"জাহাঙ্গীর কবির নানকের বক্তব্য ও বাস্তবতা"
নানক সাহেব বলেন ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার অধিকার 'ফ্যাসিস্ট সরকারের' নেই- নানক।
বাস্তবতা: ছাত্রলীগ নিষিদ্ধকরণের অধিকারই না শুধু বর্তমান সরকারই অবৈধ,তবে বাস্তবতা হলো এই অন্তর্বতীকালীন সরকার বিপ্লব পরবর্তী সরকার, বিপ্লবী সরকার কোন কিছুই নিয়ম মেনে করে না,তাই এটাও কোনো নিয়ম মেনে করবে না এটাই স্বাভাবিক।
নানক বলেন কিশোর গ্যাং থেকে উত্তরণ পাওয়া তথাকথিত সমন্বয়করা'।
বাস্তবতা: যদি কিশোর গ্যাংয়ের কথাই বলে তাইলে সবাই জানে এই কিশোর গ্যাংয়ের জন্মদাতা কারা, এদের লালন কর্তা কারা। সবই তৎকালী আওয়ামিলীগ সরকারের লিডাররা করত, তাই সমন্বয়করা যদি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য হয়েই থাকে তাইলে এর দায়ও আওয়ামিলীগের।
এই সমন্বয়করা যদি অপরাধীই হয়ে থাকতো তাইলে তাদেরকে বিচারের আওতায় না এনে বার বার কেনো তৎকালীন মন্ত্রী এমপিরা তাদের সাথে বৈঠক করেছিলো,তখন তো কখনোই তাদেরকে কিশোর গ্যাং হিসাবে ঘোষনা দেয় নি?
নানক:যেহেতু শেখ হাসিনা সংবিধান অনুযায়ী, সশরীরে রাষ্ট্রপতির সাথে দেখা করে লিখিত পদত্যাগপত্র দেননি তার মানে তিনি এখনো বাংলাদেশের বৈধ প্রধানমন্ত্রী।
বাস্তবতা:
যদি তিনি পদত্যাগ পত্র না দিয়েই থাকেন তথাপিও উনি পালায়ন করেছেন।উনি বৈধ প্রধান মন্ত্রী হলে দেশে আসেন না কেনো? ৩০০জন এমপি সহ সংসদ বিলুপ্ত, শেখ হাসিনা কোন সংসদের রায়ে বর্তমানে প্রধান মন্ত্রী?
নানক: মুহাম্মদ ইউনূসের সরকার অবৈধ।
বাস্তবতা: এ সরকার ৭২ এর সংবিধান অনুযায়ী অবৈধ,এটা সত্য, কিন্তু এই বৈধতা নির্ভর করে বিপ্লবী সরকারের ৭২ সালের সংবিধানের আনুগত্য করা বা না করার উপর। যদি ৭২ সালের সংবিধান মানে তাইলে অবৈধ, না মানলে বৈধ-অবৈধের প্রশ্ন আসে না।
নানক: সরকার অবৈধ তাই, ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার অধিকার তাদের নেই। বাংলাদেশের ইতিহাসের সাথে ছাত্রলীগের ইতিহাস ওতপ্রোতোভাবে জড়িত।"
বাস্তবতা: ৭২ এর সংবিধান অস্বীকার করলে এসকল বৈধতার প্রশ্ন ডাস্টবিনে যাবে। আর বাংলাদেশের স্বাধীনতায় ৭১ সালে ছাত্র ইউনিয়ন রক্ত দিয়েছে, তখন ছাত্রলীগের নেতারা ভারতের পশ্চিম বঙ্গের কলকাতার টান বাজারে উল্লাশে মত্য ছিলো, বাংলাদেশ স্বাধীনতায় ছাত্রলীগের সরাসরি কোনো অবদান নাই( সূত্র: বই তাজউদ্দীন আহমদ নেতা ও পিতা)
নানক: আওয়ামী লীগ কখনো কাউকে মারেনি, নিপীড়ন করেনি। ষড়যন্ত্র করে "শেখ হাসিনার ওপর হত্যার দায় চাপিয়ে জনগণকে ভুল বোঝানো হয়েছে।"
বাস্তবতা: সারা জীবন শোনলাম আওয়ামিলীগ দেশের মানুষকে বোকা বানিয়েছে, যত হাজার গুজব যেমন ছেলে ধরা গুজব, রাসেল ভাইপার গুজব সবই তো আওয়ামিলীগের আবিস্কার, আর সেই গুজবের আবিস্কারক হাসিনাকে মানুষ মিথ্যা অপবাদ দিয়ে সরিয়ে দিলো? তো মিথ্যা অপবাদ দিলে হাসিনা প্রমান না করে পালিয়ে গেলো কেনো? হাজার হাজার ভিডিও, আন্তর্জাতিক মিডিয়া, লাইভ টেলিকাস্টে সবই মিথ্যা আর আওয়ামিলীগ একমাত্র ফেরেশতা? হাস্যকর ও দেওলিয়াপনার বহি:প্রকাশ। দেশের মানুষকে একনও আওয়ামিলীগ বোকা মনে করছে বোধ হয়।
নানক:বাংলাদেশে এখন ফ্যাসিস্ট শাসন চালু হয়েছে।
বাস্তবতা: আওয়ামিলীগ ছাড়া কারো জন্য এটা ফ্যাসিস্ট শাসন নয়, কেননা ওদের বিচার হচ্ছে তো তাই চিল্লাচ্ছে।
নানক:
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়করা 'কিশোর গ্যাং' থেকে এসেছেন বলে মন্তব্য করেছেন ক্ষমতাচ্যুত সরকারের বস্ত্রমন্ত্রী। বলেন, হিজবুত তাহরীর, জামায়াত শিবিরসহ জঙ্গীরা আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের উপর গুলি চালিয়ে নির্বাচিত সরকার উৎখাতের ষড়যন্ত্র চালিয়েছিল।
বাস্তবতা: শেখ হাসিনা এ পর্যন্ত একটাও কি প্রমান করতে পেরেছে যে সমন্বয়করা নিজেরা গুলি করেছে? বরং হাজার হাজার ভিডিও প্রকাশ পেয়েছে যে নিষিদ্ধ ঘোষিত জা*ঙ্গী সংগঠন ছাত্রলীগ, যুবলীগ, এমনকি সংসদে এমপিরা পুলিশের সাথে সংঘবদ্ধভাবে সরাসরি ছাত্রদের গুলি করেছে।
নানকের এমন বক্তব্য দেওয়ার দু:সাহসের জন্য কেনো ড.ইউনুস সরকার, বাংলাদেশের রাজনৈতিক দল গুলো ও সমন্বয়করা দায়ী তা প্রমান করবো পরের লেখায়, চোখ রাখুন আমার পেজে।
লেখক:ডা.বশির আহাম্মদ
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ