expr:class='"loading" + data:blog.mobileClass'>

Wikipedia

সার্চ ফলাফল

সোমবার, ২ ডিসেম্বর, ২০২৪

হৃদয় পাগলের আত্ম কাহিনী

হৃদয় পাগলের আত্ম কাহিনী এবং মি. ইবলিশের স্বাস্থ্যহানী





ঘটনাটা ২০২১ সালের ঈদুল আজহার পরের দিন। আমি এবং আমাদের চাচাত ভাইদের মধ্যে সবচেয়ে দুষ্টু জাকির ভাই ঈদের পরের দিন আমার গ্রামের দৈনিক বাজারে বসে সবার সাথে কৌশল বিনিময় করছিলাম। একে একে যারাই আসছে সবার সাথে হ্যান্ডসেক করে ভাব বিনিময় করছি কিন্তু করুনার ভয়ে কোলাকুলি করছিলাম না। এক পর্যায় পাশ দিয়ে আমার এক ভাতিজা নাম হৃদয় পাগলা আমাদের পাশ দিয়ে যাচ্ছিল, আমি ডাকলাম কি চাচা কেমন আছ? দাঁড়াও কথা আছে, আমার উদ্দেশ্য হল বেশ অনেক বছর পর এই ভাতিজাকে দেখতে পেলাম, কেমন আছে, কি করে জানব। কিন্তু ভাতিজা আমার কথা শুনে ভাল আছি বলে দ্রুত চলে গেল, দেখে তাড়া আছে মনে করে তাকে আর ডাকলাম না।
ওহে! এই হৃদয় পাগলের পরিচয়টা একটু বর্ননা না করলে পাঠকগন ঘটনা প্রবাহ বুঝতে কঠিন হবে। তাই বলছি, হৃদয় পাগলার আসল নাম গিয়াস উদ্দিন, বয়সে আমার তিন বছরের বড়, কিন্তু পরীক্ষায় ফেল করতে করতে ৫ম শ্রেনীতে গিয়ে আমার সমান হয়ে যায়। ঐ ক্লাসেই গিয়াসের আমার সাথে খুব ভাল সম্পর্ক হয়। উনি বড় কিন্তু আমি উনাকে কাকু ডাকলেও উনিও আমার সম্পর্কে ভাতিজা বিধায় আমাকে কাকু বলে ডাকত। বার্ষিক পরীক্ষার সময় আমার সাথে উনার সীট পড়ল, গিয়াস খুব খুশী,  আমার খাতা কপি করে করে পরীক্ষা দিল, ফেল করা ছাত্র হঠাৎ রেজাল্টের সময় ৫ম হয়ে গেল, আর আমি হলাম তৃতীয়। একই হাইস্কুলে একসাথে ভার্তি হলাম। সম্পর্ক খুবই গভীর হল। প্রায় রাতেই আমাদের ঘরে থাকত।
হঠাৎ কিছুদিন পর গিয়াসের মা মারা গেল, সে পড়াশোনা ছেড়ে কোথায় যে চলে গেল আর দেখা হল না। পরে জানতে পারলাম এক সময় তার সৎ মা তাকে বাড়ি হতে বেড় করে দিয়েছে, পরে সে নেশার জগতে জড়িয়ে গেছে। এক সময় সবাই তাকে হৃদয় পাগল নাম বসিয়ে দেয়।
 যাক গে ঐদিন চলে গেল কথা বলতে পারলাম না, পরের দিন সকালে যথা রীতি সে একই রাস্তায় যাচ্ছিল আর আমি তাকে ডাকলাম, সে বল্ল তাড়া আছে,  তার নাকি কোন বস অসুস্থ, সুগার বাড়ছে, ইনস্যুলিন আনতে যাচ্ছে।

ঐ দিনই বিকেল বেলা যথারীতি আমি আগের জায়গায় দাড়িয়ে ছিলাম জাকির ভাইকে নিয়ে আর হৃদয় একই পথে যাচ্ছিল, ডাকলাম কাকু দাঁড়াও, কেমন আছ? চা খেয়ে যাও। সে আবারও তাড়া দেখাচ্ছে কিন্তু দুষ্টু জাকির ভাই নাছর বান্দা আজ তাকে ধরবেই। তৎক্ষনাৎ হৃদয় পাগলার মাথার গামছাটা খুলে একটা চলতি সিএনজির পেছনে আটকে দেয় আর চলমান সিএনজি ওটা নওয়ে চলে যায় আর শার্টটা খুলে গাছের উপর ছুড়ে মেরে মগ ডালে ঝুলিয়ে দেয়। ব্যাস আর যায় কই শুধু পরনে একটা লুঙ্গি। এখানে আরো অনেক হাসির কান্ড ঘটেছিল তা আর নাই বললাম। অবশেষে সে বসল, এক কাপ চা দিলাম, সে নিজেই একটা সিগারেট নিয়ে চা খাচ্ছে আর সিগারেট টানছে। জাকির ভাই জানতে চাইলো বার বার ডাকি দাঁড়াসনা কেনো? একই উত্তর বসের সুগার বাড়ছে ইনস্যুলিন আনতে যাওয়া লাগে। এবার আমি জিজ্ঞাস করলাম তোমার বস কে আর কেনই সুগার বাড়ছে?

এবার সে একটা দীর্ঘ নিঃশ্বাস ছেড়ে বলা শুরু করল। আমার বসের হায়াত কয়েক লক্ষ্য বছর, আর প্রায় ত্রিশ হাজার বছরের বেশি সময় যাবত নিজের কাজে অনেক পরিশ্রম করতাছে আর হাজার হাজার মুরীদ বানাইছে। জাকির ভাই ধমক দিয়ে বলল ফাজলামী করার জায়গা পাস না, দাঁড়া তোর মাথায় পানি দিতাছি, মাথা ঠান্ডা কইরা ক। আমি জাকির ভাইকে থামালাম। হৃদয় বলল যে পানি দিলে কি সত্যটা মিথ্যা অইয়া যাইব? দেখতে দেখতে অনেক লোক জমে গেল। আমি হৃদয়কে অভয় দিয়ে বর্ননা করতে অনুরোধ করলাম। তখন আবার শুরু করে, বস্ জীবনে অনেক পরিশ্রম করছে। কিন্তু পরিশ্রম করে নিজের কাজের পাশাপাশি কিছু মুরীদ বানাইছে সারা দুনিয়া ব্যাপী যেই মুরীদরা বসের চেয়েও আরো কর্মঠ ও পরিশ্রমী। তাই বস আর এখন তেমন কাজ করা লাগে না, বসে বসে শুধু সারগেদ দের কাজ দেখে আর হাসে, মাঝে মাঝে আশ্চর্যও হয়। আমি বললাম  আশ্চর্য হয় কেনো?  সে বলে বসের সারগেদরা মাঝে মাঝে এমন কাজ করে যে বস্ নিজেও এমন কাজ পারে না বা জানতও না। এই ভাবে বইসা থাকতে থাকতে বসের স্বাস্থ্য মোটা হয়ে ডায়াবেটিস হইয়া সুগার বাইড়া স্বাস্থ্যহানী হইয়া গেছে। 

জাকির ভাই বলে তোর বস্টা কেডা তার নামতো কইলি না, নাম ক, নাইলে তোরে পানিতে ফেলব। হৃদয় বলে আমার বসের নাম মি. ইবলিশ। আর ইবলিশের সারগেদ হইলি তোরা। তোরা এমন এমন খারাপ কাজ করছ শয়তান আর কিছু করা লাগে না, বরং শয়তান বইসা বইসা দেখে আর হাসে। শয়তান বসে থেকে থেকে এই ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হইয়া অসুসৃথ হইছে। একথা শুনে উপস্থিত সবাই হুহু করে হেসে উঠে।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ

শেখ মুজিবের অপশাসন

  শেখ মুজিবের অপশাসন     অস্ট্রেলিয়ার সাংবাদিক জন পিলজার একটা মেয়ের আঙুল ধরলেন। মানুষ তো জন্মের পর বড় হয়, তার মনে হলো, এই মেয়েটা জন্মের ...