" বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে ইসলামী ঐক্যের চ্যালেঞ্জ"
![]() |
ইসলামী ঐক্যের চ্যালেঞ্জ |
১। দুনিয়ার এমন কোন ইসলামী ফেরকা নাই যা বাংলাদেশে নাই। এবং এদের মধ্যে বিভেদ এমন চরম পর্যায় যে এক দল অপর দলকে প্রকাশ্যে কাফের বলে ফতোয়া দেয়।
২। বাংলাদেশের সাধারন মানুষ গুলো ইসলামি ঐক্যের জন্য আবেগ প্রবন হলেও আলেম সমাজ একেবারেই তা গ্রাহ্য করে না অথবা ঐক্যের গুরুত্ব উপলব্ধি করতে পারে না, আর উপলব্ধি করতে পারলেও স্বার্থের জন্য বিষয়টি এড়িয়ে যায়।
৩। সকল দলের সকল আলেমরাই স্বার্থপর, ঐক্য হলেই যদি নিজের নেতাগিরি ছুটে যায় সে জন্য মুখে মুখে আলেমরা ঐক্যের কথা বললেও অন্তর হতে কেউ ঐক্য চায় না। এদেশের কিছু আলেম এতটাই নিচু স্বভাবের যে এক বেলা সরকারী ভবনে দাওয়াত খাওয়ার জন্য এক দল আরেক দলকে কাফের বলে ফতোয়া দেয়।
৪। পৃথিবীর যে কোন দেশের আলেমের চেয়ে বাংলাদেশের আলেম সমাজ বেশী হিংসুটে, তাই তার কখনোই ছাড় দিতে শিখে নি।
৫। এদেশের আলেম সমাজ নিজেকে ব্যতিত/নিজের দল ব্যতিত দুনিয়ার সকল দল, মত ও পথকে বাতিল বলে মনে করে।
৬। বাংলাদেশের সকল আলেম বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে কোন জ্ঞান রাখে না, আর যতটুকু জ্ঞান রাখেন তা ইসলাম বিরোধীদের মোকাবেলায় কোন কাজে আসে না।
৭। কওমী বলেন, আলীয়া বলেন আর অন্যান্য ধারার ইসলামী শিক্ষা বলেন সবাই ফতোয়া আর বিতর্ক ছাড়া অন্য কিছু শিখে না। তাদের শিক্ষার এক মাত্র উদ্দেশ্য থাকে হয় ইমামতি আর না হয় মাদরাসায় শিক্ষকতা। আর যারা ভাল বা ব্রিলিয়ান্ট তারা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাল ডিগ্রী নিয়ে দুনিয়াবী কাজে লেগে যায়।
৮। বাংলাদেশের আলেমদের মাঝে পরস্পর পরস্পরের যে অবিশ্বাস এটাই তাদের ধ্বংশের জন্য নিজেরাই যথেষ্ট, ইহুদি, রাম-বার অথবা খ্রিস্টান কারোরই তাদের নিয়ে ভাবার দরকার না।
৯। বাংলাদেশের আলেম সমাজ এতটাই অজ্ঞ যে তারা ইসলামী ঐক্যের বর্তমান প্রয়োজনীয়তা বুঝার নূন্যতম জ্ঞানটুকু রাখে না। বরং তারা নিয়মিত বিভাজন বাড়িয়েই চলছে।
১০। বাংলাদেশের আলেমরা বর্তমান বিশ্ব সভ্যতা সম্পর্কে এত কম ধারনা রাখে যে দেশের সেরা ১০০ জন আলেমকে জায়োনিস্টদের ষড়যন্ত্র সম্পর্কে বক্তব্য দিতে বললে ১০ জনও এ বিষয়ে ১ মিনিনিটের বেশী কথা বলার যোগ্যতা রাখে কিনা না সন্দেহ আছে।
১১। বাংলাদেশের আলেম সমাজ ইসলাম বিধ্বংশী ২০ টি গুপ্ত সংগঠনের নাম বলতে বললে বাংলাদেশের ১ জন আলেমও বলতে পারে কিনা সন্দেহ আছে। অথচ ৭৭টার উপর গোপন সংগঠন নিয়মিত ইসলাম ধ্বংশের কাজ করে যাচ্ছে।
১২। বাংলাদেশে ১০ জন আলেমও পাওয়া যায় কিনা সন্দেহ আছে যারা কাব্বালিস্ট, জায়োনিজম, ফ্রিম্যানশন, ঠগী, মোসাদ,এম সিক্সটিন, রথচাইল্ড ইত্যাদি সম্পর্কে নূন্যতম জানে।
১৩। বাংলাদেশের যেসকল ইসলামী সংগঠনকে শিক্ষিত মানুষেরা হাক্বানী বলে জানে সে সকল হাক্বানী ইসলামী সংগঠন গুলো মানব সৃষ্ট গনতন্ত্র নামক কুফুরী মতবাদকে চর্চা করে, ধারন করে, লালন করে, এটা যে হারাম এটা তো স্বীকার করেই না বরং এই কুফুরী গনতন্ত্রকে ইসলামী লেবাশ লাগিয়ে জায়েজ বলে ফতোয়া দেয়। এতটুকুও বুঝেননা যে এটা একটা কুফুরী ব্যবস্থা, গনতন্ত্র দিয়ে ক্ষমতায় যাওয়া যায় কিন্তু ইসলাম প্রতিষ্ঠা সম্ভব না।
১৪। কথায় আছে, যে সরিষা দিয়ে ভুত তাড়ায় সে সরিষায় ভূত আছর করলে ভূত কি কবু ছাড়ে?
বাংলাদেশের সংবিধানে আল্লাহর উপর পূর্ণ আস্থা এই কথাটাই স্বীকার করা হয় না, মানে সৃষ্টি কর্তার স্বীকৃতিটাই যেই সংবিধানে নাই সেই সংবিধানের শর্ত জনগনই সকল ক্ষমতার উৎস এ কাথাটার উপর স্বীকৃতি প্রদান পূর্বক ইসলামী দলের নিবন্ধন করে কূফুরী গনতন্ত্র চর্চা করে নিজেদের হাক্বানী দাবী করে ইসলামী দল দাবী করে, ইসলামী সমাজ কায়েমের স্বপ্ন দেখে, অথচ টোটাল পদ্ধতিটাকেই ইসলাম হারাম করেছে।
১৫।বাংলাদেশের আলেমদের বিভাজন এতটাই প্রকট যে PhD করা, আজহার বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রতিষ্ঠানের উচ্চ ডিগ্রীধারী আলেমরা রাফাদায়েন, নামাজে তাক্ববীর সংখ্যা বা কিয়াম এর মত ছোট ছোট বিষয় নিয়ে নিয়মিত বিতর্কে জড়িয়ে থাকে, অথচ এসকল আলেমরা মুসলমানদের মুক্তির উপায় নিয়ে গবেষনা করার কথা।
১৬। এদেশের আলেমরা প্রকাশ্যে ভরা মজলিশে বা মাহফিলে এমন ভাবে একে অপরকে গালিগালাজ ও অসন্মনিত করে যা দেখে ইবলিশ পর্যন্ত হতাশ হয়, অথচ আলেমদের ব্যবহার হওয়ার কথা ছিল মার্জিত, যা দেখে অমুসলিমরা আকৃষ্ট হয়। বরং এখন উল্টোটা হচ্ছে।
১৭। গ্রানাডায় স্পেনীয় বাহিনীর হাতে চরম সূচনীয় পরাজয় ও লাঞ্চিত হওয়ার পূর্বে মুসলমানরা যেমন ভাবে বিভাজিত ছিল বর্তমানে তার থেকে বাংলাদেশের আলেমরা কম বিভাজিত নয়।
১৮। এ দেশের হাতে গোনা যে কয়েকজন আলেম গভীর বিষয় গুলো নিয়ে ভাবে বা কথা বলে তাদেরকে বাকী আলেমরা দেশ ছাড়া করে অথবা ইসলাম বিরোধীদের সাথে হাত মিলিয়ে জেলে আটকে রাখে।
১৯। এ দেশের আলেমরা এতটা স্বার্থপর যে জেলে যাওয়ার ভয়ে অথবা জেল থেকে ছাড়া পাওয়ার জন্য নিজেদের ঈমান বিক্রয় করে জিহাদ, ইসলামি সমাজ ব্যবস্থা ইত্যাদি বিষয়ে কথা বলবেনা মর্মে বাতিলদের সাথে চুক্তি করে।
২০। এ দেশ এমন একটি বিভাজিত মুসলিম দেশ যে দেশে একদল আলেমকে অন্যায় ভাবে ফাঁসিতে দিলে অন্য দলের আলেমরা হাজার হাজার কেজি মিষ্টি বিতরন করে উল্লাস করে।
আমার লেখায় কেউ দুঃখ পেয়ে থাকলে ক্ষমা প্রার্থী আর সবিনয় অনুরোধ আমার সাথে রাগ না করে হাশরের ময়দানে কি জবাব দিবে সে বিষয়টি চিন্তা করার জন্য সবাইকে সবিনয় অনুরোধ জানাচ্ছি।
সহমত
উত্তরমুছুন