"ইসলামি দল গুলো যখন ঐক্যের দ্বারপ্রান্তে, ফালতু বিষয় নিয়ে এত বিভেদ কেনো?
অনেক বছর পর বাংলাদেশে কতিপয় বিষয় নিয়ে ইসলামি দলগুলোর মাঝে যখন একটি ঐক্যের আবাস পাওয়া যাচ্ছে তখনই কিছু জুনুয়র আলেম বহু বছরের পুরাতন একটি ইস্যুকে সামনে এনে ইচ্ছাকৃত প্রচন্ড বিতর্ক সৃষ্টি করছে যা ঐক্যের জন্য শুধু ক্ষতিই নয়, জাতিকে বিভাজন করার উপক্রমও হয়েছে।
এবারের বিতর্ক সৃষ্টির বিষয়টি আমি মনে করি অনর্থক, এই বিষয় গুলো নিয়ে ২০০৪ সালে কুমিল্লার আদালতে " আফতাব স্মরনিকা মামলার " রায়ের মাধ্যমে সমাধান হয়েছে এবং এই বিষয় গুলো নিয়ে যে বিগত বছর গুলতে একটি নির্দ্দিষ্ট আলেম সম্প্রদায় সম্পূর্ণ মিথ্যাচার করেছিলো তাও আদালত সাব্যস্ত করে দেয়।
এত বড় ধ্রুব সত্য প্রকাশ পাওয়ার পরও আবার একদল আলেম নামের জালেম বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার টাকা পেয়ে নতুন করে একই বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। পুরাতন অভিযোগ গুলো মাঠে খাওয়াতে না পেরে নতুন একটি শব্দ চয়ন করেছে মিয়ারে হক্ব। অথচ এই মিয়ারে হক্ব কোন শরীয়তের পরিভাষা নয়। এটিও হিন্দু-মুসলিম একজাতি তত্ত্বের মত আরেকটি নতুন তত্ত্ব যার উদ্দেশ্য শুধু মাত্র উম্মাহর ক্ষতি করা এবং বিভেদ সৃষ্টি করা।
এই আলোচনা করতে গিয়ে উস্তাদ মূফতী জসিম উদ্দিন রহমানীর একটা বার বার কানে বাজছে আর তা হলো "যখনই মুসলমানদের মাঝে ঐক্যের কথা হয়েছে তখনই এই চরমোনাই পীরের দাদা হুজুর, বাবা হুজুর ও চরমোনাই গংরা যুগে যুগে ইসলামী ঐক্যকে পেছন থেকে ছুড়ি মেরেছে।
এবারেও এই চরমোনাইদের একই কাজ করতে ভুল করে নি, তবে কৌশলটা আলাদা। এখানে চরমোনাইরা সর্প হয়ে ধ্বংশন করা আর হোজা হয়ে বিষ ঝড়ানোর মত কাজ করে যাচ্ছে। এক দিকে চরমোনাই হুজুর সকল দলকে নিয়ে ইসলামী ঐক্যের জন্য বার বার মিটিং করছে আবার যখন দেখছে এই ঐক্য হলে আখেরে জামায়াতে ইসলামীর লাভের পরিমান বেশী হবে তখনই তাদের চিংড়ির মত লাফানো, সাহাবাদের সাথে বেয়াদবী কারী চিংড়ি মূফতি রেজাউল করিম আবরারকে দিয়ে এমন এমন ইস্যু নিয়ে বিতর্ক সৃষ্টি করছে যেন জামায়াতে ইসলামি এই ঐক্যে ইচ্ছা থাকলেও সম্মত হতে না পারে।
এই ঐক্যকে বার বার ছুড়ি মারারও একটা কারন আছে। এই কুফুরী আকিদা লালন কারী চরমোনাইরা চিরকালই ঐক্য বিরোধী, কিন্তু এবার নামে মাত্র ঐক্যের ডাক দিলেও ভিতরের উদ্দেশ্য একেবারে খারাপ। নিজের প্ল্যাটফরমে ঐক্যের নামে সকল ইসলামী দল গুলোকে একত্রিত করার অজুহাতে বিভিন্ন ইস্যু তৈরী করে ঐক্যে বাঁধা সৃষ্টি করাই কাজ। চরমোনাইর কাজই হলো সরকারের এজেন্ডা বাস্তবায়ন, কেননা বর্তমান সরকারের নিকট এই ফয়জুল-রেজাউল দুই ভাই ধরা আছে। তারা দুই ভাই নারী ও মাদক ব্যবসার অপরাধে সাজা প্রাপ্ত ও প্যারোলে মুক্ত, তাই তারা চাইলেও সরকারের হাতের মুঠোর বাইরে যেতে পারছে না আর এই সুযোগে পার্শ্ববর্তী কোন এক দেশের গোয়েন্দা সংস্থার ইন্ধনে সরকারের সুবিধার জন্য এই অপকর্ম গুলো করে যাচ্ছে এই চরমোনাই গংরা।
আর যারা মওদূদীর লেখার ভুল নিয়ে বিগত ৮৪ বছর যাবত বিতর্ক করে যাচ্ছে তাদের উস্তাদদের যদি এরকম সমালোচনা করত তাইলে নিজেরাই নিজেদের আকাবীরদের কাফের ঘোষনা করতে বাধ্য হতো। হিন্দু-মুসলিম একজাতি তত্ত্বের মত কুফুরী আকিদা তাদের উস্তাদদের ই সৃষ্টি। তাদের দেওবন্ধের প্রতিষ্ঠাতা কাশেম নানুতুবী তার বইয়ে হেন কোন অপমান নাই যে হযরত মুহাম্মদ সা: কে করে নি, অবশেষে এমনও দাবী করেছে যে এই মিথ্যুক নানুতুবীর কাছে নাকী হযরত মুহাম্মদ সা: স্বপ্নে উর্দু শিখতে আসত(নাউজু বিল্লাহ)।
এবারে বিতর্কে মধ্য মনি বেয়াদব রেজাউল করিম আবরার উরফে চিংড়ি মূফতি নিজেই যেখানে দাবী করেছে আল্লাহ ইচ্ছা করে সাহাবাদের দিয়ে জেনার মত পাপ করিয়েছেন (নাউজুবিল্লাহ),তার পীর বলেছে সাহাবারা মূরদাত হয়ে গেছে, এজিদের ব্যাপারে দাবি করেছে এজিদ নাকি আল্লাহ ওয়ালা সাহাবী ছিলো,তার পীরের দাদা হুজুর আল্লাহর আন্দাজ নাই বলে দাবী করেছে এমন এক পীরের দরবারের মূরীদ চিংড়ি মুফতী রেজাউল করিম আবরার যখন বিশ্ব্য বারন্য আলেম, মদিনা বিশ্ব বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষকের ভুল ধরার চেষ্টা করে তখন অনুমান করতে অসুবিধা হয় না যে সে নিজেই কত বড় বেয়াদব, মূর্খ আর পথ ভ্রষ্ট। সে এমন একজন মূফতী তাকে বলা হয় সে নাকি গরিবের আবু হানিফা, আমার প্রশ্ন হলো ইমাম আবু হানিফা (হাফি:) কি এমন কোন পীরের মূরীদ ছিলো যে আল্লাহর আন্দাজ নাই দাবী করত, মনসুর হাল্লাজের কিচ্ছা করত, ১২৬ তরিকার আবিষ্কারক, ইল্লাল্লাহ জিকির করত আর মানুষের টাকা মেরে খেত, মাদক ও নারী ব্যবসায় দোষী সব্যস্ত? নিশ্চয়ই না। অতএব এধরনের একজন পীরের মূরীদ যখন দাবী করে গরিবের আবু হানিফাকে তখন বলতেই হয় পীর, মূরীদ আর এই গরিবের আবু হানিফা সবাই পথ ভ্রষ্ট শয়তান।
এই গরিবের আবু হানিফা খ্যাত চিংড়ি মূফতি রেজাউল করিমদেরকেই যুগে যুগে বাতিল শক্তিরা ভাড়া করে ইসলামের ক্ষতি সাধন করে। দেওবন্ধী ও দুশ্চরিত্র কওমী সম্প্রদায়ের পীর বুজুর্গদের হাজারো বই আমি দেখাতে পারব যেখানে তারা নিজেদেরকে আল্লাহর চেয়েও শক্তিশালী দাবী করেছে( চরমোনাইনপীরের রূহ ছিনাইয়া আনার ঘটনা) এবং নবী -রাসূলদের এমন অপমান করেছে যা বিধর্মীরাও করার সাহস দেখায় নি(কাশেম নানুতুবীর নামাজে নবী করিম সা: এর স্মরন উট,ভেড়া ও ছাগলের স্মরনের সাথে তুলনা করা)।
অতএব এই চরমোনাই পীর ও গংরা নতুন করে যে বিতর্কের সৃষ্টি করেছে তা বিদেশী গোয়েন্দা সংস্থার ইন্ধনে, ক্ষমতাশীলদের পরামর্শে বিপুল অর্থের বিনিময়ে ইচ্ছা করেই এসকল ফালতু বিতর্ক তৈরী করছে এই ইসলামের শত্রু বন্ড ও কুফুরী আকিদার ধারক-বাহক চরমোনাই পীরের দল।
লেখক: চিকিৎসক, জার্নালিস্ট ও আন্তর্জাতিক মানবাধিকার কর্মী।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন
মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ