এবং যদি সেখানে কোনও পুলিশ না থাকে, তবে জনগণকে অবশ্যই একটি পুলিশ বাহিনী পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে হবে যা ধারণ করে। একটি রাষ্ট্রের উচ্চতর সম্পদ। আমরা যদি সবাইকে বোঝাই যে 'শাসকদের' আনুগত্য করা উচিত নয়, তাদের অনুসারীদের বোঝানো সহ, গ্যাং লিডারের ক্ষমতা বাষ্প হয়ে যাবে - যেমন আবদুল্লাহ ইবনে সালুল ভেবেছিলেন যে তিনি ইয়াথ্রিবের রাজা হবেন, যতক্ষণ না মুসলিমরা ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ অর্জন করে। আওস ও খাযরাজ উভয়ের দালাল (আহল উল হাল ওয়াল আকদ)। সংক্ষেপে, আমাদের যা দরকার তা হল দাওয়াহ ইসলামের জ্ঞান এবং বোঝার দ্বারা পরিচালিত হয় এবং বিশ্ব কীভাবে কাজ করে। মাধখালিদের রাষ্ট্রকৌশল সম্পর্কে অজ্ঞতা তাদের রাষ্ট্রকল্পের হাদিস সম্পূর্ণরূপে বুঝতে অক্ষম করে তুলেছিল যেমন চিকিৎসা নীতিশাস্ত্রের বই পড়লে আপনি ওষুধ জানতে পারবেন না। কিন্তু দাওয়াহ শুধুমাত্র ব্যক্তিদের দ্বারা করা যায় না, তাদের প্রয়োজন ভ্যানগার্ড গ্রুপ (সম্প্রদায় নয়! গ্রুপ, যেমন কোম্পানি বা দাতব্য সংস্থাগুলি কেমন)। ভ্যানগার্ড গ্রুপগুলি পর্দার আড়ালে নেটওয়ার্ক করতে পারে, প্রতিবাদ/বিক্ষোভ সংগঠিত করতে পারে এবং করতে পারে - একটি সমাজের মনস্তাত্ত্বিক 'সামাজিক চুক্তি'কে উদ্দেশ্যহীন অস্তিত্ব থেকে পরিবর্তন করতে, একটি দৃষ্টিভঙ্গি এবং মহাজাগতিক উদ্দেশ্যের পিছনে ঐক্য করতে যা সমস্ত ক্রিয়া এবং সংস্কৃতিকে অবহিত করে। মাদখালিরা সেই খুরুজকে ডাকবে (যদিও কোন সহিংসতা জড়িত নয়, এবং কোন তাকফির জড়িত নয়, কারণ আমরা আজ মুসলিম বিশ্বকে কেবল অজ্ঞ)। জিহাদিরা এটাকে বলবে ‘সব কথা নয় অ্যাকশন’, কিন্তু তারা উভয়েই ভুল। মহানবী (সাঃ) কখনো জোর করে মদীনা দখল করেননি। নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কখনোই জোর করে মদীনা দখল করেননি, তিনি মুসআব ইবনে উমায়ের এবং মদীনা সমর্থকদের একটি দলের দাওয়াহ প্রচেষ্টার মাধ্যমে এটি অর্জন করেছিলেন। এটি গুরুত্বপূর্ণ, কারণ এটি দেখায় যে এটি অর্জনের জন্য আমাদের একজন নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের প্রয়োজন নেই, কেবল প্রজ্ঞা, জ্ঞান, সংগঠন এবং অধ্যবসায়। যুদ্ধবাজরা 'শাসক' নয়: কেন গ্যাং নেতাদের নেইইসলামে বৈধতা আমি ‘নেতাদের’ যুদ্ধবাজ বলি, কারণ যুদ্ধবাজ তারাই যারা কেবল সামরিক শক্তি নিয়ন্ত্রণ করে ক্ষমতায় থাকে, জনগণের সম্মতি নয়। ইংরেজিতে, 'ওয়ারলর্ড' শব্দের অর্থ এমন একজন ব্যক্তি যার চারপাশে যোদ্ধাদের একটি দল থাকার কারণে ক্ষমতা রয়েছে যারা তাকে আনুগত্য করে কিন্তু তাকে শাসন করার জন্য জনগণের দ্বারা নিযুক্ত বা বায়াহ দেওয়া হয়েছে বলে নয়। যুদ্ধবাজদেরকে প্রাক্তন রাষ্ট্রের ভাঙ্গা অবশেষের সভাপতিত্ব হিসাবেও সংজ্ঞায়িত করা হয়। এটি ঠিক আজ মুসলিম বিশ্ব যেখানে উম্মাহ বাস করে, খিলাফতের পূর্ববর্তী জমিগুলি জাগরণে বিভক্ত। এইভাবে ইংরেজি শব্দ 'ওয়ারলর্ড' সংজ্ঞাগতভাবে 'শাসকদের' ক্ষেত্রে প্রযোজ্য যারা আজ মুসলিম বিশ্বের উপর ক্ষমতার অধিকারী। গাজ্জালি একটি হাদিস সম্পর্কে মন্তব্য করেন “তিনজন ছাড়া মানুষের বিচার করা হবে না: একজন আমির, একজন উপ (আমিরের) এবং একজন অনুপ্রবেশকারী” আমির হলেন ইমাম (ইমামগণ সর্বদা বিচারক হয়েছেন); ডেপুটি তার সহকারী, যখন অন্য কেউ একজন অনুপ্রবেশকারী যে তার তা করার কোন প্রয়োজন ছাড়াই সেই দায়িত্ব গ্রহণ করে’ [ইমাম গাজ্জালী, ইহইয়া উলূম উল দ্বীন] একটি উদাহরণ ব্যবহার করার জন্য, এমন একটি শহর কল্পনা করুন যেখানে পুলিশ বাহিনী দুর্বল বা অস্তিত্বহীন, এবং গ্যাংগুলি শহরের বিভিন্ন এলাকা নিয়ন্ত্রণ করে, প্রতিটি গ্যাংয়ের একজন নেতা থাকে। সেই গ্যাং লিডাররা কি কর্তৃত্ব নিয়ে মুসলমানদের উপর ‘শাসক’ হয়ে যায়? না কেন? কারণ ক্ষমতা ও ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ থাকা সত্ত্বেও তাদের বৈধতার অভাব রয়েছে। এবং আপনি যদি এটি অদ্ভুত মনে করেন যে খিলাফত ছাড়া কারও বৈধতা থাকতে পারে না, তবে ইমাম গাজ্জালির বাণী পড়ুন যারা তাঁর সময়ের অযোগ্য (জ্ঞানে) খলিফার সমালোচনা করে: 'এটি আহকামের (ইসলামের আইনগত রায়) উপর একটি গুরুতর আক্রমণ এবং তাদের নিষ্ক্রিয়তা এবং অবহেলার একটি সুস্পষ্ট ঘোষণা এবং এটি সমস্ত গভর্নরের অবৈধতা এবং কাদিসের বিচারের অযৌক্তিকতা এবং ধ্বংসের স্পষ্ট ঘোষণার আহ্বান জানাবে। ঈশ্বরের অধিকার [হুদূদ] এবং প্রেসক্রিপশন এবং রক্ত ​​ও গর্ভ [সন্তান] এবং সম্পত্তির [প্রতিশোধ (কাসাস)] বাতিল করা এবং পৃথিবীর [সমস্ত] অঞ্চলে কাদিস থেকে জারি করা বিবাহের অবৈধ ঘোষণা জীবের হেফাজতে [যত্ন] ঈশ্বরের সর্বোচ্চ অধিকারের অবশিষ্টাংশ। কেননা এ ধরনের সমস্ত বিষয় তখনই বৈধ হবে যদি ইমাম কর্তৃক যথাযথভাবে নিযুক্ত কাদিস থেকে জারি করা হয় - যা ইমামতি না থাকলে অসম্ভব। সুতরাং একটি মতবাদের কলুষতার প্রকাশ ঘটানো যা ধর্মের একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ এবং কর্তব্য… ঈশ্বরের সাহায্যে আমরা এটি করার চেষ্টা করব। আমরা দাবি করি যে, ইমাম আল-মুস্তাযির বিল্লাহ হলেন প্রকৃত ইমাম যাকে মানতে হবে। [ইমাম গাজ্জালী, ‘আল-মুসতাযিরি’ (আল-গাজ্জালীর ফাদিয়াহ আল-বাতিনিয়াহ ওয়া ফাদাইল আল-মুসতাজরিয়াহ)] মাদখালিদের দাবি তারা নৈরাজ্য থেকে রক্ষা করে। কিন্তু নৈরাজ্যের গ্যাং লিডার রয়েছে, এটি একটি আইন বা উচ্চতর নীতির অধীনে পিপিএলকে একীভূত করে না। গাজ্জালি যেমন ব্যাখ্যা করেছেন, খলিফা ছাড়া কোনো বৈধতা নেই, এমনকি গভর্নরদের কাছেও এটি নৈরাজ্য। মাদখালিরা নৈরাজ্যের রক্ষক। তাই আমি এটি পড়ার সকলকে ইসলামে শাসনের ফিকাহ, তবে অর্থনীতি, রাষ্ট্রকল্প সম্পর্কে আরও অধ্যয়ন করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি… সুন্নাহ এবং খিলাফাহ (ইমাম হিসাবে নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম-এর উত্তরসূরিত্ব) মেনে চলুন এবং ধর্মনিরপেক্ষতার 'বিদা' অপসারণ করুন। জাতি-রাষ্ট্র এবং কুফর আইন। ইরবাদ ইবনে সারিয়াহ থেকে বর্ণিত: ‘আল-ইরবাদ বলেন: একদিন রাসূলুল্লাহ (সাল্লাল্লাহু ‘আলাইহি ওয়া সাল্লাম) আমাদেরকে নামাযের নেতৃত্ব দিলেন, তারপর আমাদের মুখোমুখি হলেন এবং আমাদেরকে একটি দীর্ঘ উপদেশ দিলেন যা শুনে চোখ অশ্রুসজল হয়ে গেল এবং অন্তর ভীত হল। এক ব্যক্তি বললঃ আল্লাহর রাসূল! মনে হয় যেন এটা বিদায়ের উপদেশ, তাহলে আপনি আমাদের কি আদেশ দেন? অতঃপর তিনি বললেনঃ আমি তোমাদেরকে আল্লাহকে ভয় করতে এবং হাবশী দাস হলেও শুনতে ও আনুগত্য করার নির্দেশ দিচ্ছি, কারণ তোমাদের মধ্যে যারা আমার পরে বেঁচে থাকবে তারা বড় মতবিরোধ দেখতে পাবে। অতঃপর তোমরা অবশ্যই আমার সুন্নাহ এবং সঠিক পথপ্রাপ্ত খলিফাদের অনুসরণ করবে। এটি ধরে রাখুন এবং এটিতে দ্রুত লেগে থাকুন। নতুনত্ব এড়িয়ে চলুন, কারণ প্রতিটি নতুনত্ব একটি উদ্ভাবন এবং প্রতিটি উদ্ভাবন একটি ত্রুটি" [সুনান আবি দাউদ 4607] দোযখের আগুনে (শয়তানের অন্তরে?) আহবানকারীদের থেকে নিজেদের রক্ষা করার সর্বোত্তম উপায় হল উম্মাহকে আবার এক জামাআতে একত্রিত করার জন্য আহ্বান করা এবং প্রচারাভিযান পরিচালনা করা এবং একজন ইমাম নিয়োগ করা। আমি জিজ্ঞেস করলাম, “সেই ভালোর পরে কি কোন মন্দ থাকবে?” তিনি উত্তরে বললেন, হ্যাঁ, (জাহান্নামের) দরজায় কিছু লোক ডাকবে, আর যে তাদের ডাকে সাড়া দেবে, তাকে তারা (জাহান্নামের) আগুনে নিক্ষেপ করবে। আমি বললাম, ইয়া রাসূলাল্লাহ! আপনি কি আমাদের কাছে তাদের বর্ণনা করবেন?" তিনি বলেন, “ওরা আমাদের নিজেদের থেকে হবেমানুষ এবং আমাদের ভাষায় কথা বলবে।" আমি বললাম, "আমার জীবনে এমন অবস্থা হলে আমাকে কি করতে আদেশ করবেন?" তিনি বললেন, “জামাআত ও তাদের ইমামের [একবচন] সাথে লেগে থাকো” আমি বললাম, “যদি কোন জামাআত বা ইমাম [একবচন] না থাকে? তিনি বললেন, “তাহলে ঐ সমস্ত দলাদলি [ফিরাক] থেকে দূরে সরে যাও, এমনকি যদি তুমি গাছের শিকড় কামড়াও (খাও) যতক্ষণ না তুমি সেই অবস্থায় থাকবে মৃত্যু তোমাকে গ্রাস করবে। তখন তিনি বললেনঃ এমন নেতা থাকবে যারা আমার নির্দেশে পরিচালিত হবে না এবং যারা আমার পথ অবলম্বন করবে না? তাদের মধ্যে এমন কিছু মানুষ থাকবে যাদের মানুষের দেহে শয়তানের হৃদয় থাকবে। আমি বললামঃ কি করবো। রসূলুল্লাহ (সাঃ) যদি আমি (হতে) সেই সময় থাকতে পারি? তিনি উত্তর দিলেন: আপনি আমির [একবচন] শুনবেন এবং তার আদেশ পালন করবেন; এমনকি যদি তোমার পিঠে চাবুক মারা হয় এবং তোমার সম্পদ ছিনিয়ে নেওয়া হয় তবুও তোমার কথা শুনতে হবে এবং মান্য করতে হবে। [সহীহ মুসলিম 1847খ] ইনশাআল্লাহ এটাই হবে খিলাফাহ রাশিদা (সঠিক নির্দেশিত) রাষ্ট্রের ভবিষ্যদ্বাণীকৃত প্রত্যাবর্তন। হুদাইফা খ. আল-ইয়ামান (রাঃ) বর্ণনা করেন যে, রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেছেন, “তোমাদের মধ্যে নবুওয়াত থাকবে যতদিন আল্লাহ চান। অতঃপর আল্লাহ যখনই তা অপসারণ করতে চাইবেন তখনই তা অপসারণ করবেন এবং ভবিষ্যদ্বাণীমূলক পদ্ধতির উপর খিলাফত হবে। যতদিন আল্লাহ তা টিকে থাকতে চান ততদিন পর্যন্ত থাকবে, তারপর আল্লাহ যখনই তা অপসারণ করতে চাইবেন তখনই তা অপসারণ করবেন। অতঃপর একটি চিরস্থায়ী রাজবংশ হবে এবং তা ততদিন থাকবে যতদিন আল্লাহ তা বহাল থাকতে চান। অতঃপর আল্লাহ যখনই তা অপসারণ করতে চাইবেন তখনই তা দূর করবেন। অতঃপর অত্যাচারী (জবরদস্তি) রাজত্ব থাকবে এবং তা ততদিন থাকবে যতদিন আল্লাহ তা বহাল থাকতে চান। অতঃপর তিনি যখনই তা অপসারণ করতে চাইবেন তখনই তা সরিয়ে দেবেন এবং তারপর ভবিষ্যদ্বাণীমূলক পদ্ধতির উপর খিলাফত হবে।” [আহমদ (18406)] মাদখালিস নেপোলিয়ন বোনাপার্টের মিশর বিজয় এবং 'আইএসআইএস চ্যালেঞ্জ'কে সমর্থন করত এবং যদি কেউ এখনও মনে করে যে শুধুমাত্র একজন মুসলিম হিসাবে চিহ্নিত করা, এবং ক্ষমতা এবং ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ একজনকে 'শাসক' করার জন্য যথেষ্ট, তাহলে তারা কি সঙ্গতিপূর্ণ হবে এবং 2014-2017 এর মধ্যেও আইএসআইএসকে 'শাসক' বলবে কারণ তারাও অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করেছিল? ! আমি আশা করি তাদের না বলার বুদ্ধি আছে। আর না বললে আজকে স্বঘোষিত ‘শাসকদের’ কাছে একই জবাব দিতে হবে। এবং আরও হাস্যকর সিদ্ধান্তে নিয়ে গেলে, মাদখালিদের নেপোলিয়ন বোনাপার্টের মিশর জয় করার সময় 'শুনতে এবং মানতে' হত, কারণ তিনি তার নতুন শাসনকে ন্যায্যতা দেওয়ার জন্য এবং 'খুরোজ' প্রতিরোধ করার জন্য তিনি এবং তার সেনাবাহিনীকে 'অসিদ্ধ মুসলমান' ঘোষণা করতে মাদখালি যুক্তি ব্যবহার করেছিলেন। এটার বিরুদ্ধে. 'কে জানে তার হৃদয়ে কি ছিল', তাই না? ‘আমি স্বীকার করছি যে বোনাপার্ট তার ধর্মান্তরিত হওয়ার বিষয়ে প্রায়ই মুসলিম ধর্মের প্রধানদের সাথে কথা বলেছেন; কিন্তু শুধুমাত্র বিনোদনের জন্য। কোরানের পুরোহিতরা, যারা সম্ভবত আমাদের ধর্মান্তরিত করতে পেরে আনন্দিত হতেন, তারা আমাদের সবচেয়ে বেশি ছাড় দিয়েছেন। কিন্তু এই কথোপকথনগুলি নিছক বিনোদনের মাধ্যমে শুরু হয়েছিল, এবং কখনই তাদের কোন গুরুতর ফলাফলের দিকে নিয়ে যাওয়ার অনুমান করা যায় না। বোনাপার্ট যদি একজন মুসলমান হিসেবে কথা বলতেন, তাহলে সেটা ছিল তার চরিত্রে একজন মুসলিম দেশের সামরিক ও রাজনৈতিক প্রধান। এটি করা তার সাফল্যের জন্য, তার সেনাবাহিনীর নিরাপত্তার জন্য এবং ফলস্বরূপ, তার গৌরবের জন্য অপরিহার্য ছিল। প্রতিটি দেশে তিনি একই নীতিতে ঘোষণাপত্র তৈরি করতেন এবং ভাষণ দিতেন। ভারতে তিনি আলীর জন্য, থিবেতে দালাই-লামার জন্য এবং চীনে কনফুসিয়াসের জন্য হতেন। [R.W. Phipps দ্বারা সম্পাদিত লুই অ্যান্টোইন ফাউভেলেট ডি বোরিয়েনের নেপোলিয়ন বোনাপার্টের স্মৃতিচারণ। ভলিউম 1 (নিউ ইয়র্ক: Charles Scribner's Sons, 1889) p. 168-169] খিলাফত একটি সুন্নাত যা আমাদের অবশ্যই আঁকড়ে ধরতে হবে - তাই ধর্মনিরপেক্ষতা ও জাতীয়তাবাদের উপর শাসনের আনুগত্যকে ন্যায্যতা প্রদানকারীদের বিদা থেকে সাবধান থাকুন ইরবাদ ইবনে সারিয়াহ রাদিয়াল্লাহু আনহু থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আমাদেরকে এমন একটি খুতবা দিয়েছিলেন যা অন্তরকে ভীত করে এবং চোখ অশ্রুসজল করে দেয়। তখন আমরা বললাম, হে আল্লাহর রাসূল! [এটি যেন একটি বিদায়ী খুতবা] তাই আমাদেরকে উপদেশ দিন।’ তিনি বললেন, ‘আমি তোমাকে আল্লাহকে ভয় করতে এবং শুনতে ও আনুগত্য করার উপদেশ দিচ্ছি, যদিও একজন হাবশী দাস তোমার ওপর শাসন করে। নিশ্চয়ই তোমাদের মধ্য থেকে যিনি বসবাস করেন তিনি অনেক ভিন্নতা দেখতে পাবেন, তাই আমার সুন্নত এবং সঠিক পথপ্রদর্শনকারী খলিফাদের সুন্নাতের উপর থাকা আপনার উপর। আপনার পিছনের দাঁত দিয়ে এটি কামড় দিন এবং নতুন উদ্ভাবিত বিষয়গুলি থেকে সাবধান থাকুন, কারণ, প্রতিটি নতুন উদ্ভাবিত জিনিস একটিউদ্ভাবন, এবং সমস্ত উদ্ভাবনই পথভ্রষ্টতা।"

  মাদখালিদের বিচ্যুতি ও বিদা' ভুলভাবে একাধিক ধর্মনিরপেক্ষ শাসককে একক খিলাফত হিসাবে একই শরী' অধিকারের অধীনে রাখা। "মাদখালি"...