কম্পিউটার ভিশন সিন্ড্রম বা সিভিএস
বর্তমান ডিজিটাল যুগে এই কম্পিউটার ভিশন সিন্ড্রম দিন দিন প্রকট আকার ধারন করছে, তবে সচেতনতা ও সাবধানতা এর ক্ষতি থেকে মানুষকে অনেকটা রক্ষা করতে পারে।
কম্পিউটার ভিশন সিন্ড্রম কিঃ
কম্পিউটার বা কম্পিউটারের মতো এমন যন্ত্রপাতিতে নিয়মিত ও অনেকক্ষণ ধরে কাজ করলে চোখের নানা সমস্যা ও উপসর্গ দেখা দিতে পারে, এই অবস্থাকে বলা হয় কম্পিউটার ভিশন সিনড্রম।
এই সমস্যায় যারা ভুক্তভোগী:
১। নিয়মিত ও অতিরিক্ত কম্পিউটার বব্যবহার কারী।
২। টিন এজার যারা ফেসবুক কিংবা অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সারাক্ষণ পড়ে থাকে।
৩। অন্ধকার ঘরে যারা টিভি দেখে কিংবা অতিরিক্ত টিভি দেখে।
৪। যারা অনলাইন বা আউট সোর্সিং এর কাজ করে।
সাম্প্রতিক এক সমীক্ষায় দেখা গেছে আমেরিকার ১৩৪ মিলিয়ন লোক প্রতিদিন কম্পিউটারে কাজ করে থাকেন এবং তাঁদের ৮৮% লোকেরই কমবেশি নানা মাত্রার চোখের উপসর্গ রয়েছে। সুতরাং কম্পিউটার ভিশন সিনড্রম সারা বিশ্বে একটি সাধারণ স্বাস্থ্য সমস্যায় পরিগণিত হচ্ছে।
কম্পিউটার ভিশন সিনড্রমের উপসর্গসমূহঃ
১. মাথা ব্যথা, চোখে ব্যথা।
২. চোখ জ্বালাপোড়া করা।
৩. চোখের ক্লান্তি বোধ করা।
৪. ঝাপসা দেখা বা মাঝে মাঝে দু’টি দেখা।
৫. ঘাড়ে ও কাঁধে ব্যথা।
৬। অনেক সসময় দৃষ্টি শক্তি কমে যাওয়া।
কম্পিউটার ভিশন সিনড্রমের কারণঃ
কম্পিউটার অক্ষরগুলো ছাপার অক্ষরের মতো নয়। ছাপার অক্ষরগুলোর মধ্যভাগ এবং পাশের ঘনত্ব একই রকম- এগুলো দেখার জন্য সহজেই চোখের ফোকাস করা যায়, অন্যদিকে কম্পিউটারের অক্ষরগুলোর মধ্যভাগ ভাল দেখা যায় কিন্তু পার্শ্বভাগের ঘনত্ব কম হওয়ায় পরিষ্কার ফোকাসে আসে না। কম্পিউটারের অক্ষরগুলোর এই ফোকাসের অসমতার জন্য চোখের নিকটে দেখার যে প্রক্রিয়া বা একোমোডেশন ঠিকমতো কাজ করতে পারে না। এভাবে দীর্ঘক্ষণ যাবত কম্পিউটারে কাজ করলে চোখের নানা উপসর্গ দেখা দেয়।
কম্পিউটারে ভিশন সিনড্রম থেকে মুক্তি পাবার উপায়ঃ
১. চক্ষু পরীক্ষা : কম্পিউটার ব্যবহারের পূর্বে চক্ষু পরীক্ষা করে, চোখের কোন পাওয়ার থাকলে অবশ্যই চশমা ব্যবহার করতে হবে।
২. সঠিক আলোর ব্যবহার : রুমের ভিতরে বা বাইরে থেকে আসা অতিরিক্ত আলো চোখের ব্যথার কারণ হতে পারে। বাইরে থেকে আলো এসে চোখে না লাগে বা কম্পিউটার স্ক্রিনে না পড়ে সে জন্য পর্দা, ব্লাইন্ড ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘরের আলো- টিউবলাইট বা ফ্লোরোসেন্ট স্ক্রিনে না পড়ে সে জন্য পর্দা, ব্লাইন্ড ইত্যাদি ব্যবহার করা যেতে পারে। ঘরের আলো- টিউবলাইট বা ফ্লোরেসেন্ট বাল্বের আলো হলে এবং স্বাভাবিক অফিসের আলোর চাইতে কিছুটা কম হলে চোখের জন্য আরামদায়ক।
৩. গ্লেয়ার কমানো : কম্পিউটার মনিটরের এ্যান্টি গ্লেয়ার স্ক্রিন ব্যবহার করে এবং চশমার এ্যান্টি রিফ্লেকটিভ প্লাস্টিকের কাঁচ ব্যবহার করলে গ্লেয়ার কমানো যায়। ঘন ঘন চোখের পলক ফেলুন : কম্পিউটারে কাজ করার সময় চোখের পলক পড়া কমে যায়। এর ফলে চোখের পানি কমে যায় ও চক্ষু শুষ্কতা বা ড্রাই আই হতে পারে। এ অবস্থায় চোখ শুষ্ক মনে হবে। কাটা কাটা লাগবে। চোখের অস্বস্থি হতে পারে।
৪। সুযোগ পেলেই বেশিরভাগ সময়ে সবুজ প্রকৃতির দিকে তাকিয়ে থাকলে ভাল ফল পাওয়া যায়।
৫। যে সকল খাবার চোখের জন্য উপকারি তা নিয়মিত খাবেন।
৬। অযথা রাত্রি জেগে থাকবেন না।
৭।ভোরে সূর্য উঠার পূর্ব মুহুর্তের স্নিগ্ধ আলোতে প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটা-হাটি করবেন।
কম্পিউটার ব্যবহার করলে এটা হয়।
উত্তরমুছুন